কে কোথায় যায়? পর্ব ২২

0
688

কে কোথায় যায়? পর্ব ২২
রুদ্র ভোরের পিছন পিছন সুপার গ্লু’র মতো লেগে আছে!ভোর বুঝতে পেরেও যেন পারছে না।রুদ্র ভোরের সাথে তাল মিলিয়ে মিলিয়ে হাটতে হাটতে বলল,
——‘কেমন আবহাওয়া পছন্দ করেন?’
ভোর নির্বিকার গলাশ বলল,
——‘নিশ্চয়ই মেঘলা!’
রুদ্র উৎসুক গলায় বলল,
——-‘বাইরে তো বৃষ্টি হইতেছে,চলেন বাইরে বের হই,বৃষ্টি উপভোগ করতে করতে আশেপাশের অনেকটা জায়গা দেখে আসতে পারবো।’
ভোর ভাবলো।খানিক পর বলল,
——‘চলেন।’
দু’জন কি একই রশিতে থাকতে পারবে?একই সাথে একই মনে থাকতে পারবে?
তামিম একটু আরাম করার জন্য বিছানায় গা এলিয়ে দিল।শুভার সাথে তার প্রথম দর্শনের কথা আজ মনে পড়ছে!সেই যে প্রথম দিন,শুভা পার্স হাতে নিয়ে ভার্সিটিতে পা দিল,চুল বিনুঁনী বাধা,ডাগর ডাগর চোখ,সুদীর্ঘ চুল,উপচে পড়া মুখে স্নেহ! নিশ্চয়ই কোনো গুরুত্বপূর্ণ ক্লাস হয়তো মিস করতে যাচ্ছিল,এজন্যই দৌড়ে ক্লাসে পদার্পণ করতে যাচ্ছিল,তখনই তামিমের সাথে বড় সড় একটা ধাক্কা!তামিম আগেই রেগে উঠে গজগজ করে বলল,
——-‘কি হ্যাঁ?কি?চোখ চুলের সাথে বেঁধে রাখেন নাকি?অদ্ভুত!’
শুভা রাগ করল না।অদ্ভুতভাবে হাসলো।তামিমের কলমটা মেঝেতে পড়ে গিয়েছিল,সেটা সে তুলে দিয়ে মিষ্টি হাসির রেখা টেনে বলল,
——-‘দুঃখিত,আসলে একটু কাজ ছিল!’
অথচ দোষটা তামিমের ছিল!
সেই মধুময় দিনের অপরিচিত দুই মানব মানবীর দেখা হবার পর কি হয়েছিল তাদের জীবনে?কোথায় গিয়ে থেমেছিল তাদের জীবন স্রোতের নৌকা?তারা কি আদৌও প্রেমে পড়েছিল নাকি তা ছিল প্রেম নামক একটি মোহ?আর যদি হয়েও থাকে তাহলে কি হয়েছিল তাদের পরবর্তী জীবনে, তারা কি সব বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে ভালবাসার নামক এর পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ হতে পেরেছিল নাকি তার আগেই কোন প্রলয়ঙ্কারী ঝড় এসে তছনছ করে দিয়েছিল তাদের জীবনের এক হবার পথ?
ভালোবাসা শব্দটা আমার কাছে বড়ই অদ্ভুত!কখনো কাঁদায়,কখনো হাসায়,কখনো এমনভাবে হাসায় যেন গোটা পৃথিবীটাই গোগ্রাসে গিলে ফেলবে,আবার কখনো এমনভানে কাদায় যেন পুরো পৃথিবীটাই চোখের পানিতে ডুবে যাবে!
সবাট প্রতি মায়া জন্মে না,জন্মে না দুর্বলতা!মন পর্দাথটি মিলনের কোলে ঘুমিয়ে পড়ে কখনো।মন চায় সামান্য উষ্ণতা,কেউ একজন প্রিয় হয়ে তার গ্রীবা বেষ্টন করে থাক না চিরকাল… ক্ষতি কিসে?পৃথিবীতে কোনো কিছুই প্রিয় মানুষ ও পরিবারের চেয়ে বড় নহে!অতএব,সবকিছুর বিনিময়ে আগের নিজের প্রিয় মানুষটাকে জিইয়ে রাখতে হবে,অন্তত জিইয়ে রাখবয়র চেষ্টা করতে হবে।কেননা, প্রিয় মানুষটা কাছে থাকলেই তো জান জায়গায় থাকে,জান থাকলেই তো জাহান!
ভালোবাসা সবাইকে যায় না।মানুষের সুন্দর মুখ দেখে আনন্দিত হওয়া ঠিক না।স্বভাবে যে সুন্দর নয়,দেখতে সুন্দর হলেও তার স্বভাব,তার স্পর্শ,তার রীতিনীতিকে মানুষ ঘৃণা করে।এইরকম মানুষকে ভালোবাসা যায় না,কখনোই যায় না!সোনার চামচ মুখে নিয়ে কটি লোক জন্মে?তাই মানুষকে চেষ্টা করতে হয়,আর এই চেষ্টার পিছনে উৎসাহ দেবার মতো একটা লোক থাকা উচিৎ!সে প্রতিটা পদে পদে ভুলক্রুটি ও উৎসাহ দিয়ে যাবে।এমন লোক পাবার ভাগ্য কটি লোক নিয়ে জন্মে?
তামিমের প্রিয় মানুষ!যাকে প্রথম দেখাতেই অন্যরকম অনুভূতি হয়,মনে সারাক্ষণ ঘুরঘুর করে এটাই হয়তো প্রথম প্রেম,প্রথম অনুভূতি!
শুভা জোরে এসে গালে থাপ্পড় দিল তামিমের!এতক্ষণে যেন ঘোর কাটলো তামিমের!কাপা কাপা বলায় বলল,
——-‘বল,বল,থাপ্পড় মারলি ক্যান?সরকারি জায়গা পাইছিস?’
শুভা জোরালো কন্ঠে বলল,
——-‘তুই আর সরকারি নাকি?তোর জায়গার সরকার কে যে হবে আর নিজের কপাল নিজে ফাটাবে!আহারে,বেচারি!’
তামিমের ভিতর উদ্ভুট জিনিস কাজ করছে।সে নির্বিকার গলায় বলল,
——‘তুই হবি আমার সরকার,আমার রাজরাণী,আমার শেহজাদী,আমার সুলতানা!’
শুভা খানিকটা ঘাবড়ে গেল।নিজেকে ছাড়াতে চেষ্টা করলো তামিমের বাহুডোর থেকে!কাপা কাপা গলায় বলল,
——‘মাথা গে-গেছে তোর তামিম?’
তামিম আরেকটু শক্ত করে ধরলো শুভাকে।সরু গলায় সে বলল,
——–‘বুঝতে পারিস না ক্যান তুই?এতটা পাষাণ হস ক্যান?আই নিড ইউ শুভা,আই লাভ ইউ!’
শুভা তো ইহা এভাবে পাবে বলে আশা করেনি!সে জড়িয়ে ধরলো তামিমকে।তামিমও যেন শুভাকে কখনো ছেড়ে না যাবার প্রতিজ্ঞা গ্রহণ করছে।
বাইরে টুপটাপ বৃষ্টি পড়ছে।ভীষণ আবহাওয়া,ভীষণ উতলা মন!তামিম শুভাকে ঝাপটে ধরে রইলো,ছাড়বে না কখনো,কখনোই না!
©ইভা আহমেদ চৌধুরী
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।
▶ লেখকদের জন্য পুরষ্কার-৪০০৳ থেকে ৫০০৳ মূল্যের একটি বই
▶ পাঠকদের জন্য পুরস্কার -২০০৳ থেকে ৩০০৳ মূল্যের একটি বই
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক:
https://www.facebook.com/groups/golpopoka/

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে