নরীর সতীত্ব পর্ব-০৩

0
2537

#নরীর_সতীত্ব
#পর্ব_০৩
Wohad Mahmud

যেই হাতের আঙ্গুল কেটে রুমালে রক্ত মাখিয়েছিলাম সেই আঙ্গুলে ব্যথা পেয়ে রক্ত বাহির হচ্ছে। মা বলছে কি হয়েছে। আমি বললাম কিছু না ব্লেডে কেটে গিয়েছে। আর ভাবি আমার দিকে আড়চোখে তাকিয়ে আছে। আমি তাকানোর সাথে সাথে চোখ ফিরিয়ে নেই ভাবি‌। আমি সম্পূর্ণ না হলেও কিছুটা বুঝতে পারলাম ভাবি হয়তো বুঝতে পেরেছে আমার হাত কাটার কারণ।

রুমে আসার সাথে সাথে সাবনাজ বলে উঠলো আপনি সবার সামনে মিথ্যা কথা কেন বললেন মায়ের সাথে?

আমি মুখে হাত নিয়ে ভাবতে ভাবতে বললাম মিথ্যা কখন বললাম আবার মায়ের সাথে।

মায়ের সাথে যদি মিথ্যা না বলেন তাহলে নিশ্চয়ই আমার সাথে মিথ্যা বলেছেন।

আরে বাবা আমি কারোর সাথে মিথ্যা বলি নাই। কি হয়েছে খুলে বলো তো আমাকে একটু। আমার তো মনে হচ্ছে না মিথ্যা বললাম।

সন্ধ্যায় যখন আপনি রুমে আসলেন তখন আপনার আঙ্গুল দিয়ে রক্ত পড়ছিল। আমি জানতে চাইলে বললেন দরজায় আঙ্গুল চাপ লেগে কেটে গিয়েছে। আর মায়ের কাছে বললেন ব্লেডে কেটে গিয়েছে। তাহলে তো এটা মিথ্যা কথা হলো তাই না?

আমি দাঁতের সাথে দাঁত চেপে বললাম। আমি কি মায়ের সাথে ব্লেডে কাটার কথা বলেছি। মনে হয় ভুল করে বলেছি। আচ্ছা বাদ দাও অনেক রাত হয়েছে এখন ঘুমাও। কাল সকালে অনেক কাজ আছে। তোমাদের বাসা থেকে মানুষ আসবে আমাদের নিতে। এটা বলে কোনো রকমে কেটে গেলাম। আর এমন ভুল করা যাবে না।

এটা বলে খাট থেকে বিছানা নিয়ে আর একটা বালিশ নিয়ে নিচে ঘুমানোর সময় সাবনাজ বলে। আজ থেকে আর নিচে ঘুমাতে হবে না উপরে ঘুমাবেন।

আমি বললাম না থাক তোমার সমস্যা হবে তো। আমি নিচে থাকছি আমার কোনো সমস্যা হবে না।

সাবনাজ আমার হাত ধরে বলে আমার সমস্যা হবে না। আপনি তো আমার স্বামী। আমাদের সারাজীবন একসাথে থাকতে হবে। সব আস্তে আস্তে মানিয়ে নিতে নিতে পারব আমি, বাবা, মা আছে। আমি চুপচাপ বাধ্য ছেলের মতো খাটের উপর উঠে ঘুমিয়ে পড়লাম।

তখনি তারপর সাবনাজ বলল এবার লাইট টা অফ করে দিন।

আমি বললাম থাক লাইট অফ করছি না। তোমার রাতে ঘুমাতে সমস্যা হবে ভয় পাবে।

সাবনাজ বলে সমস্যা হবে না আপনি পাশে থাকলে আমার কিছু হবে না। আর আপনার লাইট জ্বালিয়ে ঘুমাতে সমস্যা হয় আমি দেখেছি সারারাত মুখের উপর কাঁথা দিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন লাইট জ্বালানো ছিল বলে। আর কোনো উপায় না আমি বাধ্য ছেলের মতো লাইট অফ করে ঘুমিয়ে গেলাম।

কালকের মতো আজকেও নামাজের সময় ডেকে দেয় নামাজ পড়ার জন্য। আর যাই হোক এমন স্ত্রী পেয়ে অনেক খুশি। এখন থেকে নিয়মিত নামাজ পড়ছি। এমন স্ত্রী সবাই চায়।

নামজ পড়ে আমি ঘুমাচ্ছিলাম আর সাবনাজ কোরআন শরীফ পড়ছিল। কিছুক্ষণ পরে ঘুম থেকে উঠে দেখি সবাই সবার কাজ করছে‌ ফ্রেশ হয়ে ডাইনিং এ গেলাম, গিয়ে দেখি মা, ভাবি আর সাবনাজ কাজ করছে।

আমি হাসতে হাসতে মাকে উদ্দেশ্য করে বললাম নতুন বউ দিয়ে এতো কাজ করাও এখনি। বাড়ির গিয়ে কিন্তু মা বাবার কাছে বদনাম করবে‌। বলবে আমার শ্বাশুড়ি আমাকে দিয়ে অনেক কাজ করাচ্ছে।

মা বলে তোর বউ কে মানা করছি শুনে নাই। বদনাম তোর হবে আমার না। লোকে বলবে আজ বিয়ে হতে না হতেই বউ দিয়ে কাজ করাই‌। মায়ের কথা শুনে আমি জোরে জোরে হাসতে থাকলাম আর সবনাজ কিছু টা লজ্জা পেয়ে কাপড় দিয়ে মুখ ঢেকে রুমে চলে যায়।

ভাবি তখন আমাকে উদ্দেশ্য করে বলে। বাসার বউ বাড়িতে কাজ করবে নাতো কোথায় কাজ করবে। এভাবে বললে ‌তো আশঙ্কার পেয়ে পেয়ে মাথায় উঠে যাবে। আমি আর কিছু বললাম না। কুকুরের লেজ সোজা হবে না বাঁকা থেকে যাবে‌। ভাগ্যিস এখন সাবনাজ এখানে নেই। থাকলে এই কথা শুনলে কী মনে করত!

মা তখন মুচকি হেসে বলে সাইমা(বড় ভাবি) তোমার যখন নতুন বিয়ে হয় তুমি এক সপ্তাহ ঘর থেকেই বাহিরে হও নাই । কয়েকটা দিন যাক সব ঠিক হয়ে যাবে আস্তে আস্তে। আর তুমি তো আছোই সমস্যা হবে না আমার। তোমার প্রতি আমার অনেক বিশ্বাস আছে।

মায়ের কথা শুনে আমি তখন মনে মনে হাসতে থাকি আর বলি আমার মা জানে কীভাবে সিচুয়েশন‌ হ্যান্ডেল করতে হয়। ভাবিকে একটু সুনাম করল আর ভাবি গলে গেল। কারণ আমার মা একটু হলেও জানে ভাবি কেমন প্রকৃতির লোক।

প্রায় দুপুর হয়ে যাচ্ছে সাবনাজের বাসার লোকজন চলে আসবে। সাবনাজের বোন, দুলাভাই আর আর একটা ছোট ভাই আসবে। সাবনাজ রুমে শুয়ে আছে আমি বললাম যাও গোসল করে গুছিয়ে নাও চলে আসবে কিছুক্ষণ পরে সবাই।
তারপর আমি আর সাবনাজ ফ্রেশ হয়ে বাইরে আসলাম। ভাইয়া আর বাবা সবাই নেই। আমি মা, ভাবি, সাবনাজ আর আমার বোন বাইরে ডাইনিং এ বসে অপেক্ষা করছি আত্মীয়ের।

সাবনাজ আমাকে বলে তোমার ফোন টা একটু দিবে বাসায় কথা বলব। তারপর আমার ফোনটা সাবনাজ কে দিই। সাবনাজ ফোন নিয়ে বারান্দায় চলে যায়।

সাবনাজের দিকে তাকিয়ে থাকে ভাবি আর বলে ফোন নিয়ে দূরে যাওয়ার কী দরকার এখানেই তো কথা বলা যায়। এখানে কথা বললে কি হতো। সবার সামনেই তো কথা বলা যায়।

বোন তখন বলে হয়তো পার্সোনাল কথা থাকতে পারে ভাবি সে জন্যই গিয়েছে।

মুখ ভাঙিয়ে ভাবি বলে নতুন নতুন এমন পার্সোনাল কথা বলা ঠিক না। আমার কিছু বলার আগের চেয়ার থাকে অন্য রুমে চলে যায়।

আমি ফোনের দিকে তাকি ফেসবুকিং করছিলাম ডাইনিং এ মা আর বোন ব্যস্ত খাবার পরিবেশনে ব্যস্ত। ভাবি কখন যে চুপিচুপি বারান্দায় গিয়ে সাবনাজ এর ফোন কল শুনছে কেউ বলতে পারবে না।

একটু পরে ভাবি সাবনাজ এর হাত ধরে টানতে টানতে নিয়ে আসে আমাদের সামনে। আমি, মা আর বোন এসব দেখে অবাক। আমি ভাবির হাত থেকে সাবনাজ কে ছাড়িয়ে নিয়ে বললাম এসব কি হচ্ছে ভাবি। পাগল হয়ে গিয়েছেন আপনি। এমন শক্ত করে হাত ধরেছে হাতের যেখানে ধরেছে সেখানে লাল হয়ে গেছে।

আমাকে কথা না শুনিয়ে তোমার বউ কে শুনাও মাহমুদ। তোমার পরকিয়া বউ।

আমার মেজাজ গরম হয়ে গিয়েছে। ভাবি না হয়ে অন্য কেউ হলে সত্যি থাপ্পড় মেরে দিতাম। আমি বললাম কেন কি করছে আমার বউ যে তাকে কথা শুনাতে হবে। আর পরকিয়া বউ মানে এসব আজেবাজে কথা বলছেন কেন?

তোমার বউ মায়ের সাথে কথা বলার নাম করে কার সাথে বলছিল জিজ্ঞাসা করো। বাবু সোনা বলে ডাকছিল। আবার বলছে একবার এখান থেকে চলে গেলে তোমাকে ছেড়ে আর আসব না। আজকেই চলে যাবো। এসব কথা কাকে বলছিল জিজ্ঞাসা করো‌। মায়ের সাথে কথা বলার নাম করে ছাদে , বারান্দায় গিয়ে কার সাথে কথা বলে শুনো। মনে হয় পুরাতন কোনো বয়ফ্রেন্ড হবে।

আমি সাবনাজ কে জিজ্ঞেসা করলাম ভাবি এসব কি বলছে সাবনাজ তোমাকে। সত্যি বলছে কি? কার সাথে কথা বলছিলা তুমি?

আমার কথার উত্তর না দিয়ে অনবরত কান্না করতে থাকে সাবনাজ।

চলবে,,,,,,

বি.দ্র: ভুল ত্রুটি ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে