তোমাকে_চাই (Season 2)পার্ট_৩
#আরবি_আরভী
সবার জোরা জুড়িতে এক প্রকার বাধ্য হয়ে এক চামচ নুডলস মুখে দিয়ে বললাম,,,,
-না কই এইতো খাচ্ছি,,,,হুম্মম অনেক মজা আপু।। (সত্যি টা শুধু আমি জানি সাড়া মুখ আমার ঝালে জ্বলে যাচ্ছে,, কিন্তু প্রকাশ করতে পারচ্ছি না শরীরটাও ঘেমে একাকার হয়ে গেছে )?,,,, আমি কোনরকমে নুডলস গুলো খেয়ে পিরিচটা টি-টেবিলের উপরে রেখে এক দৌড়ে গিয়ে ফ্রিজ থেকে ঠান্ডা পানির বোতলটা বের করে ঢক-ঢক করে এক বোতল পানি নিমিশেই শেষ করে ফেললাম,,,তবুও যেন আমার মুখ দিয়ে আগুন জ্বলছে সেই পরিমান ঝাল লাগছে আমার।। কোন কিছুর বিনিময়ে ঝাল কমছে না শেষ-মেষ মাথায় পানি দিয়ে ক্লান্ত হয়ে বসে দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করছি এমন সময় আমার মাথায় হাত ভুলিয়ে দিয়ে ইডিয়ট,খরুচটা এসে কাঁটা গায়ে নুনের ছিটা দিতে শুরু করল,,,
-কথায় আছে অতি ভক্তি চোরের লক্ষণ,, তাই তো বলি যে মেয়ে কালকে আমাকে এক ধাক্কায় মেঝেতে ফেলেদিয়েছিল সে নাকি আজ আমার জন্য নিজে বেড়ে এত্ত যত্নে নুডলস এনে দিচ্ছে।।।ভাগ্যিস আমি বুজতে পেরেছিলাম না হয়ে কি যে হত?????
আমি তার দিকে এক বিরক্তিকর ভাব নিয়ে তাকিয়ে এক জাটকায় উঠে একটা ভেংচি কেটে সেখান থেকে চলে এলাম।। যেইভাবেই হোক আমাকে এই ঐশীর রহস্য উদঘাটন করতেই হবে।। কিছুক্ষণ পর আর দেরি না করে রেহানের রুমে গিয়ে পাগলের মতো তার মোবাইলটা খোঁজতে লাগলাম এক পর্যায় তার বিছানার পাশে থাকা লেম্পের কাছে মোবাইলটা চার্জ দেয়া অবস্থায় আবিষ্কার করলাম তারাতারি মোবাইলটা হাতে নিয়ে সুইচ অন করে দেখি পাসওয়ার্ড দিয়ে লক করা।।।আমি বাকরুদ্ধ হয়ে গেলাম আমার এত্ত প্লেন তাহলে কোন কাজেরই না? তবুও হাল না ছেড়ে দিয়ে বিভিন্ন নাম, ফোন নাম্বার উনার পার্সনাল কিছু ডিজিট ব্যবহার করলাম কিন্তু কোন লাভ হল না উল্টো ফোনটা হ্যাং হয়ে ত্রিশ সেকেন্ডের জন্য ব্রেক নিল,,?
কিছুক্ষণ পর রেহান ভাইয়া এদিক-ওদিক না তাকিয়ে রুমে এসেই দরজাটা লক করে কাভার থেকে একটা সাদা গেঞ্জি নামিয়ে আগের গেঞ্জিটা খোলে গেঞ্জি বদলাতে শুরু করলেন,, আমি তার খালি গা টা দেখে প্রায় চক্কর খাওয়ার অবস্থা।। চোখ তো সরাতেই পারছি না।। বডি বিল্ট করা উনার শরীরটা অস্থির,, যেকোন মেয়ে দেখলেই চক্কর খাবে এটাই স্বাভাবিক ???।।
গেঞ্জি বদলে উনি পেছনে ফিরে আমাকে দেখে রীতিমতো চমকে উঠেন,,
-কি রে নিসা এখানে কি করিস???
উনার কথার আওয়াজে আমার ভাবনার ঘোর কাটে,, কিছু না বলে চুপটি করে নিচের দিকে তাকিয়ে রুম থেকে বের হব বলে দরজাটার কাছে যেয়েই উনি আমাকে এক টানে দেয়ালের সাথে মিশিয়ে দিলেন আর আমার মুখে পড়ে থাকা চুলগুলো পিছনে নিয়ে একটু মুচকি হেসে বললেন,,
-কি ব্যাপার নিসা,, আমি যখনি একটু অস্বাভাবিক অবস্থায় থাকি তখনি তোর সাথে আমার দেখা হয়ে,,, আমাদের মধ্যে এমন কি কানেকশন আছে বলতো???
-মোটেই না,,, আমি তো এমনি আপনার রুমে এসেছিলাম,,, আপনাকে অস্বাভাবিক অবস্থায় দেখার আমার বিন্দু মাত্র ইচ্ছা নেই বুঝলে,,, ( বিরক্তিকর ভাব নিয়ে তার দিকে তাকিয়ে)
কথাটা বলে উনাকে এক ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দরজাটা খোলে নিজের রুমে চলে এলাম।।?
সন্ধ্যার দিকে আমার প্রচন্ড মাথা ব্যাথা শুরু হল ঘরে থাকা কিছু টেবলেট খেয়েছি কিন্তু কাজ হচ্ছে না চাচ্চুরা মাত্রই অফিস থেকে এসেছেন আর আব্বু আসতে আজকে নাকি রাত হবে তাই আম্মু আর রেহান ভাইয়া আমাকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে গেলেন (আমাদের বাড়িতে বউ দের বাজারে যাওয়া নিষেধ বংশের রীতি বলে কথা),,,যাইহোক ডাক্তারের কাছে এসে ঘন্টা খানেকের মতো অপেক্ষা করছি আরো ১২ জন রোগীর পর আমাদের নাম্বার,, এদিকে অসহ্য মাথা ব্যাথায় আমি নিজেকে মহাশূন্যে খোঁজে পাচ্ছি মাথাটা আম্মুর কাধে এলিয়ে চোখগুলো বন্ধ করে শুয়ে আছি।। কিছু বলতে পারছি না কিন্তু সব শুনছি।। রেহান ভাইয়া আম্মুর ওপাশে বসে আছেন।। ভীষণ উত্তেজিত উনি কেন এত্ত দেরি হচ্ছে,,
কিছুক্ষণ পর আম্মুর ফোনে একটা কল এলো বাসা থেকে তিশা আপু ফোন করেছেন।। বাড়িতে নাকি আমার নানুর বাড়ির কিছু লোক এসেছে তাকে এখুনি বাসায় ফিরতে হবে আম্মু যাওয়ার জন্য ইতস্তত করায় রেহান ভাইয়া উনাকে যেতে বলেন আর আমাকে সামলানোর দায়িত্বটাও নিলেন,, আম্মু ঘরের ছেলের ভরসা পেয়ে আর অমত করলেন না যাওয়ার সময় দুজন যেন সাবধানে বাড়ি ফিরি সেই আদেশও দিয়ে গেলেন,,,,,, মাথার ব্যাথায় আর কিছু ভালো লাগে না রেহান ভাইয়া আমার শোচনীয় অবস্থা দেখে হসপিটালের একটা কর্মচারীকে কিছু টাকা দিয়ে আমাদের আগে ঢোকার ব্যাবস্থা করে দিলে হতাশ হয়ে ডাক্তারের সামনে বসে পড়ি।। ডাক্তার সাহেব রেহান ভাইয়াকে বিভিন্ন প্রশ্ন করছেন কারন আমি কিছু বলার মতো অবস্থায় নেই মাথা এলিয়ে রেহান ভাইয়ার কাধে শুয়ে আছি তারপর ডাক্তার আমাকে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রেসক্রিপশন লিখছেন।। আমার নাম, বয়স, বাড়ি ইত্যাদি রেহান ভাইয়ার কাছে জিজ্ঞাসা করছেন এক পর্যায়ে উনি কথার ছলে রেহান ভাইয়াকে জিজ্ঞাসা করলেন,,,,
-মেয়েটা আপনার কি হয়ে???
আমি কিছু বলতে পারছি না কিন্তু সব শুনছি প্রশ্নটা করাতে আমি মনে মনে ভাবতে লাগলাম ( লোক লজ্জার কথা ভেবে এখন আমাকে নাকি ছোট বোন বলে ফেলে আল্লাহ জানেন,, উনি যেইভাবে আমাকে তাচ্ছিল্য করেন তা থেকেই বোঝা যায় আমি উনার জীবনে কতটুকু জায়গা দখল করে আছি),,,,, কিন্তু রেহান ভাইয়া আমাকে অবাক করে দিয়ে নির দিধায় ডাক্তার সাহেবকে বলে উঠলেন,,,,,
-এটা আমার বউ,,,,,,,,,,,??,,,,,
,চলবে
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি মাসে জিতে নিন নগদ টাকা এবং বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।
গল্পপোকার এবারের আয়োজন
ধারাবাহিক গল্প প্রতিযোগিতা
◆লেখক ৬ জন পাবে ৫০০ টাকা করে মোট ৩০০০ টাকা
◆পাঠক ২ জন পাবে ৫০০ টাকা করে ১০০০ টাকা।
আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/?ref=share