ধর্ষক_থেকে_বর_পর্ব__১৮

0
4361

ধর্ষক_থেকে_বর_পর্ব__১৮

.
লামিয়ার ওই ঘুম জরানো মুখটা দেখতে আরো সুন্দর লাগছে।আমি অপলক দৃষ্টিতে শুধু লামিয়ার দিকে তাকিয়ে আছি।হঠাৎ করে কড়া ব্রেক করায় লামিয়া ঘুম থেকে উঠে পড়লো।সামনে তাকাতেই আমার চোখ কপালে উঠে গেল।আমি মেঘলাকে বললাম:
.
— কি হলো মেঘলা গাড়িটা এখানে
দাড় করালে কেন?
— দুলাভাই সামনে তাকিয়ে দেখেন।
— কি দেখবো।
— দীর্ঘ গাড়ির শাড়ি।
.
চোখ তুলে তাকাতেই মাথাটা ঘুরতে শুধু করলো।সামনে তাকিয়ে দেখি
যানবাহনের দীর্ঘ জ্যাম লেগে আছে।শহর এলাকার এইটা পুরাতন দৃশ্য।এখানে প্রায়ই এভাবে গাড়ির জ্যাম লেগে থাকে।একবার জ্যাম লাগলে তো আর ১/২ ঘন্টার নিচে ছাড়তেই চায় না।আমি এদিক ওদিক তাকিয়ে আছি।হঠাৎ করে একটি গাড়ির উপর চোখ পড়তেই আমার চোখ আটকে গেল।আমাদের পাশের গাড়িটার দিকে তাকিয়ে দেখি বৃষ্টি গাড়িতে বসে আছে।আমাকে দেখে বৃষ্টি এবং বৃষ্টিকে দেখে আমি গাড়ির কাসটা খুলে দিলাম।এদিকে লামিয়া আমাদের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
.
— এই যে বউকে নিয়ে এদিকে
কোথায় যাচ্ছো।(বৃষ্টি)
— কোথায় আর বউয়ের বাপের
বাড়ি।মানে আমার শশুর বাড়ি।
— ওহ।
— তুমি কোথায় যাচ্ছো।
— সামনে একটা কাজ ছিল।সেটা
সেড়ে আসছি।
— বাহ লামিয়া তোমাকে নীল শাড়িতে
বেশ সুন্দর লাগছে তো।
— এইটা ওনার পছন্দ করা শাড়ি।(লামিয়া)
— যাই বলো শাকিলের পছন্দ আছে কিন্তুু।
.
কথা বলতে বলতে এক পর্যায়ে জ্যামটা ছেড়ে গেল।গাড়ি আবার তার নিজ গতিতে চলতে শুরু করলো।আমি জানি লামিয়া বৃষ্টির সাথে আমার কথা বলা
পছন্দ করে না।কিন্তুু কি করবো বলেন প্রথম প্রেম বলে কথা সহজে কি ভোলা যায়।আমি যখন বৃষ্টির সাথে কথা বলছিলাম।লামিয়া তখন আমার দিকে রাগি লুক নিয়ে তাকিয়ে ছিল।লামিয়ার মনের মধ্যে তখন অন্য একটা ঝড় বয়ছিল।
লামিয়া জানালা দিয়ে বাহিরে তাকিয়ে আছে।আর নিরবে দু চোখের অশ্রু ফেলছে।লামিয়া আমার আর বৃষ্টির কথা বলা একদমই সয্য পারে না।আর কোন স্ত্রী ই বা তার স্বামীর সাথে অন্য একটা মেয়ে এভাবে ঘনিষ্ঠ হয়ে কথা বললে সয্য করতে পারে বলেন।আমি লামিয়ার উপর হাত রাখতেই লামিয়া আমার হাতটা সড়িয়ে দিল।
.
— আমাকে একদম ছোয়ার চেষ্টা
করবে না।(লামিয়া)
— রাগ করছো তাই না।
— আমি কারো উপর রাগ করি না।
— আর আমি তোমার কে যে।তোমার
উপর রাগ করবো।
— তুমি আমার বিয়ে করা বউ।
— তুমি যদি আমাকে বউ বলেই
মানতে তাহলে আর এমনটা
করতে পারতে না।
— কেমন করলাম।
— তুমি সেটা ভালো করেই জানো।
— আর নিজের স্বামী অন্য একজনের
সাথে কথা বললে কার ই বা ভালো
লাগে।
.
কথাটা বলতে বলতে লামিয়ার দুচোখ বেয়ে অশ্রু নেমে আসলো।লামিয়া আমাকে শক্ত করে জরিয়ে ধরে আরো উচ্চ স্বরে কান্না করতে শুরু করলো।আমি লামিয়াকে আমার বুকে জরিয়ে নিয়ে ওকে শান্ত না দেওয়ার চেষ্টা করছি।সত্যি তো নিজের স্বামীর সাথে অন্য একজনকে এভাবে ক্লোজ ভাবে কথা বলতে দেখলে কারই বা ভালো লাগবে বলেন।লামিয়াকে শান্ত না দেওয়ার কোন ভাষা যে আমার জানা নেই। দেখতে দেখতে গাড়িটা লামিয়াদের বাসার সামনে চলে আসলো।
.
— আপু তোরা যা।আমি গাড়িটা
রেখে আসছি।(মেঘলা)
— ওকে।
.
লামিয়া ওর দুচোখের অশ্রু মুছে রুমের সামনে এসে কলিং বেল বাজাতেই লামিয়ার মা মানে আমার শাশুড়ি মা এসে দরজা খুলে দিল।আমাদেরকে
দেখে সে অনেক খুশি হয়েছে।
.
— কিরে মা।কেমন আছিস।
— আমি ভালো আছি।তোমরা
কেমন আছো?
— আমরাও ভালো আছি।
— তা জামাইকে নিয়ে এভাবেই
দাড়িয়ে থাকবি নাকি ভেতরে
নিয়ে আসবি।
— হু যাচ্ছি চলো।
.
আমরা রুমের ভিতরে ঢুকলাম।আমি জানি লামিয়ার মনের ভিতর এখনো ঝড় বইছে কিন্তুু লামিয়া সেটা প্রকাশ করছে না।বুকে পাথর বেধে সব কিছু সহ্য করে নিচ্ছে।রুমে এসে জিনিসপত্র রেখে ওয়াস রুমে চলে গেলাম।ফ্রেস হয়ে আসতেই মেঘলা রুমে চলে আসলো।মেঘলা এসে বললো:
.
— আপু আম্মু তোদের খেতে ডাকছে।
— তুই যা আমরা আসতেছি।
— তাড়াতাড়ি আসিস কিন্তুু।
— হু যা।
.
মেঘলা রুম থেকে বেরিয়ে গেল।আমি বিছানায় এসে বসে পড়লাম।লামিয়া একবার আমার দিকে তাকিয়ে আবার চোখটা নামিয়ে নিয়ে ড্রেস চেঞ্জ করার জন্য ওয়াস রুমে চলে গেল।ড্রেস চেঞ্জ করে এসে আমার দিকে তাকিয়ে বললো:
.
— চলো এবার।(লামিয়া)
— কোথায়?
— কোথায় মানে ডাইনিং রুমে।
— তুমি যাও এখন আমার ক্ষুধা নেই।
— ক্ষুধা নেই মানে খাবে চলো বলছি।
.
লামিয়া আমাকে এক প্রকার জোর করেই ডাইনিং রুমে নিয়ে গেল।লামিয়ার মতো এমন মায়াবী একটা বউকে রেখে অন্য মেয়ের দিকে তাকানো কি আমার ঠিক হচ্ছে।মেয়েটা আমাকে অনেক ভালবাসে।আমার কতো কেয়ার করে।আজ পর্যন্ত আমাকে না খাইয়ে ও একটা দানাও কোনদিন মুখে দেয় নি।।ওর মতো একটা লক্ষী মেয়েকে রেখে অন্য মেয়ের সাথে সময় কাটানো আমার একদম ই ঠিক হয় না।আমি আর বৃষ্টির সাথে কোন যোগাযোগই রাখবো না।
বৃষ্টিকে নিয়ে আমি আর ভাববো না।






#________চলবে_____

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে