নারীর সতীত্ব পর্ব-০৫

0
2303

#নারীর_সতীত্ব
#পর্ব_০৫
Wohad Mahmud

আর যায় হোক সাবনাজ এতো কিছুর মধ্যে একটা কাজ কিন্তু ভালো হয়েছে।

কী ভালো কাজ হলো আবার?

ওই যে তোমার অল্প একটু হলেও লজ্জা ভেঙে গিয়েছে। আমাকে তুমি করে বলছো এখন, আর আমার হাত ধরে আছো। সারাজীবন এভাবে থাকবে। আমার কথা শুনে কিছু টা লজ্জা পেয়ে আমার হাত ছেড়ে দৌড়ে চলে যায় আর বলে আমি মাহমুদার কাছে যাচ্ছি।

এখন যাওয়ার সময় হয়েছে সবকিছু গুছিয়ে নিয়েছি। যাওয়ার সময় আমি আর সাবনাজ সবার থেকে বিদায় নিচ্ছি। কিন্তু মাকে আজ অন্যরকম লাগছে। আমার সাথে সাবনাজের সাথে ভালো করে কথা বলছে না। মুখটা কেমন গম্ভীর করে রেখেছে। যাওয়ার সময় মায়ের এমন গম্ভীর মুখ দেখে মন টা সত্যিই অনেক খারাপ লাগছে। আজ সকাল পর্যন্ত বেশ ভালোই ছিল কিন্তু হঠাৎ এমন হয়ে যাওয়ার কারণ কী। নিশ্চয়ই ভাবি কোনো কাটি মেরেছে। ভুলভাল কোনো কিছু বলেছে।

আমি বললাম তুমি মন খারাপ করছো কেন। আমরা তো আর সারাজীবন এর জন্য চলে যাচ্ছি না। আবার আসবো তো। প্লিজ মন খারাপ করো না।

মা তখন বলে বড় বউ আমার প্রেশারের ঔষধ টা দাও তো। তুমি ছাড়া আমাকে আর এই বাসায় কে খোঁজ খবর নেই। সবাই তো বাহানা আর মিথ্যা দিয়ে এই বাসা ভরিয়ে রেখেছে। কিন্তু আমি মায়ের কথা ঠিক বুঝতে পারলাম না কী বোঝাতে চায়। তারপর তার রুমে চলে যায় আমার কথার কোনো জবাব না দিয়ে। আমার আর বুঝতে বাকি রইল না নিশ্চয় ভাবি কোনো কাটি মেরেছে আমাদের নামে। তাকে ভাবি বলতেও ঘৃণা করে।

বড় ভাবি তখন ভিলেন দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে। মনে হচ্ছে শয়তান হাসছে।

মাহমুদা কে আড়ালে ডেকে বললাম মায়ের কী হয়েছে রে এমন গম্ভীর মুখে করে আছে কেন? আজ সকালেও তো মায়ের সাথে হেসে কথা বললাম কিন্তু এখন এমন করেছে আছে কেন?

আমি জানি না ভাইয়া কী হয়েছে। দেখ বড় ভাবি আবার তাল মেরেছে। তোদের নামে বানিয়ে বানিয়ে কী সব মিথ্যা কথা বলেছে মনে হয়।

আর কোনো উপায় না পেয়ে আমিও মন খারাপ করে চলে আসলাম। দুই ঘন্টার জার্নি পথ। বেশ ক্লান্ত লাগছে। সাবনাজের বাসায় এসে সবার সাথে ভালো মন্দ কথা বলে রুমে আসলাম তারপর ফ্রেশ হয়ে একটা ঘুম দিলাম। সাবনাজের ডাকে ঘুম ভাঙল। ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে বসে থাকলাম। তারপর সাবনাজ বলল__

আচ্ছা তোমার বড় ভাবি এমন কেন?

কেমন?

সকালে রান্না করার পর আমার সাথে কত সুন্দর করে কথা বলল। অনেক কিছু জানতে চাইলো। অনেক মিষ্টি সুরে কথা বলল। কিন্তু দুপুরে আমার সাথে কত খারাপ ব্যবহার করলো। একটা থাপ্পড় ও মেরেছে।

তোমাকে থাপ্পড় মেরেছে? তখন আমাকে বললে না কেন? এতো বড় সত্যি তুমি আমার থেকে কীভাবে লুকালে। আমাদের বাসায় থাকতে শুধু একবার বলতে পারতে। তাহলে আমি ওই বজ্জাত মহিলার উচিত শিক্ষা দিতাম জীবনে আর কখনো কারো গায়ে হাত তুলতো না। গায়ে হাত তোলার আগে দশ বার চিন্তা করবে।

সাবনাজ তখন বলে না বলেই ভালো করছি। আমি চাই না কোনো ঝামেলা সৃষ্টি হোক। একটা বিষয় চিন্তা করো মাহমুদ। আমি যদি তখন বলতাম তাহলে তুমি রাগের মাথায় কি করতে বলা যায় না। তোমার রাগান্বিত অবস্থায় আরো রাগিয়ে দিতে চাইনি। আর আমার বাসা থেকেও মানুষ আসছিল। এসে যদি তারা এসব দেখতো তাহলে পরিস্থিতি আরো খারাপ হয় যেত। তাই বলি নাই।

আমি তখন সাবনাজের হাত ধরে বললাম। আচ্ছা তুমি এতো ভালো কেন? নিজের টা না ভেবে সব সময় অন্যের ভালো দেখো। আর ঠিকই করেছ তখন না বলে। যদি বলতে আমি নিজেও জানতাম না কী করতাম। সবকিছু অন্য রকম যেত। পরিস্থিতির এমন না হয়ে অন্য রকম হতো‌। সত্যি আমি অনেক ভাগ্যবান তোমার মতো স্ত্রী পেয়ে।

আর প্লিজ এসব নিয়ে মন খারাপ করবে না সাবনাজ।

সাবনাজ তখন বলল মাহমুদ মন খারাপ করি নাই। তুমি পাশে থাকলেই হবে। আর মাহমুদা আছে মা বাবা আছে। একজনের জন্য সবাইকে দোষারোপ করে পারি না। তুমি এসব ভুলে যাও মাহমুদ।

ওয়েট ওয়েট তুমি বললে সকালে রান্নার পরে তোমার সাথে মিষ্টি মিষ্টি কথা বলেছে। এটা কি সঠিক?

হ্যাঁ সত্যি।

তো মিষ্টি মিষ্টি কী কথা বলেছে শুনি। আমার জানা মতে কোনো স্বার্থ ছাড়া সে তোমার সাথে মিষ্টি মিষ্টি কথা বলবে না। জরুর ডালমে কুচ কালা হে। যা যা বলছে সব আমাকে বলো কিছু বাদ দিয়ে বলবে না।

আমাদের বিয়ের রাতের কথা বলছে। আমার কোনো সমস্যা হচ্ছে কি? আমি তোমার সাথে মানিয়ে নিতে পেরেছে কী? বিয়ের দিন রাতে আমরা কেমন করে কাটালাম।

তো কী বললে তুমি।

কী আর বলব যা যা সত্যি সব বলেছি।

কিহহহ মানে যা যা হয়েছে সব বলে দিয়েছ। বিয়ের দিন রাতে তুমি খাটের উপর ছিলে আমি নিচে ছিলাম। এটাও বলে দিয়েছ কি? আর তুমি কেন তার সাথে এসব বলতে গেলে। আমাদের মাঝে যা হবে আর বলবে না, অত্যন্ত ভাবির সাথে না। বজ্জাত মহিলা তার কাজ শুধু ঠক লাগানো।

হ্যাঁ এটাও বলে দিয়েছি। আমি কী জানতাম না কী তোমার ভাবি এমন। তখন তো বেশ ভালোই মিষ্টি ব্যবহার করেছিল। আমি তাকে নিজের বোন মনে করছিলাম কিন্তু সে আমার সাথে এমন করবে ভাবতে পারি নাই। তুমি যখন বলছো তাহলে আর বলব না।

আর কিছু বলেছ কি ভাবি তোমার সাথে। একটু মনে করার চেষ্টা করো?

না আর কিছু বলি নাই‌।

আমি তখন হাফ ছেড়ে বাঁচলাম সতীত্ব পরিক্ষার জন্য ভাবির কথা শুনে আমাকে একটা সাদা রুমাল দিয়েছিল সেটা বলে নাই। বললে আমি সাবনাজ কে মুখ দেখাতে পারতাম না। মা কেও খারাপ ভাবতো সাবনাজ।

তবে আমি একটা মেয়ে তুমি তো সব সময় বাসায় থাকো না। আর একটা মেয়ের সমস্যা একটা মেয়ে ভালো বুঝতে পারে। নিজে নিজে সবকিছু সমাধান করা যায় না। অন্য একটা মেয়ের সাথে বলতে হয় সে জন্যই আমি ভাবির সাথে বন্ধুত্ব গড়তে চেয়েছিলাম।

চিন্তা করতে হবে না। তোমার যা সমস্যা আমার বোন মাহমুদার সাথে বলবে। দেখবে সে তোমাকে একদম নিজের বোনের মতো দেখবে‌। তার সাথে তোমার সম্পর্ক নোনদ ভাবির হবে না। দুই বোন আর বেস্ট ফ্রেন্ড এর মতো সম্পর্ক হবে।

সাবনাজ বলে এখন থেকে মাহমুদা আমার বোন আর বেস্ট ফ্রেন্ড। আমি সব সময় ওকে বোনের চোখে দেখব। আচ্ছা তোমার নাম মাহমুদ আর তোমার বোনের নাম মাহমুদা। নামের এতো মিল কে রেখেছিল।

নাম আমার মা রেখেছিল মিল করে। মাহমুদা আর আমার মধ্যে বিশেষ একটা মিল ছিল। দুজনের ঘাড়ের পিছনে দুটা করে তিল আছে। আর দুজন অনেক বদ মেজাজি ছিলাম ছোট থাকতে। সেই জন্যই মা দুজনের নাম মিল করে রাখছিল। মাহমুদার নাম আগে সুমাইয়া ছিল। তারপর পরে পরিবর্তন করে মাহমুদা রাখা হয় ছোট থাকতে।

সাবনাজ তখন বলে সেজন্য দুজনের এতো মনের মিল। আরো এতো সুন্দর ব্যবহার ‌। সত্যিই অনেক ভালো মনের মানুষ আপনি আর মাহমুদা।

আমি তখন সাবনাজ কে কাছে টেনে বললাম আচ্ছা তুমি কী পরিবর্তন হবে না হুমম।

কেন আমি আবার কী করলাম?

এইযে বিয়ের এতো দিন হলো এখনো আপনি করে বলে যাচ্ছো।তুমি করে কবে থেকে বলবে।

যদি তুমি করে না বলি তাহলে কী আমাকে ভালোবাসবে না।

না বাসব না অন্য মেয়ের সাথে ভেগে চলে যাবো। যেই মেয়ে তুমি করে বলতে পারবে। তারপর দুজনে অনেক প্রেম করব। আর না হয় দুটা বিয়ে করব। ভালো হবে না?

সাবনাজ তখন ছোট বাচ্চাদের মতো কান্না করে দেয়।

চলবে,,,,,

বি.দ্র: ভুল ত্রুটি ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে