#নরীর_সতীত্ব
#পর্ব_১৫
Wohad Mahmud
সাবনাজের মুখ তখন কিছুটা ফেকাশে হয়ে গেল। বুঝতে পারলাম না কেন এমন হলো। আমি কিছু বলতে যাব তখনি ভাবি আমার রুমে ঢুকে।
আমি মনে মনেই বললাম এটা আবার কোন ধরনের ভদ্রতা। বলা নেই কওয়া নেই হুটহাট করে রুমে ঢুকে যায়। দরজায় নক দিয়েও তো আসতে পারে।
আমি বললাম কিছু বলবেন ভাবি?
ভাবি বলল–
তোমার সাথে কিছু কথা আছে মাহমুদ।
আমি বললাম জ্বী বলেন ভাবি কি বলবেন?
রাকিবের বিষয়ে কথা বলব তো। তাই একটু একা একা কথা বলতে চেয়েছিলাম।
জ্বী এখানেই বলেন সমস্যা নেই কোনো। সবনাজ “রাকিব আর মাহমুদার বিষয়ে সব জানে। সাবনাজের কাছে কিছু লুকানোর প্রয়োজন মনে করি নাই।
আমার দিকে রাগি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। তারপর কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল- তুমি কিছুক্ষণ আগে রাকিবকে কী বলেছিলে।
কই ভাবি আমি তো কিছু বলি নাই।
রাকিব তো আমাকে বলল তুমি খারাপ ব্যবহার করেছ ওর সাথে। আর বাসা থেকে চলে যেতে বলেছ। আর আমার ভাই এখনো তোমার বোনের পিছনে পড়ে নেই। আগের থেকেও অনেক ভালো হয়ে গিয়েছে।
আমি উঠে দাড়িয়ে বললাম। আপনার ভাইকে আমি তেমন কিছু বলি নাই। শুধু ভালো মন্দ জিজ্ঞাসা করেছি। আর বলেছি, মাহমুদা সেই বিষয় নিয়ে এখনো রাগ করে আছে। ওর ব্যবহারে কোনো কষ্ট পাবে না। আর মাহমুদার থেকে একটু দূরে থাকবে।
আর আপনার ভাই আগের থেকে কতটা ভালো হয়েছে সেটা বেশ ভালোই দেখতে পারছি। তিল কে তাল বানানোর চেষ্টা করছে। আমি তার সাথে বললাম এক কথা আর আপনাকে গিয়ে বলল আরেক কথা।
শুনো মাহমুদ, আমার ভাই এখানে সারাজীবন থাকতে আসে নাই। আর কেন এসেছে সেটা বেশ ভালোই দেখতে পারছো। তোমার বউয়ের বাসা থেকে যেমন এখানে আসার অধিকার আছে ঠিক তেমনি আমার ভাইয়ের ও এখানে আসার অধিকার আছে। কারণ তার বোন এই বাসাতে থাকে। এখন থেকে যখন মন চায় আমার ভাই আসবে এখানে। এখন থেকে তুমি তাকে মানা করার কেউ না।
আমি তখন হাসতে হাসতে বললাম। কীভাবে অধিকারের কথা বলেন আপনি, আমার বাবা যখন অসুস্থ ছিল কই তখন তো কেউ আমার বাবাকে দেখতে আসে নাই। এখন কেন আসছে।
আমার কথা শুনে। কোনো জবাব না দিয়ে রাগ করে চলে গেল, আর যাওয়ার সময় বলে গেল আজকের এই ব্যবহারের কথা আমি বাবা মায়ের সাথে বলব। বড়দের সম্মান করতে জানো না। তারপর দেখি তোমার বাবা মা তোমাকে কী বলে।
আমি মনে মনে হাসতে থাকলাম আর বললাম কতটা বেহায়া হলে এখনো সম্মানের কথা বলে। সম্মান পেতে হলে আগে সম্মানীয় কাজ করতে হয়। তাছাড়া কেউ সম্মান দিবে না।
তারপর সাবনাজ বলল ভাবিকে এভাবে বলা ঠিক হয়নি। এমনিতেই প্রেগন্যান্ট, আর তুমিই আমাকে বললে ভাবির খেয়াল রাখতে এখন তুমিই ভাবির সাথে এমন করছো ভাবির সাথে।
তুমি ভাবির সম্বন্ধে এতকিছু জানো। এখন আবার অকারণে আমাকে এসে কথা শুনাই। তার নির্লজ্জ ভাই আমার আমে বানিয়ে বানিয়ে কিসব কথা বলেছে আর আম অনেক এসে দোষ দেয়।
তা সব জানি এখানে তোমার কোনো দোষ নেই। কিন্তু কী করার আছে বলো।
আমি বললাম, এভাবে না বলে আর পারলাম না। দুই ভাই বোন মিলে নাটক করছে। আমি রাকিবকে খারাপ কিছু বলি নাই কিন্তু সে ভাবির কাছে গিয়ে তাল লাগাচ্ছে। আবার এমনও হতে পারে ভাবি প্রেগনেন্সির সুযোগ নিয়ে বাবা মায়ের সামনে খারাপ বানানোর চেষ্টা করছে। যাতে করে কেউ কিছু বলতে না পারে তাকে।
বাবার গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ শেষ হয়ে গিয়েছে। বড় ভাইয়াকে ফোন দিয়ে বলেছিল গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ নিয়ে আসতে। আমিই বাজারে গিয়ে নিয়ে আসি। কিন্তু আজ ভাইয়া তাড়াতাড়ি বাসায় আসবে জেনে ভাইয়াকে নিয়ে আসতে বলেছিল। কারণ বড় ভাবির মা আর ভাই এসেছে তাই তাড়াতাড়ি বাসায় আসবে। সন্ধ্যার পরে বাবার পাশে বসে প্রেসক্রিপশন আর ঔষধ দেখছিলাম। দেখি গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ শেষ হয়ে গিয়েছে। আমাকে ঔষধ এর কথা বলেনি কেন জানতে চাইলে এই কথাটা বলে।
কিছুক্ষণ পরে ভাইয়া বাসায় আসলে বাবার ঔষধ নিয়ে আসতে গেলাম। নক দিয়ে রুমে ঢুকে দেখি ভাইয়া, ভাবি আর ভাবির মা, ছোট ভাই বসে আছে। আমাকে দেখে সবাই কিছুটা অস্বস্তি বোধ করলো। আমি বুঝতে পারলাম এভাবে আশায় কেউ পছন্দ করেনি।
ভাইয়াকে বললাম ঔষধ কোথায়?
ভাইয়া বলল কিসের ঔষধ?
আমি বললাম কিসের ঔষধ আবার বাবা তো তোকে বলে দিয়েছে যে, গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ নিয়ে আসতে। সেই গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ কোথায়?
ভাইয়া বলল আমার মনে নেই ঔষধ আনতে।
মনে নেই মানে? তুই এটা জানিস না বাবার গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ না খেলে অনেক কষ্ট হবে।আর এখন বলছিস ঔষধ আনতে মনে নেই।
মনে নেই মানে মনে নেই। আর তুই তো সারাদিন বাড়িতে বসে থাকিস। তুই গিয়ে ও তো নিয়ে আসতে পারি এভাবে সারাদিন বাড়িতে বসে না থেকে।
বাবার ঔষধ বা কোনো প্রয়োজন হলে আমি নিয়ে আসি আর কেউ না। প্রতিদিন তো আমাকে বলে, আজ বলে নাই তোকে বলে। আর হ্যাঁ ভালো কথা- বিয়ে পর থেকে তো কোনোদিন এভাবে বাজার নিয়ে আসতে দেখি নাই। সব বাজার তো আমি আর বাবা করে নিয়ে আসি। শ্বাশুড়ি, শালা এসেছে বলে বাজার থেকে অনেক বাজার করে নিয়ে এসেছেন আর বাবার গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ নিয়ে আসতে মনে নেয়। সমস্যা কোথায় বুঝলাম না, আসলেই কী মনে নেই না-কি টাকা খরচের ভয়।
বড় ভাবি উঠে দাঁড়িয়ে বলে। কী আজেবাজে কথা এগুলো মাহমুদ। সত্যিই তোমার বড়দের সাথে কথা বলার আদব কায়দা নেই। বড় ভাইয়ের কথা তুই করে কথা বলছো। আর টাকা পয়সার সমস্যা হবে কেন? টাকা দিচ্ছি যাও ঔষধ কিনে নিয়ে আসো। এটা বলে আমার হাতে ৫০০ টাকার নোট ধরিয়ে দেয়।
আমি হেঁসে হেসে বললাম ভাবি আপনি এই বাড়িতে নতুন না। আমি ভাইয়াকে যখন যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে ডাকি। এটাও আপনার জানা কথা। আর আপনার টাকা দেয়া লাগবে না। আমার টাকা আছে সেটা দিয়ে কিনতে পারব। এটা বলেই হাতের পাঁচশ টাকা ভাইয়ার বেডের উপর ছুড়ে ফেলে দিয়ে চলে আসলাম।
বাবার ঔষধ খাওয়ার সময় হয়ে যাচ্ছে। তাড়াতাড়ি ঔষধ কিনতে হবে। তাড়াতাড়ি করে বাইক টা বরে করে বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। তাড়াতাড়ি ঔষধ নিয়ে এসে বাবাকে দিলাম।
বাবা বলল, এতো দেরি হলো কেন ঔষধ নিয়ে আসতে। কোন সমস্যা হয়েছে?
আমি বললাম তেমন কিছু না বাবা। ভাইয়ার সাথে অনেক দিন ভালো করে কথা হয়নি। সে জন্যই ভাইয়ার সাথে একটু গল্প করছিলাম।
বাবাকে জানতে দেওয়া যাবে না যে, ভাইয়া ঔষধ নিয়ে আসে নাই, আমি গিয়ে এখন নিয়ে আসলাম। তাহলে বাবার মন খারাপ হবে।
আজ রাতে আমার বিচার হবে। কথাটা ভাবতেই অট্ট হাসি পাচ্ছে। বিচার হবে কারণ, আমি ভাবির ভাইয়ের সাথে খারাপ ব্যবহার করেছি। তাদেরকে এই বাসা থেকে তাড়াতাড়ি চলে যেতে বলেছি। ভাবি আর ভাইয়ার সাথে খারাপ ব্যবহার করেছি, সে জন্যই আমার বিচার হবে। আমি জানি ভাবি তিলকে তাল বানানোর চেষ্টা করবে। যা হয়েছে তা বাড়িয়ে বাড়িয়ে বলবে মা বাবার কাছে। মা বাবার কাছে আমাকে খারাপ বানানোর চেষ্টা করবে। কিন্তু সমস্যা নেই আমি সবকিছু হ্যান্ডেল করে নিতে পারব ওই বজ্জাত মহিলার সামনে।
রুমে এসে বসে আছি। তখন মাহমুদা আমার রুমে আসে আর এসে বলে ভাইয়া এসব কী শুনছি।
আমি জেনেও না জানার ভান করে বললাম, কেন কী হয়েছে আর কী শুনছিস?
আমি তো শুনলাম ভাবি তোর নামে আজ বিচার ডেকেছে আজ রাতে।
আমি বললাম আরে শান্ত হ আগে।
কীভাবে শান্ত হবো আমি। বাসায় আজকাল কী চলছে , যে আর মতো যা ইচ্ছা তাই করছে। বিচার তো তার নামে ডাকা দরকার। আর উল্টা তোর নামে ডাকছে। তুই একদিন আমার কথা মিলিয়ে নিস। আমাদের কাউকে এই বাড়িতে শান্তি মতো থাকতে দিবে না। এমনকি মা বাবাকেও না।
আচ্ছা শোন বিচারের সময় কিন্তু তুই থাকবি।
ওই অসভ্য রাকিব থাকলে আমি থাকব না।
সবাই থাকবে। আর তোর ভাইয়ের বিপদের সময় আমার পাশে তুই থাকবি না?
আমার কথায় ইমশোনাল হয়ে মাহমুদা বলে আচ্ছা ঠিক আছে থাকব।
সবাই বসে আছি খাওয়া দাওয়া করে খাবারের টেবিলে। মাহমুদা কে চা আনতে চলে বাবা। মাহমুদা চা নিয়ে এসে সবাইকে দিচ্ছে। চা দেওয়ার সময় এক কাপ চা সব রাকিবের গায়ে ঢেলে দেয়,,,,,
চলবে,,,
ভুল ত্রুটি ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন।