#তোমাতে আসক্ত
#নাহিদা ইসলাম
#পর্ব ২
অভ্র রুমে ডুকে ই আস্তে আস্তে আমার দিকে এগিয়ে আসছে আমি ভয়ে চোখ বন্ধ করে বললাম,
–আপনি আমার কাছে আসবেন না। আমি আপনাকে অনেক ভয় পাই।।।
অনেক্ষন হয়ে গেছে উনি কোনো কথা ও বলছে না আমাকে ও স্পর্শ করছে না,তাই একটু একটু চোখ খুললাম। অভ্রের দিকে তাকিয়ে দেখি আমার দিকে রক্ত বর্ণ চোখ দিয়ে তাকিয়ে আছে। আমি কিছু না বুঝার আগে ই আমার হাত ধরে টেনে বিছানা থেকে নামিয়ে অন্য একটা রুমে নিয়ে যায়।ঐ রুমের লাইটা অন করে আমাকে রেখে দরজা বন্ধ করে চলে আসে।
দরজা বন্ধ করে বাহির থেকে বলে গেলো।
–চিৎকার করবে না। আজ থেকে আপনার জায়গা এইখানে ই। আপনি ভাবলেন কী করে আপনার মতো মেয়েকে আমি স্পর্শ করবো। অভ্র চৌধুরীর রুচি এতো খারাপ না।
আমি এতো ই খারাপ তাহলে আমাকে জোর করে বিয়ে করলেন কেনো। আমার ভালোবাসা স্বপ্ন আশা সব ভেঙ্গে দিলেন কেনো। আমার অভিকে আমি কী উওর দিবো। ছেলেটা বড্ড বেশি ভালোবাসে আমায়।
বিছানায় শুয়ে ভাবতেছি কালকে আমার জীবনে হ কী কী হতে পারে। সবাই যখন জানতে পারবে মেনে নেবে কী আমায়। একা তো কখনো ঘুমায়নি ভয় করতেছে তাই লাইট অন করে শুয়ে পড়তে ই ঘুম দুচোখে চলে আসে।
___________________
সকাল বেলা, দিব্বাকে নিয়ে সবাই অনেক মজা করছে। যা ই হক কালকে রাত দিব্বার কাছে অনেক স্পেশাল ছিলো। কিন্তু অঞ্জলি যা করলো তার জন্য মনে মধ্যে বড্ড রাগ পুষে রেখেছে। এবাড়ির মানুষগুলো অনেক ভালো নয়তো ছোট বোনের এমন কাজের জন্য দিব্বাকে ও কথা শুনতে হতো।
দিব্বা একটা মেয়েকে ডেকে জিজ্ঞেস করলো,
–অভ্র ভাইয়ার রুমে আমাকে নিয়ে যেতে পারবে।
–হে চলো, কিন্তু অভ্র ভাইয়া অনেক রাগি যদি আমাকে বকা দেয়।
–কিছু হবে না। আমাকে নিয়ে যাও।
মেয়েটা আমার হাত ধরে উপরে নিয়ে যাচ্ছে এটা দেখে কয়েকজন জিজ্ঞেস করলো,
–ভাবি আপনি উপরে যাচ্ছেন কেনো।
আমি আস্তে করে উওর দিলাম।
–অঞ্জলি কাছে।
–ওহ্ অভ্রের বউ এর নাম কী অঞ্জলি নাকি। তা তারা রাতে হয়তো ঘুমায়নি এখন ঘুমাচ্ছে এখন গিয়ে ডিস্টার্ব করবেন কেনো।
এটা বলে ই সবাই হাসা শুরু করলো আমি কারো কথা না শুনে উপরে যেতে লাগলাম।
অভ্র ভাইয়ার রুমের সামনে যেতে ই দেখলাম রুমের দরজা লক করা ভেতর থেকে। তার মানে সত্যি ই ওরা ঘুম থেকে উঠে নাই। উদের কী কোনো কান্ড জ্ঞান নেই কয়টা বাজে এখন ও ঘুম থেকে উঠে নাই। তার উপর বাসা বর্তী মেহমান। আজকে তার উপর আজকে রিসিপশন।
এতো বড় একটা কান্ড ঘটিয়ে মেয়েটা কীভাবে দুপুর অব্দি ঘুমাচ্ছে। সামনে পাই একবার থাপ্পড় দিয়ে দাত ফেলে দিবো।
মনে মনে অঞ্জলিকে বকতে বকতে নিচে নেমে আসছে দিব্বা।
ঘুমের মধ্যে ই মনে হচ্ছে পাখির মতো উড়তেছে। অঞ্জলির খুব ভালোই লাগছে। ছোট বেলা থেকে কতো ইচ্ছে পাখির মতো ডানা মেলে উড়বে। মানুষের নাকি যে ইচ্ছে বাস্তবে পূরন না হয় তা স্বপ্নে পূরন হয়। অঞ্জলি ও স্বপ্নে সেই ইচ্ছে আজকে পূরণ হচ্ছে। সারাজীবন যদি শুধু এই স্বপ্ন ই দেখতে পারতাম। হঠাৎ শরীরে পানি পড়তে ই অঞ্জলি চোখ খুলে দেখে অভ্র দাড়িয়ে আছে। অঞ্জলি শাওয়ারের নিচে।তারমানে অভ্র কোলে থাকা অবস্থায় ই পাখির মতো উড়ার স্বপ্ন দেখেছে।
অভ্রকে এভাবে দাড়িয়ে থাকতে দেখে অঞ্জলি ভেজা শরীরে উঠে অভ্রকে জড়িয়ে ধরে।
অঞ্জলির এমন কাজে বেশ অবাক হয় অভ্র। মুহূর্তের মধ্যে ই অঞ্জলি অভ্রকে ছেড়ে আবার শাওয়ারের নিচে চলে আসে।
–এই মেয়ে আপনার সাহস তো কম না
–এই থামেন থামেন, আমাকে কোলে করে এনে ভিজিয়ে দিলেন কেনো। আমি একা ভিজবো নাকি তাই আপনাকে নিয়ে ই ভিজলাম।
— দশটার উপরে বাজে আপনি এখনো ঘুমাচ্ছে তো আর কী করার ছিলো,রাবিস
–বের হন আপনি।
–আমার ওয়াশরুম আমাকে বের হতে বলছে
–এই যে শুনেন আমি হেটে আপনার ওয়াশরুমে আসি নাই, সম্মান দিয়ে কোলে করে নিয়ে এসেছি।
দাঁতে দাঁত চেপে বললো
–তো..
এই অভ্র নিচে আস দাদিমা ডাকছে।
অনি আপুর ডাকে অভ্র ওয়াশরুম থেকে চলে যায়।
আমি দরজা লক করে। গোসল শেষ করে। ডাকতে লাগলাম।
–এই যে শুনছেন।
–নাহ আমার কান নাই।
–আমি জানি আপনি বয়রা।
–আপনি বয়রা। বেয়াদব মেয়ে।
–হে আদব ছেলে। ভেজা কাপড়ে আর কতক্ষণ দাড় করিয়ে রাখবেন ঠান্ডা লাগবে তো।
–আপনার কাপড় কী আমি পরে বসে আছি নাকি।
–বিয়ে করেছেন কিন্তু দায়িত্ব পালন করতে পারেননি। আমার কোনো কাপড় তো আনিনি। দাদিমা পড়নের শাড়িটা দিয়েছিলো সাথে বাকি প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো ও।
উনি আর কোনো কথা না বলে চলে গেলেন। আমার কান্না পাচ্ছে আজকে মনে হয় ভিজা কাপরে ই দাড়িয়ে থাকতে হবে। হে আল্লাহ নিয়ে যাও আমাকে।
কিছুক্ষনের মধ্যে ই দাদিমা রুমে আসে। দাদিমেকে দেখে আমার কান্না থেমে যায়।
–এই তুই কী বোকা এভাবে কান্না করসিছ কেন। কান্না করিস না আমি শাড়ি নিয়ে এসেছি পড়িয়ে দিবো।
মহিলার বয়স হলে কী হবো বেশ শক্তিশালী আলহামদুলিল্লাহ। কী সুন্দর করে শাড়ি পড়িয়ে দেয়। নিজের কাজগুলো ও নিজে ই করতে পারে কারো করে দিতে হয় না। উনি শাড়ি পড়িয়ে আমাকে নিয়ে নিচে নামলেন।
দিব্বার মুখের দিকে তাকতে ই ভয় পেয়ে গেলাম। বেশ রেগে আছে। আমাকে তো না পারে চোখ দিয়ে ই গিলে খেয়ে ফেলবে।। দিব্বার এমন রুপ দেখে আমি অন্য দিকে ফিরে যাই।।।
সবাই সবার কাজে ব্যস্ত তাই আমি রুমে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালাম। কিন্তু কিছু দূর যেতে ই মনে পড়লো আমি কোন রুমে যাবো। অভ্রের রুমে নাকি আমাকে যে রুমে ঘুমাতে দিয়েছে ঐ রুমে…
হঠাৎ কেউ আমাকে তার দিকে ঘুরি সজোরে থাপ্পড় মারলো। তাকিয়ে দেখলাম দিব্বা
–আমার সুখ দেখে তোর সহ্য হয়নি অঞ্জলি। একেবারে আমার ই বড় জ্যা হয়ে চলে আসলি।আমি হলে না এই মুখ কাউকে দেখাতাম না। তোর মতো হিংসুটে মেয়ে আমি আর জীবনে ও দেখিনি। নিজের বোনের সুখ সহ্য হয় না।
আমার চোখ দুটো কোনো বাধা ই মানছে না। অশ্রু মুছে সামনের দিকে তাকাতে ই দেখি অভ্র দাড়িয়ে আছে। আমাকে আপু ভুল বুঝলো উনি খুশি তো এবার।
কিন্তু না আমার ভাবনাকে ভুল প্রমাণ করে দিয়ে উনি…..
চলবে।
[ভুলগুলো ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন ]