কে কোথায় যায়? পর্ব ১২
তিন্দু বান্দরবান জেলার থানচি উপজেলায় অবস্থিত। তিন্দুকে বলা হয় বাংলাদেশের ভূ-স্বর্গ। পাহাড়ী সাঙ্গু নদী বয়ে গেছে তিন্দুর পাশ দিয়ে। এখানে পাহাড়, মেঘ, নদী, ঝর্ণা, রহস্য ও রোমাঞ্চ সব কিছুই একসাথে পাওয়া যায় বলে তিন্দু অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় ভ্রমণকারীদের কাছে অন্যতম আকর্ষনের নাম। এখানে শক্ত কঠিন পাথরকে সারাক্ষণই বুকে নিয়ে বয়ে চলছে শঙ্খ নদীর স্বচ্ছ পানির ঢল। এখানে পাহাড়গলা পানিতে গা ডুবিয়ে সময়ে কাটিয়ে দিতে পারা যায় নতুন নতুন মাছের সঙ্গে সারা দিন আড্ডা দিয়ে। স্থানীয় আদিবাসী মানুষের সারল্য ও আতিথিয়তায় মুগ্ধ হয়েছে রুদ্র ও ভোর অবশ্যই। সকাল বিকেল পাহাড় ঘিরে থাকে মেঘের ভাঁজে। মেঘমেলা দেখতে দেখতে কখন যে সময় কেটে যাচ্ছে তা টের পাচ্ছে না ওরা ঘুণাক্ষরে। তিন্দুর অসাধারণত্ব বলে শেষ করা যাবে না।
এডভেঞ্চার প্রেমী পর্যটকদের কাছে অঞ্চলটি তার ভিন্ন মাত্রিক প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কারণে বেশ পরিচিত। আর তাই এই দু’জন এডভেঞ্চার প্রিয় মানুষ দেশের ভিতরেই এই অনবদ্য এডভেঞ্চার এর সুযোগ কিছুতেই হাতছাড়া করছে না। এছাড়া বর্তমানে নাফাখুম ঝর্ণা এডভেঞ্চারপ্রেমীদের কাছে খুবই আকর্ষণীয় জায়গা। নাফাখুম যাওয়া বা আসার পথে তিন্দু ঘুরে দেখতে পারা যায়। এখানে চাইলে থাকতেও পারা যায় কিন্তু ওদের তাড়াতাড়ি হোটেলে ফিরতে হবে!
বছরের যে কোন সময়ই তিন্দুতে যেতে পারা যায়। একেক সময়ে একেক রূপে ধরা দিবে তিন্দু ও তার চারপাশ। বর্ষাকালে গেলে উত্তাল সাঙ্গুর রূপ ও মেঘের আনাগোনা বেশি পাওয়া যায় যেমন তেমনই শীতকালে গেলে শঙ্খ নদীর চারপাশ ঘিরে জমাট বাঁধা মেঘ আর কুয়াশার রূপ দেখে মুগ্ধ হয় সবাই!
ভোর চারদিক মুগ্ধ হয়ে দেখতে দেখতে বললো,
———‘মহান সৃষ্টির্কতার কি অপরুপ সৃষ্টি!এত ভয়ানক এই নাফাখুমের ভিতরেও যে এত সুন্দর তিন্দু নামক স্থান আছে এটা ভাববে কে?’
রুদ্র মিষ্টি হাসলো।ভোর লাফাতে লাফাতে বললো,
——-‘এত সুন্দর জায়গায় নিয়ে আসার জন্য ধন্যবাদ।’
রুদ্র ভোরের লাফানো’টা লক্ষ করলো।বিটকেল মার্কা হাসি হেসে বললো,
——‘আপনি কি সবসময় এভাবে লাফান?’
ভোর নির্বিকার গলায় বললো,
——–‘না,তবে বেশি খুশি হলেআপনাআপনি লাফ চলে আসে।’
রুদ্র ছোট্ট করে বললো,
——-‘ওহ!’
তিন্দু বান্দরবান জেলার একটি প্রশাসনিক এলাকা। প্রাকৃতিক আকর্ষণের কারণে অ্যাডভেঞ্চার প্রেমী পর্যটকদের কাছে তিন্দু অঞ্চলটি একটি আকর্ষণীয় পর্যটন স্থান হিসেবেই বেশ পরিচিত।
আকাশ,কুয়াশা,মেঘ,নদী,পাথর,পাহাড়,ঝরনা,ব,নীল, সবুজ পানি আর রহস্য,রোমাঞ্চ,ভয় এ যেন কেমন অনূভুতি!
————-
তামিম আর শুভা এরপর সাঙ্গু নদী দেখতে গেল!এত সুন্দর নদী!
শুভা চিৎকার করতে করতে বললো,
——–‘এ মা মাগোওওও!এত্ত সুন্দর জায়গা আছে তামিম এখনো?এই নদীতে সাতার কাটবো!’
তামিম ভেংচি কেটে বললো,
———‘সাতার জানিস তুই?’
শুভা লজ্জা পেয়ে বললো,
——‘না,তবে লাইফ জ্যাকেট হয়ে তুই আসবি আমার সাথে!’
তামিম মুখ গুমোট করে বললো,
———‘লাইফ পার্টনার নাকি?’
শুভা হতচকিত হলো।হতচকানো কন্ঠে বললো,
——–‘লাইফ জ্যাকেট বলেছি!’
তামিম আর জবাব দিল না।সাঙ্গু নদীর তীরে বসে আনমনে বলতে লাগলো,
——–‘আমার গায়ের
সাঙ্গু নদী,
আসতে পারো
দেখবে যদি।
নদীর তীরে গাছের ডালে
ডাকছে পাখি সুরে,
পাল তুলে ঐ মাল্লা মাঝি
যাচ্ছে বহু দূরে।
ভোর বিহান আর নিত্য বিকেল
জোয়ার ভাটা খেলে,
চিংড়ি বোয়াল বাইলা কাতল
ধরছে গাঁয়ের জেলে।
দুই ধারে তার কাশফুলেরা
দুলছে বায়ুর দোলে,
ঘুরতে আসা যুবা যুবী
মাতছে নদীর কোলে!
নদীর তীরে আপনমনে
আঁকছে খোকা ছবি,
দৃশ্যগুলো ছন্দে তাহার
লিখছে আরেক কবি।
অস্তপারের সন্ধ্যে রবি
দেখতে গো চাও যদি,
আসতে পারো দেখতে তুমি
আমার সাঙ্গু নদী।’
শুভা বাহবা দিবে কিভাবে বুঝতে পারলো না।তামিমের পাশে বসে বললো,
———-‘এটা আবার গান?কোন গান?’
তামিম শুভার দিকে চেয়ে বললো,
——–‘গান তো না,তবে একদিন হবে অবশ্যই!’
শুভা খানিক ভাবুক চেহারা এনে বললো,
——–‘তুই একদিন কবি হবি দেখিস!’
তামিম নদীর রুপে আবদ্ধ হয়ে বললো,
——–‘আর কবিনী কবে আসবে তার কবির তরে?’
শুভা উত্তর দিলো না।সে কি কবিনী হবার যোগ্য না? এমন কেনো?
———–
বাংলাদেশের অন্যতম এডভেঞ্চারাস একটি পাহাড়।দেবতা পাহাড়!রিতু, রাফি ও নীহারিকা এই পাহাড় দেখতে গেছে।মেঘে মেঘে আবৃত পাহাড়!
নীহারিকা মুগ্ধ হয়ে বললো,
———‘কি সুন্দর!’
রিতু স্লান হেসে বললো,
——-‘দাতে দাত চেপে তিন ঘন্টা এই পাহাড়ে থাকতে পারলে জান্নাত দেখতে পারবে যেন!’
নীহারিকা বাচ্চামি ভাব করে বললো,
——-‘তাইলে তাই হোক!’
রাফি ধারালো কন্ঠে বললো,
———‘না, এবার হোটেলে ফিরতে হবে!’
নীহারিকা মুখ গুমোট করে রইলো!সবাই সময়মতো হোটেলে ফিরলো।কাল ওরা বাড়ি ফিরবে!
চলবে……
©ইভা আহমেদ চৌধুরী
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।
▶ লেখকদের জন্য পুরষ্কার-৪০০৳ থেকে ৫০০৳ মূল্যের একটি বই
▶ পাঠকদের জন্য পুরস্কার -২০০৳ থেকে ৩০০৳ মূল্যের একটি বই
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক:
https://www.facebook.com/groups/golpopoka/