ধূসর রাঙা মেঘ_২ পর্ব-০৯

0
411

#ধূসর_রাঙা_মেঘ_২
#পর্ব_৯
#লেখিকা_আজরিনা_জ্যামি

“আরে আপনি এখানে? অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে আপনার সাথে দেখা হবে ভাবতেই পারি নি।”

মেঘ ধূসরকে দেখে মনে মনে হাসে। মেঘ ধূসরের জন্যই গেটের সামনে অপেক্ষা করছিল প্রায় একঘন্টা যাবৎ। যাতে ধূসরের এই অবাক হওয়া মুখটা দেখতে পায়।আর সকলের অগোচরে কথা বলতে পারে। ধূসরের কথার উত্তরে মেঘ বলল,,

“এটা আমারই বাড়ি ডক্টর?”

ধূসর অবাক হয়ে বলল,,

“তোমার বাড়ি?”

“বাহ প্রথমে আপনি করে বলে, আবার তুমিতে চলে এলেন। তাহলে আপনি সম্বোধন এ গিয়েছিলেন কেন?”

ধূসর বিরবির করে বলল,,

“মাঝে মাঝে তুমি বলা মানুষটাকে আপনি করে সম্বধোন করতে হয়। যাতে সে বোঝে সামনের মানুষটার তার প্রতি অভিমান হয়েছে।”

ধূসর বিরবির করে বললেও মেঘ ঠিকই শুনতে পেল। মেঘ হাসলো।মেঘের প্রতি অভিমান হলেই ,সে বুঝিয়ে দেবে যে সে অভিমান করেছে। মেঘ বলল,

“কি হলো? কি বিরবির করছেন?”

“তেমন কিছু না এটা তোমার বাড়ি তাই ভাবছিলাম। আচ্ছা যার বিয়ে হচ্ছে সে তোমার কে হয়? আমার জানামতে আমার বাবার বন্ধুর মেয়ের বিয়ে হচ্ছে।”

“আপনার বাবার বন্ধুর নাম কি জানেন?”

“হ্যা জানি তো আজকে বলেছে। তখন আমার তাড়া ছিল দৌড়ে বেরুচ্ছিলাম তখন বলেছে, বাবার বন্ধুর নাম আয়মান চৌধুরী!”

আয়মান চৌধুরী বলে ধূসর কিছুক্ষণ থামলো। তখন তাড়াহুড়োই আয়মান চৌধুরী নামটা মাথায়ই ছিল না। ধূসর আবার বলল,,

“আয়মান চৌধুরী তো তোমার বাবা তাই না। তুমি ওনার মেয়ে!”

কথাটা বলতে বলতেই ধূসর থমকে গেল। ওর বুকটা ভার হয়ে উঠলো সমস্তটা যেন তিক্ত রুপ ধারন করলো। মেঘ ধূসরকে পর্যবেক্ষণ করলো ওর মুখ দেখেই বুঝতে পারলো। ধূসর কি ভাবছে? সেই সাথে কষ্টের ছাপ ও দেখা গেল। তা দেখে মেঘের ভেতরটা চমকে উঠলো কারন সে ধূসরের কষ্ট সহ্য করতে পারে না। তাই মেঘ তাড়াতাড়ি করে বলল,,

“আমার বড় আপুর বিয়ে!”

হুট করে এমন কথা শুনে মুহুর্তেই ধূসর বিষন্নতা উবে, এক আকাশ খুশি ভর করলো। ও বোকার মতো কিছুটা হাসতে লাগলো। মেঘ ওর কাজে মনে মনে হাসলো। ধূসর বলল,,

“শুকরিয়া আরেকটুর জন্য তুমি আমার হার্ট অ্যাটাক হওয়ার থেকে বাঁচালে। তা কেমন আছো তুমি? অনেকদিন হলো তোমার সাথে কথা হয় না। আজকাল খুব নিজের যত্ন নাও বুঝি। হাত ও কেটে যায় না, কোথাও আঘাত ও পাও না , তাই হাসপাতালেও যাও না।”

ধূসরের কথায় মেঘ একটু জোরেই হাসলো। মাত্র ছয় দিন হয়েছে ওরা কথা বলে না। তাতে অনেক দিন হয়েছে ধূসরের কাছে ওর সাথে দেখা হয়না বলে নিজের আঘাতের কথাও বলছে। মেঘ হেঁসে বলল,,

“আমি আঘাত পেলে আপনি খুশি হন বুঝি?”

“তুমি আঘাত পেলে খুশি হইতো, খুব খুশি হই। আর এতো খুশি হই যে ভেতরটা ফেটে যায়। কিন্তু তুমি তা দেখতে পাওনা নিষ্ঠুর মেয়ে।”

ধূসর বিরবির করে বললেও এবারও মেঘ শুনতে পেল। আর বলল,,

“কি হলো?”

“না তেমন কিছু না! আচ্ছা বাড়িতে ঢুকতে দেবে না বুঝি।”

“আপনিই তো আসার পর থেকে কথা বলছেন? যাই হোক ভেতরে চলুন।”

মেঘ হাঁটা ধরলো তার পেছনে ধূসর ও হাঁটতে লাগলো। ধূসর বলল,,

“তুমি কেমন আছো বললে না তো?”

“আপনি কেমন আছেন ডক্টর?’

“প্রশ্ন আমি করেছি আগে?”

“মনে করেন আপনার উত্তরই আমার উত্তর।’

ধূসর একটু অবাক হলো। মেঘ আর ধূসর বাড়িতে ঢুকে পরলো। ধূসরের পরিবার দুজনকে একসাথে দেখে খুশি হলো। কিন্তু মেঘের পরিবার একটু অবাক হয়েছে ।কারন মেঘ ছেলেদের থেকে দূরে থাকে সেটা সবাই জানে। ধূসরকে দেখে এহসান এগিয়ে আসলো তারপর আয়মান চৌধুরীর সাথে পরিচয় করিয়ে দিল। আয়মান চৌধুরীর কে জানে কি হলো চোখটা ছলছল করে উঠলো।তিনি ধূসরকে জরিয়ে ধরলেন। ধূসরের কেমন যেন লাগলো বোধহয় এই জিনিসটা তার সাথে আগেও ঘটেছে। ধূসর ওনাকে ছাড়িয়ে বলল,,

“আসসালামু আলাইকুম।কেমন আছেন আঙ্কেল?”

“ওয়ালাইকুমুস সালাম।আলহামদুলিল্লাহ ভালো! তুমি কেমন আছো ধূসর?”

“আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।আপনি আমায় আগে থেকেই চিনেন?

” হুম চিনি তো আসলে তোমার তো পুরোনো তেমন কিছু মনে নেই তাই এরকম মনে হচ্ছে।অনেক দিন পর তোমাকে দেখে খুব খুশি হলাম ধূসর।”

“জি আঙ্কেল চিনতে না পারার জন্য দুঃখিত। আমার ও আপনার সাথে দেখা হয়ে ভালো লাগছে।

‘ঠিক আছে মেঘ আম্মা এদিকে আসেন!’

“জি আব্বা!”

মেঘ শুনেই ধূসর অবাক চোখে মেঘের দিকে তাকালো। অস্ফুট স্বরে বলল,,

“মেঘ!মেঘবালিকা!!’

ততক্ষনে মেঘ ধূসরের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে।আয়মান চৌধুরী বললেন,,

“যান আজানকে বলুন ধূসরকে ওর রুম দেখিয়ে দিতে। হাসপাতাল থেকে ফিরেছে একটু রেস্ট নিক।”

“হুম আব্বা আজান বোধহয় ঘরে আছে। আমি ওর ঘর পর্যন্ত ওনাকে নিয়ে যাচ্ছি তারপর আজান নিয়ে যাবে।”

“আচ্ছা ঠিক আছে।”

মেঘের ব্যাপারে যারা অবগত সবাই অদ্ভুত দৃষ্টিতে মেঘকে দেখছে। একটা মানুষ এতটা নিখুঁতভাবে ভালো থাকার অভিনয় কিভাবে করতে পারে। ধূসর নীলিমা সোহেল আর নীলের সাথে কুশল বিনিময় করলো। তারপর মেঘের সাথে চলতে লাগলো। হুট করে ধূসর বলল,,

“তোমার নাম মেঘ কোনদিন বললে না তো?”

“আপনার নাম ধূসর আপনিও তো বলেন নি?”

“আসলে ডক্টর এর ওখানে আগে থেকেই নাম ছিল D.A. শুভ্র তাই। আর তোমার সাথে তো সবসময় ডক্টর হিসেবেই দেখা হয়েছে তাই নাম বলা হয় নি। আমার ফুল নাম ধূসর এহসান শুভ্র।

“আমার ফুল নাম কাশফিয়া আয়মান মেঘ। মেঘ টা ডাকনাম বলতে পারেন।”

“এখানে না এলে জানতেই পারতাম না তোমার নাম মেঘ। মেঘবালিকা!”

“কি বললেন?”

“তেমন কিছু না!” আচ্ছা আমি তোমায় এখন থেকে কি নামে ডাকবো?

“আপনার যেটা ইচ্ছা!”

“আচ্ছা! আমি তোমায় মেঘবালি না মানে মেঘ বলেই ডাকবো। এখানে না আসলে জানতামই না তুমি আমাদের পরিবারের পূর্ব পরিচিত। আমার বাবা আর তোমার বাবা বন্ধু। অথচ তোমার বাবার নাম জানতে কত কথা খরচ করতে হলো। সেদিন বাবাও কিছু বললো না। এখানে আরো আগে আসলে মিস্ট্রি সল্ভ হয়ে যেতো!”

“কি মিস্ট্রি সল্ভ হতো।”

“কিছু না!”

ওরা আজানের রুম এসে পরেছে। মেঘ আজানকে ডাক দিল আজান লিলিকে নিয়ে বের হলো। এই দুদিনে আজানের সাথে মিশে গেছে লিলি। লিলি ধূসরকে দেখেই নিজের মতো ডাকতে লাগলো আর লাফ দিয়ে ধূসরের কোলে উঠলো। তা দেখে ধূসর প্রথমে হকচকিয়ে উঠলেও পরে নিজেকে সামলিয়ে নিল। আল বলল,,

“বাহ এটাই বোধহয় লিলি?”

মেঘ হেঁসে বলল,,

“হ্যা ঐ লিলি!”

ধূসর লিলিকে আদর করতে লাগলো। লিলি ও চুপচাপ বাবার আদর খেতে লাগলো। তখন আজান বলল,,

“ইনি কে আপু?”

“উনি আব্বার বন্ধুর ছেলে ধূসর । তুই ওনাকে ওনার রুম দেখিয়ে দিয়ে আয়।”

“সকালে বাবা যার কথা বলছিল সে?”

“হুম!”

“আসুন ভাইয়া।”

ধূসর লিলিকে মেঘের কাছে দিয়ে বলল,,

“তোমার লিলি অনেক সুইট। এখন যাই লিলি আবার পরে দেখা হবে। এখন আমি ফ্রেশ হবো।”

ধূসর আজানের সাথে চলে গেল। এদিকে মেঘ লিলিকে জরিয়ে ধরে বলল,,

“কি বলেছিলাম না তোর বাবার সাথে খুব তাড়াতাড়ি দেখা হবে।”

মেঘ হেঁসে নিচে গেল। নীলিমার পাশে গিয়ে ওর সাথে কথা বলতে লাগলো। ওখানে জাবিন নোলক রোহিনীও ছিল। কিছুক্ষণ পর হির আর লিয়াও যোগ দিল। সবাই মিলে জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছে। জায়মা আর শায়লা অদ্ভুত ভাবে মেঘকে দেখছে। মেঘের নজর ওদের দিকে যেতে মেঘ ওদের দুজনের সাথে সবার পরিচয় করিয়ে দেয়। কিছুক্ষণের মধ্যে ওদের সাথে ওরা মিশে যায়। সব লেডিসরা একসাথে গল্প করতে থাকে। মুন আর মেঘের মামাতো বোনেরা মুনের সাথে রয়েছে। হলুদের অনুষ্ঠান হবে না তাই কোন চাপ নেই। তবে মেয়েরা আবদার করেছে রাতে ছাদে গিয়ে একটু মেয়েরা মিলে একটু আনন্দ করবে আর মেহেদী পরবে সবাই একসাথে। সমশের চৌধুরী ওদের কথায় সম্মতি দিয়েছেন। ছেলেরা সবাই একসাথে কথা বলছে। কিছুক্ষণ পর ধূসর এলো দিশান আগেই এসে পরেছে আর শায়লা জায়মার হাজবেন্ডদের সাথে আলাপ করে নিয়েছে। ধূসর আসতে ওকেও পরিচয় করিয়ে দিল। একটু পর মেঘ ধূসরের জন্য আর বাকি সবার জন্য চা কফি পাঠিয়ে দিল। অতঃপর রাত হলে সব মেয়েরা ছাদে চলে গেল। মেঘকে বললো যেতে কিন্তু ও বলল ওর আব্বার সাথে কথা আছে পরে আসবে। ও গিয়ে আয়মান চৌধুরী কে বলল,,

“আব্বা এদিকে আসুন একটু কথা আছে?”

আয়মান চৌধুরী সবাইকে কথা বলতে বলে মেঘের সাথে বাড়ির বাইরে চলে এলেন। মেঘ চারদিকে দেখে বলল,,

“আব্বা আপনার সব গার্ডদের সাথে কথা হয়েছে?”

“জি আম্মা হয়েছে তারা কাল সকালেই সিভিল ড্রেসে এ বাড়িতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকবে। আমি যদি ভুল না হই কাল কিছু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।”

“হুম! তাদের এ্যালার্ট থাকতে বলবেন।কখন কি হয় বলা যায় না। সবথেকে বড় কথা কাল আপনার কাছে দু’টো গান রাখবেন?”

“কেন?”

“রাখতে বললাম রাখবেন বাকিটা দেখা যাবে। আপনার নামে লাইসেন্স করা গানটা আর আমার নামের টা ঐ দুটোই রাখবেন। যাতে কোন অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার করতে না হয়। আমার সাথে রাখতে পারবো না ঐ ড্রেস পরে। তাই আপনার কাছে রাখা।”

“আপনি কি কাউকে সন্দেহ করছেন আম্মা!”

“আমি ছাড়াও আরেকজন করছে দাদুভাই। তিনি ভাবছেন আমাদের সাথে খারাপ কিছু হওয়ার সম্ভাবনা আছে। সেদিন আমাকে প্রশ্ন করেছিল চারটি সংখ্যা দিয়ে ৭৭৭ কিভাবে হবে। সংখ্যা চার টা মানে মানুষ চারজন। কিন্তু তিনটা সংখ্যা ২৫৯ ঐ সংখ্যার মানুষ আলাদা তিন জন। কিন্তু চারজন মানুষের মাঝে একজন বেশ শক্তিশালী। আর সে হলো অংকের ভাষায় ৩….. ২৫৯ কে ৩ দ্বারা গুন করে হয় ৭৭৭। মানে ঐ শক্তিশালী একজনের ঐ তিনজননের সাথে যোগাযোগ রয়েছে । আর সবচেয়ে বড় কথা ৭৭৭ এটা দ্বারা বুঝিয়েছে এই ছোট তিনজনের উদ্দেশ্য একটাই। কিন্ত ঐ একজনের উদ্দেশ্য আলাদা। দাদুভাই কিছু জানে কিন্তু পরিস্কার করে বলছে না। জানি না কেন বলছে না। আমরা তিন জনকে জানি কিন্তু আরেকজন কে? এটা জানি না আব্বা ‌। ঐটাই মেন কালপ্রিট। তার ব্যাপারে জানি না। যার জন্য আমরা সিওর হয়ে কিছু করতে পারছি না। আর এই বিষয়ে কিছু কি আছে যা আমি ধরতে পারছি না।‌‌ কাল একটা অনুষ্ঠান তাই রিস্ক নিতে চাইছি না। আমাদের পরিবারের সেফটির বিষয়।”

“তাহলে আমাদের মেন কালপ্রিট কে বের করতে হবে।”

“আমার মনে হয় সে নিজে এসেই ধরা দেবে।”

“আপনার এমন কেন মনে হয়?”

“অতিরিক্ত চালাক মানুষ ও মাঝে মাঝে ভুল করে ফেলে। আমরা তার ভুল করার অপেক্ষায় থাকবো।”

“চালাক আর বুদ্ধিমান এর মাঝে বিস্তর ফারাক। দু’টো এক নয় সেটা আমি আপনাকে দেখে বুঝলাম আম্মা। চালাক মানুষ নিজের চতুরতায় মাঝে মাঝে খেই হারিয়ে ফেলে। অথচ বুদ্ধিমান সবসময় মাথা ঠান্ডা রেখে তার জ্ঞান ও বুদ্ধি দিয়ে কাজ করে। যেমনটা আপনি আম্মা।”

“তো এবার ভেতরে যাওয়া যাক।”

“এই কথাগুলো পরেও করতে পারতাম ছাদে অনুষ্ঠান হচ্ছে সবাই মজা করছে আর আপনি?”

“আমি কেমন ধরনের মানুষ সেটা আপনি জানেন তবুও!”

“আজ তো আপনার চার বান্ধবী আছে। সাথে আপনার জা আর আপনার ননদ আছে তাহলে।”

মেঘ হেঁসে বলল,,

“কিছু কিছু জায়গায় আমার একাকিত্বতা ঐ একজন ছাড়া কেউ পূরন করতে পারবে না। ওখানে গেলে আপুরা মেহেদী দেওয়ার জন্য জোর করবে। কিন্তু আমি তো তার হাতে ছাড়া আর কারো হাতে মেহেদী লাগাবো না। তার নিষেধ আছে। যদি তার নিষেধ অমান্য করা তাহলে একদিন আমাকে বলবে,,

“আমি না হয় সব ভুলে গিয়েছিলাম নিষ্ঠুর মেয়ে।
তুমি তো ভুলো নি। তাহলে তুমি কেন অন্যের হাত থেকে মেহেদী লাগিয়েছিলে। তুমি তো কথা দিয়েছিলে আমার হাতে ছাড়া আর কারো হাত থেকে মেহেদী নেবে না। এখন তোমায় কি শাস্তি দেব।” তখন আমি তাকে কি জবাব দেব? আমি যে কথা দিয়েছি তাকে।”

আয়মান চৌধুরী হাসলেন আর বললেন,,

“আচ্ছা ঠিক আছে। চলুন আমার সাথে আপনি না হয় আমার পাশে বসে থাকবেন।”

“হুম।”

মেঘ আর আয়মান চৌধুরী ভেতরে চলে গেল। মেঘ চুপটি করে তার আব্বার পাশে বসে রইলো। কিছুক্ষণ পর তখন মেঘের চার বান্ধবী মেঘের সামনে দুই হাত কোমরে দিয়ে দাঁড়িয়ে পরলো। মেঘ মাথা উঠিয়ে বলল,,

“কি হয়েছে?”

তখন নীলি বলল,,

“সেটাই তো কি হয়েছে?”

“আমি জানবো কিভাবে?”

তখন হির বলল,,

“তোর জন্য ছাদে কতক্ষন ধরে অপেক্ষা করছি। কিন্তু তুই যাচ্ছিস না কেন?”

“আমার ছাদে যাওয়ার মুড নেই তাই!”

তখন লিয়া বলল,,

“তাহলে কি করলে মুড হবে?”

“কোনকিছু করলেই না। আমি এখন ছাদে যাবো না।”

তখন জাবিন বলল,,

“ভালোবাবা কিছু বলো না?”

আয়মান চৌধুরী হেঁসে বললেন,,

“আমি তোদের মাঝে নেই।”

তখন নীলি বলল,

“তা থাকবে কেন? তোমার আম্মা যা বলবে তাই। তুমি তো নাদান বাচ্চা ভালোবাবা। মেঘ উঠ নাহলে এরপর যা হবে আমরা দায়ী থাকবো না।”

“কি হবে এরপর!”

“হির, লিয়া, জাবিন দেখা কি হবে?”

তিনজনে মেঘের দিকে এগিয়ে গেল। তা দেখে ওরা কি করবে এটা বুঝতে পেরে মেঘ বলল,,

“একদম আমাকে ছুবি না।”

“আমরা তো ছুবো না ধরবো।”

বলেই হির ওকে টান দিয়ে উঠালো লিয়া আর জাবিন দুপাশে ধরে ওকে কোলে নিল। সবকিছু এত তাড়াতাড়ি করলো মেঘ কিছু বুজতে পারলো না। তারপর হির আর নীলি ধরলো চার বান্ধবী দুইপাশে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। মেঘ ছটফট করছে তা দেখে হির বলল,

“এবার কোথায় পালাবি এবার যাই করিস না কেন?ছাদে না যাওয়া পর্যন্ত নামবো না।এই জন্যই চারজনে ধরেছি। নাহলে আমি একাই নিতাম।”

“ভালো হচ্ছে না কিন্তু! নামিয়ে দে আমি যদি নামতে পারি না। একটার ও হাড্ডি আস্ত রাখবো না।”

“ছাদে যাওয়ার আগে নামা নেই তাই চুপ থাক।”

এদিকে মেঘের অবস্থা দেখে সবাই হাসছে‌। আয়মান চৌধুরী বেশ খুশি হলেন। কিন্তু এগুলো দেখে ধূসরের মনে প্রশ্ন উঁকি মারছে নীলি মেঘের বান্ধবী নাকি? ও মেঘের বাবাকে ভালোবাবা বললো কেন? পাশেই দিশান ছিল ও দিশান কে বলল,

“ভাইয়া কাশফিয়া মানে মেঘ ও আর নীলি কি পূর্বপরিচিত?”

“নীলি আর মেঘ তো বেস্ট ফ্রেন্ড তাও স্কুল থেকে।”

“কই আমি কোনদিন দেখলাম না। তাছাড়া কাশফিয়া কি নিজের বেস্ট ফ্রেন্ড এর ভাইকে চেনে না। আমি নাহয় পুরোনো কয়েকবছর ভুলে গেছি। কিন্তু ওর তো মনে আছে।

দিশান বুঝতে পারলো গন্ডগোল পাকিয়ে ফেলেছে তাই সামলাতে বলল,,

“আসলে মেঘ তো আমাদের বাড়িতে যাই নি কখনো। তোকে দেখেও নি তাই তোকে চেনে না। আজই বোধহয় দেখলো। তুই জানিস রোহিনীর কেমন যেন বোন হয় মেঘ। আর তুই যখন অসুস্থ ছিলি তখন ওরা কয়েকমাস আমাদের পাশের বাড়িতে ভাড়া থাকতো। তাই আমাদের পরিবারের সবাই ওকে ভালোমতো চেনে। তুই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার দুদিন আগে ওরা চলে আসে। তাই তোর সাথে আর দেখা হয় নি। বাই দা ওয়ে এই মেঘই কি তোর কাশফিয়া।”

ধূসর মুচকি হেসে মাথা চুলকালো। তা দেখে দিশান মনে মনে শ্বাস নিল যাক বাঁচা গেছে। সবটা সামলাতে পেরেছে এখন ওর পরিবারের সাথে মেঘকে দেখলেও সমস্যা নেই। তাছাড়া ধূসরের মনটাকে ও অন্যদিকে নিয়েছে। কিন্তু এদিকে সব শুনে ধূসর বলল,,

“ইশশ তুমি চলে এলে কেন? যদি না চলে আসতে তাহলে আমাদের আরো আগে দেখা হতো মেঘবালিকা।”

_________________

ছাদে এসে ওরা চারজন মেঘকে নামিয়ে দিল। চারজনে মেঘকে এভাবে আনতে দেখে সবাই ওদের দিকে এগিয়ে আসলো। নোলক বলল,,

“বড় আপু তুমি মেঘ আপুকে এভাবে আনলে কেন?

“তোর মেঘ আপুর ঘাড়ের রগ ত্যারা ওপরে আসতে বললাম কিন্তু না তিনি আসবে না। তাই এভাবে আনতে হলো।”

এ কথা শুনে সবাই হেসে উঠল। মেঘ কোন কথা না বলে দেখলো রিমঝিম আর নীল লিলিকে নিয়ে খেলছে। মেঘ সেদিকে গিয়ে ওদের কাছে গিয়ে বসলো তিনজনকে ডাক দিল ।তারপর ওদের সাথে কথা বলতে লাগলো। তখন হির বলল,

“এই মেঘ তোকে এই করার জন্য ওপরে আনলাম।”

মেঘ তাকিয়ে বলল,,

“আমি বলেছি আনতে? এবার আমার সাথে কথা বলতে এলে ছাঁদ থেকে ফেলে দেব।”

তখন শায়লা বলল,,

“এদিকে আয় না মেঘ তোর হাতে মেহেদী দিয়ে দেব। তোর না মেহেদী নিতে অনেক ভালোলাগে।”

“আমি মেহেদী পারবো না। তোমরা তোমাদের কাজ করো না। আমাকে ডিসটার্ভ করবে না। নাহলে নিচে চলে যাবো।”

মেঘের কথা শুনে কেউ ওকে ঘাটালো না। তবে বেশ কয়েকজন বুঝতে পারল মেঘ মেহেদী কেন নেবে না। ওরাও জোর করলো না। মেঘের চার বান্ধবী মেঘের সাথে গিয়ে ভাব জমাতে নিল। কিন্তু মেঘ ওদের পাত্তা দিল না প্রথমে কিছুক্ষণ পর মেঘ হেঁসে সবার সাথে কথা বলতে লাগলো। তখন মুন বলল,,

“দেখো শায়লা আপু জায়মা আপু মেঘ কি সুন্দর চারটা বান্ধবী পেয়েছে। যেই মেয়েটা অনুষ্ঠানে আসতে চাইলে বড়রা বারন করতো এমনকি আমরাও বলতাম না আসতে। অথচ দেখো আজ মেঘই আসতে চায় নি তাও চার বান্ধবী মেঘকে খুশি রাখার জন্য কোলে করে নিয়ে এলো। মেঘের ভালোবাসার মানুষ খুব স্বল্পসংখ্যক। কিন্তু যারা ওকে ভালোবাসে তাদের ভালোবাসায় কোন খাদ নেই। এরকম ভালোবাসার মানুষ জীবনে থাকলে খুব বেশী মানুষের দরকার নেই। স্বল্প মানুষ জীবনে থাকলেও চলবে।”

“তুই ঠিক বলেছিস মুন। মানুষ জীবনে বেশি থাকার প্রয়োজন নেই।এমন ভালোবাসার স্বল্পসংখ্যক মানুষ থাকলেই চলবে। কিন্তু কি বলতো আজকাল মানুষ সম্পর্ক তৈরি করে প্রয়োজনে তাই তো জীবনে অনেক মানুষের আনাগোনা চলে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তেমন কেউ জীবনের সাথে যুক্ত থাকে না। যার যখন যাকে প্রয়োজন তখন তার সাথে সম্পর্ক ঠিক রাখে কিন্তু প্রয়োজন শেষ সম্পর্ক গুলোও কেমন ফিকে পরে যায়। তারা ভাগ্যবান যাদের সত্যিকারের নিঃস্বার্থ বন্ধু আছে। কিন্তু আজকাল অনেক নামধারী বন্ধু পাওয়া যায়। নিঃস্বার্থ বন্ধু খুব কম সংখ্যক মানুষ পায়।”

“হুম মেঘ মেহেদী পরতে খুব পছন্দ করতো আজ ওকে মেহেদী পড়াবো।”

“কিন্তু ও তো না করলো তাহলে?”

“তো কি হয়েছে আমরা পড়াবো। কিন্তু ওকে জানতেও দেব না। পরে দেখতে পাবে ?”

“এটা সম্ভব নাকি মেহেদী পড়াবি কিন্তু জানতে পারবে না।”

“আমরা তখন খুব মনোযোগ দিয়ে একটা কাজ করি অথবা ভাবতে থাকি। তখন আমাদের আশেপাশে খেয়াল থাকে না।”

“তুই কি করতে চাইছিস বলতো?”

“আমি একটা জিনিস জানি তা তোমরা জানো না। আমি মেঘকে আনছি আমি ইশারা করলে তোমরা ওর হাতে মেহেদী লাগিয়ে দেবে। ওর বোনের বিয়ে ওর মেহেদী রাঙা হাত না চলে নাকি।”

তখন শায়লা বলল,,

“ওকে ঠিক আছে। তুই যদি ওর হাতে মেহেদী লাগাতে পারিস। ওকে না জানিয়ে,তাহলে তোকে এক হাজার টাকা দেব।”

“ওকে ডান কাজটা আমি এমনিই করতাম কিন্তু তুমি যখন বললে দেবে তাহলে এখন জোরদার করে করবো।”

মুন মেঘের কাছে গেল সকলকে বলে মেঘকে নিয়ে এক কর্নারে আনলো। মেঘ বলল,,

“কি হয়েছে আপু এখানে আনলে?”

” দেখ না আজকের চাঁদটা কি সুন্দর?

“তুমি এটা বলতে আমাকে এখানে এনেছো?”

মুনের বোকা কথায় মুন নিজেই মাথা চাপড়ায়। তারপর নিজেকে সামলিয়ে বলল,,

“কিছু টা এরকমই। তুই জানিস এই চাঁদ কি অদ্ভুত ভালোবাসা। এই চাঁদ রকমের মুহুর্ত তৈরি করে। কতোজনের প্রেমময় রাতের সাক্ষী সে। আমার তো চাঁদনি রাতে মুজাহিদ এর সাথে চন্দ্রবিলাস করা মুহুর্ত মনে পরে যায়। তুই ও বিবাহিত তোর কি তোর হাজবেন্ড এর সাথে কোন সুন্দর মুহুর্ত নেই।”

বিবাহিত শুনে মেঘ একটু চমকালো তারমানে মুনের মনে আছে। কারন মেঘের বিয়েতে এ বাড়ির সবাইকে জানানো হয়েছিল কিন্তু কেউ যায় নি। মুন আবারও বলল,

“কি হলো কোন সুন্দর মুহুর্ত নেই?”

মেঘ ধূসরের কথা ভাবলো এই চাঁদরাতে তাদের কতো সুন্দর মুহুর্ত। মেঘ হেঁসে চাঁদের দিকে তাকিয়ে বলল,,

“কেন থাকবে না? আমরা কতো চন্দ্রবিলাস করেছি। তার হাতে হাত ধরে কতোটা রাস্তা হাঁটা। কখনো ছাদে কখনো নৌকায় কখনো বা গাড়ির ছাদে। একসাথে বসে কতোশত গল্প করা হয়েছে। একে অপরের পাশে বসে কতো সুন্দর মুহুর্ত অনুভব করা হয়েছে।

মেঘ চোখ বুজে ধূসরের সাথে কাটানো মুহূর্তগুলো ভাবতে লাগলো আর মূনকে বলতে লাগলো। ওর মুখে অদ্ভুত প্রশান্তির হাঁসি। মুন জানতো মেঘের হাজবেন্ড এর সাথে ওর খুব ভালো সম্পর্ক।এটা দুই বছর আগে ওর বাবার মুখে শুনেছিল। ওর হাজবেন্ড নাকি মেঘকে অনেক ভালোবাসে। তাই মুন প্রথমে এই ট্রিকটা কাজে লাগালো। কিন্তু ও ভাবতে পারে নি এত তাড়াতাড়ি ও ওর কাজ করতে পারবে। মুন বুঝতে পারল মেঘ এখন কল্পনা করছে মুন জায়মাকে ইশারা করলো। মেঘের ছাদের হাতলে হাত রেখে আছে মেঘ এখনো চোখ বন্ধ করে মুহুর্তগুলো ভাবছে। অর্ধেক হাতে মেহেদী দেওয়া শেষ তখন মেঘ চোখ খুলে। ওকে চোখ খুলতে দেখে মুন জায়মা সোজা হয়ে দাড়ায়। আসলে মেঘ কল্পনাবিলাসী হলেও ওর ব্রেন খুব ভালো কাজ করে। ওর মনে হচ্ছিল হাতে কিছু একটা হচ্ছে তাই তো চোখ খুললো। মেঘ হাতের দিকে তাকাতেই দেখলো মেহেদী। মেঘ চমকে মুনকে বলল,

“আমার হাতে মেহেদী দিল কে?”

তখন জায়মা মেকি হাঁসি দিয়ে বলল,,

“আসলে?”

মেঘের খুব রাগ হলো কিন্তু ও রাগটা দেখাতে চাইছে না। মেঘ কঠোর স্বরে বলল,,

“কেউ যদি কোন কিছু না করে তারমানে সেটা না হবে তাই না। আমি একবার ও বলেছি আমি মেহেদী পারবো। যখন মেহেদী পরতে চাইতাম তখন তো কেউ দিতো না। আর এখন যখন না করছি তাহলে নিশ্চয়ই আমি নেব না।”

বলেই মেঘ ওখান থেকে চলে গেল ওখানে টিস্যু বক্স ছিল মেঘ টিস্যু দিয়ে হাতটা মুছতে লাগলো। তারপর নিচে আসতে লাগলো তখন হির বলল,,

“এই কোথায় যাস?”

“সবকিছুর কৈফিয়ত তোদের দিতে হবে। তোদের জন্য এটা হয়েছে তোদের বলেছিলাম না আমি এখানে আসবো না। যে ভয়টা পাচ্ছিলাম সেটাই হলো।”

বলেই মেঘ হাঁটা ধরলো। তখন হির বলল,

“কি হয়েছে?”

তখন জায়মা এসে বলল,,

“ওর হাতে একটু মেহেদী দিয়ে দিয়েছি কিন্তু ও রাগ করলো। রেগে টিস্যু নিয়ে মুছেও ফেলল। এর আগে এত রাগতে দেখেনি।”

ওরা চারজন একসাথে বলল,,

“মেহেদী?’

“হ্যা মেহেদী!”

চার বান্ধবী দৌড়ে নিচে চলে গেল। তা দেখে মুন বলল,,

“বুঝলাম না কি হলো?”

এদিকে মেঘ তাড়াতাড়ি করে ওয়াশরুমে ঢুকলো সাবান দিয়ে হাত ধুতে লাগলো। এইটুকু সময়ের মধ্যে কিছুটা রঙ হয়েছে । মেঘ ওর হাত ওর শক্তি আছে তা দিয়ে ডলতে লাগলো সাবান ছুবা দিয়ে। এদিকে নীলিরা ঘরে ঢুকলো। মেঘ ওয়াশরুমে ওরা বলল মেঘকে বাইরে আসতে কিন্তু মেঘ কথা শোনার মানুষ না। হাত ডলতে ডলতে লাল হয়ে গেছে। একটু মেহেদীর রঙ আছে। তা দেখে মেঘ আরো ডলতে লাগলো। অতঃপর টানা দশমিনিট পর মেঘ বের হলো। হাতে আর অবশিষ্ট মেহেদীর রঙ নেই। তবে হাত এমনভাবে লাল হয়ে গেছে মনে হচ্ছে হাতের ওপর দিয়ে ঝড় বয়ে গেছে। (এখনকার বাজারের মেহেদী সম্পর্কে ধারনা আছে সবার। এখনকার মেহেদী কিরকম সেটা সবার জানা রংমিশ্রিত মেহেদী যা তাড়াতাড়ি রঙ হতে সাহায্য করে। কিন্তু বেশি সময় থাকে না। এখানে সেই মেহেদী ব্যবহার করা হয়েছে।যেহেতু পাঁচ মিনিট ও রাখেনি তাই দশমিনিটে ডলে মেহেদী তুলে ফেলা বড় ব্যাপারনা। তাই এটা নিয়ে বিভ্রান্ত হবেন না আর আমাকেও করবেন না।)

মেঘ বের হয়ে বিছানায় শুয়ে চোখ বুজে ফেলল খুবই ক্লান্ত সে। চার বান্ধবী মেঘের রুমেই ছিল ওরা কিছু বলবে তার আগেই মেঘ বলল,

“মেহেদীর টপিক যেন কারো কানে না যায়। তারপর তখনকার জন্য সরি। খুব রাগ হচ্ছিল নিজের ওপর তাই ঝেড়ে দিয়েছি। তোদের ওপর কোন রাগ নেই আমার।তোরা তো জানতিস না এরকম কিছু হবে। তাই গিল্টি ফিল করার কোন মানে নেই। এখন সর ভালো লাগছে না তোরা ছাদে যা আর হ্যা আমার জন্য মন খারাপ করতে হবে না। আমি আধ ঘন্টা পর আসছি।এখন একটু একা থাকতে চাই।”

“আমরা,,,”

“একটাও কথা না যা আমি একটু একা থাকতে চাই প্লিজ।”

চার বান্ধবী দরজা ভিরিয়ে দিয়ে গেল। মেঘ তখন চোখ খুলে হাতটা উঁচু করে ধরে বলল,,

“সরি ধূসর আমি আমার কথা রাখতে পারি নি। তবে হ্যা আমার হাতে আমি মেহেদীর রঙ অবশিষ্ট থাকতে দেই নি। তাই রাগ করবেন না। আপনার মেঘবালিকার হাত তো শুধু ধূসর নামক মানুষটা মেহেদী দ্বারা রঙিন করবে আর কেউ নয়।”

~চলবে,,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে