#ধূসর শ্রাবণ
#লেখিকা:#তানজিল_মীম💚
#পর্ব-২০+২১
________________
রাত একটার কাছাকাছি। আলোকিত ছাঁদ, ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বেলুন সাথে ঝলমলে আকাশের মাঝে পাশাপাশি দুটো রকিং চেয়ারের বসে আছে শুভ্র আর বর্ষা। আকাশ দেখছে তাঁরা। কিছুক্ষন আগেই লাফালাফি করে এখানে এসে বসেছে দুজন। হাল্কা শীত শীত ভাব, যদিও ধীরে ধীরে শীতের প্রখরটা আরো চওড়া হচ্ছে। বর্ষা গুটিশুটি মেরে বসে আছে চুপচাপ কিছু বলছে না। আর শুভ্র হঠাৎই আকাশ পথে তাকিয়ে বলে উঠল,
‘ আমাকে এত সুন্দর সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ তোমায়, বর্ষা।’
প্রতি উওরে মুচকি হেঁসে বললো বর্ষা,
‘ ম্যানশন নট।’
বর্ষার কথা শুনে শুভ্র তাকায় বর্ষার মুখের দিকে তারপর বলে,
‘ জানো তো জীবনটা কখন কোন দিক দিয়ে কোথায় চলে যাবে বোঝা যায় না। সেদিন অনিক ঠিকই বলে ছিল।’
শুভ্রের কথা শুনে বর্ষা অবাক হয়ে বললো,
‘ কি বলেছিল অনিক ভাইয়া?’
বর্ষার কথা শুনে শুভ্র কিছু বলতে গিয়েও বললো না আকাশ পথে তাকিয়ে বললো,
‘ বলে ছিল কিছু একটা বাদ দেও।’
শুভ্রের কথার প্রতি উওরে আর জোর করে নি বর্ষা হঠাৎই কিছু একটা ভেবে বলে উঠল বর্ষা,
‘ আপনাকে একটা প্রশ্ন করবো শুভ্র? অনেকদিন যাবৎই ভাবছি করবো কিন্তু করে উঠতে পারছিলাম না, আজ করবো কি?’
উওরে কিছুক্ষন চুপ থেকে বললো শুভ্র,
‘ হুম করো।’
‘ আপনি রাগ করবেন না তো?’
‘ প্রশ্ন উল্টো পাল্টা না হলে রাগ করবো কেন।’
‘ ঠিক আছে বলি তাহলে?’
‘ হুম।’
প্রতি উওরে জোরে নিশ্বাস ফেলে বললো বর্ষা,
‘ আপনি তো বিয়ের দিন চলে গিয়েছিলেন শুভ্র তাহলে হুট করে ফিরে কেন এলেন?’ কি এমন ঘটেছিল যার কারনে আপনি ফিরে এলেন?’
বর্ষার কথা শুনে বিস্মিত হলো শুভ্র। চোখের সামনে ভেসে আসলো একটা ছোট্ট এক্সিডেন্টের ঘটনা। এয়ারপোর্টের ঠিক সামনেই তার গাড়ির সাথে ধাক্কা লেগেছিল কারো। বর বেসে হতভম্ব হয়ে গাড়ি থেকে নেমেছিল শুভ্র। শুভ্র আর কিছু ভাব্বে এরই মাঝে আবারো প্রশ্ন করে বসলো বর্ষা,
‘ কি হলো কথা বলছেন কেন? বলুুুন না কি হয়েছিল সেদিন?’
শুভ্র চুপ রইলো, বলবে কি বলবে না ভেবে কনফিউজড সে। শুভ্রকে এবারও চুপ থাকতে দেখে হতাশ বর্ষা। হয়তো এমন কিছু হয়েছিল যেটা শুভ্র চাইছে না বর্ষাকে বলতে। বর্ষা আর জোর করলো না। শীতল ভেজা কন্ঠ নিয়ে বলে উঠল,
‘ আপনি যখন বলতে চাইছেন না তখন আমি জোর করবো না শুভ্র। যাই হোক বাদ দিন অনেক রাত হয়ে গেছে শীতও করছে খুব চলুন ভিতরে যাই।”
এতটুকু বলে বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো বর্ষা। শাড়ির আঁচলটা ঠিক করে অগ্রসর হতে লাগলো রুমের দিকে। বর্ষাকে যেতে দেখে শুভ্র বেশি কিছু না ভেবেই হাত ধরে বসলো বর্ষার। শুভ্রের কাজে অবাক চোখে তাকায় বর্ষা শুভ্রের দিকে। কিছু বলবে তার আগেই শুভ্র নীরব চোখে তাকায় বর্ষার দিকে। তারপর বলে,
‘ তুমি শুনতে চাও সেদিন কি হয়েছিল? কেন আমি ফিরে এসেছিলাম জানতে চাও তুমি?’
প্রতি উওরে মাথা নাড়ায় বর্ষা। বসে পড়ে আবার রকিং চেয়ারে তারপর বলে,
‘ হুম চাই তো বলবেন আমায়?’
‘ অবশ্যই বলবো।’
শুভ্রের কথা শুনে বেশ আগ্রহ নিয়েই বলে বর্ষা,
‘ তাহলে বলুন,
শুভ্র কিছু বলবে এরই মাঝে উচ্চ স্বরে ফোনটা বেজে উঠলো শুভ্রের। আচমকাই এমনটা হওয়াতে শুভ্র বর্ষা দু’জন পুরো চমকে উঠলো। তক্ষৎনাত ফোনটা তুলে শুভ্র। তারপর যা শুনে তাতে বিষন্ন হয় শুভ্র। শুভ্র বেশি কিছু না ভেবেই বলে,
‘ আমি এক্ষুনি আসছি?’
শুভ্রের কথা শুনে বর্ষাও হতাশ হয়ে বলে,
‘ কি হয়েছে কোথায় যাবেন আপনি?’
‘ ফিরে এসে বলবো তোমায় কিন্তু আমায় এখন যেতে হবে বর্ষা, বাকি কথা পড়ে হবে।’
এতটুকু বলে আর দু’মিনিট দেরি না করে হন হন করে দৌড়ে চলে যায় শুভ্র। আর বর্ষা পুরো নির্বিকার হয়ে তাকিয়ে রয় শুভ্র পানে। হুট করে কি হলো এটাই যেন বুঝলো না বর্ষা। একরাশ হতাশা এসে গ্রাস করলো তাঁকে। তপ্ত নিশ্বাস ফেলে আকাশ পানে তাকালো সে। অভিযোগ করলো একটু, তবে ঠোঁটে কিছু বললো না যা বললো তার সবটুকুই মনে মনে রইল তার।’
মাঝখানে কাটলো দু’দিন। এর দু’দিনে শুভ্রের আচরণে পরিবর্তন এসেছে একটু। যেমন বাড়ি ফিরলে সেই ভাবে কথা বলে না। অলওয়েজ টেনশন টেনশন ভাব থাকে একটা। রাতেও খুব দেরি করে বাড়ি ফিরে। বর্ষার সাথেও সেইভাবে কথা বলে না। আর হুটহাট ফোন আসলেই বেরিয়ে যায় বাড়ি থেকে। শুভ্রের হুট করে পাল্টে যাওয়া এমন আচরণে বেশ খারাপ লাগা কাজ করছে বর্ষার ভিতর। সে বুঝতে পারছে না শুভ্রের কি হলো? শুভ্রকে যে কিছু জিজ্ঞেস করবে সেই সুযোগটাই পাচ্ছে না বর্ষা।’
”
বিকেল পাঁচটার কাছাকাছি! নানা কিছু ভাবতে ভাবতে হাতে কিছু জিনিসপত্র নিয়ে রাস্তা পার হচ্ছিল বর্ষা। মুলত সুপারমার্কেট থেকে বাজার করে ফিরছে বর্ষা। এমন সময় হুট করেই একটা সাইকেলের সাথে ধাক্কা লেগে যায় বর্ষার। আচমকা এমনটা হওয়াতে হাতে থাকা সব ব্যাগপত্র নিচে লুটিয়ে পড়ে তার। রাস্তার মাঝ দিয়ে পড়াতে হাতে আর পায়ে কিছুটা ব্যাথা পায় বর্ষা।সেই মুহূর্তে সেই রাস্তা দিয়েই গাড়ি করে যাচ্ছিল তিয়ান। রাস্তার মাঝে এমন মর্মান্তিক ঘটনা দেখে তক্ষৎনাত বেরিয়ে আসে সে গাড়ি থেকে৷ আহত ব্যক্তিটি বর্ষা দেখে চটজলদি এগিয়ে যায় বর্ষার দিকে তারপর বলে,
‘ ভাবি আপনি ঠিক আছেন তো?’
হুট করেই তিয়ানের ভয়েস শুনে বেশ অবাক হয় বর্ষা তারপর কিছুক্ষন চুপ থেকে বলে বর্ষা,
‘ হুম ঠিক আছি আমি।’
তিয়ান বর্ষার হাত আর পায়ের অবস্থা দেখে বলে উঠল,
‘ আপনার হাত পা দিয়ে তো রক্ত বের হচ্ছে তাড়াতাড়ি হসপিটাল চলুন আমার সাথে।’
এই বলে তক্ষৎনাত বর্ষাকে ধরে গাড়িতে বসিয়ে নিয়ে যায় তিয়ান। তিয়ানের কাজে বর্ষা কিছুটা হতভাগ হয়েই বলে,
‘ আমি ঠিক আছি হসপিটাল যাওয়া লাগবে না।’
‘ লাগবে না মানে কতটা কেটে গেছে দেখেছেন শুভ্র কোথায়?’
‘ উনি তো অফিসে গেছে।’
‘ কিন্তু আজ তো অফিস অফ, দাঁড়ান আমি এক্ষুনি একটা কল করছি শুভ্রকে।”
প্রতি উওরে কিছু বলে না বর্ষা হুট করই বুকের ভিতর দক করে উঠলো তাঁর। শুভ্র কি তবে সকালে অফিসের নাম করে মিথ্যে বলে গেছে। কিন্তু শুভ্র তাঁকে মিথ্যে বলবে কেন? আর ভাবতে পারছে না বর্ষা। কেমন যেন লাগছে তাঁর। এদিকে তিয়ান শুভ্রকে লাগাতার কল করেও কোনো লাভ হচ্ছে না। রিং বাজছে ঠিকই কিন্তু শুভ্র ফোন তুলছে না। শেষ মেশ বিরক্ত হয়ে বলে তিয়ান,
‘ এতবার কল করছি রিং হচ্ছে কিন্তু শুভ্র ধরছে না কেন?’
তিয়ানের কথা শুনে বর্ষা কিছুটা নিরাশ হয়ে বললো,
‘ হয়তো উনি বিজি আছে আর ফোন করার দরকার নেই আপনি আমায় বাড়ি নিয়ে চলুন প্লিজ।’
‘ বাড়ি! আগে হসপিটাল যেতে হবে ‘
এই বলে গাড়ির স্পিড বারিয়ে দিল তিয়ান। বর্ষা হতাশা ভরা চোখ নিয়ে তাকিয়ে রইলো বাহিরে হাতে পায়ে যন্ত্রনা হচ্ছে তাঁর। তার সাথে বুকের ভিতর অজানা এক অস্থিরতা কাজ করছে। শুভ্রকে নিয়ে ভয় হচ্ছে বর্ষার ভীষণ ভয়। কিন্তু সেই ভয়টা আসলে কিসের সেটাই যেন বুঝতে পারছে না বর্ষা।’
____
হসপিটালের একজন ডাক্তারের রুমে বসে আছে বর্ষা। হাতে পায়ে ব্যান্ডেজ করে দিচ্ছে ডাক্তার। আর তার পাশেই দাঁড়িয়ে আছে তিয়ান। হঠাৎই ডাক্তার বলে উঠল,
‘ কি করে হলো এইসব?’
ডাক্তারের কথা শুনে বর্ষা বলে উঠল,
‘ সাইকেলের সাথে ধাক্কা লেগে।’
‘ হাঁটার সময় দেখে হাঁটবেন না।’
‘ আসলে বুঝতে পারি নি রাস্তা পার হচ্ছিলাম কখন যে সাইকেলটা আসলো খেয়াল করি নি।’
‘ হুম বুঝেছি।’
এই বলে বর্ষা হাতে পায়ে ব্যান্ডেজ করে দিয়ে কিছু ঔষধের নাম খাতায় লিখতে লিখতে বললো ডাক্তার,
‘ কিছু ঔষধের নাম লিখে দিচ্ছি সময় মতো খেলে দু’দিনের মধ্যেই ঠিক হয়ে যাবেন।”
উওরে তিয়ান বলে উঠল,
‘ এমনিতে টেনশনের কোনো কারন নেই তো ডক্টর?’
‘ না তেমন কোনো ব্যাপার নেই।’
ডাক্তারের কথা শুনে তপ্ত নিশ্বাস ফেলে বললো তিয়ান,
‘ যাক ভালো হয়েছে।’
‘ এই ঔষধগুলো সময় মতো খাবেন তবেই ঠিক হয়ে যাবেন।’
বলেই ঔষধ লেখা পৃষ্ঠাটা ছিঁড়ে এগিয়ে দেয় বর্ষার দিকে। বর্ষা ধরার আগেই তিয়ান কাগজটা ধরে বলে উঠল,
‘ ঠিক আছে ডক্টর।’
অতঃপর ডাক্তারকে ধন্যবাদ জানিয়ে বেরিয়ে যায় বর্ষা আর তিয়ান। দরজা থেকে বেরিয়েই বলে উঠল তিয়ান,
‘ আপনি এখানটায় দাঁড়ান বর্ষা ভাবি আমি ঔষধগুলো কিনে নিয়ে আসি।’
প্রতি উওরে বর্ষা কিছু বলার আগেই চলে যায় তিয়ান। তিয়ানের কাজে বর্ষা হতাশ হয় একটু। তবে বেশি ভাবলো না চুপটি করে বসলো সে। তাঁর পাশেই থাকা চেয়ারটায়। পায়ের চেয়ে হাতে বেশি চোট পেয়েছে বর্ষা। খুরিয়ে খুরিয়ে হাঁটতে পারলেও হাত নাড়াতে প্রচন্ড কষ্ট হচ্ছে বর্ষার। হঠাৎই ফোনটা বেজে উঠলো বর্ষার। উপরে মায়ের নাম্বার দেখে খুশি মনে ফোনটা তুলে আস্তে আস্তে এগিয়ে যায় সামনে। নিজের অবস্থার কথাটাকে পুরোপুরি চেপে গিয়ে বলে সে,
‘ হ্যালো মা কেমন আছো তুমি?’
মেয়ের কথা শুনে অপরপ্রান্তে কান্না ভেঁজা গলায় বলে বর্ষার মা,
‘ তোকে ছাড়া কেমনে ভালো থাকি বল। কতদিন হয়ে গেল তোকে দেখি না।’
প্রতি উওরে কি বলবে বুঝতে পারছে না বর্ষা। হঠাৎই বর্ষার তাঁর থেকে কিছুটা দূরে শুভ্রের মতো কাউকে দেখলো বলে মনে হলো। বর্ষা বেশ কৌতূহলী এগিয়ে গেল সামনে। সত্যি সত্যি শুভ্রকে দেখে বেশ অবাক হয়ে পিছু নেয় তাঁর। শুভ্র হসপিটালে কি করছে?’
কেভিন নাম্বার ৪১২ তে হাতে কিছু খাবারের প্যাকেট নিয়ে ঢুকে পড়ে শুভ্র। শুভ্রের কাজে বর্ষাও মাকে ‘পড়ে কথা বলবে’ এমনটা বলে ফোনটা কেটে এগিয়ে যায় সামনে। তারপর যা দেখলো তাতে তাঁর পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে যাওয়ার উপক্রম। কারন শুভ্র একটা মেয়েকে নিচ হাতে খাইয়ে দিচ্ছে। বর্ষা মেয়েটাকে চেনে না এর আগে দেখে নি। এর আগে যখন শুভ্রের বন্ধুরা এসেছিল তখন এই মেয়েটাকে দেখে নি। তাহলে এই মেয়েটা কে? শুভ্র তাহলে অফিসের নাম করে মিথ্যে বলে এখানে এসেছে কিন্তু কেন?’ হুট করেই মেয়েটা জড়িয়ে ধরলো শুভ্রকে শুভ্রও তেমন কিছু না বলে মাথায় হাত বুলিয়ে দিল মেয়েটির।’
এদিকে শুভ্রদের এমন কান্ড দেখে বুকের মাঝে ছ্যাত করে উঠলো বর্ষার। চোখের কোনায় এসে ভর করেছে নোনা পানি। তাহলে কি শুভ্র এই কারনেই বিয়ে করতে চাইছিল না তাঁকে। কিন্তু আর ভাবলো না বর্ষা মাথা ভনভন করছে তাঁর সবকিছু যেন শুন্য মনে হচ্ছে তাঁর। তাহলে সে যেটার ভয় পেয়েছিল তাই হলো। এমন সময় সেখানে উপস্থিত হলো তিয়ান। বর্ষাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বললো সে,
‘ বর্ষা ভাবি আপনি ওখানে কি করছেন?’
সাথে সাথে চমকে উঠলো বর্ষা। দরজার দিয়ে ভিতরে একপলক তাকালো সে। এদিকে হুট করেই তিয়ানের গলা সাথে বর্ষার নাম শুনে চমকে উঠলো শুভ্র। তক্ষৎনাত সামনের মেয়েটিকে নিজের থেকে ছাড়িয়ে উঠে দাঁড়ালো সে। দরজা খুলে সত্যি সত্যি বর্ষা আর তিয়ানকে দেখে অবাক হয়ে বললো সে,
‘ বর্ষা?’
সঙ্গে সঙ্গে পিছন ঘুরে তাকালো বর্ষা। চোখ ছলছল করছে তাঁর। তিয়ান শুভ্রকে দেখে বেশ অবাক হয়ে বললো,
‘ তুই এখানে?’
‘ না মানে,
শুভ্র আর কিছু বলার আগেই বর্ষা বলে উঠল,
‘ কিছু বলতে হবে না আপনায়।’
এতটুকু বলে তিয়ানকে উদ্দেশ্য করে বললো বর্ষা,
‘ আমায় একটু বাড়ি নিয়ে যাবেন তিয়ান আমার শরীরটা ভালো লাগছে না।’
‘ কিন্তু বর্ষা?” (তিয়ান)
‘ কোনো কিন্তু নয় আর আপনি না পারলে আমি একাই চলে যাচ্ছি।’
বলেই আস্তে আস্তে এগিয়ে যেতে লাগলো বর্ষা। বর্ষার হাতে পায়ের অবস্থা দেখে বললো শুভ্র,
‘ কি হয়েছে ওর?’
‘ আর বলিস না রাস্তায় একটা সাইকেলের সাথে ধাক্কা লেগে এক্সিডেন্ট করেছে ও ভাগ্যিস আমি তখন সেই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলাম তোকে তো কতবার ফোন করলাম তুই তো ধরলি না।’
প্রতি উওরে শুভ্র কিছু বলবে তাঁর আগেই বর্ষা বলে উঠল,
‘ আপনি আমায় নিয়ে যাবেন তিয়ান নাকি আমি একাই চলে যাবো।’
শুভ্র বুঝতে পেরেছে বর্ষা তাঁকে আর নীলিমাকে দেখে ফেলেছে। অতঃপর শুভ্রকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই বেরিয়ে গেল তিয়ান আর বর্ষা। আর শুভ্র নির্বিকার হয়ে বর্ষার যাওয়ার পানে তাকিয়ে থেকে বললো,
‘ তুমি আমায় ভুল বুঝলে বর্ষা?’
______
নির্ঘুম রাতে হিয়াদের বাড়ি থেকে কয়েক কদম দূরে গাড়িতে বসে ছিল নির্মল। এমন সময় হুট করেই কোথা থেকে হিয়া দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরলো তাঁকে। আকস্মিক হিয়ার এমন কান্ডে চোখ বড় বড় হয়ে যায় নির্মলের। তক্ষৎনাত অবাক হয়েই বলে সে,
‘ কি হলো তোমার?’
#চলবে…..
#ধূসর_শ্রাবণ💚
#লেখিকা:#তানজিল_মীম💚
#পর্ব-২১
________________
বিস্মিত ভরা চেহারা নিয়ে তাকিয়ে আছে নির্মল হিয়ার দিকে। সে ভাবে নি এই মুহূর্তে হুট করে কোথা থেকে হিয়া এসে তাঁকে জড়িয়ে ধরবে। নির্মল বেশ অবাক হয়েই আবারো প্রশ্ন করে বসলো হিয়াকে বললো,
‘ কি হয়েছে তোমার?’
এবারও নিশ্চুপ হিয়া। হিয়াকে চুপ থাকতে দেখে আবারো বলে উঠল নির্মল,
‘ কি হলো তুমি কথা বলছো না কেন?’
প্রতি উওরে নির্মলের দিকে নিশ্চুপে থাকায় হিয়া। যা দেখে বলে নির্মল,
‘ তুমি না বললে আমি বুঝবো কি করে?’
নির্মলের কথা শুনে হিয়া হতাশা ভরা কন্ঠ নিয়ে বললো,
‘ আপনি আমায় কখনো ছেড়ে যাবেন না তো,নির্মল?’
এবার নির্মল সত্যি হতভাগ। এই নির্ঘুম রাতে হুট করে হিয়ার এমন অদ্ভুত কথা শুনে যেন সত্যি নির্বিকার নির্মল। নির্মল বিস্ময় ভরা কন্ঠ নিয়ে বললো,
‘ তুমি এতরাতে এই কথাটা বলার জন্য এখানে এসেছো হিয়া?’
‘ আপনি আমার প্রশ্নের উত্তরটা দিন না প্লিজ?’
‘ কি উওর দিবো এটা কোনো প্রশ্ন হলো।’
বিরক্ত হলো হিয়া। এই লোকটা সোজা কথাটা সোজা ভাবে বলতে পারে না কেন? হিয়া কিছুটা বিরক্তির স্বর নিয়েই বললো,
‘ আপনাকে যে প্রশ্নটা করেছি তাঁর হ্যাঁ বা না বলতে পারছেন না কেন?’
নির্মল চুপ রইলো। কিছু বললো না। নির্মলকে চুপ থাকতে দেখে বেশ নির্বিকার স্বর নিয়ে বললো হিয়া,
‘ কি হলো আপনি কথা বলছেন না কেন?’
হিয়ার কথা শুনে শীতল দৃষ্টিতে তাকালো নির্মল হিয়ার দিকে। তারপর ওর দু’গাল চেপে ধরে শীতল কন্ঠে বললো,
‘ কি হয়েছে তোমার?’
নির্মলের কাজে হিয়া ছলছল চোখে নির্মলের দিকে তাকিয়ে বললো,
‘ আপনি আমায় ছাড়া অন্য কোনো মেয়েকে কখনো ভালোবেসে ফেলবেন না তো নির্মল?’
হতাশ নির্মল। এই মেয়ের নির্ঘাত মাথা খারাপ হয়ে গেছে না হলে কিসব ভুললাম বকছে। নির্মল হতাশা ভরা চেহারা নিয়েই বললো,
‘ তোমার কি মাথা খারাপ হয়ে গেছে হিয়া কি সব উল্টো পাল্টা বকছো?’
‘ আপনি আমার কথার সরাসরি জবাব কেন দিচ্ছেন না বলুন না আমায় ছাড়া অন্য কোনো মেয়েকে কখনো ভালোবাসবেন না।’
এবার নির্মল কিছু একটা ভেবে বলে উঠল,
‘ ভালোবাসলেই বা কি তুমি তো আমায় ভালোবাসো না।’
নির্মলের কথা শুনে বুকটা ছ্যাত করে উঠলো হিয়ার। ফট করেই আবারো শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো সে নির্মলকে তারপর কান্না ভেঁজা কন্ঠ নিয়ে বললো,
‘ এভাবে বলবেন না আর কে বলেছে আমি আপনায় ভালোবাসি না। আমিও আপনায় ভালোবাসি নির্মল।’
বলতে বলতে কেঁদে ফেলে হিয়া। হিয়ার কান্ডে যেন চোখ বেরিয়ে আসার উপক্রম নির্মলের। চটজলদি হিয়াকে নিজের থেকে ছাড়িয়ে ওর চোখের দিকে তাকিয়ে বললো,
‘ আরে তুমি কাঁদছো কেন আমি তো মজা করে বলেছিলাম।’
‘ এমন মজা কখনো করবেন না নির্মল আমার ভীষণ কষ্ট হচ্ছে, কেন হচ্ছে জানি না কিন্তু কষ্ট হচ্ছে। বুক চিঁড়ে কান্না পাচ্ছে।’
বলেই কাঁদতে লাগলো হিয়া। হিয়ার কান্ডে নির্মল বিস্মিত। তক্ষৎনাত হিয়াকে বুকে জড়িয়ে ধরে বললো নির্মল,
‘ ঠিক আছে ঠিক আছে আর কাঁদতে হবে না আমি তোমাকে ছাড়া অন্য কাউকে ভালোবাসবো না। আর এখন তুমিও তো আমায় ভালোবাসো বললে তাহলে বিয়েটা করে ফেলি।’
নির্মলের কথা শুনে হিয়া কান্না ভেঁজা কন্ঠ নিয়েই বললো,
‘ আপনায় আমি বিয়ে করবো কেন?’
‘ যা বাবা এক্ষুনি তো বললে তুমি আমায় ভালোবাসো তাহলে বিয়ে করবে না কেন?’
‘ ভালোবাসি বলেছি বিয়ে করবো এমনটা তো বলে নি।’
হতভাগ নির্মল। খানিকটা বিরক্ত নিয়ে বললো সে,
‘ বিয়ে না করলে আমিও অন্য কোনো মেয়েকে ভালোবেসে ফেলবো তারপর কাঁদলেও আমাকে পাবে না।’
নির্মলের এবারের কথা শুনে আরো উচ্চস্বরে কেঁদে উঠলো হিয়া। হিয়ার কান্ডে আশেপাশে তাকালো নির্মল। এতরাতে হিয়ার এমন পাগলামি দেখে সত্যি নিরাশ নির্মল। নির্মল হিয়ার মুখ চেপে ধরে বললো,
‘ হুস এত জোরে কাঁদছো কেন আশেপাশের লোকজনকে কি জানাতে চাইছো আমরা এখানে আছি।’
হিয়া শুনলো। থেমে গেল নিরালায়। হিয়াকে থামতে দেখে নির্মলও মুখ থেকে হাত সরিয়ে বললো,
‘ একদম কাঁদবে না, আর কখন থেকে উল্টো পাল্টা বকে চলেছো, তুমি জানো না এই নির্মল হিয়া ব্যতিত অন্যকাউকে চায় না। তাই চুপ থাকো আর হ্যাঁ তুমি চাও বা না চাও খুব শীঘ্রই আমরা বিয়ে করছি।’
হিয়া ধমকালো সত্যি তো এতক্ষণ যাবৎ কি সব পাগলামি করলো সে। মাথার তারগুলো বোধহয় সত্যি ছিঁড়ে গিয়েছিল তাঁর। ছিঃ ছিঃ নিশ্চয়ই রাতের বেলা তাঁকে ভূতে ধরেছিল। হিয়াকে চুপ থাকতে দেখে আবারো বলে উঠল নির্মল,
‘ কি হলো কিছু বলছো না কেন?’
প্রতি উওরে নির্বিকার হয়ে বললো হিয়া,
‘ কি বলবো?’
‘ কিছু বলতে হবে না। শুধু এটা বলো আজ রাতে কি এখানে থাকার পরিকল্পনা করছো? বাড়ি যাবে না নাকি আমাকে ছাড়া আর থাকতে পারছো না।’
বলেই হেঁসে ফেলে নির্মল। নির্মলের হাসিতেই চোখ আঁটকে যায় হিয়ার। লোকটা কি সুন্দর হাসে। হিয়াকে নিজের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে নিজের হাসি থামিয়ে বললো নির্মল,
‘ কি দেখছো?’
নির্মলের কথা শুনে হিয়া আনমনেই বলে উঠল,
‘ আপনাকে।’
সঙ্গে সঙ্গে চমকালো নির্মল। মুচকি হাসলো নীরবে। দূরত্ব কমিয়ে কাছাকাছি হলো দুজন। নির্মল হিয়ার কানের কাছে মুখ নিয়ে শীতল ভেজা কন্ঠ নিয়ে বললো,
‘ তুমি যে আমাতে বড় আসক্ত হয়ে গেছো তা কি তুমি জানো?’
চমকে উঠলো হিয়া। নির্বিকার চোখে তাকালো সে নির্মলের চোখের দিকে। হিয়া তাকাতেই আবারো বলে উঠল নির্মল,
‘ এত প্রেমে পড়লো না প্রিয়দর্শিনী পড়ে কিন্তু বিপদে পড়ে যাবে।’
প্রতিবার নির্মলের এমন শীতল ভেজা কথা শুনে চুপ থাকলেও এবার আর চুপ থাকলো না হিয়া। আনমনেই বলে উঠল সে,
‘ আপনি পড়েছেন কি বিপদে?’
হাসলো নির্মল তারপর বললো,
‘ পড়েছি বলেই না তোমায় সাবধান করছি।’
আবারো থমকে গেল হিয়া। এই লোকটার সাথে কথা বলে কোনো কালেই পেরে উঠে নি হিয়া। আজও তাঁর ব্যতিক্রম কিছু হলো না। থেমে গেল হিয়া আর কিছু বললো না। এমনতেও নিজের পাগলামিতে নিজেই লজ্জিত আজ!’
_____
আকাশটা কালো। মেঘ ঝমেছে অল্প। যদিও সময়টা বিকেল পেরিয়ে সন্ধ্যার কাছাকাছি। চারপাশে শীতল ভেজা বাতাস বইছে খুব। গাছের পাতারাও নড়েচড়ে উঠছে বারংবার। এসবের ভিড়েই বেলকনিতে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে বর্ষা। নির্বিকার সে। চোখের পানি শুকিয়ে গেছে অনেক আগেই। বুকের ভিতর দক দক করছে সাথে চিনচিনে ব্যথা অনুভব হচ্ছে খুব। বর্ষা কল্পনাও করতে পারে নি শুভ্র তাঁকে ঠকাবে। অবশ্য ঠকাবে বললে ভুল হবে শুভ্র তো কোনোদিন তাঁকে ভালোই বাসে নি। বিয়ের আগেই তো ডিভোর্স নিয়ে কথা বলেছিল। এবার বর্ষা বুঝতে পেরেছে শুভ্র কেন বিয়েটা করতে চাই নি। শুভ্র তাঁকে ঠকায় নি, শুভ্র তো এই বিয়েটাই করতে চায় নি তাহলে শুভ্র কি করে ঠকালো। পরিবারের চাপে পড়ে তাঁকে বিয়ে করতে বাধ্য হয়েছে একপ্রকার বলা যায়। এই মুহূর্তে বর্ষার মনে হচ্ছে শুভ্র সেদিন ফিরে না আসলেই ভালো হতো। কিন্তু সেদিন তো শুভ্র চলে যাওয়াতে বড্ড অভিমান হয়েছিল তাঁর বেলা। বর্ষা ভাবলো অনেক কিছু ভাবলো। মাথার ভিতর হাজার হাজার কথা যেন কিলবিল করছে তাঁর। শুভ্র তাঁকে ঠকায় নি, শুভ্রের দোষ দিলে একদমই ভুল হবে। তাঁর কোনো রাইট নেই শুভ্রকে কিছু বলার। সব গল্পই যে বিয়ের পর তাঁর স্বামী তাঁর স্ত্রীকে ভালোবাসবে এমনটা নাও হতে পারে। দু’দিন আগেও শুভ্রের আচরনে মনে হয়েছিল বর্ষার শুভ্র হয়তো নিজের অজান্তেই ভালোবেসে ফেলেছে তাঁকে। কিন্তু না তাঁর ধারণা ভুল ছিল শুভ্র কোনো কালেও তাঁকে ভালোবাসে নি হয়তো কোনোদিন ভালো বাসবেও না। এমন সময় সেখানে দৌড়ে আসলো শুভ্র। বর্ষার দিকে এগিয়ে এসে হতভম্ব গলায় বললো সে,
‘ বর্ষা?’
সাথে সাথে ছলছল চোখে পিছন ঘুরে তাকালো বর্ষা। বর্ষাকে তাকাতে দেখে শুভ্র বলে উঠল,
‘ তুমি যা দেখেছো,
আর কিছু বলার আগেই হাত দেখিয়ে থামিয়ে দেয় বর্ষা শুভ্রকে। তারপর বলে,
‘ আমি কি আপনাকে কিছু বলেছি শুভ্র তাহলে কইফয়েত কেন দিচ্ছেন?’
‘ কিন্তু বর্ষা?’
‘ আপনার কোনো দোষ নেই শুভ্র সব দোষ আমার। আর তার থেকেও বড় কথা আমি হলাম আপনার জীবনের উটকো ঝামেলা। আমার জন্য আপনি কতবার আঘাত পেয়েছেন বলুন তো।’
‘ তুমি আমায় ভুল বুঝছো বর্ষা?’
‘ ভুল ঠিক জানি না। আমার এখন ভালো লাগছে না আমি রুমে গেলাম।’
এতটুকু বলে চলে যেতে নেয় বর্ষা। বর্ষাকে যেতে দেখে শুভ্র হাত ধরে বসে বর্ষার তারপর বলে,
‘ আমার কথাটা তো শুনবে একবার।’
‘ আপনাকে কিছু বলতে হবে না শুভ্র।’
‘ তুমি আবারো আমায় ভুল বুঝছো বর্ষা আমার কথাগুলো শুনলে আমি জানি তুমি বুঝবে আমায়। তাই প্লিজ একবার আমার কথাটা শোনো।’
শুভ্রের কথা শুনলো এবার। নির্বিকার স্বরেই বললো সে,
‘ ঠিক আছে বলুন তবে,
‘ আসলে বর্ষা হয়েছে কি?’
শুভ্র আর কিছু বলার আগেই সশব্দে ফোনটা বেজে উঠল তাঁর। সঙ্গে সঙ্গে চমকে উঠলো শুভ্র তক্ষৎনাত ফোনটা হাতে নিলো সে হসপিটাল থেকে ফোন এসেছে। শুভ্র একবার বর্ষা তো একবার ফোনটার দিকে তাকাচ্ছে। বর্ষা বুঝলো বিষয়টা। নিজের হাতটা শুভ্রের থেকে ছাড়িয়ে বললো,
‘ আমরা পরে কথা বলবো।’
এতটুকু বলে তক্ষৎনাত জায়গা ত্যাগ করলো সে। আর শুভ্রও পুরো হতাশ হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো কিছুক্ষন এরই মাঝে ফোনটা কেটে আবারো বেজে উঠলো। শুভ্র নির্বিকার হয়েই ফোনটা তুলে বললো,
‘ আসছি আমি।’
____
মাঝপথে কেটে যায় কয়েকটা দিন। এই কয়েকদিনে শুভ্র বর্ষার দূরত্ব বেড়ে গেছে আরও। কারো সাথেই কথা হয় না তেমন। শুভ্র অনেকবার অনেক কিছু বলতে চেয়েও বলতে পারে না। যার দরুন দূরত্ব যেন আগের চেয়েও বেশি৷ বেড়ে গেছে তাদের। পরিস্থিতি এমন যে শুভ্র চাইলেও কিছু করতে পারছে না।’
”
এয়ারপোর্টে নিজের ব্যাগপত্র নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে বর্ষা। আজ বাংলাদেশ যাবে সে। এখানে থাকলে দম বন্ধ হয়ে মারা পড়বে। শুভ্রকে দেখলেও ভীষণ কষ্ট হয় তাঁর। আর বাড়ি থেকে খবর এসেছে দাদুর শরীরটাও নাকি ঠিক নেই। তাই অনেক ভেবে সিদ্ধান্ত নিলো ‘বাংলাদেশ যাবে বর্ষা। তারপর শুভ্রকে মুক্তি দিয়ে দিবে। এভাবে তো আর চলতে দেয়া যায় না।’
নানা কিছু ভেবে তপ্ত নিশ্বাস ফেলে ঢুকে পড়লো বর্ষা এয়ারপোর্টের ভিতর।’
”
গাড়ি করে বাড়ির উদ্দেশ্যে যাচ্ছে শুভ্র। মনটা আজ ভীষণ ফুড়ফুড়ে লাগছে তাঁর। অবশেষে নিজের ঝামেলা মিটিয়ে বেরিয়ে আসতে পেরেছে সে। শুভ্র ভেবে নিয়েছি আজই বর্ষাকে সবকিছু বলে তাদের দূরত্ব হাঁটিয়ে তাঁর মনের কথা বলবে বর্ষাকে। অনেক হয়েছে আর নয়?’
নানা কিছু ভেবে ফোনটা হাতে নিলো শুভ্র তারপর মেসেজ লিখলো বর্ষাকে,
‘ আমি আসছি! তোমাকে আমার মনের সব কথা আজই বলবো বোকারানি। হসপিটালের মেয়েটা কে ছিল? কেন আমি বিয়ের দিন ফিরে এসেছিলাম? কেন তোমায় বিয়ে করেছি সব বলবো আমি। অনেক হয়েছে দূরত্ব আর নয়। এবার সব শেষ করার সময় এসেছে অপেক্ষায় থেকো, আমি আসছি?’
বলেই মেসেজটা পাঠিয়ে দিলো শুভ্র বর্ষার নাম্বারের।
অন্যদিকে, মেসেজ এসেছে ঠিকই কিন্তু সেটা দেখার আগেই নিজের মোবাইলটা অফ করে ব্যাগে ভরে নিলো বর্ষা। তারপর এগিয়ে গেল সে নিজের গন্তব্যের দিকে….
#চলবে….