কে কোথায় যায়? পর্ব ৬
—-‘দোস্ত আমাদের সাথে বান্দরবান যেতে পারবি?তিনদিনের ট্রিপ!তাড়াতাড়ি চলে আসমু।’
অপর পাশ থেকে মেয়েলি কন্ঠ ভেসে এলো!
——-‘আব্বে হালা!এটা কি আর এমন কইরা কওন লাগে?যামু তোর সাথে!’
রুদ্র খুশীতে লাফাতে লাফাতে বললো,
——‘আমরা ছয় জন আছি!তুই নিয়ে সাত!’
ওপাশ থেকে জোড়ালো কন্ঠ ভেসে উঠলো,
——-‘চুপ হালা!আমরা তিনজন আসতেছি!আমাদের খরচ আমরাই বহন করুম!’
রুদ্র ঢোক গিললো।মেয়েটা দারুণ ভয়ানক!ছোটবেলা থেকেই ওর সাথে বড় হওয়া।পড়াশোনার তাগিদে দু’জন দু’পথে!মেয়েটা আগের মতই পাগলাটে টাইপ’ই রয়ে গেল।
মেয়েটা আবার বললো,
——-‘শুন,আজ রাতেই তোদের বাসা পৌছাবো।কাল বান্দরবানের উদ্দেশ্য যাত্রা!উক্কে?’
রুদ্র চিৎকার দিয়ে বললো,
——‘ওকে!’
ফোন কেটে দিল রুদ্র। বন্ধুমহলের সবাই ভ্রু কুচকে রুদ্রকেই দেখছিল।রুদ্র ফোন রেখেই সোফায় বসে প্রশান্তির চোখ বুজলো।চোখ খুলতেই দেখে অনেক জোড়া চোখ তার দিকে নিবদ্ধ!রুদ্র খানিকটা ঘাবড়ে গেল,চার পাঁচটা ঢোক গিললো।
বিটকেল মার্কা একটা হাসি এনে বললো,
——-‘আমার ফ্রেন্ড রিতু।ট্রাভেলিং নিয়ে অনেক অভিজ্ঞতা।’
তামিম সরু গলায় বললো,
——-‘আমিও পর্বত আরোহী! সব চিনি!বান্দরবান একবার গেছিলাম।মোটামুটি চিনি সব।’
কথাটা বলেই তামিম আত্মভাব প্রবল করলো।ঠিক তখনই আবার রিতুর কল!
——-‘শুন,তোরা আজই ও এখনই রওনা দে!পরে টাইম পাবি না।আমাকে বান্দরবানে পাবি!’
রুদ্র প্রথমে না করলেও বন্ধুরা বলছে তারা রাজি!তাই সেও বাধ্য হয়ে বললো,
——–‘আচ্ছা!’
সবাই এবার তামিমের দিকে তাকালো।শুভা তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে বললো,
——-‘তুই তো চিনিস!তা আমাদের বান্দরবান পর্যন্ত নিয়ে যা।’
তামিম বুক ফুলিয়ে বললো,
——‘অবশ্যই,কেন নয়?’
চারদিকে নৈসর্গিক সৌন্দর্য্য, পাহাড়-পর্বত, ঝরনাধারা, আঁকাবাঁকা উঁচু-নিচু পাহাড়ি রাস্তা, অথৈ পানি আর সবুজের সমাহারে পরিপূর্ণ নানা বৈচিত্র্যের এক স্থান পরিভ্রমণে উদ্দেশ্য যাত্রা শুরু করছে এই বন্ধুমহল!
তামিম হাতে একটা মানচিত্র নিলো।সবাই মানচিত্র দেখে ভ্রু কুচকালো!শুভা মানচিত্রের দিকে সরু চোখে তাকিয়ে থেকেই বললো,
——-‘এটা কি হ্যাঁ?মানচিত্র দিয়া কি করবি?’
তামিম ব্যাস্ত হয়ে বললো,
——‘মানচিত্র আমার মতো ট্রাভেলার মানুষদের জন্য একটি প্রয়োজনীয় উপকরণ!এর সাহায্যে সমগ্র পৃথিবী বা কোনো স্থান সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা লাভ করা যায়। ‘
রুদ্র তামিমের হাত থেকে মানচিত্র নিয়ে বললো,
——-‘এটা থেকে কি খুজতেছিস?বান্দরবান কোনদিকে তা আবার জানিস না নাকি?’
তামিম রেগে গজ গজ করতে করতে বললো,
——-‘৬৪ টা দাঁত ফেলে দিব!’
নীহারিকা হাসতে হাসতে বললো,
——‘প্রত্যেক মানুষের ৩২ টা দাত থাকে!’
তামিম বিটকেল মার্কা হাসি এনে বললো,
—–‘জানতাম তোর মতো গাধা মাঝখানে প্যাঁচাল পাড়তে আসবি তাই তোর দাতগুলাও গুনে নিছিলাম!’
নীহারিকা চুপসে গেল।চোখে আধফোটা জল এনে বললো,
——-‘তুই সবসময় এমন করিস ক্যান?কোথাও বেড়াতে যাচ্ছি তাতেও তোর ফাইজলামি?’
রাফি নির্বিকার গলায় বললো,
—–‘বেড়ানো মানেই মজা করা।’
সবাই গাড়িতে বসে রইলো খানিক সময় চুপচাপ!চারপাশটা উপভোগ করেই যাচ্ছে তারা।তবে এত নিস্তব্ধতা এই বন্ধুমহলে মানায় না!
শুভা’ই আগ নিয়ে কথা বললো,
——‘দোস্ত তামিম,বান্দরবানে দেখা মতে একটা জায়গার নাম বল!’
তামিমকে এবার বিরক্ত হতে দেখা গেল না।মিষ্টি হেসে বললো,
———-‘সকালে বান্দরবান নেমে হোটেলে চেক ইন। ফ্রেশ হয়ে কিছুটা বিশ্রাম নিয়ে ব্রেকফাস্ট। প্রথমে জিপ নিয়ে মেঘলা পর্যটন কমপ্লেক্স চলে যাবো, কমপ্লেক্স পুরোটা ঘুরে দেখবো। দুপুরে লাঞ্চের পর স্বর্ন মন্দির ও রামজাদী মন্দির পরিদর্শন শেষে সন্ধ্যায় ফিরে আসবো হোটেলে। সন্ধ্যার পর ব্যক্তিগত শপিং টাইম। রাত নয় টায় রাতের খাবার খাবো নিজস্ব রেষ্টুরেন্টে।’
নীহারিকা মুখ গুমোট করে বললো,
——‘রির্সোটে থাকবো না?’
তামিম হিসাব মিলালো খানিক সময়!তারপর বললো,
——‘৪,৭০০ টাকা রিসোর্টে থাকলে!৩,৯০০ টাকা হোটেলে থাকলে!রির্সোট চারটার নাম আমার জানা আছে।
নীলাচল নীলাম্বরী রিসোর্ট,হলিডে ইন রিসোট,
হিল ক্রাউন হোটেল এন্ড রিসোর্ট,হোটেল রিভার ভিউ।’
সবাই তামিমের বর্ণনা দেখেই অবাক!সবাই চেয়ে আছে ওরদিকে।
সবাই কাল সকালে হারাবে নিজেদের অন্য কোনো পরিবেশে,অন্য ধারায়!
চলবে….
©ইভা আহমেদ চৌধুরী
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।
▶ লেখকদের জন্য পুরষ্কার-৪০০৳ থেকে ৫০০৳ মূল্যের একটি বই
▶ পাঠকদের জন্য পুরস্কার -২০০৳ থেকে ৩০০৳ মূল্যের একটি বই
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক:
https://www.facebook.com/groups/golpopoka/