তোমাকে চাই পর্ব-০৪

0
1396

#তোমাকে_চাই💖
#কলমে_অনন্যা(অনু)
#পর্ব_০৪

(০৭)
পরেরদিন তরু কলেজে যাওয়ার সাথে সাথে বিবেক আর সুকন্যা ওকে জিজ্ঞেস করলো পার্টিতে কি কি হয়েছে।তরু ব্রেক টাইমে বলবো বলে ওদেরকে নিয়ে ক্লাসে চলে গেল।

ব্রেক টাইমে,

তরু ক্যান্টিনে বসে ওদের সব বলল দিয়ার কথাও বলল।

“এই দিয়া আবার কোথা থেকে টোপকালো?”,সব শুনে সুকন্যা বলে উঠল।

“যেখান থেকেই টোপকাক না কেন তন্ময় জিজু দেখে নেবে”,বিবেক তন্ময়ের ওপর বিশ্বাস রেখে বলল।

“ওরে তুই জিজুতে চলে গেলি!”,অবাক হয়ে বলল সুকন্যা।

“হ্যাঁ জিজুই তো হবে এখন থেকে।তুইও জিজু বলবি”,বিবেক বলল।

“কেন কেন?তরু তো বিয়েতে হ্যাঁ বলেনি!”,তরুর দিকে তাকিয়ে বলল সুকন্যা।

“তোকে কি আর সাধে গাধি বলি!তরুকে দেখ ওকে দেখেই বোজা যাচ্ছে ওর মনে জিজুর জন্য ফিলিংস আছে”,বিবেক মুচকি হেসে বলল।

“তাই নাকি?”,সুকন্যা বোঝার চেষ্টা করছে তরুকে দেখে।

“হ্যাঁ রে গাধি!”,বিবেক সুকন্যার মাথা মেরে বলল।

“আহ্!তোর সাহস তো কম না সেই কখন থেকে গাধি বলেই যাচ্ছিস!কিছু বলছি না বলে বেশি বেড়ে গেছিস”,সুকন্যা রাগ দেখিয়ে বলল।

“আমার সাহস সম্পর্কে তোর কোন আইডিয়া নেই।যদিও তোর মোটা মাথায় কোন আইডিয়া থাকার কথাও না”,বিবেক হেসে বলল।

“কি?আমার মোটা মাথা!তোকে তো আমি!করলার শরবত খাওয়াবো তারপর টিকটিকির স্যুপ আরশোলার কারি খাওয়াবো তারপর, তারপর আরো অনেক কিছু খাওয়াবো হুম”,রেগে উল্টো পাল্টা বলে ফেলল সুকন্যা।

“ছিঃ!কি সব নাম!আমাকে না তোর বর কে খাওয়া যা”,চোখ মুখ কুঁচকে বলল বিবেক।

“আমার বরকে কেন খাওয়াব?আমার বর তো আর এসব বলেনি তোকেই খাওয়াব”,সুকন্যা জোর দিয়ে বলল।

বিবেক কিছু বলার আগেই তরু রেগে বলল,”এই তোরা ঝগড়া কর আমি গেলাম ক্লাসে!”

“আরে না না এই দেখ চুপ করলাম আর আমি তো ঝগড়া করছি না ও করছে”,তরুকে বাঁধা দিয়ে বলল বিবেক।

“হ্যাঁ হ্যাঁ আর ঝগড়া করবো না। তুই রাগ করিস না।এর সাথে ঝগড়া করার কোন ইচ্ছেও নেই আমার।আচ্ছা এখন বল ট্রিট কবে দিবি?”,সুকন্যা বিবেকের কথায় আর পাত্তা দিল না নাহলে আরো ঝগড়া করতো।

“কিসের ট্রিট?”,বিরক্তি নিয়ে বলল তরু।

“বিয়ে ঠিক হওয়ার”,বিবেক ভ্রু নাচিয়ে বলল।

“তোরা না বেশি বেশি ভাবিস সব।কোথায় বিয়ে ঠিক হলো? এখনো কিছুই হলো না আর তোরা ট্রিট চাইছিস!”,দুজনের দিকে বিরক্তিকর চাহনিতে তাকিয়ে বলল তরু।

“মানে কি তুই এখনো বিয়েতে হ্যাঁ বলবি না?”,বিবেক চোখ বড় বড় করে বলল।

“দেখি কি করা যায়”,গেলে হাত দিয়ে ভাবুক হয়ে বলল তরু।

“কি বলিস রে,?বেশি সময় নিস না।নাহলে সময় শেষ হয়ে যাবে আর তখন তুই আফসোস করবি”,সুকন্যা তরুর কাধেঁ হাত রেখে বলল।

তরু কিছু বললো না।ভাবছে কথাটা ঠিক বলেছে সময় থাকতেই সব করতে হবে।কিছুক্ষণ ক্যান্টিনে থেকে ওরা ক্লাসে চলে গেল তারপর বাড়িতে।

রাতে,

ডিনার করার পর তরুকে ওর মা বাবা ওদের ঘরে ডাকলো।তরু গিয়ে অঞ্জলি দেবীর কোলে মাথা রেখে শুয়ে পরলো।

“আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দাও না মা”, তরু আদুরে গলায় বলল।

“তরু তোকে কিছু কথা বলার আছে”,অঞ্জলি দেবী তরুর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললেন।

“হুম বলো”,মৃদু গলায় বলল তরু।

“তন্ময় ছেলেটা সত্যি বলতে ভালো রে। তুই বিয়েতে রাজি হয়ে যা মা।আর কতদিন এভাবে সময় চাই বলবি?ওনারা তো আমাদের সিদ্ধান্ত জানতে চাইছেন”,অঞ্জলি দেবী বললেন।

“আমরা নিশ্চিত তন্ময়ের সাথে তুই খুব সুখে থাকবি।ও তোকে খুব সুখে রাখবে দেখিস।আমরা আজ পর্যন্ত তোর বিষয়ে যা যা সিদ্ধান্ত নিযেছি তা কি ভুল নিয়েছি?তুই বল!”,অনিমেশ বাবু বললেন।

তরু এতক্ষন সব শুনল কি করবে কিছুই বুঝতে পারছে না।

“না বাবা তোমরা আমার বিষয়ে সব সময় বেষ্ট সিদ্ধান্তটাই নেও।কিন্তু তোমাদের ছেড়ে আমি কি করে থাকবো বলো?”,তরুর গলাটা ভারি হয়ে আসছে।

“তোকে ছেড়ে আমরাই বা কি করে থাকবো?”,অনিমেশ বাবুর চোখ ছলছল করছে।

“না থাকতে পারলেও থাকতে হবে।এটাই যে মেয়েদের জীবন রে।মেয়েরা মা বাবার কাছে কারোর আমানত হিসেবে থাকে সময় হলে যার জিনিস তাকে দিয়ে দিতে হয়!”,অঞ্জলি দেবীর চোখেও জল চলে এসেছে।

“তবুও আমি তোমাদের ছেড়ে থাকতে পারবো না!”, এবার তরু কেঁদেই দিলো।

“কাঁদিস না মা।তুই তো আর আজকেই চলে যাচ্ছিস না।এখন অনেক দিন বাকি আছে।তাহলে আমি ওদের জানিযে দি তুই রাজি?”,অনিমেশ বাবু তরুর চোখে জল মুছে দিয়ে বলল।

“হ্যাঁ বলে দেও।কিরে তাই তো?”,অঞ্জলি দেবী হাল্কা হেসে বলল।

তরু মুখে কিছু না বলে শুধু একটু হাসলো।অনেক ভেবে তারপর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ও।কিছুক্ষণ ওরা সবাই গল্প করার পর তরু ওর ঘরে চলে গেল।

সকালে,

আজকে কলেজ না থাকায় তরু ঘুমাচ্ছে আর ওর মা যখন সকালে ডাকতে এসেছিল তখন বলে দিয়েছে দেরি করে উঠবে।হঠাৎ তরুর ফোন বাজতে শুরু করল।কিন্তু তরু তুলছে না কয়েকবার বাজার পর তুলল।

*কি সিকু আজকে তো কলেজ নেই তাও কেন জ্বালাছিস?”,তরু কে ফোন করছে তা না দেখেই ফোনটা রিসিভ করে ঘুম জোড়ানো গলায় বলল।

“আমি সিকু নই!”,অপর পাশের ব্যক্তিটি বলল।

“ওওওওহো সিকু প্লিজ ঘুমোতে দে!ছেলেদের গলা তুই ভালোই নকল করতে পারিস।এখন রাখছি বাই”,তরু ফোন কেটে দিয়ে ঘুমিয়ে পরল।

আসলে সুকন্যা তরুকে জ্বালানোর জন্য এরকম মাঝে মাঝে করে আর ছেলেদের গলা ও খুব ভালোই নকল করতে পারে তাই তরু ভেবেছে সুকন্যাই কল করেছে।

তন্ময়দের বাড়ি,

“যাক বাবা আমাকে সুকু ভাবছে!কিন্তু এই সুকু টা কে?”,তন্ময় নিজেকেই বলছে।তরুকে কল ওই করেছিল।

“এই দাভাই! একা একা কি বলছিস?চল নীচে মা ডাকছে ব্রেকফাস্ট করতে”,তন্নী তন্ময়ের ঘরে এসে ওকে একাই কথা বলতে দেখে বলল।

“হ্যাঁ চল”,সব কিছু মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে তন্ময় তন্নীর কথায় সায় দিল।ব্রেকফাস্ট করে তন্ময় আবার তরুকে কল করল।

“কে?”,তরু ঘুম জোরানো গলায় বলল।

“আমি তন্ময়”,গলা ঝেড়ে বলল তন্ময়।

তন্ময়ের নাম শুনে তরুর ঘুম উরে গেছে লাফ দিয়ে উঠে বসল।

“আ…আপনি!আমার নাম্বার পেলেন কি করে?”,তরু অবাক হয়ে বলল।

“আন্টির কাছ থেকে!”,সহজ ভাবে জবাব দিল তন্ময়।

“কি!মা আমাকে না বলে আপনাকে নাম্বার দিয়ে দিল?”,তরু হাল্কা চেঁচিয়ে বলল।

“দেখ তুমি বিয়েতে রাজি হয়েছো তাই এখন আমাদের কথা বলতে কোন প্রবলেম নেই”,তন্ময় বলল।

“আপনার নেই আমার আছে!”,তরু থতমত খেয়ে বলল।

“ও তাই?তা কি প্রবলেম?”,তন্ময় ভ্রু কুঁচকে বলল।

“তা আমি আপনাকে কেন বলবো?”,তরু বলল।

“আমায় বলবে না তো কাকে বলবে?”,তন্ময় ঠোঁট কামড়ে হেসে বলল।

“আপনাকে বাদে সবাইকে!”, তরু বলল।

“আচ্ছা বলো।তোমার সাথে এখন আমার ঝগড়া করার মোড নেই”,তন্ময় বলল।

“আমরো নেই”,মুখ ভেংচি দিয়ে বলল তরু।

“সুকুটা কে?”,তন্ময় গম্ভীর হয়ে বলল।

“যাক বাবা এতক্ষন কি সুন্দর করে কথা বলছিল।আর এখন গম্ভীর গলায়!সুকুর কথা জিজ্ঞেস করছে তার মানে তখন উনি ফোন করেছিল?আর আমি সুকু ভেবেছি!একটু মজা করা যাক”,তরু মনে মনে বলল।

“কি হলো বল সুকু কে?”,তন্ময় গম্ভীর ভাবে আবারও বলল।

“আমার বয়ফ্রেন্ড!”,তরু ঠোঁট টিপে হেসে বলল।

“আমি ইয়ার্কি পছন্দ করিনা!তাই বলো কে সুকু”,তন্ময় আবার গম্ভীর গলায় বলল।

“বললাম তো বয়ফ্রেন্ড আর আমারও না সকাল সকাল আপনার সাথে ইয়ার্কি করার কোন ইচ্ছে নেই”,তরু বলল।

“আমি আসছি তোমাদের বাড়ি!”,বলেই কল কেটে দিল তন্ময়।

“এই এই হ্যালো হ্যালো শুনছেন?এবার কি হবে উনি কি সত্যিই চলে আসবে নাকি!কেন যে মিথ্যে বলতে গেলাম”,তরু নিজের মাথায় হাত দিয়ে বলল।

কিছুক্ষণ বিছানায় বসে অপেক্ষা করলো তন্ময়ের যখন দেখলো তন্ময় আসছে না তখন তরু উঠে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নীচে রান্না ঘরে গেল।

“মা কি রান্না করছো?”, তরু অঞ্জলি দেবীকে পেছন থেকে জরিয়ে ধরে বলল।

“এই তো ইলিশ মাছ,চিকেন রান্না করছি।তন্ময় আসবে আজকে”,মুচকি হেসে বললেন অঞ্জলি দেবী।

তন্ময় আসবে বলে অঞ্জলি দেবী আর অনিমেশ বাবু দুজনেই বাড়িতে আছে।তরু ওর মার সাথে কথা বলতে বলতে আপেল খাচ্ছিল কিন্তু অঞ্জলি দেবীর শেষ কথাটা শুনে আপেলটা যেন গলা দিয়ে নামছেই না।কোনরকমে আপেল গিলে বলল”,ক..কেন আসবে?কি আছে আজকে?”

“ওদের বাড়িতে পুজো আছে তার নেমন্তন্ন করতে আসবে”,অঞ্জলি দেবী কাজ করতে করতে বললেন।

“তা তুমি জানলে কি করে?যদি ফোনে বলে থাকে তবে বাড়িতে আসার কি দরকার?”,তরু বলল।

“কাল তোর বাবা যখন তুই বিয়েতে রাজি জানানোর জন্য ফোন করে তখন তন্ময়ের বাবা বলেছিল পুজোর কথাটা।আর তন্ময় আসবে নেমন্তন্ন করতে।তোর বাবা বলেছিল তার দরকার নেই তবুও উনি শুনলো না তন্ময়কে পাঠাবেন”,অঞ্জলি দেবী বললেন।

“ওও এই ব্যাপার কিন্তু আমাকে কেন ফোন করেছিল?তরু মনে মনে বলল।

“ওও,আচ্ছা মা তুমি কি আমার নাম্বার তন্ময়কে দিয়েছো?”,তরু বলল।

“হ্যাঁ দিয়েছি তো!কেন কল করেছিল?”, অঞ্জলি দেবী বললেন।

“হুম,সকালে করেছে”,তরু বলল।

“কি বললো?”,অঞ্জলি দেবী জিজ্ঞেস করলেন।

“সে রকম কোন কথাই হয়নি।আমি ঘুমের মধ্যে ছিলাম তাই কথা বলিনি”,তরু বলল।

“ওওও,তন্ময়কে দুপুরে আসতে বলেছি।তুই কি খাবি এখন?”, অঞ্জলি দেবী বললেন।

“এই তো খাচ্ছি কফি আর কিছু খাবো না”,কফি খেতে খেতে বলল তরু।

তরু কিছুক্ষণ ওর মার সাথে হাতে হাতে কাজ করে দিল।যদিও ও রান্না পারে না খালি দেখে গেল।

“মা বাবা কোথায়?”,তরু বলল।

“বাজারে গেছে,মিষ্টি আনতে”,অঞ্জলি দেবী বললেন।

“ওও”,তরু বলল।

“আচ্ছা যা গিয়ে স্নান সেরে নে”,অঞ্জলি দেবী বললেন।

“হুম যাই”,তরু বলল।

তরু রুমে যাচ্ছে আর ভাবছে,”কি যে হবে?উনি যদি রেগে থাকেন বা আবার সুকুর কথা জিজ্ঞেস করেন কি বলবো?ধুর যা সত্যি তাই বলবো আর মজা করবো না।”

কিছুক্ষণ পরে তরু স্নান সেরে একটা সুন্দর নীল রং এর চুড়িদার পরলো। আর অল্প করে সেজে নিলো।হঠাৎ কলিংবেল বাজলো তরু নীচে গিয়ে দেখে ওর মা দরজা খুলে দিয়েছে।

“আরে তন্ময় এসো এসো”,এক গাল হেসে বললেন অঞ্জলি দেবী।

“কেমন আছো আন্টি?”,তন্ময় ভেতরে ঢুকে বলল।

“ভালো আছি বাবা, তুমি?”,মুচকি হেসে বললেন অঞ্জলি দেবী।

“এইতো আছি”,তন্ময় বলল।

“এই তো আছি মানে কি?আর তুমি বসো। দাঁড়িয়ে আছো কেন?”,অঞ্জলি দেবী বললেন।

“আসলে অফিসে কাজের খুব চাপ”,তন্ময় সোফায় বসে বলল।

“ওও,আচ্ছা তুমি তরুর সাথে কথা বলো আমি আসছি”,অঞ্জলি দেবী হেসে বললেন।

“আন্টি আঙ্কেলকে দেখতে পাছি না!কোথায়?”,তন্ময় বলল।

“আর বলো না সকালে বাজারে গিয়েছে এখনো আসেনি।হয়তো পুরোনো সব বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছে”,অঞ্জলি দেবী বললেন।

“ওওও”,তন্ময় হেসে বলল।

“আচ্ছা তরু তুই ওকে ছাদে নিয়ে যা।ওখানে বসে তোমরা কথা বলো।আমি রান্না ঘরে আছি”,অঞ্জলি দেবী তরুকে বললেন।

“চলুন”,তরু এতক্ষণ চুপ করে দাঁড়িয়ে সব শুনছিল কিন্তু এখন ওর টেনশন হচ্ছে।

“হুম চলো”,তন্ময় বলল।

দুজনে ওপরে গেল।ছাদে গিয়ে রেলিং ধরে দুজনে দাঁড়িয়ে আছে কেউ কোন কথা বলছে না।তরুর তো খুব টেনশন হচ্ছে না জানি তন্ময় কি বলবে।

“সুকু কে?”,তন্ময় ধীর গলায় বলল।

“সু….সুকু তো…ইয়ে মানে…ও হলো…আ…আসলে”,তরু কিছুই বলতে পারছে না। বেশি টেনশন করলে ও কথা বলতে গিয়ে তোতলায় আর কথা ঠিক করে বলতে পারে না।

“কি তখন থেকে তোতলাছো!আমাকে ভয় পাচ্ছো নাকি?”,তন্ময় শান্ত হয়ে বলল।

“না না আসলে সু…সুকু হলো সুকন্যা আমার ফ্রেন্ড”,তরু বলল।

“সকালে তাহলে উল্টো পাল্টা বলছিলে কেন?”,তন্ময় বলল।

“ওটা তো মজা করছিলাম!আর আপনি আমার ঘুমের দফা রফা করেছেন তাই আর কি!”,তরু গাল ফুলিয়ে বলল।

“তাই বলে.!আচ্ছা শোনো আমি আর তোমার ঘুমের দফা রফা করবো না।তবে তুমিও আর এসব মজা করবেন না।ঠিক আছে?”, তন্ময় বলল।

“হুম ঠিক আছে।তবে আপনি সকালে কেন কল করেছিলেন?”,তরু তন্ময়ের দিকে তাকিয়ে বলল।

“এখানে আসবো সেটা জানাতে”,তন্ময় বলল।

“তা আমাকে জানানোর কি আছে?”,তরু বলল।

“এ কি কিছুই বোঝে না?কি কপাল আমার”,তন্ময় মনে মনে বলল।

“কি হল চুপ করে গেলেন কেন?”,তরু বলল।

“কিছু না!আচ্ছা তুমি বিয়েতে রাজি হয়েছো কিন্তু আমাকে এখন উওর দিলে না তো”,তন্ময় বলল।

“কিসের উওর?”,তরু বলল।

“ভুলে গেছো নাকি আবার!”,তন্ময় বলল।

“মজা করছি না সত্যি ভুলে গেছি”,তরু বলল।

“ও ছাড়ো পরে বলবো”,তন্ময় বলল।

“আচ্ছা আপনি তো আমার সমন্ধে সব জানেন তা আপনার সমন্ধে আমাকেও কিছু বলুন”,তরু বলল।

“নিজের সমন্ধে বলতে!আমি এইচ এস দিয়েই বাইরে চলে গেছি।সাত বছর বাইরে থেকে একবছর হলো দেশে ফিরেছি”,তন্ময় বলল।

“বাইরে ছিলেন তো কাউকে পছন্দ হয়নি?”,তরু আস্তে আস্তে বলল।

“না।তোমাকে তো আগেই বলেছি আমার দ্বারা এই সব প্রেম টেম হবে না”,তন্ময় একবারেই উত্তর দিয়ে দিল।

“তা কি হবে আপনাকে দিয়ে?”,তরু কথাটা বলেই জিভে কামড় দিলো ভুল কথা বলে ফেলেছে।

“কি আর হবে বিয়ে করে বউ এর সাথে প্রেম করবো।বউ শিখিয়ে দেবে কি করে প্রেম করতে হয়।কি দেবে তো?”,তন্ময় তরুর একদম সামনে এসে বলল।

তন্ময় তরুর এতো কাছে আসায় তরুর হার্ট খুব জোরে বিট করছে।তরু মোটেও এমন কোন কথা আসা করেনি।

“সে পরে দেখা যাবে”,তরু তন্ময়ের থেকে দূরে সরে অন্য দিকে তাকিয়ে বলল।

“তাহলে তুমি মানছো তো তুমি আমার বউ!”তন্ময় মুচকি হেসে বলল।

তন্ময়ের কথায় তরু লজ্জায় মাথা নীচু করে নিল।

“লোকটা এমন কেন?ইচ্ছে করে আমায় লজ্জা দিচ্ছে(মনে মনে )চলুন নীচে যাই বাবা চলে এসেছে”,তরু মাথা নীচু করে কথাটা বলেই নীচে চলে গেল।

“তোমার মনতো আমি জয় করেই ছাড়বো তরী।তুমি সেই মেয়ে যে আমার মন চুরি করেছো।তোমাকে তো আমার চাই।তুমি আমার হবেই।তন্ময়ের তরী হবেই তুমি।তোমার মনেও আমার জন্য জায়গা তৈরী হচ্ছে।খুব তাড়াতাড়ি তোমাকে নিজের করে নেব।দিয়াকে ভরসা নেই!ও কিছু তো করবে।তোমার ক্ষতি ও করার আগেই তুমি আমার হয়ে যাবে”,তন্ময় তরুর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মনে মনে বলল।

তন্ময় নীচে গিয়ে সবার সাথে কিছুক্ষণ কথা বললো।তারপর লাঞ্চ করে সবাইকে পুজোতে যেতে বলে অফিসে জরুরি কাজ আছে বলে চলে গেল।তিনদিন পর পুজো।

#চলবে….?

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে