নীল ডায়েরির সেই মেয়েটি পর্ব-১৮ এবং বোনাস পর্ব

0
675

#নীল_ডায়েরির_সেই_মেয়েটি
#আরদ্ধিতা_রুহি
#পর্বঃ১৮

🍁

আমার এই বাচ্চাটা চাই না বাবা, এই বাচ্চাটা আমার জন্য অশুভ! কথাটা বলার সাথে সাথে সপাটে পর পর দু’টো চড় পড়ে আলিশার গালে। এবারের চড়টা আর কেউ নয় শাহানাহ শেখ নিজেই দিয়েছে।আরোহী অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে তার মায়ের দিকে,এই মানুষটা কখনো তাদের গায়ে হাত তুলেনি কিন্তু আজকে পরিস্থিতির কারণে হাত তুলতে বাধ্য হলো হয়তো!

–‘বাচ্চারা কখনো অশুভ হয় না, অশুভ হয় তোদের মতো মা নামের কিছু অশুভ মেয়ে!’ তোকে জন্ম দিয়ে নিজেকে অনেক সার্থক ভাবতাম কিন্তু নিজেকে ধিক্কার দেওয়ার ইচ্ছে করছে,কেনো তোকে তখনই গলা টিপে মেরে ফেললাম না!

শাহানাজ শেখের চিৎকারে সকলের মনে কষ্টের পাহাড় বহিয়ে দেয়, একটা মার জন্য নিজের মেয়ের এমন কু কর্ম কতোটা কষ্ট দায়ক সেটা মা ছাড়া আর কেউ বুঝতে পারে না।

–‘জানিস মায়েরা কতো কষ্ট করে একটা সন্তানকে মানুষ করে, জানিস তুই? ‘ কখনো আমায় জিজ্ঞেস করেছিলি, আম্মু তুমি আমাদের জন্য সারাদিন এতো কিছু করো তোমার কষ্ট হয় না? কখনো তোর বাবাকে জিজ্ঞেস করেছিলি, বাবা তুমি আমাদের জন্য এতো কষ্ট করে উপার্জন করো তেমার কষ্ট হয় না! বল করেছিলি। আরে তুই কি বুঝবি একটা মা বাবার কষ্ট, বুঝবি তো তখন যখন তুই নিজেও মা হবি? কিন্তু তুই তো মা না রে পিশাচিনী, না না তোর সাথে পিশাচিনীদের তুলনা করলে ও তারা কষ্ট পাবে কারণ তারা ও অনেক কষ্টে তাদের সন্তান মানুষ করে।

এক নিশ্বাসে কথা গুলো বলেই দম নেয়, মনে হয় অনেক কষ্টে তিনি দাঁড়িয়ে আছেন, পড়ে যেতে ধরলেই আঁধার এক হাতে আগলে নেয়! আরোহী দৌড়ে এগিয়ে আসে, আদর তাড়াতাড়ি এগিয়ে যায়, আলিশা ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে।

আমজাদ শেখ বুকে হাত দিয়ে সোফায় বসে পড়ে, আঁধার আদরকে চিৎকার করে বলে ওনাকে বসিয়ে পানি দিতে। আদর ও দৌড়ে যায় পানি নিয়ে, আর আলিশা মূর্তির দাঁড়িয়ে আছে। আঁকলিমা চৌধুরী আর তারেক চৌধুরী গিয়ে আমজাদ চৌধুরীর পাশে বসে শান্ত হতে বলে। শাহানাজ শেখ নিজেকে শান্ত করে আঁধারকে ছেড়ে দিতে বলে, কিন্তু আঁধার ছেড়ে দেয় না।

আলিশার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে কিন্তু সেটা কিসের কেউ জানে না।এরইমধ্যে শাহানাজ শেখ আবার চিৎকার করে উঠেন,,,

–‘আঁধার ওকে বলো ও কেনো গিয়েছিল বাচ্চাটা নষ্ট করতে?’ কি রে তুই চুপ করে আছিস কেনো বল?

প্রথমের কথাটা আঁধারকে বললেও শেষের কথাটা শুনে কেঁপে উঠে আলিশা।আলিশাকে চুপ থাকতে দেখে আদর এগিয়ে এসে আলিশার বাহু চেপে ধরে শান্ত চাহনিতে তাকিয়ে বলে,,,

–‘কোন সাহসে তুমি আমার সন্তানকে মারতে গেছিলে বলো, আমি তোমার সাথে সম্পর্কটা স্বাভাবিক করতে গেছিলাম শুধু মাত্র এই বাচ্চাটার জন্য।’ কিন্তু তুমি এটা কি করতে গেছিলে বলো আলিশা! উত্তর দাও।

আদরের এই শান্ত চাহনিটাই আলিশার কাছে ভয়ংকর লাগছে আজকে, মনে মনে অনেক অনুশোচনা হচ্ছে আলিশার আসলেই তো কি করতে গেছিলো সে এটা! বাচ্চাটা তে তারই কিন্তু আবার পরক্ষনে মনে হচ্ছে, না আমি ঠিকই করতে গেছিলাম বাচ্চাটা চাই না আমার।

–‘ওকে কি জিজ্ঞেস করছিস আদর তুই, ও কি বলবে কালকেই কতো সুন্দর নাটক করে সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে ভালো সাজার নাটক করে আজকে এইসব করতে গেছিলো?’ আর আমি কি দেখে এই মেয়েটাকে মাফ করতে গেছিলাম।

শেষের কথাটা আপসোস স্বরে বলে আঁকলিমা চৌধুরী।

–‘আলিশা উত্তর দাও!’

এবার আদরের চিৎকারে সকলে কেঁপে উঠে। আদর যে এতোক্ষণ কি করে রাগ কন্ট্রোল করছে কেউ ভেবেই পাচ্ছে না।আদরের জায়গায় অন্য কেউ হলে হয়তো এতোক্ষণ আলিশার লাশ পাওয়া যেতো।

আরোহী নিজের বোনের দিকে অপলক চেয়ে আছে, এইটা তার বোন হতেই পারে না তার বোন তো তাকে অনেক ভালোবাসতো কিন্তু ধিরে ধিরে সবকিছু কেমন উলট পালট হয়ে গেলো। এখন তার বোন তাকে সহ্য করতে পারে না ঠিকই তাই বলে এতো বড় একটা স্টেপ! আরোহী আঁধারের দিকে তাকিয়ে দেখে সে তখন ও আরোহীর দিকেই তাকিয়ে আছে। চোখ নামিয়ে নেয় আরোহী।

–‘ওকে নিয়ে এসময় আমি গর্ব করতাম, কিন্তু আমি হয়তো ওদের মানুষ করতে পারিনি! ‘ মানুষ করতে পারিনি।

শান্ত ভাবে কথাটি বললেন এবার আমজাদ শেখ।

–‘তুই এভাবে বলিশ না আমজাদ, ওকে দেখেই মনে হচ্ছে সে অনুতপ্ত! ‘

আলিশার দিক থেকে দৃষ্টি সরিয়ে বললেন তারেক চৌধুরী।

–‘আমি ওকে ডিভোর্স দিয়ে দিব বাবা, তুমি পেপার্স রেডি করো!’ আমার বাচ্চাটা যেদিন হয়ে যাবে সেদিন থেকে মুক্ত।

আদরের কথাটা বর্জ্যপাতের মতো আঘাত করে আলিশার মনে, কিন্তু সে তো আঁধারকে চায় তাহলে! আলিশা ভাবে আমার তো খুশি হওয়ার কথা আমি তো এই বাচ্চাটা চাই না তাহলে মনে হচ্ছে কেনো আমার খুব কষ্ট হচ্ছে।

–‘সেটাই ঠিক হবে বাবা,তুমি সেটাই ঠিক করো!’ আমি নিজ দায়িত্বে তোমার বাচ্চাটাকে তোমার হাতে তুলে দিব।

শাহানাজ শেখের কথায় সবাই অবাক হয়ে যায়,মায়েরা মেয়েদের সংসার বাঁচানোর জন্য কতো কি করে কিন্তু তিনি সংসার ভাঙ্গার কথা বলছেন।

আলিশা হতভম্বর মতো দাঁড়িয়ে তার মায়ের কথা শুনছে।

–‘আমি কিছু বলতে চাই!’

আরোহীর কথা শুনে সকলে তার দিকে তাকালেও আঁধারের কথা শুনে তার দিকে তাকায়।

–‘তুমি রুমে যাও, এসব ব্যাপারে তোমায় কিছু বলতে হবে না!’

–‘পরিবারের ব্যাপার যেহেতু, সবাই কথা বলছে তাহলে আমি বলবো না কেনো?’

ভ্রুকুঁচকে বলে আরোহী। আঁধার নিজেও ভ্রুকুঁচকে বলে,,,

–‘আন্টি অসুস্থ তুমি আন্টিকে নিয়ে রুমে যাও!’ বড়দের ব্যাপার এটা।

–‘আমি কি ছোট নাকি!’ আর আপনি আমায় কথা বলতে দিচ্ছেন না কেনো বুঝতেছি না।

–‘আরু কথা শুনো আমার, ভালো ভাবে বলছি যাও রুমে যাও!’ রাগিয়ো না আমায় যেটা বলছি করো।

–‘আজব তো আপনি আমার সাথে এরকম করছেন কেনো, আমার কি নিজস্ব একটা মতামত থাকতে পারে না!’ নাকি আমি এই পরিবারের কেউ না?

আরোহীর কথা শুনে তারেক চৌধুরী বলেন,,,

–‘আহ্ আঁধার, ওকে বলতে দে কি বলতে চায় ও!’ তুই বল মা কি বলবি।

আরোহী এক পলক আঁধারের দিকে তাকায়, আঁধারের এই অগ্নি দৃষ্টি দেখে ভয় হচ্ছে তার কিন্তু কথাগুলো বলতেই হবে আজকে তার।

আরোহী গুটিগুটি পায়ে আলিশার দিকে এগিয়ে গিয়ে বলে,,,

–‘আপু তুই কেনো এতো বড় একটা স্টেপ নিলি বল তো,তুই তো এমন ছিলি না, আমি এই মেয়েটাকে চিন্তে পারছি না তুই আমার আপু হতেই পারিস না?’ বল না রে, তুই একা একা কেনো কষ্ট পাচ্ছিস বল তো? সবার কাছে সবকিছু সেয়ার করছিস না কেনো, তুই নিদ্বিধায় বল কেনো গিয়েছিলি?

–‘তোর কথায় গিয়েছিলাম আমি, তুই তো আমায় বাচ্চাটা নষ্ট করতে বললি! ‘

আলিশার কথাগুলো সবার ভেতরে বর্জ্য কন্ঠের মতো আঘাত করে, কি বলছে আলিশা! আরোহী হা করে তার বোনের দিকে তাকিয়ে আছে, অবাক হয়েছে সাথে ভয় ও পেয়েছে সকলে কি তাকে অবিশ্বাস করবে। আঁধার মিসেস শেখকে সোফায় বসিয়ে দিয়ে আরোহীর দিকে এগিয়ে আসে।

–‘কি বলছিস তুই এসব, আমি আমি কখন তোকে বললাম এসব?’

–‘কেনো তুই না বললি কাল আপু তোকে এবাড়িতে কেউ ভালোবাসে না, তুই আর তোর বাচ্চাটাকে ও কেউ চায় না! ‘ এতো কষ্ট সহ্য না করে বাচ্চাটা নষ্ট করে চলে যা।

–‘তুই কি পাগল হয়ে গেছিস আপু, কি সব বলছিস তুই…

আর কিছু বলার আগেই আঁধার শক্ত করে আরোহীর দুই বাহু চেপে ধরে। আরোহী ছলছল চোখে আঁধারের দিকে তাকিয়ে আছে। কিন্তু আঁধার অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তার দিকে।

আদর আলিশাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়ে বলে,,,

–‘একদম মিথ্যে বলবি না,নিজের দোষ আরোর গায়ে চাপাচ্ছিস বেয়াদব মেয়ে।

–‘আদর বিশ্বাস করো আমি সত্যি বলছি! ‘ আরো নিজেই এসেছিলো আমার কাছে, আমি…

–‘এই চুপ তোর ফালতু কথা শুনতে চাই না, আরো এমন মেয়েই না। ‘ লজ্জা করে না তোর নিজের বোনের ব্যাপারে এসব বলতে।

–‘আদর!’

–‘এই চুপ করো তোমরা।’

হঠাৎ আঁধারের চিৎকারে দু’জনে চুপ হয়ে যায়।

–‘তুই এখন চুপ করে আছিস কেনো?’ বল উত্তর দে,,,

আঁধারের ধমকে কেঁপে উঠে আরোহী। আরোহীর থেকে জবাব না পেয়ে চিৎকার করে বলে উঠে আঁধার,,,

–‘কি রে বল!’

কিন্তু আরোহী নির্বাক, আঁধার যে তাকে অবিশ্বাস করবে সেটা সে কখনো ভাবতেও পারেনি।

–‘আঁধার বাবা তুই আরোকে ভালো করে চিনিস, ও এমন নয় তুই…’

–‘আম্মু আমি ওর সাথে কথা বলছি আমি আশা রাখবো কেউ আমাদের মাঝখানে কথা বলবে না!’

–‘কিন্তু আঁধার! ‘

–‘বাবা প্লিজ! ‘

তারেক চৌধুরী এবার অসহায় দৃষ্টিতে আমজাদ শেখের দিকে তাকায়।তিনি চোখ দিয়ে শান্ত থাকতে বলেন তাকে।

–‘কি হলো তুমি এখন ও যে চুপ করে আছ, উত্তর নেই তোমার কাছে?’

আঁধারের কথা শুনে ঝরঝর করে কেঁদে দেয় আরোহী।আরোহীর কান্না দেখে আঁধার যেনো আরও ক্ষেপে যায়,,,,

–‘কাঁদছিস কেনো এখন তুই,এই একদম কাঁদবি না! ‘ কথা শুনিস আমার তুই, বল? আমি যে তোকে বার বার বারণ করলাম তুই কথা বলবি না এসব ব্যাপারে শুনলি না কেনো তুই?

আঁধারের চিৎকারে আরোহীর কান্নার বেগ আর ও বেড়ে যায়।

–‘ভাই তুই..’

–‘আমি কি বলেছিলাম মনে হয় তুই শুনতে পাস নি?’

আঁধারের শান্ত চাহনিতে বলা কথাটি শুনে আদর ঢোক গিলে,ছোট থেকেই তার ভাইটা রাগচটা! রেগে গেলে তার মাথা ঠিক থাকে না, ছোট থেকেই এসব দেখে অভস্ত্য আদর তাই যমের মতো ভয় পায় সে তার ভাইকে! তবুও বিয়ের দিন এসব ঘটনার কারণে আঁধার যে তাকে তেম কিছু বলে নি সেটাই তার ভাগ্য। অনেকটা ভয়ে ভয়ে ছিলো সেদিন সে, নাহলে আলিশাকে কখনোই বিয়ে করতো না!

–‘এই কারণেই আমি ওকে চুপচাপ ঘরে যেতে বলেছিলাম!’ তোর লজ্জা করে না নিজে যেচে এসব শুনতে যাস,তোকে প্রতিনিয়ত অপমান করে তবুও তুই বোন বেন করিস। শান্তি হয়েছে এবার সো আর কোন কথা বলবি না তুই বুঝতে পেরেছিস নাকি। আমি এখন ও কিছু বোঝাতে পারি নি!

আরোহী মাথা নিচু করে মাথা নাড়ায়, যার অর্থ হ্যা বুঝতে পারছি৷ আঁধার এবার আরোহীকে ছেড়ে দিয়ে আলিশার সামনে যায়।

–‘কি যেনো বললে তুমি একটু আগে?’

আঁধারের কথা শুনে আলিশা ভয় পেয়ে যায়। কি বলবে ভেবে না পেয়ে আঁধারের পায়ের কাছে বসে পড়ে,,,

–‘আঁধার প্লিজ আমায় ক্ষমা করে দাও, আসলে আমি দেখতে চেয়েছিলাম তোমরা আরো কে কতোটা বিশ্বাস করো! তাই ও সব বলেছিলাম, আমি আমার ভুল বুঝতে পেরেছি। তোমরা আমায় ক্ষমা করে দাও।

হঠাৎ করেই পা ধরাতে সকলে অবাক হয়ে যায়,আঁধার নিজেও অসস্তিতে পড়ে যায় হাজার হোক তারই বউয়ের বড় বোন আবার তার ছোট ভাইয়ের বউ।

–‘আরে আরে কি করছো উঠো উঠো।’

কোন মতো নিজের পা ছাড়িয়ে দূরে গিয়ে দাঁড়ায় আঁধার।

আরোহী মমে মনে ভাবে, মেয়ে জাতিকে আর কতো নিচে নামাবে আপু, যখন তখন পা ধরো আবার ভুল করতেই থাকো।

আলিশা এবার আমজাদ শেখ ও শাহানাজ শেখর কাছে যেতে ধরলেই তারা দুরে সরে যায় এবং তাদের মেয়ে নয় সে আজকে থেকে সেটাই বলে। আলিশা কি করবে ভেবে পায় না, তারেক চৌধুরীর কাছে গিয়ে আর একটা সুযোগ চায়,,,

–‘আঙ্কেল আমায় আর একটা সুযোগ দেন প্লিজ, মানুষ মাত্রই তো ভুল আমি ও করে ফেলেছি!’ নিজেকে বদলিয়ে নিবো প্লিজ আঙ্কেল!

–‘বাবা আর কিছু বলবে না, আমি যেটা বলেছি সেটাই ফাইনাল!’ বাচ্চাটা হলেই তুমি ডিভোর্স পেপার পেয়ে যাবে! ততোদিন এখানেই থাকবে তুমি শেষ আর কিছু বলার নেই কারো।

কথাগুলো বলেই উপরে চলে যায় আদর, আরোহীর বাবা মা ও উঠে দাঁড়ি বলে,,,

–‘আমরা আজকে যাই তারেক,তুই আমার ছোট মেয়েটার খেয়াল রাখিস!’

–‘একি এখন কিভাবে আপনারা যেতে পারেন! ‘

আঁকলিমা চৌধুরীর কথায় শাহানাজ শেখ বলেন,,

–‘আজকে আর জোড় করবেন না ভাবি, তবে আরোকে নিয়ে যেতে চাই আর কতো দিন সে এখানে থাকবে!’

আঁধার ভ্রুকুঁচকায়,আঁকলিমা চৌধুরী আঁধারের দিকে তাকাতেই তাকে ইশারায় না করে আঁধার। মিসেস চৌধুরী মুচকি হেসে বলে,,,

–‘আমি এই মূহুর্তে আমার মেয়েকে কোথাও যেতে দিচ্ছি না, সে আর কয়টাদিন থাকবে এখানে! ‘

–‘আর আমজাদ তোরা ও এখন যেতে পারবি না চল ফ্রেস হবি!’

এক প্রকার জোড় করেই টেনে নিয়ে যায় তারেক চৌধুরী তাকে। আঁকলিমা চৌধুরী ও শাহানাজ শেখকে ফ্রেস হতে নিয়ে যান।আঁধার যেতে ধরলেই আরোহীকে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বলে,,,

–‘কি হলো তুমি দাঁড়িয়ে আছ কেনো চলে? ‘

আরোহী আমতা আমতা করতে, আঁধার ভ্রুকুঁচকে তাকিয়ে আসে পাশে তাকায়। সে, আরোহী ও আলিশা ছাড়া কেউ নেই। তাই চট করে কোলে তুলে নেয় আরোহীকে। হকচকিয়ে যায় আরোহী, ছটফট শুরু করে কিন্তু আঁধার ছাড়ে না।

আলিশা কি করবে ভেবে পাচ্ছে না, একা একা দাঁড়িয়ে ভাবছে তার আসলে কি করা উচিত? সবাই তো নিজেরের মতো চলে গেলো কেউ তাকে কিছু বলে ও গেলেও না! চোখের পানি মুছে নেয় সে।

#চলবে?

#নীল_ডায়েরির_সেই_মেয়েটি
#আরদ্ধিতা_রুহি
#পর্বঃবোনাস

🍁

ঘরের এক কোণে বসে চোখের জ্বল বির্সজন দিচ্ছে আলিশা, একটু দুরেই আদর ডিভানে বসে মাথা নিচু করে আছে! তাকে দেখে বুঝার উপায় নেই আলিশার এইসব ন্যাকামিতে সে আসলে বিরক্ত কি না, তবে চোখ মুখ তার শক্ত।

আলিশা এবার একটু শব্দ করেই কেঁদে উঠে, আদর চোখ তুলে আলিশার দিকে বিরক্ত হয়ে তাকায়।

মূলত দুপুরের পর থেকেই আলিশা কাঁদছে, এখন রাত ১ টা! আদর প্রথমে বিরক্ত হয়ে বাহিরে চলে গেয়েছিলো কিন্তু রাতে আসার পর থেকেই আবার একই ঘটনা দেখে কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না!আলিশা কি এবার ও নাটক করছে, কিন্তু এবার তার মনে হচ্ছে আলিশা আসলে নাটক করছে না।

কিন্তু আদর বুঝতে পারছে না আলিশার কান্না করার মানে! তার মনে হচ্ছে আলিশা হয়তো এতো অপমান সহ্য করতে পারেনি তাই কাঁদছে কিন্তু আবার মনে হচ্ছে অনুশোচনায় কাঁদছে। আদর নিজেও নিজের ভাবনায় কনফিউজড!

আদর এবার কিছু একটা ভেবে নিজের জায়গা থেকে আলিশার পাশে এসে বসে পড়ে।পাশে কারো অস্তিত্ব অনুভব করতেই আঁড় চোখে তাকায় আলিশা,কিন্তু আদরকে দেখে অবাক হয়ে যায়।

আলিশার অবাকের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে আলিশার চোখের পানি নিজের বলিষ্ঠ হাত দ্বারা মুছে দেয় আদর। আলিশা কান্না থামিয়ে হা করে তাকিয়ে থাকে আদরের দিকে, আদর আলিশার রিয়াকশন দেখে সামান্য হাসার চেষ্টা করে। এতে যেনো আলিশা আরও খানিকটা অবাক হয়ে যায়।

–‘আর কেঁদো না আশা,কেঁদে কি হবে বলো! ‘ আজকের সব কিছুর জন্য তো তুমি নিজেই দ্বায়ী তাই না, আর কেঁদো না।

আদরের কথা শুনে আলিশার বুকের ভিতর একটা ব্যাথা অনুভব হয়, কিন্তু কি সেটা সে বুঝতেই পারে না। আজকে কতোদিন পর আদর তাকে আশা বলে ডেকেছে, ভাবতেই তার আগের দিনের কিছু কথা মনে পড়ে যায়।

আদর তাকে একদিন বলেছিলো তার নামটা নাকি অজগরের মতো বড় তাই আদর তাকে বেবি বলে ডাকে! কিন্তু হঠাৎ করেই আদরের ইচ্ছে হচ্ছিলো তাকে আশা বলে ডাকতে। আলিশা বলে ডাকতে পারবে না সে তাই আলিশার মাঝখানের লি টা কাটা আর সামনের আ আর শেষের শা মানে আশা বলেই সে ডাকবে।

সেদিন আদরের কথায় আলিশা ভরা রাস্তায় হাসতে হাসতে উল্টে পড়েছিলো! আনমনে সে এসব ভাবছিলো এতোক্ষণ কিন্তু আদর আলিশার দিকেই তাকিয়ে ছিলো! হঠাৎ করেই আলিশার চোখ পড়ে যায় তার চোখে, ঝট করে চোখ নামিয়ে নেয় আলিশা।

পরক্ষণেই আদরের কথার মানে ভাবতে থাকে,, লোকটা তার স্বামী কিন্তু সে তার সাথে অন্যায় করছে আর বাচ্চাটা তো তার নিজের অস্তিত্ব তবুও সে তাকে মারতে গেছিলো! আসলেই তো সব কিছুর জন্য সে নিজেই দ্বায়ী, কিন্তু সে যে আঁধারকে ভালোবাসে। আসলেই কি সে আঁধারকে ভালোবাসে। আলিশার ভাবনার মাঝেই আদর আলিশার মাথায় হাত রাখে, চমকে উঠে আলিশা।

আদর আলিশার মুখের দিকে তাকিয়ে সামান্য হাসে, হেসেই বলে,,

–‘আমি সত্যি সম্পর্কটাকে স্বাভাবিক করতে চাই আশা, তুমি হয়তো ভাবতে পারো এতোকিছু করার পরও কেনো আমি এই কথাটা বলছি তোমায়?’ কিন্তু আমি অনেক ভেবে দেখলাম আসলে দোষটা সম্পূর্ণ তোমার এমটা নয়! আমারও অনেক দোষ আছে, যার কারণে আজকে আমাদের এই পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে।

আদরের কথা শুনে আলিশা খানিকটা না প্রায় অনেকটায় অবাক হয়, আদর যে এতো কিছুর পরও তার সাথে এভাবে কথা বলবে সেটা তার ধারণার বাহিরে ছিলো! আর আদর তার দোষ গুলোকে কেনো নিজের দোষ বলছে সেটা বুঝতে পারছে না আলিশা।এরইমধ্যে আবার আদরের কথা শুনে আলিশার চোখ দিয়ে আপনা আপনি পানি বের হতে থাকে। কি থেকে কি হয়ে গেলো ,,,

–‘দেখো আজকে নিজের কিছু ভুলের কারণে আমি কারো সাথে নজর মিলিয়ে কথা বলতে পারি না!’ আসলেই আমি দোষী,আমার সাথে তোমার বিয়ে না হলে হয়তো তুমিও ভালো থাকতে। তোমার সাথে প্রথমে যখন রিলেশনে জড়িয়েছিলাম তখন তোমায় আমার ভালো লাগতো, কিন্তু পরে তোমার ব্যাবহার আমার খারাপ লাগতে শুরু করে। একদিন তোমায় পার্কে একটা ছেলের হাত ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে আমি বুঝে যাই হয়তো তুমি আমার সাথে টাইম পাস করছো। দেন তোমার সাথে ব্রেকাপ করি কিন্তু আমাদের কিছু ভুলের কথা তখন আমি আর ভাবিনি। যখন আরোকে দেখি তখন অন্যরকম একটা ভালো লাগা কাজ করতো ধিরে ধিরে ওর প্রতি আসক্ত হয়ে গেলাম ।আমার মনে হলো হয়তো ওকে ভালোবেসে ফেলেছি আমি আসলেই সেটা ঠিক সময়ের সাথে সাথে বুঝতে পারলাম!

এক নিশ্বাসে কথাগুলো বলে খানিকটা দম নিলো আদর! আলিশা আদরের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে, আরোহীর কথা বলার পর পরই আদরের মুখে একটা চমৎকার হাসি দেখতে পাচ্ছে সে। হয়তো আদর তার ছোট বোনকে সত্যিই অনেক ভালোবাসে। আদরের গলা শুনে ভাবনা থেকে বের হয়ে আসে সে,,,

–‘কিন্তু পরিস্থিতির কারণে তাকে হারিয়ে ফেললাম, আর দেখো আজকে সে আমার বড় ভাইয়ের স্ত্রী!’ জানো কতোটা কষ্ট হয় যখন তাদের একসাথে দেখি, একে অপরের প্রতি কেয়ার দেখি।

কথাটা বলার সময় আদর নিজের বুকের বা পাশটা চেপে ধরলো। আলিশা তখন ও তার দিকেই তাকিয়ে আছে। আদর আবার বলা শুরু করলো,,,

–‘আমি যে পারি না আশা,পারি না সবকিছু সহ্য করতে! ‘ কিন্তু দেখো তবুও আমি চোখের সামনে ওদের দেখছি, সহ্য করছি তো! তাহলে তুমি কেনো পারছো না আশা কেনো পারছ না তুমি? কেনো বার বার নিজেকে ছোট করছো বলো তো? আমি আমার আরোকে ফিরে পাবো না যেনে তাকে ভুলার চেষ্টা করি, না পারলেও মেনে নিতে শিখে যাবো একসময় আশা।এই যে তুমি এখন আমার স্ত্রী! জানো তোমায় আমি পরিস্থিতির কারণে বিয়ে করেছিলাম কিন্তু মন থেকে মেনে নেইনি!তবে আমাদের যে বাচ্চাটা আসছে তার জন্য আমি তোমায় আর একটা সুযোগ দিয়েছিলাম। তবে তুমি যে নাটক করছিলে সেটাও আমি জানতাম আশা তবুও তোমায় সুযোগ দিয়েছিলাম। কিন্তু তুমি কি করলে, আমাদের নিষ্পাপ এই বাচ্চাটাকে মারতে গেলে কেনো করলে আশা এমটা বলো? আমি তো আরোর পরে ওকে নিয়ে বাঁচতে চেয়েছিলাম তুমি সেটাকেও আমার থেকে কেড়ে নিতে যাচ্ছিলে? আজকে যদি ওর কিছু হয়ে যেতো তাহলে আমি আর কি নিয়ে বাঁচতাম আশা বলো আমায়।

কথাগুলো বলেই হাউমাউ করে কেঁদে উঠে আদর।আলিশার বুকে ব্যাথা শুরু হয়, আদর যে এতোটা ভালোবাসে তার বোনকে সেটা সে কল্পনায় ও ভাবেনি। আচ্ছা আঁধার কে পাওয়ার জন্য যে এতো কিছু সে করলো আসলেই কি আঁধারকে সে ভালোবাসে।

উহু তার মন বলছে না আলিশা তুই আঁধারকে কখন ও ভালোবাসিস নি! কারণ আঁধার তোর ক্রাশ! আর বিয়ে ভাঙ্গার জন্য জেদটা তোর বেশি হয়ে গেছিলো তার উপর আবার তোকেই রিজেক্ট করে তোরই ছোট বোনকে বিয়ে করা। তুই আসলেই স্বার্থপর আলিশা, তা নাহলে ছোট বোনের বিয়ে করা বরকে তুই নিজের করতে চাইতেই পারিস না!

আলিশা চোখ মুছে আদরের দিকে তাকায়, তার বিবেক বার বার বলছে,, দেখ আলিশা দেখ তুই কতোগুলো মানুষকে কষ্ট দিয়েছিস, কাঁদিয়েছিস। তা নাহলে তোরই বর তোর ছোট বোনের জন্য তোর সামনে এভাবে কাঁদতে পারতো না।একেই বলে প্রকৃত ভালোবাসা!আর তুই তো ভালোবাসা নামক জিনিসটাই বুঝিস না, তাই তো একজন মা হয়ে নিজের সন্তানকে হত্যা করতে গিয়েছিলি।

আলিশার নিজেকে পাগল পাগল লাগা শুরু করে, তার জন্য আদর, আঁধার, তার বোন আরো এমনকি আজকে তার বাবা মা ও কষ্টে আছে। একসময় যে বাবা মা তাকে বুকে আগলে রেখেছিলো আজকে তারাই তাকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে। আলিশা আর নিজেকে আটকাতে পারে না শব্দ করে কেঁদে দেয়।

আদরের হুস আসে, চোখের পানি মুছে আলিশার আর একটু কাছে এগিয়ে যায়।আলিশার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলে,,

–‘কাঁদছো কেনো এখন বলো তো, এখন কেঁদে কোনো লাভ নেই!’ এইসময় এভাবে কেঁদো না, বাবুর ক্ষতি হতে পারে। এখন থেকে আমি তোমার খেয়াল রাখবো আমার বাবুর যেনো কিছু না হয়।

আলিশা আদরকে ঝাপটে জড়িয়ে ধরে, আদর হতভম্ব হয়ে যায়।যদিও আলিশাকে সে অনেকবার জড়িয়ে ধরেছিলো কিন্তু আরোহীকে ভালোবাসার পর থেকে আর কাউকে নিজের কাছেও আসতে দেয়নি। আলিশা তাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কাঁদছে, হয়তো ঘোরের মাঝেই কাঁদছে এভাবে।নাহলে সে তো আর আমায় পছন্দ করে না,কিন্তু হয়তো মেয়েটা নিজেকে অনেক একা ভাবে তাই এসব করে। ভেবেই আদর একটা হাত আলিশার পিঠে রাখে।

আলিশা অনেকক্ষণ কাঁদার পর ধিরে ধিরে কান্না থামিয়ে দেয়। আদর এবার আলিশার মাথায় হাত রেখে বলে,,,

–‘আচ্ছা আশা আমরা কি সবকিছু নতুন করে শুরু করতে পারি না?’ আমায় কি একটু ও কেউ ভালোবাসতে পারে না, সবাই দূরেই চলে যায় সবসময়। তুমি কি আমার হাত ধরে আবার আগের মতো হয়ে যেতে পারো না আশা৷ আঁধার ভাইয়া ও আরো নিজেদের লাইফে এগিয়ে গেছে, শুধু আমরা এগুতে পারছি না। আচ্ছা আমাদের কি ভালো থাকার অধিকার নেই আশা! আমি একটু ভালো থাকতে চাই আশা,সবকিছু নতুন করে শুরু করতে চাই। নতুন করে কাউকে ভালোবাসতে চাই আশা। আমার না দম বন্ধ হয়ে যায় আশা, আমি -আমি কি করবো বলো না প্লিজ। আরোকে চোখের সামনে দেখলে কষ্ট হয় আশা। আমি স্বপ্ন দেখেছিলাম তো তাকে নিয়ে কিন্তু -কিন্তু আমি পারছি না….

আর কিছু বলার আগে আদর কেঁদে উঠে, আলিশার এবার খারাপ লাগে অনেক বেশিই খারাপ লাগে। সে তো জেদের বশে এসব করছিলো কিন্তু এই মানুষটা এতো কষ্টে আছে বুঝায় যায় না৷ স্বাভাবিক ব্যাবহার কি করে সবার সামনে দেখায়৷ ভাবতেই পারছে না আলিশা।বাচ্চাটা আগে আদর চাইতোই না আর এখন ওই বাচ্চাটার জন্য কাঁদছে মানুষ মাত্রই পরিবর্তনশীল ভেবেই আলিশা আদরের থেকে চোখ সরিয়ে নেয়।

হঠাৎ করেই আদর চুপ হয়ে যায়। আলিশাকে কোলে তুলে নেয়।আলতো হাতে বিছানায় শুয়ে দিয়ে, কাঁথা টেনে দিয়ে চোখের পানি মুছে দেয়।আলিশা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে, একটু আগেই লোকটা বাচ্চাদের মতো করে কাঁদ ছিলো আর এখন তার সাথে স্বাভাবিক ব্যাবহার করছে। লাইট বন্ধ করে দিয়ে চুপচাপ বেলকনিতে চলে যায় আদর।

আলিশার কান্না পায়,এই মানুষগুলো এতো ভালো অথচ সে এদের এতো কষ্ট দেয়।কিভাবে পারলো সে!

বেলকনির দরজার দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে আলিশা, আসলেই সে আদর, আঁধার, আরোহী সবার সাথে অন্যায় করছে। কিন্তু সে কি করবে সে ও তো পরিস্থিতির স্বীকার! পরিস্থিতি তাকে আজকে এতোটা নিচে নিয়ে এসেছে,নিজের ছোট বোনকে ও নোংরা কথা বলতে ছাড়েনি সে।

আদর বেলকনি থেকে রুমে আসে আলিশাকে একদৃষ্টিতে বেলকনির দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে বলে,,

–‘কি হলো ঘুমাও, ওদিকে কি দেখছো!’

হঠাৎ আদরের কন্ঠস্বর শুনে হকচকিয়ে যায় আলিশা।

–‘হ্যা হ্যা!’

–‘কি হ্যা হ্যা করছো, ঘুমাও!’

–‘হ্যা!’

–‘আজব কি হ্যা!’

–‘আচ্ছা তুমি কিভাবে জানলে আমি হাসপাতালে গেছি,আর কিসের জন্য গেছি?’

আদরের কথা শুনে ফট করে প্রশ্ন করে আলিশা।

আদর শান্ত চোখে তাকায় আলিশার দিকে, আলিশার চোখ মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে কতোটা ক্লান্ত সে তাই আর আদর অন্য কিছু বললো না।

–‘হাসপাতালে একটা বন্ধুকে দেখতে গিয়েই তোমায় দেখতে পাই, তখন সন্দেহ হয় তাই পেছন পেছন গেছিলাম!’

কথাটা বলেই শুয়ে পড়ে আদর, আলিশা অবাক হয় না। কারণ আদরকে কেউ ইনফর্ম করলেও সে এতে জলদি সেখানে পৌঁছেতে পারবে না সেটা সে জানে। তবে তার গালগুলো ব্যাথা করছে, অনেকগুলো মা-র খেয়ে গালগুলো ও আজকে ক্লান্ত হয়ে গেছে।

আদরকে চোখ বন্ধ করে থাকতে দেখে আলিশা নিজেও চোখ বন্ধ করে নেয়। আর মনে মনে কিছু একটা ভাবতে থাকে।কাল সকাল থেকে অনেক কিছুই হবে এ বাড়িতে! তবে ভালোই যেনো হয় সব ভেবেই ঘুমানোর চেষ্টা করে আলিশা।

#চলবে?

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে