#তিক্ত_ভালোবাসা
#Tafsia_Meghla
#পার্টঃ০৩
[ স্নিগ্ধা নামটা পাল্টিয়ে মেঘলা দিলাম❤️ শোভনের সাথে অন্য কোনো মেয়ের নাম কারোরি হয়তো ভালো লাগতাছে না আমারো ভালো লাগতাছে না তাই শোভন আর মেঘলা❤️😌]
কনে বেশে বসে ফুপিয়ে কাঁদছে মেঘলা পাশেই সাজ্জাদের লাশ পরে আছে,
শোভন বসে রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে মেঘলার দিকে৷
এ কান্না শোভনের সহ্য হচ্ছে না৷
অন্য ছেলের জন্য কেন কাঁদবে?
শোভন আর বসে থাকতে পারলো না,
বসা থেকে উঠে মেঘলার হাত চেপে ধরে উঠিয়ে টানতে টানতে একটা রুমে নিয়ে ছুরে বিছানার উপর ফেলে বলে,
— ” খুব কষ্ট হচ্ছে তাই না?
আমারো কষ্ট হচ্ছে ঠিক এইখান টায় (বুকের বা পাশে আঙুল ইশারা করে বলে)
যখন আমার না বলা শর্তেও ওই ছেলেটার সাথে পালিয়ে বিয়ে করতে গিয়েছিলি৷ ”
মেঘলা শোভনের দিকে ঘৃনার দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে,
— “আমি ওকে ভালোবাসি৷ ”
শোভন তেরে এসে মেঘলার মুখ চেপে ধরে বলে,
— ” বুলি ফুটেছে মুখে তাই না?
কিসের ভালোবাসা হুম?
তুই আমার এই মুখ দিয়ে অন্য ছেলের কথা আনলেও শাস্তি কঠিনতম হবে৷ ”
বলেই ছিটকে ফেলে দরজা লক করে বাইরে চলে যায়৷
মেঘলা বসে বসে ফুপিয়ে কাঁদছে আর এই দুই দিনের কথা মনে পরতেই ডুকরে কেঁদে উঠছে৷
ফ্ল্যাশব্যাক,,,,,,,,,,,
চোখ দিয়ে অনবরত পানি পরছে তাও কাউকে ডাকতে পারছে না,
হাত দিয়ে টপ টপ করে রক্ত পরছে৷
ধারালো জিনিসটা ফেলে ব্যাক্তিটি মেঘলা কে নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে বলে,
— “সরি হুর পরি,
ওভাবে ছেলেটাকে না জড়িয়ে ধরলে তোমাকে এতোটা শাস্তি পেতে হতো না৷
দোষটা তোমারই ছিলো,
তোমাকে ভালোবাসার শাস্তি মৃত্যুই সে নিজ থেকে মরতে গেছে,
কিন্তু তুমি তাকে বাঁচিয়েছো আপাদত তোমায় শাস্তি টা দিলাম৷ ওই ছেলেকে তো আমি ছাড়বো না,
তোমাকে ভালোবাসার শাসন করার অধিকার শুধু আমার৷
ছাড়বো না ওকে আমি ছাড়বো না৷ ”
মেঘলা ধস্তা ধস্তি করে ছারিয়ে ফুপিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বলে,
— “আপনি কারো কিছু করতে পারবেন না৷ ”
ব্যাক্তিটি কিছু না বলে মেঘলার ঘাড়ে ঠোঁট ছুইয়ে বেরিয়ে যায়৷
হাতের দিকে তাকাতে পারছে না মেঘলা, পুরো খারাপ অবস্থা পোড়া আর কাটার কারনে হাতের তালুটা কেমন থেতলে গেছে৷
হাত বেয়ে টপ টপ করে রক্ত পরছে শরীর টা নিশক্তি লাগছে, তাও কাপা কাপা পায়ে হেটে নিচে আসে৷
কলেজ থেকে বেরিয়ে দেখে শোভন গাড়ি থেকে নামছে৷
শোভন মেঘলাকে এমন দেখে এগিয়ে এসে উত্তেজিত সরে বলে,
— “কি হয়েছে পাখি?
হাতের এমন অবস্থা কেন?”
মেঘলা শোভন কে জড়িয়ে ফুপিয়ে কেঁদে উঠে, শোভন মেঘলাকে গাড়িতে বসিয়ে নিজেও বসে আলতো হাতে বুকে জড়িয়ে বলে,
— “কি হয়েছে পাখি বল? কাঁদছিস কেন?”
মেঘলা ফুপিয়ে কেঁদে বলে,
— ” লোকটা ভালো না ভাইয়া!
একটুও ভালো না, ও মেরে দেবে সাজ্জাদ কে৷ ”
— “সাজ্জাদ?
কে সাজ্জাদ?”
মেঘলা এবার দীর্ঘশ্বাস ফেলে কথাটা বলেই ফেললো,
— “ভাইয়া আমি সাজ্জাদ কে বিয়ে করতে চাই৷ ”
কথাটা বলার সাথে সাথেই যেন হাত টা আলগা হয়ে যায়,
মেঘলা আবার বলে,
— “আমি জানি তুমি আমার কথা রাখবে৷
হ্যাঁ আমি সাজ্জাদ কে বিয়ে করতে চাই নয়তো যে ও মেরে দিবে সাজ্জাদ কে,
শোভন ভাইয়া প্লিজ আমার কথাটা রাখো৷ ”
শোভন কিছু উত্তর না দিয়ে মুখ গম্ভীর করে গাড়ি থেকে নেমে পাশের ফার্মেসি থেকে স্যাভলন আর ব্যান্ডেজ এনে চুপ চাপ হাতটা ওয়াশ করে ব্যান্ডেজ করে দিচ্ছে৷
শোভনের এমন গম্ভীরতা যেন মেঘলা কিছুই বুঝতে পারছে না৷
মেঘলা আবার বলে,
— “ভাইয়া ও আমাকে খুব ভালোবাসে আর আমিও ওকে ভালোবাসি ,,,,,৷”
মেঘলা আর কিছু বলতে পারলো না স্ব-জোরে থাপ্পড় বসিয়ে দিলো শোভন,
আচমকা এমন হওয়ায় মেঘলা গালে হাত দিয়ে শোভনের দিকে ঘুরে তাকায়৷ চোখ দিয়ে যেমন অগ্নিকান্ড হচ্ছে এমন লাল হয়ে আছে৷
আর রাগে ফুসছে৷
সামনে এসে মুখ চেপে ধরে বলে,
— ” বলে ছিলাম এই মুখে অন্য কোনো ছেলের নাম বললে কঠিনতম শাস্তি হবে?
তবে আবার কেন ওই সাজ্জাদের নাম নিলে?”
মেঘলা বিস্ফরিত চোখে শোভনের দিকে তাকায়৷
আজ শোভনের চোখে আগের মত মায়া দেখতে পারছে না যা দেখতে পারছে শুধুই হিংস্রতা৷
এই শোভন মেঘলার অচেনা৷
তাহলে শোভনই নিজের আপন চাচাতো ভাই এর খুন করেছে?
আজ কলেজের ওই রুমটায় শোভনই ছিলো?
কাল বাগানেও শোভনই ছিল?
এতোসব প্রশ্ন মেঘলার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে আর চোখ দিয়ে টপ টপ করে নোনা জল বেয়ে পরছে৷
শোভন মেঘলাকে নিজের সাথে মিশিয়ে গালে থাপ্পড়ের যায়গায় হাত দিয়ে স্লাইড করতে করতে বলে,
— “হুর পরি, তুমি আমাতেই সীমাবদ্ধ!!
তুমি শুধু আমার তোমাকে ভালোবাসার, আদর করার শাসন করার, ছোয়ার অধিকার শুধু আমার৷
ভালোবাসলে আমাকেই ভালোবাসতে হবে তোমার৷
তোমাকে ছুলে কেন তাকালেও তার অবস্থা,,,,,
একটু থেমে কানের কাছে গিয়ে ফিসফিস করে বলে,
— ” আকাশের মতো হবে৷ ”
বলেই জোরে জোরে হাসতে থাকে,
মেঘলা কাপা কাপা গলায় বলে,
— “তুমি আকাশ ভাইয়া কে খুন করেছো?
কেন? ”
— ” ও তোমায়ে বাজে ভাবে ছুয়েছে তা আমি দেখেছি৷
সেদিন রাতে ধস্তাধস্তি করেছে, বললাম না তোমাকে ছোয়ার অধিকার শুধু আমার৷ ”
মেঘলা ঘৃন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে গাড়ির দরজা খুলতে খুলতে বলে,
— “তুমি আর নিজের মধ্যে নেই,
তুমি নর পিচাশ হয়ে গেছো আমি তোমার কাছে থাকবো না৷ ”
শোভন রেগে হাত ধরে হেচকা টান দিয়ে মুখ চেপে ধরে বলে,
— “বেশি কথা বললে ঠ্যাং ভেঙে খুরো করে সারা জীবন বসিয়ে রাখবো৷ ”
বলে মুখের উপর কিছু একটা স্প্রে করে আর মেঘলা শোভনের বুকে ঢলে পরে শোভন বাকা হেসে এক হাতে মেঘলাকে বুকে জড়িয়ে আরেক হাতে ড্রাইভিং করে কোথাও একটা যায়৷
।
।
রাত আটটা,,,,,,,
বারান্দায় দাঁড়িয়ে কফির ধোয়া উঠা মগে চুমুক দিচ্ছে আর আকাশের দিকে তাকিয়ে কিছু একটা ভাবছে৷
হঠাৎ কিছু পরার শব্দ পেয়ে পিছনে ফিরে তাকায় যা ভেবেছিলো ঠিকি তাই হয়েছে মেঘলার মাত্রই জ্ঞান ফিরলো অচেনা কোথাও আছে দেখে ছোটা ছোটি করছে বের হওয়ার জন্য কিন্তু দরজার লকটাই খুলছে না৷
শোভন বারান্দায় দাঁড়িয়ে এতোক্ষন সব দেখছিলো,
ঘরের জিনিস পত্র ছুরছে তাই এবার মেঘলার সামনে এসে দাড়িয়ে বলে,
— “এভাবি ছোটাছুটি করছিস কেন?”
মেঘলা রেগে চেচিয়ে বলে,
— “আমাকে এখানে নিয়ে এসেছো কেন?
আমি বাড়ি যাবো সাজ্জাদের কাছে যাবো৷ ”
সাজ্জাদের কথা শুনেই শোভনের মাথায় রক্ত চরে যায়,
রেগে জোরে মেঘলার গালে থাপ্পড় দিয়ে বলে,,
চলবে কি??????🙄🙄