ডেভিল বর পর্ব – ২০

0
2998

ডেভিল বর
পর্ব – ২০
শিফা_আফরিন
.
.
?
রেহান – বেইবি… এখন কিন্তু আমার কাছ থেকে পালাতে পারবে না আর… (মুচকি হেসে)

রেহানের কথা শুনে আঁচল রাগি চোখে রেহানের দিকে তাকায়…

আঁচল – ( এই ছেলেটার সমস্যা টা কি বুঝি না। একেই তো দেখতে পারছে আমার মন ভালো না তার উপর আবার উল্টো পাল্টা কথা শুরু করে দিয়েছে। ইচ্ছে করছে নাকটা ফাটিয়ে দিই। যত্তসব….)

রেহান মুচকি হেসে ড্রাইভ করতে থাকে পথে আঁচলকে আর জ্বালায় নি রেহান।

কিছুক্ষনের মধ্যেই ওরা বাড়ি পৌঁছে।

আঁচল রুমে গিয়েই শুয়ে পড়ে।

রেহান – আঁচল… ফ্রেশ হয়ে নাও তারপর না হয় ঘুমাউ।

আঁচল – আমি কি বলেছি আপনাকে যে আমি ঘুমাবো? (ভ্রু কুঁচকে)

রেহান – তা বলোনি। ভাবলাম এতোটা পথ জার্নি করেছো আর তুমিই তো শুয়ে পড়লে।

আঁচল – ঘুমাবো না এমনিই শুয়েছি। আপনি ফ্রেশ হয়ে আসুন তারপর আমি যাবো।

রেহান আর কিছু না বলে ফ্রেশ হতে চলে যায়।

কিছুক্ষন পর আঁচল বিছানা ছেড়ে উঠে হাতে নিজের কাপড় নেয়। এরি মধ্যে রেহানও বের হয়ে আসে।

রেহান – রাতের রান্না করবে? নাকি বাহিরে থেকে আনিয়ে নিবো?

আঁচল – না আমিই রান্না করবো বাহিরে থেকে আনাতে হবেনা। বাহিরের খাবার খাওয়া ঠিক না।

রেহান আঁচলের কথায় মুচকি হেসে ফ্লাই কিস দেয়। আঁচল মুখ ভেংচি কেটে ওয়াশরুমে ঢুকে পড়ে।

রাতে….

আঁচল ডিনার রেডি করছে হটাৎ কেউ আঁচল কে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে।

আঁচল কিছুটা ভয় পেয়ে যায় পরে বুঝতে পারে এটা রেহান ছাড়া আর কারো কাজ না।

আঁচল – কি হচ্ছে টা কি! দেখতেই তো পারছেন কাজ করছি। অযথা বিরক্ত কেনো করছেন?

রেহান – ওহো…. আমি টাচ করলে তুমি ডিস্টার্ব ফিল করো তাই না? ওকে ফাইন আজ থেকে আর তোমার ধারে কাছেও ঘেঁষবো না।
যে কথাটা বলতে এসেছিলাম কাল থেকে অফিস যাবো। বাবা নেই এমনি তেও এখন সব আমাকেই সামলাতে হবে তাই।

আঁচল – বাহহ তা তো ভালো কথা।

আঁচলকে আর কিছু বলতে না দিয়েই রেহান কিচেন থেকে চলে আসে।

আঁচল – যাহ বাবা উনি তো দেখছি সত্যি সত্যি রাগ করলেন? ডেভিল টার রাগও আছে দেখছি!!

রেহান রুমে এসে শুয়ে পড়ে। আঁচল ডিনার রেডি করে রেহান কে ডাকছে কিন্তু রেহানের কোনো সাড়া নেই।

আঁচল রেগে রুমে এসে দেখে রেহান শুয়ে আছে। আঁচল বুঝতে পারে রেহান বোধহয় একটু বেশিই হার্ট হয়েছে।

আঁচল – শুয়ে পড়লেন যে! খেতে আসুন।

রেহান ——-

আঁচল – কি হলো? উঠুন

রেহান ——

রেহানের কোনো সাড়া না পেয়ে আঁচল আরও রেগে যায়। আঁচল রেহান কে টেনে উঠে বসানোর চেষ্টা করে কিন্তু বেচারি ব্যার্থ হলো। কেননা রেহানের মতো বডিবিল্ডারের কাছে আঁচলের কাঠির মতো শরীর খানা কিছুই না।

আঁচলের চেষ্টা দেখে রেহান হেসে দেয়। কিন্তু হাসিটা আঁচলকে বুঝতে দেয়নি। রেহান উঠে বসে গম্ভীর কন্ঠে বলে….

রেহান – আমি খাবো না তুমি বরং খেয়ে নাও।

আঁচল – ঐ সময়ের জন্য সরি। এবার তো চলুন।

রেহান – শুধু সরি? (মুচকি হেসে)

আঁচল – তো?

রেহান – আরও কিছু চাই।

আঁচল – কী?

রেহান – (আঙুল দিয়ে নিজের ঠোঁট ইশারা করে দেখায়।)

আঁচল – পারবো না। (রেগে)

রেহান – আমিও খাবো না। যদিও খুব ক্ষিদে পেয়েছিলো।

আঁচল অসহায় ভাবে রেহানের দিকে তাকায়। রেহান ভ্রু নাচিয়ে আঁচলের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসে।

আঁচল রেহানের পাশে বসে দু’হাতে রেহানের মাথাটা কাছে এনে রেহানের ঠোঁটে ঠোঁট ছোঁয়ায়। রেহান আঁচলের কোমড় চেঁপে ধরে।

আঁচল – এবার হয়েছে? চলুন।

রেহান – বাবাহ আমার বউ টা দেখি আমার থেকেও বেশি রোমান্টিক। (মুচকি হেসে)

আঁচল রেহানের কথায় লজ্জা পেয়ে চলে যায়।

রেহানও আসে।

দুজনের খাওয়া শেষ হলে ঘুমাতে চলে যায়। আঁচল পাশ ফিরে শুয়ে পড়তেই রেহান টেনে আঁচলকে নিজের কাছে আনে।

আঁচল – আপনি ঘুমান। সকালে কী ডাকতে হবে?

রেহান – হুম ৯ টায় অফিস।

আঁচল – আচ্ছা ঠিক আছে।

রেহান আঁচলকে বুকে এনে ঘুমিয়ে পড়ে।

সকালে…

আঁচলের আগেই রেহানের ঘুম ভেঙে যায়।
রেহান আঁচলের কপালে চুমু দেয়। আঁচল নড়েচড়ে উঠতেই রেহান ঘুমের ভান ধরে।

আঁচল তাকিয়ে দেখে ৭ টা বাজে। রেহানের দিকে একপলক তাকিয়ে আঁচল উঠে ফ্রেশ হয়ে ব্রেকফাস্ট বানাতে চলে যায়।

আঁচল ব্রেকফাস্ট রেডি করে রেহান কে ডাকতে এসে দেখে রেহান কে ডাকতে এসে দেখে রেহান ভেজা শরীরে টাওয়েল পেঁচিয়ে দাড়িয়ে চুল ঝাড়ছে।
আঁচলকে দেখা মাত্রই রেহান মুচকি হাসে।

আঁচল – রেডি হয়ে আসুন।

রেহান – হুম আসছি।

আঁচল চলে গেলে রেহান রেডি হয়ে ব্রেকফাস্ট করতে আসে।

রেহান – আমাকে খাইয়ে দাও।

আঁচল কিছু না বলে রেহান কে খাইয়ে দেয়।

রেহান – এবার খুশি তো? নিজের টাকায় বউ কে খাওয়াবো। (মুচকি হেসে)

আঁচল – হুহহহ এখনো তো যাননি এতেই এতো কথা বলছেন।

রেহান – যাচ্ছি তো।

রেহান আঁচলের কাছে এসে আঁচলের কপালে চুমু দেয়।

রেহান – আসি বেইবি। আমায় মিস করলে ফোন করো সাথে সাথে চলে আসবো।

আঁচল – করবো ও না মিস হুহহহ।

রেহান – হুহহ নাকি হুম দেখায় যাবে বউ।

রেহান চলে যেতেই আঁচল দরজা লক করে নিজের রুমে চলে আসে। এসে টিভি দেখা শুরু করে।

কিন্তু কিছুক্ষন কাটার পরই বেচারির বোরিং লাগছে। এতো সময় কি টিভি দেখে পার করা সম্ভব নাকি!

আঁচল বার বার ঘড়ি দেখছে। আর ভাবছে লাঞ্চের টাইমে রেহান কে ফোন করবে।

কিছুক্ষন পর রেহান নিজেই ফোন করে।

আঁচল – হ্যা বলুন।

রেহান – মিস করছো আমায়?

আঁচল – (বাপরে এই ডেভিল টা বুঝলো ক্যামনে? মনে মনে)
নাহ মিস করতে যাবো কেনো আজিব।

রেহান – হুম জানি তো। মিস করবেই। আমি আসছি কিছুক্ষনের মধ্যে।

আঁচল – আচ্ছা।

রেহানের কথায় আঁচল শুধু আচ্ছা বললেও বেচারি মনে মনে খুবই খুশি হয়।

আঁচল গিয়ে লাঞ্চ রেডি করতে থাকে। কিছুক্ষন পর বেল বাজতেই আঁচল দৌড়ে গিয়ে দরজা খুলে দেয়।

আঁচল দরজা খুলে তো পুরাই অবাক।
রেহান হাতে অনেক গুলো আইসক্রিম, চকলেট নিয়ে দাড়িয়ে আছে।

রেহান – কী বউ? হা করে তাকিয়ে আছো যে? নিবে না?

আঁচল মুচকি হেসে রেহানের কাছ থেকে চকলেট আর আইসক্রিম গুলো নেয়।

বিকেলে…

রেহান – আঁচল কোথাও যাবে ঘুরতে? তোমার কিছু লাগবে?

আঁচল – না কিছুই লাগবে না।

রেহান – তাহলে চলো কোথাও ঘুরে আসি। একেবারে রাতে ডিনার করে ফিরবো।

আঁচল – আচ্ছা।

রেহান – ওকে রেডি হয়ে এসো।

আঁচল রেডি হয়ে চলে যায়। রেহান ও রেডি হয়ে নেয়।
আঁচল রেডি হয়ে আসতেই রেহান আঁচলকে দেখে হা হয়ে যায়।
আরও বেশি অবাক হয় আঁচল রেহানের সাথে মিল রেখে ড্রেস পড়েছে।

রেহান – বেশি সাজতে হবেনা নরমাল সাজবা বুঝছো?

আঁচল – হুম।

আঁচল শুধু ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক দেয় আর আর চোখে কাজল সাথে নরমাল জুয়েলারি। তাতেই আঁচলকে দেখতে মাশআল্লাহ বলতেই হবে।

রেহান – রিকশা করে ঘুরলে কেমন হয়?

আঁচল – হুম। মন্দ না।

রেহান আঁচলকে নিয়ে রিকশায় উঠে।

রেহান – এতো দূরত্ব বজায় রাখলে তো পড়ে যাবা। তার চেয়ে ভালো আমার কাছে এসে বসো। (চোখ মেরে)

আঁচল – এই জন্যই রিকশায় করে ঘুরতে চেয়েছেন তাই না? (রেগে)

রেহান মুচকি হেসে আঁচলের কোমড় জড়িয়ে ধরে বসে।

চলবে…

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে