গল্প:- বাল্য কালের বউ সিজন ২  পর্ব:– (১০)শেষ পার্ট

1
1988

গল্প:- বাল্য কালের বউ সিজন ২  পর্ব:– (১০)শেষ পার্ট

লিখা:- Shohrab AL Islam


বিয়ে না করে বাসর করতে হবে? ঠিক আছে আসো বাসরটা তাহলে আগেই সেরে নেই। তখনি নিশি আমার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে। মনে হচ্ছে এখুনি গিলে ফেলবে।

নিশি:- এই তুমি আমাকে রেখে ওর সাথে বাসর করবে মানে? তুমি কি সত্যি ওকে বিয়ে করেছো নাকী?

আমি:- আরে না ওকে বিয়ে করতে যাবো কেন? আর আমার কি মাথা খারাপ ওর সাথে বাসর করবো?

আব্বু:- দ্বাড়া এখুনি আমি প্রমান আনতেছি।

আমি:- কিসের প্রমান?

প্রিয়া:- আমাদের বিয়ের কাবিন। তোমার সাথে আমার বিয়ে হয়ছে সেই কাবিন আনতে গেছে আঙ্কেল।

আমি:- কবে বিয়ে হয়ছে আর আমার তো মনে হচ্ছেনা কখনো তোমাকে বিয়ে করেছি। আম্মু কি হচ্ছে এসব তুমি কিছু বলছো না কেন? আমি শুধু নিশিকে বিয়ে করেছি। যদি বেশি কিছু জামেলা করো তাহলে এখুনি নিশিকে নিয়ে বেড়িয়ে যাবো।

আব্বু:- কোথাও যেতে হবে না এই দেখ তুই নিজে সাইন করেছিস বিয়ের কাবিন নামাই। কোথায় দেখি বলে কাবিনের কাগজ গুলা হাতে নিয়ে দেখি সত্যি সত্যি আমি সাইন করেছি।

আমি:- কিন্তু আমার সাইন এখানে এলো কি করে?

আব্বু:- তুই নিজের ইচ্ছাতে বিয়ে করেছিস আর এখন সব ভূলে গেছিস?

আমি:- মনে পড়েছে।

প্রিয়া:- সত্যি মনে পড়েছে বলে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরেছে।

আমি:- আরে ছারো কি মনে পড়েছে তোমাকে বিয়ে করেছি এইটা না। মসে পড়েছে আমাকে দিয়ে দলিলে সাইন করার নাম করে কাবিনে সাইন করিয়ে নিয়েছে। এই বিয়ে আমি মানিনা। দেখো প্রিয়া আমি নিশিকে ছোট বেলা থেকে বউ হিসাবে মেনে এসেছি।

প্রিয়া:- তোমাকে আমি চাই তা যেভাবে হোক। তুমি ওকে ডির্ভোস দিয়ে দাও।

নিশি:- কি আমাকে ডির্ভোস দিবে হি হি হি। না হেসে পারলাম না। দেখি সোহরাব কাবিনের কাগজের সাইন তুমি অসিকার আসবে তাহলে হবে। আর এর সাক্ষী কে তোমার সাথে এই মেয়েটার বিয়ে হয়ছে।

আম্মু:- আমার একটা কথা আছে?

আমি:- হ্যা আম্মু বলো?

আম্মু:- সোহরাব তুই প্রিয়াকে তোর জীবনে মেনে নে। কারন প্রিয়া তোর সব কিছু জেনে শুনে বিয়েতে রাজি হয়ছে।

আমি:- আম্মু তুমিও বলছো? কিন্তু নিশি তো আমাকে অনেক লাভ করে।

নিশি:- সোহরাব তুমি তোমার বাবা মার পছন্দ করা মেয়েটাকে মেনে নাও। আমি চলে যাই দরকার নেই আমার জন্য তোমার জীবনে এত কষ্ট করার।

আমি:- তোমাকে ছারা আমি কি করে থাকবো? প্লিজ নিশি তুমি আমাকে ছেরে যেওনা প্লিজ বলে নিশিকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিয়েছি। আমাদের দুজনের কান্না দেখে চাচা এসে আব্বুকে বলতেছে।

চাচা:- ভাইজান যা হবার হয়ে গেছে ওদেরকে আপনি মেনে নিন। আপনার তো একটা মাত্র ছেলে তাহলে ওর চাওয়া গুলা কেন মেনে নিবেন না?

আব্বু:- কি বলছিস তুই? তুই কি ভূলে গেছিস নিশির বাবা মার ব্যাবহারের কথা? আমাদের কত অপমান করছে ওনারা?

চাচা:- দেখেন অপমান তো আপনিও করছেন এখন ছেলেটার দিকে তাকাই দেখেন। আর নিশি তো কোন দোষ করেনি তাহলে কেন ওদেরকে কষ্ট দিব। দেখো প্রিয়া এই নাও তোমার অভিনয়ের টাকা এবার তুমি আসতে পারো।

আমি:- কি প্রিয়া তাহলে এত দিন অভিনয় করেছে?

চাচা:- হ্যা সোহরাব আমরা সবাই চাচ্ছিলাম তুই নিশিকে ভূলে যা। তাই তোর আব্বু আর আমি মিলে ওকে ভাড়া করে আনি। আর এই কাবিন নকল সব মিথ্যা।

আমি:- তাহলে চাচিমা আপনিও ওদের সাথে জড়িত ছিলেন?

চাচি:- না বাবা আমি কিছুই জানতাম না। আমাকে তো ভাবি একটা খাম আমাকে দিয়েছি আমি নিয়ে আসতেছি তখন তোমার চাচা আমাকে জড়িয়ে ধরে একটু রোমান্সের কথা বলতেই আমি থমকে যায়। এরপর কি হয়ছে আর জানিনা নিচে খামটা পড়ে ছিলো ঐটা এনে তোমাকে দেয়।

আম্মু:- তাহলে খামটা চেন্জ করে দিয়েছেন আপনি?

চাচা:- সরি ভাবি ভাইয়া আমাকে বলছে। আর আমিও চাচ্ছিলাম যাতে করে নিশির সাথে সোহরাবের দেখা না হয়। তবে এখন চাই সোহরাব আর নিশি এক সাথে থাকুক।

আব্বু:- ঠিক আছে তাহলে নিশির বাবা মা আমার কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।

আম্মু:- কেন ক্ষমা চাইবে? আপনি কি কম অপমান করছেন? যখন সব কিছু ভূলে নিশির বিয়ের কথা বলতে এসেছিলো তখন কি করছেন আপনি? ক্ষমা তো আপনার চাওয়া উচিত তখনি একজন বলে,,

না আপা আসলে ভূলটা আমারি ক্ষমা আমি চাইবো চেয়ে দেখি নিশির আম্মু আর আব্বু।

আমি:- আঙ্কেল কি বলছেন?

আঙ্কেল:- হ্যা ঠিকই বলছি আসলে আমাদের ভূল বুজাবুজির কারনে সব হয়ছে। ভাইজান আমি মনে করেছিলাম আপনারা মিথ্যা বলছেন পরে বুঝতে পারছি সত্যি কথা বলছিলেন। আসলে তখন যদি নিশিকে নিয়ে দূরে না যেতাম তাহলে এতটা জামেলা হতনা।

আব্বু:- না ভাইজান ক্ষমা চাইতে হবে না। আসলে আমরি ভূল তখনি আঙ্কেল গিয়ে আব্বুকে জড়িয়ে ধরেছে আর সবাই হাসা হাসি শুরু করেছে।

আমি:- প্রিয়া সরি তোমার সাথে অনেক খারাপ ব্যাবহার করেছি।

নিশি:- হ্যা প্রিয়া সরি আমাকেও ক্ষমা করে দিও।

প্রিয়া:- আরে না আসলে আমার কাজ অভিনয় করা। আঙ্কেল বলছে তাই টাকার বিনিময়ে অভিনয় করেছি। যদি ভূল কিছু বলি বা করে থাকি তাহলে ক্ষমা করে দিও। ভালো থেকো আর বেচে থাকুক তোমাদের ভালোবাসা। তাহলে আমাকে বিদায় দাও আমার যেতে হবে।

আমি:- ঠিক আছে! প্রিয়া সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেছে। তবেবে প্রিয়া মনে হয় আমাকে ভালোবেসে ফেলছে। কিন্তু কিছু করার নেই আমি নিশিকে ছারা বাজতে পারবো না। নিশি চলো তোমাকে আমাদের ছাদটা দেখিয়ে আনি।

নিশি:- তাহলে কোলে তুলে নিয়ে যেতে হবে?

আমি:- ঠিক আছে! সবার সামনে নিশিকে কোলে তুলে নিয়েছি সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে আমি দেখেও না দেখার বান করে নিশিকে নিয়ে ছাদে চলে এসেছি।

নিশি:- বাহ ছাদটা তো অনেক সুন্দর তখনি কত গুলা বেলি ফুল হাতে নিয়ে নিশির চুলে গেথে দিয়ে বলি।

আমি:- আমাকে সারা জীবন তোমার চুলে বেলি ফুল গেথে দেওয়ার অধিকার দিবে?

নিশি:- তা তো ছোট বেলা থেকে দিয়েছি আমাকে একটু আদর করে দাও তো?

আমি:- কোথায় করবো?

নিশি:- তোমার যেখানে ভালো লাগে বোকা কোথাকার গালে কপালে আর তখনি নিশিকে জড়িয়ে ধরে ওর কপালে আর নাকে কিস করে দিয়েছি। নিশির সাথে দুষ্টমিতে ভালোই চলছে আমাদের বাল্য কালের বিয়েটা। সত্যি অনেক ভালো আছি আমার বাল্য কালের বউকে নিয়ে।

গল্পটা কেমন হয়ছে সবাই জানাবেন। আগামী কাল থেকে বিয়ের বন্ধন সিজন ২ নিয়মিত দিবো ইনশাল্লাহ।

কোন ভূল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।

1 মন্তব্য

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে