ডেভিল-বর
পর্ব- ৬
শিফা_আফরিন
.
.
?
তুমি রাজি তো বেইবি? (মুচকি হেসে)
রেহানের কথা শুনে আঁচলের কাশি উঠে যায়।
(এই অসভ্যটা বলে কী! এবার আমি কি করবো? নিজের কথায় যে নিজেই ফেঁসে গেলাম। ধুরর… ভাল্লাগেনা.. মনে মনে)
রেহান – তোমার ভাবনা শেষ হলে আমার কথার উত্তর দাও। (দাঁতে দাঁত চেপে)
আঁচল – কী উত্তর দিবো বলুন? আমি তো প্রথম দিনই আপনাকে বলে দিয়েছি আমি আপনাকে স্বামী মানতে পারবো না। শুধুমাত্র জিসানকে ভালোবাসি এবং ওকেই ভালোবাসবো।
এই সহজ কথাটা কেনো বুঝতে পারছেন না আপনি বলুন তো?
আঁচলের কাছ থেকে রেহান এমন উত্তর আশা করেনি। আঁচলের কথা গুলো শুনে রেহানের প্রচন্ড রাগ উঠে গেছে।
আঁচলের মুখে আবার জিসানের নামটা শুনে রেহানের রাগের পরিমাণ টা যেনো দ্বিগুণ হয়ে গেছে।
আঁচল রেহানের মুখের দিকে তাকিয়ে ভয়ে জমে গেছে।
এতোখন আঁচল রেহান কে শুধু কথা শুনিয়েই গেছে। একবারও রেহানের দিকে তাকায় নি। এখন তো বেচারির যায় যায় অবস্থা।
আঁচল – আসলে আমি ই……
আঁচলকে আর কিছু বলতে না দিয়ে রেহান আঁচলের গলা চেঁপে ধরে।
রেহান – কি ভাবিস নিজেকে হ্যা। তোর এখন বিয়ে হয়ে গেছে। তুই এখন অন্য কারো স্ত্রী। তোর মুখে অন্য ছেলের নাম আসে কি করে?
লজ্জা করে না তোর? বার বার নিজের স্বামীর সামনে অন্য ছেলের নাম নিস।
এতোই যখন জিসান জিসান করিস তাহলে আমার সাথে বিয়েতে রাজি হয়েছিলি কেনো?
আমি কি তোকে জোর করে বিয়ে করেছিলাম?
রেহান আঁচলের গলা চেঁপে ধরেই রেগে কথা গুলো বলছিলো।
এদিকে আঁচলের নিশ্বাস যেনো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে মনে হচ্ছে এখুনি মরে যাবে।
আঁচল নিজের দু’হাত দিয়ে রেহানের হাতটা সরাতে চাইছে কিন্তু পারছে না।
আঁচলের দুচোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে।
রেহান আঁচলের চোখে পানি দেখে আঁচলকে ছেড়ে দেয়।
রেহান – ( উফফফ.. কেনো যে আঁচলকে কষ্ট দিতে গেলাম। এমনিই ওর মনে আমার কোনো জায়গা নেই। তার মধ্যে বার বার ওকে কষ্ট দিয়ে আরও দূরে সরে যাচ্ছি। কিন্তু আমিই বা কি করবো। আমি তো চাই ওকে নিজের ভালোবাসায় বাঁধতে। ওর মুখে বার বার অন্য ছেলের নাম সহ্য করতে পারি না আর,,,,,, মনে মনে)
রেহান আঁচলের গলা ছেড়ে দিলে আঁচল কাশতে থাকে। আঁচলের চোখ দিয়ে এখনো পানি পড়ছে যা রেহান স্পষ্ট বুঝতে পারছে।
আঁচল – ছেড়ে দিলেন কেনো? মেরে ফেলুন আমায়। অন্তত আপনার এই রুপ টা আর দেখতে হতো না।
রেহান – তুমিই তো ছাড়াতে চাইলে!! না হলে তো আজ সত্যিই মেরে ফেলতাম তোমায়। (আঁচলের কান্না থামাতে ঠাট্টা করে বলে)
আঁচল – একদম ফাইজলামি করবেন না বলে দিলাম। আপনি আসলে একটা বাজে লোক। আপনাকে বিয়ে করতে রাজি হওয়াটাই আমার সবচেয়ে বড় ভুল। আর হ্যা… বলছিলেন না আপনাকে কেনো বিয়ে করলাম?
বিয়ে করেছি শুধুমাত্র মা বাবার কথায়। নয়তো আপনার মতো একটা অমানুষ কে বিয়ে করার কোনো ইচ্ছেই ছিলো না আমার।
রেহান – ওহহহ তাই? আমি অমানুষ? তো তুমি বিয়ের আগেই কি করে জানতে আমি অমানুষ?
নিশ্চয় আমার সম্পর্কে সব খুজ খবর নিয়েছো? হ্যা…. নিতেই পারো। এতো হ্যান্ডসাম ছেলেকে কেউ হাতছাড়া করতে চায় বলো। (বাঁকা হেসে)
আঁচল – হ্যান্ডসাম মাই ফুট…. (রেগে) বলেই চলে আসতে নেয়।
রেহান আঁচলের হাতটা ধরে ফেলে। আঁচলকে টেনে দেয়ালের সাথে চেঁপে ধরে।
রেহান – যাই বলো না কেনো বেইবি আমাকেই ভালোবাসতে হবে তোমার। যদি নিজে থেকে ভালোবাসো ভেরি গুড… আদারওয়াইজ জোর করে ভালোবাসা আদায় করবো। (মুচকি হেসে)
আঁচল – জোর করে ভালোবাসা পাবেন? হাসালেন!!!!
রেহান – রেহান চৌধুরীর কাছে কোনো কিছুই অসম্ভব নয় বেইবি। জাস্ট ওয়েট এন্ড ওয়াচ। ভালো তো তুমি আমাকেই বাসবে। (বাঁকা হেসে)
আঁচল – ওফফফ অসহ্য।
রেহান আঁচলের কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিসিয়ে বলে…..
রেহান – তুমি তো আমাকে স্বামী মানো না তাই না তার মানে তো এটাই দাড়ায় তুমিও আমার বউ না।
আর তাই আমি কাজ ও করবো না। যেদিন বলবে স্বামী হিসেবে মেনে নিয়েছো। সেদিন আমিও আমার উপার্জন করা টাকায় আমার বউ কে খাওয়াবো।
আর তুমি নিশ্চয় বুঝতে পারছো সারা দিন আমি বাসায় থাকলে তোমার কি হাল করবো।
আফটারওল কাল রাতে তো দেখলেই….. (বলেই আঁচলের কানের লতি তে হালকা করে কামড় দেয়)
আঁচল – আই ডোন্ট কেয়ার…. আপনি কাজে যান বা জাহান্নামে যান আমার দেখার কিছুই নেই।
রেহান – উহুম….. কাজেও যাবো না জাহান্নামে ও যাবো না। সারা দিন তোমার কাছেই থাকবো। এখন খুশি তো? (মুচকি হেসে)
আঁচল রেহানের কথায় চরম বিরক্ত হয়ে রেহান কে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে চলে আসতে নেয়।
রেহান পিছন থেকে আঁচলকে জড়িয়ে ধরে আবার নিজের কাছে নিয়ে আসে।
আঁচলের ঘাড়ে আলতো করে চুমু দিয়ে থুতনি রেখে বলে…..
রেহান – চলে যাচ্ছো যে? শাস্তি তো এখনো দিই নি। (আঁচলের ঘাড়ে নাক ঘসে)
আঁচল রেহানের এমন আচরণে বেশ অসস্থি ভোগ করে..
আঁচল – ক..কিশের শাস্তি?
রেহান আঁচলের ঘাড়ে চুমু দিয়ে বলে….
রেহান – ভুলে গেলে বেইবি। শাস্তি তো দিবোই। প্রথমত আমাকে মাথা ব্যাথার কথা বলে বোকা বানিয়ে চলে গেছো। আর দ্বিতীয়ত আমাকে কাজের জন্য খুটা দিয়েছো।
চলবে…