ক্রাশ যখন বরSeason_3Part_49/50/51Last part
Writer-Afnan Lara
শিশির তনুর আঁচল ধরে শুয়ে পড়লো,
সকালে চোখ খুলতেই দেখলো তনু দাঁড়িয়ে আছে কোমড়ে হাত দিয়ে
শিশির-কি হইসে আবার
তনু-ঢাকা যাব
শিশির-এই সময়ে এত জার্নি করা ঠিক হবে না,,
তনু-নাহ আমি যাব
শিশির আর কি করবে তনুকে নিয়ে বের হলো,অফিসের কাজ ও আছে তাই আর না করলো না
মা বললো তিনি ১/২সপ্তাহ পর আসবে
গাড়ীতে তনুর শরীর খারাপ হয়ে গেলো
শিশির এক হাত দিয়ে ধরে আছে তনুকে,তনু দূর্বল হয়ে সিটে হেলান দিয়ে আছে,তাও শিশিরের কাঁধে হেলান দিবে না
বাসায় আসতে আসতে পুরো দিন শেষ,
শিশির-বাসায় যাওয়ার আগে চলো হসপিটালে চেক আপ করে আসি,অনেকদিন হইসে চেক আপ করা হয়না
তনু-আচ্ছা
দুজনেই বসে আছে হসপিটালে,,আশেপাশের pregnant মহিলারা তনু আর শিশিরকে দেখতেছে শুধু
দেখারই কথা তনুর পেট ওর বডি অনুযায়ী নরমাল না,অনেক বড়,,
একটা লোক তার ওয়াইফকে নিয়ে এসেছে
লোকটা শিশিরকে জিজ্ঞেস করলো কোনো সমস্যা আছে কিনা,কারন এমন বড় হওয়া তো নরমাল না
শিশির-না ভাই সব ঠিক,জোস!
লোকটা একটু চাপা স্বরে বললো,,গোপনীয় কিছু কিনা
শিশির-আরে ভাই আমি ৩টা সন্তানের বাপ হতে চলেছি তাই এমন লাগে,ইটস নরমাল তাই না?
লোকটা ইয়া বড় হা করে তাকিয়ে আছে
তার বউতো রীতিমত তনুকে ভালো করে দেখতেছে
শিশিরের কথাটা জোরে হওয়ায় যারা নতুন গর্ভবতী তারা already তনুর পাশে বসে ওর থেকে টিপস নেওয়া শুরু করে দিসে
শিশির-আরে এসব টিপস টুপস এ কাম নাই,সব আমার credit, টিপস নেওয়ার তো আমার থেকে নাও
তনু বড়বড় চোখ করে তাকালো শিশিরের দিকে
শিশির-ইয়ে মানে আসলে বলতেছি তোমাগো জামাইরে কও আমারে জিগাইতে
doctor এসে তনুর চেকআপ করলো,সব ঠিক আছে বললো,এমনকি আল্ট্রাতে বাবু ও দেখিয়েছে তনুর মুখে হাসি ফুটলো,শিশির তনুর মুখের দিকে চেয়ে আছে,এই হাসি কতদিন সে দেখেনি
দুজনেই বাসায় ফিরলো,, তনু বারান্দায় বসে বাইরে তাকিয়ে আছে,চাঁদ দেখতেছে তনু
শিশির -আমি সিওর তুমি কাল নাতাশার ১২টা বাজাবা তাই না
তনু কিছু বললো না
শিশির-আমি বলিকি বাবু হওয়ার পরে করিও,নাতাশা আমাদের বেবির ক্ষতি করতে পারে
তনু-তা নিয়ে আপনাকে ভাবতে হবে না,ভাবার হলে এতসব কাজ করে বসতেন না
শিশির-আর কত বকবা তুমি?
তনু ফোন নিয়ে শিশিরকে এগিয়ে দিলো,,
কাগজে যা যা লিখে দিসি পড়ে নাতাশাকে বলেন
শিশির -ওকে
শিশির নাতাশাকে ফোন দিলো
নাতাশা-আজ সূর্য কোনদিকে উঠেছে??
শিশির কাগজ নিয়ে রিডিং পড়া শুরু করলো
শুনো নাতাশা আমি খেয়াল করসি যে তনুকে নিয়ে আমি সুখি থাকতে পারবো না,
এই তনু এগুলা কি লিখসো(ফিসফিসিয়ে)
তনু শিশিরের পা মাড়িয়ে দিলো
শিশির -আউচচচ
নাতাশা-কি হইসে?
শিশির -কিছু না,তো কই ছিলাম
,জানো সামান্য কারণে ও আমাকে ডিভোর্স দিসে,,আমাদের মাঝে আর কোনো সম্পর্ক নাই,তুমি চাইলে তোমাকে লেটারটা দেখাতেও পারি,আমার অনেক একা লাগতেছে প্লিস এসো এখানে,বাসায় কেউ নেই
নাতাশা-কোনো খেলা খেলতেছো নাতো??
শিশির-না, সত্যি তোমার কসম?
নাতাশা-ওকে আসতেছি
শিশির-এখন কি হবে?ও আসলে কি হবে?
তনু -ওয়েট এন্ড ওয়াচ
১০টার দিকে দরজা নক হলো
শিশির গিয়ে দরজা খুললো,নাতাশা তার ভাইকে নিয়ে এসেছে
দুজনেই গিয়ে সোফায় বসলো
নাতাশা-ডিভোর্স লেটার টা দেখাও
শিশির লেটারটা এগিয়ে দিলো
নাতাশার ভাই ক্লাস সেভেনে পড়ে,তাও যে ভাব নিয়ে লেটারটা পড়তেছে এডভোকেট ও কেঁদে দিবে???
শিশির হাসি চেপে রেখে তাকিয়ে আছে
নাতাশার ভাই বললো সত্যি ডিভোর্স হইসে
শিশির-তো ওরকম করলা কেন,এমনি কইলেও হতো
নাতাশা-তনুকে ছাড়তা এত সহজে?তাই সেদিন তোমাকে হাই পাওয়ারের মদ খাইয়ে দিসিলাম,তনুর জায়গায় আমারে দেখসো?
শিশির-আমি তো কিছু করি নাই তাই না
নাতাশা-কি করবা,তোমার জ্ঞান ছিলো নাকি?ধরে ধরে ভিডিও করসি,বিয়ের পর দেখা যাবে কেমন?তাহলে কাল আমরা বিয়ে করছি?
শিশির-(তনু তো এটা শিখিয়ে দেয়নি,এখন কি কমু)
নাতাশা-বলো??
তনু-হুমম,আসিও,আমার আর শিশিরের বিয়েতে,কাল আমরা আবার বিয়ে করবো,তোমার দাওয়াত
নাতাশা চোখ বড়বড় করে তাকিয়ে আছে
নাতাশা-ডিভোর্স তো হয়েই গেসে
শিশির-এটা ফেক বলদ?☺☺?
নাতাশা-হোয়াট??!!!
নাতাশা তনুর পেটের দিকে তাকালো,
এগিয়ে গিয়ে তনুকে ইচ্ছে করে ধাক্কা দিতে যেতেই তনু পিছন থেকে মরিচের গুড়া নিয়ে ছুড়ে মারলো নাতাশার মুখে
নাতাশার ভাই এগিয়ে আসতেই শিশির ডাইনিং এ রাখা নুনের বাটি থেকে নুন ছুড়ে মারলো
তনু-আরে বোকা নুনে effect কম করবে
শিশির-ওহ তাই,সরি
তাও চোখের ভিতর নুন ঢুকে যাওয়ায় নাতাশার ভাই নিচে বসে গেলো,
নাতাশা তো চিৎকার দিচ্ছে অনবরত
তনু গিয়ে ওর সামনে বরাবর সোফায় বসলো
শিশির-কি করবো?
তনু-পানি লাগবে//??পানি দাও ওদের,টেবিলে জগের পানি দাও
শিশির-পাগল হইসো?ডোজ তো কম হলো
তনু-দাও
শিশির পানি দিলো নাতাশাকে
নাতাশা পানি নিয়ে চোখে ঢালতেই অবস্থা আরও খারাপ,কারন তনু শুকনা মরিচ গুলে রেখেছিলো ঐ পানিতে
নাতাশা-দেখে নিব আমি
তনু বসে বসে নাতাশার ভিডিও করলো,,
তনু নাতাশার ফোন নিলো হাতে,,
তনু-পাস বলো
নাতাশা-জীবনেও না
তনু-শিশির মরিচের গুড়া আরও আনো
নাতাশা-পাস হচ্ছে রাকিব
শিশির-রাকিব কেডা আবার
নাতাশার ভাই-আমি কমু রাকিব কে আগে পানি দাও,ভালো পানি দিও
তনু-কে আগে বলো
নাতাশার ভাই-বুবুর বফ
শিশির-ভাইরে আর কত??
তনু পাস খুলে সব পিক ডিলিট দিলো,,তারপর নাতাশাকে বসিয়ে আরেকটা ভিডিও বানালো,ভিডিওতে নাতাশা বলতেছে আমার দোষ, আমি শিশিরকে ফাঁসানোর জন্য এমনটা করেছি
তনু-হুম ঠিক আছে,বাবুরা এবার যাও
শিশির-ছেড়ে দিবা?
তনু-এটাই যথেষ্ট, next time পিছে লাগলে এই যে ভিডিও গুলা আছে না??ভাইরাল করে দিব,কেমন??
নাতাশা-ডিলেট দাও,আমি আর কিছু করবো না
তনু-ঠিক আছে যাও
নাতাশা চলে গেলো
শিশির-বাপরে বাপ,এবার বিশ্বাস হলো তোমার???
তনু-?
তনু উঠে শুতে চলে গেলো
শিশির-এই আমাদের বিয়ে মানে?
তনু-কাল আমরা আবার বিয়ে করবো,,আমার ইচ্ছা,,বলতে পারেন
শিশির -হঠাৎ?
তনু-বিয়ের প্রথম দিন আমি শিশিরকে যেভাবে চেয়েছি সেভাবে পাইনি,তাই আমি সেই দিন আবার চাই
চলবে♥
ক্রাশ যখন বর
#Season_3
Writer-Afnan Lara
#Part_50
শিশির-ওকে then,,
পরেরদিন শিশির ছোটখাটো একটা বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করলো,,তার কিছু বন্ধুবান্ধব আসলো,,পুরোদিন সবাই মজা করে বিকালের দিকে যে যার বাসায় চলে গেলো
আজকে তনু গোলাপি রঙের শাড়ী পড়েছে, শিশির হালকা গোলাপি রঙের পাঞ্জাবি পরেছে,,শিশির তনুর হাত ধরে ছাদে বসে আছে,,
শিশির-এই দিনটা আসবে আমার লাইফে আমি ভাবিনি,,কখনও জানতাম ও না এত সুন্দর ও জীবন হতে পারে,,,
তনু-আমিও
শিশির-তারপরে সবচেয়ে সুন্দর জীবন হবে যখন আমাদের বাচ্চারা থাকবে
তনু শিশিরের হাত শক্ত করে ধরলো
শিশির-ভয় পেও না,আমি সবমসময় তোমার পাশে আছি,সব বিপদ থেকে আমি তোমাকে সেভ করবো
শিশির-চলো সন্ধ্যা হয়ে গেসে,
তনু-চলুন
লিফট পর্যন্ত আসতেই দেখলো লিফট অফ,শিশির দারোয়ানকে কল দিলো,
দারোয়ান বললো লিফটে কি যেন সমস্যা হইসে,,
তনু-এখন কি হবে,আচ্ছা আমার হাত ধরুন, আস্তে আস্তে নামবো
শিশির মুচকি হেসে তনুকে কোলে তুলে নিলো,তারপর হাঁটা ধরলো
তনু-একি করতেছেন,এতদূর পারবেন না,,১০তলা কম না
শিশির হাঁটতেছে চুপচাপ
বাবু সহ তনুর ওজন এখন প্রায় ১০৬কেজি,
তনু শিশিরকে বলতেছে নামানোর জন্য কিন্তু শিশির থামতেছেই না
শিশির-আরে আমি জিমে আরও ওজন নিয়ে practice করসি,don’t worry,ওখানে মেশিন কোলে নিতে পারসি আর এখন বউ বাচ্চাকে নিতে পারবো না??
তনু শিশিরের গলা ধরে আছে শক্ত করে
যারা যারা এই দৃশ্য দেখেছে সবাই হাততালি দিতেছে,,
শিশির তনুকে নিয়ে রুমে এসে একেবারে খাটে নিয়ে নামালো,,
শিশিরের গা ঘামে ভিজে গেসে
তনু আঁচল দিয়ে মুছে দিলো শিশিরের মুখ
শিশির মিষ্টি হাসি দিয়ে তাকিয়ে আছে
তনু-পানি খাবেন.এনে দিই?
শিশির-নাহ
তনুর চোখ চিন্তিত
শিশির তনুর মুখ দুহাত দিয়ে বললো তার কোনো কষ্টই হয়নি
তনু শিশিরের দিকে চেয়ে রইলো
শিশির তনুর ঠোঁটে চুমু দিলো,কতদিন পর ছুঁলো মনেই নেয়,হয়ত এই মূহুর্তের জন্য এতদিন ওরা কাছে আসতে পারেনি,
তনু ঘুমিয়ে গেসে,শিশির বারান্দায় দাঁড়িয়ে বাইরে দেখতেছে,,নিজেকে আজ নতুন বর বর লাগতেছে,শিশিরের মনে পড়লো প্রথম সেই দিনের কথা,তনু কত চেয়েছিলো শিশিরের কাছে আসতে অথচ শিশির সেদিন তনুকে দূরে ঠেলে দিয়েছিলো
এক নজর তনুর দিকে তাকালো শিশির,শিশিরের জায়গাটায় হাত রেখে শান্তিতে ঘুমাচ্ছে তনু,,
শিশির বুয়াকে বললো তনুর দিকে যেন খেয়াল রাখে তার বাজারে যেতে হবে,,
বুয়া তনুর কাছে বসে রইলো
তনু যখন চোখ খুললো দেখলো বাচ্চাদের দোলনা খেলনা সব এনে শিশির রুম ভর্তি করে ফেলেছে
তনুর মনে হলো তার বাচ্চারা পাশের রুমেই আছে,,পরে পেট ধরে বুঝলো তারা এখনও আসেনি,
শিশির তনুর হাত ধরে বসলো,,
একটা খেলনার দিকে তাকালো তনু,সেটা হাতে নিয়ে দেখলো
শিশির-এটা নাকি চালালে আক্রমন করে,
শিশির ওটা চালাতেই লাফ দিয়ে তনুর গায়ের দিকে পড়লো,তনু অনেক ভয় পেয়ে গিয়ে পিছিয়ে গেলো
শিশির তাড়াতাড়ি খেলনাটা সরিয়ে ফেললো
শিশির-কিছু হয়নি তনু,এটা একটা খেলনা
তনু শিশিরের হাত শক্ত করে ধরে রাখলো
তনু-আমার খুব ভয় করে শিশির,কোনো ক্ষতি হবে না তো ওদের?? যদি আমার কিছু হয় তাও হোক কিন্তু ওদের কোনো ক্ষতি হতে দিয়েন না
শিশির-চুপ থাকো,বেশি বলবা না,ঘুমাও
তনু-ঘুম আসে না,এতক্ষন তো ঘুমাইসি
শিশির-তাহলে কি করবেন??আসেন টিভি দেখি
শিশির তনুকে নিয়ে সোফায় বসালো,,টিভি অন করে গেলো কফি বানাতে,বুয়া চলে গেসে,,
কফি খেয়ে দুজনেই আজকের তোলা ছবি দেখতেছে,,
তনু-একটা কথা বলবো?
শিশির-হুম বলো
তনু-আমি আপনার যোগ্য না তাই না
শিশির-এমন কেন বলতেছো??!!!
তনু-দেখুন পিকে আমাদের কেমন যেন লাগতেছে
শিশির-আরে বোকা গোল আলুর মত লাগতেছে কারন তুমি আমার ৩টা বাচ্চাকে পেটে ধরে আছো,,বুঝছো,আর সসের সাথে গোল আলু খেতে হেব্বি
তনু ব্রু কুঁচকে তাকালো
শিশির-কি?
তনু-আপনি সস?
শিশির-অবশ্যই,,
তনু-হুহ!তো বললেন না তো??আমি আপনার যোগ্য কিনা
শিশির-তুমি শুধু আমারই যোগ্য আর তাই তুমি আমার বউ,নইতো ভাবো তুমি যেখানে থাকো ওখানে হাজার হাজার মেয়ে আছে,ওদের মধ্যে তুমিই আমার বউ হলা,তার মানে অবশ্যই আমরা made for each other
তনুর মুখে হাসি ফুটলো,,
রাতে খাবার খেয়ে দুজনেই ঘুমিয়ে পড়লো,,
doctor -সরি আমরা একটা বাচ্চাকে বাঁচাতে পারিনি,ও অনেক উইক ছিলো,?
শিশির কান্নায় ভেঙে পড়লো,,
তনুর হাত পা অবশ হয়ে আসতেছে,শিশির আমি মনে হয় আর বাঁচবো না শিশির,
হঠাৎ ঘুম ভেঙে যেতেই তনু চিৎকার দিয়ে উঠে বসলো
শিশির-কি হইসে তনু?তুমি ঠিক আছো??
তনু-এটা স্বপ্ন ছিলো,আল্লাহ!
শিশির-কি হইসে তনু?পানি খাবা??
তনু-শিশির আমার বাচ্চা সব সুস্থ হবে তো?
শিশির-কোনো চিন্তা করিও না তনু,সবাই সুস্থ হবে ইনশাল্লাহ ♥
তনু পানি খেয়ে শিশিরের বুকে শুয়ে পড়লো,,শিশিরের শার্ট খাঁমছে ধরে আছে,,চোখে ঘুম নেই,,
শিশির অনেক tired ছিলো তাই ৫মিনিটেই ঘুমিয়ে পড়লো আবার,,তনুর দেরি করে ঘুম আসলো
ভোর ৫টার দিকে তনু জেগে গেলো,উঠে বাথরুমে গিয়েই বমি করে দিলো,,fresh হয়ে এসে সোফার রুমে গিয়ে বসলো তনু
শিশির ৮টার দিকে উঠলো,,তনুকে না পেয়ে চিন্তায় বের হতেই দেখলো তনু কার্টুন দেখতেছে
শিশির তনুর পাশে বসে দেখলো ওর চোখ মুখ ফুলে আছে,কেমন অসুস্থ লাগতেছে তনুকে
শিশির-তনু তোমার শরীর খারাপ??চোখ মুখ এমন হয়ে আছে কেন
তনু-না,,,এমনিতেই
শিশির তনুর মাথা মুছে দিয়ে খাবার এনে নিজের হাতে তনুকে খাইয়ে দিলো,,অফিসে যাবে না সে,ঘরে বসেই কাজ করবে,তনুকে নিয়ে আর কোনো রিস্ক শিশির নিতে চায় না
তনু এই নিয়ে ২বার বমি করলো,,শিশিরকে ডাক দিলো খাটে বসে
শিশির যেতেই তনু শিশিরকে ধরলো,কথা বলার আগেই senseless হয়ে গেলো তনু,
শিশির তাড়াতাড়ি doctor ডেকে আনলো,উনি বারবার জিজ্ঞেস করলেন তনু বমি করসে কিনা,শিশির বললো সে করতে দেখেনি,
doctor -আমি এই ঔষধটা দিতাম যদি বলতে পারেন উনি বমি করসে কিনা
শিশির-ওর জ্ঞান ফিরা পর্যন্ত ওয়েট করলে হয় না??
doctor -আমি দিয়ে যাচ্ছি,আপনি দিয়ে দিবেন,খুব সোজা,,আমার icuতে রোগী, যেতে হবে
চলবে♥
Crush যখন বর?
Writer-Afnan Lara
#Season_3
#শেষ_পর্ব
তনুর জ্ঞান ফিরতেই শিশির ওকে ধরে উঠিয়ে ইনজেকশান টা দিয়ে দিলো,,
তনু-আমার বাচ্চার কিছু হবে না তো?
শিশির-কিছু হবে না
তনু শিশিরের হাত ধরে বসে থাকলো,,,,
কয়েকদিন পর মা আসলো,সাথে তনুর মা বাবা ও এসেছে,,বাসা এখন ফুল,হইচই,সবাই বাসা গিফটে ভর্তি করতেছে,,৩টা বাচ্চা আসবে,আয়জন তো কম হলে চলবে না,,
তনুর শরীর এখনও খারাপ,নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করে যাতে ওদের কোনো ক্ষতি না হয়
সব রেডি এখন শুধু অতিথীদের আসার পালা,আর কয়েকটা দিন বাকি
তনুর অবস্থা খারাপের দিকে যাচ্ছে,,
কোনো কিছুই মুখে তুলতে পারে না বমির জন্য,,,
শিশিরের ইদানিং খুব ভয় হয়,,advance রক্ত দেওয়ার জন্য ৪/৫জন লোক রেডি করে রেখেছে,,ভালো ভালো doctor রেডি করে রেখেছে,,
এসব দেখে তনুর ভয় আরও বেড়ে যাচ্ছে,,রাতে ঠিকমত ঘুম হয় না তনুর,তনুর নড়াচড়াতে শিশিরের চোখেও ঘুম আসে না,,
একদিন সকালে♥
শিশির তনুর কপালে চুমু দিয়ে অফিসে চলে গেলো
তনু টিভি দেখতেছে,মা বাবা সবাই মায়ের রুমে গল্প করতেছে,মা একবার এসে তনুকে দেখে গেসে
তনুর পানির পিপাসা লাগায় বুয়াকে বললো পানি দিতে,বুয়া পানি এনে দিলো,,
কিন্তু পরেরবার আবার পিপাসা লাগায় বুয়াকে আর ডাকলো না তনু,নিজেই উঠলো,,টেবিল থেকে পানির বোতল টা নিয়ে পানি খেলো,বোতল টা ছিলো কাঁচের, ওজনে ভারি আর চওড়া
তনুর হাত পিছলে বোতলটা গিয়ে তনুর পায়ের উপর পড়লো,ব্যাথা সয্য করতে না পেরে তনু নিচে বসে গেলো,তাও অনেক আকস্মিকভাবে,,এই মাসগুলোতে এমন situation আর আসেনি,,এভাবেও কখনও নিচু হয়নি তনু,
তাই তাড়াহুড়ো করে বসতে গিয়ে পেটে ব্যাথা পেলো চাপ লাগলো প্রচণ্ড ভাবে আর পা তো ফুলেও গেসে,
বুয়া দৌড়ে এসে ধরলো,,
sound পেয়ে পাশের রুম থেকে সবাই দৌড়ে আসলো,,
তখন দুপুর ১২টা বাজে,
তনুর বাবা শিশিরকে ফোন দিলো
শিশির-তনুর কিছু হয়নি তো,হ্যালো বাবা
বাবা-শিশির হসপিটালে চলে এসো,,বিপদ হয়সে অনেক বড়,তাড়াতাড়ি আসো
শিশির দেরি না করে গাড়ী drive করে তাড়াতাড়ি এসে পড়লো,,পথে চিন্তায়য় শিশিরের অবস্থা কাহিল
শিশির-কি হইসে তনুর??ও ঠিক আছে??আর বাচ্চারা??
বাবা-বুয়া বললো জোরে কিছু পড়ার শব্দ হইসে,তারপর দেখলো তনু নাকি নিচে পড়ে আছে,,
শিশির দেখলো একটা নার্স রক্ত মিশ্রিত তুলা নিয়ে চলে যাচ্ছে
এটা দেখে শিশিরের কলিজা কেঁপে উঠলো,না জানি কি হইসে,
শিশির-প্লিস আমাকে একবার দেখতে দিন,আমি ওরে দেখবো,,ওকে বাঁচান আপনারা, প্লিস
২০মিনিট পর doctor বের হলো
শিশির-তনু ঠিক আছে??আর বাচ্চারা,,,,,,,,,,,,,,,!?
Doctor -এখনও ডেলিবারি হয়নি,উনার অবস্থা খারাপ হয়সে পায়ে ভারী জিনিস পড়ায়,,সেটাতেই ব্যাথা পেয়েছে,,
আমরা পায়ে ব্যানন্ডেজ করে দিসি,
শিশির-এখন নিয়ে যেতে পারবো?
Doctor -নাহ,আজকেই ডেলিবারি করাতে হবে কারন উনি পেটে চাপ খেয়েছেন জোরে,,বাচ্চার অবস্থান নড়ে গেসে,,ওয়েট করেন,,পেইন উঠলেই আমরা কাজ করবো
শিশির-আমি কি ওরে দেখতে পারি??
Doctor -অবশ্যই
শিশির গিয়ে তনুর পাশে বসলো,,
তনু চোখ বুজে আছে,,
প্রায় ঘন্টা খানেক পার হয়ে গেসে,শিশির তনুর হাত ধরে বসে আছে,,
মা তনুকে ধরে খাবার খাইয়ে দিলো,,
তনু-সরি শিশির,আমার জন্য আজ এই বিপদ এসেছে
শিশির-এসব চিন্তা বাদ দাও তনু,,
বিকালের দিকে তনু খেয়াল করলো পেটে চিনচিন করতেছে,ব্যাপারটা স্বাভাবিক লাগলেও পরে এই পেইন আরও বেড়ে গেলো,,তনু শিশিরের হাত টেনে ধরলো
শিশির-কি হইসে?পেইন হচ্ছে??
তনু-হ্যাঁ শিশির,,প্রচণ্ড ব্যাথা করতেছে
নার্স দৌড়ে গিয়ে doctor ডেকে আনলো,,,
শিশিরকে থাকার অনুমতি দেওয়া হলো কিন্তু শিশিরের শরীর খারাপ লাগতেছে,,মনে হচ্ছে আর কিছু সময় এখানে থাকলে জ্ঞান হারাবে,শিশির তাই বাইরে চুপচাপ বসে দরজার দিকে তাকিয়ে আছে
শিশিরের request এ তনুকে অজ্ঞানের ইনজেকশান দেওয়া হইসে,কারন ৩টা বাচ্চা নরমালে করতে গেলে তনু এই ব্যাথা সয্য করতে পারবে না
শিশিরের শ্বাস নিশ্বাস যেন অফ হয়ে গেসে,,
মা শিশিরের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে,শিশির না পারতেছে situation টা বহন করতে না পারতেছে দেখতে,,গা কাঁপতেছে শিশিরের,,
২৩মিনিট পর বাচ্চার কান্নার আওয়াজ পেলো সবাই,প্রথমে একটার তারপরে ২টার, কিন্তু ৩য় জনের আওয়াজ আসতেছে না দেখে শিশির দরজা খুলে ভিতরে ঢুকে গেলো,নার্স দুটো বাচ্চা কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে,আর doctor রা সিজার করতে ব্যস্ত,,
শিশির-ওর কিছু হবে নাতো
নার্স বাচ্চা দুটো শিশিরের কোলে ধরিয়ে দিলো,
শিশির ওদের দিকে তাকাতেই ওর চোখ আঁটকে গেলো,সেম টু সেম তার চেহারা,এমনকি ঠোঁটের নিচে তিলটাও পেয়েছে একজন,,দুজনেই ছেলে,,তারপর আবার শিশির পরের বাচ্চার দিকে নজর দিলো,
Doctor -এই বাচ্চাটা আঁটকে গেসে,আমরা ওর বডি টাচ করতে পারতেছি কিন্তু টানতে পারতেছি না
শিশির-প্লিস দুজনকেই বাঁচান,
শিশির বাচ্চা দুটোকে নিয়ে মা আর তনুর মায়ের কোলে দিয়ে আসলো,
১০মিনিট হয়ে গেসে doctor এখনও চেষ্টা চালাচ্ছে,,শেষে নাগাল পেলো বাচ্চাটার,,
তার কান্নার আওয়াজ এতই তীব্র যে মনে হয় হসপিটালে উড়িয়ে নিয়ে যাবে
Doctor -এটা মেয়ে আমি সিওরর?
সবাই ১মিনিট হাসলো
শিশির চোখ মুছে কোলে নিলো,,পুরো শিশিরের মায়ের চেহারা☺
Doctor -রক্ত এক ব্যাগ লাগবে,লোকের ব্যবস্থা করুন
শিশির-আমি already এনে রেখেছি,,
শিশির মেয়েকে বাবার কোলে দিয়ে এসে আবার তনুর কাছে বসলো,,তনুকে রক্ত দেওয়া হলো,,
তনুর জ্ঞান ফিরলো,,শিশিরকে দেখা যাচ্ছে,শিশির হাসিমাখা মুখে তাকিয়ে আছে,
চোখ খুলতেই তনু চিৎকার দিয়ে উঠলো
তনু-আমার বাচ্চারা?
শিশির ইশারা করলো পাশে তাকাতে
তনু পাশে তাকালো
তনুর মায়ের কোলে মেয়ে, শিশিরের মায়ের কোলে ছেলে,,মীমের কোলে আরেকটা ছেলে
তনুর হাসিটা দেখে কে,,☺
৩জনকেই তনুর কোলে দিলো সবাই,
তনু একবার একজনকে দেখতেছে,,
শিশির তনুর কপালে চুমু দিয়ে একেএকে সব গুলো বেবির কপালে চুমু দিলো
তনুর সমস্ত যন্ত্রনা মূহুর্তেই বিলীন হয়ে গেলো,,
বাসায় আসার পর নানা আয়োজন শুরু হলো,,
ছেলে দুজনের নাম হলো শান্ত আর শিমুল,, মেয়ের নাম তিয়াশা,,
তনু শিশিরের কাছে বাবুদের রেখে বাথরুমে গেলো
একটা বাবু,,নাম শিমুল,সে কাঁদা শুরু করলো
শিশির-কাঁদা মানে খুধা পেয়েছে,,কি খাওয়ামু?
শুন তোর মা বাথরুমে আসলে খাওয়ামু
ওমা শিমুলের দেখাদেখিতে শান্ত ও কাঁদা শুরু করসে,এবার তিয়াশাও,,
শিশির-আরে চুপ চুপ,কি করবো আমি,
শিশির শান্তকে ধরে চুমু দিলো,ওমা বাবু চুপ,তিয়াশাকে চুমু দিলো তাই,তিয়াশাও চুপ,শিমুল বাদ যাবে কেন,চুমু পাওয়ায় ৩জনেই চুপ
শিশির-বাহ আমি কত brilliant ♥
শিশির উঠে যেতেই ৩জন আবার কাঁদা শুরু করলো
শিশির-কি বিপদরে বাবা,তনু তাড়াতাড়ি আসো,তোমার টিম তো আমাকে পাগল করে ছাড়বে
শিশির ৩জনকেই কোলে তুলে নিলো,হাঁটতে থাকলো,
মা বাবা দাঁড়িয়ে দেখতেছে আর হাসতেছে,,কয়েকবছর আগের শিশির আর এখনকার শিশিরের কত তফাৎ,এটাই তো আমরা চেয়েছিলাম,ভাগ্য করে আমার রাজপুত্র শিশিরের জন্য রাজকন্যা তনুকে খুঁজে এনেছিলাম,আর সে আমাদের ২রাজপুত্র আর এক রাজকন্যা উপহার দিলো,
তনু বের হতেই বাচ্চাগুলা চুপ হয়ে গেলো,বাপের বুকে শান্তিতে চুপ হয়ে আছে
তনু-দেখসো বাপকে কত ভালোবাসে
শিশির-মিথ্যা কথা,এতক্ষন আমাকে জ্বালাইয়া খাইসে
তনু-কই,কত সুন্দর চুপচাপ আছে,
রাখো ওদের আমি রেডি হয়ে নিই,মেহমান আসবে,
শিশির বাচ্চাদের ধরে গাল টিপে দিলো,তনু রুম থেকে বের হতেই সবাই সিরিয়াল ধরে কাঁদা শুরু করলো,
শিশির-ওরে শয়তান,
ব্যস এভাবেই শিশির তনুর আর তাদের ৩জন টক ঝাল মিষ্টি,,শিমুল শান্ত আর তিয়াশাকে নিয়ে দিন কাটতে থাকলো,,বাবুরা শিশিরকে ইচ্ছামত জ্বালায়য়,কিন্তু তনুর চাইতেও শিশিরকে বেশি ভালোবাসে,শিশির ছাড়া তাদের আর কিছু ভালো লাগে না,শিশির অফিস থেকে আসলে,টেনেও ওদের শিশির থেকে ছুটানো যায় না,,
হ্যাপি হ্যাপি হ্যাপি ফ্যামিলি,,
♥♥♥♥♥♥সমাপ্ত♥♥♥♥♥♥♥
(আমি দোয়া করি এরকম সকল তনু যেন তার জীবনে শিশিরকে পায় স্বামী হিসেবে,,তোমরাও আমার জন্য দোয়া করিও)
(কাল থেকে রাক্ষস জামাই সিজন ২ continue হবে,,সেটা তাড়াতাড়ি শেষ হবে,Then প্রেমনেশা সিজন ২??সাথে থাকিও সবাই)
খুব ভালো হয়েছে গল্পটা।। শিশির আর তনুর লাভ স্টোরি টা দারুন লেগেছে।। শুধু তাই নয় এর সব সিজন গুলো খুব সুন্দর আর রোম্যান্টিক।। তাই এর 4th সিজনটা কিন্তু চাইই চাই।। প্লিজ তারাতারি দিয়েন এই একটাই অনুরোধ রইল।।😊😊