নীল ডায়েরির সেই মেয়েটি পর্ব-১৩

0
685

#নীল_ডায়েরির_সেই_মেয়েটি
#আরদ্ধিতা_রুহি
#পর্বঃ১৩

🍁

একটি সুন্দর ভোরের সূচনা দিয়ে আজকের দিনটি শুরু হয়, পাখির কিচিরমিচির ডাকে আঁধারের ঘুম ভাঙ্গে! বুকে ভারী কিছু অনুভব করতেই মুখে মিষ্টি একটা হাসি চলে আসে আঁধারের।

চোখ মেলে তাকাতেই আরোহীর মায়াভরা মুখটি সামনে ভেসে ওঠে,আরোহীর কপালে চুমু দেওয়ার ইচ্ছে হয় হঠাৎ করেই আঁধারের। তাই ইচ্ছেটাকে দমিয়ে না রেখে আরোহীর কপালে একটা চুমু দিয়ে নেয়!

আঁধারের কাছে আজকের ভোরটি অন্যরকম ভাবে শুরু হলো, তার নিজেকে অনেক সুখী মনে হচ্ছে! এই যে তার প্রিয় মানুষটির তার বউ তারই সাথে তারই বুকে গুটিশুটি মেরে ঘুমিয়ে আছে।

আরোহীকে বালিশে শুয়ে দিয়ে আঁধার ফ্রেস হওয়ার জন্য ওয়াশরুমে যায়,ওয়াশরুম থেকে ওযু করে বের হতেই আরোহীকে এক পলক দেখে নেয়। ডাকবে কি ডাকবে না ভেবে আর ডাকে না কেনো জানি আরোহীর এতো সুন্দর ঘুমটা ভাঙ্গাতে ইচ্ছে হলো না তার। জায়নামাজ বিছিয়ে নামাজ আদায় করে নেয় সে।

নামাজ শেষ করে সালাম ফেরাতে পাশেই আরোহীকে নামাজ পড়তে দেখে অবাক হয়ে গেলো আঁধার, কিন্তু কিছু না বলেই বাহিরে চলে যায়।

কিছুক্ষণ পড়ে ২ মগ কফি হাতে রুমে প্রবেশ করে আঁধার, আরোহীকে জায়নামাজ ভাজ করতে দেখে কফি নিয়ে বেলকনিতে চলে যায় সে।

আরোহী আঁধারকে এভাবে বেলকনিতে যেতে দেখে খানিকটা অবাক হয়, সে কি যাবে নাকি নিচে যাবে বুঝতে পারে না।

বেলকনিত থেকে আরোহীকে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে আঁধার বলে,,,

–‘আরু?’

ভাবনার মাঝেই আঁধারের ডাকে হকচকিয়ে যায় আরোহী।

–‘হুম।’

–‘ওখানে দাঁড়িয়ে কি করছ, এদিকে এসো!’

আঁধারের কথামতো আরোহী গিয়ে তার সামনে দাঁড়ায়।

–‘আজকের সকালটা অনেক সুন্দর তাই না!’

এক কাপ কফি এগিয়ে দিয়ে বলে আঁধার। আরোহী মুচকি হেসে কফিটা নিয়ে বলে,,,

–‘হুম অনেক,ধন্যবাদ কফিটা দেওয়ার জন্য! ‘

আরোহীর কথায় আঁধার ভ্রুকুঁচকে তাকায় তার দিকে, আরোহী যেনো ভরকে যায়।

–‘ধন্যবাদ দেওয়ার জন্য কফিটা দেইনি।’

আঁধারের কথায় আরোহী কোণা চোখে তার দিকে তাকায়।কিন্তু কিছু বলে না তাই আঁধার নিজেই বলে,,

–‘আরু তোমায় আজকে কয়েকটা প্রশ্ন করবো, একটু ভেবে চিন্তে উত্তর দিবে কেমন!’

আরোহী মাথা নাড়ায়, যার অর্থ আচ্ছা।

–‘আচ্ছা আরু তোমার আর আমার সম্পর্ক কি?’ আই মিন আমি কি হই তোমার?

–‘স্বামী!’

আরোহীর ছোট উত্তরে আঁধার সন্তুষ্ট হতে পারে না মুখটা কালো করে নেয়। তবুও নিজেকে সামলে প্রশ্ন করে,,

–‘তুমি কি আমায় তোমার স্বামী হিসেবে মানো!’

আঁধারের প্রশ্নে আরোহী যেনো থমকে যায়,, আসলেই তো সেটা তো কখন ও ভাবেনি সে।
আরোহীকে চুপ করে থাকতে দেখে আঁধার বলে উঠে,,

–‘কি হলো বলো,নাকি এখন ও হ্যা না নাহ নিজেই জানো না!’

–‘মানি!’

ছোট উত্তর আরোহীর,আঁধার মনে মনে অনেকটা শান্তি পায়,, স্বামী হিসেবে তো মানে এটাই অনেক।

–‘আমায় ভালো করে চেনো কতোদিন ধরে? ‘

আঁধারের প্রশ্নে আরোহী চোখ তুলে আঁধারের দিকে তাকায়, তাকে দেখেই বুঝা যাচ্ছে এমন প্রশ্ন করবে আঁধার হয়তো সে স্বপ্নেও ভাবেনি।

–‘কি হলো বলো?’

–‘বিয়ের ২/৩ দিন আগে থেকে।’

আরোহীর উত্তরে হাসে আঁধার,,

–‘সিরিয়াসলি আরু তার মানে তুমি আমায় মাত্র ৩৪/৩৩ দিন ধরে চেনো?’

–‘এ মা না না তা কেনো হবে,আপনাকে তো আমি যখন ১১বছর তখন থেকেই চিনি বাট, সরাসরি দেখিনি কখনো বিয়ের ২/৩ দিন আগে একবার আমাদের বাসায় এসেছিলেন তখন দেখেছিলাম আর কি।’

আঁধারের প্রশ্নে তড়িঘড়ি করে বলে আবার মাথা নিচু করে নেয় আরোহী,,

আঁধার সামান্য হাসে,হেসেই বলে উঠে,,

–‘আর আমি তোমায় চিনি কতোদিন থেকে জানো?’

আরোহী ডানে বামে মাথা নাড়ায়, যার অর্থ সে জানেনা।

–‘ এক বছর, এক মাস, দুই দিন ধরে চিনি তোমাকে।’

ফট করে চোখ তুলে তাকায় আঁধারের দিকে আরোহী। তার দৃষ্টিতে অনেকটা অবাকের রেশ দেখা যাচ্ছে যেটা দেখে আঁধার মুচকি হাসে।

–‘কি অবাক হলে তো,হওয়ারই কথা! ‘ তখন তুমি ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারের মাঝামাঝি ছিলে,কলেজ ড্রেসে অনেকটা পিচ্চি পিচ্চি লাগতো তেমায়।

বলেই জোড়ে হেসে দেয় আঁধার।

আঁধারের কথা শুনে যতোটা না আরোহী অবাক হয়েছে তার থেকে অনেকটা রাগ হচ্ছে তার তাকে পিচ্চি বলাতে।

আরোহীর মুখের অবস্থা দেখে আঁধার হাসি কন্ট্রোল করে বলে,,

–‘ওকে কুল কুল তোমায় পিচ্চি বলছি না আর,আচ্ছা আমি যে সারাদিন তোমায় এতো জ্বালাই, আমার জন্য তোমায় লজ্জার সম্মুখীন হতে হয় এতে কি তোমার খারাপ লাগে?’

আঁধারের কথা শুনে এবার পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকায় আরোহী তার দিকে।আঁধার নিজেও তাকায় আরোহীর দিকে,কিন্তু আরোহীকে চুপ করে থাকতে দেখে তার মনটা অনেকটা খারাপ হয়ে যায় তাই আর কিছু না ভেবেই বলে দেয়,,

–‘ডু ইউ ওয়ান্ট ডিভোর্স? ‘

আঁধারের কথা শুনে আরোহীর বুকের ভেতর ধ্বক করে ওঠে, মনে হয় কথাটা তার বুকে গিয়ে আঘাত করছে, নিজের মনে মনেই কথাটা দু’বার উচ্চারণ করে আরোহী। ঠিক যতবার কথাটা উচ্চারণ করে ততোবারই তার কলিজা কেঁপে উঠছে।

চোখের কোণে সামান্য জ্বলের রেখা দেখা যায় তার, আঁধারকে আরোহীর বর্তমানে অসহ্য লাগছে! কেনো লাগছে আরোহী নিজেই জানে না।

–‘কি হলো বলো,আমি কি ডিভোর্স ফাইল করবো?’

আঁধারের কথাটা শেষ হওয়া মাত্রই আরোহীর চোখ দিয়ে কয়েক ফোঁটা পানি বের হয়, নিচে পড়ার আগেই কারো হাতের তালুতে পানিগুলো অস্তিত্ব খুঁজে নেয়।

আঁধার অনেক যত্ন সহকারে পানিগুলোকে নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে আরোহীর দিকে পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকায়। আরোহীকে মাথা নিচু করে থাকতে দেখে বলে,,

–‘চোখের জ্বলকে এতোটা সস্তা করে তুলো না সে যে কারো জন্য ঝরে পড়ে,চোখের জ্বল অনেক সচ্ছ জিনিস বুঝলে তাকে সবার জন্য ঝরাতে নেই।’

আঁধারের কথা শুনে আরোহী চোখের পানি মুছে নেয়। কিন্তু আবার কয়েক ফোঁটা পানি গড়িয়ে পরে।

–‘কাঁদছ কেনো আরুপাখি,তুমি তো সম্পর্কটাকে চাও না তাই তো ডিভোর্সের কথা বললাম।’ তার মানে কি ধরে নেব তুমিও সম্পর্কটাকে চাও,আমার সাথে থাকতে চাও!

আঁধারের কথা শুনে আরোহীর অনেকটা অভিমান হয়, কেমন স্বামী সে স্ত্রীকে ডিভোর্সের কথা বলে। থাকবে না আরু তার সাথে! মনে মনে কথাগুলো ভেবেই পেছন ঘুরে চলে যেতে নেয় আঁধার হাত ধরে আঁটকে দেয়।

–‘তুমি চলে যাচ্ছো কেনো, আমি তো তোমার সাথে কথা বলার জন্য তোমায় ডেকে ছিলাম। ‘

–‘কি বলবো আমি হ্যা, যে মানুষ সম্পর্কটাকে শুরু হওয়ার আগেই শেষ করে দিতে চায় তাকে কি বলবো আমি! ‘ বলবো যে হ্যা আমি থাকতে চাই না আপনার সাথে ডিভোর্স দিয়ে দেন আমায়।আপনি যদি ডিভোর্সই দিবেন তাহলে বিয়ে করেছিলেন কেনো আমায় সেদিন বলেন, জবাব দেন?

ক্ষোভ মিশ্রিত কন্ঠে কথাগুলো বলেই দম নেয় আরোহী, আঁধার অবাক হলেও খুশি হয়ে যায় আরোহীর কথা শুনে। কিন্তু আরোহীকে আর একটু টেস্ট করে দেখতে চায় সে তাই বলে,,

–‘তুমি তো সম্পর্কটাকে স্বাভাবিক করতে চাও না, আমার টাচ তোমার খারাপ লাগে।’

–‘দেখুন মিষ্টার তাশরিফ আঁধার চৌধুরী আই ডোন্ট ওয়ান্ট ডিভোর্স, আমি আপনার সাথে থাকতে চাই, এই সম্পর্কটাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।’ আপনাকে সব কথা মুখে বলতে হবে কেনো, আপনি বুঝতে পারেন না! আমি আপনার সব কাজেই সাড়া দেই কখন বলেছি যে আমার খারাপ লাগে, সহ্য করতে পারি না।

–‘তো তুমি বলতে চাচ্ছো তোমার ভালো লাগে আমি কাছে আসলে,আমি টাচ করলে?’

শয়তানি হাসি দিয়ে বলে আঁধার। আরোহী ভরকে যায়, ঝোঁকের বসে কি থেকে কি বলে দিয়েছে ভাবতেই তার লজ্জায় মরে যেতে ইচ্ছে হয়।

আরোহীকে আমতা আমতা করতে দেখে আঁধারের মুখে বাঁকা হাসি ফুটে উঠে, আরোহীর দিকে এক পাঁ এক পাঁ করে এগুতে শুরু করে। আরোহী ভয়েই পেছাতে থাকে, কিন্তু বেলকনিতে যাওয়ার জায়গায় না থাকায় দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যায় তার। দেওয়ালের সাথে লেপ্টে দাঁড়িয়ে এদিক ওদিক তাকাতে শুরু করে আরোহী।

আঁধার সেটা দেখে আরও খানিকটা এগিয়ে গিয়ে সামান্য দূরত্ব রেখে দাঁড়ায় আরোহীর থেকে,কিন্তু দু’হাত দ্বারা আঁটকে নেয় তাকে।

