#তুই আমার ২
#পর্বঃ১৭
#Tanisha Sultana
মিষ্টির চিৎকারে পাশে থাকা মানুষটা ধরফরিয়ে ওঠে
“কাকু তুমি আমার বেডরুমে কেনো?? এখানে তো আমার বরের থাকার কথা। তুমি আমার বরকে কিডন্যাপ করেছো?? এখন আমি আমার বরকে কোথায় পাবো এ্যা এ্যা?
” সাট আপ। আমি তোমার বরকে কিডন্যাপ করি নি।
“তাহলে তুমি এখানে কেনো? আমার সাথে তো আমার বরের থাকার কথা
” এটা আমার বাড়ি আমার রুম
“তোমার বাড়ি তো কি
এই এক মিনিট এটা তোমার বাড়ি মানে। তোমার বাড়ি তো আমাদের বাড়ির সাথে
” ওইখানে আমরা থাকি কিন্তু এটা আমাদের রিয়েল বাড়ি। আর এটা আমার রুম। তোমার বিয়েটা আমার সাথে হয়েছে
অভির কথা শুনে মিষ্টি পুরাই শকট
“কি বললে তুমি
” ঠিকই শুনেছো। আমি তোমার বর
“ও আল্লাহ শেষ পর্যন্ত একটা কাকুকে বিয়ে করতে হলো।
অভির দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে বলে
“তুমি আমার পেটে হাত দিছিলা কেনো
” সরি ঘুমের ঘোরে ভুল করে
অভিকে থামিয়ে
“নেকামি করার জায়গা পাও না। ইচ্ছে করে হাত দিয়ে এখন এক্সকিউজ দিচ্ছো।
” আমি কোনো এক্সকিউজ দিচ্ছি না।
“একদম চুপ। ওই মুখে কথা বলছো কি করে লজ্জা করে না
” না। আমার লজ্জা করে না। কিন্তু তোমার লজ্জা করে না। সেই ছোট থেকে আমার পেছনে পড়ে আছো
“আমি আপনার পেছনে পড়েনেই। আর আমি যদি জানতাম না এই দুনম্বর মালটার সাথে আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে তো কোনোদিনও বিয়ে করতাম না।
” কেনো বিয়ে আগে দেখে নিলে কি হতো? এমনিতে তো কতো কথা বলো আর বাপি এটা বলতে পারলে না ছেলেটাকে দেখবো
“আমি তো জানতাম না আমার বাপির চয়েস এতো খারাপ। কিন্তু তুমি তো জানতে তাহলে তুমি কেনো আটকাও নি।
” আমার সুখে থাকতে ভালো লাগছিলো না তাই তোমার মতো ইডিয়েট কে বিয়ে করেছি। যতসব
“ধুর সকাল সকাল মুডটার বারোটা বাজিয়ে দিলো
” এবার প্লিজ একটু তোমার মুখটা বন্ধ করো। একটু শান্তিতে ঘুমতে দাও। এমনিতে তো আমার জীবনটা শেষ
অভি শুয়ে পড়ে।
“এই কাকু
” বলো
“বলছিলাম কি ময়দা সুন্দরীকে কি ডিভোর্স দিছো না কি
অভি বিরক্ত হয়ে বলে
” মিষ্টি প্লিজ একটু ঘুমতে দাও। এমনিতে তো তোমার হাত থেকে আমার নিস্তার নেই এখন অন্তত একটু শান্তি দাও।
অভি পাশ ফিরে শুয়ে পড়ে।
মিষ্টি বেলকনিতে চলে যায়।
“ব্যাপারটা কি হলো? অভি আমাকে বিয়ে করলো আবার রিনির সাথেও রিলেশন কন্টিনিউ । অভি আসলে কি করতে চাইছে। কোনো কি বড় কোনো কারণ আছে? রিনি ডাইনিটা তো সুবিধের না। আমাকে তো দেখতে হচ্ছে!!
ফ্রেশ হয়ে কিচেনে চলে যায় মিষ্টি। ওখানে মিষ্টির শাশুড়ী রান্না করছিলো আর একটা বৃদ্ধা মহিলা অভির মাকে সাহায্য করছিলো
” আন্টি আমি কি তোমায় হেল্প করবো
“না তোমাকে কোনো হেল্প করতে হবে না যাও গিয়ে বসো
” প্লিজ আন্টি কিছু একটা করি।
আর তুমি আমাকে আন্টি কেনো ডাকছো?
” তো কি বলে ডাকবো?
“মা বলে ডাকবে
” কিন্তু আমার তো মা আছে
“তবুও শাশুড়ী মাকে মা বলতে হয়।
” নাহ আমি তোমাকে মা বলতে পারবো না। আমি বরং তোমাকে শাশুড়ি বলে ডাকবো
“এ্যা
” হ্যা।
“ঠিক আছে যা খুশি বলো। এখন যাও অভিকে কফিটা দিয়ে এসো।
“আমি কেনো যাবো। আমি কি কাকুর চাকর না কি
” মা এভাবে বলতে নেই। বরের সেবা করতে হয়। আর কাকু বলবে না ওকে
“তাহলে কি বলবো
” বর বলবে
“ওকে
শাশুড়ী কফি বানিয়ে দেয়। মিষ্টি কফি নিয়ে রুমে গিয়ে দেখে অভি কারো সাথে কথা বলছে। অভির মুখ দেখে মনে হচ্ছে কোনো সমস্যায় পড়েছে। অভি কি কথা বলছে এটা শোনার জন্য মিষ্টি পা টিপে টুপে অভির পাশে দাড়ায়।
” তুমি যা বলবে আমি তাই করবো। কিন্ত মনে রেখো খুব তারাতারি আমার সময় আসবে
অভি ফোন রেখে দেখে মিষ্টি আয়নার সামনে দাড়িয়ে নিজেকে দেখছে
“তুমি কখন আসছো
অভির কথা শুনেও না শুনার ভান করে। অভি মিষ্টির কাছে যায়
” এই মেয়ে
“মিষ্টি আমার নাম এই মেয়ে ইডিয়েট এগুলো বলে ডাকবেন না।
” বা বা আপনি
“হ্যা কাকুবড় তোমার কফি
অভির কফির মগটা ধরে
” কাকুবর কি?
“শাশুড়ি বললো বর বলতে আর আপনি আমার জন্মগত কাকু তাই কাকুবর
অভি কফির মমগে চুমুক দিয়ে বেডে বসতে বসতে বলে
ম
” মানুষ হলে না
“এ জনমে আর মানুষ হওয়া হলো না। তবে একটা মানুষ বর তো পেয়েছি তাতেই অনেক।
” মুখটা বন্ধ করো আর আমার কথাগুলো মন দিয়ে শুনো।
মিষ্টি তুমি খুব ভালো একটা মেয়ে। অনেক সুন্দর স্মার্ট তোমার বাবারও প্রচুর টাকাপয়সা আছে। আমার লাইফ থেকে চলে যাও মিষ্টি। প্লিজ এখন এটা জানতে চেয়ো না কেনো তোমায় বিয়ে করেছি আমি বলতে পারবো না। শুধু এটুকু বলতে চাই আমি রিনিকে ছাড়তে পারবো না
“কেনো রিনি কি প্রেগন্যান্ট হয়ে গেছে নাকি তোমার আর রিনির অনেকগুলো বাচ্চাকাচ্চা আছে যার জন্য তুমি রিনিকে ছাড়তে পারবে
” এসব কিছু না মিষ্টি
“তো
” তো আমি রিনিকে ভালোবাসি তাই
অভি কফির মগটা রেখে চলে যায়।
“উহহ ভালোবাসি। কেমন বালের ভালোবাসো আমার জানা আছে। ওনার লাইফ থেকে চলে যাবো। চলে যাওয়ার জন্য তো আমি আসিনি অভি।
মিষ্টি ওয়াশরুমে চলে যায়। গোছল শেরে বাইরে বেরিয়ে দেখে দুটো মেয়ে বসে আছে সাজগোজের জিনিস নিয়ে। মিষ্টিকে কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়ে মেয়েগুলো মিষ্টিকে সাজাতে শুরু করে দেয়।
বৌভাতে র অনুষ্ঠানে শুরু হয়ে যায়। ভারি লেহেঙ্গার ভারি ভারি গহনা পড়ে একটা চেয়ারে বসে আছে মিষ্টি। এদিক সেদিন অভিকে খুজছে। অনেক খোজার পরে অভিকে দেখতে পায় দুরে রিনির সাথে হেসে হেসে ছবি তুলছে।
” খুব ছবি তোলা হচ্ছে দাড়াও আমি মজা দেখাচ্ছি।
মিষ্টি ওদের কাছে যায়।
“ওগো তুমি এখানে আর আমি তোমাকে কোথায় কোথায় খুজছি।
মিষ্টির কথায় রিনি আর অভি মিষ্টির দিকে তাকায়।
” আরে কিউটি তোমাকে তো তজ একদম ময়দা গোডাউন মনে হচ্ছে
“ময়দার গোডাউন কি??
“তুমি ময়দার গোডাউন চেনো না
” না তো
“তুমি চুপ থাকো তো মিষ্টি
” ময়দা মানে মিষ্টি আর ময়দার গোডাউন মানে মিষ্টির গোডাউন তাই তোমাকে একদম ময়দার গোডাউনের মতো লাগছে
রিনি এতো পামে একদম পামপার হয়ে যায়।
“আর দেখো আমার বরটাকে কতো আনস্মার্ট। তুমি জোর বাচা বেচে গেছো আর আমাকে ফাঁসিয়ে দিয়েছো। আমি তোমার ওপড় খুব রাগ করেছি
” বেবি রাগ করে না। তোমার তো অভিকে একদম পছন্দ না। তাই বলছিলাম কি ওর বাবাকে ছলে বলে কৌশলে যেভাবেই হোক রাজি করিয়ে ওর নামে সব সম্পওি করে দাও
“এই মেয়েটা তো খুব ধরিবাজ। আমাকে গোল দেয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু তুমি তো এই মিষ্টিকে চেনো না (মনে মনে)
” আরে কিউটি তুমি চিন্তা করো না। আমি সব সমস্যা সমাধান করে দেবো (অভির দিকে তাকিয়ে বলে)
রিনি মিষ্টিকে জড়িয়ে ধরে বলে
” tnx
এই কাজে আমিও তোমাকে হেল্প করবো
“কি করে আমি তো আজ থেকে এবাড়িতেই থাকবো
মিষ্টি মন খারাপ করে বলে
” ওহহ
“মিষ্টি তুমি যদি কাজটা করে দিতে পারো তাহলে তুমি আমার থেকে যা চাইবে তাই দেবো
অভির কথায় মিষ্টি অভির দিকে তাকায়
” আফরা ইবনাত মিষ্টি সাহায্যের বিনিময়ে কারো কাছ থেকে কিছু নেয় না। আর ছোটলোকদের কাছ থেকে তো একদমই না।
মিষ্টি বড় বড় পা ফেলে চলে যায়।
রাতে সবাই একসাথে খেতে বসেছে। অভির বাবা মা রিনি অভি মিষ্টি
“শশুরমশায় আপনার গাড়িবাড়ি টাকাপয়সা সব দুদিনের মধ্যে আমার নামে লিখে দেবে
মিষ্টির কথায় সবাই মিষ্টির দিকে ভুত দেখার মতো তাকিয়ে আছে।
অভির বাবা খেতে খেতে বলে
” অলরেডি তোমার নামে সব কিছু আমি লিখে দিয়েছি।
মিষ্টি আর কোনো কথা না বলে রুমে চলে যায়।
অভিও খাবার শেষ না করে উঠে যায়।
চলবে