ডুবে ডুবে ভালোবাসি পর্ব-১৩+১৪

0
2918

#ডুবে_ডুবে_ভালোবাসি
#পর্বঃ১৩
#Arshi_Ayat

মধু এরপর আর ওখানে দাড়ালো না।সাইকার রুমে এসে বালিশের ওপর শুয়ে কান্না করতে লাগলো।হঠাৎ কেউ একজন ওর মাথায় হাত রাখতেই কান্না থামিয়ে উঠে বসতেই দেখলো শিহাব ওর দিকে তাকিয়ে আছে।আচমকা শিহাবকে দেখে মধু চোখের পানি মুছে ফেললো।শিহাব ভ্রু কুঁচকে বলল”মধু কাদছিস কেনো?”

‘এমনিতেই সাইকা আপুকে মনে পড়ছে তাই।’

শিহাব কিছু একটা ভেবে বলল ‘লুডু খেলবি?’

‘হ্যাঁ খেলবো।কিন্তু মাত্র দুইজন?’

‘না আরাফ ভাইয়া আসছে।তুই বস আমি লুডু বোর্ড নিয়ে আসি।’
এটা বলে শিহাব বোর্ড আনতে গেলো।মধু খাট থেকে নেমে ছাড়া চুলগুলোকে হাত খোপা করে কলপাড়ে গিয়ে হাতমুখ ধুয়ে ঘরে আসতেই দেখলো আরাফ আর শিহান খাটের ওপর লুডুর বোর্ড নিয়ে আরাম করে বসে আছে।মধু হাত,মুখ মুছে ওদের সাথে বসে পড়লো।তিনজনই নিজেদের গুটি পছন্দ করে নিলো।প্রথমে মধু চাল দিলো কিন্তু ছক্কা ওঠে নি।তারপর আরাফ দিলো,আরাফেরও কপাল খারাপ।সবার শেষে শিহাব চাল দিতেই ওর ছক্কা উঠলো।শিহাব এক গুটি উঠিয়ে আবার চাললো।কিন্তু এবার এক(কানা)উঠলো।গুটিটা একঘর এগিয়ে দিলো।তারপর মধু চালতেই এবার মধুর ছক্কা উঠলো মধুও নিজের একটা গুটি উঠিয়ে আবার চাল দিলো।এবারও ছক্কা।মধু নিজের দ্বিতীয় গুটিও উঠালো।এরপর আবার দিতেই পাঁচ উঠলো।প্রথম গুটি পাঁচঘর এগিয়ে দিলো।তারপর চাল আরাফের।আরাফ মনেমনে চাইছিলো একটা ছক্কা যেনো ওঠে।কিন্তু কে জানে ওর ওপর কি কুফা লেগেছে!এবার ছক্কা ওঠে নি।এরপর শিহাব চালদিলো।শিহাবের পর মধু।ওদের দুজনের আর ছক্কা না উঠলেই গুটি এগুচ্ছিলো কিন্তু বেচারা আরাফের একটা গুটিও এখন পর্যন্ত ওঠে নি।আরাফের ইচ্ছা করছে খেলা ছেড়ে উঠে যেতে।কয়েকবার চেয়েছিলো ও কিন্তু মধু আর শিহাব ওকে জোর করে বসিয়ে রেখেছে।ইতিমধ্যে মধুর এক গুটি পেকে গেছে। শিহাবের এক ঘর গেলেই একটা গুটি পেকে যাবে।অথচ আরাফের এখনো একটা ছক্কাও উঠছে না।তবুও বিরক্তি মুখে বসে আছে সে।হঠাৎ চাল দিতেই আরাফের ছক্কা উঠলো।আরাফ খুশীতে একটা গুটি উঠিয়ে আবার চাল দিলো।আবারও ছক্কা উঠলো।আরেকটা গুটি উঠিয়ে আবার চাল দিতেই চার উঠলো।এতক্ষণে আরাফের মুখে হাসি ফুটলো।খেলা আস্তে আস্তে জমছে।শিহাবের একটা গুটি আরেকটু পরই পাকতো কিন্তু মধু নিজের গুটি দিয়ে ওরটা কেটে দিলো।এভাবে কাটাকাটি চলছে।মধু আর শিহাবের একটা গুটি পাকলেও এরপর আর কোনো গুটিই পাকছে না।শুধু কাটাকাটি হচ্ছে। অনেক্ষণ খেলার পর মধুর আর আরাফের মুড চলে গেলো।আর খেলতে ইচ্ছে করছে না তাই শিহাব লুডুর বোর্ড রেখে এলো।এরমধ্যেই আরাফের মা এসে বলল’তোরা সবাই খেয়ে নে।খাবার দিয়েছি।’

আরাফের মায়ের কথায় সবাই মাঝখানের রুমে গেলো।এইরুমেই সবাই একসাথে খায়।একটু আগে মামারা,খালুরা আর অন্যান্য আত্নীয়রা খেয়েছে।এখন বাকি যারা আছে তারা খাবে।খাওয়া শেষ করে মধু সাইকার রুমে এসে দেয়ালঘড়িতে দেখলো সাড়ে দশটা বাজে।যে যার যার মতো শুয়ে পড়ছে।সাইকার রুমে আজ মধুর একা শুতে হবে।এমনিতেই মধু ভয় পায় আজ আরো ভয় লাগছে।মধু গিয়ে আইরিন রহমানকে বলল”আম্মু আজকে আমার সাথে ঘুমাও না!আমার ভয় করে।”

আইরিন রহমান বিরক্ত কন্ঠে বললেন”ঢং না করে গিয়ে শুয়ে পড়।বিয়ের বয়স হয়ে গেছে এখনি নাকি ভয় পায়!”

মধু আর কিছু না বলে রুমে চলে এলো।মন খারাপ করে মশারী টানিয়ে দরজা বন্ধ করে লাইট জ্বালিয়েই শুয়ে পড়লো।ঘুম আসছে না।মনটা ভার হয়ে আছে।মনে হচ্ছে কিছু একটা বুকের মধ্যে চেপে বসে আছে।নামাতে পারলে ভালো লাগতো।বাইরে মেঘ ডাকছে।হঠাৎ করে কারেন্টও চলে গেলো।মধু শোয়া থেকে জড়সড় হয়ে উঠে বসলো।হালকা বৃষ্টিও শুরু হয়েছে।বাতাস হচ্ছে প্রচুর।এভাবেই এক দেড়ঘন্টা মধু বসেছিলো।এক দেড়ঘন্টা পর বাতাস বৃষ্টি কমে যাওয়ায় মধু গুটিশুটি মেরে শুয়ে পড়লো।তখনও কারেন্ট আসে নি।চোখ মুখ খিঁচে শুয়ে থাকার ফলে মধুর ঘুম চলো আসে।তখন ঘড়িতে আনুমানিক রাত ১২ টা।
———————
ফজরের আজান কানে আসার সাথে সাথে মধুর ঘুম ভেঙে গেলো।আড়মোড়া ভেঙে চোখ খুলে উঠে বসলো মধু।দরজা খুলে কলপাড়ে গিয়ে ওজু করে ঘরে এসে নামাজ পড়ে খাটে বসে রইলো।ইচ্ছাছিলো একটু হাটবে কিন্তু এখন বের হওয়া ঠিক হবে না।কেউই এখবো জাগে নি।দশ পনেরো মিনিট পর বাইরে বড় খালা আর ছোটো মামিকে দেখা গেলো।মধু খাট থেকে নেমে বাইরে যেতেই বড় খালা বলল’কি রে কখন উঠলি ঘুম থেকে?’

‘একটু আগে।খালা আম্মু উঠছে?’

‘হুম তোর মা নামাজ পড়ে।’

‘ও,,,খালা আমি একটু হেঁটে আসি।আম্মু জিগ্যেস করলে বইলো একটু হাঁটতে গেছি।’

‘আচ্ছা যা।তাড়াতাড়ি আসিস।’

মধু ঘাড় নাড়িয়ে হাঁটতে লাগলো।কাল রাত বৃষ্টি হওয়ায় রাস্তাঘাট কাঁদাকাদা হয়ে আছে।আরো মধু জুতা নেয় নি খালি পায়ে হাঁটছে।খালি পায়ে হাটতে মধুর ভালো লাগে।সবসময়তো জুতা পায়ে দিয়েই হাটা হয়।তাই মধু যখনই গ্রামে আসে তখনই খালি পায়ে হাটে।মধুর বহুদিনের ইচ্ছা নৌকায় চড়া।কিন্তু আজও সেটা পূরণ হয় নি।কে জানে কবে হবে!প্রায় অনেক্ক্ষণ হাটাহাটি করে মধু বাড়ি ফিরলো।কলপাড়ে গিয়ে হাত পা ধূয়ে ঘরে এসে দেয়াল ঘড়িতে দেখলো সাতটা বাজে।মধু ঘর থেকে বেরিয়ে রান্না ঘরে গেলো।সেখানে ওর মা আর মামিরা নাস্তা বানাচ্ছে।ওকে দেখে ওর মেঝো খালামনি ডেকে বলল”মধু এই নাস্তার প্লেট টা তোর বড় মামাকে দিয়ে আয়।”

মধু প্লেট টা নিয়ে বড় মামার রুমে আসতেই দেখলো বড়মামা হেলান দিয়ে বসে আছে।মধু টেবিলে নাস্তার বাটিটা দিয়ে বলল”মামা নাস্তা দিয়েছি।”

“আচ্ছা।তুই খেয়েছিস?”

“না পরে খাবো।”
এটা বলে মধু চলে গেলো।এরপর সবার নাস্তা পৌঁছে দিতে দিতে মধু ক্লান্ত হয়ে গেছে।সবার শেষে নিজের নাস্তা নিয়ে ঘরে এসে খাওয়া দাওয়া শেষ করলো।এখন প্লেট রাখতে যাবে এইসময় ছোট মামি এসে বলল’মধু,শোনো আজকে আমরা সবাই শাড়ি পড়ে যাবো সাইকার শ্বশুর বাড়ি।তুমি শাড়ি এনেছো?’

মধু উদাস মুখে বলল’না মামি শাড়ি তো আনি নি।’

‘আচ্ছা সমস্যা নেই।প্লেট রেখে আমার রুমে আসো।’
মধু প্লেটগুলো রেখে ছোটো মামির রুমে গেলো।ছোট মামি পাঁচ ছয়টা শাড়ি বের করে বলল’দেখো যেটা পছন্দ হয় সেটা পরো।’

মধু দেখেশুনে কালো রঙের লাল কাছা ওয়ালা একটা শাড়ি নিলো।ছোটো মামি শাড়িটা ওর গায়ের ওপর মেলে ধরে বলল’বাহ!অনেক সুন্দর লাগছে।এটাই পরবে তুমি।এগারোটার মধ্যে গোসল করে নিও।’

‘আচ্ছা আমি তুমি কোনটা পরবে?’

ছোট মামি হালকা গোলাপি রঙের ওপরে সোনালি রঙের সুতায় জর্জেট কাজ করা একটা শাড়ি বের করে বলল’এটা পরবো।এই শাড়িটা তোমার মামা আমাদের বিবাহবার্ষিকীতে দিয়েছে’ এটা বলেই ছোটমামি একটু লাজুক হাসলো।মধু একটু হেসে বলল’আচ্ছা আমি আমি এখন গেলাম।’

‘আচ্ছা যাও।’
মধু সেখান থেকে বের হতেই আরাফের মুখোমুখি পড়লো।আরাফ ভ্রু কুঁচকে বলল’এভাবে টইটই করে ঘুরে বেড়াচ্ছিস কেনো?’

‘কোথায় ঘুরে বেড়াচ্ছি!আমি তো ছোট মামির কাছে গিয়েছিলাম শাড়ি পছন্দ করতে?’

‘কেনো শাড়ি পছন্দ করে কি করবি?’

‘ছোটমামি বলছিলো আজকে সবাই নাকি শাড়ি পড়ে সাইকা আপুর শ্বশুড় বাড়ি যাবে।আমার তো শাড়ি নেই তাই আমি ওনার থেকে একটা পছন্দ করতে বলেছিলো।’

‘ও আচ্ছা।শোন তোর সাথে কথা আছে।’

‘কি কথা?’

‘এখানে না বাইরে আয়।’

‘আচ্ছা চলো।’
আরাফ মধুকে নিয়ে পুকুর পাড়ে চলে গেলো।পাড়ে এসে মধু বলল’হুম বলো কি বলবে?’

‘আচ্ছা মেয়েদের চুড়ির মুট,টিপের পাতা,কানের দুল,নাকফুল,মেহেদী এগুলো কতো করে রে?আসলে দাম জানি না তো সেইজন্য জিগ্যেস করলাম।দোকানদার তো ঠকিয়ে দিবে।’

মধু এক ভ্রু উঠিয়ে সন্দেহের দৃষ্টিতে আরাফের দিকে তাকিয়ে বলল’কেনো বলো তো?তুমি এগুলো কিনে কি করবে?’

‘আরে আমার এক বান্ধবীর জন্মদিন আজকে তাই ওকে গিফট করবো।উল্টাপাল্টা কিছু ভাবসি না।’

মধু মুখ ভেঙচিয়ে বলল’বান্ধবী নাকি প্রেমিকা?’

‘সত্যি বান্ধবী।’

‘আচ্ছা আমি সবগুলোর দাম লিখে তোমাকে দিচ্ছি।’

‘আচ্ছা আমি ঘরেই আছি।তুই দিয়ে যাস।’

‘আচ্ছা।’
মধু ঘরে গিয়ে আরাফের বলা সবগুলো জিনিসের দাম লিখে আরাফকে দিয়ে আসলো।আসার সময় বলল’এগুলোর প্রত্যেকটা থেকে এক সেট আমার জন্যও চাই তা নাহলে বড় খালামনির কাছে ফাস করে দেবো।’

‘আমার কাছে তো এতোটাকা নাই রে বোন।থাকলে সত্যি নিয়ে আসতাম।’

‘বান্ধবীর জন্য থাকে কিন্তু বোনের জন্য থাকে না।বাহ!”মধু অভিমানী গলায় বলল।

আরাফ একটু হেসে বলল’আচ্ছা তোর জন্যও আনবো।খুশী?’

মধু ঠোঁট প্রসস্ত করে হাসলো।জবাব দিয়ে দিলো সে খুশী।তারপর আরাফের রুম থেকে বের হয়ে নিজের রুমে গিয়ে দেখে আইরিন রহমান বসে আছে।মধুকে দেখে বলল’কোথায় গিয়েছিলি?’

‘এইতো ছোট মামির রুমে গিয়েছিলাম।’

আইরিন রহমান কৈফিয়ত নেওয়ার ভঙ্গিতে বললেন’কেনো?’

‘মামি বলছিলো আজকে সবাই নাকি শাড়ি পড়ে যাবে।তাই আমাকেও পড়তে।আমার শাড়ি নেই শুনে মামি ওনার থেকে একটা শাড়ি পছন্দ করতে বলেছিলেন তাই ওনার রুমে গিয়েছিলাম।’

‘শাড়ি পড়া লাগবে না।অন্য যে ড্রেস আছে সেটা পরবি।’

‘মা সবাই পরবে।আমিও পরি?’

মধুর কথা শুনে আইরিন রহমান সপাটে একটা চড় মেরে বলল’আমার কথার ওপর কথা বলিস কিভাবে?দিনদিন কি বেয়াদব হয়ে যাচ্ছিস!’
এটা বলেই আইরিন রহমান চলে গেলেন ঘর থেকে।তিনি মূলত এজন্যই এসেছেন ঘরে যেনো মধু শাড়ি না পড়ে।একটু আগে রান্নাঘরে শুনছিলো সবাই নাকি শাড়ি পড়বে।তাই তিনি মধুকে নিষেধ করতে এইঘরে এসেছিলেন।আইরিন রহমান চলে যাওয়ার পর মধু বাম হাতের পিঠ দিয়ে চোখের পানি মুছে ফেললো।তারপর জামা কাপড় নিয়ে পুকুর ঘাটে গেলো।আজকে কেউ নেই একা গোসল করতে হবে।বড়রা পরে করবে।মধু গলা পানি পর্যন্ত নামলো তারপর ইচ্ছামতো ডুব দিতে থাকলো।একটা পর্যায়ে ডুব দিতে দিতে চোখেমুখে আধার দেখছিলো তাই তাড়াতাড়ি ঘাটে চলে আসলো।গোসল শেষে জামা পড়ে ঘরে গিয়ে আয়নার সামনে দাড়াতেই দেখলো অনেকক্ষণ ডুবানোর ফলে চোখ দুটো ভয়ানক লাল হয়ে আছে।মধু মাথায় তোয়ালে পেচিয়ে বিছানায় বসে রইলো।একটু পর ছোট মামি এসে বলল’মধু শাড়ি পরবে না?চলো তোমাকে পরিয়ে দেই।’

মধু বাধা দিয়ে বলল’মামি আমি যাবো না।শরীর খারাপ লাগছে।তোমরা যাও।’

মধুর কথা শুনে ওর ছোটো মামি ভালো ভাবে ওর দিকে তাকিয়ে চিন্তিত ভঙ্গিতে বললেন’কি হয়েছে মধু?চোখ লাল কেনো তোমার?জ্বর আসছে নাকি?’

‘মনে হয় মামি।শরীর ব্যাথা ব্যাথা করছে।মাথাব্যথা করছে।’

‘আচ্ছা তুমি শুয়ে থাকো।কিছু খাবা?’

‘না মামি কিছু খেতে ইচ্ছে করছে না।’

‘আচ্ছা তাহলে শুয়ে থাকো।কিছু লাগলে বইলো।’

মধু মাথা নেড়ে সায় দিলো।ছোটোমামি চলে যেতেই মধু চুপচাপ চোখ বন্ধ করে শুয়ে পড়লো।একটু পর আইরিন রহমান এসে বললেন’অসুখ বাধালি কিভাবে?’

মধু কিছু না বলে মুখ নিচের দিকে নামিয়ে রাখলো।মধু জবাব না পেয়ে আইরিন রহমান বললেন’ওষুধ খেয়ে নিস।আমাদের আসতে দেরি হবে।আর ঘর থেকে একদম বের হবি না।’

মধু মাথা নেড়ে সায় দিলো।আইরিন রহমান বেরিয়ে যেতে নিলেই ওর বড় খালা এসে বলল’মধু তুই আসলেই যেতে পারবি না?একটু কষ্ট হলেও আয় সাইকা তোকে দেখলে খুশি হবে।’

মধু কিছু বলার আগেই আইরিন রহমান বললেন’আরে আপা যেতে না চাইলে থাক।জোরাজোরির দরকার নেই।চলো লেট হচ্ছে আমাদের।’

মধুর বড় খালা মধুর দিকে এগিয়ে এসে বলল’তোরা সবাই যা।আমি থাকি।ওকে অসুস্থ রেখে যাওয়া যাবে না।’

এবার মধু বাধা দিয়ে বলল’না খালামনি তুমি যাও,আমার তেমন কিছু হয় নাই।তুমি না গেলে তো সাইকা আপু রাগ করবে।প্লিজ তুমি যাও।’

‘কিন্তু তুই তো অসুস্থ।’মধুর খালা উদ্বিগ্ন হয়ে বলল।

‘আরে সমস্যা নাই।তোমরা তো চলেই আসবা।আমি ততক্ষণ শুয়ে থাকবো।তুমি আর দেরি কইরো না বেরিয়ে পড়ো।’

মধুর জোরাজোরিতে তিনি আর না করতে পারলেন না।সবাই মিলে বেরিয়ে পড়লো।যাওয়ার আগে আরাফকে আসতে দেখে মধু ঘুমের ভান ধরে থাকলো।আরাফ এসে মধুকে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখে চলে গেলো।সবাই চলে যেতেই মধু উঠে বসলো।এখন দুপুর বারোটা বাজে।ওরা আসতে আসতে সন্ধ্যা হবে।এতক্ষণ কি বসে থাকা যায় নাকি!মধু খাট থেকে উঠে দাড়িয়ে মাথা থেকে তোয়ালেটা সরিয়ে চুলগুলো ঝেড়ে নিলো।তারপর মাথায় ওড়না দিয়ে গেটে তালা মেরে চাবিটা ওড়নায় বেঁধে বেরিয়ে পড়লো।আজ অনেকদূর হাটা যাবে।মধু ধান ক্ষেতের পাশ দিয়ে হেটে ব্রীজের ওপর উঠলো।এটার নিচে খাল।এই খাল কতোদূর পর্যন্ত গেছে মধুর জানা নেই।মধু ব্রীজের ওপরে বসলো।হালকা একটা স্নিগ্ধ বাতাস বইছে সাথে রোদের তাপও আছে।দুপুর হওয়ায় তেমন মানুষ নেই।মধু কিছুক্ষণ সেখানে বসে আবার উঠে দাড়িয়ে হাটা শুরু করলো।হাঁটতে হাঁটতে সামনে দেখলো ইয়াদ একটা বাড়ি থেকে বের হচ্ছে।ওর সাথে একটা ছেলেও আছে।বাড়ির সামনে একটা রিকশাও আছে।ওরা এখন রিকশায় উঠবে।মধু দৌড় দিলো যে করেই হোক ইয়াদকে আটকাতে হবে।এই ভরদুপুরে ইয়াদকে যেনো ভীষণভাবে চায় মধু।

চলবে…..

#ডুবে_ডুবে_ভালোবাসি
#পর্বঃ১৪
#Arshi_Ayat

মধু দৌড়াতে দৌড়াতে দূর থেকেই দেখলো ইয়াদ রিকশায় উঠছে না ওই ছেলেটা একাই চলে যাচ্ছে।ছেলেটা চলে যাওয়ার পর ইয়াদ সামনের দিকে হাটছে।মধু পেছন থেকে ডাক দিলো’এই যে শুনছেন?’

একটা পরিচিত কন্ঠ পেয়ে ইয়াদ ঘুরে দাড়ালো।তারপর মধুকে দেখে মৃদু হাসলো।মধুও ইয়াদের সামনে দাড়িয়ে কিছুটা হেসে বলল’কোথায় যাচ্ছেন?’

‘কোথাও না এদিকেই হাটবো আর কি।তুমি?’

‘আমিও।আচ্ছা আপনি ঢাকা ফিরবেন কবে?’

‘কালকে রাতের বাসে ব্যাক করবো।তুমি?’

‘জানি না।মা যখন বলে।’

‘ও আচ্ছা দাঁড়িয়ে থেকে লাভ নেই চলো হাটি।’

‘চলুন।’

মধু আর ইয়াদ বড়রাস্তা থেকে নেমে খালপাড় দিয়ে হাটা শুরু করলো।একটু হাটতেই মধু একটা নৌকা দেখে বলল’নৌকা বাইতে পারেন?’

‘হ্যাঁ পারি।কেনো তুমি চড়বে?’

মধু মাথা নাড়িয়ে বলল’হুম অনেকদিন থেকে ইচ্ছে।কিন্তু আমিতো বাইতে পারি না।আবার কেউ নিয়েও যায় না।’

‘আচ্ছা তাহলে নৌকায় চড়ার ইচ্ছাটা নাহয় আমই পূরণ করি।’এটা বলে ইয়াদ চওড়া হাসি দিলো।তারপর ঝুকে নিজের প্যান্ট খাপিয়ে বলল ‘ওঠো নৌকায়।’

মধু উঠতে পারলো না কারণ নৌকায় পা দিতেই নৌকা পিছিয়ে যায়।মধুর অবস্থা দেখে ইয়াদ আগে উঠলো তারপর নিজের হাত বাড়িয়ে বলল’এবার আসো।’

মধু কাপাকাপা হাতে ইয়াদের হাত ধরলো।ইয়াদ একটানে নৌকায় উঠিয়ে নিলো মধুকে।ইয়াদ নৌকা থেকে পানিতে নেমে নৌকা ঠেলে কিছুদূর এগিয়ে নিজেও উঠে পড়লো।তারপর নৌকা বাইতে শুরু করলো।মধু ভয়েভয়ে বলল’যদি পড়ে যাই তাহলে বাঁচাবে কে?আমিতো সাতার জানি না।’

‘পড়বে না।আর পড়লেও সমস্যা নেই আমি সাতার জানি।তুমি জড়তা ভেঙে বসো তা নাহলে মজা পাবে না।’

কিছুদূর যাওয়ার পর মধু কিছুটা সহজ হলো।হাতের কাছে একটা শাপলা ফুল দেখে ওটা তুলে নিলো মধু।এখন অনেক ভাল্লাগছে মধুর কয়েকটা শাপলা তুলে নৌকায় রেখে দু’হাতে খালের পানিতে হাত ভেজাচ্ছে।ইয়াদ নৌকা বাইছে আর মধুর খুশী দেখছে।এই খুশীগুলো ক্যামেরা বন্দী করলে কেমন হয়!ইয়াদ বাম হাতে নিজের ফোনটা বের করলো তারপর লুকিয়ে চুরিয়ে মধুর কয়েকটা ছবিতুলে ফোনের একটা ফোল্ডারে লক করলো।তারপর মধুকে ডেকে বলল’এদিকে এসে কয়েকটা সেলফি তোলো।এদিকের ভিউ অনেক সুন্দর।’

মধু আস্তে আস্তে ইয়াদের কাছাকাছি এসে কয়েকটা সেলফি নিলো।তারপর বৈঠা হাতে ইয়াদের কয়েকটা ছবি তুললো।ইয়াদও নৌকায় রাখা শাপলা গুলো মধুর হাতে দিয়ে কয়েকটা ছবি তুললো।মোটামুটি অনেকদূর চলে এসেছে দু’জনে।তাই নৌকা ঘুরিয়ে ফেললো ইয়াদ।রোদের তাপে ইয়াদ প্রচুর ঘামছে।শার্টও ভিজে জুবুথুবু হয়ে গেছে।অস্বস্তি লাগছে।মধু বুঝতে পেরে বলল’শার্ট টা খুলে ফেললেই পারেন।’

‘কিভাবে? আমার হাতে তো বৈঠা।”

মধু উত্তরে আর কিছু না বলে এগিয়ে এসে ইয়াদের শার্টটা খুলে নিলো।ইয়াদ মৃদু হাসলো।মধু হেসেছে তবে অন্যদিকে তাকিয়ে।যখন ওরা কিনারায় পৌঁছেছে তখন আনুমানিক দুপুর ২.০০ টা।কিনারায় পৌঁছে দু’জনেই চুপচাপ হাটছে।ইয়াদের শার্ট মধুর হাতে।নিরবতা ভেঙে ইয়াদ’ই প্রথমে বলল’বাসায় যাবে না?’

‘না আজকে অনেকদূর পর্যন্ত ঘুরবো।বাসায় কেউ নেই।’

‘সবাই কোথায় গেছে?’ইয়াদ কৌতুহলী হয়ে প্রশ্ন করলো।

‘আমার আপুর বউ ভাতে।’

‘তুমি যাও নি কেনো?’

‘এমনিতেই ইচ্ছে নেই তাই।এবার আপনি বাসায় চলে যান।’মধু ইয়াদের শার্ট’টা ওর দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল।

‘তুমি একা একাই হাটবে?’নিজের শার্ট’টা হাতে নিয়ে বলল।

‘হুম।’মধু একটু উদাসী হয়ে বলল।

‘আচ্ছা যদি আমিও তোমার সাথে হাটি?’

‘আপনারতো ফ্রেশ হওয়া প্রয়োজন।আর খাওয়া দাওয়া ও তো করেন নি।না.. না আপনি বাসায় চলে যান।’

‘সমস্যা নেই বাসায় গিয়ে একবারে ফ্রেশ হবো আর আমি সকালে নাস্তাই খেয়েছি বারোটায়।তাই আপাতত আমার ক্ষিদে নেই।’

মধু মৃদু হেসে বলল’আচ্ছা তাহলে চলুন।’

ইয়াদ আর মধু হাঁটতে লাগলো।আজ যেদিকে দু’চোখ যায় সেদিকেই যাবে দু’জন।হাটতে হাটতেই ইয়াদ প্রশ্ন করে বসলো’আচ্ছা একটা কথা বলি?’

মধু ইয়াদের মুখের দিকে তাকিয়ে বলল’বলুন।’

‘মাঝেমধ্যেই তোমাকে খুব বিষন্ন দেখা যায় কেনো?তুমি চাইলে আমাকে বলতে পারো।আমি যদিও তোমাকে সাহায্য করতে না পারিও তবুও তোমার দুঃখ কিছুটা হলেও কমবে।’

মধু ইয়াদের কথা শুনে একটু হাসলো।আজ কেনো জানি সব দুঃখ কষ্ট মুখ ফুটে বলে দিতে চায় মধু।খুব করে বিশ্বাস করতে চাইছে পাশে থাকা মানুষটাকে।মধু কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল’নিজের আপন মাকে কখন মুহুর্তেই অপরিচিত হতে দেখেছেন?কখনো মনে হয়েছে পরিবারে আপনি বোঝা?কখনো মনে হয়েছে পরিবার ছেড়ে দূরে কোথাও পালিয়ে যেতে।হতাশায় কখনো মুষড়ে পড়েছেন?কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়েছেন কখনো?’

মধু এতটুকু বলে থামলো।ইয়াদ বিষ্ময়কর দৃষ্টিতে মধুর দিকে চেয়ে রইলো।মেয়েটার কতো কষ্ট থাকতে পারে এই জীবনের অল্পসময়ে।মধু নিজেকে সমলে আবার বলতে শুরু করলো’আমার বাবা মারা যায় চার বছর বয়সে।মা কে নানুরা জোর করে অন্য জায়গায় বিয়ে দেয়।চারবছর বয়স থেকে আমি নানুদের বাসায় থাকতাম।ছোট ছিলাম শুধু মা মা করতাম।আর কান্না করতাম।আমার কান্না থামানোর জন্য বড় মামি অথবা নানু থাপ্পড় মারতো ভয় দেখাতো।আমি গুমরে গুমরে কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পড়তাম।এভাবেই দুইবছর চলে যায়।যখন আমার বয়স ছয় তখন একদিন মা বাড়িতে আসে।এই দুইবছরে একবারও আসে নি সে।এমনও দিন গিয়েছে আমি জিদ করে বসেছিলাম মা না আসলে আমি খাবো না।উপোস করে বসে থাকতাম।কিন্তু মা আসতো না।নানু মেরে মেরে খাওয়াতো।যেদিন মা আসলো সেদিন শুনলাম মায়ের নাকি ডিভোর্স হয়েছে।ডিভোর্স মানে কি আমি জানতাম না।কিন্তু এটা বুঝেছিলাম আমি আবার মায়ের কাছে থাকতে পারবো।কি খুশি হয়েছিলাম সেদিন কেবল আমিই জানি।তখন থেকে আবার মায়ের সাথে থাকা শুরু হয়।সাথে মিলিও ছিলো।মিলিকে খুব হিংসে করতাম আমি।সবসময় মিলির দোষ হলেও মা আমাকে মারতো।এভাবেই চোখের সামনে নিজের মায়ের পরিবর্তন দেখেছি।কথায় কথায় চড়,থাপ্পড়,মার খেয়েছি ইচ্ছেমতো।যখন ক্লাস এইটে ছিলাম একদিন আমার মায়ের কাছে বিয়ের প্রস্তাব আসে।মা তখনই চেয়েছিলো বিয়ে দিয়ে দিতে কিন্তু বড় খালা মানা করায় আর দেন নি।এভাবে এই চারবছরে কতো সম্বন্ধ এসেছে তার হিসেব নেই।কয়েকটা আমি ভেঙেছি কয়েকটা বড় খালা মানা করেছেন।কিন্তু এবার মনে হয় না বিয়ে আটকাবে।হয়েই যাবে এবার বিয়েটা।ইচ্ছে ছিলো নিজের পায়ে দাড়ানোর।কিন্তু জানি না কি হবে।কাল বোধহয় দেখতে আসবে আমায়।’

মধু হাতের উল্টো পিঠে চোখ মুছে ইয়াদের দিকে তাকালো।ইয়াদের চোখও ছলছল করছে।মধু ফিক করে হেসে বলল’দেখুন, আমি আপনাকে ইমোশনাল বানিয়ে ফেললাম।’

ইয়াদ নিজেকে সামলে বলল’এমন কিচ্ছু হবে না ধৈর্য ধরো।নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমার কষ্ট লাঘব করবে।’

‘হ্যাঁ আমিও সেই আশাতেই আছি।বাড়ি যাবেন না?’

‘তুমি যাবে না?’

‘আমি আপনাকে প্রশ্ন করলাম।আপনি উত্তর না দিয়ে উল্টা আমাকে প্রশ্ন করছেন।বলুন না!কখন যাবেন বাসায়?’

‘তুমি যখন যাবে।’

‘আমি এখনই যাবো বিকেল হয়ে এসেছে।বাড়ির সবাই এখনি চলে আসবে।’

‘তাহলে চলো দিয়ে আসি।’

‘আমি যেতে পারবো।আপনি চলে যান।’মধু বাধা দিয়ে বলল।

‘কিন্তু আমার তো একা ছাড়তে ইচ্ছে করছে না।সুন্দরীদের একা একা ফিরতে নেই।’

মধু ইয়াদকে কোনোমতেই মানাতে পারলো না।ইয়াদ যাবে মানে যাবে।মধু মনেমনে হেসে বলল’এমন ঘাড়ত্যাড়া ছেলেটা!’

তারপর এই ঘাড়ত্যাড়া ছেলের সাথে মধুর বাড়ি ফিরতে হলো।ইয়াদ মধুকে বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে চলে গেলো।ঘরে ঢুকে মধু কিছুক্ষণ জিরিয়ে কলপাড়ে গিয়ে হাতমুখ ধুয়ে ঘরে চলে এলো।তারা এখনো আসে নি।মধু বিছানায় লম্বা হয়ে শুয়ে রইলো।একটুপর ই ওর চলে এলো।সাইকা এসেই মধুর পাশে বসে বলল’কি রে কি হয়েছে তোর?অসুস্থ হলি কিভাবে?’

মধু হেসে বলল’তেমন কিছু না তুমি ফ্রেশ হও।দুলাভাই কই?’

‘তোর দুলাভাই তো আরাফ আর শিহাবের সাথে কোথায় যেনো গেছে।’

‘ওহ”তো তুমি বসে আছো কেনো যাও তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হও।’

সাইকা চলে যাওয়ার পর বড় খালা এসে বলল’মধু কি অবস্থা এখন তোর?এতক্ষণ কি করেছিস?’

মধু চটপট বানানো মিথ্যাটা বলল’ওইতো ঘুমিয়েছি।’

‘যাক,তাও ভালো আমিতো চিন্তায় ছিলাম।কিছু খাবি এখন?’

‘না..’আর কিছু বলতে পারলো না তার আগেই সাইকা বলল’তুই খাবি না তোর ঘাড় খাবে।আম্মু যাও তো খাবার দাবার নিয়ে আসো।’
—————
রাত আট’টা মধু সাইকার সাথে বসে গল্প করছে কিন্তু মধুর মনোযোগ এখানে নেই।সে তো ভাবছে ইয়াদের কথা।হঠাৎ সাইকা ওকে ধাক্কা দিয়ে বলল’কি ভাবিস?’

‘কিছু না।তুমি বলো।’

‘কি বলবো তুই তো কিছুই শুনছিস না।’

‘আচ্ছা শুনবো বলো।’

‘না আমি বলবো না।’এটা বলে সাইকা উঠে যেতে নিলে মধু ওর হাত ধরে বলল’আপু শোনো একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে।’

সাইকা ঘুরে এসে বসে বলল’কি বল।’

‘আচ্ছা আপু এই বাসায় কি কোনো ভূত আছে?’

সাইকা ভ্রু কুঁচকে বলল’নাহ!কেনো?’

‘না আমি একদিন ওয়াশরুমে যাওয়ার জন্য উঠেছিলাম তখন কারো ভয়ানক হাসির আওয়াজ শুনেছিলাম।’

‘ধূর,কি বলিস না তো।আমিতো কখনো শুনি নি।’

‘আচ্ছা ঠিকাছে তাহলে আজকে রাতে আমার সাথে এসো তুমি।’

‘আচ্ছা ঠিকাছে।তুই যখন উঠবি তখন আমাকেও ডেকে দিস।’

‘আচ্ছা।’
—————
রাত বারোটা বাজে।মাত্রই সাইকা আর মধু শুয়েছে।আজকে প্ল্যান হলো ভূত ধরার।এই উত্তেজনায় মধুর আর সাইকা কারোই ঘুম আসলো না।যখন রাত দুটো বাজলো তখন মধু ফিসফিসিয়ে বলল’আপু চলো উঠি।’

‘চল।আজকে এই ভূত ধরেই ছাড়বো।এই ভূত ধরার জন্য আজকে আমি জামাইরে ছাইড়া তোর কাছে শুইছি।’

তারপর মধু আর সাইকা লাইট নিয়ে বের হলো।আর ঠিক এমন সময় তিনটা গলা পাওয়া গেলো।ভয়ানক গলায় হাসছে।মধু ভয়ে সাইকাকে জাপটে ধরে বলল’আপু দেখছো।আমি বললাম না ভূত আছে।আজকে একটা না তিনটা।’

সাইকা ভ্রু কুঁচকে বলল’আরে ধূর এগুলো তো আরাফ ভাই শিহাইব্বা আর আমার জামাই হিমেইল্লার গলা।এগুলো হাসে কই থেইকা।’

সাইকা টর্চ লাইট টা ঘরে ছাদের ওপর মারতেই দেখলো ওর তিনজন ভূত দেখার মতো চমকে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে।আর নিচ থেকে মধু তাজ্জব বনে গেলো এটা দেখে।আর সাইকা কটমট করে চোখ রাঙিয়ে ওদেরকে নিচে নামতে বলল।

চলবে……

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে