চোখের আড়ালে পর্ব-১৪

0
660

#চোখের আড়ালে
#Maishara_jahan
Part………14

আরাব বার বার ডাকার সর্তেও তৃষা না শুনার কারনে আরাব পিছন থেকে তৃষাকে জরিয়ে ধরে তার মাথা তৃষার ঘারে রেখে শুয়ে পরে। তৃষা একটু চমকে গেলেও চুপচাপ শুয়ে আছে। আরাব তৃষার ঘার থেকে চুল গুলো সরিয়ে তার মাথাটা ভালো করে রাখে। তৃষা ঘুমের বান করে নড়তে চাইলেও আরাব শক্ত করে জরিয়ে ধরে রাখে।

দুজন কখন যে ঘুমিয়ে যায় বলতেও পারে না। বিকেলে আরাব ঘুম থেকে উঠে দেখে তৃষা রুমে নেয়। আরাব তাড়াতাড়ি রুম থেকে বের হয়ে তৃষাকে খুঁজতে থাকে। খুঁজতে গিয়ে দেখে তৃষা তার দাদুর সাথে বসে চা খাচ্ছে। দাদু আরাবের দিকে তাকিয়ে বলে_ এতো হয়রান হয়ে কাকে খুঁজছো? তৃষাকে?

আরাব তৃষার দিকে তাকিয়ে থাকে, তৃষা নিচের দিকে তাকিয়ে চা খাচ্ছে। দাদু একটু হেঁসে বলে _ চিন্তা করো না এখান থেকে সে পালাবে না। চা খাবে? বসো চা খাও, ভালো লাগবে।

আরাব তৃষার পাশে বসে, দাদু তাদের বাসার কাজের মেয়েকে চা দিতে বলে। আরাব চুপচাপ বসে আছে। তৃষা উঠে যেতে নেয়, দাদু তৃষাকে বসতে বলে। তৃষাও বসে পড়ে। দাদু বলে _ উঠিস না, কথা আছে তোদের সাথে।

তৃষা _ কি কথা দাদু?
দাদু_ দাঁড়া চা টা আসতে দে। আমরা দুজন চা খাচ্ছি। আরেজন খালি হাতে বসে আছে, এখাবে কথা বলে মজা পাবো না।

একটু পর চা আসে। আরাব চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে বলে _ কি বলবে দাদু?

দাদু দুজনের দিকে তাকিয়ে বলে _ দেখো তোমাদের মধ্যে কি হয়েছে সেটা আমি জানি না। বিয়ে হলে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে অনেক কথায় হয়। কিছু ভালোবাসার তো কিছু ঝগড়ার। ঝগড়া হলে সবাই ঝগড়াটাই মনে রাখে ভালোবাসার কথা গুলো ভুলে যায়। তোমরা এই যুগের ছেলে মেয়ে অনেক বেশি মর্ডান।

মানুষ যতোই মর্ডান হোক, সম্পর্ক তোহ মর্ডান হয় না। আরাব তোমাকে বলছি, রাগের উপর কন্ট্রোল করতে শিখো। রাগে কখনো অতিরিক্ত বলো না। যেটাতে একটা মেয়ের কষ্ট বা আত্ম সম্মানে লাগে। মেয়ে সব কিছু ছেড়ে তোমার কাছে এসেছে, কিসের জন্য? ভালোবাসা বা ভালো থাকার জন্য। তাই তাদের প্রাপ্ত সম্মান আর ভালোবাসা দেওয়ার চেষ্টা করবা। বেশি রাগ হলে রুম থেকে বেরিয়ে যাবা। রাগ কমলে আবার না হয় ফিরে আসবে।

আর তৃষা তোমাকে বলছি। স্ত্রীর কর্তব্য হলো স্বামীর ভালো মন্দ খেয়াল রাখা। যেটা তোমার স্বামী পছন্দ করে না, সেটা না করারা চেষ্টা করবা। একটা মেয়ে চাইলে অনেক কিছু করতে পারে।

একটা মেয়ে চাইলে সংসারটাকে সুন্দর ভাবে গুছিয়ে নিতে পারে। আবার সুন্দর সংসারটাকে ভেঙেও ফেলতে পারে। স্বামী একটু শাসন করলে বা বকা দিলে তুমি তার উপরে অভিমান করে থাকতে পারো।

কিন্তু না বলে পালিয়ে আসা কোন ধরনের পাগলামো। পালিয়ে তারাই আসে যারা ভিতু। সত্যের সামনা সামনি করতে ভয় পায়। আর আমার মনে হয় না তুমি ভিতু। আরাবের চোখে তোমার জন্য আমি অনেক ভালোবাসা দেখেছি।

সে তোমাকে ভালোবাসে বলেই এতো রাতেও তোমাকে খুঁজতে বেরিয়ে গেছে। তোমাদের মধ্যে কি হয়েছে আমি জানি না। আর জানতেও চাই না। এটা তোমাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। যাই হোক যা বলেছি দুজন মনে রাখবে। আর খেয়াল রাখবে এমন কিছু যেনো আর না হয়।

আরাব তৃষার দিকে তাকিয়ে বলে _ চিন্তা করো না দাদু, আমি আর এমন কিছু হতে দিবো না। অনেক ভালোবাসে রাখবো।

তৃষা চায়ের কাপটা রেখে বলে _ দাদু আমি আসি। সবাই ছাদে আছে আমিও যায়।
আরাবো উঠে বলে _ আমিও যাবো।

তৃষা বিরক্তি নিয়ে তাকিয়ে উপরে যেতে থাকে, আরাব ও তার পিছনে পিছনে যায়। রিমান ফারহান বিরক্তি নিয়ে বসে আছে আর আলো আশা পক পক করছে। মনে হচ্ছে না তাদের কথা রিমান ফারহানের কান দিয়ে ঢুকছে।

তৃষা ভিতরে ঢুকে বলে _ আলো আশা তোরা শুধু শুধু দুইজনকে বিরক্ত করছিস কেনো?

আশা_ কয় আপু না তো। আমরা কেনো বিরক্ত করবো । আমরা গল্প করছিলাম। রিমান জি আমরা কি আপনাদের বিরক্ত করছিলাম?

রিমা৷ অসহায় এর মতো তাকিয়ে আছে৷ আশা রিমানের দিকে তাকিয়ে বলে _ দেখেছো আপু, রিমান কিছু বলছে না । তার মানে আমাদের কথায় ওরা বিরক্ত হচ্ছিলো না।

রিমান মনে মনে বলে _ মুখের এক্সপ্রেশন ও বুঝে না।
ফারহান মোবাইলটা বের করে বলে _ আমি রিমিকে কল দিয়ে একটু কথা বলি, তোরা আড্ডা দে।
আলো ফারহানের সামনে দাঁড়িয়ে বলে _ রিমি কে ফারহান জি?
রিমান হেঁসে বলে _ হবু বউ
আলো_ কিহহহ আপনার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে।
ফারহান _ হ্যাঁ, কিছু দিন পরে আমাদের বিয়ে। সবাইকে দাওয়াত দিবো। আসতে হবে কিন্তু।

আলো _ ফারহান এতো তাড়াতাড়ি বিয়ে করে কি লাভ। ভালো করে দেখে শুনে বিয়ে করেন হতে পারে রিমি থেকে ভালো মেয়ে পেয়ে গেলেন।

ফারহান _ রিমি আমার জন্য পার্ফেট। ওর থেকে ভালো হলেও চলবে না ওর থেকে খারাপ ও চলবে না। ওকেই লাগবে আমার।

রিমান _ ও সাইড হিরো, সস্তা মুভির ডাইলগ না দিয়ে চলে যা।
আলো_ ফারহান জি আপনাকে একটা কথা বলি,কিছু মনে করবেন না। মেয়েটার নাম শুনে মনে হয় না বেশি একটা ভালো হবে। রিমি নামের কোনো অর্থ নেয়। তাই মনে হয় না বেশি সুবিধার।

রিমান দাঁড়িয়ে বলে _ রিমি অনেক ভালো মেয়ে। আর সে আমার এক মাত্র ছোট বোন।
আলো _ ওও, সরি।
ফারহান _ যা বলেছো সেটা বাদ দিলাম আর যেনো এমন কথা না শুনি। আর রিমি কেমন সেটা জানার জন্য তার নামের অর্থের প্রয়োজন নেয়। প্রয়োজন তাদের যারা তাকে চিনে না। আর রিমি নামটা দুনিয়ার সবচেয়ে কিউট নেম।

আলো মন খারাপ করে দাঁড়িয়ে থাকে ফারহান অন্য পাশে চলে যায়।
রিমিন ও যেতে নেয়, আশা হাত ধরে বলে _ জি আপনি কোথায় যান?
রিমান হেঁসে বলে _ আমিও একজনের সাথে কথা বলতে যায়৷
আরাব এসে বলে _ কিন্তু তোর তো গার্লফ্রেন্ড ও নেয়, তুই কার সাথে কথা বলবি?

রিমান চোখ ছোট ছোট করে রাগে আরাবের দিকে তাকিয়ে থাকে। আরাব হাসি দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকি। আশা রিমানের সামনে এসে বলে _ সত্যি আপনার কোনো গার্লফ্রেন্ড নেয়?

রিমান একটা হাসি দিয়ে বলে _ আমি একটু আসছি।

বলে একটু সাইডে গিয়ে মাহুয়াকে কল দেয়। মাহুয়া কল ধরেই আগে বলে _ কি হয়েছে হঠাৎ কল দিলেন? এমনিতে তোহ কল দেন না। আমিই দেয়।
_ হুম, কিন্তু এখন তুমি কল করা বন্ধ করে দিয়েছো বলেই আমি দিলাম। তাছাড়া সারা দিন তোমাকে দেখিনি।
_ দেখলেই বা কি? আমাকে তো দেখলেই আপনার মুড খারাপ হয়ে যায়। তাছাড়া এখন আর আপনাকে কল দিয়ে কি লাভ কিছু দিন পর আমি অন্য জনের হয়ে যাবো।

রিমান একটু চুপ থেকে বলে _ হুম।
মাহুয়া তুচ্ছ হাসি দিয়ে বলে _ শুধু হুম? ভেবেছিলাম আরো কিছু বলবে যাই হোক।
তখনি আশা এসে বলে _ রিমান জি কলে পরে কথা বলা যাবে এখন তাড়াতাড়ি আসেন।
রিমান _ তুমি যাও আমি আসছি।
মাহুয়া _ কে মেয়েটা? হিন্দিতে কথা বলছে।
_ জানোই তো আমরা এখন ইন্ডিয়াতে।
_ আমি কিভাবে যানবো?
_ আমি কেনো ইন্ডিয়াতে এটা রিমি তোমাকে বলেনি এটা হতেই পারে না।
_ হুম বলেছে, ঘুরতে গিয়েছেন।
_ হুমম ঠিক, তৃষা ভাবীর দাদু বাড়ি এসেছি ঘুরতে। ঐ মেয়েটা আশা, তৃষার বোন।
_ এতো কিছু জিজ্ঞেস করিনি।

আশা আবার রিমান জি বলে ডাক দেয়। মাহএয়া শুনে বলে _ রিমান জি আপনাকে ডাকছে। যান আর না হলে মরে যাবে । সামনে আমার বিয়ে আর আপনি ঘুরছেন। আর কিই বা আশা করা যায় আপনার থেকে।

বলে ফোন কেটে দেয় মাহুয়া। আশা আবারো রিমান জি বলে ডাক দেয়। রিমান রাগে আস্তে বলে _ রিমান জি এর বাচ্চা।
রিমান রাগে জোর করে মুখে হাসি দিয়ে সবার সাথে বসে। আলোও মন খারাপ করে বসে আছে।

ফারহান ছাদের কোনায় দাঁড়িয়ে রিমির সাথে ফোন এ কথা বলছে।
_ সারা দিন আমাকে ছাড়া কেমন কাটলো জানেমান?
_ অনেক অনেক ভালো কেটেছে। আর জানেমান কেনো ডাকছেন হুম?

_ তুমি আমার জান তাই জানেমান ডাকছি।
_ আমি আপনার জান কবে হলাম?
_ অনেক আগে থেকে।
_ আচ্ছা, আমরা তো সারা দিন ঝগড়া করতাম।ভালোবাসা তো দেখলাম না৷
_ দেখবে কি করে চোখের আড়ালে যে ভালোবেসেছি।
_ হুহহ বুঝেছি। ফোন রাখেন এখন আমার কাজ আছে।
_ তোর আবার কিসের কাজ?
_ আছে আছে, অনেক কাজি আছে। আপনি কল তো রাখেন।
_ শোন রিমি আমি অন্য জায়গায় আছি তো কি হয়েছে। তুই কোনো উল্টা পাল্টা কাজ করলে কিন্তু খবর আমি ঠিকি পাবো।
_ উল্টা পাল্টা কাজ মানে?
_ মানে ছেলেদের সাথে ঘুরা ঘুরি করা, পার্টি করা। এই সব।
_ এসব আমি কোনো দিন করেছি যে আজ করবো আজব।
_ তাহলে কি করবি?
_ অফফ, ঘুম পেয়েছে ঘুমাবো।
_ তো এটা বললে কি হতো? আর ঘুমানো কবে থেকে কাজ হয়ে গেলো?
_ শুনেন কাল রাগে আমি টেনশনে ঘুমাতে পারিনি। সকালে উঠে ভার্সিটিতে যেতে হয়েছে, তাই প্রচুর ঘুম পেয়েছে।
_ ওকে এখন ছেড়ে দিচ্ছি তবে স্বপ্নে এসে তোমাকে বিরক্ত করবো৷
_ আমার স্বপ্নের রাজ্যে আপনার জন্য তালা মারা হয়েছে, ঢুকা নিষেধ।
_ আমি তালা ভেঙে ঢোকার লোক।
_ দেখা যাবে, এখন আমি ঘুমাই?
_ ঠিক আছে ঘুমাও আর স্বপ্নে আমাকে ছাড়া অন্য কাওকে দেখলে কিন্তু খবর আছে। বাই উম্মাহহহ

বলে কেটে দেয়। রিমি সক খেয়ে বসে আছে। ফারহান সেখানে গিয়ে সবার সাথে বসে। রিমান মন খারাপ করে বলে _ কিরে যাবি না বাংলাদেশে এ?
আরাব _ মনে হয় না দাদু আজকে যেতে দিবে। কালকে সকালে বেরিয়ে যাবো।
ফারহান _ দুররর কালকে সকালে। তার মানে এতো ক্ষন এখাবেই থাকতে হবে। পুরো একটা বিকেল, পুরো একটা রাত, তার মধ্যে যেতে যেতে পুরো একটা সকাল ও শেষ।

তৃষা _ আপনি যেভাবে বলছেন মনে হয় পুরো একটা যুগ চলে যাবে।
রিমান ফারহানের মাথায় মেরে বলে _ দূর বেটা, আমি এমনি টেনশনে ছিলাম তোর কথা শুনে ডিপ্রেশনে চলে গেলাম।

আরাব _ ফারহানেরটা না হয় বাদ দিলাম তুই কেনো ডিপ্রেশনে এ যাচ্ছিস?
আশা _ হ্যাঁ আপনার তো কোনো গার্লফ্রেন্ড ও নেয়।

রিমান আশার দিকে তাকিয়ে বলে _ গার্লফ্রেন্ড নেয় তার মানে এটা না যে আমি কাওকে পছন্দ করতে পারি না। আর ফারহানের বিয়ে ঠিক হয়েছে। বিয়ে হয়ে গেছে না। তাহলে ওরটা বাদ দিবি কেনো।

আশা মুচকি হেঁসে বলে _ কাকে পছন্দ করেন?
রিমান বিরক্তি নিয়ে আস্তে করে বলে _ এতো কিছু বললাম সে শুধু পছন্দের কথাটাই শুনেছে।
আশা আবারো বলে _ কিছু বললেন না যে?
রিমান _ আছে আমাদের ভার্সিটির একটি মেয়ে।

আরাব _ কে সে?
ফারহান _ দেখতে কেমন? আমার মনে হয় আমি জানি মেয়েটা কে।
রিমান _ কচু জানো।
আশা মন খারাপ করে বলে _ আপনি সত্যি বলছেন?
রিমান _ মিথ্যা কেনো বলবো আমি? এটাতে আমার কি লাভ?
ফারহান _ আমি জানি কি লাভ।
রিমান _ বেশি কথা বলো না৷ কারন বিয়েটা আমার বোনের সাথেই হচ্ছে। আর রিমির মনের খবর কিন্তু এখনো কেও জানে না। সো

ফারহান রিমানের কাঁধে হাত দিয়ে হেঁসে বলে _ আমি তো মজা করছিলাম। কিসের লাভ কিসের লস। চল আমরা দুজন রুমে গিয়ে গেইম খেলি তাহলে সময়টা তাড়াতাড়ি যাবে।
রিমান _ আইডিয়াটা খারাপ না।

ফারহান আর রিমান চলে যায়। আলো আশাও রাগ করে চলে যায়। তৃষা যেতে নেয় আরাব হাত ধরে বলে _ সরি ভুল হয়ে গেছে। জানি মাফ করার মতো ছোট ভুল আমি করিনি। তাও মাফ চাইছি পারলে ক্ষমা করে দাও।

_ কি মনে করেন এতো কষ্ট আমাকে দিয়েছেন আর ছোট করে মাফ চাইলেই মাফ করে দিবো?
_ আচ্ছা বলো, কি করলে মাফ করে দিবে? আমি সব করতে রাজি।

তৃষা আরাবের দিকে তাকিয়ে বলে _ সব করতে পারবেন?
_ হ্যাঁ সব করতে পারবো? বলো কি করতে হবে?
_ আমি কি জানি।

আরাব কান ধরে বসে বলে _ তুমি কোনো ভুল করতেই কান ধরে ফেলো। আমিও অনেক বড় ভুল করেছি তাই কান ধরেই বসে থাকবো আমি।

তৃষা আরাবের দিকে তাকিয়ে বলে _ মাফ তো আপনাকে করে দিবো। কারন ভুলটা আমার বাবা করেছে। শুধু এটা মানতে কষ্ট হচ্ছে যে, আপনি শুধু মাত্র প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য আমাকে বিয়ে করেছেন। ভালোবাসার বিন্দু মাত্র ছিলো না। তার মানে আমাদের কিছু ভালোবাসার মূহুর্ত গুলো সবি প্রতিশোধের প্রক্রিয়া ছিলো। নিজেকে ছোট মনে হচ্ছে।

আরাব আর কিছু বলার আগেই তৃষা চলে যায়। রাতে তৃষা তার বোনদের সাথে ঘুমায়। ফারহান আর রিমান ও শুয়ে থাকে। আরাব ও এসে যোগ দেয় সেখানে। সে এসে রিমান আর ফারহানের মাঝখানে শুয়ে পড়ে। শুয়ে উপরের দিকে তাকিয়ে আছে। রিমান আর ফারহান একবার আরাবের দিকে তাকাচ্ছে তো একবার উপরের দিকে।

রিমান উপরের দিকে তাকিয়ে বলে _ এটা একটা সাদা রং করা ছাদ, আকাশ না যে এভাবে তাকিয়ে আছিস৷
ফারহান _ এতো রাতে তোর রুম ছেড়ে আমাদের রুম এ কেনো?
রিমান _ হেহ ভাবী মনে হয় বের করে দিছে। না যেনে এমন কাজ করলে তো এমনি হবে।

আরাব রিমানের দিকে তাকায়। রিমান মনে মনে খাট থেকে লাফ দিবে বলে পরিকল্পনা করে ফেলে। তখন আবার আরাব উপরের দিকে তাকিয়ে বলে _ তৃষা আমাকে বের করে দেয় নি।

ফারহান _ তাহলে তুই এখানে কেনো? সব ভুল বুঝা বুঝি তো শেষ। আবার কি হলো?

রিমান _ মনে হয় কোনো ফিজিক্যাল প্রবলেম আছে তাই কাছে যেতে ভয় পাচ্ছে। বা কিছু পারে না।

আরাব আবার রিমানের দিকে তাকায়। রিমান এবার রুম ছেড়ে পালাবে বলে মনে মনে পরিকল্পনা করে। আরাব আবারো উপরের দিকে তাকিয়ে বলে _ সে মনে করে আমি তাকে ভালোবাসি না। আর সবি প্রতিশোধ ছিলো, তাই রাগ করে আছে।

রিমান _ তোহ ঠিকি তো বলেছে। প্রতিশোধি তো নিয়েছিলি। এবার আমার দিকে তাকালে আমি কিন্তু লাথি দিয়ে ফেলে দিবো। ঠিক কথা বলেছি এবার।

আরাব উপরের দিকে তাকিয়ে বলে _ কিন্তু ভালোও তো বেসেছি। রাগের কারনে ভালোবাসা দেখাতে পারিনি কিন্তু ভালো তো অনেক ভাসি আমি ওকে।

ফারহান_ তো এখানে কেনো এসেছিস? যা তৃষাকে গিয়ে বল, ওকে মানা।
রিমান _ আরে বললাম না, ও কিছু পারে না তাই ভয় পাচ্ছে।

এবার আরাব শুয়ে তাকে জায়গা মতে একটা গুষি দেয়। রিমান চিৎকার করে উঠে বলে _ আমার বউ পর ভবিষ্যত শেষ। হারামি আমার বংশ চলবো কিভাবে এখন। আমার মা বাবা আর তার নাতি পুতির মুখ দেখতে পারবো না। আআআআ আম্মাআআ

ফারহান _ সেট আপ , এতোও জোরে দেয় নায়। তুই যখন দেস তখন মানুষের জীবন বের করে ফেলিস৷ চুপচাপ শুয়ে পর।
রিমান শুয়ে বলে _ তোকে দিলে বুঝতি।
আরাব উপরের দিকে তাকিয়ে বলে _ তৃষা তর বোনদের সাথে ঘুমাতে গেছে।

রিমান _ আহারে।
আরাব _ আমার কেমন কেমন জানি লাগছে। কেমন জানি ফিল হচ্ছে।

রিমান উঠে একটু সরে গিয়ে বলে _ খবরদার কিছু করার চেষ্টা করবি না। আমার ইজ্জতে হাত দিবি না বলে দিলাম। এমন সময় তোর হুশ নাও থাকতে পারে।

এটা শুনে ফারহান ও উঠে একটু সরে আরাবের দিকে তাকিয়ে আছে। আরাব দুজনের দিকে তাকিয়ে বলে _ আমি কষ্ট ফিল হওয়ার কথা বলছিলাম। কষ্ট আর গিলটি ফিল হচ্ছে।

ফারহান শুয়ে বলে_ তো সরাসরি বল আজব।

রিমান শুয়ে আবার একটু মাথাটা উঠিয়ে আরাবের দিকে তাকিয়ে বলে _ সত্যি তোর অন্য কিছু ফিল হচ্ছে না তো?

এটা শুনে ফারহান আবার উঠে যায়। আরাব রিমানের দিকে তাকিয়ে একটা লাথি দিয়ে রিমানকে খাট থেকে ফেলে দিয়ে বলে _ আমি আছি আমার দুঃখে তোদের রং শেষ হয় না। চুপচাপ শুয়ে ঘুবামি। মুখ দিয়ে কোনো শব্দ বের হলে রুম থেকে বের করে দিবো, বলে দিলাম।
এটা বলে আরাব ফারহানের দিকে তাকায়। ফারহান চুপচাপ শুয়ে পড়ে।

চলবে _____

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে