ধর্ষক_থেকে_বর_২৫_এবং_অন্তিম_পর্ব

2
5519

ধর্ষক_থেকে_বর_২৫_এবং_অন্তিম_পর্ব

.
আল্লাহ লামিয়ার যদি কিছু একটা হয়ে যায় তবে আমি বাঁচবো কিভাবে।আমি তো একটা মুহুত্বও লামিয়াকে ছাড়া চলতে পারবো না।লামিয়া যদি সত্যি মারা যায় তবে।না আমি এইসব কি ভাবছি।লামিয়ার কিছুই হবে না।আমি ওর কিছু হতেই দেব না।হে আল্লাহ তুমি প্লিজ আমার থেকে লামিয়াকে অলাদা করে দিও না।ওকে ছাড়া যে আমার জীবণ একে বারের ই অচল।বারান্দার গ্রিনে হাত দিয়ে ওই সব কথা ভাবছি আর নিরবে চোখের পানি ফেলেছি।এমন সময় কাধের উপর কারো হাতের স্পর্শ অনুভব করলাম।কাধে হাত রাখতেই আমি চমকে উঠলাম।পিছনে তাকিয়ে দেখি আব্বু দাড়িয়ে আছে।
— কিরে তোর চোখে পানি কেন?
— কিছু না আব্বু।এক দৃষ্টিতে সামনে
তাকিয়ে আছি তাই হয়তো।
— তুই সবার চোখ ফাঁকি দিতে
পারলেও আমার চোখকে ফাঁকি
দিতে পারবি না।
— চিন্তুা করিস না।লামিয়ার কিছুই
হবে না।
— আমরা ওর কিছু হতেই দেব না।
— তাই যেন হয় আব্বু।
কথাটা বলেই আমি আব্বুকে শক্ত করে জরিয়ে ধরিয়ে কান্না করে ফেললাম।আব্বুও আমাকে জরিয়ে ধরে নিরবে দু চোখের অশ্রু ফেলছে ।এই মুহুত্বে লামিয়া রুমে চলে আসলো।লামিয়াকে দেখেই দুচোখের অশ্রু মুছে ফেললাম।আমাদের দিকে কিছু সময় তাকিয়ে থাকার পর লামিয়া বললো:
— আব্বু আপনি এখানে আর
আমি আপনাকে সারা বাড়ি
খুঁজে বেড়ায়তেছি।
— কেন বউ মা?
— আজ আমি নিজের হাতে
সব রান্না করেছি।
— আপনাদের সবাইকে খাওয়াবো বলে।
— হুম খাবো তো।আমার মায়ের হাতের
রান্না বলে কথা।
— আজ আমি পেট পুড়ে খুবো।
— এই যে তুমিও দাড়িয়ে থেকো না
খাবে চলো।
আমরা সকলে খাবার টেবিলে চলে আসলাম।লামিয়া আমাদের সকলের জন্য খাবার বেড়ে দিল।আমি খাবার নিয়ে টেবিলে বসে খাবারের প্লেটের ভিতর হাত রেখে আঙ্গুল দিয়ে আউরাচ্ছি।আর একাধারে লামিয়ার দিয়ে তাকিয়ে আছি।আল্লাহ তুমি এতো নিষ্টুর কি করে হলে ওর মতো এমন মায়াবিনী একটা মেয়েকে কেন এতো কষ্টো দিচ্ছো।তুমি ওর রোগটা আমাকে দিলে না কেন?আমি তো একজন ধর্ষক তোমার শাস্তি দেওয়ার হতো আমাকে দিতে ওকে কেন এমন শাস্তি দিচ্ছো।তুমি ওকে সম্পর্ণ সুস্থ করে দেও প্লিজ।লামিয়াকে আমার থেকে আলাদা করে দিও না।খাবারের প্লেট সামনে নিয়ে এই সব কথা ভাবছি।এমন সময় লামিয়ার কথায় বাস্তবে ফিরলাম।
— তুমি এমন করে কি ভাবছো।
— কই কিছু না তো।
— বেশী সময় খাবার সামনে নিয়ে
বসে থাকতে হয় না।
— তাড়াতাড়ি খেয়ে নেও।
— হুম খাচ্ছি।
আমি কিছুটা খাবার খেয়ে হাত ধুয়ে রুমে চলে আসলাম।রুমে এসে বারান্দার গ্রিনে হাত দিয়ে ওই দূর আকাশের তারা টার দিকে তাকিয়ে আছি।হয়তো আর
কয়েকটা দিন পর তারাগুলোর মাঝে লামিয়াকে খুঁজে বেড়াতে হবে। তারা গুলোর সাথে কথা বলেই কাটাতে হবে হয়তো অযশ্রো রাত।বারান্দায় বসে আরো কিছু সময় কাটানোর পর রুমে এসে শুয়ে পড়লাম।তার কিছু সময় পর লামিয়া এসে আমার পাশে শুয়ে পড়লো।দুজন ই নিরব হয়ে শুয়ে রয়েছি।
কিছু সময় নিরব থাকার পর লামিয়া বললো:
— আমাকে একটু শক্ত করে জরিয়ে
ধরবে?
— আর বেশী দিন তো আমি এই
পৃথিবীতে থাকবো না।
— এই কয়েকটা দিন আমি তোমার
ভালবাসা নিয়ে বাঁচতে চাই।
— তুমি দিবে না তোমার বুক ভরা
ভালবাসা।
— হুম দেব।তোমার কিছুই হবে না।
আমি তোমার কিছু হতেই দেব না।
— তুমি সারাটা জীবন এভাবেই
আমার বুকের মাঝে থাকবে।
আমি লামিয়াকে জরিয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়লাম।সকালে ফজরের নামাজের আযান শুনে ঘুৃমটা ভেঙে গেল।ঘুম থেকে উঠে দেখি লামিয়া এখনও ঘুমিয়ে আছে।আমি ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে ফজরের নামাজ কায়েম করতে চলে গেলাম।মসজিদে গিয়ে ফরজের নামাজ আদায় করে বাসায় চলে আসলাম।
বাসায় এসে দেখি লামিয়া মাত্র গোসল করে এসেছে।আমি ওর হাতটা টান দিয়ে ওকে দেওয়ালের সাথে আটকে ধরলাম।ওর দু হাত দেওয়ালের সাথে আটকে ধরতেই লামিয়া ওর দু চোখ বন্ধ করে ফেললো।আমি আলতো করে আমার ঠোঁঠ লামিয়ার ঠোঁঠের সাথে লাগিয়ে দিলাম।তারপর ওর কোমরে হাত রাখলাম।কোমরে হাত রাখতেই লামিয়া কেমন যানি উনমুক্ত হয়ে গেল।হঠাৎ করেই আমার লামিয়ার অবস্থানের কথা মনে পড়ে গেল।আমি লামিয়াকে ছেড়ে দিয়ে ছাঁদে চলে গেলাম।লামিয়ার হাসি মুখটা সম্পর্ণ চুপসে গেল।
লামিয়াও আমার পিছু পিছু ছাদে চলে আসলো।আমি ছাদের ভ্রিমের উপর হাত দিয়ে দাড়িয়ে আছি।লামিয়া আমার পাশে এসে দাঁড়ালো।
— মন খারাপ?
— না।
— আমি জানি তোমার
মন খারাপ।
— তবে চিন্তা করো না আমার
কিছুই হবে না।
— তুমি থাকতে তোমার লামিয়ার
কিছু হতেই পারে না।
— হ্যা।তুমি দেখো আমি তোমার
কিছুই হতে দেব না।
— আমি থাকতে আমার লামিয়ার
কিছু হতেই পারে না।
কথাগুলো বলেই আমার দূ হাত দিয়ে লামিয়ার দূ চোখের পানি মুছে দিলাম।
ওর দু চোখের পাবি মুখে ওকে শক্ত করে আমার বুকে জরিয়ে নিলাম।এভাবেই কাটতে থাকলো সময় পেরিয়ে যেতে থাকলো দিনের পর দিন।কয়েকদিন পর…
.
আজ লামিয়ার অপারেশন।সবাই দয়া করবেন ওর জন্য লামিয়া যেন সম্পর্ণ সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরতে পারে।আব্বু আম্মু লামিয়ার বাবা মা মেঘলা সহ বাড়ির সকলে অপরেশন রুমে সামনে বসে আছে।আর আমি ওই দূরে একটা সিটে বসে লামিয়ার জন্য আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করছি।ভিতরে লামিয়ার অপারেশন চলছে।এময় সময় আছরের নামাজের আযান কানে আসলো।আমি হাসপাতালের রুম থেকে দৌড়ে লিপ্টের সামনে আসলাম।লিপ্ট থেকে নেমে সোজা মজসিদের সামনে চলে গেলাম।মসজিদে এসে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করলাম।হে আল্লাহ আজ পর্যন্ত আমি তোমার কাছে কিছু চাইনি।আজ শুরু একটা জিনিস চাইতেছি তুমি আমার থেকে আমার হ্রদপিন্ডকে আলাদা করে দিয়ো না।ওকে আমার বুকে ফিরিয়ে দাও।ওর কিছু হয়ে গেলে আমি বাঁচবো না।লামিয়া আমার নিশ্বাস..আমার বিশ্বাস..আমার ভালবাসা।প্লিজ তুমি ওকে আমার থেকে দূরে সরে নিও না।আমি মসজিদ থেকে হাসপাতালে চলে আসলমা।সেখানে এসে দেখি এখনো লামিয়ার অপরারেশন চলছে।বেশ কিছু সময় পর ডাক্তার মন খারাপ নিয়ে মাথা নিচু করে অপারেশন রুম থেকে বেরিয়ে আসলো।
— কি হয়েছে ডাক্তার।
— সরি… আমরা ওনাকে..
— আমরা ওনাকে বাঁচাতে পেরেছি।
— রোগী এখন সম্পর্ণ শংঙ্কা মুক্ত।
— এটাই প্রথম রোগী যে ব্লাড ক্যান্সের
মতো এমন একটা মারাত্মক রোগ
নিয়েও বেঁচেঁ ফিরেছে।
— ধন্যবাদ ডাক্তার।আপনাকে অসংখ্য
ধন্যবাদ।
আমরা সেখান থেকে অপারেশন রুমে ডুকলাম।অপারেশন রুমে ডুকে দেখি
লামিয়া ব্রেডে শুয়ে রয়েছে।আমি গিয়ে লামিয়ার পাশে বসলাম।ওকে দেখেই আমার দুচোখে অশ্রু চলে আসলো।তবে এটা কষ্টের অশ্রু না এটা হলো আনন্দের অশ্রু।এমন সময় লামিয়া বললো:
— তুমি কাদছো কেন?
— তুমি বেচে থাকতে তোমার
লামিয়ার কিছু হতেই পারে না।
— আমাকে ছেড়ে কোথাও যাবে না তো।
— না আমি তোমাকে ছেড়ে কোথাও যাবো না।
কথাটা বলেই লামিয়া আমাকে জরিয়ে ধরলো।আমাদের এমন অবস্থা দেখে
সবাই মিষ্টি মিষ্টি করে হাসতে হাসতে রুম থেকে বেরিয়ে গেল।
— লামিয়া ছাড়ো সবাই দেখছে কিন্তু।
— কই কারা দেখছে।সবাই তো
চলে গিয়েছে।
— ওই যে আমার পাঠক/পাঠিকারা
দেখছে তো।
— দেখুক… ওনারা তো তোমার কলিজা।
ওনারা দেখলে সমস্যা কি।
— হুম।
কথাটা বলেই আমিও লামিয়াকে শক্ত করে আমার বুকে জরিয়ে নিলাম।ওকে এখন বুকে জরিয়ে নিয়ে যেন পৃথিবীর সব সুখ একসাথে অনুভব করলাম।
.
.
.
.
.
.
#______সমাপ্ত_______

2 মন্তব্য

Leave a Reply to Hassan উত্তর বাতিল

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে