তোমার জন্য সাইকো
লেখক: নুসরাত জাহান অংকুর
পার্ট_১৮
মুন: কি হলো এটা ?
রোদ: বউএর কুলে মাথা দিছি তোমার কোনো সমস্যা। বাই দা বাই তোমাকে খুব কিউট লাগছে
মুন: হম উঠুন খেতে হবে না
রোদ: না চুপটি করে বসে থাকো সারাদিন কত কাজ করছি মাথাটা একটু টিপে দাও না।
মুন কিছু না বলে রোদের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো।
মুন: আচ্ছা রোদ একটা কথা বলবো।
রোদ: হুমম বলো তোমার কথা ছাড়া কার কথা শুনবো।
মুন: আপনি আমার সাথে এমন কেনো করেন এই মারেন তো এই ভালোবাসেন । বুঝি না আপনি আসলে কি( মাথা টিপতে টিপতে)
রোদ মুনের হাত নিয়ে কিস করে বললো।
রোদ: আমি ইচ্ছা করে কিছু করিনা তোমাকে যে অন্য কারোর সাথে স্বপ্নে ও ভাবতে পারিনা সেই ছোটো বেলা থেকে। যখন তুমি আমায় ছেড়ে চলে গিয়েছিলে তখন আমার খুব কষ্ট হচ্ছিল ।
মুন: রোদ আমি ইচ্ছা করে
রোদ: জানি সব বুঝি কিন্ত তোমার উপর একটা অভিমান থেকে এসব করেছি আর আরুশ এর সাথে দেখে আমার মাথা নষ্ট হয়ে গিয়েছিল তাই ওভাবে কষ্ট দিছি i am sorry jan
মুন: হয়েছে আর বলতে হবে না তার শাস্তি তো আপনি পেয়েছেন( হালকা হেসে) এবার থেকে আর কষ্ট দিলো এর থেকে ও বেশি শাস্তি দেবো।
রোদ: রাজি ভুল করলে শাস্তি দিবা কিন্ত ছেড়ে চলে যাওয়ার কথা ভাবলে খুন করে ফেলবো।
মুন: ওরে বাবা এ তো থ্রেট
রোদ: যা খুশি ভাব কিন্ত কথা টা মাথায় রাখবা(ভারী গলায়)
মুন: হুই দেখা যাবে উনি যদি সাইকো হয় আমি ও সাইকো queen ( মনে মনে)
মুন: এখন উঠুন খেতে যেতে হবে
রোদ: উঠতে ইচ্ছা করছে না মনে হচ্ছে সারাজীবন এভাবে থাকি।
মুন: সে থাকা যাবে কিন্ত এখন উঠুন
রোদ: আর একটু
মুন: উঠতে বলছি না( রাগী গলায়)
রোদ: বাবা বউ তো আমার সেই সাহস হয়েছে
মুন: বউ টা কার দেখতে হবে না।
এবার উঠুন।
রোদ আর মুন নিচে গেলো।
খাওয়া শেষে রোদ উপরে আসলো একটু পর মুন ও আসলো।
এসে দেখে রোদ বারান্দায় দাড়িয়ে আছে ।
মুন রোদকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলো।
রোদ একটা মুচকি হাসি দিয়ে মুনের হাত ধরে সামনে নিয়ে এসে পিছন থেকে মুনের কোমর জড়িয়ে ধরে গান গাইলো।
রোদ:
তুমি হাসলে আমার
ঠোঁটে হাসি তুমি আসলে
জোনাকি রাশি রাশি
রাখী আগলে তোমায় অনুরাগে
বলো কিভাবে বুঝায় ভালোবাসি
সব চিঠি সব কল্পনা জুড়ে রং
মিশে যায় রুক্ষ দুপুরে
সেই রং দিয়ে তোমাকে আকি
আর কিভাবে বুঝায় ভালোবাসি
প্রাণ দিতে চাই মন দিতে চাই
সব টুকু ধেণ তোমাকে দিতে চাই
( গানটা আমার খুব পছন্দের আপনারা ও শুনবেন খুব ভালো লাগবে)
মুন রোদের গান চোখ বন্ধ করে শুনছে রোদের গান মুনের খুব ভালো লাগে রোদ খুব ভালো গান পারে রোদের কাছ থেকে মুন একটু একটু শিখছে ।
গানটা শেষ করে রোদ মুনের গালে একটি ভালোবাসার পরশ দিয়ে মুনকে কলে নিয়ে বিছানায় নিজের বুকের উপর মুনকে শুয়িয়ে ঘুনের দেশে পারি দিলো।
সকালে,
মুন উঠে রোদকে পায়না ।
মুন ফ্রেশ হয়ে এসে নিচে এসে দেখে মামনি কাজ করছে।
মুন উনার কাছে গিয়ে শুনে যে রোদ অনেক সকালে বেরিয়ে গেছে।
রাইমা চৌধুরী সাথে কিছুক্ষণ কথা বলে
নাস্তা করে মুন ভার্সিটিতে চলে যায়।
ভার্সিটিতে
লামিয়া: কিরে মাম্মা সোজা বিয়ে করে ফেলি।
রুমা: করবে ছাড়া কি তোর জন্য wait করবে।
লামিয়া: ওই রাক্ষসী তোকে কথা বলতে কে বলছে।
মুন: ওই চুপ করতো নাহলে বাঁধন ভাইয়া কে বলে দেবো।
লামিয়া: আমায় একা কস না নিরব স্যার এর কথা ও বল।
রুমা: তোকে তো
লামিয়া: তোলে তোলে টেম্পু চালাবা আর কেউ জানবে না আমাদের তো বলতে পারটি।
রুমা: ওমন কিছু না বাই দা জমিন বিয়ে কেমনে হলো রে মুন।
তারপর মুন ওদের সব কথা বললো
সব শুনে তো সবাই শকড
লামিয়া: ভাই তুই বেচে আছিস তো
রুমা: ঢং দেখে বাচি না ওর তো বর মারছে তোর তো বফ ও মারে।
লামিয়া: তোরে কিডা কয়ছে রে হুদাই পেঁচাল পারে।
রুমা: চুপ থাক আমরা সব জানি
মুন: ওই তোরা ক্লাস এ চল।
৩জন মিলে ক্লাস করলো।
রোদ : যেভাবেই হোক ওদের প্ল্যান আমাদের জানতে হবে।
বডিগার্ড: স্যার আমাই অলরেডী লোক লাগিয়ে দিয়েছি। কিন্ত স্যার আমাদের খুব সাবধানে থাকতে হবে। বিশেষ করে মুন ম্যামকে
রোদ: ওরা মুনের কিছু করবে না আমার মনে হয় ওদের আঘাত আগে আমার উপর হবে । মুনকে টার্গেট করে।
বডিগার্ড: স্যার আমাদের এখন কি করতে হবে।
রোদ: যা বললাম তাই
বডিগার্ড: ওকে স্যার
বলে চলে গেলো
রোদ: কি ভাবছিস আমি কিছু বুঝতে পারবো না তোরা যেই স্কুল থেকে শিখছিস আমি সেই স্কুল এর পড়ানো স্টুডেন্ট। আগে আগে দেখ কি হয়।
বলে একটা ডেভিল স্মাইল দিলো ।
এখন ও মুন ভার্সিটিতে আছে আর একটু পরে ফোন দি। জানি অনেক রেগে আছে।
মুনের ক্লাস শেষে মুন বসে বসে ভাবছে
মুন: আজ রোদের কি হলো একবার ও খোজ নিল না আর কোথায় গেছে আমায় না জানিয়ে
একবার ফোন দেবো না থাক ওর ইচ্ছা হলে দেবে না একবার দিয়ে দেখি উফফ কি করবো ( মনে মনে)
রুমা: ওতো টেনশন না করে ফোন দে
মুন: তোকে কে বলছে
রুমা: আমি সব বুঝি বুঝলি ওই দেখ আরেক টা চুটিয়ে প্রম করছে।( লামিয়া আর বাঁধন কে দেখিয়ে)
মুন: না থাক
রুমা কিছু বলতে যাবে তার আগে নিরব স্যার রুমা কে ডাক দেয়
মুন: ওই যে তোমার ডাক পরছে
রুমা: চুপ কর
বলে রুমা চলে গেলো ।
আর মুন বেচারি বসে বসে ভাবছে
মুন: ধুর এত না ভেবে ফোন দি জামাই তো আমার।
মুন ফোন দেওয়ার সাথে সাথে রোদ ধরলো।
রোদ: হেলো
মুন: কি ব্যাপার কি আপনার আমাকে না জানিয়ে কোথায় গিয়েছেন।
রোদ: দরকারি কাজ ছিল আর তুমি তো ঘুমাচ্ছিলে।
মুন: তাই বলে কি ডাকা যায় না( অভিমানী কণ্ঠে)
রোদ: হুম যায় কিন্ত আমার কিউট বউ টা কত সুন্দর করে ঘুমাচ্ছিল তাই আর ডাকতে মন চায়নি
মুন: একটা ফোন ও তো করা যেত
রোদ: আচ্ছা সরি
মুন: হু
রোদ: what hu?
মুন: কিছু না কি করছেন
রোদ: বসে বসে আমার মিষ্টি বউ এর সাথে কথা বলছি। খুব মিস করছি তোমায়।
মুন: কত মিস করছেন জানা আছে সেই জন্য তো একটা ও ফোন দিলেন না
রোদ: বুঝতে পারছি আমার বউ টা খুব রেগে আছে সমস্যা নেই রাতে সব ভেঙ্গে দেব।
মুন লজ্জা পেলো।
রোদ: কি হলো
মুন: কিছু না
রোদ: তাই না
মুন: হা তাই
রোদ: love you
মুন: love u too
আরও কিছুক্ষণ কথা বলে।
মুন ক্লাস এ চলে গেলো।
ক্লাস শেষে মুন বাড়ি এসে ফ্রেশ হয়ে নিল।
রোদ বাড়ি এসে মুন কে খুঁজতে লাগলো কিন্ত পেলো না।
রোদ: আম্মু মুন কই?
রাইমা: ছাদে গেছে।
রোদ: ওহ আচ্ছা।
রোদ ছাদে গিয়ে দেখে মুন দোলনায় বসে বসে চকোলেট খাচ্ছে আর গল্পের বই পড়ছে।
রোদ: তুমি এখানে আমি সেই কখন থেকে তোমাকে খুঁজছি।
মুন তাকিয়ে দেখে রোদ রেগে দাড়িয়ে আছে।
মুন: আপনি কখন আসলেন
রোদ: তুমি এখানে কেনো?( ভূ কুচকে)
মুন: আসলে ভালো লাগছিলো না তাই।
রোদ মুনের পাসে বসলো।
মুন: আপনার কাজ শেষ?
রোদ…
মুন: কি হলো কথা বলছেন না কেনো?
রোদ…
মুন: রাগ করছেন? আমি তো কোথাও যায়নি
রোদ: তোমাকে দেখতে না পেয়ে আমার কেমন হচ্ছিল তমী জানো?
মুন: সরি ( কান ধরে)
রোদ: হয়ছে
তোমাকে একটা কথা বলবো।
মুন: হা বলেন।
রোদ: ধরো আমি কিছু সময় এর জন্য হারিয়ে গেলাম সবাই আমাকে খুঁজছে কিন্ত পাচ্ছে না তখন তুমি কি করবা?
মুন কিছু না বলে রোদকে জড়িয়ে ধরে
মুন: আপনি এসব কথা কেনো বলছেন আপনি জানেন না আমি আপনাকে ছাড়া থাকতে পারিনা তাও কেনো এমন কথা বললে। প্লিজ এমন মজা করবেন না আমি আর কাউকে হারাতে চাইনা ( কেদে কেদে)
রোদ: কিন্ত এটা ছাড়া তো কোনো উপায় নেই আমাদের এক হাওয়ার জন্য আপনাকে একটু দূরে থাকতে হবে( মনে মনে)
আরে তুমি ওতো ভয় পাচ্ছো কেনো আমি তো এমনি বললাম আমি আমার মুনকে ছেড়ে থাকতে পারি কখনো না।
মুন…
রোদ: পাগলী চুপ ( মুনের মাথায় হাত বুলিয়ে)
মুন: আচ্ছা আমি যদি হারিয়ে যাই তো( রোদের বুক থেকে উঠে)
রোদ: চুপ একদম মেরে ফেলবি সেদিন কের মারের কথা ভুলে গেছো ( রাগী ভাবে)
মুন: আপনি বললে কিছু না আমি বললে দোষ
রোদ: হা দোষ ।
ওসব বাদ দাও আগে বলো কবে দিবা
মুন: কি( চোখের পানি মুছে)
রোদ: কি মানে আমার রাজকুমারী
মুন রোদের বুকে কিল মারতে লাগলো
রোদ: আরে মারছ কেনো বর কে এভাবে মারে
মুন: হা মারে আপনাকে আমি বুঝি না এই কাদান আবার এই ভালোবাসেন
রোদ: যেদিন আমাকে আমার মত ভালোবাসবে সেদিন আমাকে বুজবে।
মুন: হুম
রোদ: রাজকুমারী তো আনতেই হবে( চোখ টিপ দিয়ে)
মুন: কিসের মধ্যে কি
রোদ: মুনের মধ্যে শুধু তুমি।
এভাবে ওদের দিন চলতে লাগলো হাসি কান্না সব মিশে আছে ওদের ভালোবাসায়।
একদিন রাতে মুন রোদের বুকে ঘুমিয়ে আছে।
আর রোদ মুনের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে
রোদ: জানিনা আমি না থাকলে তুমি কিভাবে থাকবা কিন্ত তোমাকে তো শক্ত থাকতেই হবে সামনে কি হবে আমরা কেউ জানিনা বিপদ তোমার হতে পরে বা আমার কিন্ত রোদ বেচে থাকতে মুনের কিছু হতে দেবে না। সব ঠিক করে দেবো কিছু সময় দাও শুধু একটু সময়(মনে মনে)
রোদ মুনের কপালে ভালোবাসার পরশ একে দিল।
একদিন মুন বেলকনিতে দাড়িয়ে আছে তখন রোদের বডিগার্ড এর কল এসে।
মুন call টা ধরে ওর দুনিয়া ঘুরে গেলো।
হাতের থেকে ফোন আপনা আপনি পরে গেলো।
মুনের চোখ আস্তে আস্তে বন্ধ হয়ে গেলো।
চলবে,