–‘তো মিস উপস সরি,মিসেস চৌধুরী তখন কি যেনো বললেন,আমি কি একবার ও বলেছি আমার খারাপ লাগে।’ উফফ তার মানে…

আর বাকিটা উচ্চারণ করে না আধার, শয়তানী হাসি দিয়ে আরোহীর দিকে ঝুঁকে পড়ে। চোখ মুখ খিঁচে বন্ধ করে নেয় আরোহী, আঁধার আরোহীর অবস্থা দেখে হেসেই বেশ কয়েক মিনিট ধরে তার ঠোঁট জোড়া চেপে ধরে থাকে আরোহীর কপালে।

নিজের কপালে শীতল কিছুর স্পর্শ পেয়ে কেঁপে উঠে আরোহী, আঁধারের নিশ্বাস তার চোখ মুখে আঁছড়ে পড়ছে। আরও খানিকটা শক্ত হয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে আরোহী।

কিন্তু আঁধার তাকে অবাক করে দিয়ে দু’হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে। আরোহীর চোখ মুখ এবার স্বাভাবিক হয়।

আরোহীকে নিজের সাথে চেপে ধরেই একটা মোড়ায় বসে পড়ে আঁধার, আবার কি মনে করে আরোহীকে সোজা করে দাঁড় করায়, আবার হুট করে টেনে কোলের মধ্যে বসিয়ে দিয়ে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে শক্ত করে।

আরোহী হাসফাস করতে শুরু করে, যেটা দেখে আঁধার হাসে কিন্তু আর ফাজলামো করে না আরোহীর সাথে৷

–‘জানো আরুপাখি স্বামী- স্ত্রীর বন্ধনটা অনেক মজবুত হয়,সেটা চাইলেও যে কেউ সহজে ভাঙ্গতে পারে না।’কেনো জানো কারণ সেটা আল্লাহর তরফ থেকে হয়।আবার স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কটাকে চাইলেই খুব সহজে ভাঙ্গা যায় কিন্তু সেটা শয়তানের চেষ্টায়। আবার অনেক সময় খুব সহজে কেউ মানিয়ে নিতে পারে না যেমনটা তোমার বোন আলিশা করছে। সেটা কিন্তু নিজ ইচ্ছেই করছে,এখন তুমি কি করবে সেটা কিন্তু তোমার উপর ডিপেন্ড করে! আমি যখনই স্বাভাবিক করতে চাই তুমি আলিশার কথা বলে বার বার আমায় রাগিয়ে দেও, তুমি নিজেই ভেবে বলো তো তুমি কি সেটা ঠিক করো? স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কটা যেমন অনেক মজবুত হয় হাজার ঝড় ঝাঁপটা পার করে ও একে অপরের পরিপূরক হয়ে থাকা যায়,তেমনি অনেকটা নাজুক ও হয়। সামন্য একটু আঘাতেই ভেঙ্গে গুরিয়ে যেতে পারে।

আঁধারের কথাগুলো আরোহীর মন ছুঁয়ে যায়,নিজেকে অনেক ভাগ্যবতী মনে হয় তার।

আরোহীকে চুপ করে থাকতে দেখে আঁধার বলে,,

–‘কি হলো আমার কথাগুলো কি তোমার খুব খারাপ লাগছে?’

–‘না আসলে আপনি অনেক ভালো করো সবকিছু বুঝিয়ে দিতে পারেন!’

ব’লেই লাজুক হাসে আরোহী,,

–‘তাহলে তো আমার একটা মিষ্টি পাওনা থাকে কি বলো?’

–‘হুম, এনে দিচ্ছে ফ্রিজে আছে দাঁড়ান! ‘

আরোহীকে আরও খানিকটা চেপে ধরে আঁধার আর ফিসফিস করে বলে,,

–‘ওই মিষ্টি এখন আপনার কাছেই আছে মেডাম, যেটা কাল ভার্সিটিতে পেয়েছিলাম!’ এই একটা কথা বলো তো, কাল তুমি সবার সামনে ওভাবে আমায় কিস করলে কেনো? না মানে তুমি তো ওমন মেয়ে না।

প্রথমের কথাটা ফাজলামো করে বললেও শেষের কথাগুলো অবাক হয়ে বলে আঁধার।

আরোহীকে চুপ করে থাকতে দেখে আবার জিজ্ঞেস করে আঁধার। উপায় না পেয়ে আরোহী আঁধারকে শুরু থেকে সবটা বলে দেয়। মুহুর্তের মধ্যে আঁধারের চোখজোড়া লাল হয়ে যায়, কপালের রগ ফুলে যায়। আরোহীকে দাঁড় করিয়ে রাগে ফুঁসতে থাকে আঁধার,আরোহী ভয় পেয়ে যায় আর মনে মনে ভাবে সবটা না বললেও হতো কেনো বললাম।

কিন্তু আঁধার ততোক্ষণে গর্জে উঠেছে,,

–‘এই মেয়ে, ওরা তোমায় বললো তুমি রাজি হয়ে গেলে যদি আমার জায়গায় অন্য কেউ থাকতো?’ তুমি জানতে না আমি ওই ভার্সিটিতে আছি, আমায় ফোন করলে না কেনো?

আঁধারের ধমকে কেঁপে উঠে আরোহী, শব্দ করেই কেঁদে ফেলে। আঁধার যেনো এবার আরও বেশি রেগে যায়,,,,

–‘কাঁদবি না এখন তুই, বল আমি না হলে অন্য কেউ যদি হতো তখন কি করতিস? ‘ ওদের এতো বড়ো সাহস আজকেই একটা ব্যাবস্থা করছি আমি।

রেগে সামনে থাকা ফুলের টবে লাথি মারে আঁধার,, সেখানে আর দাঁড়ায় না, হনহনিয়ে রুমে চলে যায়। ফোন খুঁজে কাউকে একটা ফোন দেয় সে,,,

–‘হ্যালো সোহেল, এখনই তোরা সবাই আমার সাথে দেখা কর ভার্সিটির সামনে রাইট নাও।’

বলেই কেটে দেয়, আরোহী যেনো আরও ভয়ে সিটিয়ে যায়।আঁধার এবার আরোহীকে দেখে রাগ কমানোর চেষ্টা করে,সে তো উপায় না পেয়েই কাজটা করেছে,,,,

–‘এই তুমি কাঁদছ কেনো? ‘ একদম কাঁদবে না, আর শুনো আমি একটু বাহিরে যাচ্ছি তুমি নাস্তা করে নিয়ো কেমন!

আরোহীর চোখের পানি মুছিয়ে দিয়ে বলে আঁধার।

আরোহী এবার বেশ শব্দ করে কেঁদে দেয়।
আঁধার উপায় না পেয়ে জড়িয়ে ধরে মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়।কিন্তু আরোহীর কান্না থামার কোন নামই নেই, তাই আঁধার আরোহীকে শান্ত করার জন্য বলে,,

–‘আচ্ছা বলো তো আমি তোমায় আরু পাখি বলছিলাম কেনো?’ কারণ কি? আর তোমায় কিভাবে চিনি আগে থেকে?

এবার আরোহীর কান্না অটোমেটিক বন্ধ হয়ে যায়,মাথা নাড়িয়ে না বুঝায় সে যার মানে সে জানে না।

আঁধার হাসে, হেসেই বলে,,

–‘কারণ তোমার সাথে আমার প্রথম দেখা…’

আর কিছু বলতে পারে না ফোন বেজে ওঠে, এক হাত দিয়ে আরোহীকে আগলে আরেক হাত দিয়ে ফোন রিসিভ করে,,

–‘হ্যা বল?’
————
–‘সবাই এসেছিস তোরা?’
—————
–‘ওয়েল,আমি আসছি।’
—————–
–‘ইয়া,১৫ মিনিট লাগবে যেতে।’
——–

–‘ওকে!’

ফোন কেটে আরোহীকে বলে,,,

–‘আমার যেতে হবে এখন, আমি পড়ে তোমার সাথে কথা বলবো কেমন!’

–‘কোথায় যাবেন?’

–‘কাজ আছে একটু।’

আরোহীকে আর কিছু বলতে না দিয়েই গাড়ির চাবি নিয়ে তড়িঘড়ি করে বেরিয়ে যায় আঁধার।

আরোহী ভালো করেই বুঝতে পারছে হয়তো হেমাদের টাইট দিতে যাচ্ছে সে, একটু টাইট দেওয়া দরকার তাদের কিন্তু আঁধারকে যে পরিমাণ রেগে থাকতে দেখলাম যদি বেশি কিছু করে ফেলে। মনে মনে ভাবছে আরোহী!

#চলবে?

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে