#জোড়া_শালিকের_সংসার
#মুন্নী_আরা_সাফিয়া
#পর্ব_২১
__’কাকে খুঁজছে আমার খেয়াতরী?’
খেয়া লজ্জায় লাল হয়ে চোখ বন্ধ করলো।
__’সারাদিন কোথায় ছিলে?’
খেয়া তোতলানো স্বরে বলল,
__’কো-কোথায় আবার?বাসায়! বা-বাসায়!’
__’বাসায়?তাহলে আমার সামনে আসছো না কেন?এমন লুকোচুরি খেলার কি মানে?’
__’কি-কিসের লুকোচুরি?’
নির্ঝর খেয়াকে ঘুরিয়ে তার মুখোমুখি করলো।খেয়া চোখ বন্ধ করে আছে এখনো।
__’চোখ খোলো।আমার দিকে তাকাও।’
__’আপনাকে কি কোনোদিন দেখিনি নাকি?দেখেছি তো!এখন চোখ খুলে আবার তাকাতে হবে কেন?’
খেয়ার ধরে রাখা হাতটাতে নির্ঝর একটু চাপ দিল।তারপর বেশ গম্ভীর কন্ঠে বলল,
__’আমার দিকে তাকাও খেয়াতরী।নইলে শাস্তি পেতে হবে!ভয়ংকর লোমহর্ষক শাস্তি।’
খেয়া পিটপিট করে কাঁপা কাঁপা চোখের পাপড়ি মেলে নির্ঝরের দিকে তাকাল।নির্ঝরের চোখ দুটো কেমন মায়াকাড়া!কি গভীর সে দৃষ্টি।যে কেউ তার অতলে হারাতে বাধ্য!খেয়াও হারিয়েছে নিজেকে!বড্ড বাজে ভাবে হারিয়েছে!
নির্ঝর ডান হাতটা খেয়ার গালে স্পর্শ করে বলল,
__’এরপর থেকে আমার থেকে পালিয়ে বেড়াবে না।মনে থাকবে?’
খেয়া চোখ নামিয়ে মাথা নিচু করলো।নির্ঝর তার চেয়ে বেশ লম্বা।নির্ঝরের চোখে চোখ রাখতে হলে তাকে বেশখানি ঘাড় উঁচু করতে হয়।
সে মাথা নিচু করেই ডানে বামে মাথা ঘোড়াল।অর্থাৎ সে আজ থেকে আর নির্ঝরের থেকে পালিয়ে বেড়াবে না।
নির্ঝর তার চিবুক ধরে ফের মাথাটা উঁচু করলো।নিজে ঘাড়টা একটু নিচু করে বলল,
__’ডিনার করেছো?’
খেয়া চটপট বলল,
__’হুঁ।আমি, মিতু আর খালা একসাথে খেয়েছি।’
__’সত্যি বলছো তো।’
__’সত্যি খেয়েছি।আপনার বিশ্বাস হচ্ছে না?দাঁড়ান,এক্ষুণি মিতুকে ডাকছি!নিজে জিজ্ঞেস করুন ওকে।’
বলেই মিতু দৌঁড় দিতে নেয়।নির্ঝর হাত টেনে ধরে।এক টানে আবার নিজের কাছে এনে বলে,
__’সবসময় আমার থেকে পালানোর ফন্দি?আর পারবে না।’
__’ইয়ে মানে,নুহাকে নিয়ে আসি।আমাদের সাথে ঘুমাবে।’
__’ডিনারের সময় নুহার সাথে কথা হয়েছে।পিচ্চিকে বলেছিলাম আমাদের সাথে ঘুমাতে।সে বলেছে,মায়ের সাথে সারা বিকেল ঘুমিয়েছি।রাতে মিতু আন্টির সাথে ঘুমাব।’
খেয়ার আর কথা খুঁজে পায় না।সে চুপ হয়ে যায়।
নির্ঝর এবার খেয়ার সামনে থেকে সরে দরজার কাছে গেল।ভেতর থেকে ছিটকিনি লাগিয়ে আবার খেয়ার সামনে এসে দাঁড়াল।কয়েক সেকেন্ড পর চট করে খেয়ার পিছনে গিয়ে দুহাতে তার চোখ ঢাকে।খেয়া চমকে নির্ঝরের হাতের উপর হাত রাখে।বলে,
__’অন্ধ করে দিচ্ছেন কেন?’
__’মাঝে মাঝে ক্ষণিক সময়ের জন্য অন্ধ হওয়া মন্দ নয়।অনেক কিছু আছে যা তুমি চোখ খোলা রেখে দেখতে পাবে না,ফিল করতে পারবে না।একমাত্র বন্ধ চোখেই ফিল করতে পারবে।এখন চুপচাপ সামনের দিকে হাঁটো।’
খেয়া নির্ঝরের নির্দেশ মতো সামনের দিকে পা রাখলো।
বেলকনিতে পৌঁছাতেই নির্ঝর বলল,
__’দাঁড়িয়ে পড়ো।আর আমি না বলা পর্যন্ত চোখ খুলবে না।কেমন?’
__’হুঁ।’
নির্ঝর খেয়ার চোখের উপর থেকে হাত সরালো।হাতের ডানপাশের দেয়ালের সুইচে চাপ দিতেই পুরো বেলকনি মরিচ বাতির আলোতে ভরে উঠলো।
নির্ঝর নরম গলায় বললো,
__’চোখ খোলো খেয়াতরী।’
খেয়া চোখ খুলল।চোখ খুলতেই এক ধরনের ঘোরের মধ্যে চলে গেল যেন।তার চোখের সামনে মরিচ বাতি গুলো কেমন জ্বল জ্বল করছে।আর তার থেকে একটু দূরে টেবিলের উপর খাঁচায় ধরে রাখা দুটো শালিক পাখি।মরিচ বাতির আলো তাদের গায়ের উপর এসে পড়েছে।অদ্ভুত রকমের সুন্দর লাগছে দেখতে।
পাখি দুটিও মনে হচ্ছে পরম সুখে ঠোঁট নাড়াচ্ছে।সাথে অদ্ভুত রকমের এক শব্দ করছে।কেমন বিষণ্ণ সুন্দর সে ডাক!ভালো লাগা আর খারাপ লাগা একত্রে কাজ করে যেন!
খেয়া কয়েক পা হেঁটে টেবিলের কাছে গেল।চেয়ার টেনে নিরবে বসলো।তারপর হাত দুটো খাঁচার উপর রাখল।পাখি দুটো কেমন চকচকে চোখে তার দিকে তাকাল।পরমুহূর্তে অবিকল মানুষের কন্ঠে বলল,
__’খেয়া!খেয়া!’
খেয়া চমকে উঠলো।শালিক পাখিও কথা বলতে পারে?যদিও সে জানতো শালিক পাখি কথা বলে,কিন্তু এতটা সুন্দর ভাবে যে তা বিশ্বাস হতে চায় না।সে একগাদা প্রশ্ন চোখে নির্ঝরের দিকে তাকালো।
নির্ঝর হাসিমুখে খাঁচার বাইরে থেকে পাখি দুটোর গায়ে হাত রাখলো।মুখে বলল,
__’খেয়া,খেয়াতরী।’
সঙ্গে সঙ্গে পাখি দুটো সমসুরে বলল,
__’খেয়া!খেয়াতরী।’
নির্ঝর চেয়ার টেনে খেয়ার মুখ বরাবর বসলো।মুখে হাসি ধরে রেখেই বলল,
__’তোমাকে প্রথম যখন এ বাসায় নিয়ে আসি সেদিনই নতুন করে মনের গহীনে সংসারের স্বপ্ন জাল বুনি।অনেকটা নিজের অজান্তে।কেন জানি মনে হলো প্রকৃতি চায় তোমার আমার ছোট্ট সংসার।অনেকটা জোড়া শালিকের মতো।সেজন্যই প্রকৃতি নতুন করে তোমার হাত ধরার সুযোগ করে দিয়েছে।
পরের দিন অফিস যাওয়ার পথে গ্রাম্য এক লোকের থেকে পাখি দুটো কিনি।কেমন মায়াকাড়া চোখে আমার দিকে বার বার তাকাচ্ছিল।দেখে মায়া পড়ে গেল।পরম যত্নে সেগুলো বড় করতে লাগলাম।অফিসে আমার কেবিনের পাশে যে রেস্টের জন্য একটা রুম আছে তার বেলকনিতে রাখতাম এদের।আমি যতক্ষণ অফিসে থাকতাম নিজেই দেখাশোনা করতাম।বাকিটা সময় আমার পিয়ন দেখতো।
ওদের অনেক কষ্টে কথা শিখিয়েছি।অবশ্য বাবা,মা শব্দ দুটো আগে থেকেই পারতো।আমি নতুন করে শুধু নুহা আর খেয়া শব্দদুটো শিখিয়েছি।ভেবে রেখেছিলাম, তুমি প্রথম যেদিন নিজে থেকে আমার হাতে ধরা দিবে সেদিন তোমাকে পাখি দুটো উপহার দিবো।’
__’আপনার কি মনে হয়, আমি আপনার হাতে ধরা দিয়েছি?’
খেয়ার প্রশ্নে নির্ঝর হকচকিয়ে গেল।কিছুটা নিভু নিভু স্বরে বলল,
__’না মানে সেরকম কিছু নয়।আসলে আমার মনে হয়েছে তুমি সত্যি সত্যি আমাকে……’
__’কি আপনাকে?’
__’ভা-ভালোবাসো!’
নির্ঝরের ফেস দেখে খেয়ার বড্ড হাসি পেল।সে নিজেকে সামলে নিল।সে সত্যিই নির্ঝরের হাতে ধরা খেয়েছে।নিজের অজান্তেই তাকে নিয়ে নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে।তাকে নিজের একলা রাজ্যের একজন করে নিয়েছে।
সে নির্ঝরের থেকে চোখ সরিয়ে চারপাশে তাকাল।এই মুহুর্তে তার নিজের ভয়ংকর একটা কাজ করতে ইচ্ছে হচ্ছে।ইচ্ছে টাকে যতই মাথা থেকে উড়িয়ে দিতে চাচ্ছে ততই যেন তা ঝেঁকে বসছে।শেষ মেষ সব চিন্তা ভাবনার জলাঞ্জলি দিয়ে নিজের আসন থেকে হালকা উঁচু হয়ে নির্ঝরের বাম গালে গভীর এক চুমু দিল।
তারপর দ্রুত সরে গিয়ে নিজের আসনে বসলো।মাথা নিচু করেই পাখি দুটোকে হাত নেড়ে নেড়ে দেখতে শুরু করলো।
নির্ঝর হা করে খেয়ার দিকে চেয়ে রইলো।খেয়া তাকে নিজে থেকে চুমু দিয়েছে?তাও আবার সজ্ঞানে?তার কয়েক মিনিট লাগলো বুঝতে!
তারপর ঝট করে খেয়াকে জড়িয়ে ধরলো।খেয়া মুচকি হেসে তার পিঠে হাত রাখলো।এই প্রথম সে নিজেও নির্ঝরকে জড়িয়ে ধরলো।
নির্ঝরের চোখ দুটো কেমন ভরে উঠলো।সে চোখ বন্ধ করলো।সঙ্গে সঙ্গে দু ফোঁটা অশ্রু চোখ বেয়ে গড়িয়ে গালে পড়লো।তার আজ পরম সুখের দিন।সে তার খেয়াতরীকে পাশে পেয়েছে।নিজের করে পেয়েছে।
নির্ঝরের শরীর একটু পর পর কেঁপে উঠছে।খেয়া বুঝতে পারলো নির্ঝর কাঁদছে।কেন জানি সঙ্গে সঙ্গে তার নিজের চোখও ভরে উঠলো।এতটা সুখ তার কপালে ছিল?সেজন্যই কি জাহিদ তাকে মুক্তি দিয়েছিল?
জাহিদের থেকে মুক্তি না পেলে তো সে কোনোদিন জানতই না এই শহরেই একজন রোজ তার নামে স্বপ্ন বুনে,তাকে নিয়ে স্বপ্ন সাজায়,দূর থেকে তাকে নিজের কাছে রাখে!তার নামে সকাল, দুপুর,সন্ধ্যা,রাত নামায়!তাকে নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসে।এই ভালোবাসা এতটা গভীর যে, কোনো কিছুরই সাধ্য নেই সেই অতলে পৌঁছে বিন্দুমাত্র খাঁদ সৃষ্টি করতে!নেই,সাধ্য নেই!
খেয়া দুহাতে নির্ঝরের শার্ট আকড়ে অশ্রু বিসর্জন দেয়।
মানুষের জীবন এত অদ্ভুত কেন?জীবন নামের পথের হাজারো বাঁক।প্রতিটা বাঁকে বাঁকে একেকটা অদ্ভুত রকমের ঘটনা ঘটে।পুরুষ মানুষ, এই পুরুষ জাতির মধ্যেই কত প্রকারভেদ।একজন সে মা হতে পারবে না বলে ছুঁড়ে ফেলে দিল।আরেকজন সব জেনেও তাকে কুড়িয়ে পরম যত্নে নিজের ভলোবাসা দিয়ে তাকে খাঁটি মুক্তোয় পরিণত করলো।এত অদ্ভুত কেন মানবজীবন?আর এত অদ্ভুত কেন মানুষের ভালোবাসা?
খেয়ার মনে পড়লো সেদিনের কথা।যেদিন নির্ঝর তাকে নিজের মনের কথা বলেছিল।তাকে ভালোবাসে বলেছিল, তাকে বিয়ে করতে চেয়েছিল।
সেদিন সে বেশ ভদ্র ভাবে,বুঝিয়েই নির্ঝরের প্রস্তাবে অসম্মতি জানিয়েছিল।নির্ঝরের অনুভূতিতে আঘাত করার জন্য সে এতটা অনুতপ্ত ছিল যে সেই রাতে সে একদম না খেয়ে থাকে।ছোট্ট একটা কথায় জাহিদের সাথেও ঝগড়া করে।কিছু দিন যেতেই সব ঠিক হয়ে যায়।জাহিদের সাথে তার বিয়েও হয়।কিন্তু নির্ঝরের সাথে আর দেখা বা যোগাযোগ হয়নি।
সে ভেবেছিল নির্ঝর এতদিনে হয়তো বিয়ে করে ঘর সংসার করছে।কিন্তু সে যেদিন অনার্স থার্ড ইয়ারের ফাইনাল পরীক্ষা দিয়ে বের হয়,গেটের কাছে হুবহু নির্ঝরের গাড়িটা এক পলকের জন্য দেখে।সেদিন তার বুকের ভেতর কেমন মোচড় দিয়ে উঠে।নির্ঝর তাকে এখনো ফলো করে?কেন করে?
তারপর থেকে সে মাঝে মাঝে নির্ঝরের গাড়িটা এক পলকের জন্য দেখতো।তার নাগাল পাওয়ার আগেই উধাও!
সেজন্য সেদিন ডিভোর্সের পর পার্কে নির্ঝরকে এত বছর পর দেখে সে অবাক হয়নি।উল্টো একরাশ কষ্ট তাকে ছাপিয়ে দিয়েছে।বার বার মনে হয়েছে নির্ঝরের নিখাঁদ ভালোবাসাকে অবহেলা করেই হয়তো তার আজ এই দূর্গতি।নির্ঝর হয়তো তাকে অভিশাপ দিয়েছিল।তার বদৌলতে সে এতবড় শাস্তি পেল!
__’ভালোবাসি খেয়াতরী!ভালোবাসি, ভালোবাসি,ভালোবাসি!’
নির্ঝরের ঘোর মিশ্রিত কন্ঠে খেয়ার মুখে হাসি ফুটে উঠে।সে ছোট্ট করে বলে,
__’হুঁ।’
__’কিসের হুঁ?আর কিছু বলবে না?’
__’জি নাহ!’
নির্ঝরের হাত দুটো ঢিলে হতেই খেয়া তাকে ছেড়ে দেয়।নির্ঝর তার দুগালে হাত রেখে তার মুখটা উঁচু করে।চোখে চোখ রাখে।দুটো গভীর দৃষ্টি
এক হতেই খেয়া চোখ বন্ধ করে।নির্ঝর মুখটা এগিয়ে তার ঠোঁটে ঠোঁট ছোঁয়ায়।
৩০.
মিতুর আজ মান্থলি টেস্ট পরীক্ষা ছিল।বেশি ভালো হয়নি।কেন হয়নি তা জানে না।প্রশ্ন দেখে সহজ মনে হয়েছিল।কিন্তু লিখতে নিয়েই বিপাকে পড়লো।প্রতিটা প্রশ্নের উত্তর প্রথম লাইন আর শেষ লাইন শুধু মাথায় আছে।মাঝের লাইন আর মাথায় আসে না।উত্তর অসম্পূর্ণ রেখেই সে মন খারাপ করে ক্লাস থেকে বের হয়েছে।
স্কুলের বিশালাকার মাঠটা পেরিয়ে সে গেটের কাছে পৌঁছাল।লতিফ চাচা গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।মিতু গাড়িতে উঠে মুচকি হাসলো।
__’চাচা,নুহা কি বাসায় নাকি স্কুলে?’
__’নুহা রে বাসায় দিয়া তোমারে নিতে আইছি।’
__’অহ।চাচা,দুপুরে খেয়েছেন তো?’
__’হ মা।খাইছি।’
__’ভালো!’
মিতু বসেছে পেছনের সিটে মাঝামাঝি জায়গায়।সে সরে এসে একদম জানালা ঘেঁষে বসলো।জানালার কাচ তুলে মাথাটা উঁচু করে বাইরে তাকাল।সঙ্গে সঙ্গে তার বিষণ্ণ মন ভালো হয়ে গেল।
তিন মাসের বেশি হতে চললো মিতু এ শহরে এসেছে।এর মধ্যেই শহরটাকে সে বেশ আপন করে নিয়েছে।এই যে,প্রতিদিনের চিরচেনা পথটা,যে পথে সে রোজ আসা-যাওয়া করে,কত আপন মনে হয় পথটাকে!ওই যে মোড়ের বড় কৃষ্ণচূড়া গাছটাকে কত আপন মনে হয়!
সে মুচকি হাসলো।প্রতিটি জায়গাই এমন।এদের নিজস্ব এক ক্ষমতা আছে।মানুষকে বশীভূত করার ক্ষমতা।কত দ্রুত সে মানুষের মনে জায়গা করে নেয়!
গাড়ি বাসার সামনে থামতে মিতু ব্যাগ হাতে নেমে গেল।কলিং বেলে একবার চাপ দিতে তার মা এসে দরজা খুলে দিল।সে ভিতরে প্রবেশ করে ড্রয়িং রুমে তাকাতেই দেখে রাহাত বসে আছে।রাহাতের এক হাত দূরে নির্ঝর ভাই বসে আছে।সে ভয়ে কেমন কেঁপে উঠলো।রাহাত এখানে কি করছে?তার জন্য এসেছে?ছি!নির্ঝর ভাই, খেয়া আপা জানলে কি ভাববে তারা?
সে অদ্ভুত দৃষ্টিতে রাহাতের দিকে চেয়ে রইলো।
খেয়া রান্নাঘরে পায়েস রান্না করছিল।মিতুর বাসায় ফেরার খবরে সে ড্রয়িং রুমে আসলো।
__’মিতু,তু……….’
মিতুর চোখ বরাবর খেয়া তাকাতেই সেও চমকে উঠল।রাহাত নামের ছেলেটা এখানে কেন?নির্ঝরকে কোনো প্রশ্ন করেছে তার ব্যাপারে?সে তো পুষ্প নয়!
খেয়ার হাতের চামচটা পড়ে যেতেই মৃদু শব্দ সৃষ্টি হলো।সেই শব্দে রাহাত,নির্ঝর দুজনেই তাদের দিকে তাকাল।
(চলবে)