তোর ছায়ার সঙ্গী হব পর্ব-০৮

0
1767

#তোর_ছায়ার_সঙ্গী_হব
লেখক-এ রহমান
পর্ব ৮

১৮
ইভান ছাদে দাড়িয়ে একটার পর একটা সিগারেট জালাচ্ছে। ঈশা তার পিছনে এসে দাড়িয়ে বলল
–এসব অভ্যাস তো তোমার আগে ছিলোনা? কবে থেকে শুরু করেছো?
ইভান একটু হেসে বলল
–অনেক পরিবর্তনের পরেই আমি আজকের এই ইভান। জিবনের অনেক কিছুই পরিবর্তন হয়ে গেছে। অনেক নতুন অভ্যেস তৈরি হয়েছে আবার পুরাতন কিছু জিনিস হারিয়ে গেছে যা হারানোর কথা ছিলোনা।
ঈশা ইভানের কথা শুনে ছাদের রেলিঙ্গের উপরে লাফ দিয়ে বসে পড়লো। ঈশার ওখানে বসা দেখে ইভান ভয় পেয়ে চিৎকার করে বলে
–ঈশাআআ…।
ঈশা ইভানের দিকে তাকিয়ে একটু মুচকি হেসে বলে
–কি ভাবছ? এখান থেকে লাফ দিবো। আমি এতো বোকা না।
ইভান ঈশার উপরে বিরক্ত হল। সিগারেটের প্যাকেট থেকে একটা সিগারেট বের করে ঠোঁটে লাগাতেই ঈশা সেটা নিয়ে নিলো। তারপর নিচে তাকিয়ে ফেলে দিলো। ইভান ভ্রু কুচকে ঈশার দিকে তাকিয়ে আছে। এবার ঈশা তার হাত থেকে পুরো প্যাকেট টা নিয়েই নিচে ফেলে দিলো। ইভান অসহায়ের মতো প্যাকেট টার দিকে তাকিয়ে থাকলো। সেটা মাটিতে পড়তেই ইভান ঈশার হাত ধরে বলল
–কি করলি এটা?
–কেন দেখতে পেলেনা? নিচে ফেলে দিলাম।
–আমার কাছে আপাতত একটাই প্যাকেট ছিল।
–জানতাম। এই জন্যই তো ফেলে দিলাম।
ইভান এবার খুব রাগ করে বলল
–নিজেই আঘাত দিয়ে আবার সেটাতে মলম লাগাতে এসেছিস? খুব ভালো নাটক করতে পারিস তুই। আমার সামনে না করে মঞ্চে গিয়ে কর হাত তালি পাবি। এখান থেকে চলে যা।
ইভানের কথা শুনে ঈশা জেদ করে বলল
–যাবনা এখান থেকে কি করবে?
–আমি নিচে চলে যাব।
–যাও! যেখানে খুশি যাও। আমি এখানেই বসে থাকব।
ঈশার কথাটা শেষ হতেই আকাশে মেঘ ডেকে উঠলো। মেঘের গর্জন শুনে ইভান আকাশের দিকে তাকিয়ে বাকা হাসল। তারপর ঈশার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলল
–এখানেই বসে থাক। আমি যাচ্ছি।
বলেই সে পকেটে হাত গুঁজে ধিরে ধিরে হাঁটছে সিঁড়ির দিকে। আর হাসছে। কারন ঈশা মেঘের ডাক খুব ভয় পায়। ইভান জানে সে বেশিক্ষন থাকতে পারবেনা। ইভানের ভাবনার মাঝেই আবার জোরে মেঘ ডেকে উঠলো। আর ঈশা দৌড়ে এসে ইভান কে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরল। ইভান দাড়িয়ে গেলো। এভাবে ঈশা তাকে জড়িয়ে ধরবে তা ইভান ভাবেনি। ঈশা ভয়ে কাঁপছে। ইভান ঈশার হাত ধরে তাকে সামনে এনে দাড় করাতেই ঈশা আবার ইভান কে জড়িয়ে ধরল। কিছুক্ষনের জন্য ইভানের মনে হল তার শুন্য বুকটা ভরে গেলো। প্রথম ঈশা তাকে জড়িয়ে ধরেছে। ইভানও কিছু না ভেবে তাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরল। চোখ বন্ধ করে অনুভব করছে ঈশাকে। তাদের মাঝে এই মুহূর্তে কোন বাধা নেই। চোখ বন্ধ করেই ইভান বলল
–ভয় পাস না জান। আমি আছি তো। সব কিছু থেকে তোকে রক্ষা করবো।
দুজন দুজন কে জড়িয়ে ধরে মুহূর্তটা অনুভব করছে। এমন সময় বৃষ্টি এলো। ঈশার মনে পড়লো ইভানের জর। বৃষ্টিতে ভিজলে আরও ঠাণ্ডা লাগবে। তাই ইভান কে ছেড়ে দিলো। তার পর সিঁড়ির দিকে চলে যেতে লাগলো। হঠাৎ হাতে টান অনুভব করলো। পিছনে ঘুরে দেখে ইভান তার হাত টেনে ধরে তার দিকে তাকিয়ে আছে। ঈশা কিছু চিন্তা না করেই বলল
–নিচে চল।
ইভানের তার কথায় কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। সে ঈশার দিকে তাকিয়ে বলল
–কোন এক দিন তুই জেদ করছিলি আমার সাথে এভাবে বৃষ্টিতে ভিজতে। কিন্তু সেদিন আমি তোর ইচ্ছাটা পুরন করতে পারিনি কারন তুই অসুস্থ ছিলি। আজ পুরন করতে চাই। দিবি?
ঈশা কিছু না ভেবেই বলল
–তোমার জর। বৃষ্টিতে ভিজলে ঠাণ্ডা লাগবে। আরও অসুস্থ হয়ে যাবে।
ইভান একটু হেসে বলল
–তুই সেবা করবি। আমি ছোট বেলা থেকে তোর কোন ইচ্ছা অপূর্ণ রাখিনি। এটাই বাকি ছিল। আর এরকম একটা সুযোগের অপেক্ষায় ছিলাম। আমাকে তোর ইচ্ছাটা পুরন করার সুযোগ দিবিনা? প্লিজ জান।
ইভানের কথা শুনে ঈশা চেয়েও আর কিছু বলতে পারল না। ইভান বুঝতে পারল ঈশার সম্মতি। তাকে টেনে এনে ঘুরিয়ে তার পিঠে নিজের বুক ঠেকিয়ে চুল গুলো খুলে মুখ ডুবিয়ে দিলো। পিছন থেকে চুল সরিয়ে পিঠে আলতো করে ঠোঁট ছোঁয়াল। এক হাত ঈশার পেটে দিয়ে চেপে ধরল। ঈশাও চোখ বন্ধ করে ফেললো। সেই ছোটবেলার কথা। ঈশার খুব জর ছিল। তবুও সেদিন বৃষ্টিতে ভিজতে ইচ্ছা করছিল তার। কিন্তু সেদিন ইভান এভাবেই তার হাত টেনে আটকে রেখেছিল। ঈশা খুব জেদ করছিলো। তখন ইভান খুব শান্ত ভাবে বলেছিল
–তোর এই ইচ্ছাটাও কোন একদিন পুরন করবো। সেদিন তোর মনে হবে আজ এই ইচ্ছাটা পুরন না হয়ে ভালই হয়েছিলো। আজকের থেকে সেদিন অনেক বেশি কিছু পাবি।
তার কথা শুনে ছোট্ট ঈশা কিছু না বুঝলেও আজ বুঝতে পারছে। সত্যিই সেদিন ইচ্ছাটা পুরন না হয়ে খুব ভালো হয়েছে। সেদিন শুধু বৃষ্টিতেই ভিজতে পারতো। কিন্তু এভাবে ইভান কে কাছে পেতনা। আজ সব মিলে যেন মনে হচ্ছে সে পৃথিবীর সব থেকে সুখি। ইভান তাকে জড়িয়ে নিয়ে কানের কাছে মুখ এনে বলল
–বলেছিলাম না এমন অনেক কিছুই পাবি যাতে তোর মনে হবে সেদিন ইচ্ছাটা না পুরন হয়েই ভালো হয়েছে। তোর জীবনে আমি কোন কিছুর আফসোস রাখতে চাইনা। সময় মতো সব পাবি তুই।
ঈশা একটু হেসে বলল
–তোমার মনে আছে?
–আমার সব মনে আছে জান।
বলেই ঈশাকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নিয়ে কপালে একটা চুমু দিলো। ঈশা কি ভেবে ইভানের দিকে তাকিয়ে বলল
–আর না। তুমি অসুস্থ হয়ে যাবে। নিচে চল।
ইভান একটু হেসে ঈশাকে কোলে তুলে নিলো। ইভানের এমন কাজে ঈশা অবাক হল। ঈশাকে নিয়ে গিয়ে রেলিঙ্গের উপরে বসিয়ে দিলো সামনে মুখ ঘুরে। তারপর তার দুই পাশে হাত দিয়ে ঘাড়ে নিজের থুতনিটা রাখল ইভান। ঈশার মাথার সাথে নিজের মাথা লাগিয়ে বলল
–তোর সব ইচ্ছা পুরন করে আমি মরে গেলেও কোন আফসোস নেই। বরং শান্তিই পাব।
ইভানের কথা শুনে ঈশার খুব কষ্ট হল। কেঁদে ফেললো। কাদ কাদ গলায় বলল
–আমি নিচে যাব।
ইভান ঈশার মনের অবস্থা বুঝতে পেরে তাকে দুই হাতে জড়িয়ে বলল
–কাদছিস কেন? আমি মরতে চাইলেই কি তুই আমাকে মরতে দিবি?
বলেই ঈশার গালে নিজের নাক ঘোষতে ঘোষতে বলল
–আমি যেখানেই থাকি । তোকে কখনও একলা ছাড়বনা। আমি তোর ছায়ার সঙ্গী হবো।
ঈশা মাথা নাড়ায়। ইভান সামনে তাকিয়ে বলে
–এই মুহূর্তটা সারা জীবন মনে রাখবো।
ঈশাও একটু হেসে বলল
–আমিও।
ইভান ঈশার গালে একটা চুমু দেয়।

১৯
ঈশা ওয়াশ রুম থেকে বের হয়ে চোখ বড় হয়ে গেলো। অবাক হয়ে সামনে তাকিয়ে দেখছে ইভান কে। সে ঈশার বিছানায় পা লম্বা করে শুয়ে মোবাইলে গেম খেলছে। ঈশা কে এভাবে দাড়িয়ে থাকতে দেখে ভ্রু কুচকে তাকাল। ঈশা তার তাকানো দেখে তাড়াতাড়ি করে ঘরের দরজা বন্ধ করে দিলো। ঈশার এভাবে দরজা বন্ধ করা দেখে ইভান উঠে বসে পড়লো। ভ্রু কুচকে ঈশার দিকে তাকিয়ে বলল
–এমন ভাবে দরজা বন্ধ করছিস যেন আমি পর পুরুষ। কেউ দেখলে পাপ হয়ে যাবে।
ঈশা তার সামনে এসে বলল
–তুমি এতো রাতে কেন এখানে?
ঈশার কথা শুনে ইভানের খুব রাগ হল। ইভান এবার উঠে গিয়ে তার সামনে দাঁড়ালো। এক হাতে দুই গাল চেপে ধরে বলল
–আমার যখন ইচ্ছা তখন আসবো। এসবের কইফিয়ত দিতে আমি বাধ্য নই। তুই আমার বিয়ে করা বউ।
ঈশা একটু ব্যাথা পাচ্ছিলো। সেটা বুঝতে পেরে ইভান তাকে ছেড়ে দেয়। চোখ বন্ধ করে নিজের রাগ দমন করতে চেষ্টা করে। তারপর শান্ত ভাবে বলে
–টেবিলে ঔষধ আছে খেয়ে নে।
ঈশা তার কথা শুনে অবাক হয়ে যায়। একটু কাপা কাপা গলায় বলে
–কিসের ঔষধ?
–বিষ এনেছি তোর জন্য।
ইভান উলটা ঘুরে বিছানায় বসতে বসতে কথাটা বলে। ঈশা তার কথায় বিরক্ত হয়ে বলে
–ঠিক করে বল।
ইভান বিছানায় পা তুলে বসে তার দিকে তাকিয়ে বলে
–মাইগ্রেনের ঔষধ। খেয়ে নে ব্যথা ঠিক হয়ে যাবে।
ঈশার মুখ হা হয়ে যায়। সে হা করে ইভানের দিকে তাকিয়ে থাকে। অবাক হওয়ারই কথা। ঈশার যে মাইগ্রেনের ব্যাথা তা ইভান কি করে জানলো। সে এখন পর্যন্ত কাউকেই কথাটা বলেনি। ইভানের জানাটা একদম অস্বাভাবিক। ইভান এবার বিরক্ত হয়ে বলে
–দেখে তো মনে হচ্ছে ঔষধ না, আমাকে খাওয়ার ইচ্ছা আছে।
ঈশা তার কথায় অপ্রস্তুত হয়ে যায়। নিজেকে স্বাভাবিক করে বলে
–তুমি কিভাবে জানলে আমার মাথা ব্যাথা।
ইভান একটু হেসে বলে
–তুই আমাকে তোর কাছ থেকে দূরে ঠেলে দিয়েছিস আমি না। আমি সব কিছুর খবর রাখি।
ঈশা তার কথা শুনে কষ্ট পায়। মন খারাপ করে। ইভান ঈশার দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারে তার মন খারাপ হয়ে গেছে। ইভানের খারাপ লাগে। তাই তার মন ভালো করতে বলে
–ইরা বলল তোর শরীর খারাপ। ভাবলাম মাঝে মাঝে মাইগ্রেনের ব্যাথা হয় । এখনো হয়ত তাই হয়েছে। তাই ফোনটাও বন্ধ করে রেখেছিস। আর ঔষধ খেলে কিছুক্ষনের মধ্যেই ব্যাথা কমে যায়। কিন্তু এতো রাত অব্দি ব্যাথা কমেনি মানে তোর কাছে ঔষধ নেই। আর তুই তো ঔষধ খেতে পারিস না তাই কখনই ঔষধ আনতে বলবিনা নিজে থেকেই। তাই নিজের দায়িত্তেই নিয়ে আসলাম।
ইভানের সব কথা শুনে ঈশা সন্দিহান দৃষ্টিতে তার দিকে তাকাল। তারপর চোখ ছোট ছোট করে বলল
–আমার মাইগ্রেনের ব্যাথা গত চার বছর থেকে। তখন তো তুমি ছিলেনা। জানলে কিভাবে মাঝে মাঝে হয়?
ঈশার প্রশ্ন শুনে ইভান একটু অপ্রস্তুত হয়ে যায়। ঈশার মাথা থেকে বিষয়টা বের করতে উঠে গিয়ে ঔষধের স্ট্রিপ থেকে ঔষধ টা খুলে হাতে নেয়। ঈশা ভাবে ইভান তাকে জোর করে ঔষধ খাওয়াবে। কিন্তু সে ঔষধ খেতে পারেনা। তাই উলটা ঘুরে দেয়ালের সাথে দাঁড়ালো। ইভান তাকে নিজের দিকে ঘুরে দেয়ালের সাথে চেপে ধরল । ঈশা দেখল ইভান তার দুই ঠোটের মাঝে ক্যাপ্সুল টা আলতো করে চেপে ধরে আছে। এক হাতে ঈশার দুই গাল চেপে মুখটা হা করে ঔষধ টা নিজের মুখ থেকে তার মুখে ঢুকিয়ে দেয়। তার পর পানির বোতল থেকে তার মুখে পানি ঢেলে দেয়। একটু বেশি পানি পড়ায় ঈশার গলায় আটকে যায়। আর ঈশা কাশতে থাকে।ইভান ঈশাকে ছেড়ে দিয়ে তার মাথায় হাত দেয়। ঈশা থেমে গেলে বলে
–ঠিক আছিস?
ঈশা মাথা নাড়িয়ে হ্যা বলে।কিন্তু পরক্ষনেই ঈশার বমি বমি ভাব হয়। সে উকাতে শুরু করে। ইভান তাড়াতাড়ি করে নিজের পকেট থেকে একটা চকলেট বের করে মোড়ক টা একটু খুলে ঈশার মুখে দেয়। ঈশা একটু কামড় দিয়ে মুখে ধরে থাকে চকলেট। মুখে কিছুক্ষন ধরে থেকে ইভানের হাতে থাকা চকলেটটার দিকে তাকায়। চকলেট টা দেখে ঈশার চোখ ছলছল করে উঠে। এই চকলেট টা ঈশার খুব পছন্দ। ইভান তাকে প্রায় সময়ই এনে দিত। কিন্তু ইভান চলে যাওয়ার পর থেকে ঈশা এই চকলেট টা আর খায়নি। খুব মিস করত। ঈশার চোখে পানি দেখে ইভান বলল
–এতো পছন্দ করিস এই চকলেট টা তাহলে খাওয়া বাদ দিয়েছিলি কেন?
ঈশা ইভানের কথার উত্তর দেয় চকলেটের দিকে তাকিয়ে আনমনে
–সব সময় তো তুমিই এনে দিয়েছ। এতদিন দাওনি তাই খাইনি।
কথাটা বলেই ঈশা নিজেই চমকে উঠে। ইভান কিভাবে জানল সে চকলেট আর খায়না।ঈশা তার দিকে এবার অসহায়ের দৃষ্টি নিয়ে তাকায়। সব কিছু কেমন ঘোরের মতো লাগছে। ইভানের কথা গুলো কেমন এলোমেলো। অনেক কিছু বলার আছে কিন্তু কিছুই বলতে পারছেনা। ঈশার চোখের ভাষা বুঝতে পেরে ইভান বলল
–আমার বুকের ভিতরে হার্ট বিট সব সময় তোর অস্তিত্ব জানিয়ে দেয়। তুই কি করিস কি করিস না সব কিছুই আমার জানা হয়ে যায়। আমি চোখ বন্ধ করেই তোকে দেখতে পাই জান।
ঈশা কিছু বলতে পারলনা। তার চোখ দিয়ে দুই ফোটা পানি গড়িয়ে পড়লো। ঈশার চোখের পানি যত্নে মুছে দিয়ে ইভান তাকে নিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়লো। ঈশা উঠতে চেষ্টা করলে ইভান তাকে বিছানায় চেপে ধরে।তার চোখে চোখ রাখে। ঈশা তার চোখের মাঝে হারিয়ে যায়। এক অদ্ভুত আকর্ষণ কাজ করে। ঈশা যেন আজ সম্মহনের স্বীকার। ইভান ঈশার ঘাড়ে নাক ডুবিয়ে দেয়। ঈশা চোখ বন্ধ করে ফেলে। এতে তার চোখের পানি গাল বেয়ে কানে গড়িয়ে পড়ে। ইভানের গালেও তার চোখের পানি লেগে যায়। ইভান মুখ তুলে ঈশার দিকে তাকায়। সে চোখ বন্ধ করে আছে। আজ যদি ইভান তার ভালোবাসার অধিকার খাটায় তবুও ঈশা বাধা দিবেনা। কিন্তু ইভান তা করবেনা। সে তার মুখ ঈশার কানের কাছে নিয়ে গিয়ে ফিস ফিসিয়ে বলল
–আমি শুধু তোকে জোর করে বিয়েই করেছি। কারন আমি তোকে অন্য কারও হতে দিতে পারিনা। অন্তত আমি বেঁচে থাকতে এটা কোন ভাবেই মেনে নিতে পারবোনা। আমি ছোট বেলা থেকেই তোকে শুধু আমার ভেবেছি। তাই তো এই অধিকার বোধ থেকে তখন জোর করেছি। কিন্তু আর কখনও কোন বিষয়ে তোর উপরে জোর করিনি। আজও করবোনা। আমার মাঝে যেমন তুই বিরাজ করিস তেমন তোর মাঝেও আমি আমাকে খুজি। যেদিন আমি তোর মাঝে পুরোটা বিরাজ করবো। যেদিন তুই ভালবেসে আমাকে স্পর্শ করবি সেদিন আমি তোকে আমার ভালোবাসার স্পর্শে ভরিয়ে দিবো। সেদিন তোর আর আমার মাঝে থাকবে শুধু ভালোবাসা। শুধুই ভালোবাসা!
ইভানের কথা শেষ হতেই ঈশা চোখ খুলে ফেললো। ইভান কে এভাবে তার উপরে শুয়ে থাকতে দেখে তার অস্বস্তি হল। সে কিছু বলতে পারলনা আবার ইভান কে সরাতেও চাইলনা। কিন্তু জোরে জোরে শ্বাস নিতে লাগলো। তার এভাবে শ্বাস নেয়া দেখে ইভান নিজে থেকেই তার উপর থেকে সরে গিয়ে পাশে শুয়ে পড়লো। ঈশা উঠে বসতে চাইলে ইভান তাকে টেনে নিজের বুকে শুয়ে দেয়। পরম যত্নে তার চুলগুলো সরিয়ে দিয়ে বলে
–এখন ঘুমা জান।
ইভানের কথা শুনে ঈশা আর কিছু না বলে তার বুকের উপরে মাথাটা রেখে নিজের শরীরের ভার ছেড়ে দিলো। কি এক পরম শান্তি ইভানের বুকের মাঝে। কিছুক্ষন পর ঘুমিয়েও গেলো।

চলবে………

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে