চিলেকোঠার ভাঙ্গা ঘর পর্ব-০২

0
707

#চিলেকোঠার_ভাঙ্গা_ঘর
#ফিজা_সিদ্দিকী
#পর্ব_২(বউয়ের রাগ না ভাঙ্গাতে পারলে কিসের পুরুষ মানুষ!)

“হেই মিস হাওয়াই মিঠাই, আপনার পাশে বসলে গলে যাবেন না তো!”

লোকাল বাসের জনসমাগমের মাঝে হুট করেই কিঞ্চিৎ পরিচিত কণ্ঠস্বর শুনে চমকে ওঠে শ্রেষ্ঠা। সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটাকে দেখে সাথে সাথেই বিরক্তিতে চ সূচক শব্দ উচ্চারণ করে। অতঃপর নিঃশব্দে চোখ রাখে জানালা হতে বাইরে। কিছুক্ষন পর পাশে কারোর উপস্থিতি টের পেয়েও আগের মতোই নিঃশব্দে সিটে হেলান দিয়ে চোখ বোঁজে শ্রেষ্ঠা। কানে ভেসে আসছে কন্ট্রাক্টরের তীক্ষ্ণ ঝাঁঝালো কণ্ঠস্বর, বাসের মধ্যে মানুষজনের চেঁচামেচির শব্দ। তবুও শান্ত ভঙ্গিতে নিরব হয়ে বসে আছে সে। আচমকা কিছু একটা অনুভব হতেই চকিতে চোখ খুলে পাশে তাকায় শ্রেষ্ঠা। অচেনা এক মুখের আদল। দম বন্ধ হয়ে আসার উপক্রম। পাশে বসা চল্লিশোর্ধ বয়সের পুরুষ মানুষটা ক্রমাগত নোংরাভাবে স্পর্শ করার চেষ্টা করছে তাকে। রুদ্ধশ্বাসে আশেপাশে তাকিয়ে তীক্ষ্ণ কণ্ঠে কিছু বলার চেষ্টা করে। তৎক্ষনাৎ পাশে বসে থাকা মানুষটা হাতের কনুই হতে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে কুটিল হেসে মিহি কণ্ঠে বলে ওঠে,

“লাভ নেই। গলা থেকে আওয়াজ বের হলে ক্ষতিটা তোমারই হবে। তুমি একা আর আমরা চারজন। বাড়িতে ফেরার মতো অবস্থায় থাকবে কিনা সন্দেহ।”

ঘৃণায় শরীর রি রি করে ওঠে শ্রেষ্ঠার। ব্যথায় চোখ থেকে পানি আসার উপক্রম। না পারছে কাউকে কিছু বলতে আর না পারছে সহ্য করতে। দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য করতে চেয়েও অস্ফুটস্বরে মুখ থেকে বের হয়ে যায় ব্যাথাতুর শব্দ। টলমলে চোখে অন্যপাশে তাকিয়ে যতটা সম্ভব নিজেকে রক্ষা করার আপ্রাণ চেষ্টা চালায় সে। কিন্তু ফলাফল শুন্য। বলিষ্ঠ দেহের একজন পুরুষ মানুষের শক্তির সাথে পেরে ওঠা প্রায় অবসম্ভব এক ব্যাপার। তবুও মনের জোরে নীরব যুদ্ধ আর খানিক নিশ্চল ধস্তাধস্তি চলতে থাকে দুজনের মাঝে। হটাৎ পিছনে চোখ ঘোরাতেই শ্রেষ্ঠার চোখাচোখি হয় আরাধ্যর সাথে। তার থেকে খানিকটা দূরে বাসের লম্বা লোহার দন্ড ধরে ঝুলে দাঁড়িয়ে আছে। চোখাচোখি হতেই করুন চোখে তাকায় শ্রেষ্ঠা। শ্রেষ্ঠার করুণ চাহনী দেখে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায় আরাধ্য। যেনো বাঘিনীর হুট করে ভেজা বিড়াল হয়ে ওঠার মতো দৃশ্য। সন্ধিহান চোখে আরাধ্য একপলক তাকায় পাশে বসে থাকা লোকটার দিকে। অতঃপর এগিয়ে এসে মুখোমুখি দাঁড়ায় দুজনের। আরাধ্যকে সামনে এসে দাঁড়াতে দেখে মনে মনে ভরসা পায় শ্রেষ্ঠা। কণ্ঠে খানিকটা মাধুরী মিশিয়ে বলে ওঠে,

“এখানে এসে বসুন প্লিজ!”

“তুমি না একটু আগে বসতে না করলে!”

“কখন না করলাম?”

“হ্যা ও তো বলোনি!”

“এখন বলছি তো।”

শ্রেষ্ঠার করুন চোখের দিকে তাকিয়ে ঘটনাটা আগেই খানিকটা আন্দাজ করে ফেলেছিলো আরাধ্য। এতক্ষন শ্রেষ্ঠার সাথে কথা বলার মাঝে লোকটার গতিবিধি খেয়াল করতেই ব্যাপারটা পুরোপুরি স্পষ্ট হলো তার কাছে। অতিরিক্ত রাগে হাত মুষ্ঠিবদ্ধ করে ফেলে আরাধ্য।

“লোকটা আমাকে বাজেভাবে টাচ করছে বারবার। আমি কিছু বলতে চাইলে তাদের পুরো গ্যাং নিয়ে আমাকে রেপ করার হুমকি দিয়েছে। প্লীজ কিছু একটা করুন। ঝামেলা না করে ওনাকে এখান থেকে উঠিয়ে আপনি এসে বসুন, প্লীইইইজ।”

শ্রেষ্ঠার পাঠানো মেসেজ দেখে রাগে শরীর পুড়ে যাওয়ার মতো অবস্থা আরাধ্যর। ঘৃণায় ধিৎকার দিতে ইচ্ছে করছে লোকটাকে। চোখ গরম করে বেশ কিছুটা সময় তাকিয়ে থাকে লোকটার দিকে। কিন্ত তার সেদিকে কোনো হেলদোল নেই। সে অন্যদিকে তাকিয়ে নিজের মতো কাজে ব্যস্ত। নিজেকে যথাসম্ভব শান্ত রাখার চেষ্টা করে আরাধ্য বিনয়ী ভঙ্গিতে বলে ওঠে,

“চাচা, একটু উঠুন তো। আমি বসবো।”

“আজব তো! আমি কেনো উঠবো? অন্য জায়গায় গিয়ে বসো, যাও।”

“আরে চাচা, বুঝছেন না কেনো বউ রাগ করেছে। বউয়ের রাগ না ভাঙ্গাতে পারলে আমি কিসের পুরুষ মানুষ বলুন! আপনিও নিশ্চয়ই একজন সঠিক পুরুষ! কোনো গন্ডগোল নেই। তাই আমি জানি আপনি আমার ব্যাপারটা বুঝবেন।”

আরাধ্যর মশকরা ধাঁচের কথা শুনে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায় লোকটা। কথার জালে এমনভাবে ফাঁসিয়ে দিয়েছে যে না উঠে উপায় নেই। নয়তো পুরুষত্বে খুঁত ধরবে। অগত্যা অনিচ্ছা সত্ত্বেও চোখ মুখ কুঁচকে উঠে দাঁড়ায় সে।

“ধন্যবাদ চাচা। আপনার যে পুরুষত্বে কোনো সমস্যা নেই এটা বুঝে গেছি। চাচী জোস একটা মানুষ পেয়েছে। একেবারে ধোয়া তুলসিপাতা।”

প্রতিউত্তরে ক্যাবলাকান্তের মতো হাসে লোকটা। আরাধ্যর মন চাইছে এক ধাক্কায় চলন্ত বাস থেকে ফেলে দিতে তাকে। কিন্তু শুধুমাত্র শ্রেষ্ঠার নিরাপত্তার জন্য অনেককিছু করতে চেয়েও করতে পারছেনা সে।

লোকটা উঠে যেতেই শ্রেষ্ঠার পাশে আয়েশ করে বসে আরাধ্য। অতঃপর ডানহাত দিয়ে ঘাড় ম্যাসাজ করতে করতে ফিচেল কণ্ঠে বলে ওঠে,

“আমাকে বিশ্বাস করছো তবে! যদি খারাপ কিছু করে বসি!”

“গলা চেপে মেরে দেবো।”

“বাহ! আমার বেলায় শুধু এই নিয়ম। অথচ ওই লোকটাকে ঠিকই যেতে দিলে।”

“এক মিনিট, আপনি ওই লোকটার সামনে কি বললেন! বউ! মিথ্যে কেনো বললেন?”

“তবে সত্যিটা বলে দিতে বলছো! আচ্ছা দাড়াও বলে আসি।”

“এই না না, থাক কিছু বলতে হবেনা।”

” তার মানে নিজেকে আমার মতো হ্যান্ডসাম ছেলের বউ হিসেবে মেনে নিচ্ছ!”

আরাধ্যর কথার প্রেক্ষিতে মুখ ভেংচি কেটে খানিকটা ভাব নিয়ে শ্রেষ্ঠা বলে ওঠে,

“হ্যান্ডসাম না ছাই।”

“আমার নম্বর কিভাবে পেলে?”

নিরলস ভঙ্গিতে জানালায় মুখ ঠেকায় শ্রেষ্ঠা। অতঃপর স্পষ্ট কণ্ঠে বলে, “অনেক আগে থেকেই আমার কাছে ছিলো। আপনার সাথে পরিচিত হওয়ার জন্য দেওয়া হয়েছিলো। কিন্তু কখনও আগ্রহ কিংবা প্রয়োজনবোধ করিনি, তাই ইউজ করা হয়নি।”

৩.

ডাইভিং সিটের পাশে কপাল একহাত ঠেকিয়ে বসে আছে আরাধ্য। ড্রাইভ করছে নির্ঝর। কর্মসূত্রে আরাধ্যর সেক্রেটারি হলেও দুজনের মাঝে সম্পর্ক বেশ বন্ধুত্বপূর্ন। নির্ঝরের বাবা খাঁন ইন্ডাস্ট্রির একজন সাধারণ এবং সবচেয়ে বিশ্বস্ত কর্মচারী ছিলেন। সেই সূত্রে ছোটো থেকেই দুজনের একসাথে খেলাধূলা ও বড়ো হয়ে ওঠা। একসাথে কলেজ কমপ্লিট করে আরাধ্যকে এম.বি.এ কমপ্লিট করার জন্য জোর করে বিদেশে পাঠান আনিসুল খাঁন। বাবার পীড়াপীড়িতে একপ্রকার বাধ্য হয়েই বিদেশে যায় আরাধ্য। আর নির্ঝর ইন্ডিয়া থেকেই নিজের পড়াশোনা শেষ করে খাঁন ইন্ডাস্ট্রিতে জয়েন করে।

বিজনেস সম্পর্কিত কিছু আলোচনা করতে করতে নির্ঝর আর আরাধ্য একটা কিন্ডার গার্ডেন স্কুলে যাচ্ছিলো। আচমকা চার পাঁচ বছরের একটা বাচ্চা মেয়ে দৌড়ে রাস্তা পার হতে গিয়ে তাদের গাড়ির সামনে এসে পড়ে। দ্রুতবেগে ব্রেক কষে নির্ঝর। ঘটনাটা এতো দ্রুত ঘটে যে কিছু বুঝে ওঠার আগে আরাধ্যর মাথা ঠুকে যায় ডেস্কের সাথে। নির্ঝরের নিম্ন গতিতে ড্রাইভ সম্পর্কে অগবত হাওয়ায়, স্বভাবতই সিটবেল্ট না লাগিয়েই বসেছিলো আরাধ্য। তাই আচমকা ব্রেক কষার ফলে নিজেকে সামলানোর সুযোগ পায়নি সে। ফলস্বরূপ কপালের বামপাশে খানিকটা চোট পায়।

বাচ্চা মেয়েটাকে রাস্তায় বসে কান্না করতে দেখে দুজনে দৌড়ে যায় তার কাছে। খুব বেশি না লাগলেও হাতের কিছুটা অংশ আর পায়ের হাঁটুতে খানিকটা ছিলে গেছে। পড়ে গিয়ে সেই অবস্থায় বসেই কান্না করছে মেয়েটা। মেয়েটার মুখের আদল কি মায়াবী। খুব যেনো চেনা চেনা লাগছে আরাধ্যর কাছে। কারোর সাথে যেনো ভীষণ মিল এই মুখের। যাকে সে চেনে, খুব ভালো করেই চেনে। মস্তিষ্কে খানিকটা চাপ দিয়ে চিন্তা করার চেষ্টা করলো আরাধ্য। তবুও মেয়েটাকে এতো কেনো চেনা চেনা লাগে সে বুঝে উঠতে পারছে না।

“একটা সুইট কিউট মেয়ে বসে বসে কান্না করছে, আর তুমি চুপ করে দেখছো! খুব পতা আঙ্কেল তো তুমি!”

বাচ্চাটার কথা শুনে ধ্যানভঙ্গ হয় আরাধ্যর। মুখে দুঃখী দুঃখী ভাব এনে বলে ওঠে,

“এভাবে কেউ রাস্তা দিয়ে দৌড়ায়? তোমার জন্য তো আঙ্কেলও ব্যথা পেয়েছে মামনি! এইযে দেখো!”

“তুমি বেশি ব্যথা পেয়েছো নাকি আমি? দেখো এখানে ব্যাথা পেয়েছি, এখানে ব্যথা পেয়েছি, এখানেও লেগেছে। সব জায়গায় ব্যথা পেয়েছি।”

কান্না করতে করতে নাক টেনে টেনে বলা বাচ্চাটার কথায় না হেসে পারলো না নির্ঝর। মিটি মিটি হাসছে আরাধ্যও। তবে তা প্রকাশ করলো না। এইটুকু একটা বাচ্চা মেয়ে কথার দিক থেকে বেশ পাকাপোক্ত বটে। তবে বাচ্চাদের পাকা পাকা কথাগুলো বেশ লাগে।

গাড়ি পার্ক করা আছে স্কুলের মাঠে। ব্যাকসিটে বসে শ্রেয়ার ব্যথা পাওয়া যায়গাগুলো তুলো দিয়ে পরিষ্কার করছে আরাধ্য। খানিকটা সময়ের পরিচয়ে বেশ অনেকটা কথা হয়েছে দুজনের। সেই প্রেক্ষিতেই আরাধ্য জেনেছে মেয়েটার নাম শ্রেয়া। তুলো দিয়ে খুব সাবধানে যত্ন সহকারে শ্রেয়ার ব্যাথাতুর অংশগুলো পরিষ্কার করে অয়েন্টমেন্ট লাগিয়ে দেয় আরাধ্য। কান্না করতে করতে চোখ,নাক, মুখ লাল হয়ে ফুলে গেছে শ্রেয়ার। এখন আরো বেশি মায়া মায়া লাগছে তার। আরাধ্য বাচ্চাদের সান্নিধ্য বেশ উপভোগ করে। এজন্য অল্প সময়েই বেশ ভাব জমে যায় শ্রেয়ার সাথে।

“আমিও তোমাকে ওষুধ লাগিয়ে দিই আংকেল?”

“নাহ মামনি, আমি পরে লাগিয়ে নেবো।”

“পরে কেনো লাগাবে? আমি না তোমাকে ব্যথা দিয়েছি! তাই আমিই ওষুধ লাগিয়ে দেবো। নাহলে এখানেই বসে থাকবো আমি, কোথাও যাবনা।”

শ্রেয়ার মিষ্টি আবদারে সম্মতি না দিয়ে পারেনা আরাধ্য। অতঃপর শ্রেয়া তার ছোটো ছোটো হাত দিয়ে আস্তে আস্তে রক্ত মুছে ওষুধ লাগিয়ে দেয় আরাধ্যর কপালে। এরপর ছোটো একটা ওয়ান টাইম ব্যান্ডেড লাগিয়ে দেয় সেখানে। ইতিমধ্যে নির্ঝর এসে দাঁড়ায় গাড়ির কাছে। শ্রেয়ার সান্নিধ্য আরাধ্য বেশ উপভোগ করছে, তা আর বুঝতে বাকি নেই নির্ঝরের। তার ঠোঁটের কোণে ফুটে ওঠে তৃপ্তির হাসি। মেয়েটা আসলেই ভীষণ আদুরে। নাহলে এতো অল্প সময়ে আরাধ্যর মতো মানুষের মনে জায়গা করে ফেলতে পারতো না। বেশ কিছুটা সময় নিঃশব্দে বাইরে দাঁড়িয়ে আরাধ্য আর শ্রেয়াকে একান্তে খানিকটা সময় উপভোগ করতে দেয় নির্ঝর। অতঃপর হাতের জিনিসগুলো নিয়ে এগিয়ে যায় গাড়ির দিকে।

“এইযে পুচকে, নাও তোমার আচার। কতো খুঁজে খুঁজে নিয়ে এলাম।”

নির্ঝরের কথায় চোখ ঘুরিয়ে তাকায় শ্রেয়া। অতঃপর ছোঁ মেরে আচারের প্যাকেট নিয়ে তেজী কণ্ঠে নাক ফুলিয়ে বলে ওঠে,

“একদম পুচকে বলবে না আমাকে। নাহলে এই যে সুন্দর সুন্দর দাঁত দেখছো না! এগুলো দিয়ে কুটুস করে কামড়ে নেবো।”

কথাটুকু বলে গাড়ি থেকে নেমে দৌড়ে ক্লাসের দিকে চলে যায় শ্রেয়া। পথিমধ্যে একবার পিছন ঘুরে তাকিয়ে হাত নাড়িয়ে টাটা দেয় আরাধ্যকে। শ্রেয়া চলে যেতেই হো হো করে হেঁসে ওঠে আরাধ্য। নির্ঝর চোখ ছোটো ছোটো করে তাকায় তার দিকে। যার অর্থ এতো হাসার মতো কী এমন হলো! মূলত আচার বিক্রেতা এক লোককে দেখেই রাস্তার ওপারে দৌড়ে যাচ্ছিলো শ্রেয়া। ফলে অসাবধানবসত সেইসময় আরাধ্যর গাড়ির সামনে এসে পড়ে সে। ভাবনার মাঝে স্কুল গেট দিয়ে কাউকে ঢুকতে দেখে ভ্রু কুঁচকে তাকায় আরাধ্য। মানুষটাকে এখানে দেখে বেশ খানিকটা সন্দিহান চোখে তার গতিবিধি লক্ষ্য করে সে।

#চলবে!

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে