তুমি নামক যন্ত্রণা পর্ব-১৫

0
1176

#তুমি নামক যন্ত্রণা
# লেখনীতেঃ হৃদিতা ইসলাম কথা
পর্বঃ১৫

— তখন কি ছিল? কেন ছিল? আমি জানতে চাইনি।আমি শুধু অসম্পূর্ণ কাজটা সম্পূর্ণ করতে এসেছি।

— সো বেবি লেটস ডু ইট।

উনার কথা শুনে উনাকে দুহাতে ধাক্কা দিয়ে সরে যাওয়ার চেষ্টা করতেই উনি একহাতে আমার কোমর আকড়ে ধরলেন আর অন্যহাত আমার দুহাতে আটকে দিলেন।একদম উনার বুকের মধ্যেখানে আবব্ধ করে নিলেন আমায় সময় বিলম্ব না করে অতিশয় দ্রুত আমার অধর জোড়ন উনার অধরে মিশিয়ে দিলেন।গভীরভাবে ছুয়ে দিলেন আমায় । আমার পৃথিবী প্রায় থমকে গেল।প্রথমবার উনার এমন স্পর্শ পেয়ে আমার ভেতর এক অদ্ভুদ অনুভুতির জন্ম নিল।দুহাতে উনার শার্ট খামচে ধরলাম ।চুপচাপ উনার গহীন স্পর্শকে অনুভব করতে লাগলাম। মিনিট কয়েক পরে উনি আমাকে আলতো করে ছাড়লেন।আমার গাল দুটে টমেটোর মত লাল হয়ে গেছে। নাকের ডগা লাল। লজ্জায় মুখ তুলে তাকাতে পারছি না। চোখজোড়া এখন বন্ধ। খোলার সাহস নেই।আমি মাথা নিচু করে ঘনঘন নিশ্বাস নিচ্ছি।উনি এবার কোমরে গভীর স্পর্শ করে আরেকটু কাছে টেনে নিলেন আমাকে।আমার দুহাত উনার বুকের মাঝে অবস্থিত। উনি আমার কাছে এসে কানের লতিতে আলতো করে ঠোঁট ছুঁইয়ে বললেন,

–লজ্জা পেলে আরও বেশি মায়াবী আর অপরুপ লাগে তোমায়।আরো বেশি কাছে টানতে ইচ্ছে করে। টমেটোর মত লাল লাল গাল দু’টোকে ইচ্ছে করে কামড়ে কুমড়ে খেয়ে ফেলি।

উনার এমন চরম অসভ্যের মতো কথাবার্তা আমার চারদিকে লজ্জামিশ্রিত কোন বলয় তৈরি করলো।তবে নিজেকে না গুটিয়ে কিছুটা রাগ নিয়ে বলার চেষ্টা করলাম।

— আপনি দিন দিন চরম মাত্রার অসভ্য হয়ে যাচ্ছেন।পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ অসভ্যের উপাধি দেয়া উচিত আপনাকে।লাজ – লজ্জার মাথা খেয়েছেন।

— বউয়ের কাছে লজ্জা পেলে কি করে হবে বলো তো দেখি।বউ তো আদর করার জিনিস লজ্জা পাওয়ার জিনিস।

— ছিহঃ এসব কথা কোত্থেকে শিখছেন।এত অশ্লীল কথা কি করে বলতে পারেন আপনি।

— বউ কাছে থাকলে অশ্লীল কথারা মুখ ফসকে বেড়িয়ে আসে।প্রেম প্রেম ভাব অটোমেটিকলি চলে আসে।বউকে খুব করে আদর করতে ইচ্ছে করে।রিসেন্টলি আদর করার ইচ্ছেটাকে চেপে রাখতে হচ্ছে তবে আর বেশি সময় নেই। খুব শ্রীঘ্রই আমার অপেক্ষা শেষ হতে চলেছে।আর মাত্র ৪৮ ঘন্টার এই দুরত্ব।আমার পাগলামিরা তোমাকে জানিয়ে দিবে ঠিক কতটা! ঠিক কতটা চাই তোমায় আমি।আমার মন গহীনে শুধুই তোমার বসবাস।আমার অস্তিত্বের সবটা জুড়ে শুধু তুমি আর তুমি।আমার ভালোবাসার প্রতিটি স্পর্শকে গভীরভাবে উপলব্ধি করার জন্য প্রস্তুত হন মিসেস ফয়সাল আহমেদ স্রোত।

তার প্রতিটি কথার মাঝে কেমন এক অদ্ভুত নেশা কেমন এক ঘোর কাজ করছে।মনের মাঝে তোলপাড় করা কোন এক অদৃশ্য ঝড় বইছে।তার প্রতিটি বাক্যের মাঝে কিছু তো আছে।উনি এখনও ওভাবে কোমর আকড়ে দাড়িয়ে আছেন।মাঝে মাঝে নিস্তব্ধ রাতের হিমশীতল আবহাওয়ার সাথে তাল মিলিয়ে দুলে উঠছেন।এই রাতের শীতলতা যেমন আমাকে কাপিয়ে তুলছে।ঠিক তেমনি তার ওই শীতল নেশা জড়ানো কণ্ঠ আমার হৃৎস্পন্দনের গতি বিধি বাড়িয়ে তুলেছে। তিনি এবার আমাকে পিছন থেকে জরিয়ে আমার খোলা এলোমেলো চুলে নাক ডুবিয়ে দিলেন।পুনরায় কাপন ধরলো পুরো শরীর জুড়ে। বুকের ভিতর ধুকপুক ধুকপুক শব্দ হচ্ছে। অনুভব করতে পারছি সে শব্দ। মনে হচ্ছে এখুনি বেরিয়ে আসবে আমার হৃদপিণ্ডটা।তার প্রতিটি কথা,প্রতিটি শব্দ বারবার কানে বাজছে। শেষ বাক্যটি প্রতিধ্বনিত হয়ে বারবার কর্নকুহুরে ফিরে ফিরে আসছে।”আমার ভালোবাসায় প্রতিটি স্পর্শকে গভীরভাবে উপলব্ধি করার জন্য প্রস্তুত হন মিসেস ফয়সাল আহমেদ স্রোত। ” মিসেস ফয়সাল আহমেদ স্রোত! সত্যি আমি মিসেস ফয়সাল আহমেদ স্রোত! তার অর্ধাঙ্গিনীরুপে এই প্রথমবার! এই প্রথমবার এমন উক্তি! এমন উপাধি প্রাপ্ত এই আমি! আমার মনের মাঝে ভালোবাসারা হুহু করে জানান দিচ্ছে আমি তার একমাত্রই তার! সে কেবলই আমার! আর কারো নয়! কারো না! কখনো না! কিছু কিছু আনন্দ প্রকাশের বাহিরে।ভাষা থাকে প্রকাশের।তার প্রকাশ জানান দেয় শুধুমাত্র অশ্রু! আনন্দ অশ্রু। ভালোবাসার মানুষটিকে একান্তই নিজের করে পাওয়ার আনন্দ, ভালোবাসার প্রাপ্তি ঠিক কতটা সুখকর অনুভূতির সংমিশ্রন সে শুধু তারাই বোঝে যারা সেটা অনুভব করতে পেরেছে।যারা পেরেছে তারা ভাগ্যবান! ভিষন ভাগ্যবান!সে আনন্দে যে দুটো অশ্রু অজান্তেই অক্ষিকোটর থেকে ঝড়ে পড়ে তাই আনন্দ অশ্রু। এই চোখের জল ও ভিশন কনফিউশন ক্যাটাগরির। খুশিতেও টপটপ করে ঝড়ে আর দুঃখেও।স্রোত ভাইয়ের থেকে প্রাপ্ত প্রতিটি আঘাতেও ঝড়েছে আর আজ তার ভালোবাসার প্রাপ্তি হয়েও ঝড়ছে।আমার চোখের কোনের দুফোটা অশ্রু তার আড়ালে সন্তপর্ণে মুছে নিলাম।

আমি আমার সকল অনুভূতিকে আড়াল করার চেষ্টা করলাম।নিজেকে সামলে নিয়ে বললাম,

— এত রাতে আপনি এখানে কেন এসেছেন? আর কিভাবে এলেন?

— কেন এসেছি তা বোঝার বাকি থাকলে সমস্যা নাই।আমি দ্বিতীয় বার বোঝাতে প্রস্তুত।ইনফ্যাক্ট দ্বিতীয় বার বোঝানোর সুযোগ পেলে আমি বেশ খুশি হব।মে আই?

বলেই উনি দুষ্টু হাসলেন।উনার ঠোঁটের কোনে লেগে থাকা বাঁকা হাসি দেখে টনক নড়লো আমার।বুঝতে পারলাম যে অস্বস্তি কাটাতে গিয়ে মাথা ঘেটে গেছে। নিজেকে এলোমেলো করে ফেলছি।নিজেই যদি এলোমেলো হয়ে যাই তবে এনার পাগলামিগুলো সামলাবো কি করে! উনার দুষ্টুমি বুঝতে দেরি তার থেকে ছিটকে আসতে দেরি নেই।আমার এভাবে আচমকা তার থেকে দুরে সরে যেতে দেখে ঠোঁট টিপে হাসলেন তিনি।

— আপনি না ভিশন বাজে হয়ে গেছেন।আর একটাও বাজে কথা না।এবার ঘরে ফিরে যান।কেউ দেখলে কি ভাববে বলুন তো।কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে।সবার কাছে লজ্জায় পড়তে হবে। সবাই এটা সেটা বলবে আমায়।এমনিতেও আপনার জন্য বিকালে ভয়াবহ বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে আমাকে।কেউ এভাবে বলে? এত ভয়ংকর কথা বলতে একবারও বুক কাপলো না আপনার! আপনি ভিশন নির্লজ্জ একজন বাজে লোক।

— এই ভয়াবহ বিড়ম্বনায় পড়ার দায় সম্পূর্ণ আপনার মিসেস।দুপুরবেলা আমাকে বিবস্ত্র অবস্থায় পেয়ে যা ভয়ংকর কান্ড ঘটিয়েছেন তার ছোট্ট একটা ডেমো ছিল।আপনার এরকম ভয়ংকর কার্যকলাপে আমার জীবন অতিষ্ট। আমার মত শান্ত ভদ্র মানুষটাকে চরম অসভ্য, নির্লজ্জ, বেহায়া হতে বাধ্য আপনি করেছেন।আর এখন আমি বেহায়া হলেই দোষ।বউকে একটু আদর করতে চাইলেই আমি নির্লজ্জ আর তুমি যে আমাকে একা পেয়ে আমার ইজ্জত লুটে নিলে তার বেলায়।

তার এমন অদ্ভুত কথা আর যুক্তির ফলে আমি জাস্ট বাকহারা।তাকে ঠিক কি বলবো খুঁজে পাচ্ছি না।আমি কি এমন করেছি শুধু একটা চুমুই তো খেয়েছি। তার জন্য তিনি এরুপ বেহায়ার মত আচরন করবেন।সোজা দিদুনের কাছে গিয়ে বলে দিলেন দুদিনের মধ্যেই বিয়ে হবে।লোকটি কি পাগল নাকি? সরু চোখে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করে তাকে কিছু বলার পূর্বেই সে বললো,

— আমাকে পাগল বানিয়ে এখন খুব মনোযোগ সহকারে ভাবা হচ্ছে আমি পাগল কিনা।তাহলে জেনে রাখো জানপাখি! তোমার বর পাগল।তোমার জন্য পাগল।তোমার এসব পাগলামিতে নিজেকে সামিল করবো বলে আমি পাগল।

আমি তার কথা শুনে আলতো হাসলাম।
— এখন আপনার পাগলামির চ্যাপ্টার ক্লোজ করুন আর এখান থেকে যান।নয়তো ভিষন বিপদে পড়বো।দিদুন উঠে যেতে পারে।

— উঠলে উঠবে।একসাথে দুজনকে হ্যান্ডেল করার মত এবিলিটি আছে আমার।

— হুম।বুঝলাম।তবে এখন আপনি যান প্লিজ।

— উহু। এখন তো যেতে পারবো না।আমার তো রিটার্ন গিফট চাই।আর সেটা ছাড়া একপাও নড়ছি না আমি।এমনিতেই তোমার দুপুরের ডোজ আমার সারাদিনটাকে এলোমেলো করে দিছে।আমার মত গুছালো শান্ত- শিষ্ট ভদ্রছেলের হাল বেহাল করে ছেড়েছে।আমার উচিত আমার এমন করুন দশার জন্য তোমাকে শাস্তি দেওয়া। তবে এখন সেটা দিব না।সব শাস্তি সময়মত পেয়ে যাবেন আপনি।দুবছরের প্রতিটি মুহূর্তের দুরত্বের শাস্তি। আর সেই শাস্তি হবে পৃথিবীর সবথেকে রোমান্টিক শাস্তি।সে শাস্তির প্রতিটি স্পর্শে পাবে শুধুই ভালোবাসা! আমার ভালোবাসা মোড়ানো শাস্তি উপহার দিব তোমায়।

তার নেশাক্ত কথায় কাপন ধরলো আমার।হাত – পা রীতিমতো কাঁপা- কাঁপি অবস্থা। নিশ্বাস আটকে আসছে। এই লোকটার এই মোহময়ী কথাই যে আমাকে দিশেহারা করতে যথেষ্ট। তার কথিত ভালোবাসায় মোড়ানো শাস্তি কি করে সইবো আমি! কি করে!

চারপাশ নিসর্গতায় ছেয়ে আছে।কোথাও থেকে ভেসে আসছে আষাঢ়িয়া মেঘের দল।গ্রীষ্মের শেষ। বর্ষার শুরু।এসময় মৃদুমন্দ বাতাসে ছাপিয়ে থাকে প্রকৃতিতে।হুটহাট ভেসে আসা আষাঢ়িয়া মেঘ ঝাপিয়ে নামে ঝপঝপে বৃষ্টি। কখনো মুষলধারে। পথঘাট ডুবে জলে থইথই।তবে কাল বৈশাখির পর এখন অবধি ঝাপিয়ে বৃষ্টি হয়নি।গ্রীষ্মের প্রখরতায় অতিষ্ঠ মানব- মানবি। এমন সময় ধেয়ে আসা হুটহাট মেঘের আগমন মনে প্রশান্তির ছোয়া জাগায়।শীতল বাতাস গায়ে হিম ধরায়।শরীরে কাটা দেওয়া হিম শীতল হাওয়ায় হেলে দুলে ওঠা আমার অবাধ্য চুলগুলো কানের পিছে গুজে দিলেন।তার স্পর্শে আবেশে চোখ বুজে নিলাম।সে শান্ত – শীতল অথচ মাদকমিশ্রিত চাহনি নিক্ষেপ করলো।আমিও মুগ্ধতা নিয়ে খানিকক্ষণ তার গভীর দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলাম।তার পর আনমনেই দুপা এগিয়ে তার মুখোমুখি দাড়ালাম।আমার থেকে বেশ লম্বা হওয়ায় পা দুটো উঁচু করে তার ললাটে চোখ বুজে গভীরভাবে অধর ছোয়ালাম।উনি ভিষন ভাবে চমকে গেলেন।চমকালাম আমিও।তিনি হয়তো ভাবতেও পারেননি আমি এমন কিছু করবো! আসলে আমি নিজেও জানি না আজকাল হুটহাট কি হয় আমার।যত ভয়ংকর ঘটনা অনায়াসেই ঘটিয়ে ফেলি আমি।আশাবিহীন অপ্রাপ্তির ভিড়ে এ যেন এক বিশাল প্রাপ্তি।লজ্জা,সংকোচ আর অস্বস্তি নিয়েই ছুট লাগালাম। তবে এগোতে পারলাম না।তার আগেই শক্ত হাতের নরম স্পর্শে আটকে গেলাম।উনি একটানে আবারো তার কাছে আনলেন। দুগালো হাত রেখে মুখে ফু দিলেন।পাপড়িগুলো আলতো করে পিটপিটিয়ে আবারো স্নিগ্ধ চাহনিতে তাকালাম তার মায়াবী মুখ খানায়।উনি নিচু স্বরে বললেন,

— আঘাত যখন দিয়েছো সারিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব ও তোমার।হয়তো সহজে সারবে না।তবে তোমার ছোয়ায় সে ক্ষত বিক্ষত স্থান দ্রুত আরোগ্য লাভ করবে।যেভাবে আমার উষ্ণ হৃদয়কে শীতল করেছো সেভাবেই এই ক্ষতকেও শীতলতা দিয়ে যাও।বলেই উনি আঘাত প্রাপ্ত হাতটা এগিয়ে আনলেন।ক্ষতটা দেখেই বুকের ভিতরটা মোচড় দিল।তীব্র অনুশোচনা আর আত্মগ্লানিতে বিষাক্ত হয়ে উঠলো হৃদয়।এসব কিছুর চক্করে ক্ষতর কথা বেমালুম ভুলেই গেছিলাম।অস্থির হয়ে তার ক্ষতটাকে নিজের কাছে টেনে দেখতে লাগলাম।রাগ,ক্ষোভ ভিড় করলো মনে। কি করে ভুলে গেলাম? এতটা কেয়ারলেস কেন আমি? অস্থির কন্ঠে সুধালাম,

— আপনি এতটা কেয়ারলেস কেন বলুনতো? কতটা কেটে গেছে আর তখন থেকে একটু উফফ পর্যন্ত না করেননি।

— যার কেয়ার করার কথা সে নিজেই তো ভুলে গেছে।আমি আর কি মনে রাখবো।

আমি অসহায় করুন চাহনি দিলাম।উনি হাসলেন।তারপর বললেন,

— আমি জানি তুমি ইচ্ছে করে করোনি।ভুলে গেছো।ইটস ওকে।তোমার জন্য যেখানে মর……

আর বেশিকিছু উচ্চারন করার আগেই মুখ চেপে ধরি তার।আর শোনার সাধ্য আমার নেই।সবটা শোনার আগে যেন আমার মরন হয়।এই প্রার্থনাই করি রোজ মহান রাব্বুল আলামীনের কাছে।আমি নিজেকে সামলাতে না পেরে তৎক্ষনাৎ জরিয়ে ধরি তাকে।তিনি আলতো করে হাত বুলিয়ে দেন আমার মাথায়। কিয়ৎক্ষন অতিবাহিত হবার পর দ্রুত ওড়না টেনে ছেড়ার চেষ্টা করলাম।কাজ হচ্ছে না।আমার কাজ দেখে উনার ঠোঁট যুগলে হাসি ফুটলো। প্রাপ্তির হাসি! আমি দাঁত দিয়ে কাপড়ে একাংশ ছিড়ে নিলাম।তারপর টেনে কতখানি ছিড়ে তার বাহুতে বেধে দিলাম।খুব বেশি না হলেও কম রক্তক্ষরণ হয়নি।অপরাধী মনে হচ্ছে নিজেকে।আমার খেয়াল রাখা উচিত ছিল।

ওড়না বাধতে বাধতে উনার চোখের দিকে দৃষ্টি দিলাম কেমন মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে আছে।আর ঠোঁটে মুদু হাসির রেখা। যার তার মোহময় রুপকে আরো মোহিত করছে।প্রেয়সী যখন তার প্রেমিক পুরুষের ক্ষত স্থান যত্ন নেই তখন সেটা হয় অমায়িক এক মুহুর্ত। এমন মুহুর্তগুলো স্মৃতির পাতায় রয়ে যাবে আজন্ম কাল।কখনো বিচ্যুত হবে না। কখনো কোনো বৃষ্টিভেজা মুহূর্তে কিংবা কোন পড়ন্ত বিকালে বেলকনির রেলিং ঘেষে বসে সেই মুহুর্তগুলোর স্মৃতিচারন হবে।কখনো বা গোধূলির রুপের আলোর সংমিশ্রনে গড়ে ওঠা প্রেমিক – প্রেমিকার সাক্ষী হয়ে থাকবে।

বাধা শেষ হতেই উনি আমাকে দুহাতে গাল আগলে মাথার চুলে ভালোবাসার পরম আবেশ দিলেন।

–অনেক রাত হলো ঘুমিয়ে পড়ো।আমি আসছি।
বলেই যেইনা উনি বারান্দার রেলিং এ হাত রেখেছে ওমনি তার হাত ধরে আটকে দিলাম।মাথা নাড়িয়ে ইশারায় না বোঝালাম তারপর হাত ধরে টেনে পা টিপে টিপে ঘরে এনে দরজা খুলে দিলাম।তিনি মুচকি হেসে চলে গেলেন।

আমি দরজা বন্ধ করে পা টিপে টিপে সুয়ে পড়লাম।অল্প সময়ের মধ্যেই ঘুমের দেশে পাড়ি দিলাম।

#চলবে……

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে