#তন্ময়ের_তনু
#পর্ব_১২
#Jechi_Jahan
তন্ময় ওখানে বসে কান্না করতে লাগলো।তন্ময়কে এমন করতে দেখে তন্ময়ের বাবার খুব কষ্ট হচ্ছে। তাই তিনি ছেলেকে জরিয়ে ধরে শান্তনা দেয়।
রহমান-তন্ময় শান্ত হও এমন ভেঙ্গে পরলে চলবে না।তুমি যদি ভেঙ্গে পরো তাহলে আমাদের কে সামলাবে।(তন্ময়ের মাথায় হাত বুলিয়ে)
তন্ময়-বাবা সব আমার জন্য হয়েছে।তুমি ঠিকই বলেছো আমার তনুকে বিশ্বাস করা উচিত ছিল।
রহমান-আরে দূর ওসব তো কথার কথা।তাছাড়া তনু তোকে ছেড়ে কোথায় যাবে।ও তোর তনু না তনু কি তন্ময়কে ছাড়া থাকতে পারে?
তন্ময়-পেরেছে তো।(কান্না করে)
রহমান-অভি তন্ময় কে নিয়ে যা আমি আসছি।
অভি এবার তন্ময় কে ধরে বাড়ীতে নিয়ে যায়।আর রহমান সিয়ামের কাছে গিয়ে বসে।
রহমান-তুমি এটা ভালো করলে না সিয়াম।
সিয়াম-আম সরি আঙ্কেল।
রহমান-এই সরিটার কোনো দাম নেই।কারণ এই ভুলটা তুমি জেনেশুনে করেছো।তোমার এই খারাপ কাজটার জন্য দুটো মানুষ কষ্ট পাচ্ছে।
রাকিব-আঙ্কেল আমার প্রথমেই সন্দেহ হয়েছিল।
কিন্তু ওর কথায় আমি আমার সন্দেহ টাকে দূরে ঠেলে ওকে বিশ্বাস করি।কিন্তু এটা যে সত্যি….
রহমান-থাক ওকে আর কিছু বলোনা।এমনেতে মার খেয়ে অবস্থা খারাপ হয়ে আছে।ওকে যত তাড়াতাড়ি পারো ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়।(বলে রহমান বাড়ী থেকে বের হয়ে গেলে)
আমি,আপু আর আদিল ভাইয়া একটা রেস্টুরেন্ট এ বসে কফি খাচ্ছি।(সবাই হয়তো ভাবছেন এটা কি হলো?কিছুক্ষণ পরে জানবেন)আপু মানে অনু আপু আর আদিল ভাইয়া মানে আমার আপুর স্বামী।সেদিন গাড়ীতে এনাদের সাথেই দেখা হয়।
# ফ্লাসব্যাক #
আমি গাড়ীতে বসে থাকা আপুর দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে আর আপুও আমাকে দেখে অবাক হয়ে যায়।আমি আপুকে দেখে কান্না করে দিই।সাথে সাথে আপু গাড়ী থেকে বের হয়ে আমাকে জরিয়ে ধরে আর আমার কান্না থামায়।
অনু-তনু তুই এখানে কি করছিস?
আমি-ওসব ছাড়ো আগে তুমি আমাকে বলো তুমি এখানে কি করছো?(আপুর হাত ধরে)
অনু-তনু আমি আদিলকে খুব ভালোবাসি আর ও আমাকে খুব ভালোবাসে।আমি বাবার কথা ফেলতে পারছিলাম না তাই তন্ময়কে বিয়ে করতে রাজি হয়েছিলাম।কিন্তু আমি আদিলকে ছাড়াও থাকতে পারছিলাম না।এজন্য আমি ঠিক করি আমি বিয়ের দিন পালিয়ে যা আর সেটাই করি।
আমি-বাবাকে বললে বাবা মেনে নিতো আপু।
অনু-জানতাম কিন্তু আমি পারছিলাম না।
আমাদের কথায় আদিল গাড়ী থেকে বের হয়।
আমি-তাই বলে এমন ভাবে।
অনু-তুই বল তুই এখানে কি করছিস?
আমি এবার আপুকে আমার আর তন্ময়ের বিয়ের কথা সাথে চারদিন আগে ঘটে যাওয়া সব ঘটনা গুলো খুলে বললাম।
অনু-কি!!!!তুই কি পাগল হয়ে গেছিস?
আমি-আমি পারছিলাম না আপু।তুমিতো জানো
আমি অবহেলা আর অপমান সহ্য করতে পারি।না।কিন্তু এই তিনদিন ওনারা আমার সাথে ঠিক এগুলাই লরে তাই আমি চলে এসেছি।
অনু-এটা তুই কি সিদ্ধান্ত নিলি?
আদিল-আচ্ছা অনু ও যখন যেতে চাইছেনা তবে জোর করা ঠিক হবেনা।তুমি এক কাজ করো তনু কে আমাদের সাথে আমাদের বাড়ীতে নিয়ে আস।
অনু-কিরে যাবি আমার সাথে।
আমি-(মাথাটা নিচু করে ফেলি)
অনু-তাহলে তুই যাবি চলে গাড়িতে উঠ।
আমি-হুম।
অনু-এই তোর হাতে এগুলা কি?
আমি-টাকা।
অনু-বাসা থেকে এনেছিস?
আমি-না একটা আংটি বিক্রি করে।
আপু-(আমার হাত দুটো ধরে দেখে বললো)তুই ওই আংটি টা বিক্রি করে দিলি?
আমি-হুম।
অনু-কোন দোকান আমাকে এক্ষুনি বল।টাকা গুলো দিয়ে আংটি টা ফেরত নিয়ে আসবো।
আমি-আপু তার দরকার নেই।
অনু-চুপ থাক চল।
আপু আমাকে নিয়ে ওই দোকানে যায় আর আংটি টা ফেরত নিয়ে চলে আসে।সেদিন আমি আমার বদমেজাজি বোন টাকেই আমার পাশে পেয়েছিলাম।সেদিন থেকে এই ১৫ দিন পর্যন্ত আমি আমার বোনের কাছেই ছিলাম।আর তন্ময়ের ফোনটা আপুর কথায় বন্ধ করে রেখে ছিলাম এই ১৫ টা দিন।
“”””প্রেজেন্ট””””
অনু-তনু তোর আমার কাছে কেমন লাগছে?
আমি-ভালোই।
অনু-আমি জানি তুই ওদের খুব মিস করছিস।
আমি-বাদ দাওনা।
আদিল-আচ্ছা তনু আমাকে আর অনুকে একটা জায়গায় যেতে হবে।তুমি কি এখানে একা থাকতে পারবে?মানে আমরা আসা পর্যন্ত আর কি।
অনু-আরে কি বলো একা কিভাবে?
আদিল-আচ্ছা শুনো তুমি এখানকার সবকিছু আজকে ঘুরে দেখো।যেহেতু বাসা ছিলো তাহলে কোনো সমস্যাও হবেনা।আর কোনো সমস্যা হলে ও আমাকে বা অনুকে ফোন দিয়ে দিও।
আমি-আমার কাছে তো ফোন নেই।
আদিল-তন্ময়ের টা আছে না?
অনু-ওটা এখন অন করবে?
আদিল-ওন করলে কিছু হবেনা।তনু ওন করো।
আমি-আচ্ছা(আমি ব্যাগ থেকে ফোনটা বের করে ওন করি।আর ওন করার সাথে সাথেই দেখি অনেক গুলো ফোন কল যা বাড়ীর লোকেরা করেছে।এগুলা দেখে আমার খুব কষ্ট লাগে)
অনু-দেখেছিস কত গুলো ফোন করেছে?
আদিল-আচ্ছা আমাদের নাম্বার টা নাও।
আমি-দিন।(ওনাদের নাম্বারটা সেভ করে নিলাম)
আদিল-আচ্ছা আমরা আসি।
আমি এবার এখানকার সব জায়গা ঘুরে দেখতে লাগলাম।এখন একটা পার্কে এসে বসে আছি।আমার হঠাৎ মনে হলো তন্ময়ের ফেসবুকটা চালালে কেমন হয়।যেই কথা সেই কাজ আমি ওনার আইডিতে ডুকে অবাক হয়ে গেলাম।
***ওদিকে***
অভি দৌড়ে তন্ময়ের রুমে গেলো আর রুমে এসে দেখলো তন্ময় নেই।ওয়াশরুম থেকে পানি পরার আওয়াজ আসছিলো তাই অপেক্ষা করতে লাগে।
তন্ময়-ভাইয়া!!!(ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে)
অভি-তনু তোর ফোনটা অন করেছে।
তন্ময়-তা তাই????(অবাক চোখে)
অভি-হুম ও ফোন ওন করেছে।আর এই সুযোগে আমি তোর ফোনের লোকেশন ট্রেগ করেছি।
তন্ময়-ভাইয়া আমার বিশ্বাস হচ্ছেনা।
অভি-চল আমরা দুজন ওকে আনতে যাই।
তন্ময়-না ভাইয়া তনুকে আমিই আনতে যাবো।
আমি তন্ময়ের প্রোফাইলের ছবিটা দেখে অবাক হয়ে যাই কারণ প্রোফাইলে আমাদের দুজনের ছবি দেওয়া আছে।আমি কল্পনা ও করিনি যে উনি আমার পিক ওনার ফোনে রাখবেন।এবার আমি ওনার ফোনের ছবি গুলো দেখতে লাগলাম।ওখানেও আমার অনেক চবি আছ।বেশিরভাগই ছবি এমন যেনো উনি চুরি করে ওগুলো তুলেছে।
একটা পিচ্চি-আন্টি তুমি কি করো।
আমি-কে তুমি?(বাচ্চাটার দিকে তাকিয়ে)
পিচ্চি-আমি রুহি।
আমি-এখানে একা কি করছো?
রুহি-আমি এখানে রোজ খেলতে আসি পাশে বাসা তো তাই।তোমাকে কোনোদিন দেখিনা তুমি কি নতুন এসেছো এখানে?
আমি-হুম!!!
রুহি-এখন তুমি কি করছো?
আমি-চবি দেখছি।
রুহি-ওকে তুমি থাকো আমি যাই টা টা।
আমি-টা টা।
***সন্ধ্যায়***
আমি অন্যান্য জায়গা ঘুরে বাড়ী যাওয়ার জন্য রাস্তা দিয়ে হাঁটছিলাম।আমার সামনে আরো একটা ছেলে হাঁটছে।এর হাঁটার স্টাইল দেখে আমার খুব বিরক্ত লাগছে।এত আস্তে আস্তে হাঁটে
কেও।আমি বিরক্ত হয়ে ছেলেটাকে পাশ কাটিয়ে চলে যাওয়ার সময় ছেলেটা আমার হাত ধরে ফেলে।আমি বিরক্ত হয়ে ছেলেটার দিকে তাকিয়ে একটা বড়সড় ধাক্কা খাই।এ যে তন্ময় উনি এখানে কি করছে।ওনাকে দেখে আমার মুখ হা হয়ে যায়।
তন্ময়-আমি জানি আজ আমায় অনেক হ্যান্ডসাম লাগছে।তাই তো এভাবে তাকিয়ে আছো।(হেসে)
আমি-(হ্যান্ডসাম না ছাই এই কয়দিনে চেহারা টা কেমন হয়ে গেছে দাঁড়ি মোচ বেড়ে গেছে)
তন্ময়-আমায় দেখা হলে এবার বাড়ী যাওয়া যাক
আমি ওনাকে কিছু না বলে হঠাৎ করেই ওনার হাত থেকে আমার হাতটা ছাড়িয়ে দৌড় দিই।কিন্তু ওনার সাথে আমি পেরে উঠিনা উনি আমাকে সেই ধরেই ফেলে।এবার আমি কান্না করে দিই।
তন্ময়-এই ১৫ দিন কোথায় ছিলে?
আমি-কান্না করছিই।
তন্ময়-আমি কিছু জিজ্ঞেস করেছি।
আমি-আমি ওখানে যাবোনা।(কান্না করে)
তন্ময়-কেনো যাবেনা?
আমি-কেনো যাবো সেটা বলবেন।(কান্না করে)
তন্ময়-বাদ দাও চলো।(আমার হাত ধরে)
আমি-তন্ময় আমার হাতটা ছাড়েন।
তন্ময়-ছাড়বোনা চলো।
আমি-আপনি যদি এখন আমার হাত না ছাড়েন আমি কিন্তু চিৎকার করে লোক জোড়ো করবো।
তন্ময়-কি??আচ্ছা কেনো যাবেনা বলো।
আমি-আপনি সহ বাসার প্রত্যেকটা মানুষ আমায় ভুল বুঝছেন আমাকে অপমান করছেন। আর কত?আমি বাড়ীতে যাবোনা ব্যাস।(কান্না করে)
তন্ময়-তনু বাচ্চামো করোনা চলো।
আমি-আমি যাবোনা।(কান্না করে)
এবার উনি আমার কোনো কথা না শুনে আমাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে।উনি হয়তো বুঝতে পেরেছেন যে আমি রাস্তার মাঝে চিৎকার করবোনা।উনি একপ্রকার আমাকে জোর করেই বাড়ীতে নিয়ে গেলেন।বাড়ির দরজা খুলার সাথে সাথে সবাই আমাকে দেখে অবাক হয়ে যায়।
-চলবে
#তন্ময়ের_তনু
#পর্ব_১৩
#Jechi_Jahan
আমি বাড়ীতে ঢোকার সাথে সাথে আমার গালে দুইটা থাপ্পড় পরে।আর থাপ্পড়গুলো মারলো আমার শ্বাশুড়ি সাবিয়া।উনি থাপ্পড় মেরে আবার আমাকে জরিয়ে ধরে কান্না করছে।অনেকদিন পর মা কে পেয়েছি ভেবে আমিও জরিয়ে ধরে কান্না করে দিই।
সাবিয়া-তুমি কি ভেবেছিলে তুমি চলে যাওয়ার পর আমরা খুব কষ্টে ছিলাম।আমরা মোটেও কষ্টে ছিলাম না আমরা খুব ভালো ছিলাম।
আমি-(আমি আবার মাকে জরিয়ে ধরি)
সাবিয়া-আর কোনোদিন এমন করোনা তনু।আমরা কোনো ভুল করলে আমাদের বলবে।আমরা এখন থেকে তোমার সব কথা শুনবো।
আমি-মা আমাকে ক্ষমা করে দাও।
সাবিয়া-নারে তুই আমাদের ক্ষমা করে দে।
একে একে সবাই এসে আমার কাছে ক্ষমা চায়।
রহমান-তনু আমার সাথে একটু আয় তো।
আমি-হুম(বলে বাবার সাথে রুমে চলে এলাম)
রহমান-তুই এটা কোনো কাজ করলি?
আমি-কি কাজ???(না জানার ভান করে)
রহমান-আমার ইচ্ছে করছে তোকে মেরে ফেলি।
আমি-হুম হুম বাইরে তো দুইটা খেয়ে এলাম এখন তুমিও শুরু করো। (বলে মুখটা ওদিকে ঘুরিয়ে)
রহমান-আচ্ছা যা রুমে যা।
আমি-কোন রুমে???
রহমান-কি???
আমি-আমি তন্ময়ের রুমে থাকবো না।
রহমান-কেনো?
আমি-জানিনা!!!কিন্তু আমি ওই রুমে থাকবোনা।
রহমান-আচ্ছা এখন যা পরে দেখা যাবে।
আমি-আচ্ছা।(বলে আমি আমার রুমে গেলাম।রুমে গিয়ে দেখলাম তন্ময় কপালে হাত দিয়ে খাট এর উপর বসে আছে।আমি ওকে পাত্তা না দিয়ে আলমারি থেকে আমার একটা শাড়ী নিয়ে ওয়াশরুমের গিয়ে ফ্রেশ হয়ে এলাম)
তন্ময়-তনু!!!
আমি-(ওনার কথা না শুনে চলে যাচ্ছিলাম)
তন্ময়-তোমাকে ডেকেছি না।(আমার হাত ধরে)
আমি-কি???
তন্ময়-সরি!!
আমি-কেনো???
তন্ময়-তোমাকে জোর করে আনার জন্য।
আমি-সরি মাই ফুট।(বলে চলে এলাম)
“””খাওয়ার টেবিলে”””
আজ সব খাওয়ার আমার পছন্দের বানানো হয়েছে তাই আমি খুশি মনেই খেতে বসেছি।আজ মা আমাকে নিজে হাতে খাবার সার্ভ করে দিচ্ছে।
আমি-মা আপনি এবার রাখুন বাকি আমি নিব।
সাবিয়া-না আজ আমিই দিই।
রহমান-আচ্ছা তো আমাদেরও দাও।
আমি-হুম মা বাবাদেরকে দিন আমি পরে নিবো।
সাবিয়া-আচ্ছা তুই খা।
মা এবার বাবাদের খাবার সার্ভ করতে চলে গেল আর আমিও খাওয়া শুরু করলাম।হঠাৎ আমার পাশের চেয়ারে তন্ময় কোথাথেকে এসে বসে যায়।
ওনাকে দেখে আমি ভয় পেয়ে যাই সাথে অবাকও হই কারণ উনি এতোদিনে একদিনও আমার পাশে বসে খায়নি।আমি ওনার দিকে এক নজরেই তাকিয়ে আছি।উনি নিজের খাবার নিজে নিচ্ছে।
আমি আরো অবাক হলাম ওনার খাবার নেওয়া দেখে উনি আজ বেশি খাবার নিচ্ছে যা উনি অন্য দিন নিতেন না।এবার আমি ওনার দিক থেকে নজর সরিয়ে খাবার খেতে লাগলাম।
তন্ময়-মা আজ খাবারগুলো খুব মজা হয়েছে।
(আমার দিকে তাকিয়ে)
সাবিয়া-অনেকদিন খাসনি তো তাই এমন লাগছে।
তন্ময়-হুম!!!
আমি-মা অনেকদিন খায়নি মানে???
রহমান-ও কিছু না তুই খানা।
আমি-আমার খাওয়া শেষ।
জেনি-মা মিষ্টি কিছু বানিয়েছো?
সাবিয়া-হুম তনুর পছন্দের পায়েস।
তন্ময়-ওয়াও তাহলে আমাকে প্রথমে দাও।
সাবিয়া-বস দিচ্ছি।
মা ওনাকে এক বাটি পায়েস দিলো আর উনি ওটা খেতে শুরু করলো।খেতে খেতে উনি এক চামচ পায়েস আমার মুখের সামনে ধরে।ওনার এমন করাতে আমি অবাক হয়ে যাই আর সবাই মুচকি মুচকি হাসছে।আর উনিও চামচ টা ধরে আছে মানে আছেই।এবার আমি যেই পায়েসটা খেতে যাবো উনি ওমনি আমার সামনে থেকে চামচটা ঘুরিয়ে নিজে খেয়ে নিলো।আমি তো হতবাক।
অভি-ভাই এটা কোনো কাজ করলি।(হেসে)
তন্ময়-তো আর কি করতাম।(খেতে খেতে)
জেনি-কি করতা মানে খাওয়াতে।
তন্ময়-অনেকক্ষণ চামচ ধরে রেখেছি কিন্তু খায়না তাই আমি নিজেই খেয়ে নিলাম।
সাবিয়া-তনু তোকে পায়েস দিই।
আমি-না মা আমি পায়েস খাবোনা।
তন্ময়-এই সরি সরি।
আমি-কেনো?
তন্ময়-আমি এমন করায় তুমি খাচ্ছো না তাই।।
আমি-না আমার এমনিই খেতে ইচ্ছে করছে না।
সাবিয়া-আচ্ছা তুই সকালে খেয়ে নিস।
আমি-হুম।(বলে চলে এলাম)
জেনি-ভাবী!!!(অবাক হয়ে)
আমি-কি কি?(চমকে উঠে)
জেনি-তুমি আমার রুমে?
আমি-ওহ আমি আজ তোমার সাথে থাকব।
জেনি-ভাইয়া জানে?
আমি-ওনাকে বলার প্রয়োজন আছে নাকি।
জেনি-তাও ঠিক বদমেজাজি একটা।
আমি-আচ্ছা জেনি মা তন্ময়কে তখন কি বলল?
জেনি-কি বলল?
আমি-এই যে অনেকদিন পর খসনি তো তাই এ…
জেনি-বুঝেছি।(তনুকে থামিয়ে)
আমি-কি???
জেনি-আসলে তুমি চলে যাওয়ার পর ভাইয়া খাওয়াদাওয়া প্রায় বন্ধ করে দেয় তাই।ভাবী তুমি চলে যাওয়ার পর ভাইয়া তোমাকে কত জায়গায় খুঁজেছে তুমি জানোনা।ভাইয়া ওই দিন নিজের ফোন খুঁজছিলো কিন্তু সেটা পায়নি।অবশেষে ভেবে দেখে যে ফোনটা তুমিই নিয়েছো তাই আমরা সবাই ওই নাম্বারে ফোন দিই।বাট তুমি ফোন বন্ধ করে রেখেছিলে।
আমি-আমার বাবাকে বলেছো এসব???
জেনি-প্রথমে বলেনি বাট পরে বলেছে জানো এটা শুনে তোমার কত চিন্তায় পড়ে গেছিলো।
আমি-আজকে এসেছি এটা বলেছো?
জেনি-হুম কালকে আসবে তোমাকে দেখতে।
আমি-হুম।(নিচের দিকে তাকিয়ে)
জেনি-ভাবী তুমি এতোদিন কোথায় ছিলে?
আমি-ওটা জিজ্ঞেস করোনা প্লিজ।
জেনি-ওকে আমি না হয় জিজ্ঞেস করলাম না বাট কালকে সবাই জিজ্ঞেস করলে কি বলবে।
আমি-তা কালকে দেখা যাবে এখন ঘুমাও।(বলে বিছানায় শুয়ে গেলাম)
(বেশ কিছুক্ষণ পর)
তন্ময়-জেনি!!!(দরজা ধাক্কিয়ে)
আমি-জেনি তোমার ভাইয়া এসেছে।(ভয়ে)
জেনি-তো এমন করছো কেনো?
আমি-শুনো আমি এখন ঘুমানোর নাটক করবো।আর তুমিও এমন নাটক করবে যাতে তোমার ভাইয়া না বুঝে যে আমি নাটক করছি।(বলে বিছানায় শুয়ে চোখটা বন্ধ করে ফেললাম)
জেনি-ওকে।
তন্ময়-তনু।(জোরে দরজা ধাক্কিয়ে)
জেনি-কি???(দরজা খুলে)
তন্ময়-তনু এখানে আমাকে বললি না কেনো?
জেনি-এতে বলার কি আছে ভাবী ননদের সাথে থাকতেই পারে সিম্পল।
তন্ময়-ওকে উঠতে বল।
জেনি-ঘুমিয়ে গেছে।
তন্ময়-নাটক কম করবি বুঝতে পেরেছিস।
জেনি-বললাম তো ঘুমিয়ে গেছে যা দেখে আয়।
তন্ময়-তনু।(আমার কাছে এসে)
আমি-,,,,,,,,,,,,
তন্ময়-তনু!!!!
আমি-,,,,,,
তন্ময়-তনু!!!(আমার হাত ধরে টেনে বসিয়ে)
আমি-কি???
তন্ময়-রুমে চলো।
আমি-না আমি যাবোনা।
তন্ময়-নাটক করা হচ্ছে তাই না।চলো!!!
আমি-আজকে এখানে থাকবো ব্যাস।
তন্ময় এবার আমার কোনো কথা না শুনে আমায় টেনে টেনে আমাদের রুমে নিয়ে আসে।
তন্ময়-আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি আর আমি ফ্রেশ হয়ে এসে যেনো দেখে তুমি রুমেই আছো।(বলে ওয়াশরুমে চলে গেলো)
উনি ওয়াশরুমে যাওয়ার পর আমি রোজ দিনের মতো বালিশের দেয়াল বানিয়ে শুয়ে গেলাম।
তন্ময়-এগুলা কি?(ফ্রেশ হয়ে এসে)
আমি-কি??(ওনার দিকে তাকিয়ে)
তন্ময়-বালিশের দেয়াল কেনো?
আমি-রোজ তো দিই।
তন্ময়-আজ লাগবেনা।
আমি-কেনো?
তন্ময়-বেশি কথা বলো তুমি।(বলে বালিশ দুটো নিয়ে বিছানা থেকে নিয়ে নেয়)
আমি-দেয়াল ছাড়া থাকবো।
তন্ময়-দেয়াল ছাড়া সারাজীবনই থাকবো।
আমি-এ্যা?
তন্ময়-হ্যাঁ।
তন্ময় এবার কিছু না বলে লাইট টা ওপ করে আমার পাশে শুয়ে পরে।ওনাকে শুতে দেখে আমি ও চোখ বন্ধ করলাম।হঠাৎ আমি চোখ গুলো বড় বড় করে ফেলি কারণ তন্ময় আমাকে শক্ত করে জরিয়ে ধরেছে।উনি এমন করবে আমি ভাবতেও পারিনি।এবার উনি আমার দিকে তাকায় কেমন নেশাগ্রস্ত দৃষ্টিতে।উনি আস্তে আস্তে আমার ঠোঁটে এর কাছে আসতে লাগলো।ওনাকে এভাবে আস তে দেখে আমি ঠোঁটে হাত দিয়ে দিই।কিন্তু উনি এবার আমার হাত টা সরাতে আসছে।এবার কিছু না ভেবে ওনাকে একটা ধাক্কা দিই।
আমি-তন্ময়!!!!
তন্ময়-কি???(অবাক হয়ে)
আমি-আপনি কি করছেন?
তন্ময়-কি করলাম?
আমি-আমি ওয়াশরুমে যাচ্ছি।(বলে দৌড়ে ওয়াশ রুমে চলে এলাম আর বেসিনের সামনে দাঁড়িয়ে মুখে অনবরত পানি দিতে লাগলাম)
-চলবে