জন্ম টা পতিতালয়ে
লেখকঃ Arian Sumon..
Part- 07
..
সামিয়া এসে সবার সামনে বসল। সারাক্ষন আকাশ তার দিকে তাকিয়ে থাকল।।
সব শেষে পাত্রপক্ষ সামিয়াকে পছন্দ করল। সামিয়াও পাত্রকে পছন্দ করল।
সবাই অনেক খুশি। সবার খুশির মাজে শুধু আকাশই অখুশি।
রাতে আকাশ রুমে শুয়ে আছে।
সামিয়ার সাথে কাটানো প্রতিটা মুহুর্ত একের পর এক মনে পড়তে লাগল।
আর চোখ বেয়ে পানি বেড় হতে লাগল।
পরদিন আকাশ ফুল গাছে পানি দিচ্ছিল এমন সময়,,,
সামিয়াঃ কি আকাশ কেমন আছ?
আকাশঃ জ্বী ম্যাম ভালোই।
সামিয়াঃ কাল সারাদিনের ব্যস্থতার মাজে তোমার খবর নেওয়াই হয়নি। যাহোক সাইফুল কে তোমার কেমন লাগল??
আকাশঃ সাইফুল কে ম্যাম??
সামিয়াঃ আরে কাল যে আমাকে দেখতে আসছিল
আকাশঃ ওহ। ওনার নাম সাইফুল?
সামিয়াঃ কেন তুমি।জানতে না
আকাশঃ না।।
সামিয়াঃ ওহ আচ্ছা। এখন বলো ওরে তোমার কেমন লেগেছে??
আকাশ মনে মনে ভাবল। কপালে যা থাকে হবে। এইটাই সুযোগ কিছু বদনাম কইরা দেই। যদি এই অছিলায় ওনি বিয়ে টা ভেঙে দেয়।
আকাশঃ কি আর বলব ম্যাম। আপনারা বড়লোক আপনাদের নিয়া কথা বলার আমাদের কি আর অধিকার আছে।
সামিয়াঃ এভাবে বলছ কেন? তুমি বলো তোমার কাছে সাইফুল কে কেমন লাগছে
আকাশঃ সত্যি বলব ম্যাম রাগ করবেন না তো?
সামিয়াঃ নাহ তুমি বলো।
আকাশঃ আসলে ম্যাম স্যার কে আমি কয়েকবার নষ্ট পল্লিতে দেখেছি। ( মাথা নিচু করে)
সামিয়াঃ কিহহহ কি বলছ ভেবে বলছ তো
আকাশঃ জ্বী ম্যাম। বেশ কয়েকবার দেখেছি। বড় লোকের ছেলে বাড়েও যায়। একেকদিন একেক মেয়ের সাথে রাত কাটাতো। আরো তো জুয়া থেকে শুরু করে সব খেলেই।
সামিয়াঃ যা বলতেছ তুমি। এগুলোর কোনো প্রুভ আছে তোমার কাছে?
আকাশঃ আমার কাছে তো স্মার্ট ফোন নাই। আর আমরা আমাদের খদ্দেরদের ছবি তুলতাম ও না।তাই আমার কাছে কোনো প্রুভ নেই। তবে আপনি রহমান চাচাকে জিগাসা করতে পারেন।
সামিয়াঃ ওকে।
সামিয়া চলে গেল।
আকাশ মাথায় হাত দিল। এ কি করলাম। একটু বেশিই তো বলে ফেলছি। আল্লাহ আমারে রক্ষা করো। আমি তো জানিওনা ঐ সাইফুল না কি ওইটা কই থাকে। রহমান চাচারও তো কথা বললাম। এখন কি হবে। নিশ্চয়ই ম্যাম সবার থেকে খোজখবর নিবে।
তিন দিন পর,,
এই তিন সামিয়া ম্যাম আমার সাথে একটাও কথা বলেনি। কি হলো। ওনি কি বুঝে গেলেন নাকি যে আমি মিথ্যা বলে ওনার বিয়ে ভাঙতে চাইছি।
এমন সময়
সামিয়ার আব্বুঃ ২৩ তারিখ এর পর তুর কাজ আরো বেড়ে যাবে রে। মানসিক ভাবে রেডি হয়ে যাইছ
আকাশঃ কেন আংকেল? ২৩ তারিখের পর কি এমন হবে
সামিয়ার আব্বুঃ জানিস না???
আকাশঃ কি জানব?
সামিয়ার আব্বুঃ ২৫ তারিখ সামিয়ার বিয়ে।
আকাশঃ ওহ। আচ্ছা আমি রেডি আছি আংকেল।
আংকেল চলে গেলেন।।
তার দুদিন পর,,,
এখনও সামিয়া ম্যাম আমার সাথে কথা বলেনি। আজ পাচ দিন হয়ে গেল। তার মানে কি ওনি জেনে গেলেন সব? আমি মিথ্যা বলেছি। রহমান চাচাও তো নিশ্চিত চিনেনা বলেছেন। কি করব ম্যাম কে সরি বলে ক্ষমা চেয়ে নিব।
আকাশ সিদ্ধান্ত নিল ক্ষমা চেয়ে নিবে।
তাই সোজা সামিয়ার রুমের কাছে চলে যাগ। দরজায় আওয়াজ দিয়ে,,,
আকাশঃ ম্যাম আসব??
সামিয়াঃ হ্যা আসো
আকাশ ভিতরে ডুকল। গিয়ে দেখল সামিয়া চেয়ারে বসে কি যেন ভাবছে।
সামিয়াঃ কি জন্য এসেছ??
আকাশঃ আসলে ম্যাম আমি দুঃখিত
সামিয়াঃ কেন
আকাশঃ আমি আপনার আর সাইফুল স্যারের..
শেষ করতে না দিয়েই সামিয়া উঠে দাঁড়িয়ে বলল
সামিয়াঃ আকাশ তোমাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আকাশ চমকে যায়। বলছে কি। কোথায় আমাকে থাপরাইবে। নিজের হবু জামাইর সমন্ধে খারাপ কথা বলছি। অথচ ওনি আমাকেই ধন্যবাদ দিচ্ছে।
সামিয়াঃ তুমি না থাকলে হয়ত আমি জানতেই পারতাম না। যে সাইফুল অনেক বড় লম্পট মেয়েবাজ। ও আগেও বিয়ে করেছিল
এ যেন মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি। বলছে কি। আমি তো সব মিথ্যা বলছিলাম। এখন ম্যাম এসব কি বলছে। কিছুই মাথায় ডুকছেনা। যাহোক ম্যাম কে বুঝতে দেওয়া যাবেনা যে আমি মিথ্যা বলছিলাম
আকাশঃ কি বলছেন ম্যাম কি করে জানলেন?
সামিয়াঃ তোমার মুখ থেকে ওইদিন সব শুনার পর আমি সাইফুলের পেছনে পুলিশ লাগিয়ে দিয়েছিলাম। ওর বিষয়ে পুরো খবর নিয়েছিলাম। তোমার আংকেল ও বলল ও নাকি তোমাদের ইয়ের নিয়মিত কাষ্টমার।
ম্যামের কথাগুলো আমার কাছে মুক্ত ঝড়ার মতো কানে আসছিল। কি করে বলব মিথ্যা কথাও সত্য হয়ে যায় কখনও কখনও।
আকাশঃ যাক ম্যাম। তারমানে বিয়ে ভেঙে দিয়েছেন?
সামিয়াঃ নাহ
আকাশঃকি বলছেন লুচ্চা লম্পট জেনেও ওনাকেই বিয়ে করবেন?
সামিয়াঃ আমি আব্বু আম্মুকে সব বলেছি। কিন্তু ওনারা কিছুতেই বিশ্বাস করছেনা। আম্মু বলছেন এই বয়ষে এমন সামান্য থাকতেই পারে। এতে এত রিয়েক্ট করার কিছুই নাই।ওনারা কিছুতেই বিয়ে ভাঙবেনা বলছেন।
মুহুর্তেই আকাশের মুখ থেকে হাসি উড়ে যায়।
আকাশঃ আপনার আব্বু?
সামিয়াঃ তিনিও কিছু বলছেন না। আম্মুর কথাই শেষ কথা। কিন্তু
আকাশঃ কিন্তু কি?
সামিয়াঃ আমি এ বিয়ে করতে চাইনা
আকাশঃ তো ম্যাম এখন কি করবেন?
সামিয়াঃ জানিনা কি করব। পুলিশ অফিসার তাই এলাকা ছেড়ে পালাতেও পারব না। কারন ডিউটি রয়েছে।
আকাশঃ ওহ।
সামিয়াঃ আচ্ছা তুমি কিছু একটা বুদ্ধি দাও তো কিভাবে বিয়ে ভাঙা যায়
আকাশঃ আমি আর কি দিব? আমি মুর্খ মানুষ আমার কি আর ওত জ্ঞ্যান বুদ্ধি আছে।
সামিয়াঃ ধুর তুমি কোনো কাজেরই না। যাও এখন যাও একা একা ভাবতে দাও
আকাশঃ ওকে ম্যাম। কিছু লাগলে বলবেন।
আকাশ চলে আসে।
আকাশও চিন্তায় পড়ে গেল কি করা যায়। কোনোরকম মিথ্যা বলে যাই একটা করছিলাম তাও আবার ওর মায়ের জন্য সফল হচ্ছেনা।
পরদিন,,,,
আকাশ কাজ করতেছে। এমন সময়
সামিয়াঃ আকাশ ও আকাশ
আকাশঃ জ্বী ম্যাম বলুন
সামিয়াঃ চলো??
আকাশঃ কোথায় ম্যাম
সামিয়াঃ আমার এক্স বয়ফ্রেন্ডের কাছে যাব।। আমি জানি সে এখনও আমাকে ভালোবাসে। তাই যাই তার কাছে।
আকাশঃ ওহ আচ্ছা চলুন।।
আকাশ সামিয়ার সাথে চলে যায়।
সামিয়া সোজা ওর এক্স বয়ফ্রেন্ড এর বাড়িতে চলে যায়।
সেখানে সামিয়া আর ওর বয়ফ্রেন্ড কি যেন কথা বলল আকাশ কিছুই শুনতে পারল না।
কিছুক্ষন পর তারা বেড়িয়ে আসল খুশি মনে।
সামিয়াঃ আকাশ চলো
আকাশঃ কোথায় যাবেন এখন ম্যাম
সামিয়াঃ কাজি অফিস যাচ্ছি
আকাশঃ কেন??
সামিয়াঃ আমরা বিয়ে করব আজকে এখনই
আকাশের মাথায় বাজ পড়ার মতো মনে হলো।
আকাশঃ কি বলছেন ম্যাম
সামিয়াঃ হ্যা ঠিকই বলছি। এছাড়া বিয়ে এটকানোর উপায় নাই।
আকাশঃ আপনার বাবা মা?
সামিয়াঃ ধুর তারা যেহেতু আমার কথা শুনেনি। আমি কেন শুনব। আর এমন ও নয় যে সে আমাকে ভালো জায়গায় বিয়ে দিচ্ছে। গাড়িতে উঠো।
এই বলে সামিয়া ওর বয়ফ্রেন্ডের সাথে গাড়িতে উঠে গেল।
আকাশের চোখ দিয়ে পানি বেড় হয়ে গেল। কি হচ্ছে কিছুই মাথায় আসছেনা। ভাঙতে গিয়ে এ তো আরো যলদি বিয়ে করে ফেলছে। আসলেই গরীবের কপালে কিছুই না।। গরীব হয়ে অনেক বেশি আশা করে ফেলছিলাম বুঝতেই পারিনি এটা চাঁদ ধরার মতো। যা ধরার সামর্থ্য আমার নেই।
এমন সময়েই সামিয়া ডাক দিয়ে আবার বলল গাড়িতে উঠতে।
আকাশ গাড়িতে উঠল। গাড়িটা একটা কাজি অফিসের সামনে থামাল।
তারপর সবাই গাড়ি থেকে নেমে কাজি অফিসের ভিতর ডুকল।।
”
”
”
”
কাজী সাহেবঃ আলহামদুলিল্লাহ এখন থেকে আপনারা স্বামী স্ত্রী। দোয়া করি আপনারা সুখি হোন।
”
”
”
”
TO BE CONTINUE