#ডাক্তার_ম্যাডাম
#পর্ব_৪৭(শেষ পর্ব)
#মুমতাহিনা_জান্নাত_মৌ
আজ চমৎকার একটা চাঁদ উঠেছে আকাশে।স্বচ্ছ রুপালি ঝরণার মতো চাঁদের আলো যেনো চারপাশ ভাসিয়ে নিয়ে চলছে।আকাশে আজ বিন্দুমাত্র মেঘ নেই।সারা আকাশ জুড়ে কেবল মিটিমিটি জ্বলছে চাঁদের সাথি তারারা।চাঁদের আলোর মায়ায় রাত কে মনে হচ্ছে এক মায়াবী দিন।চাঁদ যতই উপরে উঠছে ততই বাড়ছে তার উজ্জ্বলতা।বাড়ছে এই মায়াবী রাতের সৌন্দর্য।
শিলা জানালার কাছে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে চাঁদের সৌন্দর্য উপভোগ করছে।আর সিফাতের আসার অপেক্ষা করছে।
কিন্তু সিফাত ছাদে একা একা দাঁড়িয়ে সিগারেট টানছে আর আনমনে তার ধোঁয়া ছাড়ছে।এটাই তার শেষ সিগারেট খাওয়া।সে নিজেই নিজের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছে আর কখনো সিগারেট খাবে না।
সিফাত ভীষণ টেনশনের মধ্যে আছে তার নতুন জীবন নিয়ে।কারণ যে আশায় তারা দুইজন সারাজীবনের জন্য একসাথে থাকার অঙ্গীকার করলো সেই আশা কি তাদের পূর্ণ হবে?সে কি পারবে ভালোবাসায় শিলার জীবন টা পরিপূর্ণ করে দিতে।সে যে আর কোনো বিরহ সহ্য করতে চায় না।সে এখন শুধু শিলাকে মন প্রাণ দিয়ে ভালোবাসতে চায়।
হঠাৎ আচমকা কারো স্পর্শ পেয়ে সিফাত তার ভাবনার জগত থেকে ফিরে এলো।
–একা একা চাঁদ দেখছো?আমাকে ডাকলেই তো হতো।এই বলে শিলা সিফাতের পাশে গিয়ে দাঁড়ালো।
হঠাৎ করে অনেক গুলো কাক ডেকে উঠলো।কা কা কা।
সিফাত তখন বললো বলো তো এই কাকগুলি কেনো ডাকছে?
কেনো?
সিফাত তখন বললো জ্যোৎস্না হলে কাকেরা মনে করে ভোর হয়ে এসেছে।তাই তারা ডাকাডাকি শুরু করে দেয়।
–ও তাই?আজ দিয়ে জানলাম।
তারপর দুইজন কিছুক্ষণ চুপচাপ থাকলো।আসলে তারা বুঝতে পারছে না কিভাবে তাদের নতুন জীবন শুরু করবে।আর এখন তাদের কি বিষয় নিয়ে গল্প করা উচিত?
সিফাত হঠাৎ করেই বললো,আচ্ছা শিলা!আমরা তো দুইজন দুইজনকে ভালোবেসেই বিয়ে করলাম।কিন্তু এই ভালোবাসার মান কি রাখতে পারবো?সারাজীবন কি এই অনুভূতি টা থাকবে আমাদের?
–এভাবে বলছো কেনো?থাকবে না কেনো?অবশ্যই থাকবে।
সিফাত তখন বললো, আমরা কিছু বছর আগেও অন্যজনকে ভালোবেসে এসেছি।কিন্তু কিভাবে সেই ভালোবাসা ভুলে নতুন সম্পর্কে জড়িয়ে পরলাম।দুইজন এখন আলাদা মানুষ কে ভালোবাসছি।আমরা কি করে এতো তাড়াতাড়ি তাদের ভুলে গেলাম?আমি যদি আবার তোমাকে ভুলে যাই আর তুমি যদি আমাকে ভুলে যাও।
শিলা সেই কথা শুনে বললো,নিজের কথা নিজেই ভুলে গেলে?তুমি তো সবসময় বলতে যে জিনিস আমার নয় তার প্রতি কেনো এই মিছে মায়া?এসব মায়া নাকি ত্যাগ করলেই আমাদের জন্য ভালো।
সিফাত শিলার কথা শুনে অবাক নয়নে তাকিয়ে রইলো।
শিলা তখন বললো আসলেই এগুলো মিছে একটা মায়া ছিলো। আমি অন্যদের কথা বলতে পারি না।তবে নিজের পক্ষ থেকে গ্যারান্টি দিয়ে একটা কথাই বলতে পারি যে, আমি তোমার হয়েই এখন সারাজীবন থাকতে চাই।কারণ তুমি শুধু আমার ভালোবাসাই নও,তার সাথে এখন প্রাণপ্রিয় স্বামী আমার।আর স্বামী স্ত্রীর মধ্যকার ভালোবাসাই তো সবচেয়ে বেশি পবিত্র।এই পবিত্র বন্ধন টাকে অটুট রাখার চেষ্টা করবো সারাজীবন।
সিফাত সেই কথা শুনে শিলাকে বললো, আমি কি তোমাকে একটু কিছুক্ষণ জড়িয়ে ধরে থাকতে পারবো?আমার কেনো জানি ভয় হচ্ছে ভীষণ। না জানি কোন ঝড়ে আবার আমার জীবন টা এলোমেলো হয়ে যায়?আমি আর কোনো ঝড় চাই না।আমি শুধু এখন ভালোবাসা চাই।
শিলা সেই কথা শুনে নিজেই সিফাতকে জড়িয়ে ধরলো আর বললো তুমি অযথাই ভয় পাচ্ছো।আমরা দুইজন ঠিক থাকলে আর আমাদের ভালোবাসা ঠিক থাকলে কেউ কখনোই আমাদের আলাদা করতে পারবে না।আমাদের দুঃখের দিন শেষ সিফাত।আজ থেকে শুধু আমাদের সুখের জীবন শুরু হবে।
সিফাত শিলার কথা শুনে বললো আমিও সারাজীবন তোমার সাথেই থাকতে চাই শিলা।এই বলে সিফাত একের পর এক চুমু দিতে লাগলো শিলাকে।
শিলা তখন সিফাত কে আটকিয়ে দিয়ে বললো আমিও।শুধু কথা দাও সারাজীবন আমাকে এভাবেই ভালোবাসবে।
–হুম।এই বলে সিফাত আবার চুমু দিতে লাগলো।
শিলা আর সিফাত এইভাবে তাদের অতীত কে ভুলে নতুন বন্ধনে জড়িয়ে পড়লো।যে বন্ধনে থাকবে না আর ভালোবাসা হারানোর ভয়।
আসলে দুইজনই ভালোবাসার কাঙ্গাল ছিলো একসময়।সেজন্য না পাওয়া ভালোবাসার ব্যাথা এখনো মনে হয় তাদের।সেজন্য নতুন সম্পর্কে জড়িয়েও
তারা সেই সম্পর্কেই স্মরণ করছে। আর আজ দুজনই ওয়াদা করলো অতীতের সবকিছু সম্পূর্ণভাবে ভুলে নতুন জীবন নিয়ে ভাববে শুধু।তারা আর কখনোই তাদের এই ভালোবাসায় বিরহ আসতে দেবে না। তাদের জীবনে এখন শুধু থাকবে অপরিসীম ভালোবাসা।
অন্যদিকে তানিশা আর নোমান ও ছাদে গিয়েছে।আজ পূর্ণিমার রাত।এই রাতের সৌন্দর্য কি মিস দেওয়া যায়?তানিশা তার পা ছড়িয়ে বসে আছে।আর নোমান তানিশার উরুতে মাথা দিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে।
চাঁদের এই স্নিগ্ধ আলোয় নোমান আর তানিশা একদম অভিভূত হয়ে গেলো।ঝিরিঝিরি বাতাসে মন টা একদম জুড়িয়ে যাচ্ছে তাদের।
হঠাৎ তানিশা তার সুরেলা কন্ঠে গান গাইতে লাগলো।
আজ জোছনা রাতে সবাই গেছে বনে
আজ জোছনা রাতে সবাই গেছে বনে
বসন্তের এই মাতাল সমীরণে
আজ জোছনা রাতে সবাই গেছে বনে
আজ জোছনা রাতে সবাই গেছে বনে
যাব না
যাব না গো, যাব না যে
থাকব পড়ে ঘরের মাঝে
যাব না গো, যাব না যে
থাকব পড়ে ঘরের মাঝে
এই নিরালায়
এই নিরালায় রব আপন কোণে
যাব না এই মাতাল সমীরণে
আজ জোছনা রাতে সবাই গেছে বনে
আজ জোছনা রাতে সবাই গেছে বনে
আমার এ ঘর বহু যতন করে
ধুতে হবে, মুছতে হবে মোরে
আমার এ ঘর বহু যতন করে
ধুতে হবে, মুছতে হবে মোরে
নোমান একদম অবাক হয়ে গেলো তানিশার গান শুনে।তানিশা এতো সুন্দর গান পারে সে তো জানেই না?তানিশার গান শুনে নোমান বললো,বাহঃ এতো সুন্দর গানের গলা তোমার।আগে তো কখনো গাইতে দেখি নি।
তানিশা তখন বললো এইরকম একটা পরিবেশে গান আপনা আপনি চলে আসে।তবে যে গান পারি না সেটাও বলবো না।একটু আধটু পারি।আর আজকের এমন পরিবেশে না গেয়ে থাকতে পারলাম না।
নোমান এবার তার মনের অনুভুতি প্রকাশ করলো।জানো তানিশা!এর আগে অনেকবার ছাদে উঠেছি।কিন্তু এরকম অপূর্ব দৃশ্য কখনোই দেখি নি।এ যেনো এক অন্যরকম অনুভূতির সৃষ্টি হচ্ছে।আমি কল্পনাই করতে পারছি না বাসার ছাদে জ্যোৎস্নার সৌন্দর্যের এমন সমারোহ ঘটতে পারে।
তানিশা সেই কথা শুনে নোমানের কপালে একটা কিস দিয়ে বললো,এতোদিন তো আমি ছিলাম না।সেজন্য এরকম দৃশ্য দেখার সুযোগ হয় নি।আজ আমি আছি যে আপনার পাশে?সেজন্য মনে হচ্ছে স্বর্গের মধ্যে আছেন আপনি।
নোমান তখন বললো,একদম ঠিক বলছো তানিশা।ভালোবাসা আসলেই সুন্দর।যদি সেই ভালোবাসা হয় একজন পারফেক্ট মানুষের সাথে।তুমি আমার জীবনের অনেক বড় এক পাওয়া তানিশা।কখনো তোমাকে ছাড়া আমি থাকতে পারবো না।আমার নিঃশ্বাস যতদিন আছে,ততোদিন আমিও তোমার সাথেই আছি।
এই বলে নোমান তানিশাকে তার বুকের সাথে জড়িয়ে নিলো।
আর বললো, আমি একসময় ভালোবাসায় বিশ্বাসী ছিলাম না।কিন্তু ভাবতেই পারছি না ভালোবাসার মতো এমন সুন্দর কোনো জিনিস পৃথিবীতে ছিলো। কখনোই ভেবে দেখি নি এটা।আজ কেনো জানি মনে হচ্ছে আরো আগে থেকে তোমাকে আমার ভালোবাসা উচিত ছিলো।তাহলে ভালোবাসার মর্মটা আরো বেশি বুঝতে পারতাম।
তানিশা তখন বললো আচ্ছা আপনি কবে থেকে আমাকে প্রথম ভালোবেসেছেন?
নোমান তখন বললো সত্য বলতে কি তোমার প্রতি আমার ফাস্ট ফিলিংস শুরু হয়েছে জিসানের কথা শুনে।
–জিসান?বুঝলাম না।
নোমান তখন বললো,তুমি তো অনেকবার আমাদের বাসায় এসেছো,তন্নির সাথে থেকেছো।অনেকবার দেখেছি তোমাকে।বাট কখনো মনে হয় নি তোমাকে আমার ভালোবাসা উচিত।তোমার প্রতি বিন্দুমাত্র ফিলিংস ছিলো না আমার।
একদিন ক্যান্টিনে যখন আমরা সবাই মিলে আড্ডা দিচ্ছিলাম তো হঠাৎ করেই জিসান সবার সামনে বলতেছে, ফাস্ট ইয়ারের একটা মেয়েকে দেখলাম।জাস্ট অপূর্ব চেহারা,আর কি মায়াবী হাসি।আমি নিশ্চিত এই মেয়ে অনেক মেডিকেলিয়ানের ঘুম কেড়ে নেবে।দোস্ত তোরা বিশ্বাস করবি না, যখন মেয়েটি তার লম্বা বেনুনি টা পিছন থেকে সামনে টেনে নিয়ে বাঁকা হেসে হেসে গল্প করছিলো তখন জাস্ট বুকের এই পাশ টা ধড়ফড় করে উঠলো আমার।ভাবতেছি প্রপোজ করবো মেয়েটাকে।
তখন আমার এক ফ্রেন্ড বললো,তোর কথা শুনে তো এই মেয়েকে দেখার ভীষণ ইচ্ছা হচ্ছে।একবার দেখাবি দোস্ত সেই প্রেয়সীকে।
জিসান তখন বললো ওয়েট কর।কিছুক্ষনের মধ্যেই সে ক্যান্টিনে আসবে।হ্যাঁ তাই হলো।তুমি আর তোমার বান্ধুবীরা চলে এলে ক্যান্টিনে।জিসান তোমাকে হাত দিয়ে দেখাতেই আমার ভীষণ রাগ হতে লাগলো।জানি না কেনো এতো রাগ হয়েছিলাম সেদিন।
আমি আমার মনের অজান্তেই জিসানকে বলে ফেললাম,ভুল করেও ওই মেয়ের দিকে তাকাবি না জিসান।আর তোরা ওভাবে হা করে কি দেখছিস?চোখ নিচে নামিয়ে রাখ সবাই। যে তাকাবে একদম তার চোখ দুটি উপড়ে ফেলবো।
জিসান তখন বললো ওই মেয়ে কি তোর গার্লফ্রেন্ড নাকি যে তাকানো যাবে না।
আমি তখন বললাম, হ্যাঁ, আমার গার্লফ্রেন্ড ও।তোর কোনো প্রবলেম?
জিসান সেই কথা শুনে বললো, আমি বিশ্বাস করি না।ও যদি তোর গার্লফ্রেন্ড হতোই তাহলে সবাই জানতো সেটা।
ঠিক তখনি তুমি আমাকে দেখে এগিয়ে এসে বললে,কেমন আছেন?
আমিও বললাম ভালো আছি।তারপর তুমি এক এক করে তন্নি আর বাবার কথাও জিজ্ঞেস করলে।আর আমিও এক এক করে উত্তর দিলাম।
আমার উত্তর শুনেই তুমি সেখান থেকে চলে গেলে।আর কিছু জিজ্ঞেস করো নি।আর আমিও কিছু জিজ্ঞেস করি নি।
কিন্তু তোমার আর আমার কথা শুনে জিসান সহ বাকি বন্ধুরা একদম অবাক হয়ে গেলো।সবাই শুধু বলছে,নোমান তুই সত্যি ওই মেয়েকে চিনিস?সত্যি ও তোর গার্লফ্রেন্ড হয়?
ওরা সেদিন সত্যি সত্যি ভেবেছে তুমি আমার গার্লফ্রেন্ড হও।এ নিয়ে ওরা আমাকে মাঝেমধ্যেই ক্ষেপাতো।তোমাকে দেখলেই বলতো, ওই যে ভাবি আসছে।কিন্তু আমি ওদের কিছুই বলতাম না।বা কখনো ভাবি ডাকতে নিষেধ ও করি নি।
সেদিনের পর থেকে শুধু চুরি করে তাকিয়ে তাকিয়ে তোমার দিকে দেখতাম।কেনো জানি শুধু তাকিয়ে থাকতেই ইচ্ছে করতো।এইভাবে দেখতে দেখতে তোমার প্রতি আসক্ত হয়ে গেলাম।বুঝতে পারলাম আই এম ইন লাভ।
তানিশা নোমানের কথা শুনে হাসতে হাসতে বললো, তলে তলে এতোদূর? ডুবে ডুবে জল খাইছেন তবুও বুঝতে দেন নি আমাকে?তখনি যদি বলতেন তাহলে আমাদের জীবন টা কত সুন্দর হতো?আমরা আরো অনেক বেশি ভালোবাসার সুযোগ পাইতাম।জীবন থেকে এতোগুলো বছর হারিয়ে যেতো না কখনো।
নোমান তখন তানিশার গলায় মুখ ডুবিয়ে দিয়ে বললো, শেষ ভালো যার সব ভালো তার।তাছাড়া এখন কি কম ভালোবাসছি নাকি?এখনকার ভালোবাসা দিয়ে মন ভরছে না?এই বলে নোমান তানিশাকে আদর করতে লাগলো।নোমানের ভালোবাসার স্পর্শ পেয়ে তানিশার শরীর শিহরিত হয়ে উঠলো।তানিশা সেজন্য নোমানকে সরিয়ে উঠে পড়লো।নোমান তখন নিজেও উঠলো আর নেশাভরা চোখ নিয়ে গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে এলো তানিশার দিকে।আর এক ঝটকায় তানিশাকে কোলে তুলে নিয়ে রুমে চলে গেলো।
এদিকে আমান আর শিরিন জ্যোৎস্নার রাত দেখে নিজেরাও ছাদে আসতে ধরেছিলো।আর এসেই যখন দেখলো নোমান তানিশাকে কোলে করে ছাদ থেকে নামছে তারা দুজন সাথে সাথে লুকিয়ে পড়লো।
নোমান আর তানিশা রুমে প্রবেশ করেই দরজা লাগিয়ে দিলো। আমান আর শিরিন এখনো ও দিকেই দেখছে।
শিরিন এবার আমানের দিকে তাকিয়ে বললো,ওভাবে কি দেখছো চোখ নামাও।তোমার ভাই কত টা রোমান্টিক শিখে নাও ভালো করে।
কি ভালোবাসে তানিশাকে।দেখলেই প্রাণ টা জুড়িয়ে যায়।
আমান তখন রাগান্বিত কন্ঠে বললো আমি ভালোবাসি না তোমাকে?
–হ্যাঁ বাসো।বাট তুমি নোমানের মতো অতো বেশি রোমান্টিক না।
দেখলে না কি প্রেম!দেখতে গেলো জ্যোৎস্নার রাত আর ফিরলো রোমান্টিক মুডে।
আমান সেই কথা শুনে শিরিনকেও কোলে তুলে নিলো। আর বললো কোলে নিলেই সে রোমান্টিক হয়ে যায়?যাও আমিও কোলে নিলাম।
শিরিন তখন বললো এই নামাও নামাও।দেখবে তো কেউ।
–দেখুক।আমিও যে রোমান্টিক একজন ছেলে সেটা সবার জানা উচিত।এই বলে আমান ধীরে ধীরে সিঁড়ি বেয়ে উঠতে লাগলো।যদিও তার ভীষণ কষ্ট হচ্ছিলো কিন্তু প্রকাশ করলো না।তা না হলে শিরিন অনেক কথা শুনিয়ে দিয়ে তার মুড টাই নষ্ট করে দিবে।কারণ সেও এখন রোমান্টিক মুডেই আছে।
চারদিকে নিস্তব্ধ নিঝুম।সব পাখপাখালি তাদের নীড়ে ঘুমাচ্ছে।কোথাও পাতা নড়ার শব্দও নাই।যেনো সম্পূর্ণ পৃথিবী ঘুমে আচ্ছন্ন।শুধু জেগে আছে আকাশের ঐ বিশাল চাঁদটা।আর তার সাথী তারারা।চারপাশের বাড়িঘর,গাছপালা সবই স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে জ্যোৎস্নার আলোয়।এরই মাঝে হাসনাহেনা ফুলের মন মাতানো সুরভি এসে মনপ্রাণ ভরে দিচ্ছে সবার।
সমাপ্ত