“জ্যোৎস্নার ছল”পর্ব ১০.
স্বপ্নার বাসার সামনে থাকা বেঞ্চটিতে বসে আকাশ-পাতাল ভাবছি। আমার ভেতরে যেতে ইচ্ছে হচ্ছে না। নিজের উপরই খুব রাগ হচ্ছে। সাদিক বিকেলে আমাকে যথেষ্ট বুঝিয়েছিল। আর আমি কিনা তাকে রাগিয়ে দিয়েছি।
নাহিদ ভাইকে দেখে আমি বেঞ্চ থেকে পা নামিয়ে বসলাম। তিনি স্বাভাবিকভাবেই আমাকে দেখে অবাক হলেন। তিনি আমাকে ডাকলেন। আমি কিছু বললাম না। লোকটি আশ্চর্যজনক ভাবে আমার মনের অবস্থা ধরে ফেলতে পারেন। তিনি এসে আমার পাশে বসলেন।
‘অনু। কোনোকিছু হলে নিজেকে এভাবে শাস্তি দিও না। ভেতরে আসো। তুমি নিজের কেয়ার না করলেও অনেকেই আছে যারা তোমার কথা চিন্তা করে।’
‘কারা করে শুনি?’
‘কেন? স্বপ্না, মা, বাবা ওঁরাও তো তোমার আপন। তোমার কষ্ট হলে কেন তুমি এখানে ছুটে আসো? এখানে তোমার কিছু আপন আছে বলেই।’
আমি কিছু বললাম না। তিনি দীর্ঘক্ষণ চুপ করে থেকে বললেন, ‘পারিবারিক ব্যাপার নাকি প্রেমঘটিত ব্যাপার?’
‘দুটোই।’
‘পরিবারকে তো ছাড়তে পারবে না। প্রেম করা ছেড়ে দাও। দেখবে লাইফের অর্ধেক সমস্যা সলভ।’
‘ভাইয়া, সিরিয়াসলি বলছি আপনি যদি স্বপ্নার ভাই না হতেন, আই স্যোয়ের এই সময় জ্ঞান দেওয়ার জন্য আপনার গলা চেপে ধরতাম।’
‘এখন ধরলেও সমস্যা নেই। আমি এর যোগ্য না হলে বলতে না। স্বপ্নাও আমার উপর বিরক্ত। হায়রে জীবন!’
‘ডায়লগবাজি করবেন না। যান এখান থেকে। আমায় একা থাকতে দিন।’
‘আমার লাগছে, কেউ একজন গুঞ্জন করছে আমার সাথে থাকো।’
‘গুঞ্জন মানে কী?’
‘গুঞ্জন..
‘আর আপনাকে আমি সাথে থাকতে বলিনি। আমি এখন আমার নিয়ন্ত্রণে নেই। যেকোনো সময় উল্টাপাল্টা কিছু বলে ফেলতে পারি। প্লিজ চলে যান।’
তিনি উঠছেন না। বাধ্য হয়ে আমি উঠে দাঁড়ালাম। তিনি আচমকা আমার হাত ধরে ফেললেন।
‘ওকে ছেড়ে দাও। ছেলেটিকে ছেড়ে দাও।’
‘ছেড়ে দাও বলতে কী বুঝাচ্ছেন? আর আমি ওর সম্বন্ধে কথা বলতে চাই না। হাত ছাড়ুন। লাগছে।’
‘আগে বলো ওকে ছেড়ে দেবে। অনেক হয়েছে। আর সওয়া যায় না। কী রাখা আছে ওর মাঝে?’
‘আপনি কিন্তু আমার ব্যক্তিগত ব্যাপারে কথা বলছেন। আমার ভালোমন্দ নিয়ে কিছু বলার অধিকার আপনার নেই।’
‘অধিকার সবই দিয়েছ ওই ছেলেটিকে।’ তিনি দাঁড়িয়ে বললেন, ‘তোমাকে দেখার, তোমাকে ছোঁয়ার, তোমাকে আপন করার। সে কী করেছে?’
‘আমাকে ছেড়ে দিন।’
‘আমি তোমাকে আগে ভালোবাসতাম। অনেক অপেক্ষা করেছি তোমার জন্য। তুমি কিনা.. এখন তোমাকে ঘৃণা করি আমি।’
দরজা খোলার আওয়াজে তিনি আমার হাত ছেড়ে দিলেন। আমাদের আওয়াজ শুনে স্বপ্না বেরিয়ে এসেছে।
‘কিরে অনু যে, কবে এলি?’
আমি কিছু না বলে শপিং ব্যাগগুলো নিয়ে বাসার দিকে রওনা দিলাম। বাসায় গিয়ে শাহনাজ আপাকে না দেখার ভান করে লম্বা এক ঘুম দেই। যখন ঘুম ভাঙল তখন রাত দুটা বাজে। উঠে খাবার খেয়ে নিলাম। ঘুম আর এলো না।
নিচের বারান্দায় গিয়ে পায়চারি করছি। খোকন ভাই গেইট বন্ধ করে ঘুমুচ্ছে। তাকে আর জাগাতে ইচ্ছে হচ্ছে না। বাইরে ঘন কালো অন্ধকার, যেন কোনো অন্ধ ব্যক্তি চোখ খুলে তাকাচ্ছে। চোখের কথা মনে পড়তে মনের পর্দায় ভেসে উঠল, একজোড়া ভোলা চোখ আমার দিকে তাকিয়ে আছে। তার ঠোঁটের কোণে মুচকি এক হাসি। সে আমার চুল কখনও গুঁজে দেয়নি। কিন্তু গালের দু’পাশে হাত রেখে বলেছিল, তোমাকে সুখে রাখব। সবই যেন স্বপ্ন মনে হচ্ছে।
আমি কাল যাব। সাদিকের কাছে ক্ষমা চাইব। নাহিদ ভাই দেখবেন, আমি ভুল কাউকে ভালোবাসিনি। আর স্বপ্না? সে আমার কাছ থেকে কথা লুকিয়েছে! আমার বেস্ট ফ্রেন্ড হয়ে?
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি মাসে জিতে নিন নগদ টাকা এবং বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।
গল্পপোকার এবারের আয়োজন
ধারাবাহিক গল্প প্রতিযোগিতা
◆লেখক ৬ জন পাবে ৫০০ টাকা করে মোট ৩০০০ টাকা
◆পাঠক ২ জন পাবে ৫০০ টাকা করে ১০০০ টাকা।
আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/?ref=share
আমি ঘরে ফিরে এসে খালি শেলফটির দিকে তাকালাম। শাহনাজ আপা বিছানায় বসে আছেন। আমি নীরবে দরজা বন্ধ করলাম।
‘ঘুম আসছে না?’
‘আপনার আসছে না?’
‘আমি তো ঘুমাইনি। তুমি কি কাউকে মিস করছ?’
‘আপনার অনুমান সঠিক নাও হতে পারে।’
‘মিথ্যা কি নিজেকে আশ্বস্ত করার জন্য বলছ?’
‘আমি কাউকে আশ্বস্ত করার প্রয়োজন মনে করছি না।’
‘এইযে একে একে সবাইকে যে দূরে ঠেলে দিচ্ছ, তাতে তোমার কী লাভ হচ্ছে?’
‘আমি কোনোকিছু লাভের জন্য করছি না। হয়ে যাচ্ছে, যা আমার মতো মেয়ের ভাগ্যে লেখা আছে। আমি জানতাম, আপনজনগুলো সাময়িকের।’
‘তুমিই তাদের সাময়িক বানাচ্ছ। রাগে কাজ বিগড়ে যায়, বুদ্ধিবলে কাজ সুষ্ঠুভাবে হয়। এই রাগ জেদ সবই সম্পর্কে দূরত্ব বাড়ায়। একটি মানুষের চরিত্রকে নষ্ট করে দেয়।’
আমি দাঁতে দাঁত চেপে বললাম, ‘এসব আমার চরিত্রেরই অংশ। এসবে আমার নিয়ন্ত্রণ নেই।’
‘নিয়ন্ত্রণ কিন্তু অভ্যাসের উপর করা যায়। করতে পারো। নইলে একদিন এমন জায়গায় পৌঁছবে যেখানে আপন বলার জন্য কাউকে খুঁজে পাবে না।’
আমি মাথার উপর বালিশ চেপে শুয়ে পড়লাম। আপা বলতে থাকুক অনর্গল। বিরক্তিকর!
পরের দিনের মতো এতোটা আশাহত আগে কখনও হইনি। সাদিক পড়াতেও আসেনি। সে কি আমার সাথে এতটা রাগ করেছে? আমাকে কি সে আর ভালোবাসবে না? কথাটি ভাবতেই মনের পর্দায় নাহিদ ভাইয়ার ছবি ভেসে উঠল। আমাদের এতোদিনের ভালোবাসা ছেলেখেলা ছিল না। এটা আমি প্রমাণ করেই ছাড়ব।
সাজিদের বাসায় চলে যাওয়ার আগে আমি এক মুহূর্তও ভাবিনি। সে হয়তো বাসায় থাকবে। এতো তাড়াতাড়ি তার কলেজে যেতে হয় না। দুইবার কলিং বেল বাজানোর পর মোটাসোটা এক মহিলা দরজা খুললেন। তাঁর সাথে চোখাচোখি হতেই আমার এতক্ষণের সাহসটা উবে গেছে। সাদিকের মা’কে কী বলব আমি? আর তার চাচা কি বাসায় আছে?
‘আসসালামু আলাইকুম।’
‘ওয়ালাইকুম সালাম। তুমি কে মা?’
‘জ্বি আমি… সাদিক কোথায়?’
‘তুমি কে তা তো বলো?’
‘আমি অনন্যা। ওর ফ্রেন্ড।’
মহিলা আমাকে কিছুক্ষণ পরখ করে বললেন, ‘ফ্রেন্ড? ওর তো মেয়ে ফ্রেন্ড আছে বলে জানতাম না।’
‘আন্টি ও বাসায় আছে? ডেকে দেবেন? একটু কথা বলব।’
মহিলার ভাব দেখে মনে হলো তিনি সায় দেবেন। কিন্তু এমন সময় লম্বা মতো এক সুপুরুষ লোক বেরিয়ে এলেন। তার তীক্ষ্ণ চোখের সাথে শরীরের কেন যেন মিল পাওয়া যায় না। চশমার ভেতর থেকে আমাকে তিনি পা থেকে মাথা পর্যন্ত চেয়ে নিলেন। এ কোন ঝামেলায় পড়লাম আমি?
‘আপনি কি তার কলেজের কেউ?’
তাঁর গুরুগম্ভীর আওয়াজ শুনে আমি নীরবে এপাশ-ওপাশ মাথা নাড়লাম।
‘আপনার বিয়ের বয়েস হয়েছে। এভাবে কোনো প্রাপ্তবয়স্ক ছেলের বাসায় আসা ঠিক না। আর সাদিক অসুস্থ। কিছু বলার থাকলে তার মাকে বলুন।’
‘সাদিক অসুস্থ? কবে থেকে?’
তার মা শাড়ির আঁচল টেনে ভাশুরের দিকে তাকিয়ে চলে গেলেন। আর লোকটি এমন ধাঁচে দাঁড়ালেন, যেন যতক্ষণই কথা হোক না কেন, তা এখানে অবিরাম দাঁড়িয়ে থেকেই হবে।
‘কাল বাসায় আসার পর রাতের দিকে হঠাৎই ওর গায়ে জ্বর এসে গেছে। ওর এমনটা কখনও হয় না।’ তিনি আমাকে ভালো করে পর্যবেক্ষণ করছেন। হয়তোবা সাদিকের অসুস্থতা নিয়ে আমার মাঝে যে উথাল-পাতাল হচ্ছে তা তিনি টের পাচ্ছেন। আমার কারণে সে অসুস্থ। একবার কি তাকে দেখতে পারব না?
‘আমি ওকে একটু দেখতে চাই। প্লিজ।’
‘কিছু মনে করবেন না। আপনাদের মতো মেয়েলোকের জন্যই সাদিকের মতো ভদ্র ঘরের ছেলেরা বিপথে যায়, গলা উঁচিয়ে কথা বলে। কখন কী হয়েছে তা আমি জানি না। আপনি এখন থেকে সাদিকের সাথে দেখা করবেন না।’
‘ও আমাকে পছন্দ করে। বিয়ে করবে ও আমায়।’
ভেবেছিলাম কথাটিতে লোকটি কোনো এক প্রতিক্রিয়া অবশ্যই দেবেন। কিন্তু তিনি স্বাভাবিক আছেন। কিছু একটা তো আছে, যা আমি জানি না। লোকটির সম্বন্ধে নাকি সাদিকের সম্বন্ধে?
‘বলেছি না। ওর সাথে এখন থেকে কোনো সম্পর্ক রাখবেন না। যদি আমার নম্র কথায় আপনি না মানেন তবে আমার বাধ্য হয়ে কোনো একটা পদক্ষেপ নিতে হবে, যার জন্য আপনি খুব পস্তাবেন।’
লোকটির আপনি সম্বোধনেও আমার আচমকা ভয় করছে। আমি আর কিছু বলার সাহস পেলাম না। খুব অনিচ্ছার সত্ত্বেও আমি স্বপ্নার বাসার দিকে রওনা দেই।
নিজ বাসায় গেলে বাবা আবার জিজ্ঞেস করবেন কোথায় গেলাম কী করলাম। আজ রাতটা আমি নিরিবিলি পরিবেশে কাটাতে চাই। আমার শক্তি নেই ওই খালি শেলফটি দেখার, বা ইচ্ছা নেই ওইসব মানুষের মাঝে থাকার যাদের সাথে আমার ভালো সম্পর্ক নেই। আজকের রাতে হোক তা স্বপ্নার বাসায়, নিজের মস্তিষ্ককে ঠান্ডা করে যেতে চাই।
পরদিন সকালেও মনে হলো, আমি সুস্থ হইনি। অতিরিক্ত শব্দ দূষণে মাথায় যেরূপ ব্যথার সৃষ্টি হয়, ঠিক সেরূপ ব্যথায় আমার মাথা টনটন করছে। এই অবস্থায় বাসায় যাওয়া মমোটেই ঠিক হবে না। কারও মুখের উপর অযাচিত কিছু বলে দিতে পারি। স্বপ্নার বাসায় থাকার ইচ্ছা আর নেই। তার মা-বাবা দু’জনই ছিলেন না। নাহিদ ভাইয়া অবশ্যই ছিলেন। তার সাথে চোখাচোখি তো হইনি, স্বপ্নার সাথেও আমি বিশেষ কোনো কথা বলিনি। সে ভয়ে ভয়ে আমার দিকে তাকাচ্ছিল। ভয় পাক, কথা লুকোনোর শাস্তি এটাই হওয়া উচিত।
অগত্যা ব্যাগ থেকে রঙধনু ক্লাবের চাবি বের করলাম। আজও হয়তো সাদিক আসবে না। আমি ওখানে কিছুক্ষণ বসে থেকে বাসায় চলে যাব।
সিঁড়ি বেয়ে দ্বিতীয় তলায় উঠে দেখলাম ডানপাশের ঘরের দরজাটি খোলা। অবাক হয়ে ঢুকে দেখলাম শেষের ঘরে সাদিক এসেছে। বাচ্চাদের সে অংক করাচ্ছে। সে বোর্ড থেকে ফিরে যখন টেবিলে হাতের বইটি রাখল, তখন আমি তার চেহারা দেখতে পেলাম। তার চোখের নিচে কালি পড়েছে সম্ভবত জ্বরের কারণে।
সাদিক আমাকে দেখে ম্লান হাসল। সে বাচ্চাদের ছুটি না দেওয়া অবধি আমি দেয়াল ঘেঁষে ঠিক আমাদের প্রথম কথাবার্তার দিনটির মতো করে দাঁড়িয়ে রয়েছি।
‘আমার কারণে যদি তোমার বাসায় কোনো সমস্যা হয়ে থাকে, তবে আমি তার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত।’
‘তোমার কারণে সমস্যা হবে কেন?’
‘এইযে আমি তোমার বাসায় গেলাম।’
‘তোমার স্থলে আমি হলে আমিও নিজ ভুল বুঝে এমনভাবে ছুটে যেতাম। সমস্যাটা তোমার যাওয়ার জন্য হয়নি। আমি বাসায় গিয়ে কিছুই না ভেবে মাকে তোমার কথা বলে দিয়েছিলাম।’
আমি তার দিকে করুণার চোখে তাকালাম।
‘আর এটি আমার জন্য হয়েছে। আমি যদি কাল তোমার সাথে বিয়ের ব্যাপারে কথা না বলতাম তবে..
‘মা ভালোমন্দ কিছু বলেনি। তবে এই কথা চাচুর কানে গিয়েছিল।’ সে স্বাভাবিক ভাবে বলল, ‘তাঁর সাথে অবশ্য আমার ঝগড়া হয়েছে। তিনি তোমার কথা, তোমার পরিবারের কথা জিজ্ঞেস করেছিলেন। আমি নিরুপায় হয়ে বলেছিলাম।’
সে নিচের দিকে তাকিয়ে রইল।
‘এরপর উনি কী বলেছেন? বলো, আমি কিছু মনে করব না।’
‘বলেছেন, এমন বেজাত মেয়ের কথা না ভাবতে, যার পরিবারের লোকগুলো ওরকম উড়নচণ্ডী স্বভাবের।’
‘তাই? এরপর তুমি কী বললে?’
‘কিছু বলিনি। কাল কিন্তু কেবল আমার সাথেই না বাবার সাথেও আমার বিষয় নিয়ে তাঁর ঝগড়া হয়েছে। বাবা প্রথমবারের মতো বললেন, আমার উপর অকারণে চাচু নিজের ছেলের মতোই আধিপত্য দেখাতে আসেন। আমার জীবনের সবকিছুতে হস্তক্ষেপ করতে আসেন। এও বলেছেন, তাঁদের ছেলে না বুঝে কিছু করে না। আমি যা করেছি তাতে বাবা ভুল কিছু দেখেন না। যদি আমি তোমাকে পছন্দ করে থাকি, তবে আমি তোমাকে বিয়ে করতেই পারি। বিয়ে তো তোমার পরিবারের সাথে হবে না।’
‘তাহলে তোমার কাল গায়ে জ্বর ছিল না?’
সে চোখ তুলে তাকাল, ‘ছিল। বাসায় এই ধরনের ঝগড়া সবসময় হয় না। চাচুর প্রতি বাবার পুরনো বিদ্বেষ আমার কারণে কাল বেরিয়ে এসেছে। হয়তো দু’জনের ঝগড়া আমাকে প্রভাবিত করায় একটু অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। শুনো, চাচু শীঘ্রই চলে যাবেন আমাদের জীবন থেকে। তখন তোমার আর দুঃখ পেতে হবে না। মা তোমাকে নিজের মেয়ের মতো করে রাখবেন।’
‘জানো, নাহিদ ভাইয়া কী বলছিল? তুমি কিনা আমার জন্য ঠিক নও। আমার খুব করে তাকে বলতে ইচ্ছে হচ্ছে, তিনি নিজেই ভুল ছিলেন তোমার ব্যাপারে।’
‘ছেলেটি অদ্ভুত ধরনের। এখানে যে কয়েকবার সে এসেছে, একবারও আমার সাথে ঠিক ব্যবহার করেনি। আমি কী করেছি কে জানে!’
আমি কিছু বললাম না। এখানে এসেছিলাম মনকে হালকা করতে। এতো তাড়াতাড়ি তা হয়ে যাবে ভাবিনি।
(চলবে..)
লেখা: ফারিয়া কাউছার