নীরবে নীরবে পর্ব ৪
“সবাই খুব মজা করে বিয়েতে গিয়েছি। আমার সাথে আমার সমবয়সী লাভলী থাকায় আমিও কম মজা করিনি। মেয়েটা কথা কম বলে কিন্তু মাঝের মধ্যে একেকটা কথা বলে সবাইকে হাসায়। রাগীব ভাই হাসতে হাসতে লুটিয়েই পড়ছিলেন। উনি বোধহয় খেয়াল করতেন আমি তার দিকে তাকিয়ে রয়েছি। কিছু অনুভূতি আপনা থেকেই প্রকাশ পেয়ে যায়। আমার মনে হয় না এখানে কন্ট্রোল করার ব্যাপারটা থাকে।
দিনটি যতটা ভালোভাবে শুরু হয়েছিল, আস্তে আস্তে ততটাই খারাপ হতে থাকে। লাভলীকে আমি আমার পাশে তেমন পাচ্ছিলামই না। তাকে বারবারই রাগীব ভাইয়ের সাথে হাসিমজা করতে দেখছি। আমি ছাড়া কেউ তাদের দিকে তাকাচ্ছে না। কারণ ওদের আগে থেকেই বন্ধুত্ব আছে। কিন্তু ইদানীং ব্যাপারটা আর সহ্য হচ্ছে না। আমি জীবনে প্রথম যাকে পছন্দ করেছি, সে কিনা এভাবে অন্য একজনের কথাবার্তা মনোযোগ দিয়ে শুনছে! কথাটা বলতে সঙ্কোচ হচ্ছে, তবু বলি ওই সময়টায় আমার খুব করে প্রেম করতে ইচ্ছে হয়েছে। যেভাবে লাভলী আর রাগীব ভাই একে অপরের চোখের দিকে তাকিয়ে অনেক কিছু গোপন রেখে উপরে স্বাভাবিকভাবে কথা বলে যাচ্ছে, আমারও তেমনটাই করতে ইচ্ছে হয়েছে। এমন সময় আমাকে অবাক করে দিয়ে কে যেন কিছু একটা ছুঁড়ে মারে। আমি স্টেজের সামনের দিকের সারিতে বসেছিলাম। কাজেই পেছন থেকে কে মেরেছে বুঝতেও পারলাম না। জিনিসটা কাগজের মোচড়ানো একটা বল। অনেক জোরে মারা হয়েছিল। কোন শয়তান এমনটা করেছে? আমি বিরক্তি নিয়ে কাগজটা খুলে লম্বা লম্বা লেখা দেখি। স্টাইলটা খুব পরিচিত মনে হচ্ছে। লেখা আছে, ‘I hate Dilu. অন্য সবার মতোই সেও কেবল সুন্দর চেনে।’
আজব, সম্ভাষণ ব্যতীত কে লিখেছে এটা? কিছুই তো বুঝিনি। পরক্ষণে আমি চমকে উঠি। আমার অংকের খাতায় এই ধরনেরই লেখার স্টাইলটা আছে। ওটা সাখাওয়াত ভাইয়ের স্টাইল।
আমি ঘুরে পেছনে তাকাই। ওখানে সে নেই। এই জায়গায়ই তো সবাই আছে। সে কোথায় যেতে পারে? আমি কোন এক কৌতূহলে নিচে চলে এলাম। অনুষ্ঠান ছাদে হওয়ায় প্রায় সবাই ওখানেই। এখানে যে কয়জন আছে তাদের মাঝে ওকে দেখতে পেলাম না। দরজার কাছে আসতেই ভাবতে শুরু করি, কেন আমি এখানে এসেছি। একটা কাগজের টানে চলে এসেছি? কাগজটা নিয়ে আবারও তাকাই। প্রতিটা শব্দই যেন অর্থ বহন করছে। মনেও হচ্ছে না, এটা আমার উদ্দেশ্যে লেখা। মনে হচ্ছে, সে রাগের বশেই এমনিতে লিখেছে। কিন্তু কী ভেবে কাগজটাকে ফেলনার মতো করে বল বানিয়ে আমার মাথার দিকে ছুঁড়ে মেরে আঘাত করেছে। এসব আগে ভাবিনি। দোয়ারে গিয়ে বাতির আলো ছাপিয়ে দূরের অন্ধকার দেখতে দেখতেই এসব ভাবনা আসতে শুরু করে। আমিও সুন্দরকে পছন্দ করি মানে? ভাবতে ভাবতেই আঁধারের দিকে এগিয়ে যাই। ওখানে সাদা একটা অবয়ব নড়ছে। খেয়ালই করিনি সাখাওয়াত ভাই সাদা পাঞ্জাবি পরেছিল। কিন্তু একটা দৃশ্য আমাকে পুরোপুরি নাড়িয়ে দেয়। সাখাওয়াত ভাইয়ের সাথে চোখাচোখি হতেই আমি বরফের মতো জমে যাই। এমনিতে পরিবেশটা ঠান্ডা। তার উপর গা বেয়ে একটা শিহরণ বয়ে যাচ্ছে। আমি কেবল তার চোখই দেখতে পাচ্ছি। মুখের বাকি অংশ কালো মাস্কের ফলে ঢাকা পড়েছে। মনে হচ্ছে, আমি এখন স্কুলের মূল রাস্তায় আছি। বৃষ্টিতে ভেজা সকাল। বাস এসেছে। কন্ডাক্টর হাঁকডাক করার সময় একটা মাস্ক পরা ছেলে বাসে উঠে। এরপর আমি ওদিকে রুদ্ধশ্বাসে তাকালে ছেলেটি একটিবারের জন্য আমার দিকে ফিরে তাকায়। দৃশ্যটা মুছে গেলে খেয়াল করলাম, এখন রাত। সামনে কোনো বাস নেই। কোনো দোকান নেই। কেবল আছে দুটো রহস্যময়ী চোখ, যেন অনেক প্রশ্ন লুকিয়ে রেখেছে।
‘এই কাগজটা কি আপনিই আমার দিকে ছুঁড়েছিলেন?’
‘কেন তোমার এমনটা মনে হয়? আমাকে ছুঁড়ে মারত দেখেছ?’
‘না, তবে লেখাটা পড়ে বুঝেছি।’
‘আমার নাম লেখা আছে?’
‘না। কিন্তু আপনার লেখা আমি চিনি।’
‘কীভাবে?’
‘অংক করিয়ে দিয়েছিলেন।’
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি মাসে জিতে নিন নগদ টাকা এবং বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।
গল্পপোকার এবারের আয়োজন
ধারাবাহিক গল্প প্রতিযোগিতা
◆লেখক ৬ জন পাবে ৫০০ টাকা করে মোট ৩০০০ টাকা
◆পাঠক ২ জন পাবে ৫০০ টাকা করে ১০০০ টাকা।
আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/?ref=share
সে মুখ অন্যদিকে সরিয়ে ফেলে। আমার এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না, আমার মনে প্রশ্ন জাগানো বাসের জন্য অপেক্ষায় থাকা অচেনা ছেলেটাই আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। ওই ছেলেটিও একই গড়নের ছিল, জায়গাটাও কিন্তু আছে মায়ের জেঠাতো বোনের শ্বশুরবাড়ি। তবু বিশ্বাস হচ্ছে না।
‘আপনার কেন মনে হয়েছে আমি সুন্দরই পছন্দ করি?’ এটা হয়তো সত্যই। কেননা আমি তার চোখ পছন্দ করি।
‘যেদিকেই যাই না কেন, সবাই রাকিবের দ্বারাই আকৃষ্ট হয়। সবাই ওকেই পছন্দ করে।’
‘আপনি মনে করেন তা উনার রূপের কারণেই?’
সে চোখ তোলে তাকায়।
‘আপনি ভুল বুঝছেন। আপনিও যদি উনার মতো সবার সাথে সহজ-সরলভাবে কথা বলেন, তবে যে-কেউ আপনাকে পছন্দ করবে।’
সে কিছু না বলে পাশ কাটিয়ে চলে যায়। কিন্তু আমার মনে হচ্ছিল, এটা কেবল তার ভাইয়ের প্রতি আক্ষেপ না, অনেকটা আমার প্রতিও। আমি কেন তাকে পছন্দ করিনি এটাই তার সবচেয়ে বড় আক্ষেপ। অবাক হবার ব্যাপার হলো, একটু আগে অবধি আমি রাগীব ভাইকে চোখে চোখে রাখছিলাম। কিন্তু ওই মুহূর্তে কোথায় গেল রাগীব ভাই, কোথায় লাভলী, আমার তাতে ভ্রূক্ষেপ নেই। আমি অন্যমনস্ক হয়ে শুয়ে পড়ি। এতে কোনো সন্দেহ নেই, সাখাওয়াত ভাই আমার সাথে রাগ করেছে। সে তো একইভাবে লাভলীর সাথেও রাগ করতে পারত। আমার সাথেই কেন? এসব কী ভাবছি? প্রতিটা কথায় কেন সাখাওয়াত নামটা আসছে? অথচ এখন আর রাগীব নামটা আমাকে আর টানতে পারছে না। টের পাই, হুট করেই যেন আমার মন এক রাস্তা দিয়ে যেতে গিয়ে অন্য রাস্তায় উঠে পড়েছে। আমি অবাক হয়ে ভাবতে শুরু করি, ওই বাসের সামনের দোকানে দাঁড়িয়ে থাকা মাস্ক পরা ছেলেটি আমাকে কতটা মোহিত করেছে। এযাবৎ রাগীব ভাইয়ের সম্বন্ধে যা পুষছি, তাকে ভালো লাগার নাম দিচ্ছিলাম। কিন্তু ওটা তো ভালো লাগা ছিল না। আমি সেই মুহূর্তে বুঝতে পেরেছি রাগীব ভাইয়ের চেয়ে বেশি ভালো আমার অন্যজনকে লাগে, যেজন বাসের উঠার পর ফিরে তাকায়। ‘আই হেট ইউ’ লাইনটা আমার খুব ভালো লাগতে শুরু করেছে। কারণ মন বলছে, ছেলেটির মনের আসল সত্যটা এই বাক্যের বিপরীত।
এই দিনটা নিকৃষ্ট একটা দিন। এই দিনে আমি লোকটির প্রেমে না পড়লে জীবনটা এতো কষ্টদায়কভাবে শুরু হতো না।
যাইহোক, পরদিন আমি ছাদ থেকে একই জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকা সাখাওয়াতকে দেখছিলাম। তার চুল কিছুটা কুঁকড়ো তা আগে আমি খেয়ালই করিনি। এমনটা কেন হয়, যখন একটা মানুষকে ভালো লাগতে শুরু করলে আমরা তার প্রতিটা পদক্ষেপই খেয়াল করি, এর আগে না? আমি এদিক থেকে তার মাথা বরাবর কালকের কাগজটা ছুঁড়ে মারলাম। সে মাথায় হাত বুলিয়ে পেছনে তাকায়। কিছু দেখতে না পেয়ে ফিরে যায়। ধ্যাত! পরক্ষণে সে কাগজের বলটা দেখতে পেল। আমার হৃদস্পন্দন কতটা অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গিয়েছিল তা বুঝানোর মতো নয়। আমি অপেক্ষায় ছিলাম, সে কাগজ খুলল। কাগজটার পিঠে ওই একই বাক্য লেখা আছে, I hate you shakhawat. আমি দেখতে পাচ্ছি, তার চোখগুলো কাগজের উপর থেকে সরছেই না। অনেক বড় একটা লাইন লিখেছি বুঝি? কিন্তু আমাকে অবাক করিয়ে দিয়ে সে কাগজটা অন্যদিকে ফেলে দিলো। রাগে আমি কাঁপতে শুরু করেছিলাম। সে কি বুঝতে পারেনি, সে যেমনটা আবেগ নিয়ে লিখেছিল, আমিও তেমনটাই আবেগ নিয়ে লিখেছি, কিন্তু আবেগটা লাইনটার বিপরীত? নাকি সে এখন আমাকে ঘৃণা করতে শুরু করেছে? আমি সারাদিন মুখ ফুলিয়ে বসে রইলাম। সন্ধ্যায় এতটা খারাপ লেগেছিল যে, আমি আমার কাগজটা খুঁজতে যাই। পুড়ে ফেলতে হবে। কিন্তু খুঁজে পাচ্ছিলাম না। রাগে অভিমানে কিলবিল করে উঠে আরও তন্নতন্ন করে খুঁজতে লাগলাম।
‘ওটা তুমি পাবে না।’
কথাটা শোনে আমি চমকে ফিরে তাকাই। সাখাওয়াত একটা হাত এগিয়ে দিয়ে তার তালুতে কাগজটা দেখায়। আমি লজ্জায় গুটিয়ে গেলাম। কিন্তু ভেতরে আর কোনো রাগ নেই। তুমি কি আঁচ করতে পারছ, আমাদের ভেতরের তখনের নীরবতার টেস্ট কেমন ছিল? একদম বিদ্যুতের প্রভাবের মতো। সেও মনে হয়, আগে এভাবে কোনো মেয়ের সামনে দাঁড়ায়নি।
আমি এগিয়ে গিয়ে তার বুকে হাত রাখি। আমার ভেতরে যতটা ধুকপুকানি চলছে, ঠিক ততটাই তার মাঝেও হচ্ছে। কারও দ্রুত হৃদস্পন্দন শুনে আমি এতটা খুশি আগে কখনও হইনি।”
দিলু কথা বলা থামিয়ে দেয়। ওই ব্যালকনির মেয়েটি কবে ঘুমিয়ে পড়েছে সে টের পায়নি। দিলু ওভাবেই আরও কিছুক্ষণ স্মৃতিচারণ করতে লাগল। কীভাবে তারা একে অপরকে প্রথম ছুঁয়েছে। কীভাবে একে অপরের চোখে চোখ রেখে কথা বলেছে। সবই তার চোখের সামনে ভাসছে। বিয়ে বাড়িতে থাকা তিনটা দিন তার জীবনে স্বর্গ ছিল। সাখাওয়াতের ছোট ছোট ব্যাপার যেমন দিলুর ভালো লাগা বাড়িয়ে দেয়, সে লক্ষ করেছে ঠিক তেমনি করে দিলুর প্রতিও তার ভালো লাগা বাড়ে। দিলু জানত না, এসবকিছু কোথায় গিয়ে ঠেকবে। বড় আপার বিয়ে হয়ে গেছে। তাদের ব্যাকগ্রাউন্ড এতটা উন্নত নয় যে, সাখাওয়াতের পরিবারের সাথে কেউ খাপ খেয়ে চলতে পারবে। নইলে এর আগে রোমেনার জন্য সাখাওয়াতের বড় ভাইকে দেখা হয়েছিল। সাখাওয়াতের মায়েরা কোনো জবাব দেয়নি। এরপর দিলুর মাও কেমন যেন তিক্ত হয়ে যায়। শেষমেশ অন্যত্রে রোমেনার বিয়ে হয়ে গেছে। এসব দুশ্চিন্তায় দিলুকে আর থাকতে হয়নি। তৃতীয়দিন সাখাওয়াত এমন কিছু একটা বলল, যেটা তাকে পুরোপুরি ভাবে বাস্তব জগৎ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে স্বপ্নালোকে নিয়ে যায়। দিলুকে সে চোখে চোখ রেখে প্রথমবারের মতো ডাকে ‘মেরা দিল’। এরপর আর কোনো চিন্তা দিলুর মস্তিষ্কে ঢুকলেও আমল পায়নি।
.
কারও ডাকে দিলুর হুঁশ ফিরল। কবে সাখাওয়াত এসে দাঁড়িয়েছে টের পায়নি। উহ্, আজ নামাজ মিস গেল। সাখাওয়াতের চোখে চোখ পড়লে দিলুর ভেতরটা মুচড়ে উঠল। আজ তার চোখে নম্র এক ভাব দেখা যাচ্ছে। এতটা নম্রভাবে সে দিলুর দিকে তাকায় না।
“আজ বাড়িতে যাব। অফিস থেকে ছুটি নিব। রেডি থেকো।”
বাড়ি? ফরিদপুর? সাখাওয়াতের ওখানে যাওয়ার তো কোনো প্রয়োজন নেই। পাঁচ বছর সে একাধারে এখানে থেকেছে। বরং এখানেই বাকিরা বেড়াতে আসে। “কেন?”
“মা ফোন করেছে। পারিবারিকভাবে রাগীবের বিয়েটা মিটমাট করতে হবে।”
সে দিলুকে হতভম্ব করে দেয়। রাগীব ভাই তাহলে বাসায় ফিরে গেছে? অবশেষে সে লাভলীর অনাগত সন্তানকে মেনে নিচ্ছে? দিলুর বিশ্বাস হচ্ছে না। যেন এইদিনের কথা, লাভলী আর রাগীব অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিল কাউকে না জানিয়ে। লাভলীর অবস্থা ধরা পড়ার পর রাগীব সমানে অস্বীকার করে যায়। এই অবস্থা সাপেক্ষে লাভলীর আকস্মিক পরিবর্তন দিলুকে বিমূঢ় করে দেয়। গিরগিটির মতো রূপ পালটে মেয়েটি বলেছিল এসবে তার হাত নেই। এতে কোনো সন্দেহ নেই রাগীব তাকে মেনে নিচ্ছে না বলেই সে এমনটা করেছে রাগীবকে বাধ্য করতে। রাগীব অগত্যা সেই যে মুখ লুকিয়ে পালিয়েছে, আর দেখা দেয়নি। কোথায় থেকেছে তাও কেউ জানত না।
“আপনি যাবেন?”
“যাব আর আসব। তাছাড়া আমার এখন কারও ভয় নেই। কাউকে আমি কৈফিয়ত দিতে যাব না যে, আমি ছোট বয়সে নোংরা কাজ করেছি কিংবা আমি পরকীয়া করি। আমি জানি, আমি দোষী নই, আমি এসব করি না।”
সে কী বলে গেল? দিলু পেছনে ফিরে হতবাক হয়ে দূরের ব্যালকনিটার দিকে তাকায়। মেয়েটিও এখন দাঁড়িয়ে আছে দেয়ালে হেলান দিয়ে।
“সে পরকীয়া করে না? আমাকে সে কৈফিয়ত দিয়ে গেছে? কেন? আমি জানি –না জানি এতে তার কী আসে যায়?”
“মনে হয়, তুমি যে ওর সম্বন্ধে ভুল ধারণা রাখছ, তা ওকে ভাবিয়েছে। রাগীবের ফিরে যাওয়ায় হয়তো সে বুঝতে পেরেছে, তোমাদের কোনো সম্পর্ক ছিল না। ঠিক তেমনই তোমাকে ও জানিয়ে দিয়েছে, ওর অন্য কোনোদিকে সম্পর্ক নেই।”
তাদের বন্ধনে নতুন এই পরিবর্তন দিলু এডজাস্ট করে উঠতে পারছে না। দূর ব্যালকনির মেয়েটি মনে হয়, দিলুকে কনফিউজ দেখে হাসছে।
(চলবে…!)
লেখা: ফারিয়া কাউছার