তোমায় ছেড়ে যাবো কোথায় পর্ব-১১

0
871

#তোমায়_ছেড়ে_যাবো_কোথায়?
লেখা – মুনিরা সুলতানা।
পর্ব – ১১।

—————–*
পরোটা ভাজার ঘ্রাণে ম-ম করছে চারপাশে। আসমা পরোটাগুলো বেল দিচ্ছে আমি একে একে সেগুলো ভেজে ফেলছি। সকালে উঠে আগে আলুভাজি করেছি সুজির হালুয়া করেছি। শাশুড়ী মায়ের রান্না করা গরুর মাংসের ভুনা ছিল ফ্রিজে। সেটা গরম করেছি। পরোটার আটা মেখে রেখছিলাম। আমি ও আসমা প্রথমেই দুকাপ চা বানিয়ে টোস্ট দিয়ে খেয়েছি। কামরান একটু আস্তে ধীরে ঘুম থেকে উঠে। সেই জন্য ও উঠতেই গরম গরম পরোটা ভাজতে শুরু করেছি। পিউলি আপুও উঠেনি। উনি অনেক রাত অব্দি লাইভে কাজ করতে থাকে। তাই প্রায় মধ্য রাতে ঘুমায়। পিউলি আপু বিভিন্ন পোশাক, কসমেটিকস, জুয়েলারী এই ধরনের ব্রান্ড গুলোর সাথে কাজ করে। তাদের প্রডাক্টগুলো নিয়ে লাইভ করে। সারাদিন এইসব নিয়ে ছোটাছুটি চলতে থাকে। গতকাল রাতেও অনেক রাত পর্যন্ত লাইভ করছিল।

পরোটায় ঘি মাখিয়ে এপিঠ ওপিঠ ভাজছি যখন তখন রান্নাঘরের দরজা থেকে কামরান বলে উঠলো,

” কি করছ হীবা? তোমার রান্নার এতো ঘ্রাণ ছড়ায় কেন বলতো? তুমি তো দেখছি আশেপাশের মানুষদের লোভে ফেলে দিবে। ”

আমি পরোটাটা ফ্রাইপ্যান থেকে তুলে রুটির ঝুড়িতে রেখে কামরানের দিকে তাকিয়ে হেসে উঠে বললাম,

” পরোটা ভাজার সময় তো ঘ্রান ছড়াবেই। ঘ্রাণ না ছড়িয়ে কিভাবে ভাজা সম্ভব তাতো আমি জানিনা। ”

কামরান শব্দ করে হেসে উঠে বললো, ” আচ্ছা এখন চটপট আমাকে নাস্তা খেতে দাও। খিদেয় পেট চো চো করছে।”

পরোটার ঝুড়িটা হাতে নিয়ে ডাইনিং টেবিলের দিকে যেতে যেতে বললাম,

” পেটের আর কি দোষ? সেইযে কাল সন্ধায় বাইরে থেকে খেয়ে এসেছিলেন। এখন এতটা বেলা হলো খাওয়া পেটে পরেনি। ” ঝুড়িটা টেবিলে রেখে ঘুরে দাঁড়িয়ে বললাম,” পেট বেচারার কত কষ্ট হচ্ছে বলুনতো? নিন এবার খেতে বসুন।”

কামরান হাসতে হাসতে বললো, ” সত্যিই তোমার এলেম আছে। তা তুমি খাবে না? তুমিও বস।”

” হুম বসছি। পিউলি আপুকে ডেকে আনি আগে? ”

কামরান বাটিতে মাংস তুলে নিতে নিতে বললো, ” তুৃমি বস।” তারপর গলা উঁচিয়ে বললো, ” আসমা দেখতো পিউলি উঠেছে নাকি। উঠলে ডেকে নিয়ায়।”

” ডাকতে হবেনা। আমি এসে গেছি।”

এসেই একটা চেয়ার টেনে বসল সে। একটা প্লেটে পরোটা তুলে দিলাম। বাকি সব কিছু পিউলির দিকে এগিয়ে দিলাম। তারপর নিজেও নিয়ে বসলাম খেতে। পিউলি পরোটা দেখে নাক শিটকে বলল,

” এতো অয়েলি খাবার? এগুলো খেয়ে তো আমি মুটিয়ে যাব। না আমি এটা খাবনা।”

আমি কিছু বলতে যাব তার আগে চিবোতে চিবোতে কামরান জবাব দিল,” এতো টেস্টি খাবার না খেলে কি মিস করবি তুই নিজেও জানিসনা। ওর হাতে জাদু আছে। খেয়ে দেখ।”

আমি হতভম্ব হয়ে কামরানের দিকে তাকিয়ে আছি। কথাটা বলেই ও খাওয়ায় নিমগ্ন হয়ে আছে। মানুষটার মধ্যে কোন ভান নেই যা মনে আছে তাই মুখেও প্রকাশ করে অবলিলায়। যেটা তার ভালো লাগে মন খুলেই প্রশংসা করছে। সত্যি আমি প্রথমে ওকে এমনটা ভাবিনি। বলতে গেলে ভুলই বুঝেছিলাম। আমার বুকের ভিতর কেমন করে উঠলো যেন। চোখের কোনেও অশ্রুকণা জমেছে। নিজেকে সামলে নিয়ে পিউলি আপুর দিকে তাকালাম। ও মুখটা কেমন তেতো করে প্রবল অনিচ্ছায় খাবার চিবোচ্ছে। আসলেই এত খারাপ লাগছে? মানলাম তেলযুক্ত খাবার ও এড়িয়ে চলে। তাই বলে কি অপছন্দও করবে? কি জানি?

” কি হলো, খাচ্ছনা কেন? ”

কামরানের কথায় ভাবনার জগৎ থেকে বেরিয়ে এলাম। স্মিত হেসে বললাম, ” এইতো খাচ্ছি। ” বলেই খাওয়াতে মনযোগ দিলাম।

টুকটাক কথা চলতে থাকল। ওদের খাওয়া প্রায় হয়ে এসেছে দেখে আমি রান্নাঘরে ছুটলাম চা করতে। পানি বসিয়ে দিয়েছে আসমা। চায়ের পাতা দিচ্ছি ফুটন্ত পানিতে ঠিক তখনই কামরানের উত্তেজিত গলা ভেসে এলো,

” আমি ফেস ফটোগ্রাফি পছন্দ করিনা তুই ভালো করে জানিস। তারপরও কেন বারবার আমার পিছনে পরিস?”

” অথচ তোমার তোলা ছবি গুলো কি অসাধারণ হয় তুমি নিজেও জানোনা বোধহয়। এইবারের মত সামলে দাও প্লিজ। আমি ওদের অলরেডি তুমি থাকছ বলে ফেলেছি। প্লিজ আমার সম্মান বাঁচাও। আই প্রমিজ নেক্সটে আর কখনও এমন করবো না।” প্রায় মিনতিপূর্ণ কন্ঠে বলল পিউলি।

চায়ের কাপে দুধ চিনি দিতে দিতে আমি কান খাড়া করলাম।

কামরান ঝাঁঝাল স্বরে বলছে, “আমাকে একবার জিজ্ঞেস করারও প্রয়োজন মনে করিসনি? ফটোগ্রাফি আমার পেশা নয়। আমার পেশা আমার বিজনেস। তোর ইচ্ছে মতো আমার যখন তখন যেখানে সেখানে ছোটাছুটি সম্ভব নয়। বুঝেছিস?”

” আমি জানি তুমি ফ্রাইডেতে ছুটিতে থাক। সো আমি সেদিন সিডিউল দিয়েছি। ”

” আমি সেদিন বাসায় রেস্ট নেই। কোন কাজ করিনা জানিস না সেটা?”

” আই নোও। বাট এটা তো তোমার কাছে কাজ নয়। প্লিজ আমার জন্য একটাদিন দাও।” পিউলি কাতর গলায় বললো কথাটা।

আমি তিনটা কাপে চা ঢেলে একটা কাপ আসমার জন্য রেখে দিলাম। পিউলি আপুর জন্য কফি বানিয়ে কাপ গুলো ট্রেতে তুলে আসমার হাতে পাঠিয়ে দিলাম। আমিও ওর পিছু পিছু গেলাম। কামরানকে বলতে শুনলাম,

” দেখি। কিন্তু এবারই শেষ। এরপর আর এই ধরনের রিকোয়েস্ট করবিনা। মাইন্ড ইট। ”

আমাকে দেখে কিনা জানিনা পিউলি আর কিছু বললনা। তবে কাজ হাসিল হওয়ায় তার চোখে মুখে খুশির ঝিলিক। আসমা ট্রেটা রেখে রান্নাঘরে ফিরে গেলে আমি কফির কাপটা পিউলির সামনে এগিয়ে দিলাম। কামরান নিজের মগটা তুলে নিল।

প্রথমে কামরান বেরিয়ে গেল। আরেকটু বেলা করে পিউলি আপুও বেরিয়ে গেল। আমি এখন একা হয়ে গেলাম। ঠিক একা নয় আসমা এবং রানি আছে অবশ্য। রানি তার ঘরদুয়ার পরিস্কারের কাজে লেগে পরেছে। আসমাকে রান্নার যোগার করতে দিয়ে আমি লিভিং রুমের বেলকনিতে এসে দাড়ালাম। ঠিক তখনই শাশুড়ী মায়ের কল এলো। উনার সাথে টুকটাক কথা বললাম। তাসমিয়া আপুর শরীরটা নাকি খুব একটা ভালো নেই। প্রেশারটা বেশ হাই। শারীরিক অবস্থাও ভালোনা। তাই মা বেশ দুশ্চিন্তায় আছেন। কথায় কথায় পিউলির গতকাল এখানে রাতে থাকার কথা শুনে মা বেশ গম্ভীর হয়ে বললেন,

” আমরা কেউ নেই বাসায়। কামরান ওকে বাসায় থাকার পারমিশন দিল কেন? ওর উচিৎ ছিল ওকে বাসা পৌঁছে দিয়ে আসা। ঠিক আছে আমি কামরানের সাথে এই নিয়ে কথা বলব। তোমরা সাবধানে থেক।”
যাক শাশুড়ি আম্মাও যে সতর্ক আছেন পিউলির বেলায় ভালো লাগলো ব্যাপারটা। মেয়েটা জেনেশুনে কামরানকে নিজের প্রয়োজনে যেতে বাধ্য করছে। তবুও কামরানের উপর এই ক্ষেত্রে অবিশ্বাস করতে চাইনা। গতকাল থেকে খেয়াল করে দেখলাম পিউলির সাথে ওর আচরণ একজন কাজিনের সাথে যেমন হওয়া উচিত ঠিক তেমনই।

শাশুড়ি মায়ের সাথে কথা শেষ করে বাসায় কল করলাম। মা ধরেই উত্তেজিত গলায় বলে উঠলেন, “তোর ব্যাপার স্যাপার কি বলতো? কাল সারাদিন কিসে এতো ব্যাস্ত ছিলি যে একটা ফোন করারও টাইম হয়নাই। আমিও ফোন দিসি তাও দেখিসনাই? কই ছিলি সারাদিন? ”

আমি দাঁতে জিহ্বা কাটলাম। এইরে একদম মাথায় ছিলনা। সারাদিনের ক্লান্তিতে সেলফোনই ধরা হয়নি গতকালকে। আমি আমতাআমতা করে বললাম,

” আসলে আম্মা হইছে কি কাল আমার শাশুড়ী, ননদ, দেবর ওরা চিটাগং গেছে বড় নগদের বাসায়। ” তারপর বাকি দিনের কাহিনি গুলো খুলো বললাম।

আম্মা এবার একটু শান্ত হলেন, ” ঠিক আছে। কিন্তু ফোনটা অন্তত ধরিস। ওটা যেইজন্য হাতের কাছে রাখা সেটার ব্যাবহার ঠিকঠাক করলে আমাদের আর দুশ্চিন্তা করতে হয়না। তোর আব্বার বিপিও হাই হয়ে যায় তোকে নিয়ে চিন্তা করতে করতে। সেটা অন্তত মাথায় রাখিস।”

আম্মার মুখে এতগুলো কথা শুনে বুঝতে পারলাম বড্ড ভুল হয়ে গেছে। সেই গত পরশুদিন কথা হয়েছিল। আমারই হুঁশ জ্ঞান কম। তাই বললাম,

” সরি আম্মা। এরপরে খেয়াল রাখব। ”

” আচ্ছা শোন এত বড় বাসায় সারাদিন একা আছিস। খুব সাবধানে থাকবি। চোখ কান খোলা রাখবি। এতদিন বাবা মায়ের উপর নির্ভর করে নিশ্চিতে ছিলিস। কিন্তু এখন তোর বিয়ে হয়েছে। নিজের সংসারের সবকিছু তোকে একা হাতে সামলাতে হবে। কারও উপর নির্ভর করে বসে থাকবিনা। তোর যা দায়িত্ব কর্তব্য যা কিছু করনীয় নিজেই করার চেষ্টা করবি। ঠিক আছে? ”

” আম্মা তুমি একটু বেশি চিন্তা করছ। একটু ভরসা রাখ। আমি সব সামলে নিব ইনশাআল্লাহ। তোমরা শুধু আমার জন্য দোয়া কর ব্যাস। ”

” দোয়াতো সবসময়ই করি। তবুও চিন্তা হয়। যতদিন না তুই ঐ নতুন পরিবেশের সাথে মানিয়ে গুছিয়ে নিয়ে জাঁকিয়ে বসতে পারছিস ততদিন আমাদের দুশ্চিন্তা থাকবেই। ”

” সময়ের সাথে সব ঠিক হয়ে যাবে দেখ। ”

ফোনের ওপাশ থেকে আম্মার দীর্ঘশ্বাস ছাড়ার শব্দ ভেসে এল। তিনি বললেন, ” তাই যেন হয়। আচ্ছা তোর দাদি তোর সাথে কথা বলার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছে। নে কথা বল।”

দাদি ফোন ধরেই বলে উঠলেন, ” কিরে বুবু সোয়ামীর বাড়িতে যাইতেই চাইতেছিলি না। আর এখন ঐ বাড়ি গিয়া সোয়ামীর সোহাগ পাইয়াই আমাদের ভুইলা গেলি? কি ব্যাপার বুবুজান এতো আদর সোহাগ দিছে যে দুদিনেই এই অবস্থা! হুহ্? ”

দাদির কথা শুনে নিমিষেই আমার কান, গাল গরম হয়ে গেল। দাদির মুখে যা মনে আসে তাই বলে ফেলে। আমি নিজেকে সামলে শক্ত গলায় বললাম, ” ঐ বুড়ি তোমার মুখে কিছু আটকায়না না? খালি আজেবাজে কথা। আম্মার কাছে শুনে নিও আমি কেমন ব্যাস্ত ছিলাম। ”

আমার কথা যেন দাদির কানেই চুকেনি। একইরকম রসিকতার সুরে বললেন, ” বুঝিগো বুবু বুঝি। এখন চুল পাইকা দাঁত পইরা এমনেই বুড়ি হইনাই। কেনে ভুল কি বলছি? তোর মত দিন আমরাও একদিন পার কইরা আসছিনা? আমার সামনে লজ্জা পাইস ভালো কথা। কিন্তু নাতজামাইএর সামনে এইসব লজ্জা শরম শিকেয় তুলে রাখিস। বুঝলি? ”

আমি যে লজ্জায় লাল হয়ে গেছি না দেখেও অনুভব করতে পারছি। ভাগ্যিস আমার আশেপাশে কেউ নাই। আমি না পারতে বলে উঠলাম,

” এই তুমি ফোন রাখতো। তুমি যদি এইসব ফালতু কথা আর একবারও বলেছ তো আমি তোমার সাথে আর কথাই বলবনা। কথাটা মনে গেথে রাখ। বুঝতে পারছ? ”

দাদি ফোনের ওপাশে খলখল করে হেসে উঠলেন,” তুই এতো রাইগা যাইতাছোস কেনেগো বুবু? শোন নাতজামাইরে তো আমি দেখিনাই। তাই তার স্বভাবদোষ এইসব সম্বন্ধে আমার কোন ধারণা নাই। তবে একটা কথা সবার ক্ষেত্রেই একই। আর তা হইলো গিয়া কবুল কওয়ার পর জামাই বউ একে অপরের প্রতি প*তঙ্গ ও আ*গুনের মত আকর্ষণ করে। এইটা হইলো মানবদেহের স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া। তাই লাজলজ্জা পায়ে ঠেলে এই স্বাভাবিক ব্যাপার গুলারে মাইনা নিতে হবে। বুঝলিরে বোকা মাইয়া। আমি এইটুকুই জানতে চাই নাত জামাই আদর সোহাগ করে তো? তোদের দাম্পত্য সম্পর্ক আর দশটা দম্পতিদের মতন সামনে আগাইছে?”

আমি এবার সত্যিই লজ্জা শরমে কি বলব বুঝতে পারছি না। তাছাড়া বলার মতো আছেই বা কি? কামরানের সাথে আমার সম্পর্কটা ঠিক কেমন? স্বাভাবিক নাকি অস্বাভাবিক? ও আমার সাথে একদম স্বাভাবিক ভাবেই কথাবার্তা বলে। ব্যাবহারও ভালো। কিন্তু? এটাকে কি স্বাভাবিক দাম্পত্য সম্পর্ক বলা যায়? এইতো আমার বান্ধবী মায়ার বিয়ের পরে যখন প্রথম আমাদের সাথে দেখা হলো। আমরা সব বান্ধবীরা ওকে ছেকে ধরেছিলাম ওদের বাসর রাতের কাহিনী শোনার জন্য। ওর সেকি লজ্জা সেদিন। আর কেমন অদ্ভুত একটা জেল্লা ফুটে উঠেছিল ওর চোখে মুখে। সর্বোপরি কি সুন্দর লাগছিল মায়াকে সেদিন। ও প্রতিটি কথা বলার সময় কি অদ্ভুত ভাবে লাজরাঙা হয়ে রাঙিয়ে উঠছিল। আমি কেবল মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলাম ওর দিকে। সত্যি সেদিন মায়ার সুখী সুখী চেহারা দেখে তুষ্টি বোধ করেছিলাম। মনে মনে ওর জন্য দোয়াও করেছিলাম ও যেন এভাবেই সারাজীবন সুখী থাকে। কিন্তু আমার জীবনের গল্পটা তো একদম আলাদা। এখনো আর দশটা দম্পতিদের মত আমাদোর দাম্পত্য জীবন হয়ে উঠেনি। তাহলে দাদিকে কি বলবো? আর দাদিই বা কেন উঠে পরে লেগেছে এসব খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে জানার জন্য? আমি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললাম। ঐদিকে দাদি বলে যাচ্ছিল,

” ঐ মাইয়া তুই কি ঐপাড়ে আছিস? কথা কইসনা কেনে?”

আমি ভাবন ঘরের বাইরে বেরিয়ে এলাম। বললাম, ” তোমার এতো কথা জানা লাগবেনা যাও। তোমার শরম শিকেয় তুলে রাখছো বলে কি আমার লাজলজ্জা নাই? আমি এখন ফোন রাখতেছি। বুয়াদের রান্নার জন্য জোগাড় পাত্তি করতে বলে এসেছিলাম। বেলা হয়ে যাচ্ছে দেখনা? রান্না বসাতে হবে।”

” যাক তাইলে সংসারের দিকে মন বসতাছে আমার বুবুর। তা হ্যারে জামাই খাইতে ভালোবাসে তো? ”

” হ্যা দাদি সে খেতে খুব ভালোবাসে। ”

আমি খুব উৎসাহের সাথে গত কালের বিরিয়ানি রান্নার এবং কামরানের পছন্দ করে খাওয়ার কথা বললাম। এতক্ষণে দাদি বোধহয় সন্তুষ্টচিত্তে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে পেরেছেন। সেই সাথে আমিও দাদির কৌতুহল কিছুটা হলেও মিটাতে সক্ষম হয়েছি বলে দাদির উলটো পালটা বাক্যবাণ থেকে আপাতত রেহাই পেলাম। অবশেষে কথা শেষ করে রান্নাঘরের দিকে এগোলাম মনের মানুষটির পেটের মাধ্যমে তার মনের জমিনে নির্ভরযোগ্য চারারোপন করার প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য।

চলবে ইনশাআল্লাহ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে