#দহন_ফুল– ১০ (শেষ পর্ব)
প্রভা তোমার হলুদের শাড়ি আছে তো নাকি লিস্টে নাম তুলে নিবো?
ডাইনিংয়ে বসে বিয়ের কেনাকাটার লিস্ট বানাচ্ছেন শাশুড়ী আমাকে দেখতে পেয়ে ডাকলেন।
— না মা আমার লাগবে না, তাছাড়া ওই তারিখে মানে বুধবার থেকে শনিবার পর্যন্ত আমি এবাড়িতে থাকবো না।
— কি বলছো এসব?
— জ্বি আম্মা, আমার আম্মুর সাথে জরুরি কাজ আছে।
— কাজ অন্যদিন করলে হয়না?
— না আম্মা ওইদিনই করতে হবে।
— সবই বুঝেছি বাড়িতে থাকতে চাও না, তোমরা সবাই আমার সাথে এমন করছো যেনো আমি গুরুতর কোনো অপরাধ করছি। বলো আমি কি অপরাধ করছি?
— সেটা আপনার বিবেককে প্রশ্ন করুন।
— হ্যা কত কিছু যে বলবা তোমরা আল্লাহ জানে।
— আম্মা আপনার সাথে তর্ক করতে ইচ্ছে করছে না।
রান্নাঘরে গিয়ে দেখি মনির মা ফ্রিজে জমানো রান্না করা খাবারের বক্স ফ্রিজ থেকে নামিয়ে গরম করছে। চুলার কাছে গিয়ে প্রশ্ন করলাম,
— মনির মা ফ্রিজ থেকে রান্না করা তরকারি নামিয়েছো কেনো? আজ নতুন কিছু রান্না হবে না?
— বড় ভাবীর শরীর খারাপ, তাই আইজ এই দিয়াই চলতে অইবো।
— কি হয়েছে তার?
— জানিনা, মাথা ঘুরায়ে পইড়া গেছে, বমিও করছে, আমি ধইরা নিয়া বিছানায় শোয়াইয়া দিয়া আসছি।
— আম্মা কিছু বলে নাই?
— না হে কইলো, শরীর খারাপ অইলে শুইয়া থাহুক রান্দনের দরকার নাই।
— আচ্ছা আচ্ছা আমি দেখছি তুমি কাজ করো।
মনেমনে অনুশোচনা হলো, এমনিতেই বেচারি একটা ট্রমাতে আছে, কতটা নিরুপায় হলে এমন সিদ্ধান্তে রাজী হয়, যার উপর বর্তায় সে জানে। আর আমি কিনা তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেছি? টিপ্পনী করেছি, আঘাত করে কথা বলেছি। একদম ঠিক করিনি কাজটা? ইশ কি যে হয় আমার!
ক্ষমা চেয়ে নেবো ভাবীর কাছে।
দরজা খোলাই ছিলো, গিয়ে দেখি ভাবী চোখ বুঁজে আছেন, কিন্তু চোখের কোলজুড়ে পানি জমে আছে। বুঝাই যাচ্ছে কেঁদেছেন কিছুক্ষণ আগে, আমি ভাবীর হাতটা মুঠোতে নিলাম। ভাবী চোখ মেলে বললেন,
— ওহ প্রভা… তুমি?
— হ্যা আমি….. ভাবী আমাকে ক্ষমা করে দাও, তোমার উপর রাগ থেকে খারাপ ব্যবহার করেছি, এটা ঠিক করিনি। তুমি আমার উপর রাগ করো না।
— না প্রভা আমি তোমার উপর রাগ করিনি, সবই আমার ভাগ্য না হয় পাঁচ বছরেও শাশুড়ীর মনে জায়গা পাইনি কেনো? সাবির আমার সাথে সেদিনের পর থেকে আর কথা বলে না।
বলেই ভাবী ডুকরে কেঁদে উঠলেন, কাঁদতে কাঁদতে হঠাৎ উঠে ওয়াশরুমে গেলেন বেসিনে প্রচুর বমি করলেন। রুমে ঢুকে বিছানায় নিস্তেজ হয়ে পড়ে রইলেন।
আমি কি করবো বুঝতে না পেরে ভাবীর মোবাইল থেকে সাবির ভাইয়াকে ফোন করলাম। ভাইয়া ফোন কেটে দিলেন, কয়েকটা কল দিলাম সব কয়টাই কেটে দিলেন। আমি দৌড়ে নিজের রুমে গিয়ে চার্জ থেকে ফোন খুঁলে কল দিলাম। এবার একটা কলেই উনি রিসিভ করলেন।
— হ্যালো
— ভাইয়া.. ভাবী খুবই অসুস্থ, আপনি তাড়াতাড়ি আসুন।
— তো আমি কি করবো?
— এখন রাগ দেখানোর সময় নয় আপনি বাড়ি আসুন। আমি গাইনি ডাক্তারের সাথে কথা বলছি। তাড়াতাড়ি আসুন।
যতই রাগ দেখাক ভাইয়া ঘন্টাখানেকের মধ্যে বাড়ি এলেন, শাশুড়ী তো দেখে মহা খুশি, বললেন,
— সাবির এসেছিস বাবা, জানতাম তুই আমার কথা ফেলবি না। বিকেলেই কেনাকাটার জন্য বেরিয়ে পড়বো।
— তোমার এসব আজাইরা কাজ তুমি সামলাও, আমাকে এসবে টেনো না।
বলেই গটগট করে রুমে চলে গেলো।
— কি বেয়াদব হয়েছে ছেলেটা! দাঁড়া সব ঠিক করবো সময় মতো।
ভাইয়া রুমে ঢুকে দেখে আমি ভাবীর মাথায় হাত বুলাচ্ছি, আমি ভাইয়াকে দেখে উঠে বললাম,
— আমি একগ্লাস লেবুর শরবত খাইয়েছি, আর আমার মামাতো বোন গাইনোকোলোজিস্ট ডাঃ আশাফাকী খানম তার সাথে কথা বলেছি, সে ৪টার দিকে চেম্বারে আসবে। সরাসরি ওখানে চলে যাবেন এইতো সাত মসজিদ রোডে।
— আচ্ছা ঠিক আছে।
— আমি আপনাদের খাবার এখানে নিয়ে আসছি। এখানেই খেয়েদেয়ে একটু রেস্ট নিয়ে চলে যাবেন।
বেরিয়ে আসার সময় আড়চোখে দেখলাম ভাইয়া ভাবীর কপালে নিজের মাথাটা আলতো চেপে রেখে কাঁদছেন।
আমার চোখেও ভিজে গেলো।
ট্রেতে করে খাবার নিয়ে যাবার সময় শাশুড়ী জিজ্ঞেস করলেন,
— এগুলো কার খাবার নিয়ে যাচ্ছো?
— ভাইয়া ভাবী রুমে খাবার খাবেন, ভাবী খুব অসুস্থ।
— ওহ আচ্ছা,…. তা করে নিক যত ঢং কদিন পরে তো আর এসব কপালে জুটবে না।
— বালাইষাট মা আল্লাহ যেনো এমন দিন না দেখান।
শাশুড়ী চোখ দিয়ে আমায় ভস্ম করে দিতে চাইলেন। আমি চুপচাপ সরে গেলাম।
সন্ধ্যার দিকে ভাইয়া ভাবীকে ডাক্তার দেখিয়ে বাসায় পৌঁছে দিয়ে আবার দোকানে চলে গেলেন ক্লোজ করে আসার জন্য। ভাবীকে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম,
— কি খবর ভাবি? ডাক্তার কি বললো?
— স্পষ্ট কিছু বুঝছে না, প্রেশার লো, এসিডিটি আছে শুধু বমি বন্ধের ওষুধ দিলো আর কিছু টেস্ট করালো, আগামীকাল রিপোর্ট দেবে। তাইতো দেরি হলো আসতে, নয়তো আরো আগেই ফিরতাম।
— ইশশ! যদি কোনো সুখবর হতো…
— সে ভাগ্য কি আর আমার আছে ?
— ভাবী নিরাশ হইও না, আল্লাহর উপর ভরসা রাখো।
দুপুরে নতুন কিছু রান্না হয়নি তাই রাতে আলুভর্তা, ডালভর্তা, বেগুনভাজা আর ডিমভাজি দিয়েই সবাই খাওয়াদাওয়া সারলো। রাতে ব্রেড জেলি এসব আনিয়ে রাখলাম সকালের নাস্তার জন্য।
শাশুড়ীর সারাদিন কাটে ফোন করা নিয়ে ব্যস্ত থেকে গ্রাম থেকে ভাগ্নেকে আনছেন বিয়ের কেনাকাটায় সঙ্গী পাচ্ছেন না বলে। সারাদিন ভাই ভাতিজি ও তার চৌদ্দগুষ্টির সাথে উচ্চস্বরে কথা বলে বলে কানের বারোটা বাজাচ্ছেন। একেকটা হাসি দিচ্ছেন যেনো বিল্ডিং কেঁপে উঠে। এমনিতেই উনার গলা বড় এখন তার পুরোটা ছেড়ে হাকাচ্ছেন। শ্বশুর থাকলে তো একটু দমে থাকেন এখন তো পুরাই ফাঁকা মাঠ। শ্বশুর বাবা কেনো যে এখনো আসছে না?
ভাবীর শরীর অসুস্থ তাই তাকে কোনো কাজ করতে দিলাম না, মনির মাকে নিয়ে সব কাজ সারলাম। ক্লান্ত শরীরে গোসল সেরে নামাজ শেষ করতেই সামির চলে আসলো অসময়ে। শরীর খারাপ লাগছে তাই হাফ বেলার ছুটি নিয়ে চলে এসেছে।
আজ একটু কাজ বেশি করেছি শরীর ক্লান্ত তাই দুপুরবেলায় শুতে না শুতেই ঘুম চলে আসলো।
শেষ বিকেলে হঠাৎ কান্নাকাটির আওয়াজে ঘুম ছুটে গেলো? বুক ধরাস করে উঠলো, ভাবীর কিছু হলো না তো!! তাড়াতাড়ি বিছানা ছেড়ে উঠে ঘড়ির দিকে তাকালাম সোয়া পাঁচটা বাজে।
আমি আর সামির দৌড়ে রুম থেকে বের হলাম, কান্নাটা ড্রয়িংরুম থেকে আসছে। গিয়ে দেখি শ্বশুর বাবা দাঁড়িয়ে আছেন আর শাশুড়ী মা মেঝেতে হাত পা ছড়িয়ে বিলাপ করে কাঁদছেন,
— ও সাবিরের বাপ তুমি এইডা কি করলা…? আমারে এতবড় শাস্তি দিলা…? আমারে তুমি মাইরা ফেললা না কেনো?
আরেকটু ভালো করে তাকাতেই দেখলাম, সোনালি পাড় নেবীব্লু আঁচলের নীল কাতান শাড়ি পড়নে এক টুকটুকে ফর্সা, ছিমছাম গড়নের সুন্দরী মধ্য বয়সী মহিলা বসে আছেন সোফাতে। আশ্চর্য হলাম উনি কে?
সামির আমার কানে কানে ফিসফিস করে বললো,
— উনি বেলী ফুফু, শুনেছিলাম এর সাথে বাবার…. তবে খুব ভালো মানুষ, আমাদের ভীষণ আদর করতেন।
আমি টাশকি খেয়ে তাকিয়ে রইলাম।
সামির বললো,
— বেলী ফুফু ভালো আছেন?
শ্বশুর বললেন,
— ফুফু কি রে গাধা, ছোট মা বল।
সামির মাথা নুইয়ে রাখলো।
শ্বশুর বাবা ডাকলেন,
— প্রভা.. এটা তোমার ছোট শাশুড়ী, কাছে এসে তাকে সালাম করো।
বড়ভাবীও কখন যেনো আমার পাশে এসে দাঁড়ালেন টের পাইনি।
আমি এগিয়ে গিয়ে সালাম করলাম, বড়ভাবীও এগিয়ে গেলেন।
শ্বশুর বাবা বললেন, শোনো মা লক্ষ্মীরা উনি তোমাদের ছোট শাশুড়ী, তাকে কোনো অসম্মান করবা না। আর যাও আমাদের জন্য নাস্তা পানির ব্যবস্থা করো, খালি মুখে নতুন মানুষরে আর কতক্ষণ রাখবা?
শাশুড়ী অনবরত বিলাপ করেই চলেছেন। এক পর্যায়ে পা চেপে ধরলেন,
— সাবিরের বাপ তুমি ওরে ফিরাইয়া দিয়া আসো, তারপর যা বলবা আমি সব মাইন্না নিমু তবুও তুমি আমারে আর কষ্ট দিও না।
— মঘের মুল্লুক পাইছো ফিরাইয়া দিয়া আসো কইলেই হইলো নাকি?
আর এতো কান্নাকাটির কি আছে আমি বুঝলাম না? তুমিই না বলছো পুরুষ মানুষ দুই বিয়া করলে কিছু হয় না, দুই বউ মিল্লা-মিশ্যা থাকলেই শান্তি। তাইলে এখন কান্দো ক্যান?
— আমি তো সাবিরের কথা কইছিলাম, আমি তো তোমার কথা কই নাই গো সাবিরের বাপ….
— ক্যান আমারে তোমার পুরুষ মনে হয় না? বেলীর জন্য আমার অন্তর পুড়তো, জ্বালামুখ ফুটতো কিন্তু সাহস পাইতাম না। আর তুমি সেই জ্বালামুখে বাতাস দিছো। দুই বিয়াতে সমস্যা নাই তুমিই বলছো, এখন এসব কান্নাকাটি করে কোনো লাভ নাই।
নতুন শাশুড়ীকে শরবত দিয়ে সাহস করে শ্বশুরকে প্রশ্ন করলাম,
— বাবা সত্যিই কি আপনি বিয়ে করেছেন? নাকি মিথ্যামিথ্যি আম্মাকে ভয় দেখাচ্ছেন?
শ্বশুর রাগী সুরে বললেন,
— তোমার কি মনে হয় আমি মস্করা করতেছি? আমি সত্যি সত্যি বিয়ে করছি।
এই বেলীর সাথেই আমার ছোটবেলায় ভাব ভালোবাসা ছিলো, বাবা মার কাছে সাহস করে বলতে পারি নাই, কারণ আমিও ছোট বেলীও ছোট। আমি শহরে পড়তে আসলাম এই ফাঁকে বেলীর বাল্যবিবাহ হয়ে গেলো। জানতে পেরে খুব কাঁদছিলাম প্রথম ভালোবাসা বলে কথা। তারপর তোমার শাশুড়ীকে বাবা মা আমার ঘাড়ে চাপায়ে দিলো, ভাবলাম বেলী না পাই পারুল তো পাইলাম, কিন্তু নামেই ফুল চারিদিকে সুবাসের বদলে দুর্গন্ধ ছড়াইলো।
বছর পনেরো আগে বেলীর স্বামী মারা গেলো অসুস্থ হইয়া, ছোট একটা মেয়ে নিয়া জীবন কাটাইয়া দিলো। আমার খুব ইচ্ছে করতো ওর জন্য কিছু করতে, ওর খোঁজ খবর রাখতাম, কয়েকমাস আগে ওর মেয়ের বিয়ের ব্যবস্থা করলাম সুপাত্র দেখে।
তোমার শাশুড়ী যখন দুইবিয়াতে সমস্যা নাই কইলো, আমি গিয়া বেলীর মেয়ে জামাইরে রাজী করাইলাম। তাদের সম্মতিতেই দুই হাত এক হইলো।
আমাদের সবার কথার মাঝে সাবির ভাই দুই হাত ভর্তি মিষ্টির প্যাকেট নিয়ে বাড়ি ফিরলো।
শ্বশুর বাবা বললেন,
— সাব্বাস ব্যাটা! বাপের বিয়ের কথা শুনে ছেলে মিষ্টি নিয়ে হাজির।
সাবির ভাইয়া ঘটনার কিছুই না বুঝে বললো,
— মানে কি?
শাশুড়ী মা চিৎকার করতে করতে সাবির ভাইকে জড়িয়ে ধরে বললেন,
— ওরে…. সাবিররে… তোর বাপের বুড়াকালে ভীমরতি ধরছে রে…. তোর বাপ বেলীরে বিয়া কইরা নিয়া আসছে রে…..
সাবির ভাইয়া শাশুড়ী মায়ের হাত ছাড়িয়ে এসে শ্বশুর বাবার সামনে এসে দাঁড়ালো,
— বাবা এসবের মানে কি?
— উহু… যে পুরুষ নিজের নির্যাতিতা স্ত্রী পাশে দাঁড়াতে পারে না, তার বাবার কাছে কৈফিয়ত চাওয়া মানায় না।
— তাই বলে এই বয়সে?
— তোমার মা ই তো বলেছে পুরুষ মানুষ দুই বিয়া করলে কিছু হয় না, মিল্লা-মিশ্যা থাকলেই শান্তি।
এখন যদি তোমার মা মিল্লা-মিশ্যা থাকতে পারে থাকবে, নয়তো অন্য ব্যবস্থা করুক। কি বেলী বেগম মিল্লা-মিশ্যা থাকবা তো?
এতক্ষণ পর মহিলার কণ্ঠ শুনলাম,
— জি আমার মিল্লা-মিশ্যা থাকতে আপত্তি নাই, আপার কথা আমি জানিনা।
— শুনছো পারুল বেগম? এইবার ভাইবা দেখো কি করবা? তা বাবা সাবির এত মিষ্টি নিয়া বাসায় আসার কারণ?
সাবির ভাইয়া মাথা নুইয়ে মুচকি হাসলো, রিপোর্টটা আমার দিকে বাড়িয়ে দিলো,
আমি রিপোর্ট পড়ে বললাম,
— বাবা দারুণ সুখবর, আপনার ঘরে ছোটছোট পায়ে হাঁটার জন্য মেহমান আসছে।
— আলহামদুলিল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ!! বেলী তোমার কদম আমার সংসারে সৌভাগ্য নিয়ে আসছে। প্রভা সবাইকে মিষ্টিমুখ করাও। পারুলরে দুইটা মিষ্টি বেশি দিও, অনেক কষ্ট করছে সে।
আমি মনির মাকে দিয়ে সবাইকে মিষ্টি দেওয়ালাম, ভাবীকে গিয়ে জড়িয়ে ধরলাম, ভাবী লজ্জায় লাল হয়ে আছে।
সাবির ভাইয়া শ্বশুর বাবার সামনে এসে আমতাআমতা করে বললো,
— বাবা….. আমি একটা বাসা দেখেছি,….. নিনুকে নিয়ে ওখানে চলে যাবো, স্ত্রী সন্তানদের এখানে রাখার ভরসা পাচ্ছি না।
— খবরদার যদি এই বাড়ির বাইরে পা রাখিস, একদম ঠ্যাং ভেঙে দেবো। আমার নাতিনাতনি সারাঘরে দৌড়াবে আমি চেয়ে চেয়ে দেখবো।
নতুন শাশুড়ী উঠে এসে সাবিরের হাত ধরলেন,
— বাবা আমি সেবা করবো বড় বউমার, সংসারের সব দায়িত্ব আমি নিলাম তাকে কোনো কাজ করতে দেবো না। আমার দুই বউমা এবার আরাম করবে। কথা দিলাম কোনো অযত্ন হবে না তাদের। তুমি বউমাকে নিয়ে চিন্তা করো না।
শাশুড়ী মা কিংকর্তব্যবিমুঢ় অবস্থায় বসে আছেন, না পারছেন কাঁদতে না পারছেন হাসতে।
শ্বশুর বললেন বুঝলে বউমা,
— আমি এখন দুই ফুলের এক মালি, আমার সুখের কোনো অভাব নাই।
শ্বশরের রসিকতায় হেসে উঠলাম।
আর এদিকে আমার শরীরটাও ইদানীং ভালো যাচ্ছে না, মাথা ঘুরায়, বমি লাগে ভাবছি গাইনি ডাক্তার একবার দেখিয়েই ফেলি কি বলেন আপনারা।
সমাপ্ত
#শামীমা_সুমি