#তোমাতেই_বিমোহিত
#পর্বঃ১৫
#লেখিকা আরোহি জান্নাত( ছদ্মনাম)
“চিন্তা করিস না। মাঝে মাঝে আয়ান আমার কাছে থাকলে সেটা তোর অবহেলা না। তোকে আমি চিনি আরোহি।”
খালামনির এই লথায় মুচকি হাসল আরোহি। এই মানুষ টা আর নিজের মায়ের মধ্যে কোনো পার্থক্য পায় না আরোহি।
“ঠিক আছে খালামনি নিয়ে যাও।তবে যদি ও কাঁদে তাহলে আমায় ডাকবে সেটা যত রাতেই হোক না কেনো!! ”
আদুরে কন্ঠে বলে উঠল আরোহি।
“আচ্ছা ঠিক আছে। তুই এখন রেস্ট নে। ভুলে ও যেনো ঘর থেকে বের হোস না।আমি লতাকে বলছি তোর খাবার টা এ ঘরে দিয়ে যেতে।”
কথাগুলো বলেই আরশি বেগম ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেন।আজ ও তার আদরের নাতি তার কাছে থাকবে এটাতেই অনেক খুশি তিনি।
আরোহি খাটের সাথে হেলান দিয়ে বসে আছে। ইহান ফ্রেশ হয়ে বের হয়ে দেখে আরোহি চুপচাপ খাটে বসে আছে। ইহান কোনো কথা না বলে নিজের ফোন নিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে যাচ্ছিল।এটা যেন ইহানের রাগের বহিপ্রকাশ। কিন্তু তার আগেই লতা ফুফু খাবার নিয়ে ঘরে ঢোকে।আরোহিকে খাবার টা দিয়ে চলে যান তিনি। ইহান ঘর থেকে বের হতে গিয়ে ও হয় না। নিজের ফোনটা চার্জে বসাতে শুরু করে।মূলত দেখতে চায় আরোহি কাটা হাতে কি করে খায়! ইহান জানে আরোহি তাকে কখনো খাইয়িয়ে দিতে বলবে না।তাই নিজের মা কে ডাকার জন্য বাইরে যেতে নেয়। যাতে আরশি বেগম আরোহিকে খাইয়িয়ে দিতে পারে।
কিন্তু তার আগেই আরোহি আজাহারি শুরু করে দেয়।ঠোঁট উল্টে নাক টেনে টেনে কাঁদতে লাগল।ইহান হতভম্ব আরোহির এমন কাজে। আরোহি কেঁদে কেঁদে বলতে লাগল,
” ও মা তুমি কোথায়? আমার খুব খিদে পেয়েছে। আমার হাত টা ও কেটে গেছে । আমি এখন কি করে খাব? এ্যা এ্যা এ্যা।”
ইহান নিশব্দে হাসল।হঠাৎ করে স্মৃতি পটে ভেসে উঠল কিছু স্মৃতি।
একদিন আরোহি ইহানের কাছে একটা গিফ্ট চেয়েছিল।কিন্তু ইহান দেয় নি।বলেছিল কিছু দিন পরে দেবে। কিন্তু আরোহি শোনেনি। সেদিন ইহানদের বাড়িতে এসে এই ভাবে কেঁদেছিল। সারাদিন খায় ও নি।অবশেষে ইহান হার মেনে নিয়ে আরোহিকে সেটা কিনে দিয়েছিল।
ইহান অন্য জগতে ডুবে আছে সেটা খেয়াল করল আরোহি। জোরে জোরে কেঁদে উঠলো আবার।আরোহি হঠাৎ কান্নার জোর বাড়িয়ে দেওয়ায় ইহান ভাবনা থেকে বেরিয়ে এলো। ধীর পায়ে আরোহির পাশে এসে বসল।বলে উঠলো,
” আমি যদি কাউকে খাইয়িয়ে দেয় তাহলে কি খুব অসুবিধা হবে! না মানে এখন ও বাড়িতে গিয়ে খালামনিকে ডেকে আনতে অনেক টা সময় লেগে যাবে তো। ততক্ষণে যদি খিদের চোটে কারো ভালো মন্দ কিছু হয়ে যায় তখন!!”
ইহানের রসিকতা বুঝল আরোহি।মনে মনে এক অদ্ভুত শান্তি বয়ে গেল। কতদিন পর লোকটা তার সাথে এইভাবে কথা বলল।একটা রাগ, একটা অভিমান,একটা ভুল বুঝাবুঝি দুজন মানুষের মধ্যে কতটা দূরত্ব তৈরি করে দিয়েছে ভাবতেই একটু খারাপ লাগল আরোহি।
আরোহিকে নিশ্চুপ দেখে ইহান একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল। উঠে যেতে চাইল কিন্তু তার আগেই আরোহি ছোট হা করল খাওয়ার জন্য। হেসে ফেলল ইহান।খাওয়িয়ে দিতে লাগল আরোহিকে।আর মনে মনে বলে উঠল,
“ড্রামাকুইন একটা।”
আরোহি চুপচাপ খাচ্ছে। তখনই রাতের খাবারের জন্য ইহানকে ডাকতে এলো লতা বেগম।আরোহির হাত কেটে যাওয়ায় আজ দেরিতে বাড়িতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।তবে ইহানদের ঘরে ঢুকতে গিয়ে আরোহীকে খাওয়িয়ে দিতে দেখে আর ঢুকলেন না তিনি। মুচকি হেসে চলে গেলেন। আরোহিকে খাওয়িয়ে দিয়ে নিজে খেতে গেল ইহান।
কিন্তু আরোহি তখন অন্য চিন্তায় মশগুল।আরোহি ভাবছে রাতে ইহান কে কি করে জ্বালাবে।আরোহি মনে মনে ভাবল,
” আজ রাতে তোমার কপালে দুঃখ আছে পতিদেবতা!”
মনে মনে একটা প্লান করে নিলো আরোহি। আর সেটার কথা ভেবেই একটা পৈশাচিক হাসি দিল সে।
কিছুক্ষণ পর ঘরে এলো ইহান। আয়ান যে আরশি বেগম এর কাছে থাকবে সেটা খেতে গিয়ে শুনেছে সে। ঘরে ঢুকে আস্তে করে দরজা লক করে দিল ইহান।দরজা বন্ধের শব্দে কেঁপে উঠল আরোহি। এই প্রথম আরোহি আর ইহান একা একা আছে। অথ্যাৎ শুধু ওরা দুজন।কেমন অস্বস্তি হচ্ছে আরোহির। এর আগে ও একদিন ওরা ছিল। তবে আরোহির জ্বর এর মধ্যে থাকায় সে অতটা টের পায় নি।
আরোহি চুপচাপ ব্লান্কেট মুড়ি দিয়ে শুয়ে আছে।এমন ভাব করছে যেন ঘুমিয়ে গেছে।তবে ইহান জানে আরোহি ঘুমায় নি।ইহান কিছু না বলে লাইট অফ করে সোফায় শুয়ে পড়ল। যে ঝড় আরোহির মধ্যে চলছে সেটা ইহান ও টের পাচ্ছে।
পুরো ঘর জুড়ে নিস্তব্ধতা। কেউই ঘুমায় নি।তবে দুজনেই ঘুমের ভান করে পড়ে আছে। দুজনই দুজনকে কিছু কথা বলতে চাইছে তবে কোথাও একটা জড়তা।একটু পর ইহান উঠে বেলকনিতে চলে গেল। আরোহি এখনও চুপচাপ আছে। তবে ইাহনকে বেলকনিতে যেতে দেখে অবাক হলো। একটু পর সিগারেটের গন্ধ নাকে আসল আরোহির। ইহান এত রাতে বেলকনিতে কি করছে বুঝতে বাকি রইল না।রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে বেলকনিতে গেল আরোহি। হুট করে ইহানের হাত থেকে সিগারেট টা কেড়ে নিয়ে ছুড়ে ফেলে দিল।আরোহির এমন হঠাৎ আক্রমনে অবাক হলো ইহান।তবে বেলকনির ডিম লাইটের হালকা আলোয় আরোহির রাগি চেহারার দিকে দেখে কিছু বলল না।
ইহান আরোহিকে দেখে ও কিছু বলল না।চুপ করে আকাশের দিকে তাকিয়ে রইল।আরোহির রাগটা যেন আরো বেড়ে গেলো এতে।দাতে দাঁত চেপে বলে উঠল,
” এত ভালো অভ্যাসটা কি করে হলো জানতে পারি?”
ইহান তাচ্ছিল্য হাসল। বলল,
” জীবনে যখন ভালো কিছু থাকে না তখন সিগারেটের মতো ভালো জিনিস কে আকড়ে ধরতে হয়।”
আরোহি ও তাচ্ছিল্য হাসল। বলল,
“ভালো জিনিস আটকে রাখতে পারলেন না অথচ খারাপ টাকে খুব সহজে আপন করে নিলেন!”
“ধরে নাও আমি একটা খারাপ মানুষ তাই!! ”
“কেউ নিজে থেকে খারাপ হলে সেখানে অন্য কেউ কি করতে পারে!”
ইহান কিছু বলল না।দুজনেই নিরব।হঠাৎ ইহান বলে উঠল,
“আচ্ছা যদি কখনো জানতে পারো যা জানো সব ভুল তাহলে কি করবে তুমি। ”
ইহানের কথা বুঝতে অসুবিধা হলো না আরোহির। ইহান যে অতীত টাকে বোঝাতে চাইছে সেটা ও বুঝল।বলে উঠলো,
“সত্যি টা কি জানিয়েছেন? না জানানোর প্রয়োজন মনে করেছেন!”
ফিচলে হাসল ইহান। বলল,
“সত্যি কি আমি জানাতে চায় নি।না কি তুমি জানতে চাও নি!! কতবার ফিরিয়ে দিয়েছো ভুলে গেছো!!”
আরোহি কিছু বলল না।সত্যি তো ইহান বারবার আরোহির সাথে কথা বলতে চেয়েছিল।কিন্তু আরোহি বলে নি।কেন বলবে? যে ছেলে রাগের মাথায় বিয়ের মতো এত কঠিন একটা সিদ্ধান্ত নিতে পারে তাহলে কেন আরোহি কথা বলবে!
ইহান আরোহির দিকে ফিরল।বলল,
“অনেক রাত হয়ে গেল। গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ো। ”
“আমি সব সত্যি জানতে চায়!! ”
দৃঢ় কন্ঠে বলে উঠল আরোহি।
হাসল ইহান। বলল,
“এখন আর সত্যি টা জেনে কোনো লাভ নেই। বরং যেটা জানো সেটা নিয়েই খুশি থাকো।আমি চাই না আমার জন্য তুমি কোনোভাবে সহমর্মিতা দেখাও!”
এতক্ষণ চুপ করে ঠান্ডা মাথায় ইহানের সাথে কথা বলছিল আরোহি।তবে ইহানের শেষ কথা শুনে ফুসে উঠলো। ছুটে গিয়ে ইহানের টি শার্টের কলার ধরে বলে উঠল,
চলবে,
#তোমাতেই_বিমোহিত
#পর্বঃ১৬
#লেখিকা আরোহি জান্নাত( ছদ্মনাম)
এতক্ষণ চুপ করে ঠান্ডা মাথায় ইহানের সাথে কথা বলছিল আরোহি। তবে ইহানের শেষ কথা শুনে ফুসে উঠলো আরোহি। ছুটে গিয়ে ইহানের টি শার্ট এর কলার ধরে বলে উঠল,
“আই হেট ইউ ইহান।আই হেট ইউ। আমি আপনাকে কক্ষনো ক্ষমা করব না।”
বলেই আর দাড়ালো না আরোহি। ঘরে গিয়ে বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়ল আরোহি।আর নিরবে চোখের জল ফেলতে লাগল। ইহান ওই ভাবে বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আছে। ইহান জানে আরোহি তাকে ঘৃণা করে তবে এই প্রথম আরোহি নিজের মুখে সেটা বলল।মনে মনে ভাবল,
“আমি চেয়ে ও তোমাকে সত্যি টা বলতে পারি না আরোহি। শুধু ভয় করে যদি তুমি আবার ও আমাকে ভুল বোঝ। আমি নিজের করা ভুলের জন্য অনেক শাস্তি পেয়েছি।এখন ও পেয়ে যাচ্ছি।কিন্তু কিছুই করতে পারছি না। কিন্তু আর না এভাবে না তুমি সুখি আছো না আমি।”
কথাগুলো ভেবেই ঘরে চলে গেল ইহান। আরোহি চুপচাপ শুয়ে আছে। ইহান ধীর পায়ে আরোহির কাছে গিয়ে বসল।এক অজানা ভয়ে বুকটা কাপছে। কিন্তু আজ সে সত্যি টা বলবেই।
“আরোহি?”
আদুরে কন্ঠে ডেকে উঠলো ইহান।আরোহি শুনলো তবে জবাব দিল না।চুপচাপ শুয়ে থাকল।ইহান জানে আরোহি জেগে আছে। তাই বলল,
“আমি ভেবেছিলাম তোমাকে অতীত টা জানাবো।কিন্তু ভয় করছিল যদি আমাকে বিশ্বাস না করো।সত্যি বলছি,আমাদের বিয়ের পর অনেক বার চেষ্টা করেছি কিন্তু পারি নি।একটা জড়তা কাজ করছিল। তার ওপর তেমার ইগনোর। তবে আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম তোমাকে সত্যি টা জানাবো পরে যা হওয়ার হবে।কারন এভাবে আমারা দুজনেই কষ্ট পাচ্ছি। তুমি স্বীকার করো আর না করো আমি জানি আজ ও তুমি আমাকে ভালোবাসো।”
এতক্ষণ চুপ থেকে ইহানের কথা শুনছিল আরোহি। তবে ভালোবাসার কথা টা শুনে ধুপ করে উঠে বসল। আর চেঁচিয়ে বললো,
“আমি আপনাকে ভালোবাসি না।একটু ও ভালো বাসি না।”
আরোহির কন্ঠে অভিমান স্পষ্ট। ইহান মৃদু হাসল।বলে উঠলো,
“যদি ভালো না ই বাসো তাহলে কেন আছো আমার সাথে? ”
আরোহি কাটকাট গলায় জবাব দিল,
“আয়ানের জন্য।”
আবার ও হাসল ইহান। আরোহি আড় চোখে দেখল সে হাসি।তখন ইহান আরোহির দিকে আর একটু এগিয়ে গিয়ে বলল,
“আয়ান আমার ছেলে না এটা জানার পর আর এই এক্সকিউজ টা খাটে না।”
বিস্ফোরিত চোখে তাকালো আরোহি। আরোহির এমন চাওনি দেখে ইহান হাসিটা প্রসারিত করে বলল,
” রাফসান আমাকে কিছু বলে নি সে এক কথার মানুষ। কিন্তু সব ক্ষেত্রে আমার লাক খারাপ হলে ও এই ক্ষেত্রে খুবই ফেবার করেছে । তোমরা যে রেস্টুরেন্টে কথা বলছিলে সেই রেস্টুরেন্টে আমার ক্লাইন্টদের সাথে মিটিং ছিল। সে দিন আমি তোমার আর রাফসানের সব কথা শুনেছিলাম। আর অপেক্ষা করছিলাম কবে তুমি আমার কাছে জবাবদিহি চাইবে।”
আমি ভেবেছিলাম ঐ দিনই হয়তো তুমি সব জানতে চাইবে তবে সেদিনই তুমি অসুস্থ হয়ে যাও।”
আরোহি চুপ করে ইহানের কথা শুনছে।আর নিরবে চোখের জল ফেলছে। একটু থেমে ইহান আবার ও বলে উঠল,
” আমি মানছি সেদিন রাগের বসে এত বড় একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে জীবনের সব থেকে বড় ভুল টা করেছিলাম আমি।কিন্তু বিশ্বাস করো যদি সেই সন্ধ্যায় তুমি ঐ ভাবে আমাকে না বলতে, যদি আমাকে বিয়ের কথা না বলতে তাহলে আমি এমন সিদ্ধান্ত কখনোই নিতাম না।তুমি তো জানো সেই ছোট থেকে আমি তোমার প্রতি কথা রেখেছি। আমি সত্যি জানি না আমি কেন এত বড় একটা ভুল করেছিলাম। তোমার বিয়ের কথা টা আমি মানতে পারছিলাম না। আই এম সরি আরোহি। এতদিন যে শুধু তুমি কষ্ট পেয়েছো এমন টা তো না।আমি ও কষ্ট পেয়েছি।প্রতিটা মূহুর্ত কষ্ট পেয়েছি। আমাকে আর একটা সুযোগ দাও না আরোহি। আমি কথা দিচ্ছি এমন ভুল আর কক্ষনো করবো না। প্লিজ!”
আরোহি ইহানের এমন করুন কন্ঠ শুনে নিজেকে সামলাতে পারল না।ইহান কে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কাঁদতে লাগল। এত দিন যত কষ্ট ছিল তা যেন এই চোখের পানিতে বের হয়ে আসতে চাইলো ইহান বাঁধা দিল না।বরং আগলে নিলো আরোহি কে।এতদিন পর তার প্রয়সিকে নিজের বক্ষপিঞ্জরে পেয়েছে সে।চোখ বুজে অনুভব করতে লাগল এই মুহূর্ত টা।কখন যে নিজের চোখের কার্নিশ বেয়ে জল কণা গড়াতে শুরু করেছে তা খেয়াল করে নি ইহান।কাঁদতে কাঁদতে ওভাবেই ঘুমিয়ে গেল আরোহি।অনেক সময় কেটে যাওয়ার পর ইহান বুঝল তার প্রয়সি ঘুমিয়ে গেছে। ইহান কিছু না বলে তার প্রয়সিকে নিজের সাথে জড়িয়ে রেখেই ঘুমের দেশে পাড়ি জমালো।আজ কত দিন পর শান্তিতে ঘুমাবো দুজন।
সকালে রোদের মিষ্টি আলো চোখে পড়তেই ঘুম ভেঙে গেল আরোহির। চোখ খুলে সর্বপ্রথম ইহানের ঘুমন্ত মুখ টা সামনে এলো আরোহির। কি নিষ্পাপ দেখাচ্ছে। এই সকাল টা আরোহির জীবনে শ্রেষ্ঠ সকাল গুলোর মধ্যে একটা। আরোহি আস্তে করে ইহনকে ছাড়িয়ে উঠে গেল।
বেশ বেলা করে ঘুম ভাঙল ইহানের। তাই একেবারে রেডি হয়ে বাইরে গেল সে।আরোহি টেবিলে নাস্তার আয়োজন করছে।আরোহিকে দেখে মিষ্টি একটা হাসি দিল ইহান। কিন্তু আরোহি সেটা দেখে ও দেখল না।আগের মতো তার ইগনোর মিশন জারি রাখল।ইহান অবাক হলো। ভাবল কালকে রাতে তো সব ঠিক হয়ে গেল তাহলে আরোহি আবার এমন করছে কেনো। এসব ভাবতে ভাবতে ব্রকফাস্ট সেরে নিলো ইহান।ইহান অনেক বার আরোহিকে ইশারা করেছে কিন্তু আরোহি নিজের মতো আছে। ইহানের রাগ হলো এটাতে। ইচ্ছে করছে আরোহিকে টেনে ঘরে নিয়ে যায়। তবে বড়রা থাকায় সেটা সম্ভব হচ্ছে না। খাওয়া শেষে ঘরে চলে গেল ইহান। আর অপেক্ষা করতে থাকল আরোহি আসে কি না। কিন্তু না আরোহির আসার নাম গন্ধ নেই।
ইহান আর ধৈর্য ধরে রাখতে পারল না। কারো পরোয়া না করে জোরে জোরে আরোহিকে ডাকতে লাগল।
আরোহি তার খালমনির ঘরে বসে আয়ানকে খাওয়াচ্ছিলো। কিন্তু ইহানের ডাক শুনে অবাক হলো। ইহান কখনো এইভাবে ডাকে না আরোহিকে। আরশি বেগম ইহানের গলা পেয়ে আরোহিকে যেতে বলল। তাই বাধ্য হয়ে আরোহি ইহানের কাছে গেল।আরোহি ঘরে ঢোকার সাথে সাথে ইহান দরজা লাগিয়ে দেওয়ায় একটু চমকায় আরোহি।তবে ইহান কে কিছু জিজ্ঞেস করে না।আরোহিকে চুপ থাকতে দেখে এবার সত্যি সত্যি রেগে যায় ইহান। আরোহিকে নিজের কাছে টেনে নিয়ে বলে,
“সকাল থেকে এমন করছো কেন? সেই আগের মতো! ”
আরোহি জবাব দিল না দেখে ইহান ওকে আর একটু নিজের কাছে নিয়ে আসে। এখন ওদের মধ্যে দূরত্ব নেই বললেই চলে।ইহান আবার ও জিজ্ঞেস করল,
“কি হলো বলো? কাল রাতে তো সব কিছু ঠিক হয়ে গেছে তাহলে এমন কেন করছো?”
আরোহি ছোট ছোট চোখে তাকালো ইহানের দিকে। তার পর অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে বলল,
“আপনাকে কে বলল সব ঠিক হয়ে গেছে। আমি কি বলেছি আমি আপনাকে ক্ষমা করে দিয়েছি। ”
আরোহির এমন কথায় যেন ঝটকা খেল ইহান।কি বলছে এই মেয়ে।এখনো ক্ষমা করে নি।ইহান বলে উঠল,
“তুমি সত্যি এখনো আমায় ক্ষমা করতে পারো নি। আচ্ছা ঠিক আছে বলো কি করলে তুমি আমায় ক্ষমা করবে!!আমি সেটাই করব।”
চলবে,