………………..#দ্যা_ভ্যাম্পায়ার_কুইন………………..
………………..মোঃ জুবাইদুল ইসলাম………………..
………………….………PART:15………………………….
দুদিন পর…….
জ্ঞান ফিরলো গোত্রপ্রধানের। সবাই চারদিকে বসা। সব মায়াশক্তি শেষ। অ্যাথিনার পূজা করতে না পারায় বাকী শক্তিটুকুও চলে গেছে। তাছাড়া যে পাথরটার শক্তির জন্য এতোদিন ধরে বেঁচে ছিলো সেটাও নেই। শুয়ে থেকে ইশারায় বলে দিলো গোত্রের সেরা মানুষটিকে তার সামনে হাজির করার। হিপোস নামক এক ব্যক্তিকে সবাই গোত্রপ্রধানের সামনে হাজির করলো। বিশাল দেহ, বাঘের মতো শক্তি শরীরে, স্থির চাহনি, চলাফেরাও বীরের মতো। আস্তে আস্তে গোত্রপ্রধানের কাছে গিয়ে বসলো সে। গোত্রপ্রধান হিপোস এর মাথাটা নিজের মাথার সাথে লাগিয়ে মন্ত্র জপতে শুরু করলেন। চোখ বন্ধ করে কয়েক্ষণ মন্ত্র জপার পর চোখ খোলা মাত্রই একটা মায়াবী আলো হিপোস এর চোখ মুখ দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করলো। শিউরে উঠলো হিপোস। মারা গেলেন গোত্রপ্রধান। লাশটাকে রেখে উঠে দাঁড়ালো হিপোস। ঘোষণা দিলো,”আমি হলাম এই উপজাতির গোত্রপ্রধান। অনুষ্ঠানের আয়োজন করো।”
গোত্রপ্রধানের লাশটাকে তুচ্ছ করে চুপাকাবরার আস্তানায় ফেলে দেওয়া হলো। নিমেষের মধ্যেই রক্ত চুষে সাবার করে দিলো চুপাকাবরা। নতুন গোত্রপ্রধান হওয়ায় রক্ত দিয়ে গোসল করানো হবে হিপোসকে। কিন্তু রক্ত কোথায়?
ধীরে ধীরে এলিনার বাবা মাকে যেখানে বন্দি করে রাখা হয়েছে সেদিকে এগোতে লাগলো হিপোস। মুখে শয়তানি এক মুচকি হাসি। চোখদুটোও শয়তানির দৃষ্টিতে মাতোয়ারা। বন্ধ দুয়ার খুলে দেখলো কদিন না খেয়ে আধমরা হয়ে গেছে এলিনার বাবা মা। গলা ফাটিয়ে চিৎকার দিয়ে বললো হিপোস,”এদেরকে খায়িয়ে বলি দেওয়ার ব্যবস্থা করো আর স্নানের জন্য রক্ত সংগ্রহ করো। যাও, তাড়াতাড়ি।”
মুক্ত করা হলো এলিনার বাবা মাকে। সামনে দেওয়া হলো বিভিন্ন রকমের খাবার। ক্ষুধার জ্বালায় পেটপুরে খেয়ে নিলো তারা। শরীর নেতিয়ে পড়লো তাদের। বন্দি করে রাখা হলো আবার। আয়োজন করতে লাগলো বলি দেওয়ার জন্য।
ঘন্টাখানিক পর….
রক্ত সংগ্রহের জন্য আছে বড় বড় দুটি গামলা। হিপোস এখনো ঘর থেকে বের হয়নি। সম্ভবত গোত্রপ্রধানের রেখে যাওয়া বিভিন্ন নিয়ম-কানুন ও মায়াবী পুঁথি পড়ছে। বাইরে সব তোড়জোড় করে শান্ত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে সবাই। অপেক্ষা করছে হিপোস এর জন্য। হঠাৎ রেডি হয়ে বাইরে আসার জন্য পা বাড়াতেই চোখে জ্বলজ্বল করে উঠলো সেই মায়াবী আয়না। আলোকিত হতে দেখে আস্তে আস্তে আয়নার দিকে এগোতে লাগলো হিপোস। চোখে চমকানো উচ্ছ্বাস। মনে খানিক ভয়। আনন্দের এক মুচকি হাসি ভেসে উঠলো হিপোস এর মুখে। সে কল্পনাও করতে পারেনি তার শৌর্যবীর্য দ্বারা একদিন সে এই উপজাতির গোত্রপ্রধান হবে। আয়নার সামনে গিয়ে দাঁড়াতেই আয়নার আলো নিভে গেলো। অন্ধকার হয়ে গেলো আয়নাটা। রক্ত দিয়ে লেখা দুটি লাইন ভেসে উঠলো আয়নায়।
“সেই ছেলেটার কাছ থেকে মায়াবী পাথর আনতে হবে নাহলে মৃত্যু খুব সন্নিকটে। যাও মায়াবী পাথর উদ্ধার করো।”
লেখাটা পড়ে হতবাক কয়ে গেলো হিপোস। কি অদ্ভুত আয়না। ভাবতে লাগলো,”কোন ছেলেটার কথা বলা হয়েছে? আর মায়াবী পাথরটাকেই চিনবো কিভাবে? আর ছেলেটাই বা কোথায়? উফ্ এখন দেখছি গোত্রপ্রধান হয়েও ফেসে গেলাম। ”
আয়নাটার রহস্যটা আপাতত রেখে বাইরের অনুষ্ঠানের কাজটা আগে সম্পন্ন করার জন্য বাইরে চলে গেলো হিপোস। একটা উঁচু ঢিবির উপর দাঁড়িয়ে এলিনার বাবা মাকে আনার জন্য ঘোষণা দিলো। দুজন লোক গেলো তাদেরকে আনতে কিন্তু দরজা খুলে ভেতরে গিয়ে দেখে কেউ নেই। ভ্যানিস হয়ে গেছে এলিনার বাবা মা। দৌঁড়ে বাইরে এসে বললো,”পালিয়ে গেছে তারা। ঘরে নেই। ”
সাথে সাথে দৌঁড়ে ঘরে গেলো হিপোস। চারদিকে ভালো করে দেখে সত্যিই এলিনার বাবা মা ভ্যানিস। বাইরে এসে সবাইকে বললো যেন সবাই পুরো জঙ্গলে ছড়িয়ে পড়ে। যে করেই হোক তাদেরকে খুঁজে পেতেই হবে। হিপোস এর কথামতো সবাই অস্ত্র হাতে পুরো জঙ্গলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে গেলো। দিশেহারার মতো সবাই খুঁজতে লাগলো এলিনার বাবা-মাকে।
সবাই খালি হাতে ফিরে এলো। জঙ্গলের কোথাও খোঁজে পেলো না এলিনার বাবা-মাকে। একটু রেগে গেলো হিপোস কিন্তু রাগটা বেশিক্ষণ স্থায়ী হলো না। মনে মনে শুধু ভাবতে লাগলো সেই আয়নার লেখাটার কথা। দ্রুত হেঁটে ঘরে চলপ গেলো হিপোস। বের করলো তিনশো খানেক পুরোনো পুঁথি। খুঁজতে লাগলো মায়াবী পাথরটার রহস্য। একের পর এক বই পড়তে লাগলো হিপোস। হঠাৎ একজন দরজাতে কড়া নাড়তেই রেগে গেলো হিপোস। দৌঁড়ে চলে গেলো লোকটা। প্রায় পনেরোটা বই পড়ে কিছু না পেয়ে আবার সামনে গেলো আয়নার। নেই, কিছুই নেই। স্বাভাবিক আয়নার মতো আয়নাটায় নিজের অবয়ব দেখতে পেলো হিপোস। হড়কে গেলো সে। চিন্তা বাড়তে থাকলো তার।
এদিকে ট্রুডো আর এলিনা ক্ষুধার জ্বালায় নেতিয়ে পড়েছে। এলিনাকে রেখে জঙ্গলের ভেতরে গেলো ট্রুডো খাওয়ার জন্য কিছু আনতে। একা একা গাছের নিচে বসে অপেক্ষা করতে লাগলো এলিনা। মিষ্টি একটা বাতাস বয়ে গেলো নিমেষেই। শীতল করে দিলো এলিনার শরীর৷ ট্রুডোর কাছ থেকে ভ্যাম্পায়ার লকেট আর শক্তি নিতে পারলেও একটা জিনিস নিতে পারেনি কাইরো। তা হচ্ছে একটা চাকু। সব ভ্যাম্পায়ারের কাছেই পুরোনো একটা চাকু থাকে। যেটা দিয়ে তারা একটা বিশেষ সময়ে অন্যদের আঘাত করে এবং তাদের রক্ত খেয়ে তাদেরকেও ভ্যাম্পায়ার করে দেওয়া যায়। ভ্যাম্পায়ার শক্তি আর নেই তাই চাকুটা সেই কাজে ব্যবহার করারও কোনো প্রয়োজন মনে করলো না ট্রুডো। চাকুটা হাতে নিয়ে জঙ্গলের ভেতরে হাঁটতে লাগলো ট্রুডো। হঠাৎ থেমে গেলো একটা আওয়াজ পেয়ে। ঘোড়ার আওয়াজ শুনা যাচ্ছে। সতর্ক হয়ে গেলো ট্রুডো। তার আশপাশ থেকেই শব্দটা ভেসে আসছে।
..
..
..
..
..
..(চলবে……………)
..
..
..
..গল্পটির টুইস্ট নিয়ে মন্তব্য করার আশা করছি। অনেকে গল্প পড়েন কিন্তু গঠনমূলক মন্তব্য করেন না বিধায় গল্প লেখার উৎসাহটা হারিয়ে যায়। গল্পের ভালোমন্দ দিক উল্লেখ করে কমেন্ট করলে উৎসাহ পাই। শেয়ার করে, বন্ধুদের মেনশন করে তাদেরকেও পড়ার সুযোগ করে দিন। গল্প নিয়ে যেকোনো আড্ডা, সমালোচনা বা আলোচনামূলক পোস্ট করুন “Black fantasy” গ্রুপে। ধন্যবাদ সকলকে।