“ডাইনামিক হিস্ট্রি”পর্ব ০৩
সানজানা জামান
এস ট্রে টা প্রায় সিগারেটে ভরপুর হয়ে গেছে।অফিসে বসে একটার পর একটা সিগারেট টান দিচ্ছে ওমেগা।মাথায় কিছু কাজ করছে না তার।সকাল বেলা হসপিটালের দিকে গিয়েছিলো সে।তারপর মর্গে যেয়ে দেখলো যে প্রায় বেশিরভাগ লাশ ই উধাও।এই কয়েক ঘন্টায় কি আদো কোনো মানুষের পক্ষে এতো লাশ গায়েব করা সম্ভব?আর যতদূর পাহারাদার সম্বন্ধে জানা হয়েছে তিনি বহু বছর ধরে এই হসপিটালে কর্মরত ছিলেন।যদি ওনার লাশ গুম করারই হতো তাহলে কয়েক ঘন্টায় এতো কিভাবে করতে পারবে?আর তাছাড়া গুম করলেও এতোগুলা লাশ কোথায় ই বা রাখতে পারে?মাথা পুরো শূন্য হয়ে আছে তার।সেলফোনে ফোন আসার মুহূর্তে তৎক্ষনাৎ সিগারেট মুখে দিয়েই উঠে চলে যায় সে।
“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
ফরেন্সিক ল্যাব এ রিসার্চ করছে ডক্টর মিলান।গভীর মনোযোগ দিয়ে অনুবীক্ষণ যন্ত্রের দিকে পর্যবেক্ষন করছে।
-কোনো ক্লু পেলেন ডক্টর মিলান?
-তুমি আবার স্মোক করে আমার ল্যাবে ঢুকেছো ওমেগা?
-ওইতো আপনি তো জানেন ই আমি চেইন স্মোকার।
-এই মাউথ ওয়াস টা নাও।আগে মুখ ক্লিন করে আসো।ইউ নো না ওমেগা যে আমি স্মোকিং পছন্দ করিনা।গন্ধ আমার নাকে এলেই দম বন্ধ হয়ে আসে।
-হুম।ওয়াসরুমের দিকে চলে যায় ওমেগা।কিছুক্ষন পরেই ফিরে আসে।
-হুম তো ডক্টর মিলান।কোনো ক্লু পেলেন?
-ক্লু তো পেয়েছি অবশ্যই।সে এক ভয়ংকর ক্লু!
-যেমন?
-মর্গের এক বিছানায় সামান্য রক্তের ছাপ পাওয়া গেছে।
-মানুষের রক্ত?
-মানুষের রক্ত তো অবশ্যই।কিন্তু তার সাথে অন্য কিছুও ছিলো যা মানুষ বা অন্যান্য পশু/পাখি থেকে ভিন্ন।যার কারণে মানুষের রক্তের সাথে মিশে যায়নি।খুব কালচে টাইপের।তুমি নিজেই দেখে নাও না।
ওমেগা অণুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে দেখার চেষ্টা করলো।আসলেই খুব কালচে প্রায় কালো রঙয়ের কোনো পদার্থ ভেসে বেড়াচ্ছে মনে হচ্ছে যেন জীবন্ত।পদার্থগুলো যেন তাকে খুব কাছে টানছে।অণুবীক্ষণ যন্ত্র ভেদ করে যেন তার শরীর থেকে রক্ত বের করে নিতে চাচ্ছে এমনটা মনে হচ্ছে ওমেগার কাছে।ওমেগা দ্রুত অণুবীক্ষণ যন্ত্র থেকে সরে এলো।
-কি বুঝলে ওমেগা?
-ডক্টর মিলান!আমার এমন মনে হচ্ছে যেন এক অদম্য শক্তি আমার শরীর থেকে সমস্ত রক্ত নিয়ে ফেলতে চাইছে।
-একদম!
-আপনি কি পরীক্ষা করে বুঝতে পেরেছেন কিছু যে কিসের জন্য এমন হচ্ছে?
-বের করতে পারলে তো অর্ধেক সমস্যার সমাধান হয়েই যেতো।তবে আমার কি মনে হয় জানো তো ওমেগা?এই রক্ত টা ওই লাশ পাহারাদারের।আর তার সাথেই কারো জোর জবরদস্তি হয় খুব যার ফলে দুইজনের থেকেই এই স্যাম্পল পাওয়া যায়।
-আচ্ছা ডক্টর!আপনার কি মনে হয় এই কেসটাতে প্যারানরমাল কিছু আছে?
-থাকতেই পারে।দেখো ওমেগা!আমি ডাক্তার হতে পারি।কিন্তু আমিও কিন্তু ভুত-প্রেতে বিশ্বাস করি।
-তাহলে আজ ছোট খাটো প্ল্যানচ্যাট করা যায়।কি বলেন?
-শিওর।করতে পারো তুমি।
-তাহলে আজ আসি আমি।
-এসো কোনো আপডেট পেলে তোমাকে জানাবো।
সাথে সাথে বেরিয়ে যায় ওমেগা।আজ বহুদিন পর প্রেতাত্মা দের সাথে সাক্ষাৎ হবে তার।ভাবতেই কেমন শিহরণ বয়ে যাচ্ছে শরীরে।
ল্যাবে বসে কাজ করছিলো ডক্টর মিলান।হঠাৎ করে বাহিরে দরজা খোলার শব্দ হয় তার।বাহিরে ঝড় হচ্ছে।যার কারণে লোডশেডিং হচ্ছে বারবার।
-কাম ইন!উফ এই লোডশেডিং এর ও যে কি হচ্ছে আজকাল।
সামনে থেকে আর কোনো সারাশব্দ পেলো না ডক্টর মিলান।কেন যেন মনে হলো তার পিছনে কেউ আছে।ভয়ে ভয়ে পিছনে তাকাতেই চমকে উঠে মিলান।একটা বিভৎস চেহারার লম্বাটে কিছু টা তার দিকে তাকিয়ে হাসছে।বড় বড় দাঁতগুলো দিয়ে গড়িয়ে রক্ত বের হচ্ছে।
-কে কে কে তুমি?
বিভৎস চেহারার জিনিসটি কেবল তার দিকে তাকিয়ে হাসলো।এরপর পাশে থাকা একটা কোদাল হাতে নিয়ে সরাসরি ডক্টর মিলানের মাথার মাঝখানে আঘাত হানলো।
ফ্লোরের একপাশে ডক্টর মিলানের দুইভাগ মাথা হওয়া মাথা পড়ে আছে।আর কেউ একজন বসে বসে কোদাল দিয়ে মাংসের দলা বানাচ্ছে।আর মাংসতে লেগে থাকা রক্তগুলো চেটেপুটে খাচ্ছে।
এদিকে অন্ধকার রুমে বসে আছে ওমেগা।মাঝখানে একটা নকশা,মৃত মাথার কঙ্কাল,রসুন,আর একটা মোমবাতি বিছিয়ে রাখা।ওমেগা মুখে কিছু একটা পড়তেই মনে হলো কারা যেন তার শরীর অবশ করে ফেলছে।কিন্তু না তা তো হতে দেওয়া যাবেনা।কিছুতেই ওমেগাকে তাদের হাতে আত্নসমর্পণ করতে দেওয়া যাবে না।চারপাশে কেমন যেন ধোঁয়াতে ছেয়ে গেছে।ওমেগা বুঝে গেছে যে তারা এসে গেছে।মন্ত্র পড়তে শুরু করে দিয়েছে সে।কিন্তু মন্ত্র মুখ থেকে আসছে না একটুও।হঠাৎ করে অনেকগুলো বিভৎস প্রেতাত্মা তার সামনে ভেসে উঠলো।সবাই তার দিকে ভয়ানক ভাবে এগিয়ে আসছে।দম বন্ধ হয়ে আসছে ওমেগার।এর আগেও বেশ কয়েকবার প্ল্যানচ্যাট করেছে সে।কিন্তু এমন ঘটনা কোনোদিনও ঘটে নি।হুট করে পিছন থেকে মনে হলো কেউ যেন তার ঘাড় অবশ করে দিচ্ছে।কোনোমতে মোমবাতি টা হাতে নিয়ে পিছের দিকে তাকালো সে আর জোরে জোরে মন্ত্র পড়তে লাগলো।তৎক্ষণাৎ প্রেতাত্মার বিভৎস চেহারা গলে পড়তে লাগলো।সারা ঘর এম দুর্গন্ধে ভরপুর হয়ে গেছে।গন্ধে গা গুলিয়ে আসছে ওমেগার।কিন্তু না!এখন একটু অন্যমনস্ক হলেই বিপদ।সরাসরি মৃত্যুর মুখে পৌঁছে যেতে হবে তাকে।এরপর আবার মন্ত্র পড়ে আস্তে আস্তে প্রেতাত্মা গুলোকে বশে আনলো সে।রুম পুরোপুরি কাঁপছে।এর মধ্যে ওমেগা বলে উঠলো-
-বলো তোমরা ক্যামেরন কোম্পানির সিইও থেকে শুরু করে একের পর এক মানুষ খুন হয়ে যাচ্ছে।এতে কি তোমাদের জগতের কারো সংযোগ আছে।
সারা ঘর ভূমিকম্পনের মতো কেঁপে উঠলো।এর অর্থাৎ হ্যাঁ আছে সংযোগ।ওমেগা আবার প্রশ্ন করে উঠলো-
-কারা করছে এসব আর কেন-ই বা করছে?কি চাই তাদের?
প্রশ্নটা করে অনেকক্ষন বসে রইলো ওমেগা।কিন্তু কোনো উত্তর এলো না।হঠাৎ করে বাতাস এসে হুট করে নিভে যায় মোমবাতি টা।ওমেগা বেশ ভয় পেয়ে যায়।হুট করে তার শরীরের ভিতর কি যেন ঢুকে পড়ে।সাথে সাথে লাল হয়ে যায় চোখ জোড়া।দাঁতগুলো বড় হয়ে যায়।রক্ত উপচে পড়ছে দাঁত থেকে।বাড়ির দেয়াল ভেদ করে সহসা উড়ে যায় সে!!
#চলবে….
পর্ব ০১ : https://www.facebook.com/100049746556081/posts/131498768518341/?substory_index=0&app=fbl
পর্ব ০২ : https://www.facebook.com/100049746556081/posts/132265425108342/?substory_index=0&app=fbl