#না_চেয়েও_তোমায়_পেলাম🖤
#Ritu_Jahan
#Part_8
🌿🌿🌿
আমার রাগে গা জ্বলছে,আমাকে এই কাদিটার সাথে যেতে হবে।
রাতে সবাই ডিনার করে ঘুমাতে চলে গেছে।আমি রুমে এসে বসে আছি,,আসলে বসে আছি না ভাবছি কি করে আদির সাথে না যাওয়া যায়।
কিছুক্ষণ পর আদি আসলো,, এসেই সোফায় ল্যাপটব নিয়ে বসে গেছে,,,
আমি কথা কিভাবে শুরু করবো বুজতে পারছি না,,,
পরে ওনাকে,,,
আমিঃ এই যে এই যে শুনছেন,,
ওনি আমার দিকে তাকিয়ে,,,
আদিঃ আমার নাম এই যে এই যে না, আমার নাম আদি সো এই যে না বললে খুশী হবো।
আমি মুখ ভেংচি কেটে,,,
আমিঃ সে যাই হোক,, আমি আপনার সাথে যাবো না,,,হুহ
আদিঃ আমি কি যেতে বলছি নাকি আমি তো বারণই করলাম আম্মু তো যেতে বলছে।
আমিঃ আমি জানি না কিছু আমি যাব না ব্যাস।
আদিঃ তো আম্মুকে গিয়ে বলো আমাকে বলে লাভ কি।
আমিঃ আমি আম্মুকে বলতে পারবো না।
আদিঃ তা কেন পারবে শুধু তো আমার সাথেই জগরা করতে পারবে।
আমিঃ কি আমি ঝগড়া করি?
আদিঃ ( এইরে ওতো ক্ষেপেছে,,এবার আমাকে কাঁচা চিবিয়ে খাবে) আরে না তুৃমি কই ঝগড়া করো।আর তুমি যদি না যেতে চাও আম্মুকে বলো আমাকে না।
এই বলে আদি সোফায় শুয়ে পড়ে,,,
ধুর আমি আম্মুকে কিভাবে বলবো,,,ভাবতে ভাবতে শুয়ে পড়লাম
হঠাৎ আরিয়ানের কথা মনে পড়লো।সারাদিনে ঝামেলায় মনে আসেনি এখন একাকিত্ব আবার মনে করিয়ে দিল।খুব মিস করছি।আচ্ছা ও কি আমায় একটু ও মিস করছে না।।জীবনটা আসলেই অদ্ভুত কখন কি থেকে কি হয়ে যায় তা কেউ বুজতে পারে না।
সকাল বেলা ওঠে নাস্তা করে রেডি হয়ে আমাদের বাড়ি গেলাম সবাই।
দুপুরে খাওয়াদাওয়া করে বিকেলের দিকে চলে আসলাম।পরিবারের জন্য খারাপ লাগছে অনেক।একটু পর রওনা দিতে হবে দূর পথে।যেতে তো একটু ও ইচ্ছে করছে না। তবুও নিজের ইচ্ছেকে চাপা দিয়ে যেতে হচ্ছে।
গাড়ি চলছে তার আপন গতিতে।আমার পাশে আদি বসে আছে মোবাইল টিপছে কিন্তু মাঝে অনেকটা দূরত্ব।কি রকম ঘুমও আসতেছে।
আমি মোবাইল টিপছি হঠাৎ খেয়াল করলাম ঋতু ঘুমাচ্ছে।গড়ির ব্রেক এওর মাথাটা পড়ে যেতেই আমি ধরে ফেললাম,,,, আমার কাঁধেই ওর মাথা রাখলাম।
আদির ডাকে ঘুম ভাঙ্গে আমার।আমার মাথা ওর কাঁধে দেখে তাড়াতাড়ি ঠিক হয়ে বসলাম।ঘুমালে আমার হুশ থাকে না কি করি।
আদিঃ নামো আমরা চলে আসছি।
আমিঃ কি এতো তাড়াতাড়ি?
আদিঃ তাড়াতাড়ি আসি নাই তুমি তো সারাপথ ঘুমাই ছিলা বুজবা কেমনে কতক্ষণ লাগছে।
ওর কথায় কিছুটা লজ্জা পেলাম আসলেই আমি খুব ঘুম কাতরে।
দুজনে গাড়ি থেকে নামলাম।আমিতো বাড়ি দেখে হা হয়ে গেছি।গ্রামের বাড়িটা দেখতে অনেক সুন্দর এটা তো তার থেকে সুন্দর। রাতের আধারে তেমন বুজা নয় গেলে যেটুকু বুজলাম বাড়িটা অনেক সুন্দর।
আদিঃ কি হয়েছে দাড়িয়ে আছো কেন চলো,,
ভিতরে ডুকে তো আরো অবাক।অনেক সুন্দর করে ডেকোরেশন করছে বাড়ির ভেতরে রাজপ্রাসাদ মনে হচ্ছে।
আদি আমাকে রুমে নিয়ে আসলো,,,,
আদিঃ এটা তোমার রুম,,,আর এ নাও তোমার লাগেজ।
এটা বলে আদি ওর লাগেজ টা হাতে নিয়ে চলে যাচ্ছে এমন সময় বললাম।
আমিঃ আপনি কোথায় যাচ্ছেন?
আদিঃ সোফায় শুয়ে শুয়ে তো আর কোমর বাঁকা করতে পারবো না, এমনিতে ও এই তিনদিনে আমার পিঠে ব্যাথা হয়ে গেছে।এখন তো আমরা দুজন তাই কাপল সাজার অভিনয় করা লাগবে না।তাই ওই রুমেই থাকবো।
বলে ওনি চলে গেল,,
আমি কিছু বললাম না মাথা নিচু করে ফেললাম। ঠিকই তো বলেছেন আমার জন্য ওনি অনেক কষ্ট করেছেন।আমার জায়গায় অন্যকেউ থাকলে এতোক্ষণে ওনি স্বামীর সব অধিকার পেতো কিন্তু আমি দিতে পারবো না।
এদিকে আদি ভাবছে,,
যতোদিন না তুমি আমাকে আপন করে নিবে ততোদিন তোমার থেকে দূরে থাকবো,,,
ফ্রেশ হয়ে বের হলাম,,অনেক ক্ষিদে লাগছে তাই রুম থেকে বেরিয়ে দেখি আদি কিচেনে ফ্রিজ থেকে করছে,, কি যেন বের করছে?
আমিঃ কি করছেন?
আদিঃ রাতের রান্না করছি,,,
আমিঃ আপনি কেন রান্না করছেন।আমাকে ডাকলেন না কেন দেখি শুরুন আমি রান্না করতেছি।
আদিঃ কেন মেয়েরা রান্না করতে পারলে ছেলেরা কেন রান্না করতে পারবে না।লাগবে না তুমি গিয়ে টিবি দেখো আমি রান্না করছি।
আমিঃ আপনি রান্না করতে পারেন?
আদিঃ হুম। আগে তো আমি এখানে একা থাকতাম তো নিজে নিজে রান্না করতাম আর আম্মু থাকলে ও ফ্রাইডে তে আমি রান্নায় হেল্প করতাম। সো এখান থেকে যাও।
আমিঃ ওকে ঠিক আছে,, বাট কাল থেকে আমি রান্না করবো।
আদিঃ ওকে।
আমি গিয়ে টিবিতে কার্টুন দেখছি,, কিন্ত পেটে ইদুর দৌড়াচ্ছে,,
হঠাৎ আদি আমার সামনে ওনি কতো গুলা চিপস এনে বলে,,,
আদিঃ রান্না হতে হতে এগুলো খাও,,,
আমি খুশিতে লাফিয়ে ওঠে চিপস গুলো নিলাম।
আমিঃ আপনি কি ভাবে জানেন আমার এই চিপস গুলো ফেবারিট 😋।
আদি একটা মুচকি হাসি দিয়ে চলে গেল,,,
আমি উওর না পেয়ে বসে বসে চিপস খাচ্ছি আর কার্টুন দেখে হাসতেছি।
আদি রান্না করতে করতে হাসছে,,,,,, এখনও পৃথিবীতে এমন মেয়ে আছে এই বয়সে কার্টুন দেখে,,,, হা হা হা,,,আদি তুই একটা বচ্চা বিয়ে করেছিস।
রান্না হয়ে গেছে।আমি আর আদি খেতে বসলাম।।আমি ভাবছি ছেলেরা আবার ভালো রান্না করতে পারে নাকি কিন্তু আসলেই ওর রান্নাটা খুব খুব মজা হয়েছে।পেট ভরে খেয়ে রুমে গিয়ে শুয়ে পড়লাম।মোবাইলে এলার্ম দিলাম যাতে তাড়াতাড়ি ওঠতে পারি।ওনার আবার সকালে অফিস আছে,,, আমার শাশুড়ী মা পাঠিয়েছে ওনাকে সময় মতো সব সামলে দিতে,যদি দেরিতে ওঠি তাহলে কেমনে হবে।
সকালে এলার্ম এর সাথে সাথে ওঠে পড়লাম।ওনার জন্য নাস্তা রেডি করলাম,,,ওনিও ফ্রেশ হয়ে আসলো নাস্তা করে তাড়াতাড়ি চলে গেল,, যাওয়ার সময় বলে গেলো কিছু লাগলে ওনাকে কল দিতে,,,,
সারাদিনই একা একা কেটেছে,,,আম্মুদের সাথে আর আমার শাশুড়ীদের সাথে কথা বলে রান্নাবান্না শেষ করে,,,ফ্রেশ হয়ে আসলাম দেখি আমার মোবাইলে আননোন নাম্বার থেকে কল আসছে,,,
আমিঃ আসসালামু আলাইকুম। কে বলছেন?
হাসিবঃ ওয়ালাইকুম সালাম ভাবী আমি হাসিব।
আমিঃ ও আচ্ছা ভাইয়া বলেন কেমন আছেন?
হাসিবঃ আলহামদুলিল্লাহ ভালো।আপনি
আমিঃ জ্বি ভালো
হাসিবঃ আপনার একটা হেল্প চাই
আমিঃ কি হেল্প?
হাসিবঃ রিয়ার নাম্বারটা দিতে পারবে প্লিজ।
আমিঃ কেন?
হাসিবঃ আপনার মতো কাপল হওয়ার জন্য🙈। কতোদিন আর সিঙ্গেল থাকবো হা হা।
আমি ও হেসে দিলাম
আমিঃ কিন্তু ওর পারমিশন ছাড়া নাম্বার দেয়া ঠিক হবে না।
হাসিবঃ কিছু হবে না।আমার উপর বিশ্বাস রাখতে পারেন।
অনেক জোরাজোরিতে নাম্বারটা দিলাম আর আমি হাসিব ভাইয়াকে এই কয়েকদিনে যা চিনলাম ওনি খুব মিশুক আর ভালো মানুষ সো সমস্যা হবে না তাই দিয়ে দিলাম।তারপর খেয়ে কিছুক্ষণ ঘুমিয়ে নিলাম।
এদিকে বিকেল পেরিয়ে রাত ৯ টা হতে চললো।এতো বড় বাড়ীতে একা খুব ভয় লাগছে।আমি এমনিতে ভীতু তার উপর এতো রাত ভয়ে হাত পা কাঁপছে। আর সকালে তাড়াহুড়োয় ওনার নাম্বারটা নেয়া হলো না।এখনতো আমার কান্না আসছে একটা মানুষ এতো কেয়ারলেস কিভাবে হতে পারে ঘরে যে একটা মেয়ে আছে সেটা ভুলে গেছে নাকি।আজকে আসুক বুজাবো মজা।
আস্তে আস্তে ভয়তো বেড়ে যাচ্ছে।,,,
চলবে?