দ্যা_ভ্যাম্পায়ার_কুইন 19

0
1031

………………..#দ্যা_ভ্যাম্পায়ার_কুইন……………….
………………..মোঃ জুবাইদুল ইসলাম……………….
…………………………PART:19………………………….

ট্রুডোর কথা শুনে এলিনা তার বাবা-মাকে বাঁচানোর দিশা খুঁজে পেল। মনোবল ফিরে পেল সে। আগ্রহের সাথে বলল, “তাহলে এখনি রওনা দেওয়া যাক। চলো।”
মুহূর্তের মধ্যেই ভ্যাম্পায়ার রুপ নিলো এলিনা। কালো পালকের বিশাল দুটি ডানা ঝাপটাতে শুরু করলো। পাখার ঝাপটানির বাতাসে গাছের অর্ধমৃত পাতাগুলি ঝরে পড়তে লাগলো। ডানাদুটো দেখে ট্রুডোর অন্য এক চিন্তা মাথায় এলো। কথা না বাড়িয়ে ট্রুডোকে নিয়ে আকাশে উড়াল দিলো এলিনা। হাওয়ার বেগে চলতে লাগল সে। হঠাৎ ট্রুডো বলতে লাগল, “তুমি কি সত্যিই ভ্যাম্পায়ার? আমার কিন্তু এ নিয়ে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে। আসলে ভ্যাম্পায়ারদের……”
কথা শেষ না হতেই নিচে চোখ গেলো ট্রুডোর। তার চিরচেনা একটা ঘোড়াকে দেখে তাড়াতাড়ি এলিনাকে বলল, “এখানে নামো। তাড়াতাড়ি। ”
ট্রুডোর কথা শুনে নিচে নামলো এলিনা। বিরক্তির সাথে বলল, “হঠাৎ এখানে নামতে বললে কেন? কি হয়েছে? ”
ট্রুডোকে দেকেই ঘোড়াটি এসে তার মুখে চাটতে শুরু করলো। সেও ঘোড়াটিকে আদর করতে লাগল। চোখের সামনে এমন একটা দৃশ্য দেখে এলিনা অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো। ডানাদুটো ঘুড়িয়ে নিমেষেই মানুষ রুপে এলো সে। দাঁড়িয়ে দেখতে লাগলো ট্রুডো আর ঘোড়াটির কার্যকলাপ। চোখে পানি এসে গেছে ট্রুডোর। কাদোস্বরে বলল, “আমার ক্রিডি। কেমন আছিস তুই? বাকীরা কেমন আছে? ”
ক্রিডি সামনের পাদুটো উঁচু করে একটা আনন্দমুখর চিৎকার দিয়ে আবার ট্রুডোর গালে চাটতে শুরু করলো। কিছুক্ষণ পর উঠে দাঁড়ালো ট্রুডো। এলিনা বিষ্মিত চোখে তার দিকে তাকিয়ে বলল, “এসব কি? আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। আমার সবকিছুই এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। ”
এলিনাকে শান্ত করে এক তৃপ্তিদায়ক হাসি দিয়ে বুঝিয়ে বলল, “এ হচ্ছে আমার ছোটবেলার বন্ধু ক্রিডি। অবাক হলেও সত্য যে একটা ঘোড়া যে কি না আমাকে হাজারো বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা করেছে। সময় নেই। পরে সবকিছু বলবো। এখন রওনা দেওয়া যাক।”
এলিনার কাছে ট্রুডোর কথাবার্তা আচার-আচরণ সবকিছুই রহস্য হয়ে রয়ে গেলো। জেনেও জানতে পারছে না তার সম্পর্কে। তার পরিচয় কুয়াশার মতো ঝাপসা হয়েই রয়ে গেলো মনের কুঠিরে। আবার ভ্যাম্পায়ার হয়ে ট্রুডোকে বলল তার পীঠে উঠতে। ট্রুডো বলল, “না, আমি আমার ক্রিডিকে পেয়ে গেছি। এখন আর আমাকে কেউ থামাতে পারবে না। তুমি উড়ে যেতে থাকো। আমি ক্রিডির পীঠে চড়েই চলে যাচ্ছি।”
কথাটা বলার পরই পা তুলে আকাশের দিকে মুখ করে বিকট এক আওয়াজ করে ঘুড়ে দাঁড়ালো ক্রিডি। ক্রিডির উপর সওয়ান হলো ট্টুডো। আকাশে উড়াল দিলো এলিনা। বের হলো সেই জেরায়াস গোত্রের দিকে। শুরু হলো আরেক বিপদ।

ধূলো উড়িয়ে পাড়ি দিলো ক্রিডি। মনে হচ্ছে টাইম মেশিনে উঠেছে ট্রুডো। এতো দ্রুত দৌড়াচ্ছে যেন সময় তাদের হাতে স্থির। উপেক্ষিত। মাথার উপরে কয়েকমিনিটের মধ্যেই মাইল বাই মাইল উড়ে যাচ্ছে এলিনা। ডানা ঝাপটানোর বাতাসের দাপটে দুমড়ে মুচড়ে যাচ্ছে জঙ্গলের গাছগুলো। ভেঙ্গে পড়ছে গাছের শুকনো ডালগুলো। সমান বেগে পেছনে পেছনে উড়ে যাচ্ছে কাইরোর দাঁড়কাক। কর্কশ কণ্ঠে মাতিয়ে তুলেছে পরিবেশ। কিছুক্ষণের মধ্যেই দুজনে পৌঁছে গেল গোত্রের কাছে সেই ঝর্ণাতীরে। সেখানেই নামলো দুজন। চারদিকে চোখ বুলিয়ে নিলো সতর্কভাবে। লুকিয়ে লুকিয়ে এলিনার ঘরের দিকে এগোতে লাগল। চারদিক ফাঁকা। জনমানবহীন। মনে হচ্ছে যেন কোনো দুমকা হাওয়া বা দুর্যোগ এসে উড়িয়ে নিয়ে গেছে সবাইকে। একেবারে স্তব্ধ। এই সুযোগে তার ঘরে ঢুকলো এলিনা তার বাবা-মাকে উদ্ধার করার জন্য। ঘরে ঢুকেই দেখল ঘর খালি। কেউ নেই। মনে হলো নির্ঘাত তাদের বন্দি করে রেখেছে গুপ্তকক্ষে অথবা বলি দিয়েছে। ঘর থেকে বেরিয়ে তাড়াতাড়ি গুপ্তকক্ষের দিকে এগিয়ে গেলো এলিনা। ট্রুডো বাইরের দিকটায় নজর রাখতে লাগলো। গুপ্তকক্ষেও কেউ নেই। যারা বন্দি ছিলো তারাও নেই। সবকিছু খালি পড়ে আছে। বাইরে বেরিয়ে এলো এলিনা। ট্রুডোকে দেখতেই ইশারা করে বুঝালো খুঁজে পায়নি। ট্রুডো ব্যাপারটায় একটু সন্দেহ করলো। হঠাৎ ট্রুডোর সামনে ধুপ করে একটা শক্ত লাঠি পড়লো। যেমনটা আকাশ থেকে পড়ার মতো। আস্তে আস্তে এগিয়ে গেলো লাঠিটা তুলতে। নিচ হয়ে লাঠি তুলতেই চারদিক ঘীরে ধরলো হিংস্র চুপাকাবরার দল। চোখদুটো আতঙ্কে বড় হয়ে গেলো এলিনার। চিৎকার দিয়ে ট্রুডোকে ডাক দিলো সে। চুপাকাবরার পেছনে একে একে জঙ্গলের ভেতর থেকে বেরিয়ে এসে দাঁড়ালো গোত্রের লোকজন। প্রত্যেকের হাতে শান দেওয়া ধরালো অস্ত্র। দুজনকে ঘীরে নিয়েছে। আস্তে আস্তে এগিয়ে আসছে তারা। ট্রুডো ফিসফিসিয়ে এলিনার কানে বলল, “চুপাকাবরাদের ভয় দেখিয়ে সরিয়ে দাও। এদের আমি দেখছি।”
এলিনা আস্তে আস্তে বলল, “এগুলো গোত্রপ্রধানের শিকারী চুপাকাবরা। তার আদেশ ছাড়া এক পাও নড়বে না।”
ক্রিডি এখানে নেই। ঝর্ণার তীরে রেখে আসা হয়েছে তাকে। হঠাৎ শব্দ করলে সবাই টের পেয়ে যাবে বলে। চারদিকে তাকিয়ে ঝাপিয়ে পড়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকলো দুজন। এলিনা খেয়াল করলো এদের মাঝে গোত্রপ্রধান নেই। আবারো ভালো করে দেখে নিশ্চিত হয়ে নিলো। বুঝতে পারলো তার ভ্যাম্পায়ার হয়ে আক্রমণ করাটা বেশি সুবিধাজনক। ভাবতে ভাবতেই চারদিক থেকে হিংস্র গর্জন করতে করতে তেড়ে আসতে লাগল চুপাকাবরার দল। চোখের পলকেই ভ্যাম্পায়ার রুপ নিলো এলিনা। ট্রুডোকে কাছে নিয়ে বিশাল ডানাদুটি ঝাপটানো শুরু করলো। ছিটকে দূরে গিয়ে পড়তে লাগল একেকটা চুপাকাবরা। কয়েকমিনিটের ব্যবধানে চিবানো ঘাসের মতো অবস্থা হলো চুপাকাবরা দলের। এবার লাঠি নিয়ে এগিয়ে আসতে লাগলো গোত্রের লোকজন। ট্রুডো চিৎকার করে ডাক দিলো, “ক্রিডি….”
সাথে সাথে আওয়াজ করতে করতে গোত্রের লোকজন পিষিয়ে ট্রুডোর কাছে এসে হাজির হলো ক্রিডি। তাড়াতাড়ি সওয়ান হলো ক্রিডির উপর। হাতের শক্ত পাকাপোক্ত লাঠি ঘুড়িয়ে আঘাত করতে লাগলো গোত্রের লোকজনের উপর। ট্রুডোর কার্যকলাপ এক নজর দেখেই এলিনার মনে হলো ট্রুডো একজন সুদক্ষ যোদ্ধা। তার যুদ্ধকৌশল অত্যন্ত নিখুঁত আর ভ্রষ্টহীন। মোহ কাটিয়ে নিজেও লেগে পড়লো। যাকে সামনে পাচ্ছে তাকেই ডানা দিয়ে আছাড় মারতে লাগলো। চলতে লাগলো খণ্ডযুদ্ধ। হঠাৎ ক্রিডির পায়ে এক ঘা লেগে চামড়া ফেটে রক্ত ঝরতে শুরু করলো। ব্যথায় ক্ষেপে গেলো ক্রিডি। যাকে সামনে পাচ্ছে তাকেই পিষিয়ে মেরে ফেলতে লাগলো। একসময় ক্লান্ত হয়ে বসে পড়লো ক্রিডি। চারদিকে রক্তে লাল হয়ে গেছে।
..
..
..
..
..
..(চলবে…………)
গল্প লিখতেছি বাট ভালোমন্দ কোনো রিভিও পাচ্ছি না। মনে হচ্ছে গল্প লেখাই বৃথা। তাছাড়া কমেন্টেও সেই এক ডায়লগ। ভালো লাগেনা এইসব ??

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে