নারীর সতীত্ব পর্ব-১২

0
1766

#নারীর_সতীত্ব
#পর্ব_১২
Wohad Mahmud

কাল রাতের অপমানের বদলা সাবনাজের উপর দিয়ে তুলছে। তারপর চা আরো গরম করে নিয়ে এসে এমন জঘন্য কান্ড ঘটিয়েছে।

শাড়িটা চা পড়ে খারাপ হয়ে গিয়েছে চেঞ্জ করতে হবে কিন্তু সাবনাজ তো চেঞ্জ করতে পারবে না। হাত দিয়ে কিছু ধরতে পারবে না। কোনো উপায় না পেয়ে আমি চেঞ্জ করিয়ে দিলাম। চেঞ্জ করা শেষ হলে আমি বলি তুমি এবার রেস্ট নাও , মলম দিয়ে দিছি ঠিক হয়ে যাবে তুমি খুব তাড়াতাড়ি। সাবনাজ আমাকে বলে প্লিজ তুমি বাহিরে গিয়ে ভাবিকে কিছু বলো না। আমিও জানি ভাবি এটা ইচ্ছে করেই করছে। ভাবি চাচ্ছে যে তুমি ঝামেলা সৃষ্টি করো। যাতে আমার বাবা আর ভাইয়ের চোখে তোমরা খারাপ হয়ে যাও।

আমার বাবা আছে ছোট ভাই আছে। আমি চাই না তাদের সামনে কোনো সমস্যা হোক। সবাই ভাবছে এটা ভুল করে হয়েছে। কিন্তু তুমি আমি জানি এটা ইচ্ছে করেই করছে। বাবা ভাইয়া জানতে পারলে সমস্যা সৃষ্টি হবে।

আমি বললাম আচ্ছা ঠিক আছে সমস্যা নেই। আমি কিছু বলব না। আমি নিচে গিয়ে বাবার পাশে বসলাম। বসার সাথে সাথে আমাকে বলল সাবনাজ কেমন আছে। আমি বললাম ঠিক আছে সমস্যা নেই। গরম চা হাতে পড়েছে তো তাই একটু জ্বলছে।

সাবনাজের ছোট ভাই এখান থেকে উঠে চলে যায়। আমি বুঝতে পারলাম সাবনাজের কাছে গিয়েছে। আমি মনে মনে ভাবতে থাকলাম সাবনাজের বাবা আর ভাই এখান থেকে যাক তারপর ভাবিকে একটা শিক্ষা দিতে হবে। না হলে এভাবে আর সম্ভব নয়।

আমি রান্না ঘরে গেলাম গিয়ে মাকে সাহায্য করছি। ভাবি এতো জঘন্য একটা কাজ করে নিজের রুমে চলে গিয়েছে। সাবনাজের হাত তো ভালো নেই এখন কাজ করতে পারবে না।আর মাহমুদা টিউশনিতে আছে। অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই চলে আসবে‌। মেসে থাকতে রান্না করার অভ্যাস আছে তাই আর সমস্যা হলো না। মাহমুদা চলে এসেছে। আমাকে দেখে মাহমুদা হাসতে হাসতে বলে কী রে ভাই আজ থেকে বাসার কাজ করবি নাকি। আমি বললাম তুই উপরে গিয়ে দেখে আই আগে।

মাহমুদা উপর থেকে ঘুরে এসে বলে এটা কীভাবে হয়েছে ভাইয়া। সাবনাজ ভাবির হাত তো অনেকটা পুড়ে গিয়েছে। আমি বললাম সাইমা ভাবি সাবনাজ কে চা দিতে গিয়ে ভুল করে হাতে পড়ে গিয়েছে। তাই এমন হয়েছে।

মাহমুদা কর্কশ গলায় বলে। তোর কি এখনো মনে হয় এটা ভুল করে হয়েছে। এতকিছুর পরে এটা দাঁড়াই যে সাইমা ভাবি এটা ইচ্ছে করেই করেছে। এবার কিছু একটা করতে হবে তাছাড়া এভাবে চলবে না।

আমি বললাম চুপ কর। শান্ত হয়ে যা এতো উত্তেজিত হওয়ার ভালো না। বাসায় মানুষ আছে সাবনাজের বাবা আর ভাইয়া আছে। এই অবস্থায় আমি কোনো ঝামেলা সৃষ্টি চাচ্ছি না। এই বিষয়ে আর কিছু বলবি না। আমার কথা শুনে মাহমুদা রাগে রাগে নিজের রুমে চলে যায়।

সাবনাজের ভাই আমাকে ডেকে বলে একটু এদিকে আসবেন দুলাভাই। তারপর দুজন ছাদে গিয়ে কথা বললাম। সাবনাজের ভাই বলে আমি আপনার কষ্ট টা বুঝতে পারছি। আপনার বাবার হার্ট অ্যাটাকে আপনি অনেক কষ্টের মধ্যে আছেন। আর আপনি আমার বোনকে অনেক ভালোবাসেন এটাও জানি। কিন্তু আপনি আপনার স্ত্রীকে যতটুকু ভালোবাসেন আমিও কিন্তু একটা ভাই হিসেবে আমার বোনকে ততটুকু বা তার থেকে বেশি ভালোবাসি। কিন্তু আমার বোনকে আমি এভাবে এখানে কষ্ট পেতে দেখতে পারি না। নির্যাতিত হতে দেখতে পারি না। তাও আমাদের উপস্থিতিতে

আমি বললাম কেন কী হয়েছে? কে নির্যাতন করলো সাবনাজ কে?

দুলাভাই আপনিও বিষয় টা বেশ ভালো করেই জানেন আপনার বড় ভাবির বিষয়ে।

আমি মনে মনে ভাবলাম হয়তো সাবনাজ কিছু বলছে মনে হয় না হলে জানতে পারলো কীভাবে। আমি বললাম সাবনাজ কী কিছু বলেছে?

না দুলাভাই আপু কিছু বলে নাই। আপু যদি আগে বলতো তাহলে তো ভালোই হতো। কিন্তু সে তো মুখ বোজা নিজের কোনো চিন্তা নেই শুধু অন্যের চিন্তা করেই জীবন পার করে দিল। আজ সকালে যখন আপনার বড় ভাবি সাবনাজের হাতে গরম চা ফেলে দেয় তখন আপনারা কেউ খেয়াল না করলেও আমি তার মুখে খুশির ছাপ স্পষ্ট দেখতে পরেছি মনে হচ্ছে হাজার বছরের লুকানো প্রতিশোধ নিয়েছে আজ। আর আমি আপনার মাহমুদার কাছে থেকে কিছু টা হলেও জানতে পেরেছি আপনার ভাবির বিষয়ে।

আহ মাহমুদা আহ, কী একটা কাজ করছিস তুই। তোর এসব পাগলামির কারণে একটা সংসার ভেঙে যাবে। আমি বললাম তুমি চিন্তা করো না। এই বিষয় টা আমি সামলিয়ে নিব। আর এই কথা তুমি আর কাউকে বলো না।

আচ্ছা ঠিক আছে দুলাভাই আমি কাউকে বলছি না। আমি আপনার সম্পর্কে মাহমুদার কাছে থেকে অনেক কিছু শুনেছি আর আমার বোনকে অনেক ভালোবাসেন। আমি চাই না আমার পরিবার কিছু জানুক তারা যদি জানতে পারে তাহলে অনেক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। আর আমি এটাও চাই না আপনাদের ভালোবাসা সমাপ্তি ঘটাতে চাই না। আমি ঠিক করে নিব‌ কিন্তু আপু যদি কিছু বলে বাবাকে , তাহলে আমি কিন্তু কিছু করতে পারব না।

তারপর ছাদ থেকে সোজা মাহমুদার রুম চলে এসে বললাম তোর সমস্যা কী?

মাহমুদা বলল কেন ভাইয়া কী হয়েছে?

আমি তোকে বুদ্ধিমান মনে করতাম। আর বাসায় যা হয়েছে তুই সব সাবনাজের ভাইকে বলে দিয়েছিস। এখন যদি সে তার বাসায় সব বলে দেয় তাহলে একটা ঝামেলা সৃষ্টি হবে। ভাগ্য ভালো যে সাবনাজের ভাই তোর মতো বোকা না, আর সেই জন্যই এখনো কিছু বলে নাই।

আমি তো তেমন কিছু বলি নাই ভাইয়া। বড় ভাবির সম্বন্ধে জানতে চেয়েছিল তাই আমি একটু বলেছি। আমি সত্যিই জানতাম না সে কিছু বুঝতে পারবে।

আচ্ছা বাদ দে এখন যা হওয়ার হয়েছে আর কিছু বলার দরকার নেই। সবকিছু আমাদের সমাধান করতে হবে। সাবনাজের বাবা আর ভাইয়া চলে যাক তারপর ভাবি ভাইয়া কে ডেকে সবকিছুর সমাধান করব মায়ের সামনে।

তুই তো আর কিছু জানিস না কী হয়েছে!

আবার কী হয়েছে ভাইয়া?

যেদিন সাবনাজের ফোন কল নিয়ে ঝামেলা সৃষ্টি করে সাইমা ভাবি সেদিন সাবনাজকে থাপ্পড় মেরেছিল ভাবি। কিন্তু আমাকে তখন কিছু বলে নাই সাবনাজ শুধু এই কারণে যে, ওই দিন সাবনাজের পরিবার থেকে মানুষ আসার কথা ছিল আমাদের বাড়িতে। তারা যদি এটা জানতে পারত তাহলে পরিস্থিতি অন্যরকম হতো।

বলিস কী ভাইয়া। আমাকেও তো কিছু বলে নাই। একটা মেয়ে কতটা খারাপ হলে অন্য একটি মেয়ের গায়ে হাত তুলতে পারে তাও আবার অন্য কারণে।

আমি কিন্তু এই কথাগুলো শুধু তোর সাথে বলেছি আর কাউকে বলি নাই। এমনকি মায়ের সাথেও না। বোকার মতো যেন আবার কাউকে বলবি না।

মাহমুদা অনুশোচনা নিয়ে বলে আচ্ছা ঠিক আছে বলব না। প্রথমবার ভুল হয়েছে এবার আর ভুল হবে না। এই ভুলের জন্য তুই আমার প্রতি যেন বিশ্বাস হারিয়ে ফেলিস না প্লিজ। বলেই কান্না করে দেয়।

আমি হাত দিয়ে চোখের পানি মুছিয়ে দিয়ে বলি ধুররর পাগলি বোন আমার। ভুল তো মানুষের দ্বারা হয়। আর খারাপ সময়ে তুই আমার সাথে ছিলি সব সময়। আমি নিজের প্রতি বিশ্বাস হারিয়ে ফেলব তাও তোর প্রতি না।

মাহমুদার কাছে থেকে বাবার রুমে গিয়ে দেখি কেউ নেই রুমে। বাবাও নেই শ্বশুর ও নেই। আমি মাকে গিয়ে বললাম বাবা কোথায় দেখছি না কেন?

তোর বাবার আর তোর শ্বশুর একটু নিচে গিয়েছে হাঁটতে। অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই চলে আসবে। সারাদিন শুয়ে থেকে থেকে পিঠে ব্যথা হয়েছে তাই গিয়েছে।

তুমি জানো বাবার অবস্থা খারাপ। হাঁটার দরকার হলে রুমে বা ছাদে হাঁটতে পারত। এখন বাইরে গিয়েছে আবার নিশ্চয়ই সিগারেট খাবে। আমি বাবাকে নিয়ে আর পারিনা। একটা কথাও শুনে না। আর তুমি বাবাকে কিছু না বলে বলে এমন হয়ে গেছে বাবা। তুমি যদি একটু শাসনে রাখতে তাহলে আজ এমন হতো না। আমি তো সিগারেটের গন্ধ একদম সহ্য করতে পারি না। বাবা কীভাবে খায় আল্লাহ জানে।

পিছন ঘুরে দেখি সিঁড়ি দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে নিচে নেমে আসছে সাবধান। আমি বললাম নিচে নেমে আসলে কেন।

উপরে আর ভালো লাগছে না একা একা যন্ত্রণা অনেকটা কমে গিয়েছে। অল্প একটু যন্ত্রণা করছে। মা একা একা রান্না করছে। আমি গিয়ে সাহায্য করছি।
মাহমুদা এসে বলে থাক ভাবি তোমার হাত পুড়ে গিয়েছে কিছু করতে হবে না। আমি আছি সাহায্য করছি। মাহমুদা বলে বাবা তো বাইরে গেছে দেখ আবার সিগারেট খেয়ে আসবে।

সাবনাজ বলে একা একা গিয়েছে না কী কারো সাথে বাইরে গিয়েছে?

আমি বললাম না একা যায়নি তোমার বাবার সাথে গিয়েছে বাইরে।

সাবনাজ হাসতে হাসতে বলে তাহলে আর চিন্তা করার দরকার নেই। আমার বাবা সিগারেট খাওয়া তো দূরের কথা গন্ধ সহ্য করতে পারে না। আশেপাশে কাউকে সিগারেট খাওয়া দেখলে আগে একটু জ্ঞান ঝেড়ে দিবে। আর সাথে কেউ গেলে তাকে খেতে দিবে না সমস্যা নেই। বাবাকেও(শ্বশুর) সিগারেট খেতে দিবে না।

আমি বললাম আমার বাবা যদি তোমার মতো হতো তাহলে অনেক ভালো হতো। একটা জিনিস কী জানো তোমাদের বাড়ির সবকিছু ভালো আমাদের মতো এমন না।‌ তোমার বাড়ির বড় ভাবির আচার আচরণ কত সুন্দর কোনো ঝামেলা সৃষ্টি করে না। আর আমাদের বাড়ির বড় ভাবির দিকে তাকিয়ে দেখো সবসময় অন্যের ক্ষতি করার চিন্তা ভাবনা। সত্যি বলতে তোমাদের বাড়িতে যেই দুইদিন ছিলাম অনেক ভালো সময় কেটেছে। কিন্তু এখানে এসে মনে হচ্ছে শয়তানের আড্ডা খানায় চলে এসেছি। আমি শুধু মা বাবা আর আমার বোনের জন্য এখানে আছি।১৩৮৫

দরজার পাশে দাঁড়িয়ে আমার সব কথা শুনছিল কিন্তু আমি বা কেউ খেয়াল করি নাই। কারণ আমরা যে পজিশনে দাঁড়িয়ে ছিলাম তার ঠিক পিছনে ভাবির ঘরের দরজা। সেই জন্যই আমরা কেউ খেয়াল করি নাই। ভাবির কথা শুনে আমি পিছনে ফিরে তাকালাম। ভাবি আমাকে বলে,,,,,,,,,,

চলবে,,,

বি.দ্র: ভুল ত্রুটি ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে