তোমাকে_চাই (Season 2)Part:-21+22

0
2188

তোমাকে_চাই (Season 2)Part:-21+22
#আরবী_আরভী
বাস্তব জীবনকাহিনী
#Part_21

কথাটা আর শেষ করতে পারিনি উনি আবার আমাকে অনেক জোরে কষে আরেকটা থাপ্পড় মেরে বলে উঠলেন,,,,
-বারন করেছিলাম না লোকটার সামনে যেতে তাও কি দেখাতে গিয়েছিস,,,,নিজের রুপ নাকি যৌবন,,,, বল ,,(ধমকের সুরে)

আমি কোনো জবাব না দিয়ে থাপ্পড় দেয়া গালটায় হাত দিয়ে উনার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে অনাবরত চোখের জল ফেলে ভাবছি এটাই কি রেহান।।বিশ্বাসই হচ্ছে না।। উনি কিভাবে ভাবতে পারেন এগুলো।।

আমার অস্বাভাবিক অবস্থা দেখে রেহান রেগে গিজগিজ করতে করতে পিছ ফিরে কি যেন একটা ভেবে অনুতপ্ত হয়ে আস্তে আস্তে কাছে এসে করুন দৃষ্টিতে তাকিয়ে আমার গাল থেকে হাতটা সরিয়ে উনার দু হাত দিয়ে আমার মুখটা কিছুটা উপরে তুলে উনার দেয়া থাপ্পড়ে কেটে যাওয়া ঠোঁট টা থেকে আলতো করে লেগে থাকা রক্তটা সুসে খেয়ে আমাকে ভীষণ জোরে জড়িয়ে ধরে বলতে লাগলেন,,,,,,

-I am sorry জান,, ওই লোকটার সাথে তোকে এভাবে কথা বলতে শুনে মাথাটা একদম খারাপ হয়ে গিয়েছিল,,,, তাই একটু জোরেই থাপ্পড় গুলো দিয়ে ফেলেছি।। প্লিজ রাগ করিস না,,,,,,

মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে আছি।।। এত্ত জোরে জোরে থাপ্পড় মেরে এখন ক্ষমা চাইতে এসেছেন।।তোকে যদি দিতে পারতাম তাহলে বুঝতি কেমন লাগে।। খরুচ ছাগল শয়তান ছেড়ে দে আমাকে।।আমার কোন প্রতিক্রিয়া না দেখে এবার উনি আমাকে ছেড়ে দিয়ে বলতে থাকেন,,,,,,
-অনেক ব্যাথা পেয়েছিস না,,,,,i am so sorry নিসা,,, ঠিক আছে আমাকেও মেরে দে। তাও প্লিজ রাগ করে থাকিস না,,,,

কথাটা উনার মুখে থাকা অবস্থায় আমি এগিয়ে গিয়ে শরীরে যতটুকু শক্তি আছে সবটুকু দিয়ে উনার গালে ঠাঁস ঠাঁস করে ৩-৪ টি থাপ্পড় বসিয়ে দিয়ে বুকে কয়েকটা ঘুষি আর সাথে চুলগুলোও একটু টেনে দিলাম।।নে ব্যাটা এবার বুঝ কত ধানে কত চাল।।মানুষকে মারলে তার কত ব্যাথা অনুভূতি হয় তা হয়তো তুই কখনো বুঝিসনি এভার বুঝ।।।উউফফফ কিযে শান্তি পাচ্ছি না বলে বুঝাতে পারবো না।।

উনি হাঁ করে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন।। ফর্সা গাল দুটুতে হাতের পাঁচ আঙুলের ছাপ স্পষ্ট।। কেউ উনাকে জন্মের পর একটা ফুলের আঘাতও দেয়নি আর আজ আমি উনাকে এভাবে মারলাম।। বেস আনন্দ লাগছে আবার ভয়ও করছে।। আজ মনে হয় আমার আর রক্ষে নেই।।কিন্তু ডেভিলটা তো কিছুই বলছে না।। স্ট্রেঞ্জ।।।আল্লাহ আমাকে বাঁচান!!!! ক্ষমা চেয়ে নেই।।কথাগুলো ভাবছি এমন সময় উনি শান্ত হয়ে আমার কাছে এসে মৃদু কন্ঠে বলতে শুরু করলেন,,,,,
-হয়েছে তোর,,, শান্তি লাগছে আমার চুলের স্টাইলের বারোটা বাজিয়ে,,,
-হুমমম,,,,,(মনের অজানতে বেরিয়ে গেছে)
-কিইইইইইইই,,,,,,(একটু রেগে)
-না মানে আপনেই তো বললেন তাই না,,
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি মাসে জিতে নিন নগদ টাকা এবং বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

গল্পপোকার এবারের আয়োজন
ধারাবাহিক গল্প প্রতিযোগিতা

◆লেখক ৬ জন পাবে ৫০০ টাকা করে মোট ৩০০০ টাকা
◆পাঠক ২ জন পাবে ৫০০ টাকা করে ১০০০ টাকা।

আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/?ref=share


উনি কিছুটা নিরবতা পালন করে আমাকে উনার বুকের সাথে জড়িয়ে বলতে লাগলেন,,,
-এবার ক্ষমা করেছিস,,,,,,
বেচারাকে শারীরিকভাবে কষ্ট দিয়ে ফেলেছি মানুসিকভাবে আর দিতে চাই না।।তাই আমিও উনাকে আকড়ে ধরে আর বাদা না রেখে বলেই ফেললাম,,,,,
-হুমমম,,,,
-ভালোবাসিসতো আমাকে??,,
-হুমম,,,
-কখনও ছেড়ে যাবি না,,,,
-হুমমম
-জীবনভর একসাথে থাকবি,,,
-হুমমম,,,
-আমাকে ছাড়া কখনও অন্য ছেলের নজরে যাবি না,,,
-হুমম,,,,
-আমার এক ডজন বাচ্চার মা হবি,,,
-হুমমম,,,,,,,,,,,,,,,,,আল্লাহ না!!!
-আল্লাহ হ্যাঁ,,,, (মুচকি হেসে)

বাড়িতে প্রচুর মেহমান।। মিঠি আপুদের ফ্ল্যাট আমাদের ফ্ল্যাট এবং রেহানদের ফ্ল্যাট মেহমানে একদম হাউজফুল হয়ে আছে।। অনেক দিন পর যেহেতু সবার দেখা হয়েছে তাই বুদ্ধি করে সব কাজিনরা ঠিক করলো যে আজকে রাতে সব কাজিনরা রেহানদের বিশাল বড় ড্রইং রুমের মেঝেতে থাকবে।। কথাটা শুনে আমি আনন্দে লাফাতে থাকলে রেহান আমাকে থামিয়ে দিয়ে বলে উঠলেন,,,,
-তুই তোদের ফ্ল্যাটে থাকবি,,,,
-কেন সবাই এখানে থেকে মজা করবে আর আমি একা আমাদের ফ্ল্যাটে কি করবো,,,,
-এখানে মজা করবে না যে যার মতো ঘুমাবে,,,
-আর আপনে????,,,,(কৌতুহল হয়ে)
-আমি এখানে থাকব দেখছিস না আমার রুমে মফিয ভাইয়ার ফ্যামিলি,,,
-রেহান প্লিজ আমি থাকি না এখানে,,,
-একগাদা ছেলের সাথে তোকে এখানে আমি থাকতে দিবো ,,,,, (রাগি কন্ঠে)
-তো কি হয়েছে আমি তিশা আপুর সাথে ঘুমাবো,,,, আর দেখেন সব আপুরা তো এখানে আছে,,,,,(মন মরা হয়ে)
-ওরা এখানে থাকবে নাকি জাহান্নামে যাবে এটা আমার দেখার বিষয় না,,,কিন্তু তুই এখানে থাকবি না,,
-ওও আমি থাকলে তো আর জিনিয়া আপুর সাথে গল্প করতে পারবেন না রং তামাশা করতে পারবেন না তাই না,,,,
-কসম নিসা আমি কোন মেয়ের সাথে কথা বলবো না আমার পাশে থাকবে একটা কোলবালিশ আর তার পাশে আমার বন্ধু নাদিম,,,, ঠিক আছে।। এখন প্লিজ গিয়ে শুয়ে পড় ওকে বায়,,,
-কিন্তু,,,,,
-বলেছি না যেতে,,,,,,(রেগে)

আর যাইহোক এই ডেভিলটা যে আমাকে এখানে থাকতে দিবে না তা আমি নিশ্চিত।।। মন খারাপ করে রেহান কে হাজারটা গালি দিয়ে সেখান থেকে বেরিয়ে আম্মুর কাছে এসে উনাদের বোরিং আলাপ শুনতে লাগলাম।।ঘর বর্তি মানুষ পা ফেলার জায়গা নেই আবার ঘুমাবো থাক দূরে।।

একঘন্টা পেরিয়ে গেছে আম্মু তো মেহমানদের সাথে কথা বলেই চলেছেন।। আমার বয়সের কেউ নেই এখানে।।অনেক বিরক্ত লাগছে।। তাই আর না বিনিয়ে আম্মুর কাছে গিয়ে ঘুমানোর কথা বললে আম্মু এক কথায় জানিয়ে দেয় এখানে কোন জায়গা নেই।। অনেক দিন পর সব আত্মীয় স্বজনরা এসেছে।। তাদের ভালো করে খাতিরদারি না করলে তারা কি না ভাববেন।।।আমাকে এখন এখানে থাকতে হলে সাড়া রাত উনাদের বকবকানি শুনতে হবে তা না হলে রেহানদের ফ্ল্যাটে চলে যেতে পারি।।এখানে থাকা অসম্ভব।।

শেষমেশ আর উপায় না পেয়ে আমি অনিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও একটা বালিশ আর কাঁথা নিয়ে রেহানদের ফ্ল্যাটে গিয়ে ড্রইং রুমে হাজির হলে দেখি সবাই ঘুমিয়ে পানি হয়ে আছে।। বাহিরের লাইটের সামান্য আলো এসে পরে আছে মেঝেতে।। ভয় করছে রেহান যদি দেখে ফেলে।।কিন্তু কোথায় কে আছে কিছুই দেখা যাচ্ছে না।। তাই আর দেরি না করে আসতে আসতে আলতো পায়ে হেটে সবার শেষে কর্ণারে এসে দেখি রিয়াদ শুয়ে আছে।। আমিও তার থেকে নিজের দূরত্ব বজায় রেখে গা এলিয়ে যেইনা কাঁথাটা মুখের উপর দিব অম্নি রেহান এসে এক জাটকায় কাঁথাটা সরিয়ে আমার দিকে রাগান্বিত দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন।। আমি ভয়ে ভয়ে উঠে বসে উনার দিকে তাকিয়ে থাকলে।। উনি এক ঝাক রাগ নিয়ে নীচু সুরে বলে উঠলেন,,,,
-এখানে কি তোর শুতেই হবে,,,,
আমি ভেবাচেকা খেয়ে মনে মনে ভাবতে লাগলাম নিশ্চয় আমাকে মারবেন তাই আগে থেকেই গাল দুটু ধরে ভয়ে ভয়ে উত্তর দিলাম,,,
-আমাদের ফ্ল্যাটে জায়গা নেই,,,,,,আর দেখেন আমি ছেলেটার কাছ থেকে কতটা দূরত্ব নিয়ে আছি,,,,

আমার অবস্থা ও ভীতুময় জবাবে রেহান ডেভিল মার্কা একটা হাসি দিয়ে বলে উঠলেন,,,
-আপনে অনেকটা দূরত্ব বজায় রাখলেও আমি ছেলেটার পাশে আপনাকে শুতে দেবো না,,,,
-আর তো খালি জায়গা নেই রেহান,, তাহলে,,,,,,,
-তাহলে কিছু না আমার বউ আমার দায়িত্ব,,,,

কথাটা বলে উনি কাছে এসে আমাকে কোলে করে উনার জায়গায় নিয়ে উনার উপরে শুইয়ে দিয়ে নিজে ঘুমিয়ে পরলেন।।উনার বুকের স্পন্দন আমি স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছি।। কেমন জানি লাগছে সবাই মেঝেতে আর আমি রেহানের বুকে।।উনার সিক্স প্যাকের উপরে শুয়ে আছি।।লঁজ্জাও করছে বেস।। হঠাৎ মনে একটা ভয়ে কাজ করতে লাগে।। ছেলেদের কোন বিশ্বাস নেই।। তাই মনে সন্দেহ না রেখে উনাকে জিজ্ঞাসা করেই ফেললাম,,,,
-রেহান,,,এই রেহান,,,,
-হ্যাঁ,,,,বল
-আমি ঘুমিয়ে পরলে আপনে কি আমার সাথে কিছু করবেন,,,,,
-ওয়াট ননসেন্স নিসা,,, মাথা খারাপ হয়ে গেছে নাকি তোর,,,,,
-সাবধান এগুলোর চিন্তাও যদি মাথায় এনেছেন তাহলে আমি আপনাকে ১০ টা লাথি ২০ টা থাপ্পড় ৪০ টা টিকটিকির ডিন খাওয়াবো বুঝেছেন,,,
-আচ্ছা ঠিক আছে এসব চিন্তা মাথায় আনবো না এখন ঘুমা,,,,,(আমায় জড়িয়ে ধরে)

প্রায় ২ টা বেজে গেছে বাহিরের লাইট আমাদের দুজনের উপর এসে পরছে।। সবাই গভীর ঘুমে মগ্ন।। কিন্ত আমার ঘুম আসছে না।। আমি উনার উপরে শুয়ে আছি ভাবতেও পারছি না।। এই বুকে ঘুমুতে যে কত সপ্ন দেখেছি আর আজ তা পূর্ণ হলো।। কথাগুলো ভেবে নিজে নিজে মুচকি হাসছি।।উনাকে দেখার আশায় মাথাটা উঁচু করে রেহানের দিকে তাকিয়ে আমি মুগ্ধ হয়ে গেছি।।বাহিরের লাইট টা উনার উজ্জ্বল চেহারাটা আরও উজ্জ্বল করে তুলেছে।। এত ভালো লাগছে যে নিজেকে আঁটকিয়ে রাখা অনেক কঠিন।। যত নিজেকে বুঝাচ্ছি উনার প্রতি আরও বেশি আসক্ত হয়ে পড়ছি।।

যেহেতু উনি গভীর নিদ্রায় আচ্ছন্ন তাই শেষমেশ মনকে আর মানাতে না পেরে একটু উপরের দিকে উঠে আলতো করে উনার কপালে একটা চুমু খেয়ে নিলাম।।তারপর উনার গালে, চোখে ঠোঁটে, গলায় মাতালের মতো চুমু খেতে থাকলে হঠাৎ রেহান আচমকাজনক ভাবে বলে উঠলেন,,,,,
-২ টা বাজে নিসা প্লিজ ঘুমা,,,,ভয় পাস না আমি তোকে ১০ টা লাথি ২০ টা থাপ্পড় আর টিকটিকির ডিমও কিছুই খাওয়াবো না,,, (ঘুম ঘুম চোখে)

কথায় আছে লঁজ্জা পাওয়া থেকে মরে যাওয়া অনেক ভালো।। আমারও ঠিক এমনি লাগছে।। সব ফিলিংসের মাটি চাঁপা দিয়ে ভাবতে লাগলাম আমি উনার চোখে চোখ রাখবো কি করে,,,,,,
,চলবে….
#তোমাকে_চাই
#আরবী_আরভী
বাস্তব জীবনকাহিনী
#Part_22 (Season 2)

কথায় আছে লঁজ্জা পাওয়া থেকে মরে যাওয়া অনেক ভালো।। আমারও ঠিক এমনি লাগছে।। সব সিলিংসের মাটি চাঁপা দিয়ে ভাবতে লাগলাম আমি উনার চোখে চোখ রাখবো কি করে,,,,।।
সকাল হতে আমি নিজেকে ফ্লোরে খুজে পেলাম।।পরে আবিষ্কার করলাম রেহান নিজের রুমে গিয়ে পড়ছেন।।

কয়েকদিন পর দুপুর বেলা আমি সাজুগুজু করে রেহানের রুমে গেলে উনি শাওয়ার করতে দেখে আমিও উনার জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম।।রুমের দেয়ালে পুরো একটা এ্যালবাম টাঙানো।। রেহানের ছোট হতে বড় পর্যন্ত সব বয়সের ছবি আছে।।উনার ছোটবেলায় ছবিগুলো আরও একটু লক্ষ্য করে দেখলাম উনার সাথে একটা ছোট মেয়ে উনার হাত ধরে দুজনে পাকা হাসি দিয়ে রয়েছেন।। খুব ভালো লাগছে।।মনের অজান্তে আমার ঠোঁটও একটা মিষ্টি হাসি ছুয়ে যায়।।কিন্তু মেয়েটি কে তা আমি জানি না।। তাকে আমি কখনো দেখিনি।। রেহানের কোন আত্মীয় হবে হয়তো।।

রেহান ওয়াশরুম থেকে খালি গায়ে নিচে একটা টাওয়াল পড়ে বের হয়ে গেলে আমি ঝটপট চোখগুলো বন্ধ করে দু হাত দিয়ে চেহারা আড়াল করে নিলে রেহান মুচকি হেসে আস্তে আস্তে আমার কাছে এসে মুখ থেকে হাত দুটু সরিয়ে বলতে লাগলেন,,,,

-চোখের কাজলটা জোস হয়েছে বউ,,,
-তাতে আপনার কি,,,
-মানে,,,(সামনের দিকে এগুতে এগুতে)
– কিছু না,,
-কিছু তো আছে তাহলে সেটা কি,,,
-জানি না,,,,(নিচের দিকে তাকিয়ে)

কথা মুখেই আছে উনি আমায় দেয়ালের সাথে চেঁপে ধরে অজানা এক চাউনিতে বলে উঠলেন,,,,

-আমার জন্য সেজেছিস,,,
-হুমমম,,,,, (নিচের দিকে তাকিয়ে লজ্জা মাখা চেহারা নিয়ে)
-খুব সুন্দর লাগছে আমার লজ্জাবতী বউটাকে,,,,,,

তারপর উনি আমাকে উনার খালি গা তে বুকের সাথে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলে আমার মন কেন জানি না উনাকে হারানোর ভয় পেতে শুরু করে।। সত্যি বলতে কোন মেয়ের সাথে উনাকে আমার সহ্য হয় না।।খুব কষ্ট হয়।। উনাকে ছাড়া আমি জীবনের একটা মূহুর্তের কথা চিন্তা করতে পারি না।।উনাকে ছাড়া যে আমি মরেই যাবো।।আমাদের এই ভালোবাসা যাতে কোন দিন শেষ না হয়।। কথাগুলো ভাবতেই চোখের কোণে জল চলে এলে আমিও উনাকে খুব শক্ত করে ধরে বসি।।রেহান আমার স্বাভাবিকভাব দেখে শান্ত কন্ঠে বলতে লাগলেন,,,,

-আমাকে ছাড়া অন্য কারো বউ হবি না তো,,,

কথাটা শুনে উনাকে হারানোর মনের ভেতর যেন আরও ভয় কাজ করতে লাগলো।। উনাকে একটু বেশি চেঁপে ধরে তাই বলতে যাচ্ছিলাম,,,, “আমি আপনার সাথে বাঁচতে চাই রেহান”,,,,,, কিন্তু ভুলবশত বলে ফেলি,,,

-আমি আপনার সাথে বাচ্চা চাই রেহান,,,

হায়রে লজ্জা সরমের আর কিছু বাকি রাখলাম না।। ছিঃ।।আল্লাহ আমার সাথেই এমন কেন হয়।।এখন যদি বলি আমি এটা বলতে চাইনি নিশ্চয় রেহান বিশ্বাস করবেন না।।ঘুরিয়ে পাকিয়ে আমাকে বলতে বাধ্য করবেন যে আমি এটাই বলতে চেয়েছি।। এখন কি করি।। কি বলতে চেয়ে কি বলে ফেললাম।।আল্লাহ গো আমাকে সাত জমিন নিচে পুঁতে ফেলো।।

কথাগুলো ভেবে লজ্জায় করুন দৃষ্টিতে উনার বুক থেকে মাথা উঠিয়ে উনার দিকে তাকালে দেখি উনি চোখগুলো বন্ধ করে মুচকি হেসে জবাব দিচ্ছেন,,,,

-কয়টা চাই,,,??,,,,(হাসি মাখা মুখে)

কি বলবো খুজে পাচ্ছি না।।আর কি কিছু বলার থাকে।।তাই নিজেকে এই অপ্রত্যাশিত লজ্জা থেকে বাঁচাতে উনাকে এক ধাক্কা দিয়ে নিজ থেকে সরিয়ে এক দৌড়ে নিজের রুমে চলে এলাম।।পেছন থেকে উনি অনেক বার আমাকে ডেকেছেন কিন্তু উনাকে সাড়া দেয়ার মতো পরিস্থিতিতে নেই।।

সারাদিন উনার সাথে আমার আর কোনো যোগাযোগ হলো না।। প্রতিবারের মতো রাতে উনি আমাকে কল করলেন রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে উনি বলে উঠলেন,,,

-কয়টা চাই বললেন না তো,,দুপুরে ধাক্কা দিয়ে চলে গেলেন লজ্জা পেয়েছিলেন নাকি,,,,
-চুপ,,,,,,, (লজ্জাময় কন্ঠে)
-হা হা হা ঠিক আছে,,,,আচ্ছা নিসা আমরা সব ফ্রেন্ডসরা মিলে ইন্ডিয়া গোয়া একটা টুররে যাবো ওখানে ১৫ দিন থাকবো আজকে সকাল ৬ টায় আমাদের ফ্লাইট তুই কি আমার সাথে ৫ টার নাগাদ দেখা করতে পারবি,,,,

কথাটা শুনে থঁ মেরে গেছি।। ১৫ দিন।। এত্ত দিন আমি উনাকে দেখতে পারবো না।। থাকবো কিভাবে।। কিন্তু উনি আমার কথা একবারও চিন্তা করলেন না।।কিভাবে পারেন উনি।।তাই গম্ভীর হয়ে উনাকে জবাব দিলাম,,,

-সব তো ঠিক করাই আছে আমাকে আর কি দরকার,,,,,
-মন খারাপ করছিস কেন মাত্র ১৫ দিনের ব্যাপার আর আমার সব কিছুতে তো তোকেই দরকার জানিস না,,,
-হুমমম ছাই দরকার,,,
-প্লিজ দেখা করিস নিচে অপেক্ষা করবো ওকে বায়,,,,
-বায়,,,,,(মন খারাপ নিয়ে)

সাড়া রাত ঘুম নেই।।উনার কথা ভাবছি হঠাৎ রেহান কল দিলে আমি তারাহুরা করে কলটা রিসিভ করলে উনি হাজারটা বিরক্তি নিয়ে বলতে থাকেন,,,,
-কি রে তোকে না বললাম আমার সাথে দেখা করতে,,,,,
-৪টা বাজে রেহান,,,,আম্মু নামাজ পড়তে উঠেছে এখন কিভাবে আসবো,,,,,,,,, (ঘড়িটার দিকে তাকিয়ে)
-ওকে আমি আসছি,,
-আরে না আমিই আসছি,,,,,উউফফফফ,(আতংকের সাথে)
-ওকে,,,

উনার সাথে দেখা হওয়া মাত্র দেখি উনি বেস সুন্দর করে স্টাইল করে যাওয়ার জন্য একদম রেডি হয়ে আছেন।।। যেন বিয়ের মেয়ে খুজতে যাচ্ছেন।।যত্তসব।।আমাকে দেখে হয়তো নিজেকে আর আটকাতে পারলেন না তাইতো সেখানে যেতেই উনি উনার পাঁজরে আমাকে আকড়ে ধরে বলতে লাগলেন,,,,
-I will miss you very much জান,,,

কিছু বলার ভাষা নেই।। স্তব্ধ হয়ে নিজেকে উনার সাথে জড়িয়ে রেখেছি।।আমার নিরবতা দেখে উনি আবার বলতে শুরু করলেন,,,,,,
-অনেক ভালবাসি আর বিশ্বাসও করি তোকে,,,,
-হুমমম,,,,,, (চোখের পানি ছেড়ে)
-কল দিলে রিসিভ করবি যদি কোনো দিন দেরি করেছিস তাহলে খবর আছে,, মনে থাকে যেন,,,(চোখের পানি মুছে দিতে দিতে)
-হুমমম,,
-ঠিক মতো পড়াশোনা করবি কারো প্রেমে সহায়তা করার কোন দরকার নেই,,,,
-কেন,,,,(কৌতুহল দৃষ্টিতে তাকিয়ে)
-আমি বলেছি তাই,,,,
-ঠিক আছে,,
-ভালো থাকবি বউ,,,, (কপালে আর গালে আলতো করে চুমু খেয়ে)
-সাবধানে যাবেন আর ভালো থাকবেন,,
-হুমমম বায়,,,
-বায়,,
(আর কয়েকটা পর্বের মাধ্যমে গল্পটা শেষ হবে সবাইকে ধৈর্য নিয়ে গল্পটা পড়ার জন্য অনুরোধ করছি,,,,☺)

উনাকে বিধায় জানিয়ে নিজ রুমে এসে অঝোর নয়নে কাদতে লাগলাম।।সারাদিন উনাকে ছাড়া মরুভূমির মতো দিনটা কাটালে বুকের ভেতর একটাই আশ্বাস পুষে রাখেছি রাতে তো কথা হবেই,,,,তারমধ্যে ঢুকে গেলো আরেক ঝামেলা।।রিয়া আপু নাকি আমার আর চৌতি আপুর সাথে ঘুমাবেন তাই আমাদের রুমে এসে হাজির।।। মেয়েটাকে আমার একদম সহ্য হয় না।।কেমন যেন লাগে।।কিন্তু মেহমান তো আর ফেলে দেয়া যায় না।।

যাইহোক ফোনটা হাতে নিয়ে উনার কলের অধির আগ্রহে অপেক্ষা করতে দেখে রিয়া আপু বিস্মিত হয়ে হাত থেকে ফোনটা কেড়ে নিয়ে নেড়েচেড়ে দেখে জিজ্ঞাসা করতে লাগলেন,,,
-এই দামী মোবাইল কখন কিনলা,,,,

আমি একটু ইতস্ততবোধ করে তাকে বলে উঠলাম,,,

-আমি কিনি নাই রেহা,,,,,
কথাটা আমার মুখ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে সে বলতে শুরু করে,,,,

-ও ও ভাই দিয়েছে,,,
-হুমমম,,
– ভাই আর কি দিয়েছে তোমাকে ,,,(সন্দেহ কোন দৃষ্টিতে তাকিয়ে)
-অনেক কিছুই দিয়েছেন,,,
-আচ্ছা তোমার গলার চেইনটা কোথা থেকে কিনেছ ,,,,,(গলার দিকে চিহ্ন করে)
-রেহান ভাইয়া দিয়েছেন,,,,, হাতের আংটিটাও উনি দিয়েছেন,,,,,
-ভাই তোমাকে এত্ত দামী দামী জিনিস দিয়েছে তুমি কিছু দাও নি??,,,
-না তেমন কিছু দিতে পারিনি,,,
-দিবেই বা কোথা থেকে তোমার আব্বুর কিছু থাকলে তো,,,,,,,
-মানে,,,,
-না কিছু না ভালো,,,,
-হুমমম,,,,,,,,(মন খারাপ করে),

,,,চলবে….

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে