জন্মটা পতিতালয়ে
লেখকঃ Arian Sumon..
Part- 03
..
কত ভালো লাগছে বলে বুঝাতে পারব না। এত দিন এত মেয়ের সাথে ঘুরাফেরা করেছি কাউকে ভালো লাগেনি। কিন্তু জান্নাতের সাথে হাটতে এত ভালো লাগছে। ওর প্রতিটা কাজ আমাকে প্রতিনিয়ত মুগ্ধ করছে।
”
”
”
সারাদিন ঘুরাফেরা করে সন্ধ্যায় রহমান চাচার ওখানে যায়। গিয়ে তো আকাশ পুরো অভাক হয়ে যায়। এটা কি করে হলো ভাবতেও পারছেনা।
জায়গাটা পুরো পুলিশে ঘেরা। ভিতরে ডুকে দেখে রহমান চাচা সহ সবাইকে গ্রেপ্তার করেছে।
আকাশ পিছনে তাকিয়ে দেখে সামিয়া নেই। কি করবে ভেবে পাচ্ছেনা। এখন এ মেয়েটা আবার কোথায় গেল। এমনিতেই যেকোনো সময় আমি গ্রেপ্তার হতে পারি। এখন আবার এই মেয়েটা গেল কোথায়।
হঠাৎ একজন পুলিশ এসে আকাশের কলার চেপে ধরে,,,
আকাশঃ কি করছেন কলার ধরেছেন কেন?
পুলিশঃ মাগীবাজি করো তাই না। চলো শশুর বাড়ি। দেখাব মজা।
আকাশঃ দেখুন স্যার আপনি ভূল ভাবছেন। আমি এসব করিনা। আমি তো একজন কে খুজতেছি। একটা মেয়ে এতক্ষন আমার সাথেই ছিল হঠাৎ দেখি পিছনে নাই।
পুলিশঃ ওহ তাই। এসব থানায় গিয়া বলিস।
আকাশের হাতে হাতকড়া লাগিয়ে দিল।
তারপর একে একে আকাশ রহমান চাচা সবাইকে গাড়িতে উঠাল।
এত কিছুর মাজেও আকাশের মাথায় ঘুরতে সামিয়ার কথা ঘুরতেছে। মেয়েটা গেল কোথায়। হঠাৎ উধাও হয়ে গেল কোথায়। আকাশের চিন্তা হতে লাগল। মেয়েটা তো এখান কার কিছুই চিনেনা। আল্লাহ জানে তার কপালে কি আছে।
কিছুক্ষনের মধ্যেই আমাদের থানায় নিয়া আসা হলো। আ
আকাশসহ সবাইকে জেলে ডুকিয়ে দেওয়া হলো।
এমন সময়েই
রহমান চাচাঃ তুর জন্য আজকে আমাদের জেল খাটতে হচ্ছে
আকাশঃ মানে আমি কি করলাম??
রহমান চাচাঃ ভালো সাজা হচ্ছে? পুলিশ কে খবর দিয়েছিস কেন
আকাশঃ পাগল হইছ নাকি?? কি বলছ আমার মাথায় কিছুই ডুকছেনা। আর আমিই বা কেন পুলিশ কে খবর দিতে যাব?
রহমান চাচাঃ তুর সাথের মেয়েটা কই?
আকাশঃ জানিনা। পুলিশের ঝামেলার পর আর দেখতে পাইনি
রহমান চাচাঃ দেখবি কেমনে ঐ মেয়েটি তো পুলিশ
আকাশঃ কিইইইই
রহমান চাচাঃ হুম
আকাশঃ ধুর কি বলো মেয়ে তো ভালো মতো কথাই বলতে জানেনা ও আবার ইন্সপেক্টর হবে।
রহমান চাচাঃ আমি নিজের চোখে দেখেছি।
আকাশঃ কোথায় কিভাবে??
রহমান চাচাঃ আমাদের যখন পুলিশের গাড়িতে উঠাচ্ছিল তখন ঐ মেয়েকে আমি পুলিশের ড্রেসে দেখেছি
আকাশঃ কি যে বলো কাকে না কাকে দেখছ
রহমান চাচাঃ যা দেখছি একদম ক্লিয়ার দেখছি।
আকাশের মাথায় ঘোড়প্যাচ খেয়ে গেল। চাচা বলে কি? ঐ মেয়ে যদি পুলিশ হয়। তাহলে আমার বারোটা বাজাইয়াই ছাড়বে। মেয়ে তো আমার ঘর পর্যন্ত চিনে। আল্লাহ আমাকে বাচাও।
কিছুক্ষন পর একটা পুলিশ এসে আকাশ বেড় করল। তারপর একটা রুমে নিয়া গেল। সেখানে দুটো চেয়ার ও একটা টেবিল রয়েছে। আমি ভয়ে ঘামছি। শুনেছি এসব মামলায় নাকি অনেক কড়া শাস্তি হয়। না জানি আমার কপালে কি আছে।
পুলিশঃ এখানে বস ম্যাডাম আসছে।
আকাশঃ জ্বী ( ভয়ে ভয়ে)
বসলাম চেয়ারে। বসে আছি।
কিছুক্ষন পর একজন ভিতরে আসল। আকাশ দেখেই সোজা দাঁড়িয়ে গেলাম। এ আর কেউ নয় সেই মেয়েটি। বুকের ব্যাচের দিকে তাকাইল নাম সামিয়া। তার মানে আমাকে আসল নামই বলেছিল।
আকাশঃ আ আ আপনি
সামিয়াঃ হ্যা আমি এই থানার নতুন ওসি। বসুন বসুন
সামনে পানি ছিল। ভয়ে পুরো গ্লাসের পানি খেয়ে ফেলল আকাশ।
সামিয়াঃ আরে এত ঘামছেন কেন বসুন বসুন। আমি
আকাশ বসল।
এখন তার কাছে পুরো বিষয় টা ক্লিয়ার। এ মেয়ে আমাকে ফাঁসিয়েছে। আমাকে ফাঁসিয়ে আমাদের ব্যবসার জায়গা চিনেছে।
সামিয়াঃ তো কি খাবেন চা না কফি?
আকাশ তো অভাক শুনেছি থানায় আসলে পুলিশের মাইর ছাড়া কথা নাই। আর ইনি আমাকে জিগাসা করছে কি খাব।
সামিয়াঃ আরে বলুন ভয় পাচ্ছেন কেন? কই কাল থেকে আজ সারাদিন পর্যন্ত একবার ও তো দেখিনি আপনাকে ভয় পেতে
আকাশঃ আমি ভয় পাচ্ছিনা
সামিয়াঃ তাহলে ঘামছেন কেন?
আকাশঃ গরম লাগছে তাই
সামিয়াঃ ওহ আইচ্ছা। কিছুই যখন খাবেন না। তাহলে শুরু করি।
আকাশঃ…
সামিয়াঃ তো আপনার বাবা মা কোথায়??
আকাশঃ জানিনা
সামিয়াঃ জানিনা মানে কি?
আকাশঃ আমার বাবা মা কে আমি জানিনা।
সামিয়াঃ তার মানে..
আকাশঃ তার মানে আপনি যা ভেবেছেন তাই। আমার জন্মই পতিতালয়ে কে আমার বাবা কে আমার মা কিছুই জানিনা। আর এই সমাজে আমাদের মতো মানুষের কোনো জায়গা নেই। তাই নিজের পেট চালানোর জন্য আমাকে এই কাজ করতে হচ্ছে।( চোখ দিয়ে পানি বেড় হয়ে গেল)
সামিয়াঃ তার মানে আপনি জন্মের পর থেকেই
আকাশঃ হুম জন্মের পর থেকেই। ঐ যে রহমান চাচা ওনার কাছে ছিলাম। তারপরে ওনার সাথেই এভাবে এই কাজ করে দিন পাড় করেছি
সামিয়াঃ আচ্ছা আপনি আসুন আমার সাথে।
আকাশঃহুম
আকাশ সামিয়ার পিছু পিছু গেল। তারপর তাকে একটা আলাদা সেলে রাখা হলো।
আকাশ কি ভাবছিলাম কি হয়ে গেল। ভাবলাম মেয়েটিকে নিয়ে সংসার করব। এখন এই মেয়েই আমাকে শশুর বাড়ি নিয়ে এসে শাস্তির ব্যবস্থা করতেছে। কি করতে যে সেদিন এই মেয়েটির পাল্লায় পড়ছিলাম।
পরদিন সকালে,,,,
আকাশ ঘুমিয়ে আছে। একজন কন্সেটেবল এসে আকাশের ঘুম ভাঙাল।।
আকাশঃ ঘুম ভাঙালেন কেন
কন্সেটেবলঃ চল আমার সাথে
আকাশঃ কোথায়?
কন্সেটেবলঃ ঐ পতিতার বাচ্চা তুকে বলতে কোথায়? তুরে বলছি আসতে আমার পিছু পিছু আয়।
আকাশের রাগ উঠে গেল। কিন্তু কোনো রকমে নিজেকে সামলায়।
তারপর কন্সেটেবল এর পিছু পিছু গেল।
কিছুক্ষনের মধ্যেই একটা রুমে নিয়া আসল। দেখেই বুঝা যাচ্ছে ওসির রুম।
আকাশ দাঁড়িয়ে আছে। রুমে একেলা।
কিছুক্ষন পর সামিয়া রুমে প্রবেশ করে দেখতে পেল আকাশ দাঁড়িয়ে রয়েছে।
সামিয়াঃ দাঁড়িয়ে আছেন কেন বসুন
আকাশ পিছু ফিরে দেখে সামিয়া।
সামিয়া গিয়ে নিজের চেয়ারে বসে।
আকাশ বসে।
একটা খাতা বেড় করল সামিয়া।তারপর
সামিয়াঃ এখানে একটা সাইন করুন
আকাশঃ কি এইটা?? কিসের সাইন
সামিয়াঃ আহা করুন না।
আকাশঃ না করব না। আমি জানি আপনারা পুলিশ সমাজ অনেক খারাপ। একজন ভালো মানুষকেও মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেন।
সামিয়াঃ সেরকম কিছুই না। এটা আপনার ছাড়পত্র
আকাশঃ মানে?
সামিয়াঃ মানে হলো আমরা আপনাকে ছেড়ে দিচ্ছি
আকাশঃ কিহহহ সত্যি??
সামিয়াঃ হুম।
আকাশঃ তার মানে রহমা চাচা সহ বাকিরাও ছাড়া পাবে
সামিয়াঃ নাহ। ওনারা জগন্যতম অপরাধ করেছেন। ওনাদের শাস্তি দিয়েই ছাড়ব।
আকাশঃ তো আমিও করেছি
সামিয়াঃ হুম আপনি করেছেন তবে না বুঝে। কাল সারাদিন আপনার সাথে থাকার পর যা বুঝছি আপনার মধ্যে খারাপ কিছুই নেই। just একটু ভূল পথে আছেন। এ নিয়ে আমি উপর মহলের সবার সাথে কথা বলছি। তারপর আবাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি আপনাকে একটা সুযোগ দিব।
আকাশঃ বাহ্ একদিনেই এত কিছু
সামিয়াঃ হুম। এখন কি কথাই বলবেন নাকি সাইন ও করবেন??
আকাশঃ ইয়ে মানে আসলে আমি তো পড়ালেখা জানিনা। তাই সাইন করতেও পারিনা
সামিয়াঃ সমস্যা নেই। টিপ সই নিয়ে নিচ্ছি।
সব শেষে।
সামিয়াঃ এখান আপনি মুক্ত।
আকাশঃ আপনাকে যে কি বলে ধন্যবাদ দিব।
সামিয়াঃ ধন্যবাদ লাগবে না। এখন থেকে ভালো কাজ করবেন। সব ধরনের অন্যায় পথ থেকে নিজেকে বিরত রাখবেন।
আকাশঃ জ্বী
সামিয়াঃ ওকে। এখন আপনি আসুন
আকাশঃ ওকে।
আকাশ আস্তে আস্তে রুম থেকে বেড় হচ্ছে। বারবার পিছু ঘুরে সামিয়াকে দেখছে। আর কোনোদিন দেখতে পারব কিনা জানিনা। তবে মেয়ে তোমাকে আমার সারাজীবন মনে থাকবে।।
”
”
”
”
TO BE CONTINUE