#তুই_আমার_অন্যরকম_নেশা_২
#সিজন-২
#পর্ব-১৮(নতুন মোড়)
#Jannatul_ferdosi_rimi(লেখিকা)
অয়রির ডায়রি,,৭মপৃসঠা
আজকে আমি এত্তো খুশি আজ আমার কাব্য আমার রাগ করেছি বলে লুকিয়ে বারান্দায় চলে এসেছে তাও আমাকে গান শুনিয়েছে
১ম পৃসঠা,,
আজ ভার্সিটির প্রথম দিন আজকে কয়েকটা গুন্ডার হাত থেকে একজন আমাকে বাঁচিয়েছে ছেলেটা দেখেই মনের মধ্যে আলাদা শিহরন বয়ে গেলো দেখতেও(লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌসি রিমি) কি সুইট যেন রুপকথার রাজপুত্র ছেলেদের এতো সুন্দর হতে হয়? আমার জানামতেনা আমার তো রিতিমত তার রুপ নিয়ে হিংসা হয় সবার থেকে জিজ্ঞাসা করে জানতে পারলাম ছেলেটার নাম কাব্য আমাদের ভার্সিটির ট্রাস্টি।।
৪র্থ পৃসঠা,,
আজকে আমার মতো খুশি মেইবি পৃথীবিতে কেউ নেই আজকে আমাকে কাব্য প্রপোজ করেছে তাও আমার ফেভেরিট পেয়ারা দিয়ে,, আমি তার মনের রাজ্যের পেয়ারারানী কি অদ্ভুদ নাম তাই না?
হঠাৎ কেউ পিমনি বলায় চোখের জল আড়াল করে অয়রি তার ডায়রি সযত্নে সেল্ফে রেখে দিলো আজ অনেকদিন পর অতীতের কিছু স্মৃতি নাড়া দেওয়ার অয়রির চোখের অবাধ্য পানি না চাইতেও ঝড়ে পড়লো
অয়রি মুচকি হেঁসে বলল–
আরে আমার মিস্টিবাচ্ছাটা কই
অয়রি কাউকে দেখতে পেলোনা
তখন দরজার আড়াল থেকে মিস্টি কন্ঠে
বলে উঠলো
-পিমনি আমি এখানে
অয়রি গিয়ে দরজায় দাড়ালো নিজের হাত প্রসারিত করলো–
দুটি ছোট্ট ছোট্ট নরম হাত অয়রির কাধে রেখে অয়রির কোলে ঝাপিয়ে পড়লো
মিস্টি
অয়রিঃ আমার মিস্টিবাচ্ছা টার এখন পিমনীর কথা মনে পড়লো?
মিস্টিঃ নাহ পিমনি আমি তো অনেত বেত্ত তাকি জানো?না?মামনি আমালে অনেক পতায় এক্তুও আদল করেনা
অয়রির মিথ্যে রাগ দেখিয়ে বলল–
কিহ এতো বড় সাহস? মেঘাপুর?আমার মিস্টিবাচ্ছাকে আদর করে না না এইটাতো ভারি অন্যায়
মিস্টিঃ হুম পিমনি তুমি এখন মামনিকে পাতিস্মেন্ত দিবা
অয়রিঃ এখন যখন আমার মিস্টিবাচ্ছা টা বলেই দিয়েচে পানিস্টমেন্ট তো দিতেই হবে
তখনি মেঘা আসে
মেঘাঃ এইযে পড়াফাকিবাজ মেয়ে একটা
পড়া ফাঁকি দিয়ে এখনি পিপির কাছে নালিশ করা হচ্ছে?
অয়রিঃ আহ মেঘাপু আমার মিস্টিবাচ্ছাকে একদম বকা দিবে না মাত্র ৩ বছরের একটা বাচ্ছা এতো পড়া লাগে?আমার মিস্টি এম্নিতেই কত টেলেন্টেড
মেঘাঃ তুমি আর তোমার ভাই এক হয়েছো
তোমরাই ওকে আদরে বাদর বানাচ্ছো
অয়রি অনেকটা ভাবার একটিং করে বলল-
তাহলে তুমি কি বাদরের মা?
মিস্টিঃ আমাল মাম্মা বাদলের মাম্মা তাই পিমনি
মেঘা গেলো চটে
মেঘাঃ সত্যি সবকয়টা হয়েছে এক কেউ আমার পক্ষেই নেই
মেঘা হনহন করে বেড়িয়ে গেলো
মিস্টিঃ থানকু পিমনি
মেঘাঃ You are most welcome সোনা
( অনেক ন্যাকামি হয়ছে এইবার আমি একটু বলি?)
সময়ে কারো জন্য অপেক্ষা করেনা সময় তার গতিবেধ অনুযায়ী ঠিকই চলতে থাকে
দেখতে দেখতে জীবন থেকে ৬ বছর অতিক্রম হয়ে গেলো মেঘা আর অনিকের একমাত্র মেয়ে মিস্টি নামের মতোও দেখতে ভারি মিস্টি বাবার কপি মায়ের মতো হাঁসে সে তার সাব সবাই মেনে নিলেও অয়রি এখনো মানে কাব্য পৃথিবীতে কোথাও না কোথাও আছে কেননা সে আজও কাব্যকে ফিল করতে পারে কাব্য ইচ্ছা ছিলো তার বউ একজন ডক্টর হবে তাই কাব্যের ইচ্ছা পুরনে অয়রি তার ফেভারিট সাব্জেক্ট রেখে ম্যাডিকাল নিয়ে পড়েছে আজ সে দেশের সেরা হার্ট সার্জন দের মধ্যে একজন ঈশা আর ইশান পবছর পরেই মুক্ত হয় প্রাপ্তি ৩ বছর পর আভির মৃত্যদন্ড হয় ঈশা আর ইশান খান বাড়িতে নিজের বাবা-মা দিদুন সবার সাথেই অানন্দে আছস প্রাপ্তিও তার ভুল বুঝে রিকের সাথে সুখের সংসার করছে ঈশার বিয়ে হয়ে গেছে রোহান ঈশার বেস্টফ্রেন্ড এর সাথে ৮ মাসের ছেলে আছে ইশানের সামনে বিয়ে তার বান্ধুবি মুনের সাথে সবাই নিজ লাইফে হেপি শুধু অয়রি ছাড়া সে এখনো কাব্যের পথ চেয়ে আছে ?)
মিস্টিকে নিয়ে অয়রি অনিকের ঘরে যায়
মিস্টি ছুটে গিয়ে তার পাপাকে জড়িয়ে ধরে
অনিকেরঃ আমার মামনিটার এখন সময় হলো আমার কাছে আসার পাপা রাগ করেছি
মিস্টিঃ তুপি রাগ কতেছো? পাপা?আমি তো পিমনির কাছে গিছিলাম মাম্মার নামে বিতার দিতে
অনিকঃ অহ তাই?
অয়রিঃ হুম তাই তো মাম্মাকে এই পিমনি এত্তোগুলা বকা দিয়েছে তাই না মিস্টিবাচ্ছা
মিস্টিঃ থিক
অনিকঃ কিন্তু পাপা তোমাকে অনেক মিস করছে তাই আমি কি পাবো?
মিস্টিঃ মিস্টি তার পাপা কে কিসি দিবে
এই বলে মিস্টি অনিকের গাল কিস করে দিলো
অনিকও হেসে মেয়ের কপালে চুমু খেলো বড় আদরের মেয়ে যে
অয়রিঃ কিস শুধু পাপাই পাবে? এইযে আমি মাম্মাকে পানিশ করেছি আমার কিস টা কই?
মিস্টি দৌড়ে গিয়ে অয়রিকে কিস করলো
মিস্টিঃ তোমালে কি কতে ভুত্তে পারি? আমাল সব মনে তাকে
অয়রি মিস্টির গাল টেনে বলে–
ওলেএ আমার বাচ্ছাটা
তখনি মেঘার ডাক পড়ে–
মেঘাঃ মিস্টি তাড়াতাড়ি ব্রেকফাস্ট খেতে আসো তোমার অয়নব্রো ওয়েট করছে
মিস্টিঃ আসতি মাম্মা
অনিকঃ হুম যাও তোমার ব্রো এর কাছে যাও
(মিস্টি অয়নকে ব্রো রিমিকে আপি বলে আসলে অন্য দাদু দিদুন দের মতো ওরা বুড়ো দেখতে না তাই?নায়ক নায়িকারা বুড়া হয়না জানেন-ই তো)
মিস্টি দৌড়াতে দৌড়াতে চলে গেলো–
অয়রিঃ এখন বল আমাকে কেন ডেকেছিস?
অনিকঃ আচ্ছা তুই কি কিছুই বুঝিস না বনু?
অনিকঃ কি বুঝবো?
অনিকঃ তোর জন্য মা রোজ কান্না করে
বাপির মুখেও হতাশা আমাদেরও তোকে এইভাবে দেখতে ভালো লাগেনি তোর কি এইসব চোখে পড়েনা?
অয়রিঃ না সত্যিই পড়েনা দাভাই আমার জন্য তেদের কেন এতো কস্ট হতাশা আজ আমি দেশের সাকসেস্ফুল ডক্টর তোরাও আমাকে নিয়ে গর্ববোধ করিস তাহলে?
অনিকঃ বনু তুই আজকে একজন সাকসেস্ফুল পার্সন কিন্তু সাকসেস ই জীবনে সবনা জীবন চলতে গেলে একজন জীবনসন্গী প্রয়োজন এইভাবে কি থাকা যায়?
অয়রিঃ দাভাই ব্যাস তোমরা জানো না এইসব কথা আমার একদম সহ্য হয়না
জীবনে আমি একজনকেই আমার জীনবসন্গী হিসেবে চুজ করেছিলাম আমার পক্ষে আর কাউকে আমার জীবনে ঢুকানো পসিবল না
অনিকঃ কিন্তু আমিও তো চাই আমার বোনটা হ্যাপি থাকুক
অয়রিঃ দাভাই আমি এই বিষয়ে আর একটা কথাও শুনতে চাইনা নাহলে আমি বাসা ছেড়ে চলে যাবো
এইবলে অয়রি রাগে গটগট করে বেড়িয়ে যায়
অয়রিকে এইভাবে বেড়িয়ে যেতে দেখে সবাই অবাক
রিমিঃ আরে অয়রি মা আমার একটু খেয়ে যাহ
অয়নঃ হঠাৎ মেয়েটার কি হলো?
অনিক চেয়ার টেনে বসে বলে*-
আসলে আমি ওকে বিয়ের কথা বলি আর
ও রাগ করে
মেঘাঃ আর তুমিও কেমন? মেয়েটাকে এইসব কথা বলতে গেলে কেন? জানো না ও রাগ করে আমরা তো জানি ও কতো কস্টে আছে কাব্য ভাইয়াকে কতটা ভালোবাসে শুধু না খেয়ে চলে গেলো
রিমিঃ আমার আর ভালো লাগেনা মেয়েটা কেমন মনমোরা হয়ে থাকে কাব্য মারা যাওয়ার কথা শুনে তো নিজেকে ঘর বন্দি করেও রেখেছিলো তারপর যখন কাব্যের ডায়রি থেকে কাব্যের ইচ্ছার কথা জানতে পারে তখনি একটু স্বাভাবিক হয় ডক্টর হওয়ার জন্য ঊঠে পড়ে লাগে (লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌসি রিমি)
এই বলে রিমি ডুকরে কেঁদে উঠে
অয়নঃ প্লিয এইভাবে কাঁদিস না নিজেকে সামলা
অনিকঃ বনু কেমন চঞ্চল ছিলো আর এখন।
মেঘাঃ দেখো সব ঠিক হয়ে যাবে
এইভেবেই সবাই দীর্ঘশ্বাস ফেলে–
মেঘে কালো হয়ে আসছে রাস্তা দিয়ে গুড়িগুড়ি বৃস্টিও পড়ছে
রাগে অয়রি গাড়িটাও আনতে ভুলে গিয়েছে তাই অয়রি রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে
উদ্দেশ্য লেকের পাড়,,
লেকের পাড়ে একলা বসে আছে অয়রি,,
নিজের হাতের অনামিকা আন্টির দিকে নজর যায় কাব্যের দেওয়া এনগেজমেন্ট রিং
অয়রি আন্টিতে চুমু খেয়ে বলে–
দেখেছো কাব্য কেউ আমাদের ভালো চায় কেউ চাই না আমি তোমাকে ভালেবাসি সবাই বড্ড খারাপ দেখো একদিন ঠিক তেমার অয়রি তোমার কাছে ফিরবে
অয়রি কেঁদে দেয় সে আর পারছে না এইভাবে একা লড়াই করতে তার যে বড্ড প্রয়োজন কাব্যকে
তখনি কেউ অয়রির মাথায় ছাতা রাখে
অয়রি তাকিয়ে দেখে ইশান
ইশান মুচকি হেঁসে অয়রির পাশে বসে-
ইশানঃ তা ডাক্টার সাহেবা এখন এই টাইমে
অয়রিঃ ভালো লাগেছে না
তুমি এখানে? মুন আপু কই কয়দিন পর জনাবের বিয়ে আর উনি এখানে
( এই কয়দিনে ইশানের সাথে অয়রি অনেক টা ফ্রি হয়ে গেছে)
বিয়ের কথা শুনে ইশানের বুকে মোচর দিয়ে উঠে
সত্যি এইটাই সে অয়রি খুব খুব ভালোবাসে কিন্তু তার মনে শুধুই কাব্য
সে অনেকভাবে অয়রিকে বুঝানোর চেস্টা করেছে কিন্তু অয়রি তাকে বুঝিয়েছে মুন ইশানকে অনেক ভালোবাসে তাই যেন মুনের কাছেই সে ফিরে যায় ইশান জানে বেশ জোড় করলে অয়রির বন্ধুত্বও সে হারিয়ে ফেলবে যতই হোক জোড় করে ভালেবাসা হয়না অয়রির কথা রাখতেই এই বিয়ে
ইশান মলিন হাঁসি দেয়
–আর বিয়ে বিয়ে সেইটা তো দুটো মনের মিলন
ইশানের কথা খুব ভালোভাবে মর্মাথ বুঝতে পারছে অয়রি কিন্তু সে নিরুপায় তাই না বুঝার ভান করে বলল–
চলো আজ ছোট দিদুন(রিকের মা)এর কাছে যাবে অনেকদিন ধরে দেখা হয়না
ইশান বুঝতে পেরেছে অয়রি বিষয়টাকে এড়ানোর চেস্টা করছে তাই সেও মলিন হেঁসে বলে-
চলো যাওয়া যাক
In Scotland,,
ইজি চেয়ারে গভির ভাবে কিছু একটা ফাইল নিয়ে ভাবছে রওশন তার চোখের সাম্নেই একটা মেয়ের হাঁসিজ্জল ছবি
হঠাৎ একটা মেয়েলি কন্ঠে কেউ বলে উঠলো–
Sir may I coming???
রওশন তাড়াতাড়ি চোখের জল আড়াল করে ছবিটা সরিয়ে ফেলে
রওশনঃ Yes Please!
তৃনা রুমে ঢুকে
আর সে হা হয়ে রয়েছে আজকে কি লাগছে রওশন
সাদা শার্ট সিল্ক চুল গুলো এলোমেলো হয়ে রয়েছে ফর্সা মুখটা লাল হয়ে রয়েছে চোখ গুলোও লাল হয়ে রয়েছে ইসস কত কিউট এই ছেলেটাই প্রথম যার প্রতি তৃনা প্রথম ক্রাশ নামক বাশ খেয়েছিলো
তৃনাকে এইভাবে তাকাতে দেখে রওশম ধমকরে সুরে বলে উঠে–
কি হলো মিস তৃনা? এইভাবে তা্কিয়ে না থেকে যেই কাজে এসেছিলেন বলে যান
রওশন এর এহেন কথায় বেশ লজ্জায় পড়ে যায় তৃনা
নিজেকে স্বাভাাবিক রেখে বলে–
স্যার সোহাব বাংলাদেশে(লেখিকা রিমি)
রওশন বাঁকা হেঁসে বলে–
ওয়াও এইটা সত্যিই গ্রেট নিউজ
তৃনাঃ জ্বী স্যার সোহাব ভেবেছিলো ও যে বাংলাদেশের মতো একটা দেশে লুকিয়ে থাকতে পারে এইটা আমরা বুঝতে পারবো
রওশনঃ হ্যা হাতে অনেক কম সময় আমাদের বাংলাদেশ যেতে হবে
তৃনঃ জ্বী স্যার বাট আজকে আপনাকে অনেক হ্যান্ডসাম লাগছে
রওশন এর প্রচুর বিরক্ত লাগছে তাও বলে
–Thanks
–You are most welcome sir?
আচ্ছা স্যার একটা কথা বলি?
–বলুন( গম্ভির কন্ঠে)
–আচ্ছা স্যার কয়দিন এর জন্য প্যাকিং করবো আসলে বাংলাদেশ দেখার আমার অনেক শখ অনেক জায়গা আছে তাই আর কি
রওশন জানে মেয়েটা প্রচুর বাঁচাল প্রয়োজন এর থেকে অতিরিক্ত কথা বলে যা রওশন এর একটু ও ভালো লাগেনা কিন্তু কাজের ক্ষেত্রে বেশ সেন্সেটিভ তাই কিছু বলেনা
রওশনঃ আপনি কি কাজ করতে যাবেন নাকি ঘুরতে
তৃনাঃ সরি স্যার
এই বলে সে মুখ ঘুমড়া করে চলে যায়
রওশন দীর্ঘশ্বাস ফেলে ছবিটা বের করে–
আসছি আমি প্রিয়সি কেননা তুমি আমার
কিছু একটা ভেবে বাঁকা হাঁসে রওশন
চলবে কি?