#নীল_ডায়েরির_সেই_মেয়েটি
#আরদ্ধিতা_রুহি
#পর্বঃ০৪
🍁
–‘আ.রো.’
হঠাৎ করেই কারো দূর্বল গলার কন্ঠে থেমে থেমে আরোহীর নাম উচ্চারণ করা শুনে আরোহীর পা জোড়া থেমে যায়। কিন্তু ঘুরে তাকিয়েও দেখে না। আঁধারের দিকে তাকাতেই আঁধার চোখের ইশারায় ঘুরে কথা বলতে বলে। কিন্তু আরোহী নির্বাক হয়েই দাড়িয়ে আছে। আঁধারের মা বাবা ও একে অপরের দিকে তাকিয়ে আছে।
–‘তুমি আমার সাথে কথা বলবে না আরো!’
আদরের দূর্বল কন্ঠে বলা কথাটি শুনে আরোহী এক পলক আঁধারের দিকে তাকায় কিন্তু আঁধারকে দেখে মনে হচ্ছে তার চোখ মুখ খানিকটা শক্ত। তবুও সে আরোহীকে চোখ দিয়ে ইশারা করে কথা বলার জন্য, আর সম্পূর্ণ বিষয়টিই খেয়াল করে আদর ও তার বাবা মা ও। আদরের বাবা যদিও খুশি হয় তবে আদরের বুকের ভেতর কেমন জানি করে উঠে।
–‘জ্বি ভাইয়া বলেন?’ আসলে আমাদের বাড়ি যেতে হবে তো।
শক্ত কন্ঠে বলে উঠে আরোহী।
আদর হাসে কিন্তু সে হাসিতে কোনো আনন্দ নেই সুখ নেই।
আদর জানে আরোহী অনেক অভিমানী কিন্তু এভাবেও যে আরোহী কারো সাথে কথা বলতে পারে জানতো না আদর।
আরোহীকে বরাবরই সে শান্ত, নরম ও ভিতু দেখেছিলো৷ মূলত তার ফেইসের সাথে ওইসব রিয়াকশনই মানানসই ছিলো। কিন্তু এভাবে শক্ত কন্ঠেও যে আরোহী কথা বলতে পারে সেটা আদর আজকেই প্রথম দেখলো।
এইসব ভাবনার মধ্যেই তার মা এসে মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে জিজ্ঞেস করে,,,
–‘এখন কেমন লাগছে তোর বাবা?’জানিস আমরা কতোটা চিন্তিত ছিলাম তোর জন্য!
আদর হাসে,,
–‘জানি মা, তোমরা আমায় মাফ করে দিয়ো মা আমি ভুল করেছি।’
–‘কি হলো যাবেন না, লেট হয়ে যাচ্ছে তো?’
আরোহী আঁধারকে খানিকটা বিরক্তির সাথে বলে উঠে।
আঁধার এক পলক আদরের দিকে তাকায় কিন্তু কথা বলে না। বাবা মায়ের থেকে বিদায় নিয়ে আরোহীর হাত ধরে বেরিয়ে আসে।
আদর এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে আর ভাবে আজকে আরোহীর পাশে তার থাকার কথা ছিলো কিন্তু তার কিছু ভূলের জন্য আঁধারকে আজকে আরোহীর পাশে দেখতে হচ্ছে। আদরের চোখ দিয়ে দু ফোঁটা পানি বের হয়, কিন্তু কেউ দেখার আগেই সেটা মুছে নেয়।
কেবিনের বাহিরে এসেই আঁধার আরোহীর হাত ছেড়ে দিয়েই হনহন করে চলে যায়। আরোহী বোকার মতো কিছুক্ষণ আঁধারের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে। আঁধারের থামারই নাম নেই সে নিজের মতোই যেতে থাকে, আরোহী আর কিছু না ভেবে সে ও আঁধারের পিছু পিছু যায়।
কিন্তু বাহিরে এসে আঁধারকে আর দেখতে পায় না কোথাও৷ এবার কিছুটা বিরক্ত হয় আরোহী। ভাবে লোকটা অনেক অদ্ভুত, সাথে বেয়াদপ ও। তা না হলে একা একটা মেয়েকে কিভাবে রেখে যেতে পারে।
এরইমধ্যে আঁধারের গাড়ি পার্কিং এড়িয়া থেকে তার দিকেই আসতে দেখে মনে মনে একটা ভেঙ্গচি কাটে। আঁধার গাড়ি থামিয়ে ফ্রন্ট সিটের দরজা খুলে দেয়। আরোহী এক পলক আঁধারের দিকে তাকিয়ে গাড়িতে বসে পড়ে ।
আঁধারকে নিজের দিকে এগিয়ে আসতে দেখে ভয়ে চোখ খিঁচে বন্ধ করে নেয় আরোহী। চোখ বন্ধ থাকা অবস্থায় ও আরোহী বুঝতে পারে আঁধার তার অনকেটা কাছে৷ আঁধারের নিশ্বাস আরোহীর গলায় পড়ছে এতে যেনো আরোহীর পুরো শরীরে কাটা দিয়ে উঠে৷ আরো চেপে বসে আরোহী গাড়ির সিটের সাথে৷ আঁধার এক পলক আরোহী দিকে তাকিয়ে সরে যায়।
–‘গাড়ির দরজা ভেঙে বাহিরে চলে যেতে চাচ্ছো নাকি?’
খানিকটা ভ্রু কুঁচকে বলে উঠে আঁধার। ধপ করে চোখ খুলে আরোহী৷ একবার আঁধার ও আর একবার তার দূরত্ব দেখে নেয়,তারপর সস্তির নিঃস্বাস ছাড়ে৷
সেটা দেখে আঁধার বলে উঠে,,
–‘ইডিয়ট। ‘
তারপর ড্রাইভিং এ মনোযোগ দেয়।
আরোহী যেনো প্রাণ ফিরে পায়।তখনই নজর যায় তার সিট বেল্টের দিকে। মনে মনে ভাবে তার মানে আঁধার সিট বেল্ট লাগানোর জন্য এতো কাছাকাছি এসেছিলো, আর আমি কি না কি সব ভাবছিলাম। ছি আরো ছি তোর মাইন্ড এতো নোংরা। নিজেই নিজেকে কয়েকটা গালি দিয়ে হেসে ফেলে আরোহী।
হঠাৎ করেই আঁধার গাড়ি ব্রেক করে আরোহীর দিকে ঘুরে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে।হঠাৎ গাড়ি ব্রেক করাতে খানিকটা বিরক্ত হলেও আঁধারকে তার দিকে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে থাকতে দেখে ভেবাচেকা খায় আরোহী।
কিন্তু আঁধার তাকে অবাক করে দিয়ে প্রশ্ন করে,,,
–‘এই তোমার কি জ্বীন -ভুতের সমস্যা আছে নাকি?’ না মানে যেভাবে একা একা হাসছো আমার তো সেটাই মনে হলো৷
আঁধারের প্রশ্ন শুনে আরোহী চোখ মুখ কুচকে তাকিয়ে থাকে।
–‘আরে আরে কি হলো এভাবে তাকিয়ে আছো কেনো?’ না মানে থাকলে বলতে পারো, আমি আবার জ্বীন-ভুতকে অনেক সহজেই তাড়াতে পারি।
ঠোঁটে ঠোঁট চেপে বলে আঁধার। আরোহী কটমট চোখে তাকিয়ে থাকে আঁধারের দিকে। এতে আঁধার যেনো অনেকটাই মজা পায়।
–‘তোমার ভেতরের জ্বীন-ভুতকে তাড়িয়ে দেখাবো নাকি?’
আরোহী চোখ মুখ শক্ত করে কটমট করে আঁধারের দিকে তাকায়। আঁধার ফিক করে হেসে ফেলে। আরোহী এক দৃষ্টিতে আঁধারের হাসির দিকে তাকায়, কি সুন্দর তার হাসিটা৷ আঁধার হাসতে হাসতে মনে হচ্ছে গড়াগড়ি খাচ্ছে তবুও তার হাসি থামছে না৷
ফোনের রিংটোনে আঁধারের হাসি থেমে যায়। কিন্তু বেচারা মনে হয় অনেক কষ্টে হাসিটাকে কন্ট্রোল করে রেখেছে তাকে দেখেই বুঝা যাচ্ছে।
আঁধার ফোনটা রিসিভ করার সাথে সাথেই তার চোখ মুখ শক্ত হয়ে যায়।
গাড়িতে আর তাদের মধ্যে কোনো কথাই হয় না।
কিছুক্ষণের মধ্যেই আঁধার একটা রেস্টুরেন্টের সামনে গাড়ি থামিয়ে আরোহীকে নামতে বলে সেও নেমে যায়।
আঁধারের পেছন পেছন যেতেই আঁধার একটা টেবিলে বসে আরোহীকে বসতে বলে। আরোহী ও বাধ্য বাচ্চার মতো বসে পড়ে।
আঁধার একটা ওয়েটারকে ডেকে আরোহীকে খাবার অর্ডার করতে বলে সে ফোন দেখায় মনোযোগ দেয়।এরইমধ্যে ওয়েটারের কথা কর্ণগোচর হতেই আঁধার চোখ তুলে আরোহীর দিকে তাকায়।
–‘কি হলো, খাবার অর্ডার করছো না কেনো?’
আঁধারের কথাশুনে আরোহী আমতা আমতা করতে থাকে।আঁধার ভ্রুকুচকে তাকায় আরোহীর দিকে৷ কিন্তু আরোহী কিছু না বলেই চুপচাপ বসে থাকে।আঁধার খানিকটা বিরক্তি নিয়ে নিজেই খাবার অর্ডার করে। ওয়েটার ও হাসিমুখে বিদায় নেয়।
আঁধার কিছু না বলেই আবার ফোন দেখায় মনযোগ দেয়।
কিছুক্ষণ পড়েই ওয়েরটার ও খাবার নিয়ে চলে আসে৷ আঁধার এক পলক আরোহীর দিকে তাকায়। দেখে মেয়েটা চুপচাপ নিচের দিকে তাকিয়ে আছে। আরোহীর দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য গলা খেঁকারি দেয়৷ এতে অবশ্য কাজ ও হয়ে যায়!আরোহী চোখ তুলে আঁধারের দিকে তাকায়।
–‘খাবারটা খেয়ে নাও।’
আঁধারের কথা শুনে আরোহী কিছু না বলেই খেতে শুরু করে।আঁধার চুপচাপ বসে থাকে। আরোহী একটু খেয়ে যখন বলে আর খাবে না তখন আঁধার অবাক চোখে তাকিয়ে বলে,,,
–‘খাবে না মানে কি?’ এইটুকুতেই পেট ভরে গেলো? সম্পূর্ণ খাবার শেষ করো কুইক!
–‘আমি এর বেশি খেতে পারবো না প্লিজ ভাইয়া।’
–‘ভাইয়া…’
আঁধারের চেঁচানিতে আরোহীর হাত থেকে চামুচটা ধপ করে প্লেটে পড়ে যায়৷ এতে যেনো আঁধার আরও ফুসে উঠে।
–‘ভাইয়া, কোথায় তোমার ভাইয়া, কে তোমার ভাইয়া?’ভুলেও আমার দিকে তাকাবে না। এই আমি কোন দিক থেকে তোমার ভাইয়া লাগি হ্যা!বিয়ে করা বরকে কেউ এভাবে ভাইয়া বলে ইডিয়েট।
এক নিশ্বাসে কথাগুলো বলে দম নেয় আঁধার। আরোহী বোকার মতো তাকিয়ে থাকে কিন্তু বুঝতেই পারে না আঁধারের হঠাৎ করেই হলোটা কি!
–‘আপনি…’
–‘এই মেয়ে চুপ, তুমি যখনই মুখ খুলো তখনই ঘুর্ণিঝড়ের মতো কথা বলে আমার ভেতরটাকে লন্ডভন্ড করে দেও।’ এর থেকে ভালো হবে তুমি কথাই বলো না আমার সাথে।
–‘আরে,,,’
–‘এই বললাম না চুপ, আমি তোমার কোনো কথা শুনতে ইচ্ছুক নই।’ হাহ্ এমন করে ভাইয়া ডাকছে মনে হচ্ছে আমি তার কোন জনমের ভাই আহাাাা কি ডাক ভাইয়া! এই তোমার জন্য শুধু মাত্র তেমার জন্য যদি আমার ফিউচার বেবিরা আমায় মামা ডাকছে তো তোমায় আমি ছাদ থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিবো ইডিয়েট।
রাগে থরথর করে কাঁপতে কাঁপতে বলে আঁধার। আরোহী অনেকটা ভয় পেয়ে যায়।
–‘এই মেয়ে খাচ্ছো না কেনো এখন ও খাও!’
বলেই, আরোহীর প্লেটে অনেকগুলো খাবার দিয়ে আবার বলে,,
–‘সব খাবার তুমি খাবা, যদি একটু ও রাখছো তো তোমায় আমি গাড়ি থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিব।’
ফুসতে ফুসতে বলে আঁধার। আরোহী করুন চোখে একবার খাবারের দিকে তাকায় তো একবার আঁধারের দিকে তাকায়।কিন্তু আঁধারকে রাগে ফুসতে দেখে চুপচাপ খাবার গিলতে থাকে।
আঁধার শক্ত চোখে আরোহীকে দেখতে থাকে।
–‘আপনি খাবেন না?’
থেমে থেমে বলে উঠে আরোহী। কিন্তু আঁধারের চোখের দিকে তাকিয়ে ভয় পেয়ে যায়। তাই চুপচাপ নিজের খাওয়া শেষ করে।
আরোহীর খাওয়া শেষ হতেই আঁধার হনহন করে বিল দিতে চলে যায়। আরোহী কি করবে ভেবে না পেয়ে সেও আঁধারের পেছন পেছন যেতে থাকে৷ কিন্তু বেশি দূর যাওয়ার আগেই আঁধার পেছনে ঘুরে দাড়িয়ে যায়,যার ফলে আরোহী আঁধারের বুকের সাথে ধাক্কা খেয়ে ছিটকে দূরে সরে যায়।
আঁধার শান্ত চোখে তাকিয়ে বলে,,,
–‘গাড়িতে গিয়ে বসো।’
বলেই আবার নিজের মতো চলে যায়৷ আর আরোহী বুকে ফু দিয়ে গাড়িতে গিয়ে বসে পড়ে।
কিছুক্ষণ পরে আঁধারও চলে আসে৷ চুপচাপ গাড়িতে বসে শান্ত চোখে আরোহীর দিকে তাকায়।আরোহী ভিষণ অসস্তিতে পরে যায়। পরমুহূর্তেই কিছু একটা মনে পড়তেই তাড়াতাড়ি সিট বেল্ট বেধে নেয়। আঁধারও আর কিছু না বলেই গাড়ি চালাতে শুরু করে
আরোহীদের বাসার সামনে গাড়ি দাড় করিয়ে আরোহীর হাতে কিছু চকলেট দেয়। দিয়ে যেতে বলে।
–‘চকলেটগুলো কি আপুকে দেওয়ার জন্য দিলেন?’
আরোহীর কথা শেষ হতেই আঁধারের চোখ মুখ ভয়ংকর রকমের লাল হয়ে যায়। গাড়ির জানালায় জোড়ে একটা পাঞ্চ মারে। ফলে কাচঁ গুলো ভেঙে যায় আর অনেকগুলো কাচঁ আঁধারের হাতে গেঁথে যায়।আরোহী ভয় পেয়ে যায়
–‘একি আপনার হাতে তো কাচঁ গেঁথে গেছে, রক্ত বের হচ্ছে। ‘আপনি কি পাগল নাকি?
আঁধারের হাত ধরে দেখতে দেখতে উত্তেজিত হয়ে বলে আরোহী।
–‘ডোন্ট ইউ ডেয়ার টু টাচ মি?’ স্টে অ্যাওয়ে ফ্রম মি ড্যামেট।
এক ঝটকায় নিজের হাত সরিয়ে নিয়ে এসে চেঁচিয়ে বলে আঁধার ,,,
আরোহী কেঁপে উঠে। কিন্তু আবার আঁধারের হাত টেনে ধরে বলে,,
–‘আপনি এতো রাগ করছেন কেনো, আপনার হাত থেকে রক্ত বের হচ্ছে তো।’
আঁধার আবার ঝটকা দিয়ে হাত সরিয়ে নেয়।
–‘যেতে বলিনি তোমায় আমি?’ গো?
চেঁচিয়ে বলে উঠে আঁধার। আরোহীর চোখ দিয়ে দু ফোঁটা পানি বের হয়। আঁধারকে কিছু না বলেই চকলেটগুলো গাড়িতে ছুড়ে মেরে গাড়ি থেকে নেমে দাড়ায়।
চকলেটগুলো ফেলে দেওয়াতে আঁধারের রাগ যেনো আরও বেশি মনে হয়। গাড়ির দরজা এক ধাক্কায় খুলে। ভালো হাতটা দিয়ে আরোহীর হাত চেপে ধরে। আরোহী খানিকটা ভয় পেলেও চোখ মুখ একদম স্বাভাবিক রেখে চুপচাপ দাড়িয়ে দেখতে থাকে আঁধার কি করে,,,
কিন্তু কিছু বলতে পারে না তার আগেই একটা ছেলের কন্ঠস্বর শুনে দুজনেই পেছনে ঘুরে তাকায়।
–‘হেই আরো, তুমি এতোক্ষণ লেট করলে কেনো?’ আমি কখন থেকে তোমার অপেক্ষা করছিলাম ইউ নো!
আঁধার ছেলেটাকে ভালো করে পর্যাবেক্ষণ করে কিন্তু তার রাগ কমানোর দরকার নাহলে কখন কি করে দিবে তার ঠিক নেই তাই আর কিছু না বলেই আরোহীকে টানতে টানতে বাড়ির দরজার সামনে এনে রেখে দিয়ে গাড়ি নিয়ে চলে যায়।
ব্যাপারটা এতোই দ্রুত হয় যে, আরোহীর সাথে সাথে ছেলেটাও অবাক চোখে তাকায়।
–‘ছেলেটা কে আরো?’
–‘সেটা আপনাকে বলার প্রয়োজন মনে করছি না।’
শক্ত কন্ঠে বলেই বাড়ির ভেতরে ঢুকে যায় আরোহী। ছেলেটা ও দৌড়াতে দৌড়াতে আরোহীর পেছন পেছন চলে যায়৷ আর প্রশ্ন করতে থাকে।
এসময় আরোহী বিরক্ত হয়ে বলে,,,
–‘আমার বয়ফ্রেন্ড হয় উনি, আর কিছু?’
–‘বয়ফ্রেন্ড, তোমার বয়ফ্রেন্ড থাকতেই পারে না সেটা আমি ভালো করেই জানি আরো সো ঢপ মেরো না।’
সবকটা দাঁত বের করে হেসে বলে উঠে ছেলেটা। আরোহী যেনো আরও ফুসে উঠে, একে তো আঁধারের উপর রাগটা ওর তরতর করে বেরে উঠছে। তার উপর এই ছেলেটা।
–‘উনি আমার যেই হোক না কেনো তাতে আপনার কি সাফিন ভাই?’ আপনার আসলে সমস্যাটা কি একটু বলবেন?
–‘আরে রিলাক্স এয়ার আই আম জাস্ট জোকিং।’ তুমি রেগে…
আর কিছু বলবে সাফিন ভাই তার আগেই আমি উপরে চলে যাই। না দেখেও বুঝতে পারছিলাম সে হাবলার মতো তাকিয়ে আছে আমার যাওয়ার দিকে।
( সাফিন ভাই হলো আমার ফুপির ছেলে, আপুর সাথেই পড়াশোনা করে । আমার ফুফিরা দু বোন।আর সাফিন ভাই হলো ছোট ফুপির ছেলে। ওরা সবাই লন্ডনে থাকে যদিও তবে সাফিন ভাই মাঝে মাঝে বেড়াতে আসে আমাদের বাড়িতে। সবাই ওনাকে অনেক ভালোবাসে শুধু মাত্র আমি বাদে৷ কোনো এক কারণে ওনাকে দেখলেই আমার হাবলার মতো লাগে যদিও সে অনেক স্মার্ট কিন্তু আমার পেছনে পড়ে থাকে সবসময় তাই হয়তো হাবলার মতো লাগে আমার কাছে। তবে উনি মানুষ হিসেবে অনেক ভালো ও দয়ালু। উনি হয়তো আমার বিয়ের খবর জানেন না এখন। কারণ বাবা চা না এখনই কেউ জানুক। তাই হয়তো আধারকে চিন্তে পারেন নি।)
রুমের সামনে আপুকে দাড়িয়ে থাকতে দেখেই মেজাজটা আরও অনেক বেশিই চটে গেলো।
#চলবে?