Monday, October 6, 2025







বাড়ি"ধারাবাহিক গল্প"তুমি এলে তাই পর্ব-০২

তুমি এলে তাই পর্ব-০২

#তুমি এলে তাই ❤
#লেখিকা: অনিমা কোতয়াল
#পর্ব- ২
.
পুরনো ক্ষত স্হানে যদি আঘাত করা হয় তাহলে মানুষ চিৎকার করে ওঠে কিন্তু গুঞ্জন এমন একটা মেয়ে যার পুরোনো ঘায়ে আঘাত করলে ও চুপ হয়ে যায় আর আরও বেশি রুড হয়ে যায়। আজ স্পন্দন গুঞ্জনের পুরোনো ঘায়ে আঘাত করেছে। সেই আঘাতে বাইরে দিয়ে নিজেকে শান্ত রাখলেও ওর ভেতর দিয়ে কী যাচ্ছে শুধু ওই জানে। প্রচন্ড জোরে বাইক চালাচ্ছে ও। যদিও রাস্তা ফাঁকা থাকায় তেমন কোনো সমস্যা হচ্ছে না, তবে এতোটা জোরে বাইক চালানোটাও ওর জন্যে যথেষ্ট রিস্কি। কিন্তু গুঞ্জন এসবের ধার ধারে না কখনোই।

আর এদিকে প্রাপ্তি গুঞ্জনের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,

— ” দেখ আজকে আবার কার সাথে ঝামেলা বাধিয়েছে।”

অঙ্কুর ও নিস্তেজ কন্ঠে বলল,

— ” চল তাহলে। আজ তো আর কিছুই হবেনা।”

হতাশভাবে গুঞ্জনের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থেকে ওর বন্ধুরা চলে গেলো নিজেদের গন্তব্যে।

আর ওপর দিকে বাড়ি ফিরে বেডে আধশোয়া হয়ে ল্যাপটপে কাজ করছে স্পন্দন। কিন্তু কাজে মন দিতে পারছেনা। না চাইতেও বারবার গুঞ্জনের ওইসব বাজে ব্যবহার, ওর সাথে ওইভাবে কথা বলা সব ভেসে উঠছে চোখের সামনে। যেখানে ওর পরিবারের লোকও ওর সাথে গলা উচু করে কথা বলার সাহস পায়না। সেইখানে এই পুচকি মেয়ের এতো সাহস হয় কীকরে? ইচ্ছেতো করছিলো ঠাটিয়ে দুটো চড় বসিয়ে দিতে মেয়েটার গালে কিন্তু বহু কষ্ঠে নিজেকে সামলাতে হয়েছে। কিছুতেই এসব মাথা থেকে না ঝাড়তে পেরে ল্যাপটপটা বন্ধ করে শুয়ে পরে ঘুমানোর চেষ্টা করতে লাগল স্পন্দন।

_______________________

স্পন্দন সকাল আটটায় অফিসের জন্যে একবারে রেডি হয়ে নিচে নেমে ডাইনিং টেবিলে বসলো। এতক্ষণ টেবিলে উপস্হিত সকলে হাসিমজা করলেও স্পন্দনকে দেখে চুপ হয়ে গেলো, কারণ স্পন্দনের খাওয়ার সময় বেশি কথা বলা একেবারেই পছন্দ না। স্পন্দের পরিবারটা বেশ ছোটই। বাবা, মা আর ছোট এক বোন নিয়েই ওর ফ্যামিলি। সবাইকে চুপ থাকতে দেখে স্পন্দন ভ্রু কুচকে সবার দিকে তাকিয়ে বলল,

— ” খাওয়ার সময় আমি বেশি কথা বলতে বারণ করেছিলাম। কিন্তু এভাবে মুখ বন্ধ করে রাখতে বলিনি।”

স্পন্দনের বোন সারা খেতে খেতে বলল,

— ” হ্যাঁ সেই পরে একটু বেশি কথা বললেই ধমক দিয়ে বসিয়ে রাখবি।”

স্পন্দন খাওয়ার জন্য শার্টের হাতা ফোল্ড করতে করতে বলল,

— ” সব কিছুরই একটা লিমিট থাকতে হয়। ওভার কোনো কিছুই ভালো নয়। সেটা যাই হোক।”

স্পন্দনের বাবা আরহান চৌধুরী স্পন্দনের দিকে তাকিয়ে বলল,

— ” আজ এতো তাড়াতাড়ি বেড়োচ্ছো।”

স্পন্দন খাবারের চামচ নাড়তে নাড়তে বলল,

— ” বাবা ইটস এইট এ এম। খুব বেশি তাড়াতাড়ি বেড়োচ্ছি না। তাছাড়া আজ মিটিং আছে।”

সারা একটু ইতস্তত করে বলল,

— ” ভাইয়া আজতো আমার ভার্সিটির প্রথম দিন। আসার সময় একটু নিয়ে আসবি আমায়?”

স্পন্দন কিছুক্ষণ চুপ থেকে ভেবে বলল,

— ” ওকে ডান।”

সারা খুশি হয়ে বলল,

— ” থ্যাংকস আ লট ভাইয়া।”

স্পন্দন মুচকি হাসলো মিসেস চৌধুরী সারার দিকে তাকিয়ে বললেন,

— ” হ্যাঁ অনেক হয়েছে এবার চুপচাপ খাওতো। তোমাদের কথার জন্যে ছেলেটা খাওয়া শুরু করতে পারছেনা।”

সবাই এবার চুপ হয়ে গেলো আর স্পন্দনও খাওয়ায় মনোযোগ দিলো। খাওয়া কম্প্লিট করে সকলের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে অফিসের উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে গেলো। স্পন্দন বেড়োতেই তিনজনেই একটা স্বস্তির নিশ্বাস নিলো। সিংহ বেড়িয়েছে বাড়ি থেকে এবার সবাই একটু নিজেদের মতো নিশ্চিন্তে ভয়হীনভাবে কাজ করতে পারবে।

_____________________

এদিকে রিয়াদ হোসেন সোফায় বসে চা খাচ্ছেন। একটু পরেই ওনার ছোট ভাই রাশেদ হোসেন এসে ওনার পাশে এসে বসে হাক ছেড়ে বললেন,

— ” ভাবী আমার চা টা দিয়ে যাও।”

মিসেস নিলিমা এসে চা টা নিয়ে টি- টেবিলে রেখে ঘাম মুছতে মুছতে বসে বলল,

— ” আবির টা কোথায় রে?”

বলতে না বলতেই আবির এসে সিঙ্গেল সোফায় বসে বলল,

— ” এসে গেছি আম্মু আমার ব্রেকফাস্টটা দাও অফিস যাবো।”

মিসেস নিলিমা হেসে বললেন,

— ” বস বলে এসছি আমি এক্ষুনি নিয়ে আসবে।”

আবির এদিক ওদিক তাকিয়ে বলল,

— ” তা তোমাদের মেয়ে কোথায়?”

মিসেস নিলিমা এবার বিরক্ত হয়ে বসে বললেন,

— ” ওই মেয়ে কখন বাড়িতে আসে কখন যায়, কোথায় থাকে, কী করে, সেসব কী আমাদের জানার উপায় আছে?”

রিয়াদ হোসেন একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললেন। রাশেদ হোসেন চায়ের কাপ রেখে বললেন,

— ” দেখো ভাইয়া মেয়েটা এমনিতেই হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে। তাই বলি কী ওকে বিয়ে দিয়ে ঘর থেকে বিদায় করো। বেঁচে যাবে।”

তখনি ওখানে গুঞ্জন ওর রুম থেকে বেড়িয়ে আসতে আসতে বলল,

— ” কেনো কাকু? আমাকে বিদায় করতে পারলে তোমার আর কাকীর বুঝি খুব সুবিধা হয়?”

গুঞ্জন এই কথাটা বলতেই রাশেদ হোসেনের স্ত্রী মিসেস অনিলা এসে রাগে গজগজ করে এসে বললেন,

— ” এই মেয়ে এই? সবসময় আমাকে কেনো টানিস সব কথায়?”

গুঞ্জন হালকা হেসে ওখানে রাখা টেবিলের ওপর একঝটকায় উঠে বসে বলল,

— ” এইতো এতোক্ষণ কোথায় ছিলে বলোতো? আব হুয়া না ফ্যামিলি পুরি। নাও এবার শুরু করো।”

এতক্ষণ চুপ থাকলেও এবার রিয়াদ হোসেন রেগে বললেন,

— ” এই মেয়ে চুপ! বড়দের সাথে কীভাবে কথা বলতে হয় সেই শিক্ষাটাও নেই তোমার মধ্যে?তোমার জন্যে আর কতো লজ্জিত হবো আমি?”

মিসেস নিলিমাও বললেন,

— ” কীসের শত্রুটা তোমার সাথে আমাদের। যে দুটো মিনিট শান্তি দিতে পারোনা। কীসের শাস্তি দিচ্ছো?”

গুঞ্জন পা দোলাতে দোলাতে কথাগুলো শুনছে। এমন মনে হচ্ছে যেনো খুব এনজয় করছে কথাগুলো । অনিলা বেগম মুখ বাকিয়ে বললেন,

— ” দেখো কীভাবে লাটের বিবি হয়ে বসে আছে।”

আবির এবার উঠে এসে গুঞ্জনের হাত ধরে টেনে টেবিল থেকে নামিয়ে হাতে চাপ দিয়ে ধরে বলল,

— ” লজ্জা করেনা তোর? রোজ এতো কথা শুনিস তবুও গায়ে লাগেনা না? গায়ে গন্ডারের চামড়া নিয়ে ঘুরিস নাকি?”

গুঞ্জন হাত ছাড়িয়ে বলল,

— ” কাম অন ভাইয়া। তুই জানিস আমি এরকমি। তবুও কেনো জ্ঞান দিতে আসিস? রোজকার মতো দুটো চড় থাপ্পড় মেরে ঝাল মিটিয়ে নে ব্যাস হয়ে গেলো।”

এরমধ্যে আবিরের খাবারটা চলে এলো আবির কিছু না বলে সোফায় বসে খাওয়া শুরু করলো। গুঞ্জন মিসেস নিলিমার দিকে তাকিয়ে বলল,

— ” ভার্সিটি যাবো, কিছু খেতে দেবে?”

মিসেস নিলিমা খাবার আনতে যাবে তখনি গুঞ্জনের কাকা রাশেদ হোসেন বললেন,

— ” হ্যাঁ সেই ফ্রিতে ঘরে বসে শুধু গিলতেই তো জানো। অকারণেই অন্নধ্বংস আর কী!”

মিসেস অনিলা ভ্রু কুচকে বললেন,

— ” কী আর করবে বলো? মেয়েটা তো ওনাদেরই তাই এখন সেই দ্বায় তো সারতেই হবে।”

গুঞ্জন কিছু না বলে শুধু একবার রিয়াদ হোসেনের দিকে তাকিয়ে চলে গেলো ভার্সিটির উদ্দেশ্যে। আবিরও সাথে সাথেই উঠে দাড়িয়ে চলে যেতে নিলেই, মিসেস নিলিমা বলে উঠলেন,

— ” কী রে? উঠছিস কেনো? কিছুইতো খেলিনা?”

আবির ব্যাগ হাতে নিয়ে বলল,

— ” তোমার মেয়ের জন্যে কিছুতে শান্তি আছে নাকি? খাওয়া হয়ে গেছে আমার। তোমার মেয়েকেই ধরে এনে গেলাও।”

বলেই আবির বেড়িয়ে গেলো। সবাই কিছুক্ষণ নিরবতা পালন করে যে যার যার কাছে মনোযোগী হলো।

________________________

ভার্সিটি বাইক পার্ক করতেই গুঞ্জনের বন্ধুরা এগিয়ে এলো। প্রাপ্তি একটা স্বস্তির নিশ্বাস নিয়ে বলল,

— ” ভাগ্যিস আজ এলি। আমরাতো ভেবেছিলাম আসবিই না।”

গুজন কোনো উত্তর না দিয়ে বাইক থেকে নেমে বলল,

— ” ক্যানটিনে চল।”

কথাটা বলে চাবিটা জিন্সের পকেটে রাখতে রাখতে হাটা শুরু করল। ওরা সবাই ওর সাথে যেতে লাগল। ওরা সবাই মিলে ক্যান্টিনে বসতেই অঙ্কুর বলল,

— ” কাল কী হয়েছিলো বলতো তোর? এভাবে চলে এলি?”

গুঞ্জন টেবিলে হাত রেখে রাগী গলায় বলল,

— ” কিছুনা। একটা পাগল আমার মাথাটাই বিগড়ে দিয়েছিলো।”

জয় একটু হেসে বলল,

— ” সেতো সারাক্ষণই বিগড়ানো থাকে।”

গুঞ্জন রাগে কটমট করে তাকাতেই জয় চুপ হয়ে গেলো। গুঞ্জন কিছু একটা ভেবে বলল,

— ” কী রে? আমি একাই খাবো? তোরা কিছু খাবিনা?”

অঙ্কুর একটু হেসে বলল,

— ” সবাই বাড়ি থেকেই খেয়ে এসছে পেট ভরা আছে সবার।”

প্রাপ্তিও বলল,

— ” হ্যাঁ রে আসার আগে আম্মু জোর করে একটু বেশিই খাইয়ে ফেলেছে। কিচ্ছু খেতে পারবোনা রে এখন?”

গুঞ্জন কিছুক্ষণ চুপ থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বলল,

— ” চল ক্লাসে চল।”

জিহাদ অবাক হয়ে বলল,

— ” এইতো খাবি বললি এখন কী হলো?”

গুঞ্জন বিরক্ত হয়ে হালকা চেঁচিয়ে বলল,

— ” তখন বলেছি খাবো এখন বলছি খাবোনা। ব্যাস মিটে গেলো এতো কথার কী আছে?”

প্রাপ্তিও উঠে দাঁড়িয়ে বলল,

— ” আচ্ছা কুল। এতো রেগে যাচ্ছিস কেনো? ওকে চল ক্লাসেই চল।”

গুঞ্জন ওদের রেখেই হনহনিয়ে ক্লাসের উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে গেলো আর ওরা কিছুক্ষণ হেবলার মতো তাকিয়ে থেকে গুজ্ঞনের পেছনে ছুট লাগালো।

ক্লাস শেষ করে সারা সবে বেড়িয়েছে গেইটের কাছে যেতেই কিছু ছেলে মিলে ঘিরে ধরলো ওকে। সারা তো বেশ ঘাবড়ে গেলো। কারণ ও এমনিতেই ভীতু টাইপ। একটা ছেলে সারাকে পা থেকে মাথা অবধি স্কান করে বলল,

— ” ফার্স্ট ইয়ার?”

সারা কাঁপা কাঁপা গলায় বলল,

— ” জ্ জ্বী হ্যাঁ।”

ছেলেটা একটু হেসে সারাকে নকল করে বলল,

— ” ত্ তোমার ন্ নাম ক্ কী?”

বলা শেষ হতেই সবগুলোতে মিলে হাসতে লাগল। সারা খুব নরম আর ভীতু একটা মেয়ে। তাও আবার আজ কলেজে প্রথম দিন। ভয়ে পুরো কেঁদেই দিয়েছে ও। ওখানের একটা ছেলে সারাকে বলল,

— ” কী হলো মামনী কাঁদছো কেনো? নাম বলো? ”

সারা কাঁপা কাঁপা গলায় বলল,

— ” সারা।”

ছেলেটা হেসে বলল,

— ” তো সারা বেইবি আমরা তোমার সিনিয়র। আর এটা নিশ্চয়ই জানো যে সিনিয়রদের সব আদেশ মানতে হয়?”

সারা ভয়ে হ্যাঁ বোধক মাথা নাড়ল। আরেকটা ছেলে বলল,

— ” তো আমাদের একটু নেচে দেখাও তো।”

সারা তো এবার ফুপিয়ে কেঁদে দিলো ও শুনেছিলো যে ভার্সিটিতে নাকি এসব হয় কিন্তু ও নিজেও যে এসবের শিকার হবে সেটা কল্পনাও করেনি।

আর এদিকে সবে ক্লাস থেকে বেড়িয়েছে গুঞ্জনরা হঠাৎ দেখলো গেইট এর দিক দিয়ে একটা মেয়েকে ঘিরে কয়েকটা ছেলে দাঁড়িয়ে আছে আর মেয়েটা গুটিশুটি মেরে দাঁড়িয়ে মাথা নিচু করে কেঁদে যাচ্ছে। আর ছেলেগুলো কিছুক্ষণ পর পরই হেসে যাচ্ছে। অঙ্কুর বলল,

— ” দেখ হয়তো র‍্যাগিং করছে। এরাও না, নিজেদের কী যে ভাবে।”

গুঞ্জন ওর ব্যাগটা খুলে প্রাপ্তির হাতে দিয়ে বলল,

— ” দেখছি..”

ছেলেটা সারাকে এবার ধমকের সুরে বলল,

— ” কী হলো কী নাচো?”

বলে সারা গায়ে যেই হাত দিতে যাবে ঠিক তখনি পেছন থেকে কেউ বলে উঠলো,

— ” নাচ দেখার খুব শখ দেখছি ভাইয়াদের?”

গলার আওয়াজ শুনেই ছেলেগুলো চমকে পেছনে তাকিয়ে দেখলো গুঞ্জন হাত ভাজ করে দাঁড়িয়ে আছে। ওকে দেখে ছেলেগুলো ঘাবড়ে গেলো। একজন কাঁপাকাঁপা গলায় বলল,

— ” দেখ গুঞ্জন তোর সাথে আমরা কিন্তু এখন কিছুই করিনি। তাই তুই আমাদের কাজে নাক গলাতে আসিসনা।”

গুঞ্জন পকেটে হাত ঢুকিয়ে এগিয়ে এসে মেকি হেসে বলল,

— ” কী করবো বলো? বড় সিনিয়র ভাই তো তোমরা তোমাদের ইচ্ছা অপূর্ণ কীকরে রাখি। এ বেচারি তো নাচতে পারেনা। তাই ভাবলাম তোমাকে আমার নাচ দেখাই? মনে আছে তো সেদিনের কথা? তো শুরু করি নাচ?”

ছেলেগুলো কথা না বাড়িয়ে একপ্রকার কেটে পড়লো ওখান থেকে। গুঞ্জন ওদের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে হালকা চেঁচিয়ে বলল,

— ” আরে ভাইয়ারা কোথাও যাচ্ছো নাচ দেখবে না?”

গুঞ্জনের বন্ধুরাও হাসতে হাসতে এগিয়ে আসলো। অঙ্কুর হাসতে হাসতে বলল,

— ” সেদিনের হকিস্টিক এর বারি ভোলেনি এখনো।”

গুঞ্জন এবার সারার দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে হাত ধরে নিজের দিকে ঘুরিয়ে বলল,

— ” কী হয়েছে হ্যাঁ? এভাবে ভ্যা ভ্যা করে কাঁদছো কেনো? তোমাকে এতো কথা বলার সাহস পায় কীকরে ছেলেগুলো? মেয়ে হয়েছো বলে কী ছেলেদের ভয় পেয়ে চলতে হবে নাকি? মুখটা শুধু খাওয়ার জন্যে আর হাতটা চুড়ি পরার জন্যে দিয়েছেন সৃষ্টিকর্তা? নিজের জন্যে লড়তে না জানলে জানোটা কী?”

স্পন্দন সারাকে নিতে কলেজে এসে দেখে কালকের সেই মেয়েটি সারার হাত ধরে ধমকে ধমকে কিছু একটা বলছে আর সারা কাঁদছে। এটুকু দেখেই চোয়াল শক্ত হয়ে এলো স্পন্দনের। কালকে ওর সাথে খারাপ ব্যাবহার করেছে আর আজ ওর বোনকে নিয়ে পরেছে। নিশ্চয়ই র‍্যাগিং করছে, এতোটা খারাপ কোনো মেয়ে কীকরে হয়? কাল ছেড়ে দিলেও আজ এই মেয়েকে ছাড়বেনা ও, ওকে ভালোভাবে বুঝিয়ে দেবে হু ইজ স্পন্দন চৌধুরী। রেগে স্পন্দন ওখানে যেতেই সারা নিজের ভাইকে দেখে ছুটে এসে জরিয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে বলল,

— ” ভাইয়া ওরাহ.. ওরা আমাকে..”

কান্নার জন্যে আর কিছু বলতে পারলোনা সারা। স্পন্দন ধীর কন্ঠে সারাকে বলল,

— ” যা গাড়িতে গিয়ে বস।”

সারা কাঁদতে কাঁদতে বলল,

— ” ভাইয়া…”

স্পন্দন রাগী গলায় বলল,

— ” গাড়িতে গিয়ে বস।”

সারা চলে যেতেই। স্পন্দন রাগী চোখে তাকালো গুঞ্জনের দিকে। গুঞ্জন ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে স্পন্দনের দিকে । স্পন্দন এগিয়ে গিয়ে গুঞ্জনের হাত চেপে ধরল গুঞ্জন তো অবাক হলোই সাথে বাকিরাও। গুঞ্জন কিছু বলবে তার আগেই ওর হাত ধরে হাটা দিলো স্পন্দন।

#চলবে…

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