তৃণকান্তা
পর্ব : ৬
– নিশি রাত্রি
হাতে থাকা জয়েনিং লেটারটা বারবার উল্টেপাল্টে দেখছে মাইশা । তার স্তব্ধতার ঘোর যেনো এখনো কাটছে না । তারপর নিজেই নিজেকে বললো,
” যা খুশি হোক। তাতে আমার কি। আমার চাকরীর দরকার ছিলো পেয়েছি। ব্যাস। ”
বলে রিলেক্স হওয়ার জন্য একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো। তারপর লেটারটা হ্যান্ডব্যাগে ঢুকিয়ে বেরিয়ে গেলো অফিস থেকে।
মাইশা বের হবার একটু আগেই সেখান থেকে বেরিয়ে পড়লো তূর্য আর তুম্পা। অফিসের সামনে থেকে অনেকটা সামনের দিকে দাঁড়িয়েই অপেক্ষা করছে মাইশার জন্য।
মাইশা কল সেন্টার থেকে বেরিয়ে একটা সিএনজিতে উঠতে লাগলো। আর তা দেখে তুম্পা বললো,
– ভাইয়া মাইশা চলে যাচ্ছে তো!
তূর্য বাকা হাসি হেসে ,
– এটাতে মাইশা কখনোই উঠবে না।
– এ্যা!
– হ্যাঁ।
মাইশা অফিস থেকে বেরুতেই দেখলো একটা খালি সিএনজি দাঁড়িয়ে আছে। মাইশাকে দেখেই ড্রাইভার বললো,
– আফা কই যাইবেন?
– মহাপাড়া যাবেন?
– হ যামু। পঞ্চাশ টাহা।
– আচ্ছা চলুন।
বলে খালি সিএনজিতে উঠতে গিয়েও থেমে যায় মাইশা । সিএনজিতে পা দেবার সাথে সাথেই তূর্যের কথা মনে হলো তার । তূর্য সবসময় বলে ,
“কখনোই খালি সিএনজিতে একা উঠবে না। পশু মানব গুলোও কিন্তু মানুষ রূপেই সবার সামনে থাকে। ওদের ভদ্র মুখোশের আঁড়ালের চেহারাটা কখন বেরিয়ে আসে বুঝা বড় দায়। ” কথাটা মনে হতেই নেমে গেলো মাইশা। তারপর ড্রাইভারকে বললো,
– আমার একটু কাজ আছে। আপনি অন্য প্রেসেঞ্জারকে দেখুন।
– আরে আফা আইচ্ছা চল্লিশ টাহা দিয়েন।
কিন্তু কোনো জবাব না দিয়ে সামনের দিকে হাঁটতে লাগলো মাইশা। দুর থেকে দাঁড়িয়ে মাইশাকে দেখছে তূর্য। মাইশার এমন কাজে মৃদু হাসলো। তুম্পাও হাসলো। তূর্য জানতো মাইশা সিএনজিটাতে উঠবে না। কারন আর যাই হোক তূর্যের প্রতি মাইশার রেসপ্যাক্ট অনেক সেটা তূর্য খুব ভালোভাবেই জানে। মাইশা আরেকটু সামনে যেতেই পেছন থেকে একটা সিএনজি এলো। তবে এবার খালি নয় দুইজন প্রেসেঞ্জার আছে । একজন সামনে আরেকজন পেছনে।
মাইশাকে দেখে ড্রাইভার বললো,
– কই যাইবেন আফা?
– মহাপাড়া। যাবেন?
– হুম। যামু।
– আচ্ছা ঠিকাছে।
মাইশা বসার সাথে সাথেই তূর্য আর তুম্পা এসে সিএনজিতে উঠলো। তূর্যকে দেখে মাইশার চোখ চড়কগাছ। সাথে তুম্পা? তারমানে ওকে ফলো করছিলো দুজন? তূর্যের সাথে কখনোই কথাতে টিকে উঠতে পারবেনা মাইশা সে যতোই বাচাল হোক না কেনো। এটা সসে নিজেও স্বীকার করে। মানুষটা খুব ভালোভাবে নিজের অধিকার আদায় করে নিতে জানে। তার থেকে কেটে পরাই শ্রেয় । মাইশা নামতে গেলে তূর্য তার হাত ধরে দাঁতে দাঁত চেঁপে বললো ,
– চুপচাপ বসে থাকো। সিনক্রিয়েট করো না। তারপর সামনের দিকে তাকিয়ে ড্রাইভারকে বললো,
– মামা চলো।
– তুমি? এখানে কি করছো? তোমার অফিস নেই?
কিছুদুর আসার পর প্রেসেঞ্জার নামার জন্য সিএনজি থামালে মাইশা চেঁচিয়ে বলে আমাকে এখানে নামিয়ে দিন । কিন্তু তূর্য কোনো কথা শুনেনা । তূর্য ড্রাইভারকে চালাতে বলে।ড্রাইভার বললো,
– ভাই আফনেরারে আমি নিমু না। আফা চিল্লাইতাছে। পুলিশ আমারে আটকাইবো। বহু কষ্ট কইরা এই গাড়ি কিনছি আমি।
– আমার বউ আমার সাথে চিল্লাচ্ছে। কোনো সমস্যা? তুমি যাও। আর নয়তো ড্রাইভিং আমিও জানি। ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে ড্রাইভিং শুরু করবো। তারপর ভাড়াও যাবে গাড়িও যাবে। তখন বুঝবে মজা।
ড্রাইভার ভয়ে আর কিছুই বললো না। একেবারে তূর্যদের বাসার সামনে এসে সিএনজি থামলো। তূর্য ওয়ালেট বের করে ভাড়া দিয়ে মাইশার হাত ধরে টেনে বাসার ভেতরে নিয়ে চললো। মাইশা রেগে বললো,
– আশ্চর্য এমন কেনো করছো তূর্য ? আমি মানুষ তো নাকি? হাতে লাগছে আমার।
কোনো জবাব দেয়নি তূর্য। কলিংবেল বাজতেই আশা দরজা খুলে তূর্য মাইশাকে দেখে চমকে উঠলো। মাইশার এই অবস্থা দেখে বললো,
– এই অবস্থা কেনো তোদের ? আর তুই এভাবে ওকে ধরে নিয়ে এসেছিস কেনো?
মাইশাকে নিয়ে তার রুমে ঢুকে দরজাটা লাগিয়ে দেয় তূর্য । বাহির থেকে আশা বারবার ডাকলে তূর্য বেরিয়ে এসে বলে,
– চেঁচাবে না মা। ওর সাথে আমার অনেক বুঝাপড়া আছে।
বলে তার মায়ের মুখের উপর ঠাস করে দরজাটা বন্ধ করে দিলো।
অবাক হয়ে বন্ধ দরজার দিকে তাকিয়ে আছে আশা।
বারবার কম্পিউটার স্ক্রিনের উপর হাত বুলাচ্ছে সোহান। এই যেনো তার হারিয়ে যাওয়া মায়া মিষ্টি হেসে তারই দিকে তাকিয়ে আছে । সেই তিনদিনের পিচ্চি মেয়েটা যে বড় হয়ে হুবহু তার মায়ের মতোই হবে কে জানতো? মাইশা যে কল সেন্টারে ইন্টার্ভিউ দিতে গিয়েছিলো সেই কল সেন্টারের একজন সিনিয়র স্টাফ মোশারফ তার ছোটকালের বন্ধু। সেই সুবাদে প্রায়ই বাসায় আসা যাওয়া করতো। মায়ার সাথে দেখাও হয়েছে অনেকবার। সোহানের জীবনের কোনো ঘটনাই তার অজানা নয়। আজকে ইন্টার্ভিউ বোর্ডে মাইশা মেয়েটাকে দেখেই নাকি সে হতবাক। ইন্টার্ভিউ বোর্ড থেকে মোশারফ সাথে সাথেই ইনফর্ম করে সোহানকে। মেইলের মাধ্যমে মাইশার ছবি পাঠিয়ে দিয়ে বলে,
– তুই চিনিস ওকে?
ছবিটা দেখে আঁৎকে উঠে সোহান।
– মায়া!
– না ও মায়া নয়। মাইশা। বাবা মায়ের নাম দেখ।
বলে মাইশার সব পেপারস সোহানের কাছে পাঠিয়ে দেয়।
– আমিন ওর মামার নাম। ওরাই ওকে রেখে দিয়েছিলো। অনেক ইচ্ছে ছিলো মেয়েটাকে একনজর দেখার। হয়তো আল্লাহও চাইছিলো আমার ইচ্ছেটা পূরণ হোক। তাইতো তোর কাছেই এলো।
– চলে আয় দেশে। দেখা করার বন্ধোবস্ত করে রাখছি আমি।
বন্ধুর মেয়ে ভেবে সে চাকরীটা মাইশাকে দিয়েই দেয় মোশারফ। মেয়েটা অনেক অবাক হয়েছে তার চোখ মুখ দেখেই আন্দাজ করেছে মোশারফ।
মায়াকে হারিয়ে সেই যে সুইজারল্যান্ড এসেছে আর বাংলার মাটিতে পা রাখেনি সোহান। এখানেই এক বাংলাদেশিকে বিয়ে করে কাটিয়ে দিচ্ছে জীবন। আনহা মেয়েটার নাম। বাংলাদেশী । বাংলাদেশ থেকে স্কলারশিপ পেয়ে এসে এখানেই সেটেল্ড। তারপর একসাথে চাকরী করতে গিয়ে দুজনের পরিচয়। কিন্তু পরিচয়টা ছিলো বন্ধুত্বের। ভালোবাসা অনুভূতিটাকে আগের মতো সতেজ করে তুলতে পারেনি সোহান। বারবার অপরাধবোদ জাগে। মায়ার প্রতি তার অবিচারের জন্য খুব কষ্ট হয় । নামাযের মোনাজাতে বসে কান্নাকাটি করে সোহান। বারবার ক্ষমা চায় সোহান। আনহা আর সোহানের একটা ছেলে আছে। আসিফ।কখনোই আদর করে বুকে জড়িয়ে নেয়া হয়নি তাকে। এই সংসারে শুধু দায়িত্ব হিসেবেই যা পালন করা হয় সোহানের। ভালোবাসা অনুভূতিটা কখনোই কাজ করেনা। মাইশার ছবিটা দেখেই কেমন করে কেঁপে উঠছে তার বুক। তবে এবার খুব শীগ্রই পা রাখবে বাংলাদেশে । তার আদরের মেয়েটাকে বুকের পাঁজরে জড়িয়ে ধরবে। মন খুলে কান্না করবে মায়ার জন্য।
তূর্যের এমন আচরণে ভয় পেয়ে যায় মাইশা। তূর্যকে দরজা বন্ধ করতে দেখে এবার অনেক বেশি ভয় পেয়ে গেলো মাইশা। ভয়ে গলা শুকিয়ে আসছে তার।
ভয় ভয় কন্ঠে বললো,
– তূর্য তুমি দরজা বন্ধ করেছো কেনো? সমস্যা কি তোমার?
বিছানায় বসে আছে মাইশা। তার মুখোমুখি একটা চেয়ার টেনে বসে পাশে থাকা
কম্পিউটার টেবিলটাতে জোড়ে চড় মেরে তূর্য বললো,
– সেটাতো আমারও প্রশ্ন। কি সমস্যা তোমার? সেদিন যে গেলে তারপর থেকে কোনো খবর নেই তোমার । না কল করছো না মেসেজ করছো আর করা তো দুরের কথা আমার কলইতো রিসিভ করছো না। কি সমস্যা?
সজোড়ে চড় মারা দেখে ভয় পেয়ে যায় মাইশা। কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে বলে,
– আমি এই রিলেশন রাখতে পারবো না।
কথাটা শুনে চমকে উঠে তূর্য।
– কি বললে! বুঝিনি আমি।
– আমি এই রিলেশন কন্টিনিউ করতে চাইনা।
– কেনো!
– আমি পারবোনা। আমার বাসায় যেতে হবে।
বলে উঠে যেতে নিলেই হাত চেঁপে ধরে আটকে দেয় তূর্য।
ধমক দিয়ে বললো,
– ফাজলামো পেয়েছো? টিনেজারদের মতো গার্লফ্রেন্ডের কথায় লাফানোর স্বভাব আমার নেই। তুমি টিনেজার হতে পারো আমি না। যথেষ্ট বয়স হয়েছে আমার। একটা চড় মেরে গাল লাল করে ফেলবো।
তূর্যের ধমক শুনেই কেঁদে দেয় মাইশা। তাতে আরো জোড়ে চেঁচিয়ে উঠে তূর্য,
একদম চুপ। একটা ঠাটিয়ে চড় মারবো। ফাজিল।
তূর্যের দিক তাকিয়ে চোখের পানি ছেড়ে ছেড়ে কাঁদছে মাইশা। মাইশার চোখে পানি দেখে ভিতরটা কেমন যেনো মুচড়ে উঠে তূর্যের। দ্রুত হাত বাড়িয়ে টেনে মাইশাকে বুকে জড়িয়ে নেয়। একটা শিশুর মতো তূর্যের বুকে মিশে রইলো মাইশা । কিন্তু কান্না থামার বদলে যেনো পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। মাইশা যতোবার ভাবছে তূর্য কখনোই তার হবেনা ততোবারই যেনো দুনিয়া অন্ধকার দেখছে। বারবার ভাবছে,
এই বাহুডোর টা কখনোই তার হবেনা । ভেবেই ভিতর থেকে কষ্টগুলো যেনো কান্না হয়ে বেরিয়ে আসতে চাইছে। তূর্যের শার্ট খামচে ধরে সে কাঁদছে। কাঁদতে কাঁদতে মাইশা বললো,
– আমার সব শেষ হয়ে গেলো তূর্য। এই পৃথিবীতে আমার কেউ নেই। আমি এতিম তূর্য আমার কেউ নেই। আমার সাথে এমন কেনো হলো তূর্য?
মাইশার কথার লেজ মাথা কিছুই বুঝতে পারছেনা তূর্য। সব এলোমেলো লাগছে। চেয়ারে বসে মাইশাকে বুকে জড়িয়ে ধরে আছে তূর্য। যেভাবে কাঁদছে কিছু জিজ্ঞাসা করাও তো দায়। তাই তূর্য মাইশাকে মন খুলে কান্না করার সুযোগটা দিলো। কান্না করলে মন হালকা হয়।কিন্তু তূর্যের শার্ট ধরে কাঁদতে কাঁদতেই ঘুমিয়ে গেলো মাইশা। পরম যত্ন করে তূর্যের বিছানায় শুইয়ে দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে এলো তূর্য। কানে মাইশার কথাগুলো বারবার প্রতিধ্বনিত হচ্ছে।
” আমার সব শেষ হয়ে গেলো তূর্য। এই পৃথিবীতে আমার কেউ নেই। আমি এতিম তূর্য আমার কেউ নেই। আমার সাথে এমন কেনো হলো তূর্য? ”
তূর্য বেরিয়ে আসতেই আশা তড়িঘড়ি করে এগিয়ে এলো। যেনো তার বেরোবার অপেক্ষাতেই ছিলেন তিনি। বললো,
– কি হয়েছে মাইশার? এভাবে শুকিয়ে…!
– মা মাইশা ঘুমাচ্ছে। ও কোনো টেনশনে আছে। আমি বলাতেই বললো সম্পর্ক রাখতে পারবেনা। আর ধমকে জিজ্ঞাসা করতেই বললো, “আমার সব শেষ হয়ে গেলো তূর্য। এই পৃথিবীতে আমার কেউ নেই। আমি এতিম তূর্য আমার কেউ নেই।আমার সাথে এমন কেনো হলো তূর্য? ”
– মানে কি? ওর বাবা মার কিছু হলো নাকি?
পাশ থেকে তুম্পা বললো,
– কই নাতো। ওনারা তো ঠিকই আছে।
– আচ্ছা ওর ঘুমানো দরকার। ঘড়ির দিক তাকিয়ে,
এখন বারোটা বাজে একটু ঘুমাক। তারপর নাহয় জিজ্ঞাসা করা যাবে। আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি।
তূর্য গোসল করে এসে দেখে দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে উপরের দিকে তাকিয়ে আছে মাইশা।গাল গড়িয়ে পরছে মুক্ত জল। মাইশা তখনো কাঁদছে। তূর্য এসে মাইশার পায়ের উপর মাথা রেখে শুয়ে পড়লো। হাত দিয়ে মাইশাকে তার দিকে ফিরিয়ে বললো,
– নিজে জ্বলছো আমাকেও জ্বালছো। শান্তি পাচ্ছিনা মাইশা। তোমাকে ছাড়া আমি হয়তো বেঁচে থাকতে পারবো কিন্তু কখনো শান্তিতে বেঁচে থাকতে পারবো কিনা জানিনা।
তূর্যের চুলগুলোতে হাত বুলিয়ে কাঁপা কাঁপা কন্ঠে মাইশা বললো,
– আমার মা বাবা কেউ নেই তূর্য । আমি এতিম। ছোট থেকে আমি যাকে মা বাবা বলে জানি ওরা আমার মামা আমার মামি। ডেলিভারির সময় মা মারা যায় আর বাবা? সে কোথায় আছে কেউ জানেনা।
কথাটা শুনে অবাক হলেও সেটা প্রকাশ করলোনা তূর্য।
মাইশা আবার বললো,
– মামি আমাকে একটুও পছন্দ করেনা। শুধু আপুরা আর মামার জন্যই কখনো মুখ ফুটে কিছু বলতে পারেনি। আমাকে আমার জীবনটা একাই বয়ে যেতে হবে। একটা এতিম মেয়েকে আন্টি নিশ্চয়ই তার ঘরের বউ করে নিবেনা। আমাকে আমার মতো থাকতে দাও তূর্য। তুমি অনেক ভালো কাউকে পাবে।
কথাটা বলেই দৃষ্টি ঘুরিয়ে নিলো মাইশা। কিন্তু মাইশার চোখের একফোটা জল গড়িয়ে পরলো তূর্যের কপালে। যে মেয়েটা একদিন কল না করলে পাগলপারা হয়ে যেতো সেই মেয়েটা বুকে কতোটা পাথর চেঁপে আজ এই কথা বলছে? ভাবতেই বুকটা কেমন কেঁপে উঠে তূর্যের। হাত দিয়ে আবারো মাইশার মাথাটা তার মুখোমুখি করে,
– একটা বইকে কখনো তার কাভার দেখে জাজ করতে নেই মাইশা। তেমনি তোমার পরিবার দেখে তোমাকে জাজ করার কিছুই নাই। আমি তোমাকে চাই তোমার পরিবার না।
– আমি জানি তুমি মানতে চাইবে না। তাই আমি নিজেকে সরিয়ে নিয়েছি।
– সেটা তোমার ভুল ধারনা। কই পেরেছো সরিয়ে রাখতে? কখনোই পারবেনা।
– কিন্তু বাস্তব এটাই আমি এতিম। আমাকে নিয়ে তোমার ভাবলে চলবে না। তোমার সুন্দর একটা ভবিষ্যৎ আছে।
দুহাতে মাইশার মুখটা চেঁপে ধরে,
– হ্যাঁ। সেই ভবিষ্যতটাও তোকে ঘিরেই আমি করবো । সেখানে অন্য কাউকে ভাবার কথা আমি স্বপ্নেও ভাবতে পারিনা। বাস্তবতা তোমার থেকেও বেশি বুঝি আমি। মাইশা কিছু বলতে গেলেও ঠোঁটের উপর আঙ্গুল রেখে তাকে থামিয়ে দেয় তূর্য।
– একদম চুপ। আমি আর কিছু শুনতে চাইনা। ভালোবাসার শুরুটা তুমি করেছিলে মাইশা। শেষটা একমাত্র মৃত্যুর মাধ্যমেই যেনো হয়। সবসময় সেই প্রার্থনা করি। শত বাঁধা আসুক মাইশা হাতটা ছেড়ো না । হাতটা ধরে রেখো, মৃত্যুর আগ মূহুর্ত পর্যন্ত আগলে রাখবো আমি।মাইশার কপালটা টেনে একটা চুমু খেয়ে,
– উঠো ফ্রেশ হও খাবার খাবো। তুম্পা মায়ের সাথে আছে।
তূর্য উঠে দাঁড়াতেই পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে মাইশা।
– আম সরি। আর কখনোই এমন ভুল হবেনা। মাইশার হাত দুটো চেঁপে ধরে,
ভালোবাসি তো পাগলি।
চলবে…!