জন্মটা পতিতালয়ে Part- 04

0
1379

জন্মটা পতিতালয়ে
লেখকঃ Arian Sumon..
Part- 04
..
আকাশ আস্তে আস্তে রুম থেকে বেড় হচ্ছে। বারবার পিছু ঘুরে সামিয়াকে দেখছে। আর কোনোদিন দেখতে পারব কিনা জানিনা। তবে মেয়ে তোমাকে আমার সারাজীবন মনে থাকবে।।

আকাশ পুলিশ ষ্টেশন থেকে বেড়িয়ে সোজা বস্তিতে চলে গেল।

বস্তির একটা দোকানে চা খেতে বসল
এমন সময়,,
একজনঃ কিরে তুরে নাকি পুলিশে ধরছে ছাড়া পাইলি কেমনে?
আকাশঃ….. চুপ করে আছে
=> কথা বলছিস না যে? করিস তো মাইয়াগো ধান্দা। পুলিশ ধরেও ছেড়ে দিল। দেখছ মিয়ারা দেশের কি অবস্থা আমাদের উন্নতি হবেই কেমনে
=> হ ভাই। এসব আইরা জাউরা পোলাপাইন গো পুলিশ কিছুই কইব না। খালি আমরা রিকশা চালক রা একটু কিছু করলেই হলো শুরু হয়ে যত সরকারের উল্টা পাল্টা কাহিনি।
=> হুম ঠিক বলছেন। এসব পতিতার বাচ্চারা দেশ টা খাইয়া ফেলতেছে। এদের উচিত ফাঁসিতে লটকাইয়া মাইরা ফেলা।

আকাশ আর চুপ থাকতে পারল না। রাগ মাথায় চড়ে বসল।
আকাশ উঠে সোজা ঐ লোকটির কলার চেপে ধরল। সবাই ভয়ে পেয়ে গেল।

কিন্তু পরক্ষনেই আকাশ শান্ত হয়ে যায়। কারন লোকটি ছিল বৃদ্ধ।

কিছু না বলেই ছেড়ে দিয়ে আকাশ দোকান থেকে বেড়িয়ে আসে।

সোজা নিজের ঘরে চলে আসে। এসে শুয়ে শুয়ে ভাবতে থাকে,,,

আসলেই তো আমি যা করছি তা একদম ঠিক নয়। দেশ ও জাতির জন্য অনেক খারাপ। অনেকের অনেক ক্ষতি করেছি। কত মেয়েকে তুলে নিয়ে এসেছি হিসাব নেই। অনেকেই অনেক উপদেশ দিয়েছে কারো উপদেশ মাথায় নেই নি। কিন্তু আজ সামিয়া আমাকে কথা গুলো বলার পর এমন লাগছে কেন। ভালো হতে ইচ্ছে করছে কেন??
নাহ আমার ভালো হতেই হবে। আজ থেকে আর কোনো খারাপ কাজ করব না।এখন থেকে ন্যায় পথে চলব। কাল থেকেই কাজ খুজব।



পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠেই আকাশ কাজ খুজতে বেড় হয়।

অফিসে অফিসে কাজের জন্য দৌড়ে বেড়ায়। কিন্তু কোথাও কাজ পেল না।

হতাশ হয়ে একটা গলির রাস্তায় হাটছে।

চিন্তা করছে এখন সে কি করবে। মানুষ তো বুঝতে চায় না।

হঠাৎ একজন তার কাধে হাত রাখল।। আকাশ চমকে গিয়ে পিছনে তাকাতেই অভাক হয়ে যায়।
কারন হাত টি ছিল সামিয়ার।
আকাশ ভয় পেয়ে গেল।
আকাশঃ আপনি?? আমি কিছুই করিনি বিশ্বাস করুন। আমি কাজ খুজার জন্য ঘুরতেছি। প্লিজ আমাকে এরেস্ট করবেন না
সামিয়াঃ আরে থামো থামো। আমি তোমাকে এরেস্ট করতে আসিনি।
আকাশ শান্ত হলো। ভয় পুরো না কাটলেও হালকা হালকা আছে।

সামিয়াঃ তুমি এখানে কি করো??
আকাশঃ এই তো ম্যাম একটা ছোট্ট কাজের জন্য ঘুরছি কিন্তু কেউই চাকরি দিল না।
সামিয়াঃ তা তুমি কি কাজ পারো??
আকাশ মাথা নিচু করে ফেলল।কারন আকাশ কোনোদিন ঐসব কাজ ছাড়া অন্য কোনো কাজই করেনি। আকাশ খদ্দের এনে দিত। রহমান চাচা তার ৪০% তাকে দিয়ে দিত। এটাই করত।

সামিয়া ব্যাপার টা বুঝতে পারল।

সামিয়াঃ তার মানে কোনো কাজই জানোনা।
আকাশঃ আসলে
সামিয়াঃ আর বলতে হবেনা। দাড়োয়ানের চাকরি করতে পারবা?
আকাশঃ হ্যা হ্যা পারব তো।
সামিয়াঃ ওকে তাহলে কাল সকাল ১১ টায় থানায় এসে আমার সাথে দেখা করিও।
আকাশঃ ওকে ম্যাম।
সামিয়াঃ তাহলে আমি এখন আসি।
আকাশঃ ওকে।

সামিয়া চলে গেল। আকাশ তার চলে যাওয়া দেখল।

আকাশ খুশি মনে বস্তিতে চলে গেল।

কেন জানিনা আকাশের মনে ফুর্তি জাগতেছিল। আকাশ ভাবতেও পারছেনা যে সামিয়া তার চাকরির ব্যবস্থা করতেছে।

যাহোক পরদিন সকালে,,,,,

আকাশ সুন্দর করে পরিপাটি হয়ে থানায় চলে গেল।

থানায় প্রবেশ করার সময় একটা কন্সেটেবল তাকে আটকালো।

কন্সেটেবলঃ ঐ পতিতার বাচ্চা ভিতরে কোথায় যাচ্ছিস??ম্যাম তো দয়া করে তুকে ছেড়ে দিয়েছিল। আবার কি পুলিশ ষ্টেশনে।
আকাশের রাগ উঠে গেল। এই একটা মাত্র শব্দ আকাশ একদম পছন্দ করে। কেউ তাকে পতিতার বাচ্চা বা এ জাতীয় গালি দিলে তার খুব রাগ উঠে যায়।

আকাশঃ দেখুন স্যার আর যাই বলুন পতিতার বাচ্চা বলবেন না।
কন্সেটেবলঃ ওরে বাবারে চুরের মুখে আল্লাহ আল্লাহ শুনা যাচ্ছে। পতিতার বাচ্চা কে পতিতার বাচ্চা বলব না তো কি বলব???
আকাশঃ দেখুন আপনি কিন্তু বেশি করে ফেলতেছেন
কন্সেটেবলঃ কিহ তুই আমাকে ধমকাচ্ছিস তুর এত বড় সাহস।

সামিয়া নিজের রুম থেকে বেড়িয়ে দেখে কন্সেটেবল আর আকাশের মধ্যে কথা কাটাকাটি হচ্ছে।সামিয়া বিষয় টা লক্ষ করে

দুজনকেই থানার ভিতরে ডাকল,,,,

সামিয়াঃ কি ব্যাপার টা কি এটা কি থানা নাকি অন্য কিছু??
আকাশ মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে।
কন্সেটেবলঃ দেখুন না ম্যাম ও আমাকে শাসাচ্ছিল
সামিয়াঃ কি আকাশ তুমি ওনাকে শাসাচ্ছিলে কেন?
আকাশঃ ম্যাম ওনি আমাকে বারবার পতিতার বাচ্চা বলে গালি দিচ্ছিল তাই মাথা ঠিক ছিল না। তাই
সামিয়াঃ আর বলতে হবেনা। কি ব্যপার নিজে কি খুব বড় হয়ে গেছেন নাকি? মানষ কে মানুষ ভাবতে শিখুন। নাহলে চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়ে দিব।
কন্সেটেবলঃ সরি ম্যাম
সামিয়াঃ আমাকে না ওনাকে সরি বলুন
কন্সেটেবল আকাশ কে সরি বলে বেড়িয়ে গেল।

সামিয়াঃ বসো তুমি
আকাশ বসল।

সামিয়াঃ তো কি খাবা? চা না কফি
আকাশঃ আমি কিছুই খাবোনা। খালি একটা চাকরির ব্যবস্থা করে দিলেই হবে।
সামিয়াঃ তার ব্যবস্থা করে ফেলছি।
আকাশঃ সত্যি??
সামিয়াঃ হুম। আচ্ছা খাবা না যেহেতু চলো

সামিয়া আকাশ কে নিয়ে রওনা হলো।

কিছুক্ষন পর একটা বড় বাড়ির কাছে এসে গাড়ি থামল।
দুজনেই নামল।।

তার সামিয়া আকাশ কে নিয়ে বাড়ির ভিতর ডুকল,,,
সামিয়াঃ তুমি এখানে বসো আমি আসছি।

আকাশ বসল।

সামিয়া উপরে উঠে গেল।

আকাশের মাথায় কিছুই ডুকছেনা। কি হচ্ছে এসব। এ কার বাড়িতে নিয়া আসল। আবার ম্যাম বাসার ভিতরে ডুকে গেল।।

এমন সময়েই একজন বৃদ্ধ,,,

=> তুমিই তাহলে আকাশ
আকাশ দাঁড়িয়ে গেল
আকাশঃ জ্বী আসসালামু আলাইকু
=> বসো বসো দাড়ালে কেন। আমি হলাম সামিয়ার আব্বু।
আকাশ বসল।
সামিয়ার আব্বুঃ তোমার কথা মেয়েটি আমাকে কালকেই বলছে। আসলেই তুমি অনেক সহজ সরল। খালি ভাগ্যটা খারাপ ছিল।

এমন সময়েই সামিয়া হাজির। হাতে বিস্কুট শরবত ইত্যাদি।
সামিয়া একটা লাল ড্রেস পড়েছে। আকাশ দেখেই হা করে তাকিয়ে আছে। চোখ সড়াতেই পারছেনা।
সামিয়াঃ কি কথা হচ্ছে বাবা
সামিয়ার বাবাঃ কিছু না রে। ওরে আমার পছন্দ হইছে ওরেই রেখে দে।
সামিয়াঃ ওকে।

সামিয়ার বাবা চলে গেল।

সামিয়াঃ তোমাকে এই বাড়ির দাড়োয়ান হিসেবে থাকতে হবে।তুমি রাজি আছ?
আকাশঃ জ্বী ম্যাম এটা কি আপনার বাড়ি?
সামিয়াঃ হায়রে হাদারাম। আমার বাবা এতক্ষন তোমার সাথে কথা বলল। এখনও বুঝনি এটা আমার বাড়ি? ( হেসে হেসে)
আকাশঃ না মানে
সামিয়াঃ থাক এখন এগুলো খাও।
আকাশঃ আমি এখন কিছুই খেতে পারব না। যা খেয়েছি তাই হজম হচ্ছেনা।
সামিয়াঃ কখন কি খেলে??
আকাশ মনে মনে ভাবছে
(আপনাকে ম্যাম যা লাগছে বলে বুঝাতে পারব না। আপনাকে দেখার পর আমার সব ক্ষুদাই শেষ হয়ে গেছে। আপনি যদি আমার পাশে থাকেন তাহলে মনে হয় সারাজীবন না খেয়েই থাকতে পারব।)

সামিয়াঃ কি হলো চুপ হইয়া গেলে কেন
আকাশের ধ্যান ভাঙল।
আকাশঃ আসলে ম্যম সকালে খাইছি তো এখন ক্ষুদা নেই।
সামিয়াঃ বললেই হলো তুমি এখানে দুপুরের লাঞ্চ করেই যাবে।
আকাশঃ না ম্যাম তা পারব না।
সামিয়াঃ আমি বলছ মানে করতেই হবে।

জোড়াজোড়ি তে আকাশ রাজি হলো।

দুপুরে খাওয়া ধাওয়া শেষে আকাশ যখন চলে আসবে,,,

সামিয়াঃ তাহলে কবে থেকে জয়েন করছ??
আকাশঃ আপনি বললে আজকেই জয়েন করব
সামিয়াঃ না তা লাগবে না। তুমি বরং আগামীকাল থেকে জয়েন করো।
আকাশঃ ওকে মেডাম।
সামিয়াঃ ওকে তুমি এখন যাও কালকে সকালে চলে এসো।
আকাশঃ আচ্ছা ম্যাম একটা প্রশ্ন করব??
সামিয়াঃ হুম করো
আকাশঃ..???????????

TO BE CONTINUE

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে