গল্প:-দুলহানীয়া পর্ব:-(০১)
লেখা:-AL_Mohammad_Sourav
!!
আব্বার কি কোনো কাজ নেই? সারাক্ষন আমার জন্য পাত্রী খুঁজে যাচ্ছে! আম্মা আপনি তো জানেন আমি একটা মেয়েকে ভালোবাসি তাও আমার জন্য পাত্রী দেখতে যাচ্ছেন কেনো? আপনি আব্বাকে বলে দেন আমি এখন বিয়ে করতে পারবোনা!
বিয়ে করতে পারবি না কেনো? আর তুই যেই মেয়েকে ভালোবাসিষ সেই মেয়ে তো তোকে ভালোবাসেনা!
এখন ভালোবাসেনা তো কি হয়ছে পরে ভালোবাসবে! আপনি আব্বাকে বলে দেন এসব পাত্রী দেখা বন্ধ করতে। (তখনি আব্বা এসেছে)
আব্বা:- কে বিয়ে করবে না শুনি?
আম্মা:- আলিফ বলছে ও নাকী একটা মেয়েকে ভালোবাসে আর সেই মেয়েকে বিয়ে করতে চাই!
আব্বা:- ভালোবাসে মানে? এসব ফালতু জিনিসে বিশ্বাস করো নাকী? আলিফ শুন তুই আজকে বিকালে আমাদের সবার সাথে মেয়ে দেখতে যাবি।
আমি:- আমি যেতে পারবোনা এই মেয়ে আমার পছন্দ না।
আব্বা:- তোর পছন্দ করাটা জুরুরী না মেয়েটা তোকে পছন্দ করলে হবে। কলেজ শেষ করেছিস এখন পর্যন্দ একটা মেয়ের সাথে ভালো করে সম্পর্কে জড়াতে পারিসনি আর এখন এসেছিস বিয়ের সময় মেয়ে পটাতে। তোর কথা শুনে আমার জোক মনে হচ্ছে। তোর ভাবির কাছে মেয়েটার ছবি আছে ইচ্ছে হলে দেখে নিতে পারিস। আর হ্যা আজ বিকালে মেয়ের বাড়ীতে যাবো তুই কিন্তু যাবি আমাদের সাথে। (ভিলেনের মত দমক দিয়ে চলে গেছে)
আমি:- দূর কোনো কিছু ভালো লাগছেনা আব্বা এইটা কি বলে গেলো? যাই ভাবিকে গিয়ে একটু বলে দেখি মেয়ে দেখতে যাওয়াটা আটকানো যাই কিনা। শিড়ি দিয়ে উপরে উঠেছি তখনি দেখি ভাবি ফুলের টপ সাজাচ্ছে আমাকে দেখে বলে!
ভাবি:- আলিফ তোমাকে তো খুঁজতেছি জানো আব্বাজান তোমার জন্য মেয়ে দেখছে। আমার কাছে মেয়ের ছবি আছে মেয়েটা দেখতে অনেক সুন্দর নাও ছবিটা দেখে নাও।
আমি:- ভাবি তুমিও শুরু করেছো তুমি তো জানো আমি একটা মেয়েকে ভালোবাসি।
ভাবি:- হ্যা বলেছো তবে মেয়েটা তো তোমাকে কোনো পাত্তা দিচ্ছেনা। আর সবচেয়ে বড় কথা তুমি মেয়েটার নাম পর্যন্ত জানোনা।
আমি:- কে বলছে জানিনা ওর নাম তো আশফি ইসলাম আজকেই ওর সাথে সবকিছু ফাইনাল করে নিবো।
ভাবি:- বিকালের আগে সব কিছু ফাইনাল করো আর তানা হলে আজ বিকালে মেয়ে দেখতে যেতে হবে। যদি মেয়ে তোমাকে পছন্দ করে তাহলে কেল্লাফতে হয়ে যাবে।
আমি:- হ্যা আজকে করবো বলে বেড়িয়ে পড়েছি বাইক নিয়ে আশফির কলেজের সামনে দাঁড়িয়ে আছি। কিছুক্ষণ পর চেয়ে দেখি আশফি তার বান্ধবীদের সাথে বেড়িয়ে এসেছে। এগিয়ে গেছি আমাকে দেখে আশফির হাটার গতি বাড়িয়ে দিয়েছে। আমি তাড়া তাড়ি করে গিয়ে সামনে দাঁড়িয়েছি।
আশফি:- সামনে দাড়িয়েছেন কেনো?
আমি:- প্লিজ আশফি তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে।
আশফি:- আপনার সাথে আমার কোনো কথা নেই।
আমি:- মাত্র ১০ মিনিট সময় দাও আর কোনো দিন তোমার সামনে এসে দাড়াবোনা প্লিজ।
আশফি:- ঠিক আছে বলেন কি কথা মাত্র ১০ মিনিট সময় দিলাম।
আমি:- তোমাকে তো কত বার বলছি আমি তোমাকে ভালোবাসি কিন্তু তুমি কোনো পাত্তা দিতেছোনা। আর এদিক দিয়ে আমার জন্য, ঠিক তখনি আমার মোবাইলে একের পর এক রিং বেজে উঠছে বার বার কেটে দিতেছি তাও রিং আসছে রিসিব করতেই,,,
আলিফ তুই তাড়া তাড়ি মেডিকেল চলে আয় রাফির স্ত্রীর সিরিয়াছ অবস্থা। ও নেগেটিভ রক্তের প্রয়োজন।
আমি:- হ্যা আসছি বলে ফোন কেটে আশফিকে মাঝ রাস্তায় দাড় করিয়ে চলে এসেছি সোজা মেডিকেলে। এসে দেখে রাফি অনেক মন খরাপ করে বসে আছে আমি ডাক্তার সাথে কথা বলেছি আর জুয়েল, আসিফকে ফোন করে আসতে বলছি। দুজনে এসেছে আমি আর আসিফ দুজনে রক্ত দিয়েছি রাফির বউয়ের অপেরেশন ঠিকঠাক মত হয়েছে। বেলা ৩টার সময় আব্বা ফোন করেছে রিসিব করতেই দমক শুরু।
আব্বা:- ২০ মিনিটের মধ্য তুই বাড়ীতে আসবি যদি এক মিনিট দেরি হয় তাহলে তোর খবর আছে বলে ফোন কেটে দিয়েছে। রাফির কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বেড়িয়ে এসেছি সোজা বাড়ীর দিকে বাইক নিয়ে আসতে প্রায় ৩০ মিনিট সময় লাগছে।
ভাবি:- আলিফ আজকে তো তোমার একটু আগে আশা উচিত ছিলো কিন্তু তুমি দেরি করলে কেনো?
আমি:- প্লিজ ভাবি আব্বাকে বলোনা আমি রেডি হয়ে আসতেছি। তাড়া তাড়ি করে ফ্রেশ হতে চলে গেছি ১০ মিনিটে ফ্রেশ হয়ে নিছে নেমেছি।
আব্বা:- ঐ খানে গিয়ে সবার সাথে সুন্দর করে কথা বলবে।
আমি:- ঠিক আছে! সবাই মিলে রওনা হয়েছি ৩০ মিনিটে ওদের বাড়ীতে চলে গেছি বাহ বাড়ীটা অনেক সুন্দর আর দেখে মনে হচ্ছে অনেক বড়লোক। তাতে আমার কি আমি তো মেয়ে না দেখেই নাকুচ করে দিয়ে চলে আসবো। আমাদের সবাইকে বসার রুমে বসতে দিয়েছে সাথে অনেক রকম নাস্তা। কিছুক্ষণ পর মেয়েকে নিয়ে এসেছে।
ভাবি:- আলফি মেয়েটাকে দেখো ছবির থেকে অনেক সুন্দর মেয়েটা বাস্তবে।
আমি:- দেখতে হবেনা মেয়ে পছন্দ হয়নি তুমি বলে দাও আব্বাকে।
ভাবি:- আগে একবার দেখে তো ছহি খুব সুন্দর কিন্তু।
আমি:- হোক সুন্দর আমি দেখবোনা তখনি ভাবি আমাকে গুতো দিয়েছে পেটে আমি উপরের দিকে তাকিয়েছি। হঠাত মেয়েটার দিকে চোখ গেছে দেখে তো আমার চোখ কপালে উঠেছে আরে ভাবি আমি তো ওকে ভালোবাসি।
ভাবি:- মানে কি তুমি ওকে ভালোবাসো। তাহলে এখন বলবো আব্বাজানকে যে তোমার মেয়ে পছন্দ হয়নি।
আমি:- আরে কি বলো তুমি? মেয়ে আমার পছন্দ আব্বা তো দারুন কাজ করেছে আমার জন্য আশফিকে পছন্দ করেছে। (তবে আশফি এখনো আমাকে দেখেনি ও নিচের দিকে তাকিয়ে আছে। ওর ভাবি ওকে বলতেছে আমাকে দেখার জন্য কিন্তু দেখছেনা তখনি ওর ভাবি ওর কাঁদের উপর চিমটি কাটছে আর আমার দিকে ওর চোখ পড়েছে। তখনি আমি চোখ টিপ মারছি আশফি ব্রু কুচকিয়ে চেয়ে আছে আমার দিকে। তখনি আশফির বাবা বলে!
আশফি আলিফকে আমাদের বাড়ীটা একটু ঘুরিয়ে দেখাও তো মা। (তখনি আমি দাঁড়িয়ে গেছি হ্যা নিশ্চয় চলো? আশফি বিরক্ত ভাব নিয়ে উঠে শিড়ি দিয়ে উপরে হাটা দিয়েছে আমিও ওর পিছু পিছু হাটা দিয়েছি সবাই আমার কান্ড দেখে হাসছে। আশফি হেটে সোজা ছাদের উপর চলে গেছে)
আমি:- ভাগ্যের কি পরিহাস দেখছো?
আশফি:- হ্যা দেখছি কিন্তু আপনার মত চিফ আর ফালতু ছেলে আমার জীবনেও দেখিনি। সারাদিন আমার পিছু পিছু ঘুরে এখন এসেছেন মেয়ে দেখতে?
আমি:- আশফি আসলে আমি জানতাম না এই বাড়ীতে তুমি থাকো আর আমি তো এসেছি নিয়ম রক্ষা করার জন্য।
আশফি:- ছিঃ এত মিথ্যা বলেন কি ভাবে? আপনাকে আমি ভালো করে চিনি আপনি এরেঞ্জ ম্যারেজের মত একটা প্রবিত্র বিয়েকে পর্যন্ত মজাক বানিয়ে দিয়েছেন। আপনার মত একটা ছেলেকে আমি বিয়ে করতে পারবোনা।
আমি:- সত্যি বলছি আশফি আমি এখানে এসেছি শুধু আব্বার কথা রাখার জন্য। আর আল্লাহ চাই তার জন্য তো আমার সাথে তোমার আজকে এখানে দেখা।
আশফি:- দেখুন মিস্টার আপনাকে আমি বিয়ে করতে পারবোনা। আর যে কিনা তার গ্রালফ্রেন্ডকে মাঝ রাস্তায় ছেড়ে চলে আসে। সে যে বিয়ের পর তার বউয়ের সাথে কি কি করবে তা আমি বুঝতে পারছি।
আমি:- আশফি সরি আমি সকালে এমন ভাবে চলে আসতে চাইনি। তুমি আমার কথাটা একটু মনোযোগ দিয়ে শুনো। (তখনি আশফির ভাবি এসেছে আমি ছোট করে একটা মুচকি হাসি দিয়েছি সাথে আসফিও সুন্দর করে হাসি দিয়েছে। তারপর ওনি চলে গেছে)
আশফি:- আমি এখুনি গিয়ে আব্বাকে বলে দিবো আপনাকে আমি বিয়ে করতে রাজি নয়।
আমি:- আশফি তুমি আমার কথাটা শুনো (আশফি কোনো কথা না শুনে সোজা হাটা দিয়েছে আমি ওকে আটকাতে চাচ্ছি কিন্তু কোনো কথা না শুনে নিছে এসেছে আমিও মন খারাপ করে এসেছি। যখনি আশফি বলবে যে আমাকে বিয়ে করতে রাজি নয় তখনি আশফির আব্বা বলে)
মা আশফি এই আংটিটা আলিফকে পড়িয়ে দে। তাহলে বেয়াই মসায় আগামী মাসের ৫ তারিখে বিয়ের কাজ সম্পন্ন করা হবে। আশফির দিকে তাকিয়ে দেখি মন খারাপ করে আছে কিন্তু সবার সামনে হাসি উজ্জল দেখাচ্ছে।
আব্বা:- আলিফ নে এই আংটিটা মা আশফিকে পড়িয়ে দে। আমি আশফির দিকে তাকিয়ে দেখছি আশফি একদম পছন্দ করছেনা তাও দুজন দুজনকে আংটি পড়িয়ে দিয়েছি। সবাই অনেক খুশি হয়েছে তখনি আশফির কানের কাছে আস্তে আস্তে বলছি।
আমি:- আই লাভ ইউ! আশফি চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে।
আশফি:- ট্রাই করতে থাকেন কোনো লাভ হবেনা! বিয়ে করবো সংসার করবো, সব কিছুই হবে তবে সেইটার মধ্যে ভালোবাসা জিনিসটা থাকবেনা।
আমি:- তুমি আমাকে ভালোবেসে বিয়ে করবে আর হ্যা এই ৩০ দিনের মধ্যে যদি আমাকে তুমি আই লাভ ইউ টু না বলো তাহলে আমি নিজে থেকে বিয়েটা ভেংগে দিবো।
আশফি:- ওকে আমি যদি এই ৩০ দিনের মাঝে আপনাকে আই লাভ ইউ টু বলি তাহলে আপনাকে ভালোবেসে বিয়ে করবো।
আমি:- ওকে তোমার চ্যালেঞ্জ এক্সেপেট করেছি বলে ওদের বাড়ী থেকে বিদায় নিয়ে বেড়িয়ে এসেছি।
!!
To be continue