তোমায় ছেড়ে যাবো কোথায় পর্ব-০৬

0
1000

#তোমায়_ছেড়ে_যাবো_কোথায়?
লেখাঃ মুনিরা সুলতানা।
পর্বঃ ৬ ।

————–*
আমি তরকারির বাটি হাতে নিয়ে ডাইনিং রুমে এসে দেখলাম কামরান ইতিমধ্যে টেবিলে বসে প্লেটে খাবার তুলে নিচ্ছে। ও এরই মধ্যে গোসল সেরে নিয়েছে। আমি এই ফাঁকে ঝটপট খাবার গুলো গরম করে টেবিলে দিয়েছি। ওর মুখোমুখি হতে হবে ভাবতেই কেমন যেন একটা লজ্জা মিশ্রিত সংকোচে আমার হৃদযন্ত্রের ঢিপ ঢিপানির গতি অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে। লম্বা করে একটা শ্বাস নিয়ে আমি মৃদু পায়ে এগিয়ে গিয়ে আস্তে করে বাটিটা টেবিলে রাখলাম। কামরান মুখ না তুলেই ভাত তুলে নিতে নিতেই বলে উঠলো,

” আমার বেলকনিতে কাপড় শুকাতে দেয়া আছে দেখলাম। ওগুলো কার আম্মা? ”

” ওগুলো আমার। ” সসংকোচে মৃদুস্বরে বললাম আমি।

কামরান ঝট করে মুখ তুলে আমার দিকে তাকাল। ওর চোখ দুটো বিস্ময়ে বড় বড় হয়ে গেছে। বিস্মিত কন্ঠে শুধালো সে,

” তুমি? তুমি কখন আসছ? তোমার আজকে আসার কথা আমাকে কেউ বলেনি তো। ”

আমি কয়েক সেকেন্ড কামরানের দিকে তাকিয়ে রইলাম। ওকে কেন কাউকেই তো বলিনি। কিন্তু একথা ওকে জানাতে চাইনা। কেন বলবো? এতোদিন একটা খোঁজ নিলোনা আজ তাকে নাকি জানিয়ে আসতে হবে। তাই জবাবে বললাম,

” কেন? আপনাকে কেউ কেন বলবে? ”

কামরানের ভ্রু জোড়া কুঁচকে গেল, ” মানে? কেন বলবেনা? কি বলতে চাইছ তুমি? ”

আমি কেশে গলাটা একটু পরিস্কার করে নিয়ে বললাম, “আমি যে আসছি এটা কেউ কেন বলতে যাবে আপনাকে?”

ওর কপালের ভাজ আরও গভীর হয়ে উঠলো। আমি আবারও বললাম, ” খবরটা আপনার নিশ্চয়ই আমার থেকে পাওয়ার কথা। তাই না? সবাই নিশ্চই ভেবে থাকবে আপনি আমার কাছ থেকে শুনেছেন যে আমি আসছি। ঠিক কিনা? ”

কামরান কি বুঝল কে জানে। আর কিছু না বলে খেতে শুরু করল। আমি কথার ফাকে তরকারি তুলে দিয়েছি। দুয়েক লোকমা মুখে দিয়ে সে আবার বললো,

” কার সাথে আসছ? আবার বলনা যে একা আসছ। ”

আমি লজ্জিত ভঙ্গিতে দাঁতে জিভ কামড়ে ধরলাম। ইতস্তত করে বললাম, “একচুয়েলি একাই এসেছি। মামা স্টেশন থেকে বাসায় দিয়ে গেছেন। ”

আরেকবার অবাক দৃষ্টিতে আমার দিকে ঘুরে তাকাল কামরান। তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে পলকহীনভাবে চেয়ে থেকে বললো,

” এভাবে আসার মানেটা কি? কেউ তোমার সাথে আসতে পারবে না যখন খবর দিতে পারনি? তাহলে গিয়ে নিয়ে আসতাম। এভাবে একা কেন এসেছ? আশ্চর্য! ”

এবারে আমার বিস্ময়ে হা হওয়ার দশা। কামরান যেত আমাকে আনতে? সত্যিই যেত! অসম্ভব, অবিশ্বাস্য! কই বিয়ের পরে এতদিন ওখানে ছিলাম একবার ফোন করা দুরের কথা সে কিনা যেত আমাকে আনতে। হুহ্!

” আপনি যেতেন আমাকে নিয়ে আসতে? সিরিয়াসলি! ”

আমার কথায় বিদ্রুপের সুর। সেটা হয়তো কামরান বুঝতে পেরেছে। ও বললো,

” কেন? আমি যেতে পারিনা? ”

আমি হেসে বললাম, ” অবশ্যই যেতে পারেন। কিন্তু এখন অব্দি তো যাননি। আপনার শশুর বাড়ি কোথায় তা জানেন তো নাকি? ”

কামরানের ভ্রু যুগল দ্বিগুণ কুঁচকে গেল কয়েক সেকেন্ড ঐভাবে আমার দিকে তাকিয়ে থেকে কিছু একটা বোঝার চেষ্টা করল। তারপর একটা শ্বাস নিয়ে খাওয়ার দিকে মনোযোগ দিল সে। আমিও আর কিছু না বলে একটা চেয়ার টেনে বসলাম। একটু পরেই নিরবতা ভেঙে খেতে খেতে চোখ দুটো না তুলেই কামরান জিজ্ঞেস করল,

” তোমার এক্সাম কেমন হলো? ”

” মোটামুটি। ”

“একদম কমপ্লিট? ” মুখ তুলে জিজ্ঞেস করলো কামরান।

” জ্বী একদম কমপ্লিট। ”

” গুড। তাহলে আর ওখানে যাওয়ার তাড়া নেই। তাই তো? ” আবারও খেতে খেতে বললো সে।

আমি ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে রইলাম। ও ঠিক কি বলতে চাইছে বোঝার চেষ্টা করলাম। কিন্তু সফল হতে পারলাম না। তারপর ইতস্তত করে বললাম,

” একচুয়েলি আছে। সামনে ঈদের পরেই আমার ভাইয়ার বিয়ে। তখন যেতে হবে। ”

কামরান আমার দিকে মুখ তুলে চেয়ে বললো, ” তাই? বাহ্, এটাতো খুশির খবর। নিশ্চয়ই যাবে। ”

” হুম। ” বললাম আমি।

” তো তোমার বাড়িতে সবাই কেমন আছে?”

” আল্লাহর রহমতে সবাই ভালো আছে।”

খাওয়া হয়ে গেলে কামরান উঠে পরল। আমি ঝটপট খাবার গুলো গুছিয়ে ফ্রিজে তুলে রাখলাম। কামরায় ফিরে এসে দেখলাম কামরান ওর ল্যাপটপ খুলে বসেছে। ওকে ব্যাস্ত দেখে আমি স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে ওয়াশরুমে গেলাম। ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে এসে আমি চুপচাপ বিছানায় শুয়ে পরলাম। জানিনা কেন জানি আমার বিচলিত ভাব কিছুতেই কমছে না। হয়ত অনেক দিন পরে এই অর্ধ চেনা মানুষটার সাথে দেখা হয়েছে বলে হতে পারে। আমি চুপচাপ চোখ বুঝে শুয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করছি। কামরানের কোনদিকে ধ্যান নেই। পূর্ণ মনোযোগ ল্যাপটপের স্ক্রিনে। আমি আর কি করি। সেই ভোর বেলায় উঠেছি। লম্বা জার্নি করে এসেছি। ক্লান্ত শরীর নিয়ে শুয়ে আকাশ পাতাল ভাবতে ভাবতে কখন যে দুচোখের পাতা ভারি হয়ে এসেছে নিজেও বুঝতে পারিনি।

————*
সকালের নাস্তার টেবিলে সবাই একসাথে নাস্তা খেতে বসেছি। এই বাড়িতে সকালের নাস্তা একসাথেই খাওয়া হয় সবসময়। তারপর একে একে সবাই বেরিয়ে যায় যার যার গন্তব্যের উদ্দেশ্যে। সবার আগে আরমান উঠে পরল। সে ঠিক মত খায়নি দেখে শাশুড়ী মা বললেন,

” তোমার সমস্যা কি আরমান? এইযে বের হবে সারাদিন টো টো করে ঘুরে বেড়াবে। বাসায় ফিরতে ফিরতে বিকেল নয়তো সন্ধ্যা হবে। অত্যন্ত ব্রেকফাস্টটা ঠিক মত খেয়ে যাবে তো। দিনদিন তুমি ইনডিসিপ্লিন হয়ে যাচ্ছ আরমান। ”

আরমান বিরক্ত সহকারে মায়ের দিকে তাকিয়ে রইল কয়েক সেকেন্ডের জন্য। তারপর বললো,

” কি ডিসিপ্লিন ব্রেক করেছি? আমার পেট ভরে গেছে। এখন কি খাবারটাও তোমার ইচ্ছে মতো জোর করে গিলতে হবে? ”

” আরমান! এসব কি ধরনের কথা বলছিস আম্মার সাথে? ”

কামরান কঠোর গলায় বলল কথাটা। আমি অবাক হয়ে দেখছি আরমানকে। ওর কথার মানে বোঝার চেষ্টা করছি। ও আমার শাশুড়ি মায়ের সাথে ঐ ভাবে কেন কথা বলল?

আরমান বলল,” তো কি বলব তুমিই বল ভাইয়া? আমার সত্যিই খাওয়া হয়ে গেছে। ”

” ঠিক আছে বুঝলাম তোর খাওয়া হয়ে গেছে। কিন্তু বেয়াদবের মত কথা বললি কেন? সরি বল আম্মাকে। ”

বড় ভাইয়ের কথার অবাধ্য হতে পারেনা আরমান। চোখ মুখের ভাব তিক্ততায় ভরে স্মিত স্বরে বললো সে,

” সরি আম্মা। ”

শাশুড়ি মা বললেন, ” ঠিক আছে। আমি তোমাদের ভালোর জন্যই বলি। মা হয়ে তোমাদের জন্য যেটা সঠিক সেটাই উপদেশ দেই। কিন্তু তোমরা এখন বড় হয়ে গেছ। নিজেদের ভালো মন্দ নিজেরাই বুঝতে শিখেছ। তাই আমার পরামর্শ এখন গুরুত্বহীন মনে হয় তোমাদের কাছে। তোমার দেরি হয়ে যাচ্ছে। যেখানে যাচ্ছিলে যাও। ”

” আসছি। ” কথা না বাড়িয়ে আরমান বেরিয়ে গেলো।

‘ ডালমে কুছ কালা হেয় ‘আমি বুঝতে পারছি। ছোট ভাইয়ার ক্যারেক্টারে কিন্তু আছে। কিন্তু সেই কিন্তুটা কি? কামরানের গলা শুনে সেদিকে মনোযোগ দিলাম।

কামরান বললো, ” ঐ গাধাটার কথা শুনে তুমি আমাদের সবাইকে একই রকম ভাবছ কেন বলতো? ”

তিয়ানাও ভাইয়ের কথায় তাল মিলিয়ে বলল,” হ্যা আম্মু বড় ভাইয়া ঠিকই বলেছে। আমিও তো তোমার লক্ষ্মী মেয়ে তাই না। বল? ”

শাশুড়ি মা হালকা হেসে বললেন, ” হ্যা মা তুমি আমার লক্ষ্মী মন্ত মেয়ে। ”

নাস্তা খাওয়া শেষ করে ভাই বোন একসাথে বেরিয়ে গেলো। আমি এখন কি করব বুঝতে পারছিনা। এদিক সেদিক ঘুরে ফিরে শাশুড়ি মায়ের রুমের সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। উনি বিছানার চাদর তুলছেন দেখে এক মুহূর্ত ইতস্তত করে আমি ভিতরে প্রবেশ করলাম। উনার কামরায় একটা বেশ অন্যরকম আবহ আছে। এই কামরার আসবাবপত্র গুলো বোধহয় বেশ পুরনো। তবে ঝকঝকে তকতকে। বোঝা যায় ভালোবেসে যত্ন করে রাখা হয়। আমার শশুর মশাইএর স্মৃতি গুলো কামরার সবখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। যেন মানুষটা কোথাও গিয়েছে। যেকোন সময় ফিরবে। সত্যি ভালোবাসার মানুষটা চলে যাওয়ার পরেও এভাবেই বোধহয় তাকে বাচিয়ে রাখা যায়। আমার বুক চিড়ে একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো। এগিয়ে গিয়ে স্বসংকোচে নার্ভাস ভঙ্গিতে বললাম,

” আম্মা, আপনি কষ্ট করছেন কেন? কাউকে বললেই তো পাল্টে দিত।”

আমার কথা শুনে উনি পিছনে ফিরে চাইলেন। মৃদু হেসে বললেন, ” হ্যা তা পারতো। কিন্তু আমার আবার খুঁতখুঁতানি বাতিক আছে। আামার বিছানায় আমি কাজের লোকদের উঠতে দিতে পছন্দ করিনা। দেখনা ওরা সারাদিন কেমন খালি পায়ে ঘুরে বেড়ায়?”

আমিও হালকা হেসে বললাম, ” তাহলে আমি চাদরটা পাল্টে দিই? তাতে আপনার আপত্তি নেই নিশ্চয়ই? ”

উনি চিন্তিত স্বরে বললেন, ” তুমি করবে? ” একটু ভেবে আবার বললেন, ” ঠিক আছে কর। ”

উনি সরে যেতেই আমি ঝটপট কাজে লেগে গেলাম। দ্রুত গতিতে চাদর, বালিশের কভার সব পাল্টে ফেললাম। কাজ শেষে দেখলাম উনি আলমারি খুলে কিযেন করছেন। আমার কাজ হয়ে গেছে দেখে বুয়াকে ডেকে চাদর সহ জড়ো করে রাখা আরও কিছু ময়লা কাপড় তাকে দিয়ে ওয়াশিং মেশিনে ধুতে দিতে বললেন। তখন আমার নজর পরল দুটো স্যুটকেশের দিকে। আমি অবাক হয়ে শুধালাম,

” স্যুটকেশ বের করেছেন কেন আম্মা? আপনি কি কোথাও যাবেন? ”

উনি এক পলক স্যুটকেশের দিকে তাকিয়ে বললেন, ” হ্যা, আমি চিটাগং যাচ্ছি কাল। তাসমিয়ার ডেলিভারির টাইম হয়ে আসছে তো। একটু কমপ্লিকেশন থাকায় ডাক্তার ওকে জার্নি করার পারমিশন দেননি। তাই আমাকেই যেতে হচ্ছে। জানতো ওর শাশুড়িও বেঁচে নেই। এই সময় মুরুব্বি গোছের কারোও কাছে থাকা খুব জরুরি। ”

আমার মনটা একটু খারাপ হয়ে গেল। শাশুড়ি মা চলে গেলে বাসায় সবকিছু তখন নিশ্চয়ই আমাকে সামলাতে হবে। কিন্তু আমিতো নতুন। কিভাবে এসব সামলাবো? আমি বিষন্ন স্বরে বললাম,

” আপনি চলে যাবেন? তাহলে এখানে কিভাবে চলবে? ”

উনি হালকা হেসে বললেন, ” কেন? তুমি আছ তো। এজন্যই তো তোমাকে এতো তাড়া দিলাম আসার জন্য। এই ফাঁকে তুমি সংসারটা সামলাতে শিখে নিবে

আমি একটা শুকনো ঢোক গিলে বললাম, ” আমি? কিন্তু আমিতো নতুন। বলতে গেলে কিছুই জানিনা। আপনিও থাকবেননা তাহলে আমি একা কিভাবে কি করব? ”

” এত দুশ্চিন্তা করার কিছু নেই। আমি যাওয়ার আগে সব বুঝিয়ে দেব। আর পরে কোন সমস্যায় পরলে ফোন তো আছেই। আমাকে ফোন করে জেনে নিবে কেমন? ”

আমি মাথা দুলিয়ে সায় জানালাম। উনি আলমারি থেকে কাপড় বের করতে করতে আমাকে সবার খাবারের পছন্দ অপছন্দ সম্পর্কে বললেন। অন্যান্য ব্যাপারেও কিছু পরামর্শ দিলেন, কিভাবে সবকিছু সামলাবো। এসব শুনে আমার ভয় একটু কমল। তবে পুরোপুরি নয়। কারণ এসব আমার কাছে নতুন। উনি বুঝতে পেরে বললেন,

“আমি বুঝতে পারছি তোমার মনের অবস্থা। কিন্তু এতো ভয় পাওয়ার কিছু নেই। প্রত্যেকটা মেয়েকেই প্রথমে এমন সিচুয়েশনে পরতে হয়। কিন্তু মেয়েদের একটা অদ্ভুত ক্ষমতা দিয়ে আল্লাহ তায়ালা সৃষ্টি করেছেন। আর সেটা হল মেয়েরা যেকোনো নতুন পরিবেশে গিয়ে ঠিক মানিয়ে নিতে পারে। আর যেকোনো সিচুয়েশনে পরুকনা কেন তারা ঠিকই সবকিছু সামলেও নিতে পারে। এটাই মেয়েদের স্বভাবজাত ক্ষমতা। তাই তো মেয়েরা বিয়ের পরে নতুন ফ্যামিলিতে নতুন মানুষজনের সাথে এতো সাবলীল ভাবে মানিয়ে নিতে পারে। তাই একদম টেনশন করার কিছু নেই। সবকিছু ঠিক হবে।”

আমি ছোট্ট করে একটা নিশ্বাস ফেলে বললাম, ” জি, ইনশাআল্লাহ। ”

বাকি দিনটা আমার বেশ ব্যাস্ততার মধ্যে দিয়ে কেটে গেল। আমার শাশুড়ি মা রান্না বান্না ও অন্যান্য সব সাংসারিক ব্যাপারে নানাবিধ ধারণা দিলেন। হাতে কলমে আমাকে দেখিয়ে দিলেন। তারপর আমি স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে ভাবলাম, ‘ আমি পারবো ইনশাআল্লাহ। ‘ আমার ভয়ও অনেকটা কেটে গেল। দুপুরে খাওয়া দাওয়া সেরে শাশুড়ি মা নিজের কামরায় গেছেন বিশ্রাম নিতে। আমিও আমাদের বেডরুমে এসে বিছানায় শুয়ে পরলাম কিছুক্ষণের জন্য বিশ্রাম নিতে। তখনই আমার সেলফোনটা বেজে উঠতেই দেখলাম বাসা থেকে কল এসেছে। সকাল থেকে ব্যাস্ততায় সময় কেটে গেছে। অলস দুপুরের নিরিবিলি পরিবেশে আমার আপনজনদের সত্যিই খুব মিস করছিলাম। তাই মায়ের কল দেখে অজান্তেই আমার মুখে হাসি ফুটে উঠল। কল রিসিভ করে কানে ধরে সালাম দিলাম। ওপাশ থকে আম্মা সালামের জবাব দিয়ে বললেন,

” কেমন আছিস মা? কোন প্রবলেম হচ্ছে নাতো? ”

” আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি আম্মা। এবং সব ঠিক আছে। সো অযথা টেনশন করনা। বাসায় সবাই কেমন আছে? আব্বার শরীর ঠিক আছে তো? ”

” হ্যা তোর বাবার শরীর ঠিক আছে। আর আমাদের জন্য ভাবিস না। এখন সংসারে মনোযোগ দে। ঠিক আছে? ”

আরও কিছুক্ষণ মা ও দাদির সাথে কথা বললাম। মনটা অনেকটা হালকা হয়ে গেল এতে। প্রফুল্লচিত্তে এরপর একটা বই হাতে নিয়ে পড়তে লাগলাম। কিন্তু কখন যেন ক্লান্তিতে দুচোখের পাতা আপনাআপনি বুজে গেল টেরই পায়নি।

চলবে ইনশাআল্লাহ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে